Ajker Patrika

বিদ্যা বালানের শাড়িপ্রীতি শুধুই কি ফ্যাশনের জন্য

রজত কান্তি রায়, ঢাকা  
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ৩৫
শাড়িকে এক আইকনিক জায়গায় নিয়ে গেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী বিদ্যা বালান। ছবি: কোলাজ
শাড়িকে এক আইকনিক জায়গায় নিয়ে গেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী বিদ্যা বালান। ছবি: কোলাজ

গৌতম হালদার পরিচালিত ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া বাংলা চলচ্চিত্র ‘ভাল থেকো’ যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা ভুলেও ভাবেননি, তিনি বাঙালি নন। ভিদ্যা বালান না বলে আপনি যদি বিদ্যা বালান নামে ডাকেন, তাহলেই তিনি বাঙালি। তাঁর শারীরিক গঠন, শাড়ির প্রতি তীব্র ভালোবাসা—সবই তাঁকে দীর্ঘকাল বাঙালি হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে। এ শাড়ি পরাকে তিনি ব্যক্তিত্বের সঙ্গে এমনভাবে জড়িয়ে নিয়েছেন, তাতে মনে প্রশ্ন জাগে, কেন?

শাড়ি আমার সত্তার অংশ। এটা আমাকে মনে করিয়ে দেয়, আমি কে এবং কোথা থেকে এসেছি। বিদ্যা বালান ভারতীয় অভিনেত্রী

বিদ্যা বালানের অনেক সাক্ষাৎকার রয়েছে এ বিষয়ে। ‘দ্য হিন্দু’ থেকে শুরু করে ভারতের প্রায় সব বড় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি শাড়ি নিয়ে দু-চার কথা বলেছেন। সেগুলোকে যদি এক করে একটু ‘গবেষণা’ করতে বসেন, তাহলেই হয়তো উত্তর পেয়ে যাবেন।

মনে রাখতে হবে, বিদ্যা বালান তাঁর এ ৪৭ বছরের জীবনে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সান্নিধ্যে এসেছেন। জন্মসূত্রে তিনি তামিল। বেড়ে উঠেছেন মহারাষ্ট্রে। কাজের সূত্রে প্রথম জীবনে এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। খেয়াল করলে দেখবেন, এ তিন জায়গাতেই নারীর পোশাক হিসেবে শাড়ির গুরুত্ব অনেক। তামিল ভাষায় শাড়ি নিয়ে একটি প্রবাদ রয়েছে। সেটি হলো, ‘শাড়ি তামিল নারীর অলংকার, এটি তাঁর সৌন্দর্য ও শক্তি!’ ফলে তামিল সংস্কৃতিতে শাড়ি ‘জীবনের সঙ্গে বোনা’। এটি শ্রদ্ধা, উৎসব ও আত্মপরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ। মাদিসার থেকে কাঞ্জিভরম পর্যন্ত এর শৈলী ও বৈচিত্র্যে ঐক্য তৈরি করেছে।

বিদ্যা বালান তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে প্রায়ই বলেন, শাড়ি হলো নারীসুলভ শক্তি ও ভারতীয় নারীত্বের প্রতীক। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বিদ্যা বালান তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে প্রায়ই বলেন, শাড়ি হলো নারীসুলভ শক্তি ও ভারতীয় নারীত্বের প্রতীক। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

তামিল ভাষায় শাড়িকে বলা হয় ‘পুদাভাই’। একে নারীদের মর্যাদা ও শালীনতার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। তামিল সংস্কৃতিতে শাড়ি পরার তিনটি স্বতন্ত্র রীতি বা শৈলী রয়েছে। এগুলো হলো, মাদিসার শাড়ি, কোরাই শৈলী ও আধুনিক চেঙ্গলপট্টু শাড়ি। এ তিন রীতির শাড়ি পরার ধরন, নকশা আর রঙেও পার্থক্য রয়েছে। বিখ্যাত কাঞ্জিভরম সিল্ক পরা হয় বিয়েসহ যেকোনো উৎসবে, কোঙ্গু সিল্ক পরা হয় দৈনন্দিন জীবনে ও অনুষ্ঠানে এবং চেন্নাই কটন শহরে ও গরমকালে পরা হয়। এসব নিয়ে বিস্তারিত আলাপ এখানে না করাই ভালো।

মহারাষ্ট্রেরও রয়েছে শাড়ির স্বতন্ত্র শৈলী। তার ছাপ দেখা যায় বলিউডে। মহারাষ্ট্রে শাড়ি শুধু পোশাক নয়, তামিল সংস্কৃতির মতো গর্বের প্রতীক। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মহারাষ্ট্রের প্রাচীন ইতিহাস। এই অঞ্চলে শাড়ির মূল শৈলী দুটি—একটি নাওয়ারি বা ৯ গজের শাড়ি, অন্যটি পৈঠানী শাড়ি। নাওয়ারি হলো মারাঠা যোদ্ধা নারীদের ঐতিহাসিক পোশাক আর পৈঠানী শাড়ি হলো মহারাষ্ট্রের রাজকীয় বস্ত্র—সোনালি-রুপালি জরির কাজ এবং হাতে নকশা করা। সাধারণত বিয়ের সময় বা বিশেষ অনুষ্ঠানে পরা হয় এটি।

আর বাংলা অঞ্চলের শাড়ি নিয়ে নতুন করে কিছু বলাটা অত্যুক্তিই বটে।

যা-ই হোক, বিদ্যা বালানের শাড়ি পরা নিয়ে এত কথা লিখতে হলো মূলত প্রেক্ষাপটটা বোঝার জন্য। এত কথা না লিখলেও চলত। তামিল, মহারাষ্ট্র আর পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে খুব কাছ থেকে দেখে সমৃদ্ধ হওয়া বিদ্যা যখন মুম্বাইয়ের আলো ঝলমলে রঙ্গমঞ্চে দাঁড়িয়ে যান, তখন শাড়িকে আঁকড়ে ধরে থাকার মতো বিষয়টি এক ভিন্ন রকম ভাবনারই প্রতিফলন হিসেবে দেখতে হয়। সেসব জানা যায় তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে।

বিদ্যা তাঁর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে প্রায়ই বলেন, শাড়ি হলো নারীসুলভ শক্তি ও ভারতীয় নারীত্বের প্রতীক। তিনি শাড়িকে শুধু একটি পোশাক হিসেবে না দেখে সাংস্কৃতিক পরিচয় ও আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ হিসেবে দেখেন।

বিদ্যা বালান তাঁর কার্ভেসিয়াস শরীরী বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। শাড়ি তাঁর শরীরের সৌন্দর্যকে মার্জিত ও শালীনভাবে উপস্থাপন করে। তিনি একাধিক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন, শাড়ি পরলে তিনি আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ২০১২ সালে ‘দ্য হিন্দু’কে বিদ্যা বলেছিলেন, ‘শাড়ি আমার আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।’ তিনি বলেন, ‘When I wear a saree, I feel like the best version of myself. It’s not just a garment; it’s an emotion. It gives me confidence and grace.’

শাড়ি পরলে বিদ্যা আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
শাড়ি পরলে বিদ্যা আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বলিউডে পশ্চিমা পোশাকের প্রাধান্য থাকলেও বিদ্যা কাঞ্জিভরম বা বেনারসির মতো ঐতিহ্যবাহী শাড়ি পরতে পছন্দ করেন। এটি তাঁর ইউনিক স্টাইল স্টেটমেন্ট হয়ে উঠেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, শাড়ি নারীকে মানসিকভাবে শক্তিশালী ও মর্যাদাশীল করে তোলে। ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ বা ‘কাহানি’র মতো চলচ্চিত্রে তাঁর চরিত্রগুলো ছিল দৃঢ়চেতা ও স্বাধীন। কস্টিউম হিসেবে বেশ বড় অংশজুড়ে ছিল শাড়ি। এ প্রসঙ্গে তিনি ২০১১ সালে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছিলেন, ‘দ্য ডার্টি পিকচারে শাড়িটাই ছিল আমার রক্ষাকবচ। সিল্কের শাড়ি সিল্ক নামের চরিত্রটিকে করে তুলেছিল নির্ভীক ও আত্মবিশ্বাসী। সেটাই ছিল শাড়ির জাদু!’

শাড়ি পরার ক্ষেত্রে বিদ্যার জীবনে পরিবারের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর মাসহ পরিবারের নারীরা শাড়িই পরেন বলে জানা যায়। বিদ্যা বলেছেন, তাঁর মা-ই তাঁর কাছে শাড়ির আইকন। শাড়ি বিষয়ে বিদ্যার এমন অনেক বক্তব্যই পাওয়া যায় গণমাধ্যম ঘাঁটলেই। ২০১৮ সালে মুম্বাইতে টিইডিএক্স টকে তিনি বলেছিলেন, ‘শাড়ি আমার সেলফ এক্সপ্রেশন।’

বলিউড একদিকে যেমন পশ্চিমা ফ্যাশন প্রদর্শনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, অন্যদিকে তেমনি ভারতীয় ফ্যাশন মেলে ধরারও অন্যতম প্রধান জায়গা। এখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সব ধরনের ফ্যাশনের সঙ্গে মানিয়ে চলেন। এ ক্ষেত্রে বিদ্যা সম্ভবত খানিক ব্যতিক্রম। চরিত্রের প্রয়োজন ছাড়া তাঁকে অন্যান্য পোশাকে খুব একটা দেখা গেছে বলে কেউ দাবি করতে পারেন না। ফলে বিদ্যা খানিক দাবি করতেই পারেন, তাঁর শাড়িপ্রীতি শুধু ফ্যাশনের জন্য নয়; বরং সাংস্কৃতিক গর্ব, আত্মবিশ্বাস ও নারীর শক্তির প্রকাশ। তিনি বলতেই পারেন, শাড়ি শুধু ঐতিহ্য নয়, আধুনিক নারীর স্টাইল আইকনও হতে পারে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যর্থ ব্যবসায়ী ফুড ডেলিভারি করে লাখপতি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

সাধারণত অস্থায়ী পেশা হিসেবে ফুড ডেলিভারির চাকরি অনেকেই করেন। কেউ আবার মূল চাকরির ফাঁকে ফুড ডেলিভারি দেন অতিরিক্ত আয়ের জন্য। কিন্তু এ কাজ করেও যে লাখ টাকার মালিক হওয়া যায়, তা দেখিয়ে দিলেন চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং নামের এক তরুণ।

ফুড ডেলিভারি করতে করতে মাত্র পাঁচ বছরে ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান সঞ্চয় করেছেন তিনি, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান। প্রতিদিন গড়ে ১৪ ঘণ্টা কাজ আর কঠোর মিতব্যয়িতাই তাঁকে লাখপতি বানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

ব্যর্থ ব্যবসা, তারপর নতুন শুরু

ঝাংয়ের বাড়ি ফুজিয়ান প্রদেশের ঝাংঝো শহরে। ২০১৯ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে তিনি একটি নাশতার দোকান চালু করেন। শুরুতে কিছুটা আশাব্যঞ্জক হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই ব্যবসার অবস্থা হয়ে যায় টালমাটাল। লোকসান দিন দিন বাড়তে থাকে, ক্রেতা কমে যায় এবং প্রতিদিনের খরচ টানতে গিয়ে তিনি চাপের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত দোকানটি বন্ধ করতে বাধ্য হন এবং তাঁর কাঁধে চাপে প্রায় ৫০ হাজার ইউয়ানের ঋণ।

চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন
চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন

এ ব্যর্থতা তরুণ ঝাংকে মানসিকভাবে দমিয়ে দেয়। কিন্তু তিনি পরিবারকে বিষয়টি বুঝতে দিতে চাননি। তাই সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে একাই রওনা দেন সাংহাইয়ের পথে। বড় শহরে গিয়ে নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত তাঁর জন্য সহজ ছিল না। তবুও লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব ঋণ শোধ করা, আবার উঠে দাঁড়ানোর মতো মূলধন জোগাড় করা এবং নিজের জন্য একটি নতুন পথ তৈরি করা।

১৪ ঘণ্টার কর্মদিবস এবং অবিশ্বাস্য পরিশ্রম

সাংহাইয়ের মিনহাং জেলায় উঝং রোডের একটি ডেলিভারি স্টেশনে তিনি কাজ শুরু করেন। সকাল ১০টা ৪০ থেকে রাত ১টা পর্যন্ত বৃষ্টি, ঠান্ডা কিংবা গরম—সব পরিস্থিতিতেই তিনি মাঠে থাকেন ডেলিভারির কাজে। সবার আগে অর্ডার ধরতে এবং দ্রুত ডেলিভারি দিতে তিনি সব সময় ছুটে চলেন। ডেলিভারি স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ান বলেন, ‘ছেলেটা খুব কম কথা বলে, কিন্তু কাজ করে অবিশ্বাস্য পরিশ্রম দিয়ে। প্রতিদিনই দেখি সে সময় বাঁচাতে দৌড়াচ্ছে।’

কাজের দক্ষতার কারণে সহকর্মীরা তাঁকে ডাকেন ‘অর্ডারের রাজা’ নামে। টানা দীর্ঘ শিফটের পরও তিনি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুম নিশ্চিত করেন, যাতে পরদিন আবার পুরো শক্তিতে কাজ করতে পারেন।

কঠোর মিতব্যয়িতা

ঝাংয়ের সঞ্চয়ের সবচেয়ে বড় রহস্য তাঁর মিতব্যয়ী জীবনযাপন। প্রয়োজন ছাড়া তিনি কোনো খরচ করেন না। বাইরে খাওয়া, বিনোদন, ভ্রমণ—কোনো কিছুতেই ব্যয় করেন না তিনি। এমনকি চন্দ্র নববর্ষেও তিনি বাড়ি যান না। তখন শহরে থেকে উচ্চমূল্যের অর্ডার ডেলিভারি করেন। এই কঠোর জীবনযাপন ও পরিশ্রম মিলিয়ে পাঁচ বছরে তাঁর মোট আয় দাঁড়ায় প্রায় ১৪ লাখ ইউয়ান। প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে সঞ্চয় হয় ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান।

ঝাং জানান, তাঁর পরিবার এখনো জানে না যে তিনি ঋণ শোধ করে বড় অঙ্কের সঞ্চয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘একবার ব্যর্থ হয়েছি বলে থেমে থাকব না। ভবিষ্যতে আবার ব্যবসা শুরু করার পুঁজি হিসেবেই এ টাকা জমাচ্ছি।’

চীনের তরুণদের নতুন পেশা হিসেবে ডেলিভারি

অর্থনৈতিক ধাক্কা ও চাকরির বাজারের পরিবর্তনের মধ্যে চীনে ডেলিভারি পেশা দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। নিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ঝাওপিনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশটিতে ডেলিভারি কর্মীদের মধ্যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিধারীর হার দুই বছরে ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ শতাংশে। আয়ও অনেক অফিসকর্মীর চেয়ে বেশি। বেইজিং বা সাংহাইয়ের মতো বড় শহরে যেখানে সাধারণ একজন অফিসকর্মী মাসে গড়ে আয় করেন ৬ হাজার ইউয়ান, সেখানে ডেলিভারি ড্রাইভারদের গড় আয় মাসে ৭ হাজার ৩৫০ ইউয়ান পর্যন্ত। ব্যস্ত দিনে ঝাংয়ের মতো পরিশ্রমী ডেলিভারি কর্মীরা দিনে হাজার ইউয়ানের বেশি আয় করতে পারেন।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানযাত্রার অলিখিত নিয়মগুলো জেনে নিন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
বিমানে উঠে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো শুধু ভদ্রতা নয়; পুরো যাত্রার পরিবেশ ইতিবাচক রাখতে তা ভূমিকা রাখে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
বিমানে উঠে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো শুধু ভদ্রতা নয়; পুরো যাত্রার পরিবেশ ইতিবাচক রাখতে তা ভূমিকা রাখে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

বিমানের ভেতর সংকীর্ণ জায়গায় বহু মানুষকে একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটাতে হয়। তাই ব্যক্তিগত আচরণে সচেতন না থাকলে সামান্য বিষয় থেকেও বড় অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে। মার্কিন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট এবং ভ্রমণ বিশেষজ্ঞদের মতে, যাত্রীদের কিছু অলিখিত নিয়ম মানলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়ানো সম্ভব।

ভদ্রতা দিয়ে যাত্রা শুরু হোক

ক্যাবিনে প্রবেশের মুহূর্ত থেকে হাসিমুখ ও নরম স্বরের আচরণ যাত্রী ও কর্মীদের সম্পর্ক সহজ করে তোলে। প্রটোকল বিশেষজ্ঞ ডায়ান গটসম্যান বলেন, ‘বিমানে উঠেই যদি ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে ধন্যবাদ জানানো হয়, তা শুধু ভদ্রতা নয়; পুরো যাত্রার পরিবেশ ইতিবাচক রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।’ ২২ বছরের অভিজ্ঞ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট অ্যান্ড্রু হেন্ডারসনের মতে, ‘অনেকেই প্রথম মুহূর্তে সামান্য একটি ‘হ্যালো’ বলেন। অনেকেই বেশ হাসিখুশি মন নিয়ে প্রবেশ করেন। এতেই বোঝা যায় যাত্রীর মনোভাব কেমন হবে।’

বিমানে ভ্রমণের সময় মাঝে মাঝে নয়েজ ক্যানসেলিং হেড ফোন বা ইয়ার প্লাগ খুলে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হোন। ছবি: পেক্সেলস
বিমানে ভ্রমণের সময় মাঝে মাঝে নয়েজ ক্যানসেলিং হেড ফোন বা ইয়ার প্লাগ খুলে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হোন। ছবি: পেক্সেলস

হেডফোনে ডুবে থাকা

নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন এখন বিমানে জনপ্রিয়। এগুলো যাত্রাকে নিরিবিলি স্বাদ দেয় ঠিকই; কিন্তু কখনো কখনো বিপদ ডেকে আনে। জরুরি ঘোষণা, সেবার ডাক বা বেভারেজ কার্ট আসার সংকেত—এসব মিস হতে পারে এই হেডফোনের জন্য। বিমান পরামর্শক রিচ হেন্ডারসন জানান, অনেক যাত্রী পুরো ফ্লাইটে হেডফোনে ডুবে থাকেন। জরুরি পরিস্থিতি হলেও তাঁরা নড়াচড়া করেন না, যেন বাইরের জগৎ সম্পর্কে তাঁরা সম্পূর্ণ আলাদা। তাই সার্ভিস কার্ট কাছে এলে হেডফোন সামান্য খুলে কর্মীদের দিকে তাকানো এবং প্রস্তুত থাকা ভদ্রতার অংশ।

শিশু নিয়ে বিমানে

ফ্লাইটে শিশু কাঁদলে বিরক্ত হওয়া স্বাভাবিক। তবে অভিভাবকদের দোষারোপ করাটা সঠিক নয় বলে মনে করেন ডায়ান গটসম্যান। তিনি বলেন, ‘কোনো মা-বাবা চান না তাঁদের শিশু অন্যকে বিরক্ত করুক।’ তবে শিশুকে পুরো ক্যাবিনে দৌড়াতে দেওয়া বা সিটে লাথি মারতে দেওয়া একেবারেই অনুচিত। এতে অন্যরা বিরক্ত হন। এ ধরনের অবস্থায় অভিভাবকদের দায়িত্বশীল আচরণ জরুরি। অন্যদিকে, যাত্রীদের প্রতি পরামর্শ হলো, কেউ সিটে লাথি মারলে ঝগড়া না বাড়িয়ে ভদ্রভাবে অনুরোধ করুন।

জানালার পর্দা

দীর্ঘ ফ্লাইটে জানালার পর্দা খোলা বা বন্ধ নিয়ে যাত্রীরা প্রায়ই দ্বিধায় থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, জানালার পাশের যাত্রী সাধারণত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। তবে অ্যান্ড্রু হেন্ডারসন কঠোর হওয়ার বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত পর্দা বন্ধ রাখি। কিন্তু পাশে বসা কেউ খুলতে চাইলে আমরা আলোচনা করি কখন খোলা থাকবে, কখন বন্ধ থাকবে।’

তিন সিটের দ্বন্দ্ব

এ বিষয়টি নিয়ে প্রায় সবাই একমত, মাঝের সিটে বসা যাত্রীর প্রাধান্য বেশি। কারণ তার না রয়েছে জানালার দেয়ালে হেলান দেওয়ার সুবিধা, না রয়েছে পা বাড়ানোর জায়গা। তাই দুই পাশের আর্ম রেস্ট তাকে দিতে হবে, এটিই শিষ্টাচার।

সিট পেছনে হেলানোর আগে

বিমানের সিট পেছনে হেলানো স্বাভাবিক। তাই রিচ হেন্ডারসন মনে করেন, যাত্রীরা এটি ব্যবহার করবেন বটে। তবে বিবেচনায় রাখতে হবে, পেছনে কেউ খাবার খাচ্ছেন কি না, ট্রে টেবিল নামানো রয়েছে কি না। এসব দেখে রিক্লাইন করলে ঝামেলা কম হয়। খাবারের সময় সিট সোজা রাখা ভালো, যাতে পেছনের যাত্রী আরামে খেতে পারেন।

গন্ধ এবং খাবারের রুচি

বিমানের ভেতর মাছ, সেদ্ধ ডিম বা তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার অন্যদের জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে। একইভাবে অনেকে শক্তিশালী পারফিউম ব্যবহার করেন, যা আরও বিরক্তির কারণ হয়।

অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান

এয়ারপোর্টে বেশি অ্যালকোহল পান করে বিমানে উঠলে যাত্রী নিজের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তাই বিশেষজ্ঞরা সীমিত পান করার মতো অভ্যাস বজায় রাখতে বলেন। তা না হলে এটি নিজের জন্য এবং অন্যের জন্যও বেশ নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়ে দেখা দিতে পারে।

বিমান ভ্রমণে গুরুত্বপূর্ণ হলো পারস্পরিক সম্মান। রিচ হেন্ডারসনের কথায়, ‘একটি সংকীর্ণ জায়গায় আমরা সবাই একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। সামান্য সহমর্মিতা এবং সুন্দর আচরণ পুরো যাত্রার অভিজ্ঞতা বদলে দিতে পারে।’

সূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: দিনটা কাটবে স্বপ্নের মতো, সৃজনশীলতা উপচে পড়বে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
আজকের রাশিফল: দিনটা কাটবে স্বপ্নের মতো, সৃজনশীলতা উপচে পড়বে

মেষ

আজ আপনার ভেতরের অ্যাড্রেনালিন আদা-জল খেয়ে জেগে উঠবে। আপনার শক্তি থাকবে তুঙ্গে, কিন্তু মনে রাখবেন, এই শক্তি যেন শেষ পর্যন্ত নেটফ্লিক্স সিরিয়ালের রিমোট কার হাতে থাকবে, এই ছোট ঝগড়ার পেছনে অপচয় না হয়। কর্মক্ষেত্রে এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ জানতেও পারেনি যে সেটা সমস্যা ছিল। সন্ধ্যায় আপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে—সোফার আকর্ষণ কাটিয়ে উঠে রাতের খাবার বানানো। সাবধান, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশে ফ্রিজের দরজাটা যেন নিজেই খুলে না যায়!

বৃষ

আজ আপনার বিলাসবহুল আরামের প্রতি টানটা চরমে পৌঁছাবে। কেউ আপনাকে যদি বলে যে ‘পাঁচ মিনিট হাঁটো’, এক সেকেন্ডের জন্য ভাববেন যে, হাঁটাটা কি আপনার প্রিয় কম্বলের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা নয়? আর্থিক দিক থেকে আজ ‘অতিরিক্ত’ খরচ করতে পারেন—বিশেষ করে, কোনো নতুন ধরনের চিজ বা বিরল চকলেট কেনার জন্য। প্রেমের ক্ষেত্রে সঙ্গীর কাছ থেকে শুধু একটাই প্রত্যাশা থাকবে: ‘ডিনারে কী আছে?’

মিথুন

আজ আপনার মস্তিষ্ক যেন একটি অতি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগের মতো কাজ করবে, যেখানে একসঙ্গে ১০টি ট্যাব খোলা থাকবে। আপনি একাধারে চারটি কথোপকথনে অংশ নেবেন, তিনটি অ্যাপে চ্যাট করবেন এবং হয়তো নিজের সঙ্গেই উচ্চস্বরে কথা বলবেন। আপনার আজকের প্রধান দক্ষতা হবে—কথা বলার মাঝে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয়ে লাফিয়ে চলে যাওয়া, যাতে অন্যরা কিছুটা বিভ্রান্ত হয়। মনে রাখবেন, সব গোপন কথাই সব বন্ধুকে বলা যায় না; কিছু রহস্য নিজের কাছেও রেখে দিন...পরের সপ্তাহের জন্য!

কর্কট

আজকের দিনটা আবেগতাড়িত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দিনের বেলায় সামান্য কারণে আপনার চোখে পানি আসতে পারে, যেমন হয়তো দেখলেন একটি মিষ্টি কুকুরছানা পার্কে দৌড়াচ্ছে—সেটা দেখেও আপনার মনে হবে, ‘আহ, জীবন কত সুন্দর, কিন্তু ক্ষণস্থায়ী!’ সন্ধ্যায় চাইবেন প্রিয়জনেরা আপনার জন্য পৃথিবীর সমস্ত আরাম নিয়ে আসুক আর আপনি সেই আরামের মধ্যে শুয়ে শুয়ে ভাবুন যে জীবন কত কঠিন!

সিংহ

আজ নিজেকে লাইমলাইটে রাখার চেষ্টা করবেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, লাইমলাইটটা হয়তো আপনার জুতায় লেগে থাকা কাদার দিকে চলে যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে আপনার দুর্দান্ত আইডিয়া হয়তো সামান্য দেরিতে আসবে, ঠিক যখন বসের মন অন্য দিকে চলে গেছে। প্রেমের ক্ষেত্রে আপনার নাটকীয়তা একটু কমিয়ে আনুন। মনে রাখবেন, পার্টনার আপনার ফ্যান হলেও ‘রোজ রাতে অপেরা শো’ দেখতে সে বাধ্য নয়!

কন্যা

আজ তুচ্ছ বিষয়ের ওপর বিশ্বের সেরা বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠবেন। হয়তো উপলব্ধি করবেন যে, আপনার পেন হোল্ডারের পেনগুলো উচ্চতা অনুসারে সাজানো নেই এবং এ বিষয়ে আপনার গভীর উদ্বেগ তৈরি হবে। আজ ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে এমন জিনিস খুঁজে পাবেন, যা আপনি তিন বছর আগে হারিয়েছেন আর সেটার জন্য পুরো দিন নষ্ট করবেন। রিল্যাক্স! পৃথিবী নিখুঁত না হলেও চলবে এবং আপনার আলমারির ভেতরের জগাখিচুড়ি একমাত্র আপনিই জানেন।

তুলা

আজ আপনি ন্যায়বিচার ও ভারসাম্যের সন্ধানে অস্থির থাকবেন, বিশেষত যখন ডিনার মেনুতে দুটি সমান লোভনীয় বিকল্প থাকবে। সবার মন জয় করতে এত ব্যস্ত থাকবেন যে, শেষে নিজের কাজটি করতেই ভুলে যাবেন। কেউ যদি আপনার কাছে কোনো সমস্যার সমাধান চায়, দুটি বিপরীতধর্মী সমাধান দিয়ে বলবেন, ‘দুটোই ভালো, তুমিই ঠিক করো!’

বৃশ্চিক

আজ আপনার ভেতরের রহস্যময় গোয়েন্দা জেগে উঠবে। বন্ধুর ইনস্টাগ্রাম পোস্টের লাইকের উৎস বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন। প্রেমের ক্ষেত্রে দৃষ্টি আকর্ষণ করার দরকার নেই—আপনার রহস্যময় নীরবতাতেই কাজ হয়ে যাবে। আপনার ব্যক্তিত্বের তীব্রতা আজ এত বেশি হবে যে, সাধারণ হাসির বদলে সামান্য বাঁকা হাসি দিয়েও সবাইকে ভয় পাইয়ে দিতে পারেন।

ধনু

অ্যাডভেঞ্চারের প্রতি আপনার আগ্রহ আজ চরমে, কিন্তু সম্ভবত শুধু রান্নাঘরের ভেতরের অন্ধকার ড্রয়ার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন। একটি দুর্দান্ত প্ল্যান করবেন—যেমন পাহাড়ে চড়া বা বিদেশ ভ্রমণ, কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভুলে যাবেন আপনার পাসপোর্ট বা জুতা নিতে। অতিরিক্ত আশাবাদী হওয়া ভালো, তবে চশমাটা পরে নিন।

মকর

আজ মনে হঠাৎ করেই কাজ থেকে বিরতি নেওয়ার একটি মারাত্মক ইচ্ছা জাগবে। হয়তো সোফায় বসে নিজেকে বলবেন, ‘পাঁচ মিনিট আরাম করি,’ আর সেই পাঁচ মিনিট কখন পাঁচ ঘণ্টা হয়ে যাবে, টেরও পাবেন না। এরপর ভেতরের বিবেক আপনাকে অপরাধবোধে ভোগাবে, তাই দ্রুত উঠে একটা অপ্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে আবার বসবেন। নিজেকে মনে করিয়ে দিন—পৃথিবীর সমস্ত কিছু আপনার কাঁধে নেই, সামান্য হাসুন!

কুম্ভ

আজ এমন একটি দার্শনিক ধারণার কথা ভাববেন, যা মানবজাতিকে বদলে দিতে পারত, কিন্তু ধারণাটি বন্ধুর পোষা বিড়ালের সঙ্গে আলোচনা করার পরপরই ভুলে যাবেন। সমাজসংস্কারের চেতনা আজ এতটাই বাড়বে যে, হয়তো ফ্রিজের পুরোনো সবজিগুলোকেও বাঁচানোর চেষ্টা করবেন। অন্যদের কাছে আপনার কথাগুলো আজ ‘খুব বুদ্ধিদীপ্ত’ অথবা ‘পুরোপুরি এলোমেলো’ মনে হতে পারে—মাঝখানে কিছু নেই।

মীন

আজকের দিনটা আপনার জন্য স্বপ্নের মতো। হয়তো পুরো মিটিংটা পার করে দেবেন কল্পনার রাজ্যে, যেখানে আপনি জলপরি অথবা মহাকাশচারী। বাস্তব জীবনে একটু সমস্যা হতে পারে—যেমন লবণ আর চিনি গুলিয়ে ফেলা বা দুদিকে হাঁটার চেষ্টা করা। সৃজনশীলতা আজ উপচে পড়বে, তাই আঁকার উপকরণগুলো হাতের কাছে রাখুন, কারণ, আপনি হয়তো হঠাৎ করেই বসের একটি কার্টুন এঁকে ফেলতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে উলের পোশাকের যত্ন নেবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
উলের তৈরি যেকোনো শীতের পোশাকই ধোয়া, শুকানো ও আলমারিতে রাখার ভুলে উজ্জ্বলতা হারাতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক
উলের তৈরি যেকোনো শীতের পোশাকই ধোয়া, শুকানো ও আলমারিতে রাখার ভুলে উজ্জ্বলতা হারাতে পারে। ছবি: ফ্রিপিক

অগ্রহায়ণ মাস শেষের দিকে। আর কয়েক দিন পরই ক্যালেন্ডারের পাতায় ঘোষণা দিয়ে জাঁকে বসবে শীত। এখনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাপমাত্রা নেমে গেছে বেশ খানিকটা। ভোরে বা সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হলে গায়ে গরম কাপড় চাপাতেই হয়। উলের সোয়েটার থেকে শুরু করে উলের নানা ধরনের শীতের পোশাক তাই এখনই আলমারি বা স্টোর থেকে বের করার উপযুক্ত সময়। শীতের পোশাক আমরা বছরের পর বছর পরি। তাই মৌসুম এলে এগুলো শুধু বের করে পরলেই চলে না, যত্নও নিতে হয়। উলের যেকোনো শীতের পোশাকই ধোয়া, শুকানো ও আলমারিতে রাখার ভুলে উজ্জ্বলতা হারাতে পারে। জেনে নিন, উলের কাপড় দীর্ঘদিন ভালো রাখার উপায়।

উলের পোশাক ধোয়ার কারণেই বেশির ভাগ সময় নষ্ট হয়। অনেকেই ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য গরম পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে উলের কাপড় ভিজিয়ে রেখে তারপর কেচে ধুয়ে নেন। কিন্তু উলের পোশাক গরম পানিতে ধোয়া উচিত নয়। ডিটারজেন্ট উলের চরম শত্রু। তাই এগুলো পরিষ্কারের জন্য কম ক্ষারের তরল সাবান ব্যবহার করুন। গরম পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে উলের কাপড় ভিজিয়ে রাখুন। তবে ১৫ মিনিটের বেশি নয়। তার পর সাবধানে অল্প ঘষে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন। উলের পোশাক ধোয়ার জন্য সাবানের পরিবর্তে শ্যাম্পু ব্যবহার করলে আরও ভালো হয়। এখন বাজারে বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিষ্কারক পাওয়া যায়। তাই উলের পোশাকের জন্য বিশেষ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে পারেন।

উলের পোশাক দ্রুত শুকানোর জন্য অনেকেই ধোয়ার পর খুব ভালোভাবে নিংড়ে নেন; কিন্তু এটা অনুচিত। উলের পোশাক ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে অতিরিক্ত পানি অপসারণ করতে হবে। এরপর দরকার হলে ঝাঁঝরিতে রেখে অতিরিক্ত আরও পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।

উলের পোশাকের আকৃতি নষ্ট হয় মূলত শুকাতে দেওয়ার ভুলে। উলের কোনো পোশাকই দড়িতে বা হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে শুকাতে দেবেন না। ছাদে কিংবা বারান্দায়, ভালো রোদ আসে এমন জায়গায় মাটিতে পরিষ্কার পাটি, বেডশিট বা তোয়ালে পেতে শুকাতে দিন।

গরম পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে উলের কাপড় ধুয়ে ফেলুন। ছবি: পেক্সেলস
গরম পানির পরিবর্তে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে উলের কাপড় ধুয়ে ফেলুন। ছবি: পেক্সেলস

উলের পোশাক ঘন ঘন ধোবেন না। বারবার ধোয়ার ফলে এগুলো কোমলতা আর ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলে। এ ধরনের পোশাকের কোনো অংশে দাগ লাগলে সেই অংশটুকু ধুয়ে নিন। পুরো পোশাকটি ধোয়ার দরকার নেই। একই পোশাকের ওপর চাপ কমাতে বেশ কয়েকটি উলের পোশাক ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করুন। এতে পোশাকগুলোর উজ্জ্বলতা থাকবে অনেক দিন।

উলের পোশাকে ঘাম লাগলে তা কড়া রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর গায়ে মাখা সাবান টিস্য়ু পেপারে মুড়ে ওই পোশাকের ভেতর রেখে পোশাকটি ভাঁজ করে তবে আলমারিতে রাখুন। এতে পোশাকে তরতাজা ভাব বজায় থাকবে। পোকামাকড়ও ওই পোশাকের ধারেকাছে ঘেঁষবে না।

এ ধরনের পোশাক ইস্ত্রি করার প্রয়োজন পড়ে না। তবু যদি করতে হয় তাহলে ইস্ত্রি করার আগে উলের জামাকাপড় উল্টো করে নিয়ে তারপর ইস্ত্রি করুন। ইস্ত্রি করার সঙ্গে সঙ্গে ভাঁজ করে রাখবেন না। তাতে কাপড়টি ঘেমে গন্ধ হতে পারে।

আলমারি কাঠের হলে উলের কাপড়ে পোকামাকড়ের আক্রমণের ঝুঁকি থাকে। সে ক্ষেত্রে একটা কাগজে কয়েকটি কর্পূরের দানা আর কয়েকটি আস্ত গোলমরিচ রেখে মুড়ে দিন। সেগুলো আলমারির ফাঁকে ফাঁকে রেখে দিন। এই উপায়ে পোকামাকড়ের হাত থেকে রেহাই পাবে উলের পোশাক।

শীতের এই দুই মাস উলের কাপড়গুলো কয়েক দিন পর পর আলমারি থেকে বের করে ছাদে বা বারান্দায় রোদে উল্টো করে শুকিয়ে নিন। এতে কাপড়ের তরতাজা ভাব বজায় থাকবে, ধুলো ধুলো গন্ধও নাকে আসবে না। বাইরে থেকে ফিরে গা থেকে উলের পোশাক নামিয়ে সম্ভব হলে নরম ব্রাশ দিয়ে ঝেড়ে নিন। এতে কয়েক দিন পরপর ধোয়ার ঝামেলা থাকবে না। পোশাকটিতে ধুলাবালুও কম জমবে।

সূত্র: উলমার্ক ও টেইলর স্টিচ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত