Ajker Patrika

ওএলইডি ডিসপ্লের আইপ্যাড প্রো আনছে অ্যাপল

প্রযুক্তি ডেস্ক
ওএলইডি ডিসপ্লের আইপ্যাড প্রো আনছে অ্যাপল

নতুন বছরে আইপ্যাড প্রোসহ বেশ কয়েকটি নতুন ডিভাইস বাজারে আনবে অ্যাপল। অ্যাপলের নতুন আইপ্যাড প্রো মডেলে ব্যবহার করা হবে ওএলইডি ডিসপ্লে। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন ডিসপ্লের আইপ্যাড প্রো ২০২৪ সালে বাজারে আসবে। 

প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাক রিউমারসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরেই ওএলইডি ডিসপ্লে যুক্ত আইপ্যাড প্রো মডেল নিয়ে কাজ করছে অ্যাপল। আইপ্যাড গুলি ১১ দশমিক ১ ইঞ্চি এবং ১৩ ইঞ্চি ডিসপ্লের-দুটি সংস্করণে বাজারে আসবে। এ ছাড়া নতুন আইপ্যাড প্রো মডেলগুলোর ডিসপ্লে সরু বেজেল দ্বারা বেষ্টিত থাকবে। ডিসপ্লে বিশ্লেষক রস ইয়াং অবশ্য জানিয়েছিলেন, অ্যাপল ২০২৩ সালে একটি ১৪ দশমিক ১ ইঞ্চি ডিসপ্লের আইপ্যাড প্রো মডেল বাজারে আনার পরিকল্পনা করছে।

গত অক্টোবরে অ্যাপল তাদের নতুন এমটু চিপসেটসহ ১১ ইঞ্চি এবং ১২ দশমিক ৯ ইঞ্চি ডিসপ্লের আইপ্যাড প্রো-এর দুটি সংস্করণ উন্মোচন করেছিল। উন্নত পারফরম্যান্সের জন্য এই ট্যাবলেটে অ্যাপলের নিজস্ব ‘এ ১৪ বায়োনিক’ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়। অ্যাপল জানিয়েছে, প্রসেসরটি আগের মডেলের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি ভালো পারফরম্যান্স এবং ১০ শতাংশ বেশি ভালো গ্রাফিকস দিতে সক্ষম। 

টাচস্ক্রিন ডিসপ্লের ম্যাকবুক আনার পরিকল্পনাও করছে অ্যাপল। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে এই ম্যাকবুক বাজারে মিলতে পারে, নতুন ডিসপ্লে এলইডি প্রযুক্তির হবে বলে জানা গেছে। বহু ল্যাপটপ নির্মাতা অনেক আগেই টাচস্ক্রিন ডিসপ্লের ল্যাপটপ বাজারে সরবরাহ করছে। বহুদিন ধরেই ব্যবহারকারীরা ম্যাকবুকে টাচস্ক্রিন সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। এবার ব্যবহারকারীদের দাবি মেনে নিয়ে এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে কোম্পানিটি। 

নিজেদের ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ চিপ তৈরির পরিকল্পনাও করছে অ্যাপল। ২০২৫ সালের শুরুতেই নিজেদের তৈরি ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ চিপ দিয়ে তৈরি আইফোন বাজারে আনার আশা করছে কোম্পানিটি। এখন আইফোনসহ নিজে তৈরি বিভিন্ন পণ্যে ব্রডকমের তৈরি ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ চিপ ব্যবহার করে অ্যাপল। সেমিকন্ডাক্টর ও অবকাঠামো সফটওয়্যার খাতের এই কোম্পানির সঙ্গে ২০২০ সালে প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলারের চুক্তি করে অ্যাপল। আইফোনে নিজস্ব ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ চিপ ব্যবহার করলে বিপুল খরচ কমে আসবে অ্যাপলের। ২০১৯ সালে আইফোনে নিজের তৈরি মডেম ব্যবহারের জন্য ইনটেলের কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলারের মডেম তৈরির প্রযুক্তি কিনেছিল প্রতিষ্ঠানটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৫
আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

মেষ

আজ আপনার ভেতরের অ্যাড্রেনালিন ডাবল ডোজ নিয়ে নেমেছে। আজ এত দ্রুত কাজ করবেন যে সহকর্মীরা ভাববে আপনি কফি-মেশিনের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করছেন। কিন্তু সাবধান! সব এনার্জি যেন বেলা ২টার পর শেষ না হয়ে যায়। কোনো মিটিংয়ে আপনার আইডিয়াটা ‘চিৎকার’ করে বলবেন না, সাধারণ স্বরে বলুন। আজকে সাতবার হাই তুলবেন।

বৃষ

আপনার আরামপ্রিয় মন আজ কাজের ডেস্ক থেকে সোজা সোফায় টানতে চাইবে। আজ খাবারের ব্যাপারে কোনো আপস করবেন না। দুপুরের খাবারের মেনু ঠিক করতে গিয়ে যে সময় নষ্ট করবেন, সেটা দিয়ে একটা ছোটখাটো উপন্যাস লেখা যেত। নিজের রূপচর্চা, শরীরের সেবাযত্ন আজ চরম পর্যায়ে নিয়ে যাবেন। স্ন্যাকস হাতে রাখুন, তবে ঘুমিয়ে পড়বেন না। ঘুম কাজের পরে!

মিথুন

আজ মস্তিষ্ক একটি হাইস্পিড ওয়াইফাই রাউটারের মতো কাজ করবে। একাই তিনজনের সঙ্গে চ্যাট করতে পারবেন, একটি ই-মেল ড্রাফট করতে পারবেন এবং একই সঙ্গে গানও গাইতে পারবেন। কিন্তু সতর্ক থাকুন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভুল গ্রুপ চ্যাটে চলে যেতে পারে! জরুরি মেসেজ পাঠানোর আগে প্রাপকের নামটা তিনবার দেখে নিন। ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না।

কর্কট

আপনার হৃদয়ের নিরাপত্তা দরকার আজ। মনে হতে পারে ঘর ছেড়ে কোথাও যাবেন না। কাঁথা মুড়ি দিয়ে থাকাই আজ আপনার কাছে জীবনের পরম সত্য, পরম প্রাপ্তি। ঘরের চার দেয়ালকে আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আশ্রয় মনে হবে। ফ্রিজের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস না ফেলে, নিজেই কিছু রান্না করুন। বাড়িতে আপনার প্রিয়জনের জন্য অপ্রত্যাশিত আরামের ব্যবস্থা করলে সুফল পাবেন।

সিংহ

আলো আকর্ষণকারী হিসেবে আজ আপনার খ্যাতি বাড়বে। আজ আপনি যেখানে যাবেন, সেখানেই আপনার প্রবেশে একটি অদৃশ্য স্পটলাইট জ্বলবে। অতিরিক্ত মনোযোগের জন্য হয়তো অফিসের বাথরুমের আয়নায় সেলফি তুলতে পারেন। আপনার উজ্জ্বলতা এমনিতেই যথেষ্ট। ইনডোরে সানগ্লাস পরা এড়িয়ে চলুন। আজ অযথা একটি দামি জিনিসের জন্য বাজেট নষ্ট হতে পারে, শুধু শুধু লোক দেখানোর জন্য টাকা নষ্ট করার কোনো মানে হয় না!

কন্যা

আজ আপনি জীবনের প্রতিটি সেকেন্ডের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করবেন। ‘টু-ডু’ লিস্টের রং কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে এক ঘণ্টা ব্যয় করবেন, যা আসলে আপনার ‘টু-ডু’ লিস্টে নেই। নিখুঁতভাবে থাকার চাপ আপনার কপালে ভাঁজ ফেলতে পারে। আজ একটি কাজ নিখুঁত না হলেও পৃথিবী থেমে যাবে না। প্লিজ, শ্বাস নিন। পানি পান করতে ভুলে যেতে পারেন। কারণ, আপনি পানির আণবিক গঠন নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন।

তুলা

আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় সংগ্রাম আজ আবার শুরু হবে: সিদ্ধান্তহীনতা। দুপুরে কী খাবেন—ভাত না রুটি? আজ এটা আপনার কাছে জীবনের অর্থ খোঁজার মতোই কঠিন মনে হবে। ভারসাম্য খুঁজতে গিয়ে মাঝখানে আটকে যাবেন। লাঞ্চের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটা কয়েন টস করুন। আর ফল যা-ই হোক, চোখ বন্ধ করে মেনে নিন। সহকর্মীদের সঙ্গে আজ ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’-এর মাঝের শব্দটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।

বৃশ্চিক

আপনার ডিটেকটিভ মোড আজ চালু থাকবে। জানতে পারবেন কে শেষ বিস্কুটটি খেয়েছে এবং তার পরিণাম কী হবে। গভীর এবং তীব্র মনোযোগ আজ সাফল্য এনে দেবে অথবা অপ্রয়োজনীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ফেলে দেবে। সবার দুর্বলতা খুঁজে না বের করে, নিজের কাজের ওপর ফোকাস করুন। অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতার কারণে আজ ভালো সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।

ধনু

আপনার ভেতরে থাকা ভবঘুরে মন আজ বিদ্রোহ ঘোষণা করবে। অফিসে বসেও মনে মনে আন্দিজ পর্বতমালার চূড়ায় অথবা সুন্দরবনের গহিনে ঘুরে বেড়াবেন। ছোটখাটো অ্যাডভেঞ্চার আজ আপনার দরকার। যদি বিদেশে যেতে মন চায়, তবে অন্তত ভিন্ন রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাথরুমে যান। এমন কিছু বলবেন না যা পরে প্রত্যাহার করতে হবে! সুতরাং কথাবার্তা ভেবেচিন্তে বলুন। ওভারস্মার্ট হতে যাবেন না।

মকর

কাজ, কাজ আর কাজ—এটাই আপনার জীবনের মন্ত্র। এমনকি একটি শামুককেও তার ধীরগতির জন্য সমালোচনা করতে পারেন। গ্রহরা বলছে, আপনি পাঁচ বছর আগেই বিরতি পাওয়ার যোগ্য হয়ে রয়েছেন। এবার থামুন। একটি ছোট বিরতি নিন। পৃথিবী আপনার অনুপস্থিতিতেও ঘুরতে থাকবে। আজ অতিরিক্ত টাকা সাশ্রয় করতে পেরে গর্বিত হবেন।

কুম্ভ

আপনার মাথা আজ ‘আউট অব দ্য বক্স’ থেকে অনেক দূরে, সম্ভবত অন্য গ্রহের চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত। এমন একটি চমৎকার আইডিয়া নিয়ে আসবেন, যার মধ্যে কবুতর এবং পুলি সিস্টেম জড়িত থাকতে পারে। আইডিয়াটি দুর্দান্ত, কিন্তু সাধারণ মানুষ কি তা বুঝবে? একবার পরীক্ষা করে দেখুন। আজ এমন এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে পারেন, যার কথা ছয় মাস ধরে ভুলে গিয়েছিলেন।

মীন

আজ আপনার বেশির ভাগ সময় কাটবে দিবাস্বপ্নে। হয়তো ট্যাক্সের ফাইল করছেন, কিন্তু মন একই সঙ্গে একটি সিম্ফনি রচনা করছে। বাস্তব জগৎ আজ আপনার কাছে কিছুটা ধূসর লাগতে পারে। কল্পনার জগৎ থেকে একটু বের হয়ে আসুন। টাকা গুনতে গুনতে স্বপ্ন দেখা যায় না। আপনার সৃজনশীলতা আজ চূড়ায় থাকবে। একটি কবিতা লিখুন, কিন্তু অফিসে নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চালতার ঝাল-মিষ্টি রসাল আচার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
চালতার আচার। ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা
চালতার আচার। ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা

বাজারে মিলছে চালতা। প্রতিদিনই ডালে কয়েক টুকরা চালতা দিচ্ছেন অনেকে। এবার বানিয়ে ফেলুন আচার। আপনাদের জন্য চালতার ঝাল-মিষ্টি রসাল আচারের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

উপকরণ

চালতা চারটি, চিনি এক কাপ, শুকনা মরিচ টালা গুঁড়া এক টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন ২ টেবিল চামচ, বিট লবণ এক চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, পানি চার কাপ, হলুদ সামান্য।

প্রণালি

চালতার খোসা ফেলে টুকরা করে কেটে নিয়ে ধুয়ে ৭-৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এবার হাঁড়িতে পানি আর চালতা দিয়ে সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ হলে চিনি, বিট লবণ, শুকনা মরিচের গুঁড়া, সামান্য হলুদ দিয়ে রান্না করুন। পরে চামচ দিয়ে থেঁতো করে নিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে ঝাল মসলা দেখে নামিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা করে কাচের বয়ামে সংরক্ষণ করুন চালতার ঝাল-মিষ্টি রসাল আচার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বে পরিচ্ছন্ন পাঁচ গ্রাম

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বালির ব্যাংলি জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন গ্রাম পেংলিপুরান। ছবি: লাভ বালি ডট বালি পিআরওভি ডট জিও ডট আইডি
বালির ব্যাংলি জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন গ্রাম পেংলিপুরান। ছবি: লাভ বালি ডট বালি পিআরওভি ডট জিও ডট আইডি

বিশ্বের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেশ বা শহর নিয়ে প্রতিবছর আলোচনা হয়। কিন্তু এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যেগুলোতে শহরের আধুনিক সুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সেসব গ্রামে আলাদা করে কোনো নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই পরিষ্কার রাখার জন্য। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। এই গ্রামগুলো শুধু সুন্দর নয়, একই সঙ্গে সামাজিক ও পরিবেশগত সচেতনতার অনন্য উদাহরণ।

পেংলিপুরান, ইন্দোনেশিয়া

বালির ব্যাংলি জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন গ্রাম পেংলিপুরান। এখানে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের বাড়ি, পাথরের রাস্তা, ফুল-বাগানসহ গ্রামীণ পরিবেশ অত্যন্ত যত্নসহকারে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। গ্রামটির প্রতিটি পরিবারের সবাই পরিবেশ বিষয়ে সচেতন। তারা বর্জ্য পুনর্ব্যবহার এবং জৈব বর্জ্য সার ব্যবহার করে। সেখানে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ। গ্রামটিতে গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ। এর পাশাপাশি পর্যটকের সংখ্যা সীমিত রাখার কারণে সেখানকার পরিবেশ ও শান্তি ঠিক নির্বিঘ্ন আছে। পেংলিপুরান গ্রামের অধিবাসীদের ঐতিহ্যের অংশ পেনজোর ও বান্টেন উৎসব। এসব গ্রামের হোমস্টেগুলোতে থাকলে স্থানীয়দের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাওয়া যায়। সুযোগ পাওয়া যায় তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা দেখার। সব মিলিয়ে পরিচ্ছন্নতা ধরে রাখায় পেংলিপুরান গ্রাম পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

গিয়েথুর্ন, নেদারল্যান্ডস

‘উত্তরের ভেনিস’ বলে খ্যাত নেদারল্যান্ডসের গিয়েথুর্ন গ্রাম। ছবি: উইকিপিডিয়া
‘উত্তরের ভেনিস’ বলে খ্যাত নেদারল্যান্ডসের গিয়েথুর্ন গ্রাম। ছবি: উইকিপিডিয়া

‘উত্তরের ভেনিস’ বলে খ্যাত নেদারল্যান্ডসের গিয়েথুর্ন গ্রাম। সেখানে পাওয়া যায় না গাড়ির শব্দ, নেই রাস্তাঘাটে ব্যস্ততা। আছে শুধু শান্ত পানিপথ, ফুলে ভরা বাগান আর ছোট ছোট বাড়ি। গ্রামটিতে চলাচলের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় নৌকার ওপর। আরেকটি ব্যবস্থা আছে, সেটা হলো হাঁটা। স্থানীয়রা পরিবেশ রক্ষায় বেশ সচেতন। গ্রামটির খালে পানিও থাকে বারো মাস। পুরো গ্রাম ঘুরেও কোনো প্লাস্টিক বর্জ্য চোখে পড়বে না। এ গ্রামের মানুষ প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট না করতে পর্যটকদের অনুরোধ করে থাকে সব সময়। শীতকালে বরফে জমে যাওয়া খালে জমে ওঠে স্থানীয় মানুষদের স্কেটিং। গিয়েথুর্ন যেন আধুনিক সভ্যতার কোলাহলের বাইরে প্রকৃতির কোলে শান্ত জীবনের এক নিদর্শন।

মাওলাইনং, ভারত

এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম হিসেবে খ্যাত মাওলাইনং। গ্রামটিতে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় বাঁশের ডাস্টবিন। স্থানীয়রা নিয়মিত গ্রামের সবকিছু পরিষ্কার রাখে। গ্রামের প্রতিটি রাস্তা দেখলেই সেখানকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতার কথা উপলব্ধি করা যায়। গ্রামীণ সৌন্দর্যের উপভোগের পাশাপাশি সেখানকার পরিবেশ-সচেতনতা দেখতেও পর্যটকেরা ভিড় জমায় প্রতিবছর।

এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম হিসেবে খ্যাত মাওলিননং। গ্রামটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পাহাড় জেলায় অবস্থিত। ছবি: উইকিপিডিয়া
এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম হিসেবে খ্যাত মাওলিননং। গ্রামটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি পাহাড় জেলায় অবস্থিত। ছবি: উইকিপিডিয়া

ইয়ানা, ভারত

দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের আছে ইয়ানা নামের এই গ্রাম। ঘন জঙ্গলের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা কালো চুনাপাথরের বিশাল শিলাখণ্ড ভৈরবেশ্বর ও মহাশক্তি শিখর গ্রামটির প্রধান আকর্ষণ। এখানের বাতাসে ভেসে বেড়ায় আসে বৃষ্টির গন্ধ আর পাখির ডাক। ইয়ানার বাসিন্দারা পরিচ্ছন্নতা ও প্রকৃতি রক্ষায় অত্যন্ত সচেতন। গ্রামটিতে প্লাস্টিক ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পর্যটকদেরও বর্জ্য নিজের সঙ্গে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। স্থানীয়রা পরিবেশবান্ধব পর্যটনকে উৎসাহিত করে, যাতে গ্রামের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক থাকে। গ্রামজুড়ে হাঁটার পথগুলো ঝকঝকে পরিষ্কার। আশপাশের ঝরনা ও পাহাড়ের দৃশ্য মিলিয়ে ইয়ানা ভ্রমণ বেশ উপভোগ্য অভিজ্ঞতা দেয়।

খোনোমা, ভারত

‘গ্রিন ভিলেজ’ নামে পরিচিত ভারতের নাগাল্যান্ডের খোনোমা গ্রাম। ছবি: উইকিপিডিয়া
‘গ্রিন ভিলেজ’ নামে পরিচিত ভারতের নাগাল্যান্ডের খোনোমা গ্রাম। ছবি: উইকিপিডিয়া

‘গ্রিন ভিলেজ’ নামে পরিচিত ভারতের নাগাল্যান্ডের খোনোমা গ্রাম। এটি ভারতের প্রথম পরিবেশবান্ধব গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। পাহাড় ঘেরা এই গ্রামের জনগণ একসময় শিকারনির্ভর জীবনে অভ্যস্ত ছিল। এখন গ্রামজুড়ে পরিষ্কার রাস্তা, কাঠের ছাদের ঐতিহ্যবাহী ঘর আর সবুজ ধানখেত মিলে তৈরি করেছে পোস্টকার্ডের মতো দৃশ্য। গ্রামটির মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস করে, তারা অতিথিপরায়ণ এবং নিজেদের সংস্কৃতি গর্বের সঙ্গে তুলে ধরে।

এই গ্রামগুলো শুধু ভ্রমণের জন্যই পরিচিতি পায়নি। এসব গ্রাম আমাদের শিখিয়েছে, আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শুধু সরকারের নির্দেশ থাকলেই হয় না। কমিউনিটি উদ্যোগ, সচেতনতা ও পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে পরিবেশ ও জীবনধারা পরিচ্ছন্ন তো বটেই, উন্নত করাও সম্ভব।

সূত্র: ট্রিপ অ্যাডভাইজার, ফোর্বস, ইন্ডিয়া ট্রাভেল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই বাংলার হেঁশেলে হেমন্তের সুঘ্রাণ

ছন্দা ব্যানার্জি
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা
ছবি: আফরোজা খানম মুক্তা

এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতির ঋতু হেমন্ত। নীরব আবেগে ঠাসা। শেষ শরতে ছাতিমের গন্ধে হেমন্ত আসে শিশিরভেজা হালকা শীতের ঘ্রাণ নিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু বলে একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। বর্ষার শেষের দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে উঠত, আর হেমন্তের অঘ্রানে পেকেও যেত। এই রূপ শুধু প্রকৃতিতেই নয়, বাঙালির খাবারের ঐতিহ্যেও ফুটে উঠেছে।

হেমন্তের খাবার বাঙালির কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। এই সময় নতুন ফসলের আমেজ নিয়ে আসে নতুন স্বাদ ও গন্ধ। নতুন চালের ভাত বাঙালির কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। এখন যে সবজির ফলন হয়, ফুল ফোটে, ফল হয়, তা দুই বাংলার মানুষের বিশেষ আকর্ষণ আর ঐতিহ্যেরও বটে।

বাংলায় হেমন্তের খাদ্য উৎসব শুরু হয় আশ্বিনের সংক্রান্তি থেকে। কথায় আছে, আশ্বিনে রাঁধে কার্তিকে খায়। কেউ কেউ বলেন ডাকসংক্রান্তি, আবার কেউ নলসংক্রান্তি। বাংলাদেশ থেকে শুরু করে রাঢ়বঙ্গের দেশঘরে, ব্রত আর পার্বণের দিন শুরু হয় সে সময় থেকে। কৃষিজীবন আর অ-কৃষিজাত শাকসবজি, আনাজের কাছে ফিরে যাওয়ার দিন শুরু হয়। প্রায় হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাসের মধ্যে ভেসে ওঠে খানিকটা খড়কুটোর মতো—গাডুর ডাল, সজলান্ন কিংবা ব্রতের ভাত।

গোলাভরা আউশের আশ্বাস আর খেতভরা আমনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে গর্ভিণী ধানের সাধভক্ষণ—নলসংক্রান্তি। এই ধান্য লক্ষ্মীর পূজা আসলে পৃথিবীর কাছে ফিরে যাওয়ার দিন। গ্রাম-বাংলার অ-কৃষিজাত কন্দমূল ও গাছগাছালিকে চিনে নেওয়ার সময়ও হেমন্তকাল। বাংলাদেশে কত রকমের যে কচু ছিল, সেই সব দিয়ে, শালুকের গোড়া, মটর বা খেসারির ডাল দিয়ে যে গাডুর ডাল রান্না হয়, সেই ডালকে মানুষ বলে ‘আসমবারি’।

এই হেমন্তের শুরুতে আসে ধন্বন্তরি বা অশ্বিনী দেবের পূজা। এদের ডাকপুরুষও বলে। সেই পূজার উপোস ভাঙতে এই ডাল আর ব্রতের ভাত খাওয়া হয়। ব্রতের ভাত রান্না হয় শ্যামা চালে। রেসিপি আলাদা। এই ভাতের সঙ্গে ডাল, নারকেল, পাকা কলা, গুড়, গ্রাম-বাংলার চালের পিঠা সব দেবতাকে নিবেদন করে তারপর খাওয়া হয়। আসলে হেমন্ত ঋতুতে এই পূজাগুলো আমাদের শেখায়, কোন শস্য কখন খেতে হয়, কোন শস্য বিষাক্ত কোন সময়ে।

হেমন্ত ঋতুতে ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে নবান্ন উৎসব হয়। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব এই নবান্ন। নতুন আমন ধান কাটার পর তা থেকে চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব এটি। কাঁচা দুধ, ছোট-বড় ছোলা, মটর, গোটা মটর, গোটা সবুজ মুগসহ ভেজানো ডালজাতীয় সব শস্যদানা, কামরাঙা, পানিফল, পেয়ারা, কমলালেবু, নারকেল ইত্যাদি হেমন্তে উৎপাদিত নানান ফলের টুকরা আর আমন ধান থেকে হওয়া নতুন চাল দিয়ে নবান্ন উৎসব হয়।

বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে ফসল তোলার পরের দিনেই নতুন চালের পায়েস, ক্ষীর, পিঠা আত্মীয়স্বজন এবং পড়শিদের ঘরে ঘরে বিতরণ করা হয়। হেমন্ত ঋতুর শুরুতে খেজুর ও তালগাছের রস গ্রাম-বাংলার অত্যন্ত প্রিয় পানীয়। ভোরে সূর্যের তেজ বাড়ার আগেই তা করতে হয় এই পানীয়। এই রস জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় খেজুর বা তালের গুড়।

হেমন্তে নতুন চাল থেকে তৈরি হয় খই। নতুন গুড় ও খই তৈরি হয় মোয়া, খেজুরের নতুন গুড়ের পায়েস, ক্ষীর, পিঠের আয়োজনে উৎসব শুরু হয়ে যায় পৌষ পার্বণের আগেই। এ ছাড়া হেমন্তকালের শুরুতে নদী, নালা, পুকুর, খাল, বিল—এসবের জল শুকিয়ে যেতে শুরু করে। এই সময় অন্যান্য পরিচিত মাছের সঙ্গে পুঁটি, চাঁদা, খলসে, গেঁড়ি গুগলি এবং কাঁকড়া পাওয়া যায় প্রচুর। তাই সাধারণ বাঙালি ঘরে এসব দিয়ে রান্না করা হয় বিভিন্ন পদ। এসব খাবার শরীরে পুষ্টি ও প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে পুরো বছরের জন্য।

এই সবকিছু মিলিয়ে হেমন্তের সুঘ্রাণ দুই বাংলায় ছড়িয়ে থাকে।

ছন্দা ব্যানার্জি, রন্ধনশিল্পী ও খাদ্যবিষয়ক লেখক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলা করলেন মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালামের স্ত্রী

জামায়াত আমিরের পাঁচ ঘণ্টার কর্মদিবস আদতে নারীর গায়েবি শিকল

ফেসবুকে জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য, তোপের মুখে ওসি

‘শিক্ষক’ পেশা দিয়ে নিজের পাসপোর্ট বানান পাসপোর্টের শাহিনুর, চাকরিচ্যুতির আগেই চান অব্যাহতি

চট্টগ্রামে ওসি ও যুবদলের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যা মামলা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত