Ajker Patrika

বিশ্বের বিপজ্জনক ১০টি সড়ক

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ২৫
বিশ্বের বিপজ্জনক ১০টি সড়ক

চান্দের গাড়িতে রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে কিংবা বগা লেকের ঠিক আগের চড়াইটা পেরোনোর সময় আপনার হয়তো মনে হতে পারে এমন বিপজ্জনক রাস্তা মনে হয় পৃথিবীতে আর নেই! কিন্তু বাস্তবে এগুলোর চেয়ে ঢের কঠিন রাস্তা পাবেন। কাজেই পাঠক সিটবেল্টটি ভালোভাবে বেঁধে নিন, বিশ্বের বিপজ্জনক ১০টি রাস্তার ভ্রমণে চলেছি আমরা। আগেই বলে রাখছি এই তালিকায় আমাদের প্রতিবেশী ভারত কিংবা পাকিস্তানের রাস্তা থাকলেও বাংলাদেশের কোনো সড়ক নেই।

1.-kellong-travel-himalayaকেলং কিশতওয়ার রোড, ভারত
যদি প্রচণ্ড রোমাঞ্চপ্রেমী হোন তবে খাঁড়া পর্বত কেটে যাওয়া ২৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ পথটি আপনার জন্য আদর্শ। হিমাচল প্রদেশের কেলং থেকে জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ার পর্যন্ত চলে যাওয়া এই সড়কের এক পাশে পাহাড়ের খাঁড়া দেয়াল, আরেক পাশে গভীর খাদ। নেই কোনো নিরাপত্তা দেয়াল।

পাহাড় ধ্বাসের ঝুঁকি এবং আবহাওয়ার নিত্য বদলে যাওয়া পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে একে। বিশেষ করে ‘ক্লিফ হেঙ্গার’ নামে পরিচিত রাস্তার একটি অংশ ভীষণ সরু এবং এর কাছাকাছি গেলে আপনিসহ অতল গহ্বরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

2সিচুয়ান-তিব্বত হাইওয়ে, চীন
বিশ্বের উচ্চতম সড়কগুলির একটি এটি। তুষারপাত এবং ভূমিধস এড়ানোর পাশাপাশি অনেক উচ্চতায় চলা মিলিয়ে এই রাস্তাটি যে কোনো চালককে কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে। তবে এত কিছুর পরও এটি অত্যন্ত ব্যস্ত এক সড়ক। ক্রমাগত ট্রাফিক জ্যাম এবং পথের নানা বাধা-বিঘ্নের কারণে পুরো হাইওয়ে ভ্রমণ করতে কখনো কখনো ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।

আপনি যদি এই রাস্তায় ভ্রমণ করার জন্য যথেষ্ট সাহসী হন, তবে পুরস্কার হিসেবে মিলবে তুষার-ঢাকা পর্বত এবং গভীর গিরিসঙ্কটের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখার সুযোগ ।

3. ibarska State-Road-22-1024x683ইবাসকা মাগ্রিসত্রালা, সার্বিয়া
স্টেট রোড ২২ বা ‘ইবার হাইওয়ে’ স্থানীয়ভাবে কালো মহাসড়ক নামেও পরিচিত। সার্বিয়ার অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়কটি ইউরোপের সবচেয়ে বিপজ্জনক সড়কগুলোর একটি। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি রাজধানী শহর বেলগ্রেডকে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ মন্টেনেগ্রোর সঙ্গেও যুক্ত করেছে। 

লম্বা সোজা রাস্তায় হঠাৎ বিপজ্জনক কোণ বিশেষ করে রাতে দুর্ঘটনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। তবে বেশির ভাগ দুর্ঘটনার জন্য অবশ্য মদ পান করে গাড়ি চালানো বা গাড়ির উচ্চগতিকে দায়ী করা হয়।

4-transfagarasan-road-into-wallachia_47_34485ট্রান্সফগেরাসান, রোমানিয়া
এটি ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর মহাসড়কগুলোর একটি। একই সঙ্গে প্রচণ্ড বিপজ্জনক এক রাস্তাও এটি। ঘোরানো পাহাড়ি সড়কটি কোথাও কোথাও দুই হাজার মিটারের বেশি উচ্চতা দিয়ে গিয়েছে। ১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটিতে ভ্রমণের সময় প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে নয়ন জুড়াবে আপনার।

চুলের কাটার মতো বাঁক, বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ এবং হঠাৎ উচ্চতার পরিবর্তন এই রাস্তা ধরে গাড়ি চালানো পর্যটকদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে। এই মহাসড়কে আপনি অন্য যে ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন, তা হলো ভেড়ার বিশাল পাল। মেষপালকেরা তাদের ভেড়াগুলিকে চারণভূমিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই পথটি ব্যবহার করে। তাই আপনার যদি তাড়াহুড়ো থাকে তবে এই রাস্তাটি এড়িয়ে চলাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

5.-Skippers_Canyon_Queenstown-1024x683-wikiস্কিপারস ক্যানিয়ন রোড, নিউজিল্যান্ড
স্কিপারস ক্যানিয়ন নিউজিল্যান্ডের একটি গিরিখাত। শটওভার নদী এ পথে গিয়েছে। ১৮৬২ সালে এই এলাকায় সোনা আবিষ্কৃত হলে গিরিখাতের মধ্য দিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়ে। খনি শ্রমিকেরা পাথুরে পাহাড়ের মধ্যে শুধুমাত্র সাধারণ সরঞ্জাম এবং বিস্ফোরক ব্যবহার করে এটি তৈরি করে। গিরিখাতের নরম পাথরের কারণে, বৃষ্টি হলে পথটি বিপজ্জনকরকম পিচ্ছিল হয়ে উঠে। 

হঠাৎ খাড়াভাবে নামা কিংবা ওঠে যাওয়া, অগণিত চুলের কাটাসদৃশ বাঁক ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। শুধুমাত্র একমুখী যাতায়াতের মতো প্রশস্ত এটি। এর কুখ্যাতি ও বিপজ্জনক প্রকৃতির কারণে, এই রাস্তাটিতে ভাড়ায় চলাচল করা গাড়ির বিমা কার্যকর হয় না।

রাস্তাটি সম্পূর্ণ হতে হতে খনির সোনার মজুত তলানিতে গিয়ে ঠেকে। কিন্তু ঐতিহাসিক মূল্য এবং অত্যাশ্চর্য দৃশ্যের কারণে এটি আজও একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য।

6জেমস ডালটন হাইওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র
টিভি শো ‘আইস রোড ট্রাকারস’ এই সড়কটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে ভূমিকা রাখে। জেমস ডাল্টন হাইওয়ে নামের এই দীর্ঘ রাস্তাটি ফেয়ারব্যাঙ্কস শহরকে আর্কটিক সার্কেলের ওপরে অবস্থিত উত্তরের জনপদ ডেডহর্সের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

আলাস্কার এক প্রকৌশলীর নামে নামকরণ করা ৬৬৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি ব্যবহার করে মূলত তেলক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জ্বালানি বহনকারী ট্রাকগুলি। রাস্তার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ পাকা, বাকি অংশে আলগা নুড়ি ও পাথর ফেলা।

প্রতিকূল আবহাওয়া যেমন তুষার এবং বরফ—এই রাস্তায় ভ্রমণকারীদের জন্য বড় হুমকি। একেবারে নির্জন এলাকা দিয়ে যাওয়ায় এবং মেরু ভালুকের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে রাস্তাটিকে।

7-জজিলা পাস, ভারত
লাদাখকে কাশ্মীর উপত্যকার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। হিমালয়ের পর্বতমালার বেশ উচ্চতায় অবস্থানের কারণে তুষারপাত এবং বরফ জমে কঠিন হয়ে যাওয়া এখানে অতি স্বাভাবিক ঘটনা। এতে প্রায়ই এটি কয়েক মাস বন্ধ থাকে।

কেবল একটি গাড়ির যাতায়াতের মতো চওড়া পথটি। কোনো নিরাপত্তা দেয়াল নেই এতে। রাস্তার এমন অনেক অংশ পাবেন যেখানে আপনার একপাশে পাহাড়, অন্য পাশে রাস্তার পরেই অতল খাদ। সংক্ষেপে এটি দুর্বলচিত্তদের কোনোভাবেই ভ্রমণ করা উচিত নয় এমন এক রাস্তা।

শীতকালীন আবহাওয়ায় নিরাপত্তা দিতে একটি বড় অংশ বরাবর একটি নতুন সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। যা সারা বছর রাস্তাটি খোলা রাখতে সাহায্য করবে। তবে এটি রাস্তাটিকে আরও নিরাপদ করে কিনা তা দেখার বিষয়।

9.-meadow-roadফেয়ারি মিডোজ রোড, পাকিস্তান
মূর্তিমান এক দুঃস্বপ্নের মতো রাস্তাটি পাকিস্তানের উঁচু সব পর্বতের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। কিছু পয়েন্টে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তিন হাজার মিটার উচ্চতা অতিক্রম করেছে এটি। রাস্তাটা এতটাই সরু যে একবারে একটি গাড়ির জন্য যথেষ্ট প্রশস্ত। আর কোনো নিরাপত্তা দেয়াল না থাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে একেবারে নিচের উপত্যকায় গিয়ে তবেই থামবে গাড়ির পতন। আর এমন দুর্ঘটনা এখানে ঘটেও।

১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি কারাকোরাম হাইওয়েকে ফেয়ারি মিডোজ জাতীয় উদ্যানের ছোট্ট গ্রামের তাতোর সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। অতিমাত্রায় বিপজ্জনক হওয়ায়, রাস্তাটিতে শুধুমাত্র স্থানীয়দের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়।

8.-yangus-baliviaউত্তর ইয়াংগাস সড়ক, বলিভিয়া
অনেকের কাছেই বলিভিয়ার উত্তর ইয়াংগাস সড়ক পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তা। এখানে ঘটা বিভিন্ন দুর্ঘটনা, রাস্তার নানা বাঁক আর ঢালের কারণে এটি পরিচিতি পেয়েছে ‘ডেথ রোড’ বা মৃত্যুসড়ক নামে।  অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে সড়কটির নিরাপত্তার ব্যাপারে কিছু উদ্যোগ নেওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে জানা গেছে।

সড়কটি বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজের সঙ্গে যুক্ত করেছে আমাজনের জঙ্গলের মধ্যকার এলাকা ইয়াংগাসকে। আর এটি করতে গিয়ে বিশাল, দুরারোহ করডিলেরা ওরিয়েন্টাল পর্বতমালা অতিক্রম করতে হয়েছে রাস্তাটিকে। হঠাৎ খাঁড়া নেমে যাওয়া, ওঠা কিংবা কড়া মোচড়—সব মিলিয়ে ভয়ানক এক রাস্তায় পরিণত হয়েছে এটি।

পথের শুরু লা পাজ থেকে, ৩ হাজার ৬৬০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত শহরটি পৃথিবীর উচ্চতম রাজধানী। এখান থেকে শুরুতে ওপর দিকে উঠে রাস্তাটি পৌঁছে ৪ হাজার ৬৫০ মিটার উচ্চতায় লা কুমবরে পাসে। তারপর একেবারে খাঁড়া নামতে শুরু করে করোইকো শহরে, এর উচ্চতা ১ হাজার ২০০ মিটার। আর এই সাড়ে তিন হাজার মিটারের বেশি পতন একে পৃথিবীর বিপজ্জনক রাস্তাগুলোর একটিতে পরিণত করতে সহায়তা করেছে। একটা সময় পর্যন্ত ফি বছর এ রাস্তায় অনেক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটত।

১৯৩০-এর দশকে চাকো যুদ্ধের সময় প্যারাগুয়ের কয়েদিদের দিয়ে বানানো হয় সড়কটি। কোথাও কোথাও পর্বতের খাঁড়া ঢাল কেটে তৈরি করা হয়েছে পথটি। রাস্তার এক পাশে কঠিন পাথুরে তাক, আরেক পাশে ৬০০ মিটার খাঁড়া গিরিখাদ। রাস্তাটির বেশির ভাগ অংশ সাড়ে তিন মিটার বা প্রায় ১১ ফুট চওড়া। অনেক জায়গায় নেই রেলিং।

আমাজনের দিক থেকে আসা উষ্ণ, ভেজা বাতাস আন্দিজের পুবের ঢালে বাধা পেয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই সঙ্গে জন্ম দেয় কুয়াশার। এতে আরও বিপজ্জনক রূপ নেয় রাস্তাটি। গোদের ওপর বিষফোড়া হিসেবে মাঝেমধ্যেই পাহাড় থেকে কাদা বা পাথর ঝরতে শুরু করে, কোথাও কোথাও ওপরের কোনো জলপ্রপাতের পানিতেও সিক্ত হয় রাস্তাটি।

পৃথিবীর রোমাঞ্চপ্রেমীদের কাছে এ পথ পাড়ি দেওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে বিগত বছরগুলোতে সড়কটির আধুনিকায়ন করা হয়। এখন কারও কারও মতে, রাস্তাটি এখন আগের চেয়ে নিরাপদ। সত্যি কি তাই?

10বাইবুর্ত ডি ৯১৫, তুরস্ক
প্যাঁচানো এই পথটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর রাস্তাগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করার মূল কারণ চুলের কাটাসদৃশ বাঁক এবং একপাশের গভীর খাদ। এটি উত্তর উপকূলে কৃষ্ণ সাগরকে বাইবুর্ত শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। প্রাচীন সিল্ক রোডের অংশ ছিল শহরটি প্রাচীনকালে।

রাস্তাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট। রাস্তার আলগা পাথর, প্রায়ই প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখে পড়াসহ বিভিন্ন কারণে এ পথে চলতে হলে চালকদের ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। 

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস ম্যাগাজিন, ডিসকভারি ডট কম, উইকিপিডিয়া

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক পর্যটনে শীর্ষে ব্যাংকক, আকর্ষণীয় শহর প্যারিস

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৬
ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের করা তালিকায় ২০২৫ সালের আকর্ষণীয় শহর নির্বাচিত হয়েছে প্যারিস। ছবি: উইকিপিডিয়া
ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের করা তালিকায় ২০২৫ সালের আকর্ষণীয় শহর নির্বাচিত হয়েছে প্যারিস। ছবি: উইকিপিডিয়া

বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরের তালিকার শীর্ষে আবারও প্যারিস। ২০২৫ সালে শুধু এই শহরে ১ কোটি ৮০ লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছে। পরপর পঞ্চমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরের তালিকায় প্রথম স্থান অক্ষুণ্ন রেখেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। ডেটা অ্যানালিটিক প্রতিষ্ঠান ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত ‘টপ ১০০ সিটি ডেস্টিনেশনস ইনডেক্স ২০২৫’-এ ফ্রান্সের রাজধানী সেরা হয়েছে।

২০২৫ সাল প্যারিসের জন্য ছিল বেশ ব্যস্ত বছর। এ বছর নটর ডেম ক্যাথেড্রাল পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্যারিসের ফুটবল ক্লাব পিএসজি প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের জয় করে এ বছরেই। সেই ট্রফি দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফুটবলভক্তদের ভিড় হয় প্যারিসে। সব মিলিয়ে পর্যটকদের আগমন ছিল ব্যাপক। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পর্যটন নীতি, অবকাঠামো এবং প্রস্তুতির দিক থেকে এগিয়ে থাকায় শহরটি এই চাপ সামলাতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল।

ইউরো মনিটরের এই সূচকে পৃথিবীর বিভিন্ন শহরের সামগ্রিক আকর্ষণীয় দিকগুলো মূল্যায়ন করা হয়। এর মানদণ্ডের মধ্যে রয়েছে পর্যটন ও অর্থনৈতিক কার্যকারিতা, টেকসই ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, অবকাঠামো ও পর্যটন নীতি।

এ বছরও তালিকায় ইউরোপ আধিপত্য বজায় রেখেছে। তালিকার শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে ছয়টিই ইউরোপের। প্যারিসের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মাদ্রিদ। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে রোম ও মিলান। সপ্তমে আমস্টারডাম আর অষ্টমে উঠে এসেছে বার্সেলোনার নাম।

অন্যদিকে, লন্ডন গত বছর টপ টেন থেকে ছিটকে ১৩তম হয়েছিল। এবার আরও নিচে নেমে জায়গা হয়েছে ১৮ নম্বরে। এর ওপরে ১৭ নম্বরে আছে হংকং এবং নিচে ১৯ নম্বরে কিয়োটো। পর্যটন অবকাঠামোর দিক থেকে লন্ডন বিশ্বে চতুর্থ হলেও নীতি, নিরাপত্তা ও টেকসই ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকক। ছবি: ফ্রিপিক
আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকক। ছবি: ফ্রিপিক

আন্তর্জাতিক পর্যটনে শীর্ষে ব্যাংকক

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের রাজধানীগুলো ভালো অবস্থানে রয়েছে তালিকায়। টোকিও রয়েছে তৃতীয় স্থানে, সিঙ্গাপুর নবম আর সিউল দশম। টোকিওর বিমানবন্দর সম্প্রসারণে বড় বিনিয়োগের কারণে পর্যটন অবকাঠামো র‍্যাঙ্কিংয়েও শহরটি তৃতীয় স্থানে রয়েছে। নারিতা এয়ারপোর্টে নতুন রানওয়ে এবং দ্বিতীয় রানওয়ের সম্প্রসারণ—সব মিলিয়ে ২০৩৯ সালের মধ্যে যাত্রী ধারণক্ষমতা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা চলছে জাপানে।

আমেরিকা মহাদেশ থেকে শীর্ষ ১০-এর একমাত্র শহর নিউইয়র্ক। এর অবস্থান তালিকার ৬ নম্বরে। লস অ্যাঞ্জেলেস পাঁচ ধাপ এগিয়ে এখন ১৩তম অবস্থানে। পর্যটন পারফরম্যান্সের দিক থেকে বিশ্বে সবার ওপরে আছে অরল্যান্ডো। দেশীয় পর্যটনের বড় চাপ, ইউনিভার্সাল অরল্যান্ডোর নতুন ‘এপিক ইউনিভার্স’ থিম পার্ক, সি ওয়ার্ল্ড ও ডিজনি ওয়ার্ল্ডের বড় উন্নয়ন মিলিয়ে অরল্যান্ডো ছিল চলতি বছরের অন্যতম আকর্ষণ।

আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকক। ইউরো মনিটরের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর শহরটিতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ কোটি ৩ লাখ। দ্বিতীয় স্থানে হংকং। এর পর্যটক সংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি ৩২ লাখ। ২ কোটি ২৭ লাখ পর্যটক নিয়ে তৃতীয় লন্ডন এবং প্রায় ২ কোটি ৪ লাখ পর্যটক নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে আছে জুয়ার নগরী ম্যাকাউ।

২০২৫ সালে পর্যটন প্রবণতায় বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরগুলো এখন শুধু দর্শনার্থীর সংখ্যা নয়, এর সঙ্গে তাদের থাকার মেয়াদ, ব্যয় এবং স্থানীয় পরিবেশ ও সংস্কৃতির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে।

নিরাপত্তা চাহিদা, বাড়তি ভ্রমণ, অতিরিক্ত ভিড় এবং মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক দেশ নতুন প্রবেশ ফি, ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন ব্যবস্থা এবং আরও কড়াকড়ি নীতি বাস্তবায়ন করছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালে ভিসা ও ভ্রমণ ফি বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও আগামী বছর নতুন ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে। জাপান ২০২৮ সালের মধ্যে নতুন ভিসা ফি ও ই-অথরাইজেশন ব্যবস্থা চালুর কথা বিবেচনা করছে।

ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের ২০২৫ সালের শীর্ষ ১০ সিটি ডেস্টিনেশন

১. প্যারিস

২. মাদ্রিদ

৩. টোকিও

৪. রোম

৫. মিলান

৬. নিউইয়র্ক

৭. আমস্টারডাম

৮. বার্সেলোনা

৯. সিঙ্গাপুর

১০. সিউল

২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যার ভিত্তিতে শীর্ষ ১০ শহর

১. ব্যাংকক (৩ কোটি ৩ লাখ)

২. হংকং (২ কোটি ৩২ লাখ)

৩. লন্ডন (২ কোটি ২৭ লাখ)

৪. ম্যাকাউ (২ কোটি ৪ লাখ)

৫. ইস্তাম্বুল (১ কোটি ৯৭ লাখ)

৬. দুবাই (১ কোটি ৯৫ লাখ)

৭. মক্কা (১ কোটি ৮৭ লাখ)

৮. আনাতোলিয়া (১ কোটি ৮৬ লাখ)

৯. প্যারিস (১ কোটি ৮৩ লাখ)

১০. কুয়ালালামপুর (১ কোটি ৭৩ লাখ)

সূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে শুষ্ক চুলের যত্নে সেরা স্যালন ট্রিটমেন্ট

ফারিয়া রহমান খান
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৫
নিয়মিত তেল, হেয়ার প্যাক ও মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্যালন ট্রিটমেন্ট চুল করে মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
নিয়মিত তেল, হেয়ার প্যাক ও মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্যালন ট্রিটমেন্ট চুল করে মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

রুক্ষ ও শুষ্ক চুল আমাদের সৌন্দর্য ম্লান করে দেয়। এই রুক্ষ-শুষ্ক ভাব দূর করে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার যত্নের। নিয়মিত তেল, হেয়ার প্যাক ও মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্যালন ট্রিটমেন্ট চুল করে মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে আপনার চুলের ধরন ও সমস্যা অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট বেছে নিতে হবে।

চুল রুক্ষ হওয়ার কারণ

অতিরিক্ত শ্যাম্পু, হেয়ার ড্রায়ার, কার্লিং আয়রন বা ফ্ল্যাট আয়রনের অতিরিক্ত ব্যবহার, পার্ম বা হেয়ার ডাইয়ের মতো রাসায়নিকের ব্যবহার এবং খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ক্যারোটিন ও বায়োটিনের মতো পুষ্টি উপাদানের অভাব, চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতার প্রধান কারণ।

চুল মসৃণ ও প্রাণবন্ত রাখতে জেনে নিন কয়েকটি স্যালন ট্রিটমেন্ট।

রুক্ষ ও শুষ্ক চুল আমাদের সৌন্দর্য ম্লান করে দেয়। এই রুক্ষ-শুষ্ক ভাব দূর করে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার যত্নের। ছবি: পেক্সেলস
রুক্ষ ও শুষ্ক চুল আমাদের সৌন্দর্য ম্লান করে দেয়। এই রুক্ষ-শুষ্ক ভাব দূর করে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার যত্নের। ছবি: পেক্সেলস

সিস্টেইন ট্রিটমেন্ট

এই ট্রিটমেন্টে কেরাটিন প্রোটিনে উপস্থিত প্রাকৃতিক অ্যামিনো অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। প্রথমে চুল ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এরপর চুলের গোড়া এড়িয়ে সিস্টেইন কমপ্লেক্স প্রয়োগ করে ৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে শেষে ব্লো ড্রাই ও ফ্ল্যাট আয়রন করা হয়। এটি চুলের গভীরে প্রবেশ করে চুল মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে এবং চুলের রুক্ষ ভাব দূর করে। এই ট্রিটমেন্টে চুল অতিরিক্ত স্ট্রেট করা হয় না। ফলে চুলে একটা প্রাকৃতিক ভাব থাকে।

কেরাটিন ট্রিটমেন্ট

এটি রুক্ষ চুলের জন্য একটি সেমি-পারমানেন্ট সমাধান। কেরাটিন, কন্ডিশনার ও রাসায়নিকের মিশ্রণ ব্যবহার করে রুক্ষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুল মসৃণ ও প্রাণবন্ত করে তোলা হয়। এই ট্রিটমেন্ট ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং চুলের জট ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।

হট-অয়েল ট্রিটমেন্ট

চুলে তাৎক্ষণিক উজ্জ্বলতা দিতে এবং মসৃণ করতে হট-অয়েল ট্রিটমেন্ট খুবই কার্যকর। সাধারণত জলপাই বা নারকেলের তেল হালকা গরম করে ১০ থেকে ২০ মিনিটের জন্য মাথায় ম্যাসাজ করা হয়। তারপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। এটি চুলের গভীরে আর্দ্রতা প্রবেশ করিয়ে চুল প্রাণবন্ত করে। এ ট্রিটমেন্ট রুক্ষ চুলের জন্য খুবই উপকারী।

ময়শ্চার ট্রিটমেন্ট

এই হাইড্রেশন থেরাপি চুলের গভীরে ঢুকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও প্রোটিন সরবরাহ করে। এটি চুল শক্তিশালী করে চুলের আগা ফাটা ও ভেঙে যাওয়া রোধে সহায়ক। ময়শ্চার ট্রিটমেন্টে চুলের বাইরের অংশে একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি হয়, যা চুলকে হিটিং টুলসের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

ডিটক্স ট্রিটমেন্ট

চুল ও মাথার ত্বকে জমে থাকা রাসায়নিক এবং বিভিন্ন পণ্যের অবশিষ্টাংশ দূর করতে দরকার ডিটক্স ট্রিটমেন্ট। এটি মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে এবং চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এর ফলে চুল নরম ও মসৃণ হয়। ডিটক্স ট্রিটমেন্ট চুলের বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হেয়ার স্পা

চুলের পুষ্টি সরবরাহ এবং নমনীয়তা বাড়ানোর ক্ল্যাসিক উপায় হলো হেয়ার স্পা করা। এতে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার প্যাক ও ক্রিম ব্যবহার করা হয়। একটি ভালো হেয়ার স্পা ট্রিটমেন্ট আপনার চুল মসৃণ করে জটমুক্ত রাখবে। এ ছাড়া কোনো ক্ষতি ছাড়াই চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও সোজা রাখবে। এটি ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত চুল ঠিক রাখে।

টোনিং ট্রিটমেন্ট

যাঁরা চুল রং করেছেন, এই ট্রিটমেন্ট তাঁদের জন্য। এই ট্রিটমেন্টে চুলের রঙের ত্রুটি সংশোধন করে রঙের স্থায়িত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে তোলা হয়। এটি চুল বিবর্ণ হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এবং উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বজায় রাখে।

হেয়ার গ্লসিং ট্রিটমেন্ট

চুল মসৃণ করে আয়নার মতো উজ্জ্বলতা আনতে হেয়ার গ্লসিং ট্রিটমেন্ট সেরা। এটি চুল কালার করার পরে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য করা হয়। এটি চুলের টেক্সচার উন্নত এবং চুলের রুক্ষতা দূর করে।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৫
আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

মেষ

আজ আপনার রক্ত গরম। হয়তো ভাবছেন, আপনিই পৃথিবীর একমাত্র ব্যক্তি, যিনি এত দ্রুত এবং এত সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে সামান্য দেরি হলেই রেগে গিয়ে এমন কিছু বলে বসতে পারেন, যা পরে লজ্জায় লুকিয়ে ফেলতে চাইবেন। প্রেমিক/প্রেমিকার মনোযোগ পেতে গেলে আজ নিজেকে ‘প্রথম পুরস্কার’ হিসেবে ঘোষণা করতে হতে পারে। মসলাদার খাবার একদম না। তবে বিশেষ করে যদি স্ত্রী/স্বামী নিজের হাতে তা রাঁধেন, মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। হজমের চাইতে ঝগড়া আটকানো বেশি জরুরি।

বৃষ

টাকা আজ আপনার পকেটেই আসবে, কিন্তু বিলাসী মন সেই টাকাকে সোজা একটা দামি কফি বা একটা অতিরিক্ত ক্রিস্পি ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের দিকে নিয়ে যাবে। হ্যাঁ, আপনি টাকা বাঁচাতে পারেন, কিন্তু কেন? পুরোনো একটি বিনিয়োগ থেকে অপ্রত্যাশিত লাভ হতে পারে। জীবনসঙ্গী আজ আপনার প্রিয় বিস্কুট বা চিপসের প্যাকেটটি গোপনে শেষ করে দেবেন। প্রতিশোধ নিতে যাবেন না, শান্তি বজায় রাখুন। কচ্ছপ ও খরগোশের গল্পটা মনে রাখুন। কিন্তু আপনি রেসের শেষে কফিটা হাতে না পেলে রেগে যাবেন।

মিথুন

আজ আপনার মনে পাঁচটি নতুন ব্যবসার আইডিয়া আসবে, তিনটি নতুন ভাষা শেখার ইচ্ছা হবে এবং সঙ্গে পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া করার একটা তাগিদ অনুভব করবেন। এত দ্রুত কথা বলবেন যে শ্রোতা ভাববে, তাদের ইন্টারনেট কানেকশন স্লো হয়ে গেছে। ফোনটি আজ আপনাকে বারবার মনে করিয়ে দেবে যে এটি একটি ‘যোগাযোগের মাধ্যম’, ‘চিন্তা করার মাধ্যম’ নয়। অটোরিকশা বা বাসের চালক আজ হঠাৎ আপনাকে জীবনের গভীরতম সত্য বোঝানোর চেষ্টা করতে পারেন। ভাড়া দিয়ে চুপচাপ নেমে পড়ুন। আজ কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একটা কয়েন টস করুন। এতেও যদি মন স্থির না হয়, তবে টস করাই বন্ধ করে দিন।

কর্কট

আজ মেজাজ রোলার-কোস্টারের মতো। সকালে হয়তো পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে কেঁদে ফেলবেন, আর সন্ধ্যায় কোনো পুরোনো মিম মনে পড়ে খিলখিল করে হাসবেন। মনে হবে ঘরটাই আপনার একমাত্র সুরক্ষিত স্থান—যেখানে নিরাপদে নোংরা প্লেটের পাহাড় তৈরি করতে পারেন। আজ মায়ের বা শাশুড়ির কাছে আপনি পৃথিবীর সেরা সন্তান, যদি নিজেই ব্রেকফাস্টটা তৈরি করে দেন। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি পালাতে পারলে সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন। তবে যাওয়ার আগে মনিটরের ওপর একটা মিষ্টি হাসি রেখে যান। আজ আলুভাজা (ফ্রেঞ্চ ফ্রাই) খেতেই পারেন। কারণ, আলু দেখলেই আপনার ঘরের প্রতি প্রেম উপচে পড়ে।

সিংহ

লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন! আজ আপনার দিন। আপনি চাইবেন সবাই আপনার দিকে তাকাক, আপনার কথা শুনুক এবং আপনার নতুন হেয়ারস্টাইলের প্রশংসা করুক। তবে সমস্যা হলো, এক সহকর্মী আপনার পুরোনো আইডিয়াটাকেই নতুন বলে চালানোর চেষ্টা করবে। এতে মেজাজ খারাপ হবে। বসকে খুশি করতে গিয়ে বাড়তি কাজ নিয়ে নেবেন না, যেটা শেষমেশ নিজেকেই করতে হবে। প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলার সময় দয়া করে ‘আমি, আমি, আমি’ এড়িয়ে চলুন। একটু ‘তুমি’ বলুন, সম্পর্ক ভালো থাকবে। আজ উজ্জ্বল হলুদ বা কমলা পরুন। কারণ, গ্রহরা চায় আপনি যেন সবার চোখে পড়েন, পাছে কেউ আপনাকে মিস না করে!

কন্যা

আজ আপনার জীবনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে—আলমারিতে রাখা কাপড়গুলো কেন ঠিকঠাক ভাঁজ করা নেই! পাঁচবার ঘর পরিষ্কার করবেন এবং ষষ্ঠবারের সময় দেখবেন, প্রথমবার যেখানে ধুলা ছিল, ঠিক সেখানেই আবার ধুলো জমেছে। কাজের চাপে স্বাস্থ্য আজ তেমন খারাপ হবে না, কিন্তু কি-বোর্ডের ‘Ctrl’ বাটনটি ঠিক জায়গায় আছে কি না, এই নিয়ে স্ট্রেস হতে পারে। ছোট ছোট জিনিস, যেমন একটা নতুন কলম, কেনার সময়ও আপনি গুগলে রিভিউ চেক করবেন। এত সাবধানী কেন বাপু? আপনি এত বেশি বুদ্ধিমান যে সাধারণ মানুষ আপনার কথায় অর্ধেক সময় কেবল মাথা নাড়বে। কারণ, তারা কিছুই বুঝবে না।

তুলা

আজ সিদ্ধান্ত নিতে গেলে গন্ডগোল পাকবে। টিভিতে কী দেখবেন, কী খাবেন, এমনকি কোন দিকে তাকাবেন—এই নিয়েও আপনি দ্বিধায় পড়বেন। তবে মজার বিষয় হলো, আপনি খুব সহজে বন্ধু বা সহকর্মীদের ঝগড়া মিটিয়ে দেবেন। আজ হয়তো আপনি দুটি কবুতরের লড়াই মিটিয়ে দিতে পারেন, যারা ঠিক করতে পারছে না যে কোন জায়গায় তারা বসবে। জীবনসঙ্গী আপনাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন, ‘তুমি কি ভালোবাস?’ আপনি উত্তর দেবেন, ‘দুটিই!’ অর্থাৎ ভালোবাসা এবং স্বাধীনতা, দুটিই আপনার চাই! সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হোক বা না হোক, আপনার সেলফিটা নিখুঁত হওয়া চাই।

বৃশ্চিক

আজ আপনি রহস্যময় এবং তীব্র! আপনার নীরবতা দেখে সবাই ভাববে আপনি হয়তো কোনো গভীর ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু আসল কথা হলো, আপনি স্রেফ ভুলে গেছেন যে কী বলতে চেয়েছিলেন। সঙ্গীকে অতিরিক্ত প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন। তারা গত সপ্তাহে কার সঙ্গে লাঞ্চ করেছিলেন, সেই রহস্য সমাধান করার চেষ্টা করবেন না। আপনার তীব্র ভালোবাসা আজ একটু ‘কুল’ থাকুক। আপনার সহকর্মী ভাববে আপনি তাদের দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছেন যেন তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন। আসলে আপনি ভাবছেন, তাদের শার্টটা আয়রন করা নেই কেন! আপনার ভেতরের শক্তি আজ আপনাকে দিয়ে এমন কাজ করিয়ে নেবে, যা আপনার করার কথা ছিল না।

ধনু

অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মন আজ আপনাকে ঘর থেকে বের করে এক বিশাল ভ্রমণে যেতে উৎসাহিত করবে। হয়তো পাসপোর্ট হাতে নেবেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনার ভ্রমণ কেবল বিছানা থেকে ফ্রিজ এবং ফ্রিজ থেকে সোফার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। জীবন যে কত ছোট, সেই বিষয়ে আপনি গভীর জ্ঞান লাভ করবেন। বিশেষত যখন দেখবেন, পিৎজা ডেলিভারিটা আসতে কত সময় লাগে। অনেক টাকা খরচ করার পর উপলব্ধি করবেন—অভিজ্ঞতা কেনা যায় না, কিন্তু ভালো চাউমিন তো কেনা যায়! সবকিছুর শেষে আপনি নিশ্চিত, কাল সকালেই জিমে যাবেন। গ্রহ-নক্ষত্র এই মিথ্যাটাকে সমর্থন করে না।

মকর

আজ ১০ মিনিটের জন্য আরাম করলেই মনে হবে—‘ওহ মাই গড, আমি তো জাতির সঙ্গে বেইমানি করলাম!’ কাজে ডুবে থাকা আপনার স্বভাব, কিন্তু আজ গ্রহরা চাচ্ছে একটু চা বা কফি নিয়ে বসুন।

সহকর্মীকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন যে ছুটির দিনও কাজ করা একধরনের ‘স্বেচ্ছাসেবী আত্ম-উন্নয়ন’। নতুন কোনো বিনিয়োগের সুযোগ আসবে। সেই সুযোগটা হবে এমন একটা জিনিস কেনা, যেটা আপনার দরকার নেই, কিন্তু মনে করবেন যে এটা আপনার ভবিষ্যতের জন্য ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’। পুরোনো ডায়েরি খুলে দেখুন, সেখানে আজ কী কাজ করার কথা লেখা ছিল। দেখবেন, সেই কাজটা গতকালই শেষ করে ফেলেছেন।

কুম্ভ

আজ নিজেকে একজন বিপ্লবী, একজন চিন্তাবিদ বা একজন সমাজসংস্কারক মনে করবেন। আজকের প্রধান বিপ্লব হবে, কেন ওয়াইফাইয়ের স্পিড এত স্লো! সবচেয়ে বড় চিন্তা হবে, ‘পৃথিবীর সব লোক কি বোকা? আমি ছাড়া?’ আপনি আজ ভার্চুয়াল মিটিংয়ে নিচের অংশে পায়জামা পরে বসবেন, কিন্তু মনে মনে ভাববেন—আপনিই এই পৃথিবীর সেরা ফ্যাশন আইকন। একজন বন্ধু আজ আপনার অদ্ভুত আইডিয়াগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবে, কিন্তু মনে মনে ভাববে, ‘এটা আবার কী বলল!’ পুরোনো কাজগুলোকে নতুন মোড়কে পরিবেশন করার চেষ্টা করবেন; যেমন ডাল-ভাতকে ‘ফিউশন কুইজিন’ বলে চালিয়ে দেওয়া।

মীন

আপনার মাথা আজ মেঘের ওপরে। হয়তো ক্লাসের মাঝে বা মিটিংয়ের মাঝে হঠাৎ করে এমন এক স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন, যেখানে একটি কথা বলা মাছ আপনাকে জীবন নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছে। বেলা ৩টার মিটিংয়ে দয়া করে ঘুমিয়ে পড়বেন না। নোট নেওয়ার ভান করে কাগজে আঁকিবুঁকি কাটুন। প্রেমিক/প্রেমিকা আপনাকে একটা রিয়েলিটি চেক দিতে পারে। তাতে দুঃখ না পেয়ে বলুন, ‘আমার স্বপ্ন জগতে এর উত্তর আছে!’ আজ কোনো বন্ধু এসে আপনার কাছে ধার চাইতে পারে। ‘নেই’ বলাটা আপনার জন্য কঠিন, তাই ব্যাংক ব্যালেন্সকে আজ ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত’ হিসেবে ঘোষণা করুন। ভয় পাবেন না!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুলা দিয়ে মলা শুঁটকির ঝাল

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
মুলা দিয়ে মলা শুঁটকির ঝাল
মুলা দিয়ে মলা শুঁটকির ঝাল

শীতের সবজি মুলা উঠেছে বাজারে। মুলা দিয়ে কখনো শুঁটকি খেয়েছেন? আপনাদের জন্য মুলা দিয়ে শুঁটকির ঝালের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।

উপকরণ

সাদা বা লাল মুলা ১ কেজি, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, রসুনকুচি ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকলি ১ মুঠ, কাঁচা মরিচ ফালি ৫ থেকে ৬টি, মলা শুঁটকি ১০০ গ্রাম, আদা ও রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ, মরিচ ও ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ করে, লবণ স্বাদমতো, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল ৪ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২টি।

প্রণালি

মুলা ও শুঁটকি শুকনা কড়াইতে ভেজে গরম পানিতে ধুয়ে নিন। পরে মুলার খোসা ফেলে গোল করে কেটে নিন। কড়াইতে সয়াবিন তেল গরম হলে পেঁয়াজ ও রসুনকুচি, মলা মাছের শুঁটকি আর তেজপাতা দিয়ে দু-তিন মিনিট ভেজে নিন। পরে আদা ও রসুনবাটা, হলুদ, মরিচ ও ধনেগুঁড়া এবং লবণ দিয়ে কষিয়ে নিন। ফুটে উঠলে কাঁচা মরিচ ফালি ও পেঁয়াজকলি দিয়ে আরও পাঁচ-সাত মিনিট রান্না করুন। এরপর ধনেপাতাকুচি ছড়িয়ে লবণ দেখে নামিয়ে নিন। এবার গরম-গরম পরিবেশন করুন মুলা দিয়ে শুঁটকির ঝাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত