নাহিন আশরাফ
...সমগ্র সত্তায় তার—সেইসব আশ্চর্য বর্ণালী নিয়ে একটা চাদর/ ছুঁয়েছে শিল্পের সীমা, দেখলাম, মুগ্ধতায় গাঢ়/ রাত্তিরে তন্ময় হয়ে চাদরকে যে দিচ্ছে শিল্পের মুক্তি... একটা চাদর, শামসুর রাহমান
চাদর নিয়ে এমন কাব্যকথার কমতি নেই আমাদের। বর্ণিল একখণ্ড উষ্ণতা যেন। শীত এলেই এর জমিনে ফুটে ওঠে হরেক রং, হরেক রেখা।
আমাদের ফ্যাশনে চাদর এক দারুণ সিগনেচার তৈরি করেছে। এতটা ব্যঞ্জনা হয়তো অন্য কোনো পোশাক তৈরি করতে পারেনি। চাদর গায়ে দিলেই পুরুষ হয়ে ওঠে কবি কিংবা উপন্যাসের রোমান্টিক কোনো চরিত্র। আর নারী হয়ে ওঠে মায়াবী। অন্তত আমাদের ফ্যাশনে এভাবেই উপস্থাপন করা হয় চাদর নামের এই পোশাক।
একে কি পোশাক বলা যায়? নাকি আবরণী? সে যা-ই বলি না কেন, এটি চাদর। শীতে উষ্ণতা ছড়ায় শরীরে, রং ছড়ায় চোখে।
এ জন্যই চাদরপ্রেমীরা সারা বছর শীতের অপেক্ষা করে। তাদের কথা চিন্তা করে এ ঋতুকে কেন্দ্র করে বাজারে আসে নানান মাপের, নানান নকশার ও রঙের চাদর। আর শীতে যে ধরনের পোশাকই ট্রেন্ডে থাকুক না কেন, এর কদর থাকবেই। চাদর আবার আমাদের এখানে শাল নামে বেশ জনপ্রিয়। এ নামেই শীতের ফ্যাশনবাজারে দাপিয়ে বেড়ায় এটি।
কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে আলমারিতে তুলে রাখা শালটা বের করা শুরু হয়। বাজারেও আসতে থাকে নতুন রঙে, নতুন নকশায়।
একটা সময় শাল ছিল শুধু শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ধারা বদলেছে। ফ্যাশন হাউসগুলো এই প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গকে করে তুলেছে আরও রঙিন ও নকশাময়। এখন এর নকশা ও উপাদানে এসেছে অনেক পরিবর্তন। শালের জমিনে বর্তমানে দেখা যায় রিকশাপ্রিন্ট, নকশিকাঁথার নকশা, হ্যান্ডপেইন্ট, জামদানি মোটিফ, বিখ্যাত চিত্রকরদের চিত্রকর্ম, কবিতা কিংবা গানের লাইন। নকশা আর স্টেটমেন্টের এই বৈচিত্র্যই তরুণ প্রজন্মের কাছে একে জনপ্রিয় করে তুলেছে। চাদর বা শাল ইউনিসেক্স পোশাক। ফলে ছেলে-মেয়ে—সবাই এটি আগ্রহ নিয়ে ব্যবহার করছে।
শালের ফিউশন
প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউসগুলো তো রয়েছেই; সঙ্গে ছোট ও নতুন বুটিক ফ্যাশন হাউসগুলো এখন
দারুণ সব শাল বাজারে আনছে। তেমনি একটি হাউস গোধুলীয়া। প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করছে গামছা শাল। গোধুলীয়ার স্বত্বাধিকারী নাজমুল নাহার শিউলী জানান, তাঁদের তৈরি গামছা শাল এতটা সাড়া জাগিয়েছে যে প্রথমে সেই চিন্তা তাঁরা করেননি। ছেলে-মেয়ে উভয়ই তাঁদের শাল সংগ্রহ করছে। কটনের সঙ্গে গামছার ফিউশনে ভিন্নধর্মী এই শালগুলো লুকে আনে পরিবর্তন। বাজার থেকে গামছা সংগ্রহ করে এ ধরনের শাল তৈরি করা হয়। এগুলোর গড়ন পাতলা রাখা হয়, যাতে সবাই খুব সহজে বহন করতে পারে। গামছা শাল শীত থেকে রক্ষার পাশাপাশি আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সাহায্য করছে বলে মনে করেন শিউলী। আর বিভিন্ন রঙের হওয়ায় পছন্দের যেকোনো রঙের পোশাকের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যায় এগুলো।
প্যাচওয়ার্কের শাল
শালের বাজারে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে প্যাচওয়ার্কের শাল। এ ধরনের শালে বিচিত্র রঙের খেলা থাকায় অনেকের পছন্দ। ‘স্বয়ং’ ব্র্যান্ডের স্বত্বাধিকারী শামস বিনতে আরফিন তৈরি করছেন এ ধরনের শাল। তিনি জানান, প্যাচওয়ার্ক মূলত একটি রিসাইক্লিংয়ের বিষয়। অন্যান্য কাজের পর কাপড় থেকে যেসব টুকরা বের হয়, সেগুলো জুড়ে দিয়ে প্যাচওয়ার্ক শাল তৈরি করা হয়। তিনি আরও জানান, এগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। প্যাচওয়ার্কের শাল বেজ কালারের পোশাকের সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন শামস বিনতে আরফিন। তিনি মনে করেন, প্যাচওয়ার্ক নিজেই একটি গল্প বহন করে।
তাই খুব বেশি প্রিন্ট বা নকশা থাকা পোশাকের সঙ্গে প্যাচওয়ার্ক করা শাল না পরাই বরং ভালো। শাড়ির সঙ্গে যদি এ ধরনের শাল পরতে চান, তাহলে বেছে নিতে হবে সুতি কিংবা জামদানি শাড়ি।
শুধু যে দেশীয় পোশাকের ওপর শাল জড়িয়ে নেওয়া হয়, তা নয়। এখন পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গেও এগুলো পরতে দেখা যায়। শর্ট কুর্তি, জিনস, ফরমাল প্যান্ট, টপস—সবকিছুর ওপরেই পছন্দমতো শাল জড়িয়ে নিয়ে তৈরি করা যায় নিজের শীতের স্টেটমেন্ট।
চাদর আমাদের প্রাচীন পোশাকের মধ্যে অন্যতম। দীর্ঘ সময়ের এই পণ্য এখন আর শুধু একখণ্ড কাপড়মাত্রই নয়। রঙে, নকশায় এটি তৈরি করেছে আমাদের নিজস্ব ফ্যাশন ন্যারেটিভ। শীতে উষ্ণ থাকুন রঙিন শালে।
...সমগ্র সত্তায় তার—সেইসব আশ্চর্য বর্ণালী নিয়ে একটা চাদর/ ছুঁয়েছে শিল্পের সীমা, দেখলাম, মুগ্ধতায় গাঢ়/ রাত্তিরে তন্ময় হয়ে চাদরকে যে দিচ্ছে শিল্পের মুক্তি... একটা চাদর, শামসুর রাহমান
চাদর নিয়ে এমন কাব্যকথার কমতি নেই আমাদের। বর্ণিল একখণ্ড উষ্ণতা যেন। শীত এলেই এর জমিনে ফুটে ওঠে হরেক রং, হরেক রেখা।
আমাদের ফ্যাশনে চাদর এক দারুণ সিগনেচার তৈরি করেছে। এতটা ব্যঞ্জনা হয়তো অন্য কোনো পোশাক তৈরি করতে পারেনি। চাদর গায়ে দিলেই পুরুষ হয়ে ওঠে কবি কিংবা উপন্যাসের রোমান্টিক কোনো চরিত্র। আর নারী হয়ে ওঠে মায়াবী। অন্তত আমাদের ফ্যাশনে এভাবেই উপস্থাপন করা হয় চাদর নামের এই পোশাক।
একে কি পোশাক বলা যায়? নাকি আবরণী? সে যা-ই বলি না কেন, এটি চাদর। শীতে উষ্ণতা ছড়ায় শরীরে, রং ছড়ায় চোখে।
এ জন্যই চাদরপ্রেমীরা সারা বছর শীতের অপেক্ষা করে। তাদের কথা চিন্তা করে এ ঋতুকে কেন্দ্র করে বাজারে আসে নানান মাপের, নানান নকশার ও রঙের চাদর। আর শীতে যে ধরনের পোশাকই ট্রেন্ডে থাকুক না কেন, এর কদর থাকবেই। চাদর আবার আমাদের এখানে শাল নামে বেশ জনপ্রিয়। এ নামেই শীতের ফ্যাশনবাজারে দাপিয়ে বেড়ায় এটি।
কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে আলমারিতে তুলে রাখা শালটা বের করা শুরু হয়। বাজারেও আসতে থাকে নতুন রঙে, নতুন নকশায়।
একটা সময় শাল ছিল শুধু শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ধারা বদলেছে। ফ্যাশন হাউসগুলো এই প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গকে করে তুলেছে আরও রঙিন ও নকশাময়। এখন এর নকশা ও উপাদানে এসেছে অনেক পরিবর্তন। শালের জমিনে বর্তমানে দেখা যায় রিকশাপ্রিন্ট, নকশিকাঁথার নকশা, হ্যান্ডপেইন্ট, জামদানি মোটিফ, বিখ্যাত চিত্রকরদের চিত্রকর্ম, কবিতা কিংবা গানের লাইন। নকশা আর স্টেটমেন্টের এই বৈচিত্র্যই তরুণ প্রজন্মের কাছে একে জনপ্রিয় করে তুলেছে। চাদর বা শাল ইউনিসেক্স পোশাক। ফলে ছেলে-মেয়ে—সবাই এটি আগ্রহ নিয়ে ব্যবহার করছে।
শালের ফিউশন
প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউসগুলো তো রয়েছেই; সঙ্গে ছোট ও নতুন বুটিক ফ্যাশন হাউসগুলো এখন
দারুণ সব শাল বাজারে আনছে। তেমনি একটি হাউস গোধুলীয়া। প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করছে গামছা শাল। গোধুলীয়ার স্বত্বাধিকারী নাজমুল নাহার শিউলী জানান, তাঁদের তৈরি গামছা শাল এতটা সাড়া জাগিয়েছে যে প্রথমে সেই চিন্তা তাঁরা করেননি। ছেলে-মেয়ে উভয়ই তাঁদের শাল সংগ্রহ করছে। কটনের সঙ্গে গামছার ফিউশনে ভিন্নধর্মী এই শালগুলো লুকে আনে পরিবর্তন। বাজার থেকে গামছা সংগ্রহ করে এ ধরনের শাল তৈরি করা হয়। এগুলোর গড়ন পাতলা রাখা হয়, যাতে সবাই খুব সহজে বহন করতে পারে। গামছা শাল শীত থেকে রক্ষার পাশাপাশি আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সাহায্য করছে বলে মনে করেন শিউলী। আর বিভিন্ন রঙের হওয়ায় পছন্দের যেকোনো রঙের পোশাকের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যায় এগুলো।
প্যাচওয়ার্কের শাল
শালের বাজারে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে প্যাচওয়ার্কের শাল। এ ধরনের শালে বিচিত্র রঙের খেলা থাকায় অনেকের পছন্দ। ‘স্বয়ং’ ব্র্যান্ডের স্বত্বাধিকারী শামস বিনতে আরফিন তৈরি করছেন এ ধরনের শাল। তিনি জানান, প্যাচওয়ার্ক মূলত একটি রিসাইক্লিংয়ের বিষয়। অন্যান্য কাজের পর কাপড় থেকে যেসব টুকরা বের হয়, সেগুলো জুড়ে দিয়ে প্যাচওয়ার্ক শাল তৈরি করা হয়। তিনি আরও জানান, এগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। প্যাচওয়ার্কের শাল বেজ কালারের পোশাকের সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন শামস বিনতে আরফিন। তিনি মনে করেন, প্যাচওয়ার্ক নিজেই একটি গল্প বহন করে।
তাই খুব বেশি প্রিন্ট বা নকশা থাকা পোশাকের সঙ্গে প্যাচওয়ার্ক করা শাল না পরাই বরং ভালো। শাড়ির সঙ্গে যদি এ ধরনের শাল পরতে চান, তাহলে বেছে নিতে হবে সুতি কিংবা জামদানি শাড়ি।
শুধু যে দেশীয় পোশাকের ওপর শাল জড়িয়ে নেওয়া হয়, তা নয়। এখন পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গেও এগুলো পরতে দেখা যায়। শর্ট কুর্তি, জিনস, ফরমাল প্যান্ট, টপস—সবকিছুর ওপরেই পছন্দমতো শাল জড়িয়ে নিয়ে তৈরি করা যায় নিজের শীতের স্টেটমেন্ট।
চাদর আমাদের প্রাচীন পোশাকের মধ্যে অন্যতম। দীর্ঘ সময়ের এই পণ্য এখন আর শুধু একখণ্ড কাপড়মাত্রই নয়। রঙে, নকশায় এটি তৈরি করেছে আমাদের নিজস্ব ফ্যাশন ন্যারেটিভ। শীতে উষ্ণ থাকুন রঙিন শালে।
আমরা সবাই কখনো না কখনো রেগে যাই। কারও ওপর, নিজের ওপর, পরিস্থিতির ওপর, কিংবা কখনো এমনকি অজানা এক শূন্যতার ওপরও। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ কেন রেগে যায়? রাগ কি কেবলই একটি আবেগ, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে থাকে বহুস্তর বিশ্লেষণ, অতীত অভিজ্ঞতা, অসহায়ত্ব, অপূর্ণতা এবং একধরনের মানসিক প্রতিক্রিয়া?
২ ঘণ্টা আগেঅনেকে কাঁকড়া খেতে ভালোবাসেন। তবে যাঁরা এই প্রথম বাজার থেকে কাঁকড়া কিনে এনেছেন রাঁধবেন বলে, তাঁদের জন্য কাঁকড়া ভুনার রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী ওমাম রায়হান।
১৭ ঘণ্টা আগেশহরটির বয়স প্রায় ১১০ বছর। ‘ম্যাড ম্যাক্স বিয়ন্ড থান্ডারডোম’, ‘প্রিসিলা’, ‘ডেজার্ট কুইন’ ও ‘রেড প্ল্যানেট’ চলচ্চিত্র যাঁরা দেখেছেন, বিস্তারিত না জানলেও তাঁরা এই শহর এবং তার পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত। কারণ, এই চলচ্চিত্রগুলো শতবর্ষী শহরটিতেই চিত্রায়িত হয়েছিল।
১৭ ঘণ্টা আগেপৃথিবীতে কেউই নিজেদের মিথ্যাবাদী ভাবতে চায় না। কিন্তু সত্যি বলতে, সবাইকে কখনো না কখনো মিথ্যা বলতে হয়। ছোট ছোট সাদা মিথ্যা থেকে শুরু করে অনিয়ন্ত্রিত মিথ্যা। এ ধরনের কথা বলার ধরন অনেক রকম। শিশুরাও বুঝে না বুঝে মিথ্যা বলে। তাই মিথ্যা বলা হয়তো একটি প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি।
১৭ ঘণ্টা আগে