Ajker Patrika

গুগল পিক্সেল ৮ থেকে সস্তা, আকর্ষণীয় ফোন মটোরোলা এজ

গুগল পিক্সেল ৮ থেকে সস্তা, আকর্ষণীয় ফোন মটোরোলা এজ

গুগল পিক্সেল ৮ থেকে আরও সাশ্রয়ী ফোন মটোরোলা এজ (২০২৩) বাজারে এল। শুধুমাত্র দামের দিক দিয়েই ফোনটি আকর্ষণীয় নয় এতে ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সব সুবিধা আনা হয়েছে। প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ডিজিটাল ট্রেন্ডের এক প্রতিবেদন এসব তথ্য জানানো হয়। 

মটোরোলা এজ ফোনটির স্ক্রিনের গ্লাসটি কার্ভ করা  ও বাইরের অংশে ভিগান লেদারের (চামড়ার) আবরণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে মডেলটির দাম ৫৯৯ ডলার থেকে শুরু হয়েছে। ফোনটি কালো রঙে পাওয়া যাবে। 

বাইরের অংশে ভিগান লেদারের (চামড়ার) আবরণ রয়েছে।   ছবি: মটোরোলাফোনটিতে চিপসেট হিসেবে মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৭০৩০ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ৮ জিবি র‍্যাম ও ২৫৬ জিবি ইন্টারন্যাল স্টোরেজ রয়েছে। অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ১৩। তবে ফোনটি কতদিন পর্যন্ত সফটওয়্যার আপডেট পাবে এ বিষয়ে কোম্পানি কোনো সুস্পষ্ট তথ্য দেয়নি। ফোনটির সঙ্গে কোনো চার্জিং অ্যাডাপ্টর থাকবে না।
 
ফোনটির ডিসপ্লে হলো–৬ দশমিক ৬ ইঞ্চি এইচডিআর, রেডি এফএইচডি+ (২৪০০ x ১০৮০ পিক্সেলস) ওলেড। রিফ্রেশ রেট ১৪৪ হার্টজ ও ব্রাইটনেস লেভেল ১২০০ নিটস রয়েছে। মটোরোলা কোম্পানি দাবি করেছে, ফোনটি  আইপি৬৮ সার্টিফায়েড অর্থ্যাৎ অল্প পানির ঝাপটায় ফোনের সার্কিট বোর্ড পুড়ে যাবে না। 

ফোনটিতে প্রধান ক্যামেরা হিসেবে ৫০ মেগাপিক্সেল লেন্স রয়েছে। ছবি: মটোরোলাফোনটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল  ৬৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সমর্থনসহ ৪৪০০ এমএএইচ ব্যাটারি । পিক্সেল ৮ ফোন থেকে যা দ্বিগুণ। মটোরোলা বলছে ১০ মিনিটের চার্জে ফোনটি সারাদিন ব্যবহার করা যাবে। এ ছাড়া ফোনটি ১৫ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিংও সমর্থন করে। 

ফোনটিতে প্রধান ক্যামেরা হিসেবে ৫০ মেগাপিক্সেল লেন্স রয়েছে। ক্যামেরায় অ্যাকটিভ ফটো, নাইট ভিশন ও ৩০ এফটিএসে ৪কে ভিডিও ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। ক্যামেরায় আরও আলো প্রবেশের সুযোগ রয়েছে যার ফলে আরও ভালো ও বিস্তারিত ছবি তোলা যাবে। আলট্রা ওয়াইড ক্যামেরাতে ১৩ মেগাপিক্সেল সেন্সর রয়েছে। এর মাধ্যমে ডিজিটালি ক্রপ করা মাইক্রো ছবি তোলা যায়। সেলফি তোলার জন্য ৩২ মেগাপিক্সেল সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা রয়েছে। 

ফোনটি মটোরোলার নিজস্ব ওয়েবসাইট, অ্যামাজন ও বেস্ট বাই এ পাওয়া যাচ্ছে। 

মটোরোলা এজ ফোনটির স্ক্রিনের গ্লাসটি কার্ভ করা। ছবি: ডিজিটাল ট্রেন্ডএই দামে এত ফিচারসহ মটোরোলা ফোনটি অনেক আকর্ষণীয় বলে  মনে হতে পারে।  তবে মোবাইলের বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গুগল পিক্সেল ৮ অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের সাত বছরের আপডেট দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। গুগলের সফটওয়্যারের সঙ্গে ক্যামেরা যুক্ত হয়ে উন্নত ছবি তুলতে সক্ষম পিক্সেলের ফোনগুলি। এই দামে স্যামসাংয়ের এস ২৩ এফই ও বাজারে পাওয়া যায়। এছাড়া আইফোনের আগের মডেল বা পুরোনো আইফোনও এই দামে পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রুচিবোধের প্রকাশ ঘটবে যে ৯ অভ্যাসে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
পোশাকের কিছু ছোট ছোট বিষয় একজন মানুষের রুচি, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান অন্যের সামনে তুলে ধরে। ছবি: টেক্সেলস
পোশাকের কিছু ছোট ছোট বিষয় একজন মানুষের রুচি, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান অন্যের সামনে তুলে ধরে। ছবি: টেক্সেলস

ইংরেজিতে একটা প্রচলিত কথা আছে, ‘মানি টকস’ অর্থাৎ টাকা কথা বলে। আসলেই কি এই কাগজের টুকরা কথা বলে? একেক মানুষের কাছে আছে এর একেক রকম উত্তর। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই উপলব্ধি করে না যে টাকার পাশাপাশি মানুষের পরিহিত পোশাকের ধরন ফিসফিস করে কথা বলে। এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা কোনো লোগো বা ডিজাইনার ব্র্যান্ডের পোশাক না পরেই অবিশ্বাস্যভাবে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন। আবার অনেকে আছেন দামি ব্র্যান্ডের পোশাকেও নিজেকে সবার সামনে উপস্থাপনযোগ্য করে তুলতে পারেন না। এখানেই শুরু হয় রুচিবোধ আর ফ্যাশনবিষয়ক জ্ঞানের আলোচনা।

বিষয়টি ট্রেন্ডের পেছনে ছোটা বা সেলিব্রিটিদের স্টাইল নকল করা নয়, বরং সূক্ষ্ম বিষয়। এই ছোট ছোট বিষয় একজন মানুষের রুচি, আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান অন্যের সামনে তুলে ধরে। তাই অনেক বেশি খরচ না করেও নিজেকে আকর্ষণীয় করে অন্যের সামনে তুলে ধরা ‘আর্ট’ হিসেবে পরিচিত।

নিখুঁত মাপ

ভালো ফিটিংয়ের পোশাকে একধরনের আকর্ষণ থাকে। আপনার পরনে যদি কম দামের কিন্তু ভালো ফিটিংয়ের একটি টি-শার্টও থাকে, তাহলেও আপনাকে মানানসই দেখাবে। উল্টোটাও সত্য যে কয়েক হাজার টাকার মাপ ভুল হওয়া ব্লেজারও যদি আপনার গায়ে থাকে, তবে সেই ‘দামি’ হওয়ার ধারণাটি তৎক্ষণাৎ শেষ হয়ে যায়। তাই আপনার সাধারণ পোশাক, যেমন টি-শার্ট বা লিনেনের শার্টও টেইলার্সের কাছে নিয়ে যান। কাঁধ বা অন্যান্য জায়গায় সামান্য পরিবর্তন করলেই তা হাই-এন্ড বুটিকের পোশাকের মতো দেখতে পারে।

বিখ্যাত লোগো না রেখেও আত্মবিশ্বাসী থাকুন

অনেকে মনে করেন, দৃশ্যমান ব্র্যান্ড বা লোগোই স্ট্যাটাস প্রকাশ করে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সংযমই আত্মবিশ্বাস। পোশাকে কোনো লোগো না থাকা বা খুব কম থাকা বোঝায় যে আপনার কিছু প্রমাণ করার দরকার নেই। যাঁরা ‘মনে মনে ধনী’, তাঁদের পোশাক লোগো দিয়ে বিচার করতে হয় না। তাঁরা পরিচিত হওয়ার জন্য পোশাক পরেন না, বরং সম্মানিত হওয়ার জন্য পোশাক পরেন। একটি পুরোনো প্রবাদ আছে, যার বাংলা অর্থ, ‘টাকা চিৎকার করে, আর সম্পদ ফিসফিস করে।’ ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও একই যুক্তি প্রযোজ্য। আপনার ব্র্যান্ডিং যত বেশি নিরবচ্ছিন্ন হবে, আপনার পোশাক তত বেশি উদ্দেশ্যমূলক ও ব্যয়বহুল মনে হবে।

বিলাসবহুল পোশাকের কালেকশনগুলো কয়েকটি নির্দিষ্ট রঙের চারপাশে ঘোরাফেরা করে। ছবি: পেক্সেলস
বিলাসবহুল পোশাকের কালেকশনগুলো কয়েকটি নির্দিষ্ট রঙের চারপাশে ঘোরাফেরা করে। ছবি: পেক্সেলস

নিরপেক্ষ ও পরিচ্ছন্ন রঙের উপস্থিতি

আপনি কি লক্ষ করেছেন, বিলাসবহুল পোশাকের কালেকশনগুলো কয়েকটি নির্দিষ্ট রঙের চারপাশে ঘোরাফেরা করে? যেমন বেইজ, কালো, সাদা, নেভি, অলিভ ও ধূসর। কিংবা মার্ক জাকারবার্গকে কখনো রঙিন পোশাকে দেখেছেন? বরং একটা নির্দিষ্ট রঙের টি-শার্ট পরেই তিনি সব সময় স্টেজে কথা বলেন। নিরপেক্ষ টোন বা নিউট্রাল রংগুলো শান্ত ও সংযম প্রকাশ করে। এই দুটি বৈশিষ্ট্য আমরা অবচেতনভাবে ক্ষমতা ও সম্পদের সঙ্গে সংযুক্ত করি। উজ্জ্বল রং চমৎকার লাগতে পারে, কিন্তু তারা প্রায়ই ট্রেন্ডি হয়, ক্ল্যাসিক নয়। নিউট্রাল রং পরা মানে বিরক্তিকর হওয়া নয়। এর মানে আপনি স্থায়িত্ব বোঝেন। আপনি যদি ফরেস্ট গ্রিন বা হালকা গোলাপির মতো একটি স্টেটমেন্ট রংও যোগ করেন, তবে বাকি পোশাকটিকে সংযত রাখলে তা বিশৃঙ্খল না হয়ে সুচিন্তিত বলে মনে হবে।

অনুভবযোগ্য মানসম্পন্ন ফ্যাব্রিকস

দামি দেখানোর জন্য পোশাকের একটি নিজস্ব টেক্সচার বা বুনন থাকে। এটি চকচকে উপায়ে নয়, বরং স্পর্শযোগ্য উপায়ে উপস্থিত হয় মানুষের সামনে। লিনেন প্রাকৃতিকভাবে ভাঁজ হয়ে ঝুলে থাকে। তবে এটি নরম কিন্তু সুগঠিত তুলা দিয়ে তৈরি। উলের কাপড় ঘন, কিন্তু খসখসে নয়। কাপড়টি কীভাবে নড়ে, তা দেখেও আপনি বুঝতে পারবেন, পোশাকটি কতটা দামি। সিনথেটিক ফাইবারগুলো শরীরকে আঁকড়ে ধরে এবং সহজে কুঁচকে যায়। কিন্তু প্রাকৃতিক উপাদানগুলো স্বচ্ছন্দে প্রবাহিত হয়। মানের জন্য বেশি খরচ করা জরুরি নয়। আপনাকে জানতে হবে মানের অনুভূতি কেমন। ওজন ও বুনন চিনতে পারলে আপনি ব্যবহৃত কাপড় দেখেই তার গুণাগুণ বুঝতে পারবেন।

ত্রুটিহীন সাজসজ্জা ও রক্ষণাবেক্ষণ

বিষয়টি শুধু পোশাক নিয়ে নয়, কিন্তু এটি অনেক কিছুর বেলাতেই সত্য। আমরা পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকাকে সমৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত করি। যেমন একটি ভাঁজহীন ইস্তিরি করা শার্ট। এক জোড়া পুরোনো কিন্তু পরিষ্কার জুতা, কিংবা পরিপাটি নখ, গোছানো চুল, সতেজ নিশ্বাস। আপনি কী কিনছেন, তার মধ্যে সব সময় সম্পদ থাকে না। সম্পদ থাকে আপনার যা আছে তার প্রতি আপনি কতটা যত্নশীল, তার মধ্যে। আপনার পোশাক ইস্তিরি করতে, জুতা পরিষ্কার করতে এবং ছেঁড়া ফিতা বা নিস্তেজ বোতামের মতো ছোট বিষয়গুলো পরিবর্তন করতে সময় নিন। এই সূক্ষ্ম বিষয়গুলো আত্মসম্মানের সংকেত দেয়। এগুলোকেই মানুষ আপনার আত্মবিশ্বাস হিসেবে পড়বে। আর জানেন তো, আত্মবিশ্বাসকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়।

সুচিন্তিত অ্যাকসেসরিজ

অ্যাকসেসরিজ হলো স্টাইলের বিরামচিহ্ন। তারা হয় আপনাকে সম্পূর্ণ করবে, অথবা আপনাকে সম্পূর্ণভাবে বিশৃঙ্খল করে তুলবে। একটি একটি ভালো ঘড়ি, চামড়ার ব্রেসলেট বা মিনিমালিস্ট সানগ্লাসের মতো সাধারণ জিনিস আপনার পুরো সাজকে উন্নত করতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ হলো সংযম ও ধারাবাহিকতা। একটি দারুণ মানের জিনিস সব সময় কয়েকটি ট্রেন্ডি জিনিসের চেয়ে ভালো দেখাবে।

ভালো ফিটিংয়ের পোশাকে একধরনের আকর্ষণ থাকে। ছবি: পেক্সেলস
ভালো ফিটিংয়ের পোশাকে একধরনের আকর্ষণ থাকে। ছবি: পেক্সেলস

সঠিক জুতা এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ

মানুষ অবচেতনভাবে প্রথম যে জিনিসগুলো লক্ষ করে, জুতা তার মধ্যে অন্যতম। আপনি বেশি দামের পোশাক পরতে পারেন। কিন্তু আপনার জুতা যদি নোংরা বা পুরোনো হয়, তবে আপনার লুকে ছেদ পড়ে যাবে। অন্যদিকে, পরিষ্কার, ভালো ভাবে যত্নে রাখা জুতা সাশ্রয়ী ব্র্যান্ডের হলেও আপনার পুরো পোশাক উন্নত করে তুলতে পারে।

পোশাকের স্তরবিন্যাস

লেয়ারিং বা স্তরে স্তরে পোশাক পরা একটি শিল্প। সঠিকভাবে করা হলে এটি আভিজাত্য প্রকাশ করে। যেমন একটি বোনা সোয়েটারের নিচে একটি কড়কড়ে শার্ট, সঙ্গে একটি হালকা ট্রেঞ্চ কোট বা একটি খোলা ওভারশার্টের নিচে একটি সাধারণ টি-শার্ট। এটি আপাতদৃষ্টে সাধারণ দেখালেও এর জন্য সামান্য কৌশল প্রয়োজন। লেয়ারিং করার সময় কেবল রং নয়, টেক্সচার বা বুননের কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। ম্যাট কাপড়ের সঙ্গে নরম চকচকে টেনসেল বা সাটিনের মতো কাপড় যোগ করুন। এটি সূক্ষ্ম আকর্ষণ তৈরি করে রুচিশীলতার ইঙ্গিত দেবে।

শান্ত দেহভঙ্গি ও অঙ্গবিন্যাস

পোশাক আপনাকে কেবল একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্তই নিয়ে যেতে পারে। আপনার দেহভঙ্গি তার সঙ্গে মানানসই না হলে আপনি ব্যর্থ। যাঁরা নীরব আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন, তাঁরা সোজা হয়ে দাঁড়ান, ধীরে ধীরে চলাফেরা করেন এবং অস্থির হন না। তাঁরা তাড়াহুড়ো করেন না বা ক্রমাগত তাঁদের পোশাক ঠিক করেন না। তাঁদের উপস্থিতি স্থিতিশীল মনে হয়। আপনি এটি অনুশীলন করতে পারেন। ঘরে প্রবেশ করার পর কথা বলার আগে এক সেকেন্ড থামুন। চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। আপনার অঙ্গভঙ্গি কম ও শিথিল রাখুন।

সূত্র: ভেজ আউট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: দিবাস্বপ্ন কমান, প্রাক্তনকে আর খুঁজে লাভ নেই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৬
আজকের রাশিফল: দিবাস্বপ্ন কমান, প্রাক্তনকে আর খুঁজে লাভ নেই

মেষ

আজ আপনার মেজাজ থাকবে আগুনের গোলার মতো। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ দেওয়ার আগে চটজলদি মাথা গরম করার অভ্যাসটা একটু ত্যাগ করুন। যদি একান্তই ঝগড়া করতে ইচ্ছে করে, তাহলে টিভির রিমোট কন্ট্রোলারের সঙ্গে করুন—ওটা উত্তর দেবে না, আর আপনিও জিতবেন! আর কফিটা ঠান্ডা হওয়ার আগে পান করে নিন।

বৃষ

আজ আপনার পেটের ডাক মহাজাগতিক শব্দের চেয়েও জোরালো। আরাম আর পছন্দের খাবারের জন্য মন সারা দিন ছটফট করবে। বিকেলের দিকে প্রেমের জীবন নিয়ে একটা মিষ্টি স্বপ্ন মনে উদয় হতে পারে, কিন্তু বাস্তবের কঠিন মাটিতে পা রাখুন, না হলে দেখবেন স্বপ্নে দেখা খাবারটাও হাতছাড়া! মানিব্যাগকে আজকের জন্য ‘আত্মগোপনে’ যেতে বলুন।

মিথুন

আজ আপনি একই সঙ্গে দুটো সম্পূর্ণ বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে চাইবেন, যেমন ‘অফিস যাব’ বনাম ‘কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাব।’ গ্রহরা বলছে, কোনো একটি বেছে নেওয়ার দরকার নেই। দুটোই এড়িয়ে যান এবং বাকিদের চিন্তায় ফেলে দিন। আপনার দ্বিচারিতাই আজ আপনার সুপার পাওয়ার। তবে ভুল করেও একসঙ্গে দুজনকে ডেটিংয়ের প্রস্তাব দেবেন না!

কর্কট

আপনার আবেগ আজ সাগরের জোয়ারের মতো, সকালে উথলে উঠবে, দুপুরে সামান্য শান্ত হবে, আর রাতে আবার পূর্ণিমার চাঁদ দেখে কেঁদে ফেলবে। পুরোনো স্মৃতি আঁকড়ে না ধরে একটু সামনের দিকে তাকান। প্লিজ, আপনার প্রাক্তন কী করছে তা আজ গুগল করা থেকে বিরত থাকুন। সাবধান! কাউকে জড়িয়ে ধরার আগে অনুমতি নিন।

সিংহ

আজ আপনি যেখানেই যান, লাইমলাইট আপনাকেই খুঁজবে। আপনার তেজ এতটাই বেশি যে আশপাশের মানুষজন সানগ্লাস পরে থাকতে পারে! অতিরিক্ত নাটকীয়তা আজ চলবে, তবে খেয়াল রাখবেন নিজে ভালো সেজে অন্যকে যেন অন্ধকারে না ফেলে দেন। আজকের চ্যালেঞ্জ হলো, নিজেকে ছাড়া অন্য কারও প্রশংসা করুন। আপনার জন্য এটা কঠিন, তবে পারতে হবে।

কন্যা

আজ আপনার চোখে পড়বে ডেস্কে পড়ে থাকা একফোঁটা ধুলো অথবা ই-মেইলের বানান ভুলের মতো তুচ্ছ অনেক কিছু। নিখুঁত হওয়ার এই রোগ আজ আপনাকে একটু ভোগাবে। সবকিছু ঠিক করার চেষ্টা না করে, বরং আরাম করুন। মহাবিশ্ব আপনাকে বলতে চাইছে: ‘সবকিছু ১০০ ভাগ ঠিক না হলেও চলে, বস!’

তুলা

সিদ্ধান্ত নিতে না পারাটা আপনার জন্মগত ব্যারাম, আর আজ সেটা আরও প্রকট হবে। শার্টের রং কী হবে, লাঞ্চে কী খাবেন—এসব ভাবতে ভাবতেই আজকের অর্ধেক দিন পার। চিন্তা করবেন না, সময় আপনার হয়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে (মানে, হয়তো ততক্ষণে খাবার দোকান বন্ধ হয়ে যাবে)। ঝগড়া মিটিয়ে ফেলার আজ দারুণ সুযোগ, যদি ‘সরি’ বলা না বলা নিয়ে দ্বিধায় না ভোগেন!

বৃশ্চিক

আপনার চোখে আজ গভীর রহস্য। মনে হবে যেন কোনো গোপন অভিযানের পরিকল্পনা করছেন। আপনার তীব্র চাহনি আজ সহকর্মীদের একটু অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। আজকের জন্য আপনার গোপন মিশন: লোকদেখানো হাসি দিয়ে সবাইকে কনফিউজ করে দেওয়া। সামান্য ব্যাপারেও সন্দেহ করা আজ একটু কমালে ভালো হয়।

ধনু

আজ আপনি মহৎ কোনো জ্ঞান দিতে প্রস্তুত। কিন্তু আপনার অতিসরল সত্যগুলো অন্যকে আঘাত দিতে পারে। সবার সামনে নিজেকে ‘পৃথিবীর দার্শনিক’ প্রমাণ না করে, চুপচাপ থাকুন। ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানটা আজ ক্যানসেল করুন, না হলে টিকিট কেটে চাঁদেই চলে যেতে পারেন! সঙ্গীকে কোনো অপ্রিয় সত্য বলার আগে ১০ বার ভাবুন।

মকর

আজ কাজ, কাজ আর শুধুই কাজ। আপনি যদি এখন নিজের শরীরের কথা না শোনেন, তবে শরীর আপনাকে ছুটি নিতে বাধ্য করবে। আপনার গ্রহরা চাইছে, আজ একটু রিলাক্স করুন। হ্যাঁ, সারা পৃথিবীতে কাজ জমে থাকুক, তাতে কিছু যায় আসে না। আপনি যদি আজ ৩০ মিনিট কাজের ডেস্ক থেকে দূরে থাকেন, পৃথিবী ধ্বংস হবে না তো! খেয়াল রাখবেন, আজ দুপুরের লাঞ্চটাইম ভুলে যাওয়ার চান্স আছে।

কুম্ভ

আপনার উদ্ভট আইডিয়াগুলো আজ তুঙ্গে থাকবে। আপনার উদ্ভট সব পরিকল্পনা অফিসে পেশ করার আগে ভালো করে ভাবুন। সমাজের মূল স্রোত থেকে আপনি আরও দূরে সরে যেতে পারেন, এটা অবশ্য আপনার জন্য খুব স্বাভাবিক। আজকের লক্ষ্য ঠিক করুন—এমন কাজ করবেন, যা কেউ কখনো ভাবেনি!

মীন

বাস্তবতা আজ আপনার কাছে খুবই বিরক্তিকর লাগবে। পুরো দিনটা স্বপ্ন দেখবেন বলে আলস্যে কাটাতে পারেন, যেমন আপনি কোটি টাকার লটারি জিতেছেন আর এখন একটা প্রমোদতরিতে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছেন। স্বপ্ন দেখতে কোনো বাধা নেই, তবে বসের ডাকে সাড়া দিতে ভুলবেন না। না হলে স্বপ্ন থেকে জাগতেই দেখবেন আপনার ‘রিয়েলিটি চেক’ হয়ে গেছে। সাবধান! দিনের শেষে জলখাবারটা একটু সাবধানে!

বিশেষ দ্রষ্টব্য: গ্রহ-নক্ষত্রের উত্থান-পতন তো চলতেই থাকবে, কিন্তু দিনের শেষে আপনি কী করছেন, সেটাই আসল। তাই সাহস দেখান, ধৈর্য ধরুন। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—ফোনটা রেখে কাজে লেগে পড়ুন। ভালো কিছু ঘটলে সেটা আপনার ক্রেডিট, আর খারাপ হলে ‘রাশিফল ভালো ছিল না’ বলে চালিয়ে দিন! আসলে দোষটা আর কারও নয়, শুধু আপনার অলসতা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণের আগে জেনে নিন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
দক্ষিণ কোরিয়া এখন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। ছবি: উইকিপিডিয়া
দক্ষিণ কোরিয়া এখন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। ছবি: উইকিপিডিয়া

দক্ষিণ কোরিয়া এখন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। এমনকি পর্যটকদের ভিড়ে এ বছর সেখানকার এক অঞ্চলে কারফিউ পর্যন্ত জারি করতে হয়েছিল। বিশেষ করে দেশটির কে-পপ, কে-ড্রামা বা কোরিয়ান সিনেমা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করার পর থেকে দেশটি ভ্রমণে পর্যটকেরা আরও আগ্রহী হচ্ছেন। এ ছাড়া পাহাড়, সমুদ্র, প্রাচীন ঐতিহ্য, আধুনিক শহর আর চমৎকার পরিবহনব্যবস্থা মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ভ্রমণ এখন অনন্য অভিজ্ঞতা। তবে দেশটিতে যাওয়ার আগে কিছু বিষয় জেনে গেলে ভ্রমণ হবে ঝামেলামুক্ত।

রেজিস্ট্রেশন দরকার

বাংলাদেশসহ বেশ কিছু দেশের নাগরিকেরা দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯০ দিন পর্যন্ত ভিসামুক্ত ভ্রমণ করতে পারেন। তবে দেশটিতে যাওয়ার আগে অনলাইনে কোরিয়ান ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন ওয়েবসাইটে ভ্রমণের কমপক্ষে ৭২ ঘণ্টা আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এটি করতে খুব বেশি সময় লাগে না এবং একবার অনুমোদন পেলে দুই বছর পর্যন্ত তা কার্যকর থাকে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় আছে সৈকত, পাহাড় আর আধুনিক গগনচুম্বী অট্টালিকা। হাউন্ডে সৈকত, দ. কোরিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ায় আছে সৈকত, পাহাড় আর আধুনিক গগনচুম্বী অট্টালিকা। হাউন্ডে সৈকত, দ. কোরিয়া। ছবি: উইকিপিডিয়া

কোথায় থাকবেন

দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকার অনেক ধরনের জায়গা রয়েছে। ব্যাকপ্যাকার হোস্টেল ও গেস্টহাউস থেকে শুরু করে বিলাসবহুল হোটেল—সবকিছুই পাওয়া যায়। স্থানীয় অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে ঐতিহ্যবাহী হনোক অতিথিশালায় থাকতে পারেন। সেখানে কাঠের মেঝে, ফুতন বিছানা ও কোরিয়ান পরিবেশ পাবেন। এ ছাড়া বৌদ্ধ মঠেও থাকা সম্ভব অনুমতি সাপেক্ষে।

কখন যাবেন

মার্চের মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত জেজু দ্বীপ থেকে শুরু করে পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে চেরি ফুলের রঙিন আভা। আবার অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত সোনালি গিঙ্কো পাতায় সাজে সিউলসহ বিভিন্ন শহর। এ দুই সময়ে তো যেতে পারেনই, বছরের অন্য সময়গুলোতে গেলে অভিজ্ঞতা খারাপ হবে না। তবে পরামর্শ হলো, ছুটির সময়গুলো এড়িয়ে চলুন।

দক্ষিণ কোরিয়ার দুটি বড় উৎসব হলো লুনার নিউ ইয়ার ও ছুসক। এ সময় দেশজুড়ে মানুষ নিজেদের গ্রামে চলে যায়। ফলে ট্রেন বা বাসের টিকিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব। ভ্রমণ পরিকল্পনা করার সময় এই দুই উৎসবের তারিখ দেখে নিন। যদি ওই সময় যেতেই হয়, তবে সিউল বা বুসানে থাকা ভালো।

ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধন আছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ছবি: উইকিপিডিয়া
ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধন আছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ছবি: উইকিপিডিয়া

সেরা গণপরিবহন

দক্ষিণ কোরিয়ার মেট্রো, বাস ও ট্রেন সেবা বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ব্যবস্থা। ১ ডলারেরও কম ভাড়ায় সিউলে যাতায়াত করা যায়। ভ্রমণের শুরুতেই একটি টি-মানি কার্ড কিনে নিন। এটি বাস, ট্রেন, এমনকি ট্যাক্সিতেও ব্যবহার করা যায়। দূরপাল্লার ভ্রমণের জন্য হাইস্পিড ট্রেনে দ্রুত যাতায়াত করা যায়।

দরকারি অ্যাপ রাখুন মোবাইল ফোনে

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় সবখানে ওয়াই-ফাই পাওয়া যায়। তবুও পর্যটকেরা চাইলে এয়ারপোর্ট থেকেই স্থানীয় সিম বা ই-সিম নিতে পারেন।

ভ্রমণে কাজে লাগবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ—

নাভের ম্যাপ: গুগল ম্যাপ সেবায় বেশি কাজে দেয়।

সাবওয়ে কোরিয়া: মেট্রো রুট ও সময় জানার জন্য।

কাকাও টি: ট্যাক্সি ভাড়ার অ্যাপ।

গ্রামে ঘুরুন

সিউল নিঃসন্দেহে আধুনিক ও প্রাণচঞ্চল শহর ও জনপ্রিয় গন্তব্য। কিন্তু কোরিয়ার আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে গ্রামে। পাহাড় ও নদীর মনোরম পরিবেশে এসব অঞ্চল বেশ শান্ত। শহরের ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেতে অন্তত একবার ঘুরে আসুন এই ঐতিহ্যবাহী কোরিয়া।

কোরিয়ানদের সামাজিক অভ্যাস সম্পর্কে জেনে যান

কোরিয়ানরা সাধারণত হালকা করে মাথা নুইয়ে অভিবাদন জানায়। হাত মেলায় আলতোভাবে। অপরিচিত মানুষও অনেক সময় আপনার বয়স, পেশা বা বৈবাহিক অবস্থা জানতে চাইতে পারে। এমন প্রশ্নে বিরক্ত না হয়ে ভদ্রভাবে উত্তর দিন। চাইলে পাল্টা প্রশ্নও করতে পারেন।

পোশাকে সংযম রাখুন

কোরিয়ানরা পোশাকে বেশ আধুনিক। তবে কিছু বিষয়ে রক্ষণশীল। মন্দিরে গেলে শর্টস চললেও ট্যাংক টপ বা ছোট স্কার্ট পরা ঠিক হবে না। সৈকতে মেয়েরা সাধারণত টি-শার্ট পরে, আর পুরুষদের সাঁতারের পোশাক। ট্যাটু থাকলে কিছু পাবলিক বাথ হাউসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে।

নিরামিষ খাদ্যাভ্যাস থাকলে সতর্ক থাকুন

দক্ষিণ কোরিয়ায় নিরামিষ বা ভেগান খাবার এখনো তেমন প্রচলিত নয়। অনেক খাবারেই মাছের ঝোল বা ফারমেন্টেড চিংড়ির পেস্ট ব্যবহার করা হয়। তবে বিবিমবাপ, জাপচে বা সবজি প্যানকেক নিরামিষভোজীদের জন্য ভালো বিকল্প খাবার। বৌদ্ধমন্দিরগুলোতেও পাওয়া যায় চমৎকার নিরামিষ খাবার।

সূত্র: লোনলি প্ল্যানেট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুখ ও হাত থেকে রোদে পোড়া দাগ দূর করার ৭ উপায়

সানজিদা সামরিন, ঢাকা 
ঘরে বসে ট্যান অপসারণের জন্য ফেসপ্যাকে যোগ করতে পারেন লেবুর রস। ছবি: মঞ্জু আলম
ঘরে বসে ট্যান অপসারণের জন্য ফেসপ্যাকে যোগ করতে পারেন লেবুর রস। ছবি: মঞ্জু আলম

হেমন্তের সোনালি রোদ দেখে মন ফুরফুরে হয়ে উঠলেও ত্বকের বারোটা বেজে এক। রোজ সকালে বাইরে বের হতে হয় যাঁদের, কড়া রোদের সংস্পর্শে থাকার কারণে তাঁদের ত্বকের উপরিভাগে ট্যান পড়ে যায় যায়। কী করে এই সানট্যান বা রোদে পোড়া দাগ সহজে তোলা যায়, তার হদিস ইন্টারনেটে খোঁজেন অনেকেই। এবার জেনে নিন কিছু ঘরোয়া উপায়। তবে সমাধানের পথ জানার আগে জেনে নিন সানট্যান বা রোদে পোড়া দাগ কীভাবে হয়।

সানট্যান বা রোদে পোড়া দাগ যেভাবে হয়

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ থেকে ত্বক রক্ষার জন্য শরীরের একটি প্রাকৃতিক উপায় হলো ট্যানিং। ত্বকে মেলানিন তৈরির জন্য সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি যখন ত্বকের নিচের এপিডার্মিস স্তরগুলোতে প্রবেশ করে, তখন এটি ঘটে। মেলানিন উৎপাদন বেড়ে গেলে ত্বকের প্রাকৃতিক রং পরিবর্তিত হয়ে গাঢ় হয়ে যায়। সাধারণত মুখ, হাত ও ঘাড়ে রোদ বেশি পড়ে বলে সেসব জায়গায় সানট্যান বেশি হয়।

কসমেটোলজিস্ট ও শোভন মেকওভারের স্বত্বাধিকারী শোভন সাহা জানিয়েছেন, রোদে পোড়া দাগ এড়াতে দিনের বেলা বাড়ি থেকে বের হওয়ার ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে ত্বকে সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন। ত্বক বেশি তৈলাক্ত হলে এসপিএফ যুক্ত পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাজারে এখন এসপিএফ বা সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টরযুক্ত ক্রিম, লোশন, পাউডার, লিপ বাম, স্প্রে ইত্যাদি প্রসাধনী পাওয়া যায়। ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো ব্যবহার শুরু করুন এ ঋতু থেকেই। এ ছাড়া সঙ্গে রাখুন ছাতা ও সানগ্লাস।

মুখ ও হাতে রোদে পোড়া গভীর দাগ থেকে থাকলে প্রাকৃতিক উপায়েও তা সারানো সম্ভব। যেসব প্রাকৃতিক উপাদান রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সহায়তা করে, সেগুলো হলো—

জাফরান

ঘরোয়াভাবে রোদে পোড়া দাগ দূর করার জন্য জাফরান অত্যন্ত কার্যকর উপাদান। ব্রণ, ব্রণের কালো দাগ, ছোপ ছোপ দাগ এবং ত্বকের অসমান রঙের মতো সমস্যা সমাধানের জন্য জাফরানের ব্যবহার রয়েছে। ৫ চা-চামচ দুধে জাফরানের ২টি কেশর ভিজিয়ে রাখুন। দুধের রং পরিবর্তন হলে নেড়ে নিন। এবার তুলার বল সেই দুধে ভিজিয়ে রোদে পোড়া দাগের ওপর বুলিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার ত্বক প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ও আর্দ্রতা ফিরে পাবে।

অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মুলতানি মাটি মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে চমৎকার ফলাফল পাওয়া যায়। ছবি: পেক্সেলস
অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মুলতানি মাটি মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে চমৎকার ফলাফল পাওয়া যায়। ছবি: পেক্সেলস

মুলতানি মাটি

মুলতানি মাটি সানট্যান রিমুভাল ফেসপ্যাক হিসেবে দারুণ জনপ্রিয়। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে এই উপাদান মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করে চমৎকার ফলাফল পাওয়া যায়। এই প্যাক ব্যবহারে রোমকূপের গভীরে জমা হওয়া ময়লাও অপসারিত হয়। মুখ ও হাত থেকে রোদে পোড়া দাগ দূর করতে এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে এক চা-চামচ মুলতানি মাটি মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করে রোদে পোড়া জায়গায় লাগান। ২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

নারকেল দুধ

ট্যান দূর করার পাশাপাশি নারকেল দুধ ত্বকের অন্যান্য উপকারও করে। মুখ ও হাতে ট্যান পড়ে থাকলে নারকেলের দুধকেই সমাধান হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। রোদে পোড়া ত্বকে তাজা নারকেল দুধ লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। এরপর ধুয়ে নিন। ত্বক উজ্জ্বলতা ছড়াবে।

লেবুর রস

ঘরে বসে ট্যান অপসারণের জন্য ফেসপ্যাকে যোগ করতে পারেন লেবুর রসও। প্রাকৃতিক ব্লিচিং ক্ষমতার কারণে এটি ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে খুব ভালো কাজ করে। এ ছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের দূষণ দূর করতে সাহায্য করে। সানট্যান দূর করতে লেবুর রস মধু বা চিনির সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত জায়গাগুলোয় স্ক্র‍্যাব করুন। ১৫ মিনিট ঘষে ধুয়ে নিন। তবে লেবুমিশ্রিত প্যাক বা স্ক্র‍্যাব ত্বকে ব্যবহার করলে ধোয়ার পর অবশ্যই ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। নয়তো ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে।

টক দই

মুখ থেকে ট্যান দূর করতে টক দই ব্যবহার করতে পারেন। এতে উচ্চ মাত্রার ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে বলে রোদে পোড়া ত্বকের রং হালকা করে ও আরাম দেয়। এ ছাড়া এই অ্যাসিড ত্বক নরম করে তোলে। চাইলে শসা, কমলা বা টমেটোর মতো অন্যান্য উপাদান বেটে তার সঙ্গে টক দই মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। আক্রান্ত জায়গায় মিশ্রণটি লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।

শসা

শসা ত্বক আর্দ্র রাখে ও পোড়া ত্বকে আরাম দেয়। এ ছাড়া ত্বকের রং হালকা করতে এটি কার্যকর। শসা দিয়ে মুখ, ঘাড় ও হাতের ট্যান দূর করার ভালো উপায় হলো, খোসা ছাড়িয়ে থেঁতো করে রস বের করে নিয়ে তুলার বল দিয়ে সে রস আক্রান্ত জায়গায় লাগানো। এরপর সেই রস ত্বকে পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

ত্বক থেকে সানট্যান প্রতিরোধের কিছু টিপস

রোদে যেতে সঙ্গে রাখুন ছাতা ও সানগ্লাস। ছবি: মঞ্জু আলম
রোদে যেতে সঙ্গে রাখুন ছাতা ও সানগ্লাস। ছবি: মঞ্জু আলম

রোদে পোড়া দাগ দূর করার উপায় তো জানলেন, এবার জেনে নিন কী করে সানট্যান বা রোদে পোড়া দাগ থেকে ত্বক বাঁচাবেন।

  • বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে রোদের সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলুন। বের হতে হলে ছাতা ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
  • রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে ঠান্ডা খাবার খেয়ে এবং প্রচুর পানি পান করে শরীর ঠান্ডা রাখুন। এভাবে ত্বক আর্দ্র করুন।
  • নিয়মিত ঘাড়, হাত ও মুখে সানস্ক্রিন লাগান।
  • ত্বক রোদের সংস্পর্শে এলে গন্তব্যে পৌঁছে মুখ, গলা, ঘাড় ও হাত ধুয়ে নিন।
  • দিনে অন্তত তিনবার মুখ ধুয়ে নিন।
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শাকসবজির মতো আঁশসমৃদ্ধ খাবার রাখুন।
  • বাইরে থাকাকালীন ত্বক রক্ষা করার জন্য টুপি বা স্কার্ফ, ফুলস্লিভ পোশাক এবং সানগ্লাস ব্যবহার করুন।

সূত্র: বাইওয়াও ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত