ঠান্ডার সঙ্গে যুদ্ধ
ফাহিম হাসনাত
রুহি সেনেট, একজন তুর্কি ইউটিউবার। বিশ্বের দুর্গম জায়গাগুলোর ভ্রমণ ভিডিও নির্মাণের জন্য বেশ বিখ্যাত তিনি। সম্প্রতি সেনেট রাশিয়ার সাখা অঞ্চলের ওমিয়াকনে ভ্রমণ করে প্রাণের ঝুঁকিতে পড়েছিলেন। এই অঞ্চলে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা গ্রাম। পৃথিবীর এই শীতলতম স্থানে ভিডিও ধারণের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে রুহির নাক হারানোর মতো অবস্থা হয়েছিল।
ওমিয়াকন অ্যান্টার্কটিকার বাইরে পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম স্থান হিসেবে চিহ্নিত। ২০২৪ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, সেখানে প্রায় দুই হাজার মানুষের বসবাস। এই জায়গায় তাপমাত্রা মাইনাস ৬৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে, যা উত্তর গোলার্ধে রেকর্ড।
‘দ্য কোলডেস্ট ভিলেজ অন আর্থ’ শিরোনামের ভিডিওতে রুহি দেখান কীভাবে তিনি মস্কো থেকে সাত ঘণ্টার এক দীর্ঘ ফ্লাইট এবং আরও ৯০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে সেই সাইবেরিয়ান গ্রামে পৌঁছেছিলেন। রাত ২টায় যখন তিনি সে গ্রামে পৌঁছান, থার্মোমিটারে তাপমাত্রা তখন মাইনাস ৬০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ঘর ছেড়ে বাইরের ভয়ানক পরিস্থিতিতে রুহিকে ভিডিও ধারণের জন্য রেইনডিয়ার হরিণের পশমে তৈরি জুতা, ট্রাউজার, ওভারকোটসহ ২০টির বেশি পোশাক পরতে হয়েছিল।
ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বাইরে বের হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর চোখের পাপড়ি বরফে জমে যাচ্ছিল। সে সময় তিনি ত্বকে কাঁটা ফোটার অনুভূতি পাচ্ছিলেন। ভিডিওতে রুহি বলেন, কীভাবে মানুষ এখানে এই তীব্র ঠান্ডা সহ্য করে? সেখানে মোবাইল কাজ করা বন্ধ করে দেয়, পার্কিং করা গাড়িগুলো কয়েক মুহূর্তের মধ্যে বরফে জমে যায়।
বাইরে হাঁটার কিছুক্ষণের মধ্যে রুহি ক্যামেরার দিকে বুড়ো আঙুল তুলে দেখান। দেখা যায়, সেখানে একটি বড় হলুদ ফোসকা পড়েছে। আরেক দৃশ্যে দেখা যায়, তিনি বরফে জমে যাওয়া একটি নেকড়ে ও একটি খরগোশের মৃতদেহ তুলে ধরছেন।
ভিডিওতে ইয়েভডোকিয়া নামক স্থানীয় এক পশুপালকের দৈনন্দিন জীবনচিত্র ধারণের করার সময় রুহির মুখ হঠাৎ করেই অসাড় হয়ে পড়ে। ভিডিওতে রুহি বলেন, ‘আমি আমার মুখের বাঁ দিকটা নাড়াতে পারছিলাম না; এক পাশ যেন পুরোই অবশ হয়ে গিয়েছিল। তারপর আমার নাক জমে যেতে শুরু করল। ইয়েভদোকিয়া তৎক্ষণাৎ বিষয়টি বুঝে ফেললেন।’
১৫ মিনিটের কম সময় বাইরে থাকার পর রুহির নাকের ডগায় সাদা দাগ পড়তে শুরু করে, যা গুরুতর ফ্রস্টবাইটের লক্ষণ। ইয়েভদোকিয়া বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ঠান্ডা রক্তনালিগুলোকে সংকুচিত করে। ফলে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়। পর্যাপ্ত উষ্ণতা ছাড়া, কোষের ভেতরের পানি বরফে পরিণত হয়, কোষ ফেটে যায়, তীব্র ব্যথা ও টিস্যুর মৃত্যু ঘটে।
রুহিকে দ্রুত মুখ ঢেকে রাখার ও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বলা হয়, না হলে তাঁর নাক একদম কালো হয়ে যেতে পারে। ইয়েভদোকিয়া তাঁকে অ্যালোভেরা ও অ্যালকোহলের মিশ্রণে একটি ঘরোয়া চিকিৎসা দেন। কৌটায় তুলো ডুবিয়ে রুহিকে বলেন, ‘এভাবে ভিজিয়ে ফ্রস্টবাইট হওয়া জায়গায় লাগাতে হবে, কিন্তু ঘষতে পারবে না, বুঝলে? না হলে রক্তনালি ও কোষগুলো আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে ঘা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।’
এর পর থেকে রুহি প্রতি ১০ মিনিটের বেশি বাইরে থাকতে পারতেন না।
ভিডিওর শেষে দেখা যায়, রুহি তাঁর নাকে সেই তুলো চেপে ধরে রেখেছেন এবং পরবর্তী দৃশ্যগুলোয় তিনি আবার ক্যামেরার সামনে ফিরে আসেন। কিন্তু মনে হচ্ছিল, তিনি গুরুতর কোনো ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন।
রুহির ওমিয়াকন যাত্রা শুধু একটি রোমাঞ্চকর ভ্রমণকাহিনি নয়, এটি প্রকৃতির চরম ক্ষমতার সামনে মানুষের অসহায়ত্বের এক জ্বলন্ত উদাহরণ। এই অভিজ্ঞতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, কীভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ও সর্বোত্তম প্রস্তুতি সত্ত্বেও প্রকৃতির কাছে মানুষ দুর্বল। স্থানীয়দের জ্ঞান ও প্রতিকূলতার সঙ্গে মানিয়ে চলার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা ছাড়া এই হিমশীতল প্রান্তরে টিকে থাকা যে প্রায় অসম্ভব, ওমিয়াকনে রুহির বেঁচে থাকার সেই প্রাণান্তকর লড়াই ছিল তারই প্রমাণ।
রুহি সেনেট, একজন তুর্কি ইউটিউবার। বিশ্বের দুর্গম জায়গাগুলোর ভ্রমণ ভিডিও নির্মাণের জন্য বেশ বিখ্যাত তিনি। সম্প্রতি সেনেট রাশিয়ার সাখা অঞ্চলের ওমিয়াকনে ভ্রমণ করে প্রাণের ঝুঁকিতে পড়েছিলেন। এই অঞ্চলে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা গ্রাম। পৃথিবীর এই শীতলতম স্থানে ভিডিও ধারণের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে রুহির নাক হারানোর মতো অবস্থা হয়েছিল।
ওমিয়াকন অ্যান্টার্কটিকার বাইরে পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম স্থান হিসেবে চিহ্নিত। ২০২৪ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, সেখানে প্রায় দুই হাজার মানুষের বসবাস। এই জায়গায় তাপমাত্রা মাইনাস ৬৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে, যা উত্তর গোলার্ধে রেকর্ড।
‘দ্য কোলডেস্ট ভিলেজ অন আর্থ’ শিরোনামের ভিডিওতে রুহি দেখান কীভাবে তিনি মস্কো থেকে সাত ঘণ্টার এক দীর্ঘ ফ্লাইট এবং আরও ৯০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়ে সেই সাইবেরিয়ান গ্রামে পৌঁছেছিলেন। রাত ২টায় যখন তিনি সে গ্রামে পৌঁছান, থার্মোমিটারে তাপমাত্রা তখন মাইনাস ৬০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ঘর ছেড়ে বাইরের ভয়ানক পরিস্থিতিতে রুহিকে ভিডিও ধারণের জন্য রেইনডিয়ার হরিণের পশমে তৈরি জুতা, ট্রাউজার, ওভারকোটসহ ২০টির বেশি পোশাক পরতে হয়েছিল।
ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বাইরে বের হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর চোখের পাপড়ি বরফে জমে যাচ্ছিল। সে সময় তিনি ত্বকে কাঁটা ফোটার অনুভূতি পাচ্ছিলেন। ভিডিওতে রুহি বলেন, কীভাবে মানুষ এখানে এই তীব্র ঠান্ডা সহ্য করে? সেখানে মোবাইল কাজ করা বন্ধ করে দেয়, পার্কিং করা গাড়িগুলো কয়েক মুহূর্তের মধ্যে বরফে জমে যায়।
বাইরে হাঁটার কিছুক্ষণের মধ্যে রুহি ক্যামেরার দিকে বুড়ো আঙুল তুলে দেখান। দেখা যায়, সেখানে একটি বড় হলুদ ফোসকা পড়েছে। আরেক দৃশ্যে দেখা যায়, তিনি বরফে জমে যাওয়া একটি নেকড়ে ও একটি খরগোশের মৃতদেহ তুলে ধরছেন।
ভিডিওতে ইয়েভডোকিয়া নামক স্থানীয় এক পশুপালকের দৈনন্দিন জীবনচিত্র ধারণের করার সময় রুহির মুখ হঠাৎ করেই অসাড় হয়ে পড়ে। ভিডিওতে রুহি বলেন, ‘আমি আমার মুখের বাঁ দিকটা নাড়াতে পারছিলাম না; এক পাশ যেন পুরোই অবশ হয়ে গিয়েছিল। তারপর আমার নাক জমে যেতে শুরু করল। ইয়েভদোকিয়া তৎক্ষণাৎ বিষয়টি বুঝে ফেললেন।’
১৫ মিনিটের কম সময় বাইরে থাকার পর রুহির নাকের ডগায় সাদা দাগ পড়তে শুরু করে, যা গুরুতর ফ্রস্টবাইটের লক্ষণ। ইয়েভদোকিয়া বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ঠান্ডা রক্তনালিগুলোকে সংকুচিত করে। ফলে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়। পর্যাপ্ত উষ্ণতা ছাড়া, কোষের ভেতরের পানি বরফে পরিণত হয়, কোষ ফেটে যায়, তীব্র ব্যথা ও টিস্যুর মৃত্যু ঘটে।
রুহিকে দ্রুত মুখ ঢেকে রাখার ও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বলা হয়, না হলে তাঁর নাক একদম কালো হয়ে যেতে পারে। ইয়েভদোকিয়া তাঁকে অ্যালোভেরা ও অ্যালকোহলের মিশ্রণে একটি ঘরোয়া চিকিৎসা দেন। কৌটায় তুলো ডুবিয়ে রুহিকে বলেন, ‘এভাবে ভিজিয়ে ফ্রস্টবাইট হওয়া জায়গায় লাগাতে হবে, কিন্তু ঘষতে পারবে না, বুঝলে? না হলে রক্তনালি ও কোষগুলো আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে ঘা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।’
এর পর থেকে রুহি প্রতি ১০ মিনিটের বেশি বাইরে থাকতে পারতেন না।
ভিডিওর শেষে দেখা যায়, রুহি তাঁর নাকে সেই তুলো চেপে ধরে রেখেছেন এবং পরবর্তী দৃশ্যগুলোয় তিনি আবার ক্যামেরার সামনে ফিরে আসেন। কিন্তু মনে হচ্ছিল, তিনি গুরুতর কোনো ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন।
রুহির ওমিয়াকন যাত্রা শুধু একটি রোমাঞ্চকর ভ্রমণকাহিনি নয়, এটি প্রকৃতির চরম ক্ষমতার সামনে মানুষের অসহায়ত্বের এক জ্বলন্ত উদাহরণ। এই অভিজ্ঞতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, কীভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ও সর্বোত্তম প্রস্তুতি সত্ত্বেও প্রকৃতির কাছে মানুষ দুর্বল। স্থানীয়দের জ্ঞান ও প্রতিকূলতার সঙ্গে মানিয়ে চলার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা ছাড়া এই হিমশীতল প্রান্তরে টিকে থাকা যে প্রায় অসম্ভব, ওমিয়াকনে রুহির বেঁচে থাকার সেই প্রাণান্তকর লড়াই ছিল তারই প্রমাণ।
দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারের বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধির স্বাক্ষর নিয়ে ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট আয়োজন করেছে এক বিশেষ অনুষ্ঠান। নাম ‘দ্য লোকাল কালিনারি হেরিটেজ অব বাংলাদেশ’। এই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অপ্রচলিত এবং হারিয়ে যাওয়া খাবার তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, যাতে সবার সামনে...
২ ঘণ্টা আগেবিকেল বেলা ছাদে ফুরফুরে হাওয়া খেতে যাচ্ছেন? খালি হাতে যাবেন নাকি? সঙ্গে জিবে জল আনা টক-ঝাল-মিষ্টি কিছু নেবেন না? এখন পেয়ারার মৌসুম। এক বাটি মসলামাখা পেয়ারা সঙ্গে নিয়ে ছাদে বসে খান। গল্পও জমবে, সময়টাও ভালো কাটবে। আপনাদের জন্য টক-ঝাল-মিষ্টি পেয়ারা মাখার রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক
১০ ঘণ্টা আগেজিমে গিয়ে নতুন ওয়ার্কআউট সেশন নিচ্ছেন, কিন্তু দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছেন না। এমন হলে হতাশ তো হতেই হয়। বাড়তি ওজন ঝরানো ও শক্তি বৃদ্ধির জন্য সুপরিকল্পিত ওয়ার্কআউট পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ। তবে ফিটনেসের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যায়ামই একমাত্র উপায় নয়; ব্যায়ামের সঙ্গে জীবনযাপনের আরও
১১ ঘণ্টা আগেতারকাদের এয়ারপোর্ট স্টাইল যতই প্রশংসা করি না কেন, যখন বিমান ভ্রমণের জন্য পোশাক বাছতে হয়, তখন কী পরা উচিত, তা ঠিক করা সব সময় সহজ নয়। যেমন ফ্লিপ ফ্লপ স্যান্ডেল যেকোনো সৈকত ছুটির জন্য অপরিহার্য অনুষঙ্গ। কিন্তু বিমান ভ্রমণের জন্য ফ্লিপ ফ্লপ ধরণেনের জুতা বা স্যান্ডেল পরা উচিত নয়।
১২ ঘণ্টা আগে