Ajker Patrika

যেসব দেশে বসবাসের জন্য অর্থ পাওয়া যায়

মোস্তাফিজ মিঠু, ঢাকা
ভালাইস অঞ্চলে বসবাসের জন্য নতুন বাসিন্দাদের ৩০ থেকে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত অনুদান দিচ্ছে সুইজারল্যান্ড সরকার। ছবি: উইকিপিডিয়া
ভালাইস অঞ্চলে বসবাসের জন্য নতুন বাসিন্দাদের ৩০ থেকে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত অনুদান দিচ্ছে সুইজারল্যান্ড সরকার। ছবি: উইকিপিডিয়া

কোনো দেশে বসবাসের জন্য টাকা পাওয়া যায়! সংবাদটি বেশ অবাক করাই। অনেক বিশ্বাস করেন না। অবশ্য এই সংবাদ অবিশ্বাস করলেও কোনো সমস্যা নেই। তবে তথ্য হলো, তেমন দেশ আছে পৃথিবীতে।

জনসংখ্যা কমে যাওয়া এবং বয়স্কদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন পৃথিবীর অনেক দেশ। এশিয়া কিংবা আফ্রিকা না হলেও ইউরোপের কিছু দেশ বিশেষভাবে এই সমস্যার সম্মুখীন। সেখানে গ্রামীণ এলাকা ও ছোট শহরগুলো ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অঞ্চলগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং নতুন নাগরিক আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দেশ বিশেষ প্রণোদনা বা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে; যাতে নতুন বাসিন্দারা সেসব জায়গায় বসবাস শুরু করে।

তেমনই চারটি দেশের গল্প রইল—

আয়ারল্যান্ড: দুর্গম দ্বীপে জীবনযাপনের প্রণোদনা

আয়ারল্যান্ড সরকার ‘আওয়ার লিভিং আইল্যান্ড’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশটির প্রায় ৩০টি দুর্গম দ্বীপে নতুন বাসিন্দার খোঁজ করছে। এই দ্বীপগুলোর মধ্যে রয়েছে বেরে আইল্যান্ড, ইনিশবফিন, ক্লেয়ার আইল্যান্ড ও অ্যারানমোর। প্রোগ্রামের আওতায় পরিত্যক্ত বাড়ি সংস্কারের জন্য একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৮৪ হাজার ইউরো পর্যন্ত অর্থসহায়তা পেতে পারেন। তবে দ্বীপগুলো মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সেখানে পৌঁছাতে নৌকা বা বিমানযাত্রা করতে হয়। বিদেশি নাগরিকেরা আবেদন করতে পারলেও তাদের আয়ারল্যান্ডে ভিসা ও বসবাসের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।

আয়ারল্যান্ড সরকার ‘আওয়ার লিভিং আইল্যান্ড’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশটির প্রায় ৩০টি দুর্গম দ্বীপে নতুন বাসিন্দার খোঁজ করছে। বেরে আইল্যান্ড আয়ারল্যান্ড। ছবি: উইকিপিডিয়া
আয়ারল্যান্ড সরকার ‘আওয়ার লিভিং আইল্যান্ড’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশটির প্রায় ৩০টি দুর্গম দ্বীপে নতুন বাসিন্দার খোঁজ করছে। বেরে আইল্যান্ড আয়ারল্যান্ড। ছবি: উইকিপিডিয়া

এই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থানীয় উন্নয়ন নিশ্চিত করা। শুধু ঘর সংস্কারের জন্য নয়, আয়ারল্যান্ডের স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা। এই ধরনের অংশগ্রহণকারীরা আয়ারল্যান্ডে নতুন ব্যবসা স্থাপন করলে দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সুযোগ পাবেন। ব্যবসা সফল হলে প্রথমে দুই বছরের ভিসা পাওয়া যায়, যা পরে আরও তিন বছরের জন্য নবায়নযোগ্য। পাঁচ বছর পর ব্যবসা কার্যকর থাকলে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়া যায়।

সুইজারল্যান্ডে পাহাড়ি গ্রামে নতুন জীবন

সুইজারল্যান্ডের ভালাইস অঞ্চলের আলবিনেন গ্রাম দীর্ঘদিন ধরে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার সমস্যায় জর্জরিত। এই সমস্যা মোকাবিলায় গ্রামটি নতুন বাসিন্দাদের ৩০ থেকে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত অনুদান দিচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি শিশুর জন্য প্রায় ১২ হাজার ২০০ ডলারের প্রণোদনা। আবেদনকারীদের অবশ্যই স্থায়ী বাসস্থানের জন্য বাড়ি কিনতে হবে এবং কমপক্ষে ১০ বছর সেখানে বসবাস করতে হবে। সুইজারল্যান্ডের এই পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দা হওয়ার জন্য ইউরোপের নাগরিকদের প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ।

ভালাইস অঞ্চলে বসবাসের জন্য স্বল্পমেয়াদি ও নবায়নযোগ্য ভিসা প্যাকেজ রয়েছে সুইজারল্যান্ডের। এ ছাড়া ১০ বছর থাকার পর স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সুইজারল্যান্ড রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার জন্য বিখ্যাত। একবার চেষ্টা করে দেখবেন নাকি?

১ ইউরোর বাড়ি থেকে ডিজিটাল নোমাড ভিসা ইতালিতে

ইতালির গ্রামীণ এলাকা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ‘ওয়ান ইউরো হোম’ প্রকল্প চালু আছে। এই প্রকল্পে পরিত্যক্ত বাড়ি কিনে সংস্কার করলে বিশেষ অনুদান পাওয়া যায়। তোস্কানা অঞ্চলে এই অনুদান ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার ইউরো পর্যন্ত। আর সার্ডিনিয়ার ছোট শহরগুলোতে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয়।

ইতালির গ্রামীণ এলাকা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ‘ওয়ান ইউরো হোম’ প্রকল্প চালু আছে। ছবি: উইকিপিডিয়া
ইতালির গ্রামীণ এলাকা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ‘ওয়ান ইউরো হোম’ প্রকল্প চালু আছে। ছবি: উইকিপিডিয়া

ইতালি বিনিয়োগ ভিসা ও ডিজিটাল নোমাড ভিসার মাধ্যমে বিদেশি নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের সুযোগ দিচ্ছে। ইনভেস্টর ভিসার জন্য সরকারি বন্ডে ২ মিলিয়ন ইউরো, স্থানীয় স্টার্টআপে আড়াই লাখ ইউরো অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানে ৫ লাখ ইউরো বিনিয়োগের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য ভিসা পাওয়া যায়।

ছোট শহরে নতুন জীবন ও প্রণোদনা স্পেনে

স্পেনও গ্রামীণ এলাকা পুনরুজ্জীবিত করতে নানান প্রণোদনা দিচ্ছে; বিশেষ করে এক্সট্রিমাদুরা অঞ্চলের ছোট শহরগুলোতে নতুন বাসিন্দারা অর্থসহায়তা হিসেবে পাবেন ৮ থেকে ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত। ৩০ বছরের কম বয়সী তরুণদের জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার ইউরো অনুদানের ঘোষণা রয়েছে। এই প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য হলো ছোট শহরগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি এবং নতুন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উদ্যোগকে উৎসাহ দেওয়া।

দেশগুলোর এই প্রণোদনা প্রকল্প শুধু নতুন বাসিন্দাদের আকৃষ্ট করার জন্য আর্থিক সহায়তা নয়; বরং ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকা পুনরুজ্জীবিত করা, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরি করা এবং জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় রাখার উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছে। যারা নতুন জীবন, নতুন কাজ বা নতুন অভিজ্ঞতা খুঁজছেন, তাঁদের জন্য এই দেশগুলো এখন দারুণ সুযোগ হতে পারে।

সূত্র: নোমাড ক্যাপিটালিস্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশে সরকার অনুমোদিত পাঁচ তারা ২০টি হোটেল

ফিচার ডেস্ক
ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা
ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা

পাঁচ তারা হোটেল কোনগুলো? অনেকে এ নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তাই হোটেল নির্বাচনের আগে দেখে নিতে পারেন সরকার অনুমোদিত তালিকা। সেই তালিকা অনুসারে আমাদের দেশে পাঁচ তারা হোটেলের সংখ্যা ২০।

পাঁচ তারা স্বীকৃতি পাওয়া মানে হলো হোটেলটিতে আন্তর্জাতিক মানের কক্ষ, নিরাপত্তা, রেস্টুরেন্ট, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ, স্টাফ প্রশিক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করা। তাই যেকোনো ভ্রমণকারী নিশ্চিন্তে সেসব হোটেল বেছে নিতে পারেন।

ঢাকার অনুমোদিত পাঁচ তারা হোটেল

  • প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও
  • ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা
  • র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন
  • ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • হোটেল সারিনা
  • ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • লো মেরিডিয়ান
  • রেনেসাঁ হোটেলস
  • কারিশমা সার্ভিসেস লিমিটেড

এই হোটেলগুলো মূলত গুলশান, বনানী, খিলক্ষেত ও তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত। ব্যবসায়িক ভ্রমণকারী, কনফারেন্স, কনসার্ট এবং আন্তর্জাতিক ইভেন্টের জন্য এগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

কক্সবাজারের পাঁচ তারা হোটেল

বিশ্বের দীর্ঘতম সাদা বালুর সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে পাঁচ তারা হোটেলের চাহিদা বেশি। এখানে বিলাসী পর্যটকদের জন্য পাঁচ তারা ৩টি হোটেল রয়েছে। সেগুলো হলো—

  • রয়্যাল টিউলিপ সি পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা
  • সিগাল হোটেল
  • ওশান প্যারাডাইস
  • সাইমন বিচ রিসোর্ট

এই হোটেলগুলো মূলত সমুদ্রের কাছে। ইনফিনিটি পুল, বিচ অ্যাক্সেস, লাইভ রেস্টুরেন্ট ও স্পা সেবার জন্য জনপ্রিয়।

গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল

পাহাড়ি ও রিসোর্ট অঞ্চল

অনেকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য শান্ত পরিবেশ খোঁজেন। তাঁদের জন্য সিলেট বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাঁচ তারকা হোটেল ও রিসোর্ট।

  • গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল
  • দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট, হবিগঞ্জ
  • গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • উত্তর ও দক্ষিণে রয়েছে ২টি

র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ
র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ

চট্টগ্রামে আছে পাঁচ তারা একটি হোটেল

চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কারণে এখানে উচ্চমানের হোটেলের চাহিদা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। তবে এই শহরে সরকারি তালিকা অনুযায়ী মাত্র একটি পাঁচ তারা হোটেল রয়েছে। নাম র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ।

সাম্প্রতিক আপডেট অনুযায়ী নতুন যে হোটেলগুলো পাঁচ তারা তালিকায় যুক্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের দুটি হোটেল রয়েছে। এগুলো দেশের আঞ্চলিক হোটেলশিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এ দুটি হোটেল হলো—

  • মম ইন হোটেল, বগুড়া
  • হোটেল জাবীর প্যারাডাইস, যশোর

যেহেতু অনেক হোটেল নিজেকে ‘পাঁচ তারা’ দাবি করে, তাই সরকারি স্বীকৃতি থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। মান যাচাই, নিরাপত্তা, স্টাফ কোয়ালিটি এবং সেবা মানের মতো বিষয়ে সরকারিভাবে অনুমোদিত হোটেলগুলোকে নির্ধারিত মান বজায় রাখতে হয়। এতে পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট সেবা নিশ্চিত থাকে।

সূত্র: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রিয়জন বেষ্টিত থেকেও নিঃসঙ্গ লাগবে, মানুষ চেনার অধ্যায় শুরু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজকের রাশিফল: প্রিয়জন বেষ্টিত থেকেও নিঃসঙ্গ লাগবে, মানুষ চেনার অধ্যায় শুরু

মেষ

আজ আপনার অর্থভাগ্য অনেকটা ফাটকা ব্যবসার মতো। হয় অপ্রত্যাশিত লাভ হবে, নয়তো কপাল পুড়বে। তবে চিন্তা নেই, লাভ হলেও সেই টাকা দিয়ে হয়তো একটা দামি কফি কিনবেন, আর লোকসান হলেও কফিটাই কিনবেন—তবে সেটা ব্ল্যাক কফি। শত্রুরা আজ আপনাকে নিয়ে খুব আলোচনা করবে, বিশেষত সেই পাশের বাড়ির আন্টি, যিনি আপনার বারান্দার গাছগুলো দেখে হিংসা করেন। ব্যবসায় সাফল্য নিশ্চিত, কিন্তু এর কৃতিত্ব যেন সঙ্গী না নিয়ে নেন!

বৃষ

কর্মক্ষেত্রে আজ পরিস্থিতি সুবিধাজনক নাও হতে পারে। মানে, বস আজ সকালে টকদই খেয়ে এসেছেন, তাই ভুলেও আজ কোনো অতিরিক্ত বুদ্ধি খাটাতে যাবেন না। সহকর্মীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন; কারণ আপনি গত সপ্তাহে অফিসে সহকর্মীর জন্মদিনের কেকটা একাই অর্ধেকের বেশি খেয়ে নিয়েছিলেন। সন্তানের চিন্তা বাড়বে, সম্ভবত তারা আপনার লুকিয়ে রাখা চিপসের প্যাকেট খুঁজে পেয়েছে। এলিট শ্রেণীর কোনো মানুষের সান্নিধ্য পাবেন, তবে তার আগে আপনার জুতাটা ভালো করে পালিশ করে নেবেন। নতুন কাজে সাফল্য আসবে, কিন্তু তার আগে সমাজে একটু ইজ্জত খোয়া যেতে পারে।

মিথুন

আজ শত্রুদের কারণে দুশ্চিন্তা বাড়বে। আপনার আসল শত্রু হলো নিজের মন, যেটা এক সেকেন্ডে তিনটি ভিন্ন প্ল্যান করে ফেলে। উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে ভ্রমণ হতে পারে—যেমন ফ্রিজে কী আছে দেখতে গিয়ে ড্রয়ারে কী আছে তা খুঁজতে শুরু করা। বন্ধুর কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে, বিশেষত সেই বন্ধু যিনি টাকা ধার করে আর ফিরিয়ে দেন না। মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন, নাহলে তিনি রান্নাঘরের ‘রাজদণ্ড’ ছেড়ে দেবেন না। সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাবে। ফাইনালি, রিমোট কন্ট্রোল যুদ্ধ শেষ!

কর্কট

রাস্তাঘাটে সতর্ক ভাবে চলাফেরা করুন। পাছে কলার খোসার ওপর পা দিয়ে পিছলে না যান, কারণ আঘাতের যোগ আছে। অনেক দিনের পুরোনো অসুখ থেকে মুক্তি পেতে পারেন—হ্যাঁ, সেই পুরোনো অভ্যাস, রাতে দেরি করে আইসক্রিম খাওয়াটা আজ বন্ধ হবে। অপ্রত্যাশিত লাভ হবে, হয়তো ওয়াশিং মেশিনের পকেট থেকে একটা পুরোনো ৫০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। কাউকে অবহেলা করবেন না, বিশেষত জীবনসঙ্গীকে, কারণ আজ রাতে সোফায় শোয়ার যোগ আছে।

সিংহ

আজ আপনার সর্দি, কাশি বা ঠান্ডা লাগার সমস্যায় কষ্ট হতে পারে। কারণ আপনার নাটুকে মন সহ্য করতে না পেরে মহাবিশ্ব আপনাকে একটু শান্ত থাকার সংকেত দিচ্ছে। জ্ঞাতিরা আপনার সঙ্গে শত্রুতা করবে—কারণ তারা আপনার নতুন কেনা গ্যাজেটটার জন্য হিংসা করছে। কর্মক্ষেত্রে মর্যাদাহানি বা স্থান পরিবর্তন হতে পারে; ধরুন, আপনাকে এসি রুম থেকে পাশের স্টোররুমে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বাড়বে, তবে সাবধান! দাম্পত্যে সমস্যা আসতে পারে। তাই প্রেমিকের/প্রেমিকার কাছে বেশি হিরোগিরি দেখাবেন না।

কন্যা

খারাপ খাবার খেয়ে শারীরিক সমস্যা হতে পারে। যে রাস্তার ধারের ফুচকা ছাড়া থাকতে পারেন না, তার ফল আজ ভুগতেই হবে। অত্যধিক চিন্তায় আজ উৎকণ্ঠা বাড়বে; প্লিজ, আজ অন্তত বিড়ালটা কেন অমন করে আপনার দিকে তাকাচ্ছে, সেটা নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করুন। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পাবেন, খুঁতখুঁতে স্বভাব আজ বসের মন জয় করে নেবে। অংশীদারি ব্যবসায় লাভবান হবেন, তাই পার্টনারকে আজই একটা ভালো ট্রিট দিতে বলুন।

তুলা

আজ সহকর্মী বন্ধুরা আপনাকে দারুণ সহযোগিতা করবে। এটা হয়তো পৃথিবীর শেষ দিন, তাই তারা এতটা ভালো ব্যবহার করছে। আত্মীয়দের সাথে দেখা হবে, তাই চটজলদি ভালো জামাকাপড় পরে ফেলুন। আলোচনায় ধৈর্য বজায় রাখুন। কেউ যদি অযথা কোনো তর্কে জড়াতে চায়, তবে শুধু হাসুন আর বলুন, 'আকাশটা আজ সুন্দর, নীল।' প্রিয়জনেরা সুখ বৃদ্ধি করবে, তারা হয়তো আপনার জন্য আপনার পছন্দের খাবার বানিয়ে দেবে।

বৃশ্চিক

নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অবহেলা করবেন না। মাঝরাতে অতিরিক্ত চিপস খাওয়াটা বন্ধ করুন, আপনার লিভার হয়তো আজ একটা চিঠি পাঠাবে। নিজের ভেতরের আগুনটা আজ খুব তীব্র, তাই কাজে সেই তেজ ব্যবহার করুন। কাউকে আজ অতিরিক্ত বিশ্বাস করবেন না, বিশেষত যারা আপনাকে 'সুপার ডুপার সিক্রেট' বলে সব কথা বলে দেয়। মনোযোগ আজ লেজারের মতো তীক্ষ্ণ, কাজে লাগান!

ধনু

আজ সবাইকে কাছে পেয়েও নিজেকে খুব নিঃসঙ্গ বলে মনে হবে। চারিদিকে লোক, কিন্তু সবাই নিজেদের ফোনে মুখ গুঁজে আছে—এই দৃশ্য দেখলে নিঃসঙ্গ লাগতেই পারে। এই নিঃসঙ্গতা কাটাতে গ্রহরা আপনাকে আরও কাজের দায়িত্ব বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছে। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন, আরও কাজ! কারণ ছুটির থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো অফিসের ই-মেল চেক করা, তাই না? ভ্রমণযোগ আছে, সম্ভবত বাড়ির ছাদ থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত।

মকর

কিছু মানুষের ব্যবহারের জন্য মানুষ চেনার আসল অধ্যায় শুরু হবে। মানে, বুঝবেন যে কে আপনার সামনে মধু আর পেছনে বিষ ঢালে। এই জ্ঞানের ফলে আপনি আরও বেশি সিরিয়াস হয়ে যাবেন, যা দেখে আপনার বন্ধুদের কপালে ভাঁজ পড়বে। পারিবারিক দিকে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন, হয়তো ভাই/বোন অবশেষে তাদের ঘর পরিষ্কার করবে। পুরোনো বিনিয়োগ থেকে লাভ আসতে পারে, কিন্তু সেটা আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সকে বিশেষ প্রভাবিত করবে না।

কুম্ভ

আজকে আপনি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং শক্তির মুখোমুখি হতে পারেন। এর সহজ অর্থ হলো, আপনার ইন্টারনেট স্পিড আজ ভীষণ স্লো থাকবে এবং প্রিয় ইউটিউব ভিডিওর মাঝে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন আসবে। প্রযুক্তির সঙ্গে বেশি তর্ক করবেন না, শুধু রাউটারটা একবার রিস্টার্ট করে দেখুন। মনে রাখবেন, আপনার আইডিয়াগুলো দুর্দান্ত, কিন্তু পৃথিবীতে সেটা কার্যকর করার জন্য একটু মাটিতে পা রাখতে হবে।

মীন

প্রেম এবং সম্প্রীতি আপনার জীবনে পূর্ণ থাকবে। আজ সবাই আপনার প্রতি বিশেষভাবে সদয়। কেন? কারণ এত শান্ত থাকেন যে কেউ আপনার সঙ্গে ঝগড়া করতে ভয় পায়। অন্যদের সঙ্গে সংযোগ আরও শক্তিশালী হবে। আধ্যাত্মিক সংযোগ আজ তুঙ্গে থাকবে, তাই আজ গাছেদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতে পারেন, কারণ তারা আপনাকে বন্ধুদের চেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়ে শুনবে। তবে, অফিসের মিটিংয়ে দিবাস্বপ্ন দেখা থেকে বিরত থাকুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৬ সালে ভ্রমণ করার নিরাপদ দেশগুলো

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৪
বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ট্রাভেল প্রোটেকশন নেদারল্যান্ডসকে বিশ্বের নিরাপদতম দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ছবি: সংগৃহীত
বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ট্রাভেল প্রোটেকশন নেদারল্যান্ডসকে বিশ্বের নিরাপদতম দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। ছবি: সংগৃহীত

বিদেশ ভ্রমণে নিরাপত্তা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে দেখা হয়; যদিও যেকোনো দেশে গিয়েই সচেতন থাকা জরুরি। তবে বিশ্বের কিছু দেশ অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় পর্যটকদের জন্য নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত। ২০২৬ সালে এমন দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে উঠে এসেছে নেদারল্যান্ডস।

ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ট্রাভেল প্রোটেকশন নেদারল্যান্ডসকে বিশ্বের নিরাপদতম দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। মূলত শান্তিপ্রিয় মনোভাব, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং সামগ্রিক নিরাপত্তার কারণে দেশটিকে নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া নারী ভ্রমণকারী, সমকামী সম্প্রদায় এবং যেকোনো মানদণ্ডে সংখ্যালঘু হিসেবে পরিচিত ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও নেদারল্যান্ডস বেশি স্কোর পায়। ২০২৪ সালে নেদারল্যান্ডস ১৪তম স্থানে ছিল। সেখান থেকে এবার উঠে এসেছে শীর্ষে।

বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ট্রাভেল প্রোটেকশনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, নিরাপত্তার সংজ্ঞা শুধু অপরাধের হারের ওপর নির্ভর করে না। এখন পর্যটকেরা স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু পরিস্থিতি, পরিবেশগত নিরাপত্তা এবং ভ্রমণকারীদের অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশের বিষয়গুলোকেও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছেন। জরিপে দেখা গেছে, এই দিকগুলোতে নেদারল্যান্ডস অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে। তাই ২০২৬ সালে ভ্রমণের জন্য এটি বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে তালিকার প্রথমে রয়েছে।

গত বছরের নিরাপদ দেশ আইসল্যান্ড এবার নেমে গেছে চতুর্থ স্থানে। তবু বিশ্বের শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে আইসল্যান্ড সমাদৃত। দেশটির বড় ঝুঁকি হলো আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ। কারণ, লাভা প্রায়ই দেশের একমাত্র রিং রোডে প্রভাব ফেলে, যা পর্যটকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

২০২৬ সালের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা এবং সন্ত্রাসবাদের কম ঝুঁকিতে থাকার কারণে শীর্ষে এসেছে। অস্ট্রিয়া তিন নম্বরে অবস্থান করছে আর পাঁচ নম্বরে আছে কানাডা।

আইসল্যান্ড এবার নেমে গেছে চতুর্থ স্থানে। ছবি: সংগৃহীত
আইসল্যান্ড এবার নেমে গেছে চতুর্থ স্থানে। ছবি: সংগৃহীত

বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে সংস্থার জরিপে ১ হাজার ৮০০-এর বেশি আমেরিকান ভ্রমণকারীর অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। জরিপে সন্ত্রাসবাদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে দেশগুলোর নিরাপত্তা মান নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০২৬ সালে ভ্রমণের জন্য নিরাপদ দেশ হিসেবে নির্বাচিত ১৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, আইসল্যান্ড, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, জাপান, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও ডেনমার্ক।

নিরাপদ দেশ হিসেবে এই দেশগুলো ভ্রমণকারীদের জন্য সুবিধাজনক, শান্তিপূর্ণ এবং ঝুঁকিমুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিত করবে। সঠিক প্রস্তুতি এবং সচেতনতার মাধ্যমে পর্যটকেরা নিরাপদ ও আনন্দের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন এ দেশগুলোতে।

সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্যুর মুরল্যান্ডের ১৪তম বর্ষপূর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ট্যুর মুরল্যান্ডের ১৪তম বর্ষপূর্তি

রাজশাহীর ভ্রমণপিয়াসি মানুষদের সংগঠন ট্যুর মুরল্যান্ড। সম্প্রতি সংগঠনটির ১৪তম বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বেলুন উড়িয়ে পথশিশু ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটা হয়। এরপর সেদিন রাতেই সংগঠনটির ২১ সদস্য ৫ দিনের ভ্রমণে রওনা দেন থানচি, লামা ও আলীকদমের উদ্দেশে।

বর্ষপূর্তির অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ট্যুর মুরল্যান্ডের সভাপতি চিকিৎসক শরীফ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক চিকিৎসক ইউসুফ আলী, সদস্য চিকিৎসক জামিল রায়হান, চিকিৎসক নুরুল ইসলাম, সুলতানুল নাহিদসহ অন্যরা।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ইউসুফ আলী বললেন, ‘এক বছরে অনেক শক্তি ক্ষয় হয়ে গেছে। এখন একটু বের হব। এই পাঁচ দিন মোবাইল ফোন বন্ধ রাখব। রিংটোন বাজবে না, পাখির গান শুনব। এখন ঘুরতে গিয়ে নতুন করে শক্তি অর্জন করব।’

ট্যুর মুরল্যান্ডের বেশির ভাগ সদস্য পেশায় চিকিৎসক। মূলত রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ইসমাইল হোসেনের প্রচেষ্টায় এই পর্যটক দল গড়ে উঠেছে।

মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিবার ভ্রমণের আগে তাঁদের একটি থিম সং তৈরি করা হয়; পাশাপাশি প্রতিবারই ভ্রমণে গিয়ে তাঁরা স্বাস্থ্য ক্যাম্প করেন। সেখানে স্থানীয় অধিবাসীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এবারও এমন আয়োজন থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত