Ajker Patrika

শীতের পোশাকগুলো ব্যবহারের আগে

ফিচার ডেস্ক
শীতের পোশাকগুলো ব্যবহারের আগে

শহর থেকে একটু দূরেই যাঁদের বসবাস, তাঁরা এরই মধ্য়ে হালকা শীতের কাপড় নামিয়ে ফেলেছেন। দীর্ঘদিন বাক্সবন্দী সোয়েটার, জ্যাকেট, উলের মোজা, টুপি, চাদর, কার্ডিগান বের করে সঙ্গে সঙ্গেই তো আর গায়ে তোলা যায় না। এগুলো ব্যবহার করার আগে কয়েক দিন ভালোভাবে কড়া রোদে এপাশ-ওপাশ শুকিয়ে তারপরই পরতে হবে। যেসব কাপড়ে আবার ধুলার গন্ধ থাকে, সেগুলো ধুয়ে ব্যবহার করাই ভালো।

শীতের পোশাকগুলো পরার আগে যা করতে হবে:

সোয়েটার পরার আগে ধুয়ে পরাই ভালো। ঠান্ডা পানিতে পরিমাণমতো শ্যাম্পু ও ভিনেগার মিশিয়ে আলতো করে সোয়েটার ধোয়া উচিত। এটি কখনোই ওয়াশিং মেশিনে ধোবেন না। তাতে এর বুনন নষ্ট হয়ে যায়। ধোয়ার পর হালকা করে পানি নিংড়ে তারপর রোদে শুকিয়ে নিন।

হালকা শীতে ফ্লানেলের শার্ট, ব্লাউজ, স্কার্ট আরামদায়ক। এসব কাপড় দীর্ঘদিন ভালো রাখতে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। বেশি ময়লা হলে হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। পরে হালকা করে কেচে ধুয়ে নিন। কাপড় উল্টিয়ে রোদে শুকাতে দিন। এতে রং নষ্ট হবে না।

চাদর বের করে কড়া রোদে শুকিয়ে তারপর ব্যবহার করুন। ধোয়ার প্রয়োজন হলে ড্রাই ক্লিন করে নিতে পারেন। চাদর দীর্ঘদিন ভালো থাকবে।

চামড়ার জ্যাকেট পরিষ্কার করার জন্য কুসুম গরম পানির সঙ্গে ভিনেগার মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণে তোয়ালে ভিজিয়ে নিংড়ে জ্যাকেটের উপরিভাগ মুছে নিন। এরপর হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে বাতাসে শুকিয়ে নিলেই, ব্যস।

শীতে প্রতিদিনই যে অনুষঙ্গগুলো ব্যবহৃত হয়; যেমন উলের মোজা, মাফলার, টুপি ইত্যাদি দ্রুত ময়লা হয়। তাই তিন-চার দিন পরপর কুসুম গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।

সূত্র: হার জিন্দেগি ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জলপাইয়ের শুকনো মিষ্টি আচার

ফিচার ডেস্ক  
জলপাইয়ের শুকনো মিষ্টি আচার

জলপাইয়ের মিষ্টি আচার তো অনেকে খেয়েছেন। এই আচার অনেক দিন সংরক্ষণ করতে হলে সিরকা ব্যবহার করা হয়। সিরকা ছাড়াও কিন্তু জলপাইয়ের মিষ্টি আচার অনেক দিন সংরক্ষণ করা সম্ভব। এর জন্য এমনভাবে আচার তৈরি করতে হবে, যাতে আচারে কোনো পানি না থাকে এবং আচার একেবারে শুকনো শুকনো হয়। আপনাদের জন্য জলপাইয়ের শুকনো মিষ্টি আচারের রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী সানিয়া সোমা। এই আচার তৈরিতে কোনো ধরনের সিরকা ব্যবহার করা হয়নি।

উপকরণ

জলপাই ১ কেজি, সরিষার তেল আধা কাপ, চিনি এক কাপ, লবণ স্বাদমতো, শুকনা মরিচ ১০টি (আধা ভাঙা), পাঁচফোড়ন গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, আস্ত পাঁচফোড়ন ২ চা-চামচ, আস্ত মৌরি ১ চা-চামচ, তেজপাতা ২টি।

প্রণালি

জলপাই সেদ্ধ করে পানি ফেলে ভালোভাবে চটকে নিতে হবে। এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে এতে আস্ত পাঁচফোড়ন ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে দিয়ে অনবরত নাড়াচাড়া করতে হবে যেন কড়াইয়ে লেগে না যায়। সবশেষে মৌরি ও আস্ত পাঁচফোড়ন দিয়ে আরও কিছু সময় নেড়েচেড়ে শুকিয়ে নিতে হবে। এই মিষ্টি আচারে সিরকা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কারণ, এতে বেশি চিনি দেওয়া থাকে এবং আচারটা শুকনো হয়ে থাকে। ফলে আচার সহজে নষ্ট হয় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: অতি দার্শনিকতা গোলমাল বাধাবে, দিবাস্বপ্ন রেকর্ড ভাঙবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৩
আজকের রাশিফল: অতি দার্শনিকতা গোলমাল বাধাবে, দিবাস্বপ্ন রেকর্ড ভাঙবে

মেষ

আপনার আজকের এনার্জি লেভেল দেখলে এনার্জি ড্রিংক কোম্পানিগুলোও ঘাবড়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো, এই বিপুল শক্তি কোথায় লাগাবেন, সেটা ঠিক করতে গিয়েই দিনের অর্ধেকটা পার হয়ে যাবে। সকালে হয়তো ভাবলেন, ঘর পরিষ্কার করবেন, দুপুরে মনে হলো ম্যারাথনের ট্রেনিং নেবেন, আর সন্ধ্যায় গিয়ে হয়তো ভুল করে পোষা তেলাপোকার সঙ্গে তর্ক শুরু করে দেবেন। মাথা ঠান্ডা রাখুন, নয়তো সামান্য চাটনি কম হওয়ার কারণেও রেগে গিয়ে গোটা রেস্তোরাঁ কিনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। অতি-উদ্যম আজ আপনাকে এমন জায়গায় পৌঁছে দিতে পারে, যেখানে পৌঁছানোর কথা আপনার ছিল না।

বৃষ

বৃষ রাশি, আজ আপনার কপালজুড়ে চরম আলস্যের ছাপ। আজ যদি আপনাকে কোনো অলিম্পিকে অংশ নিতে বলা হয়, তবে সেটা হবে ‘কে কতক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকতে পারে’ সেই প্রতিযোগিতা। মন আজ দামি খাবার আর আরামদায়ক সোফায় ডুবে থাকতে চাইবে। আর্থিক দিক থেকে একটু সাবধানে থাকুন—আজকের দিনে ‘একটা অতিরিক্ত পিৎজা’ কিনতে গিয়ে পুরো মাসের বাজেট উল্টে যেতে পারে। কেউ যদি এসে প্রিয় কম্বলটি কেড়ে নিতে চায়, তবে ছোটখাটো একটি গৃহযুদ্ধ লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

মিথুন

আজকের দিনটা হবে একটি চলমান কফি আড্ডা! মস্তিষ্ক এখন এমন দ্রুতগতিতে চলছে যে মুখ হয়তো সেই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে না। ফলস্বরূপ একবারে ১০ জনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতে গিয়ে ৫ জনের গোপন কথা ফাঁস করে দিতে পারেন। মন আজ একাধারে চাইবে কাজ করতে, সিনেমা দেখতে, প্রেম করতে, আবার একই সঙ্গে হিমালয়ে সন্ন্যাসী হতে। আজ যদি কেউ জিজ্ঞেস করে, ‘কেমন আছেন?’ ভুলেও বিশদ উত্তর দিতে যাবেন না। কারণ, বিশদ উত্তর দিতে গিয়ে আপনার জীবনকাহিনি একটি উপন্যাস ছাড়িয়ে মহাকাব্যে রূপ নিতে পারে।

কর্কট

আজ ইমোশন মিটার একদম ‘ফুল’ সিগন্যালে আছে। আকাশের মেঘ দেখলেও মনে দুঃখের সানাই বাজতে পারে, আর কেউ যদি জিজ্ঞেস করে ‘পানি খাবেন?’ তাতেই আবেগে চোখ ছলছল করে উঠবে। এই অতিরিক্ত সংবেদনশীলতার কারণে আজ সহকর্মীরাও আপনার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখবে। পকেটে টিস্যু পেপার ও একটি ‘দুঃখ বিলাস’ অ্যালার্ম সেট করে রাখুন। মনে রাখবেন, পুড়ে যাওয়া টোস্টের জন্য হাউমাউ করে কাঁদার কোনো প্রয়োজন নেই, তাতে টোস্টটা আবার আস্ত হয়ে উঠবে না।

সিংহ

সিংহ মশাই, আজ নিজেকে একটি চলন্ত স্পটলাইট ভাববেন। মনে হবে, এই পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আপনাকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে, আর বাকি সবাই আপনার জন্য হাততালি দিতে বাধ্য। বস যদি আজ মিটিংয়ে আপনার প্রশংসা না করেন, তবে ধরে নেবেন—এটি একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। আজ সকালে উঠে আয়নায় নিজের সঙ্গে কিছুক্ষণ সদ্ভাব বজায় রাখুন। অন্যথায় সামান্য অহংকার আজ এমন পর্যায়ে যেতে পারে যে রাস্তায় চলমান একটা পিঁপড়াও আপনার ব্যক্তিত্বের সামনে নতজানু হোক, এমনটি আপনি চাইবেন।

কন্যা

আজ আপনার ভেতরের ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বাতিক’ জেগে উঠেছে। চারপাশে সামান্য ধুলো বা অসংগতি দেখলেই মেজাজ সপ্তমে উঠবে। আজ মনে মনে অন্যদের অপরিষ্কার টেবিল বা বাঁকা করে রাখা জুতা দেখে বিচার করতে থাকবেন। প্রেমিকের শার্টে যদি একটা দাগও দেখেন, তবে সেই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলে বসতে পারেন। আজকের দিনে জীবনসঙ্গীর আলমারি ঘাঁটাঘাঁটি করা থেকে বিরত থাকুন। নইলে তার এককোণে লুকিয়ে রাখা ছোটখাটো বিশৃঙ্খলা দেখলে আপনার নার্ভাস ব্রেকডাউন হতে পারে।

তুলা

তুলা রাশি, আপনার জীবনে আজ ভারসাম্যের চরম অভাব। সকালের নাশতায় ডিম-টোস্ট না বাটার-পাউরুটি, নাকি রুটি-সবজি খাবেন—এই সিদ্ধান্ত নিতেই দুই ঘণ্টা চলে যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত আজ ভুলেও নিতে যাবেন না। কারণ, মন সারা দিন ‘হ্যাঁ’ এবং ‘না’-এর মাঝে পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকবে। আজকের প্রিয় শব্দবন্ধ: ‘হুম...ঠিক নিশ্চিত নই।’ কাউকে আপনার পক্ষ থেকে কিছু অর্ডার করতে দিন। নইলে মেনুকার্ড দেখতে দেখতেই রেস্তোরাঁ বন্ধের সময় হয়ে যাবে।

বৃশ্চিক

আজ রহস্যময়তার চাদরে মুড়ে থাকবেন। মনে হবে, সবাই আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সহকর্মী ‘শুভ সকাল’ বললে তার পেছনে লুকিয়ে থাকা গোপন বার্তা খোঁজার চেষ্টা করবেন। আজকের মেজাজ হলো—নীরব, গভীর এবং সামান্য সন্দেহপ্রবণ। সঙ্গী যদি আপনাকে ‘আই লাভ ইউ’ লিখে টেক্সট করে, আপনি তার জবাবে জিজ্ঞেস করবেন, ‘তুমি কি এর সঙ্গে আরও কিছু বোঝাতে চাচ্ছ?’ এই অতিরিক্ত চিন্তা আজ আপনাকে গোয়েন্দা বানিয়ে দেবে।

ধনু

ধনু রাশি, আজ আপনার পা দুটো অস্থির, মন উড়ু উড়ু। হঠাৎ করেই ঠিক করে ফেলতে পারেন, এই মুহূর্তে চাকরি ছেড়ে দিয়ে একটা কচ্ছপ নিয়ে পৃথিবী ঘুরে আসবেন। ফিল্টার ছাড়া কথা বলার প্রবণতা আজ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছাবে। যার ফলস্বরূপ অপ্রিয় সত্য কথা বলে আজ বেশ কিছু মানুষের চক্ষুশূল হতে পারেন। কথা বলার আগে এক গ্লাস পানি খান। এটি আপনার মুখকে কিছুটা সময়ের জন্য আটকে রাখবে এবং বন্ধুদের রক্ষা করবে। ভ্রমণ আপনার রক্তে, কিন্তু আজ ট্রেনের টিকিট না কেটে অন্তত বইয়ের পাতায় ভ্রমণ করুন।

মকর

মকর মশাই, আজ আপনার ওয়ার্কহোলিক সত্তা একদম ফ্যান্সি ড্রেস পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যরা যখন সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের আমেজ খুঁজবে, তখন আপনি একটি নতুন ‘৫ বছরের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা’ তৈরি করতে বসবেন। আপনার মনে হবে, দুনিয়ার সব কাজ একাই কাঁধে নিয়েছেন। মজার ব্যাপার হলো: আপনি মনে মনে চরম আলস্যের জন্য বৃষ রাশি বা ধনু রাশিদের তাচ্ছিল্য করে যাবেন। আজ উচিত জোর করে নিজেকে একটি বিরতি দেওয়া। যদি পারেন, এক মিনিট চুপচাপ বসে থাকুন। অবশ্য এক মিনিট স্থির থাকাই আজকের বড় চ্যালেঞ্জ।

কুম্ভ

আজ আপনার চিন্তাভাবনা আকাশ ছুঁয়েছে। হয়তো বসে আছেন ফ্ল্যাটের বারান্দায়, কিন্তু মনে মনে ভাবছেন, মহাবিশ্বের উৎপত্তি নিয়ে। বন্ধু যদি আপনাকে জিজ্ঞেস করে, ‘কী খাবি?’ তার জবাবে বলবেন, ‘খাদ্য কি কেবলই একটি সামাজিক নির্মাণ নয়?’ আপনার এই দার্শনিক কথাবার্তা আজ অন্যদের একটু বিভ্রান্ত করতে পারে। বাস্তব জগতে ফিরে আসার জন্য মাঝেমধ্যে নিজেকে চিমটি কাটুন। না হলে বন্ধু মনে করবে আপনি হঠাৎ করে কোনো এলিয়েন ভাষায় কথা বলা শুরু করেছেন।

মীন

মীন রাশি, আজ আপনার দিবাস্বপ্ন দেখার ক্ষমতা রেকর্ড ভাঙবে। হয়তো চা বানাতে গিয়ে ভুল করে লবণ দিয়ে দিলেন। কারণ, আপনার মন তখন সমুদ্রের তলদেশের কোনো এক জাদুকরি রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অবচেতন মন আজ এতটাই সক্রিয় যে, হয়তো আপনার পোষা বিড়ালটিকেও কোনো এক রহস্যময় গুরু বলে ভুল করবেন। বাস্তব ও কল্পনার মধ্যে একটা সরু সুতা খুঁজে বের করুন। কাউকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কথা বলার আগে অন্তত দুবার নিশ্চিত হয়ে নিন, আপনি সত্যিই তার সঙ্গে কথা বলছেন, নাকি স্বপ্নে দেখা কোনো চরিত্রের সঙ্গে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতের মৌসুমে শরীর উষ্ণ রাখবে ৫ খাবার

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ০০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শীতের মৌসুম অনেকের জন্য একধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সকালে ঘুম থেকে উঠতেই শিরশিরে ঠান্ডা লাগা, বাইরে বের হতে গরম পোশাকে নিজেকে আটকে রাখার প্রবণতা, এমনকি দিনের শুরুতেই শরীরের শক্তি কমে যাওয়ার অনুভূতি। এসব মিলিয়ে শীতকালকে অস্বস্তিকর করে তোলে। যদিও গরম জামা-কাপড়ের মাধ্যমে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়, তবুও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন শরীর গরম রাখার জন্য আরও কার্যকর উপায় হতে পারে।

শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা শুধু গরম রাখে না, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীরকে সক্রিয় রাখতেও সাহায্য করে।

জাফরান

জাফরান শুধু খাবারের রং বা স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার হয় না। শীতের দিনে এটি শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে গরম রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকর। জাফরানে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যালস শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, মানসিক চাপ কমায় এবং মেজাজকে স্বস্তিদায়ক রাখে। গরম দুধের সঙ্গে দু-তিন স্ট্র্যান্ড জাফরান মিশিয়ে খেলে শরীর চাঙা থাকে এবং ঠান্ডা কম লাগে। জাফরান রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা ভেতরের উষ্ণতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে মানসিক স্বস্তি দেয়। শীতকালে সকালের বা রাতের এক কাপ গরম দুধে জাফরান মিশিয়ে খাওয়া শরীরকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে, শক্তি বৃদ্ধি করে এবং মেজাজ ঠিক রাখে। চাইলে সামান্য দারুচিনি বা মধু মিশিয়ে আরও স্বাদ এবং গরম রাখার ক্ষমতা বাড়ানো যায়।

মসলা

মসলা শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি শীতের দিনে শরীরকে গরম রাখতেও সাহায্য করে। লবঙ্গ, দারুচিনি, গোলমরিচ, এলাচ এবং হালকা শুকনো মরিচ শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। শীতকালে রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে যায়, ফলে হাত-পা শীত অনুভব করে। মসলা এটি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। রান্নায় মসলার সঠিক ব্যবহার শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং সারা দিন প্রাণবন্ত রাখে।

আদা

আদা শীতকালে শরীর গরম রাখার জন্য প্রাকৃতিক ‘হিটার’ হিসেবে কাজ করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজম উন্নত করে এবং শক্তি জোগায়। সকালে এক কাপ আদা চা আপনাকে সারা দিন সতেজ রাখে। শুকনো আদা ব্যাগের সঙ্গে রাখলে বাইরে বেরোতেও ঠান্ডা কম লাগে। চাইলে আদা চা সামান্য দারুচিনি, লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে আরও স্বাদ ও গরম রাখার ক্ষমতা বাড়ানো যায়। নিয়মিত গ্রহণ করলে এটি সর্দি-কাশি প্রতিরোধেও সাহায্য করে।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাদাম ও খেজুর

শীতের সময় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে পারে। এই সময়ে শরীরকে শক্তিশালী রাখতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজসমৃদ্ধ খাবারের প্রয়োজন বৃদ্ধি পায়। বাদাম ও খেজুর এমন দুটি খাবার, যা প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে গরম রাখে। বাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ভিটামিন ‘ই’ শরীরকে শক্তি দেয় এবং তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। খেজুরের প্রাকৃতিক শর্করা দ্রুত শক্তি জোগায়। এই খাবারগুলো সহজে পাওয়া যায় এবং প্রয়োজনমতো দ্রুত খাওয়া যায়। শীতকালে অল্প পরিমাণে বাদাম ও খেজুর খেলে শরীরকে সজীব রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

মধু

মধু প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে গরম রাখে এবং সর্দি-কাশি কমাতে সহায়ক। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, ঠান্ডা কম অনুভূত হয় এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। সকালে বা রাতে খাঁটি মধুর এক চামচ খাওয়ার মাধ্যমে শরীরকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করা যায়। তবে মধু কেনার সময় খাঁটি কি না, তা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রক্রিয়াজাত বা মিশ্রিত মধু এই কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।

শীতের দিনে গরম থাকার জন্য অতিরিক্ত টিপস

দিনের ছোট ছোট সময়ে হালকা গরম খাবার গ্রহণ করুন।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন। শীতকালে মানুষ কম পানি পান করে, যা শরীরের কার্যকারিতা কমায়।

বাইরে বের হতে গেলে গরম জামা-কাপড় এবং এক কাপ গরম পানীয় সঙ্গে রাখলে ঠান্ডা কম লাগে।

সূত্র: ন্যাচার বে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অফিসের যেসব অভ্যাস ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অফিসে প্রতিদিনের কাজের চাপ, সময়ের মধ্যে কাজের লক্ষ্য পূরণ এবং অফিসের দীর্ঘদিনের একই রুটিন অনেককে এক জায়গায় বসে কাজ করতে বাধ্য করে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মীরা প্রায়ই ডেস্কে বসে খাবার খেয়ে থাকেন, মাঝেমধ্যে সামান্য হাঁটাচলা করেন। অফিসে আসার জন্য প্রতিদিন যে সুস্থ রুটিন; যেমন হাঁটা, শরীরচর্চা বা পর্যাপ্ত পানি খাওয়া প্রয়োজন, সেটিও অনেকে মানেন না।

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র পুষ্টি কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ডায়াবেটিসকে লাইফস্টাইল ডিজিজ বলা হয়। এটি কখনো ভালো হয় না, তবে চাইলে ভালো রাখা যায়। তবে ভালো রাখতে হলে আপনাকে ডায়েট, ডিসিপ্লিন ও ড্রাগ—এই তিন জিনিসের সঠিক কম্বিনেশন তৈরি করতে হবে। তাহলে আপনি এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন।’

অন্যদিকে, যাঁরা বাড়িতে কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এক জায়গায় স্থিরভাবে বসে থাকার সম্ভাবনা কম থাকে। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষ ঘণ্টায় অন্তত একবার নিজের স্থান পরিবর্তন করা উচিত। কিন্তু করপোরেট বা বেসরকারি সংস্থায় দীর্ঘ সময় একটানা বসে থাকা স্বাভাবিক অভ্যাস হয়ে গেছে। লন্ডনভিত্তিক চিকিৎসক কর্ণ রাজন বলেন, ‘অফিসে নিয়মিত কাজ করার কারণে কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস ক্রমশই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।’

দীর্ঘক্ষণ একটানা বসে থাকা

একজন বিজ্ঞানী বলেছেন, ‘সিটিং ইজ দ্য নিউ স্মোকিং’। দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা এখন ধূমপানের মতো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অফিসে যাঁরা ৬-৮ ঘণ্টা একটানা ডেস্কে বসে কাজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় অনিবার্য। অনেকে কেবল প্রয়োজনমতো খুব সামান্য চলাফেরার জন্য উঠে দাঁড়ান। দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়। অর্থাৎ, রক্তে শর্করা বেড়ে গেলেও ইনসুলিন তা ভাঙতে পারে না, ফলে শক্তি পেশিতে সঞ্চারিত হয় না। ক্রমশ রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের একটি প্রধান কারণ। এ ছাড়া দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, যা আরও ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

অফিসের চাপের কারণে অনেকে পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত চিনি যুক্ত পানীয় ও মিষ্টি বেশি খেয়ে থাকেন। এই ধরনের খাবারে ক্যালরি, চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেশি থাকে। প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে যদি এই ধরনের জিনিসগুলো প্রাধান্য পায়, তাহলে তা ওজন বৃদ্ধি, রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামা এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ানোর সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া অতিরিক্ত চিনি এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার রক্তে প্রদাহের মাত্রা বাড়াতে পারে, যা দীর্ঘ মেয়াদে ডায়াবেটিস ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

অপর্যাপ্ত বা অনিয়মিত ঘুম

কাজের চাপের কারণে অনেকে নিজের ঘুমের সময় কমিয়ে দেন। কেউ বাড়ি ফিরে ল্যাপটপ হাতে কাজ চালিয়ে যান, কেউ রাতেও মোবাইল বা ল্যাপটপে চোখ রাখেন। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং দৈনিক ৬-৭ ঘণ্টার ঘুমও পূর্ণ হয় না। অপর্যাপ্ত ঘুম শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে। বিশেষত ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যায়, রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়। এ ছাড়া ঘুম কম হলে কর্টিসল এবং অন্যান্য স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়ে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।

সকালের খাবার না খাওয়া

অফিসে যাওয়ার তাড়া সামলাতে বা সময় বাঁচাতে অনেকে সকালের খাবার না খেয়ে বের হন। দীর্ঘ সময় পেট খালি থাকলে ইনসুলিনের কাজ ব্যাহত হয়। ইনসুলিন রক্তে থাকা শর্করাকে শক্তিতে রূপান্তর করে, কিন্তু কাজ না করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। নিয়মিত সকালের খাবার না খেলে দীর্ঘ মেয়াদে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। ফলে দিনের বাকি অংশে অতিরিক্ত বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়, যা ওজন বাড়ার কারণ।

অতিরিক্ত মানসিক চাপ

কর্মক্ষেত্রের চাপ এবং অন্যান্য দৈনন্দিন চাপ থেকে মানসিক চাপ তৈরি হয়। মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। এই হরমোন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং মিষ্টি বা নোনতা খাবারের প্রতি আকর্ষণও বাড়ায়। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। মানসিক চাপ কমানো এবং নিয়মিত বিশ্রাম, শরীরচর্চা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক।

সূত্র: ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (যুক্তরাষ্ট্র)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত