Ajker Patrika

ইচ্ছা হলেই নয়, ত্বক বুঝে ব্যবহার করুন ফেসওয়াশ

শোভন সাহা 
রিতু। ছবি: হাসান রাজা
রিতু। ছবি: হাসান রাজা

ত্বকের বিশেষ যত্নে হোক বা না হোক, কমবেশি সবাই রোজ ত্বকে দুই বেলা ব্যবহার করেন, এমন একটি প্রসাধনী হচ্ছে ফেসওয়াশ। সাধারণত এটি খুব ভেবেচিন্তে বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না মেনে পছন্দ হলেই কিনে ফেলি। কিন্তু কাজ হয় কি না, সেদিকে অনেক সময় খেয়ালও করি না। কিন্তু নালিশ করেই যাই, অমুক ব্র‍্যান্ডের ফেসওয়াশ ব্যবহার করেও ত্বক ভালো থাকছে না!

যত নামী ব্র‍্যান্ডেরই হোক, ফেসওয়াশ যদি ত্বকের ধরন বুঝে আপনি বাছাই না করেন, তাহলে কোনো কাজ হবে না। সে কারণে এটি কেনার আগে ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন বোঝা জরুরি। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফেসওয়াশ পাওয়া যায়। ক্রিম, জেল, মেডিকেটেড, ওটিসি, ফোমিং, নন-ফোমিং ইত্যাদি। কোনটার কাজ কী, তা না জানলে গোড়াতেই কিন্তু গলদ থেকে যাবে। ফেসওয়াশ কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় অবশ্যই রাখতে হবে।

সঠিক ফেসওয়াশ চিনবেন কীভাবে

ভাবছেন, ফেসওয়াশ আবিষ্কারের এত বছর পরে এই প্রশ্ন কেন? আমরা সবাই জানি, ফেসওয়াশের প্রাথমিক কাজ ত্বক পরিষ্কার করা। তবে ত্বক কিন্তু জানান দেয়, আপনি সঠিক ফেসওয়াশ ব্যবহার করছেন কি না। ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর মুখ অতিরিক্ত শুষ্ক বা তেলতেলে লাগলে, লালচে ভাব, র‍্যাশ বা জ্বালা ভাব হলে বুঝবেন, সেটি আপনার জন্য নয়। তাহলে কীভাবে বুঝবেন ফেসওয়াশ ঠিকভাবে ত্বকে কাজ করছে? ত্বকের উপযোগী ফেসওয়াশ ব্যবহার করলে মুখ ধোয়ার পর ত্বক তরতাজা ও উজ্জ্বল দেখাবে। ত্বক অনেকটাই নরম ও কোমল থাকবে। আর সঠিক ফেসওয়াশ ব্যবহার করছেন কি না, তা বোঝার জন্য যেকোনো ফেসওয়াশ অন্তত এক সপ্তাহ ব্যবহার করতে হবে।

কোন ত্বকে কেমন ফেসওয়াশ

শুষ্ক ত্বক

শুষ্ক ত্বকের জন্য জেন্টল কিংবা মাইল্ড বলে পরিচিত ফেসওয়াশগুলো ব্যবহার করা উচিত। এগুলোতে সাধারণত পেট্রোলেটাম অথবা পেট্রোলিয়াম, সেরামাইড, গ্লিসারিন, ল্যানোলিন বা মিনারেল অয়েল থাকে। এসব উপাদান থাকার কারণে ত্বক আর্দ্রতা হারায় না।

শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের জন্য ফোমিং ফেসওয়াশ উপযোগী নয়। কারণ, এ ধরনের ফেসওয়াশ ত্বক আরও বেশি শুষ্ক করে তোলে। অতিরিক্ত সুগন্ধি, অ্যালকোহল নেই এমন ফেসওয়াশ এ ধরনের ত্বকের জন্য উপকারী। শুষ্ক ত্বকে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিডযুক্ত অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ফেসওয়াশ এড়িয়ে চলাই ভালো।

তৈলাক্ত ত্বক

তৈলাক্ত ত্বক যাঁদের, তাঁরা অ্যালোভেরা এবং টি-ট্রি অয়েলের মতো উপাদানসমৃদ্ধ ফেসওয়াশ কিনুন। এ ধরনের ফেসওয়াশ ত্বকের স্বাভাবিক তেল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত না করে উপরিভাগের বাড়তি তেল অপসারণ করে। ত্বকের ভালোর জন্য স্বাভাবিক তেল উৎপাদন অব্যাহত রাখা জরুরি। ফেসওয়াশ কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, তাতে অ্যালকোহল রয়েছে কি না। অ্যালকোহলের কারণে ত্বকের তেল চিটচিটে ভাব বাড়ে। অন্যদিকে তৈলাক্ত ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য স্যালিসাইলিক অ্যাসিড রয়েছে এমন ফেসওয়াশ ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে। ফেসওয়াশের প্যাকেটের গায়ে হাইড্রেটিং, নারিশিং, ভিটামিন এ, সি, ই-যুক্ত লেখা আছে কি না, তা দেখে নিতে ভুলবেন না। কারণ, এগুলো তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জরুরি।

মিশ্র ও সংবেদনশীল ত্বক

এ ধরনের ত্বকের জন্য খুবই হালকা পরিষ্কারক প্রয়োজন পড়ে। ফোমিং ফেসওয়াশের পরিবর্তে ক্রিম-বেজড এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী মেডিকেটেড আলট্রা-জেন্টল ব্যবহার করা উচিত। এতে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ও শুষ্কতা—দুটোর ভারসাম্য়ই ঠিক থাকবে। কেনার আগে দেখে নিন ফেসওয়াশটি প্যারাবেন, সোপ, সুগন্ধি অ্যালকোহল ও অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানমুক্ত কি না।

ত্বকে অতিরিক্ত ব্রণ থাকলে

ব্রণ হলে অনেকে ফোমিং ফেসওয়াশে ভরসা করেন। মনে করেন, অতিরিক্ত তেল অপসারণ হলেই বুঝি ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমে আসবে। অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব থেকে ব্রণ হয়, এ কথা মিথ্য়ে নয়। তবে ত্বক ধীরে ধীরে শুষ্ক হয়ে পড়লে কিন্তু সমস্যা কিছু কমবে না। তাই ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ও পানির ভারসাম্য ঠিক রাখতে ক্রিম-বেজড ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। মেডিকেটেড ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হলে বেনজোইল পার-অক্সাইড, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড অথবা সালফারের মতো উপাদানযুক্ত ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। এতে পোরস ব্লকেজ ও ব্রেক আউট—দুটোই কমবে।

ফেসওয়াশ চিনবেন যেভাবে

কোমল ফেসওয়াশ

কোমল ফেসওয়াশে যে উপাদানগুলো থাকে, সেসব মূলত ত্বক স্বাভাবিকভাবে পরিষ্কার ও ময়শ্চারাইজ করে। এতে সাধারণত ভিটামিন ই, ল্যাকটিক অ্যাসিড, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, সেরামাইড, ল্যানোলিন, প্রাকৃতিক তেল, অ্যালোভেরা, দুধ, মধু, জোজোবা তেল বা স্ট্রবেরির মতো উপাদান থাকে। এসব উপাদানযুক্ত ফেসওয়াশ শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযোগী। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোমল ফেসওয়াশ কিনতে হলে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, টি-ট্রি অয়েল, নিয়াসিনামাইড বা চারকোল রয়েছে, এমন কোমল ফেসওয়াশ বেছে নিতে পারেন।

ফোমিং ফেসওয়াশ

ত্বক ডিপ ক্লিন করার জন্য ফোমিং ফেসওয়াশ ব্যবহার করা হয়। এই ফেসওয়াশ রোমকূপের গভীরে প্রবেশ করে ময়লা, তেল ও মেকআপ অপসারণে সাহায্য করে, যা সাধারণ ফেসওয়াশ দিয়ে সম্ভব নয়। ফোমিং ফেসওয়াশের মূল উপাদান হলো সার্ফ্যাক্ট্যান্ট; যা ত্বক থেকে ময়লা, তেল ও দূষণ অপসারণে সাহায্য করে। এ ধরনের ফেসওয়াশে ডিসোডিয়াম লরেথ সালফোসাকিনেট, সোডিয়াম লরেথ সালফেট, সোডিয়াম লরয়েল সারকোসিনেট, ক্যাপ্রিলয়েল গ্লাইসিন, বেনজোফেনোন-৪ ইত্যাদি উপাদান থাকে।

নন-ফোমিং ফেসওয়াশ

নন-ফোমিং ফেসওয়াশ সাধারণত শুষ্ক, সংবেদনশীল বা ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ক্লিনজারগুলো ত্বক শুষ্ক না করে ময়লা এবং মেকআপ অপসারণে সাহায্য করে। এগুলো ত্বকের প্রাকৃতিক তেল শোষণ করে না। এই ফেসওয়াশগুলোতে সাধারণত মৃদু সার্ফ্যাক্ট্যান্ট; যেমন কোকামিডোপ্রোপাইল বিটেইন অথবা গ্লিসারিন থাকে। এ ছাড়া কিছু নন-ফোমিং ফেসওয়াশে সেরোমাইড, হায়ালুরনিক অ্যাসিড এবং নিয়াসিনামাইডের মতো উপাদান থাকে, যেগুলো ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষা স্তর পুনরুদ্ধার করতে এবং ত্বক ময়শ্চারাইজ করতে সাহায্য করে।

মেডিকেটেড ফেসওয়াশ

এ ধরনের ফেসওয়াশ ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ করে এবং ছিদ্র পরিষ্কার করে ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া প্রদাহনাশক থাকায় ব্রণের কারণে হওয়া লাল ও ফোলা ভাব কমাতে পারে। এগুলোতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য থাকায় ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে এবং ত্বক ঠান্ডা রাখতে এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মেডিকেটেড ফেসওয়াশের মূল উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, বেনজয়েল পার- অক্সাইড, টি-ট্রি অয়েল এবং প্রাকৃতিক উপাদান; যেমন অ্যালোভেরা ও নিমপাতা। এই উপাদানগুলো সাধারণত ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা দূর করতে সহায়ক।

লেখক: কসমেটোলজিস্ট, স্বত্বাধিকারী, শোভন মেকওভার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিয়ের খরচ কমানোর ৮ উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
কৌশল জানা থাকলে বিয়ের খরচেরও লাগাম টেনে ধরা যায় স্মার্ট উপায়ে। ছবি: ফ্রিপিক
কৌশল জানা থাকলে বিয়ের খরচেরও লাগাম টেনে ধরা যায় স্মার্ট উপায়ে। ছবি: ফ্রিপিক

বিয়ে জীবনের অন্যতম সুন্দর মুহূর্ত হলেও এর ব্যয় অনেক সময় দম্পতিদের জন্য বড় চাপ হয়ে দাঁড়ায়। ভেন্যু, সাজসজ্জা, খাবার, বিনোদন, পোশাক—সব মিলিয়ে বাজেট বেশ বেড়ে যায়। অবশ্য বিয়ের আয়োজন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে যাওয়াকে খুব সাধারণ ঘটনা হিসেবে দেখা হয় আমাদের দেশে। কিন্তু কৌশল জানা থাকলে বিয়ের খরচেরও লাগাম টেনে ধরা যায় স্মার্ট উপায়ে।

অফ সিজন বেছে নিন

সাধারণত ঈদের মতো বড় ছুটি এবং শীতকালে বিয়ের চাপ বেশি থাকে। এই মৌসুমে ভেন্যু, ক্যাটারিং, সাজসজ্জা, মেকআপ, এমনকি ফটোগ্রাফির চাহিদাও বেড়ে যায়। চাহিদা বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবে খরচও বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে পুরো বাজেটে। তাই পরিকল্পনা করার সময় অফ সিজন বেছে নেওয়া ভালো কৌশল। এ সময়ে ভেন্যু বুকিং থেকে শুরু করে খাবার, সাজসজ্জা, মেকআপ, গাড়িভাড়া ইত্যাদি প্রায় সব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ছাড় পাওয়া যায়। অনেকে তখন বিশেষ অফার ও বান্ডেল প্যাকেজও দেয়।

একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠান ও রিসেপশন করুন

সম্ভব হলে বিয়ে ও রিসেপশন একই ভেন্যুতে আয়োজন করুন। তা না হলে অন্তত হাঁটা দূরত্বের মধ্যে রাখুন। এতে অতিথিদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হয় না। ফলে গাড়িভাড়া, জ্বালানি, চালক—এসব খরচ কমে যায়। একই সঙ্গে ক্যাটারিং, সাজসজ্জা, ফটোগ্রাফি বা সাউন্ড-লাইট টিমকে বারবার সরঞ্জাম সরাতে হয় না বলে সময় ও শ্রম —দুটোই সাশ্রয় হয়।

একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠান ও রিসেপশন করুন। ছবি: ফ্রিপিক
একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠান ও রিসেপশন করুন। ছবি: ফ্রিপিক

অতিথির সংখ্যা কমিয়ে আনুন

অতিথির সংখ্যা যত বাড়ে, বাজেটও তত বেড়ে যায়। কারণ, বেশির ভাগ ক্যাটারিং মাথাপিছু হিসেবে খাবারের খরচ নির্ধারণ করে। এর মধ্যে খাবার, পানীয়, সার্ভিস স্টাফসহ নানান খরচ যুক্ত থাকে। তাই আশপাশের পরিচিত সবাইকে নিমন্ত্রণ না করে চেষ্টা করুন পরিবারের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করার।

ফুল পুনরায় ব্যবহার করুন

অনুষ্ঠানের ফুলগুলো একবারই ব্যবহার করার পরিবর্তে পুনর্ব্যবহার করা যায়। বিয়ের মঞ্চ বা ফুলের আর্চে ব্যবহার করা ফুলগুলোকে পরে রিসেপশনের ফটো কর্নারে সাজানো যেতে পারে। এর ফলে অতিথিরা আরও সুন্দর ছবি তুলতে পারবে। এ ছাড়া চারপাশের পথে রাখা ফুলগুলোও পরে ওয়েলকাম টেবিলে ব্যবহার করা যায়। এতে শুধু অর্থ সাশ্রয় হয় না, ফুলগুলোকে আরও দীর্ঘ সময় ধরে প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যবহার করা যায়।

বিয়ের অনুষ্ঠানের ফুলগুলো একবারই ব্যবহার করার পরিবর্তে পুনর্ব্যবহার করা যায়। ছবি: ফ্রিপিক
বিয়ের অনুষ্ঠানের ফুলগুলো একবারই ব্যবহার করার পরিবর্তে পুনর্ব্যবহার করা যায়। ছবি: ফ্রিপিক

নিজে কিছু বানিয়ে নিন

যদি হাতের কাজ করার দক্ষতা থাকে, তাহলে বিয়ের অনেক জিনিস নিজেই তৈরি করা সম্ভব। টেবিলের সেন্টারপিস, নিমন্ত্রণপত্র বা অতিথিদের নামের কার্ড নিজে বানালে খরচ অনেকটা কমানো যায়। এতে শুধু অর্থই সাশ্রয় হয় না, আয়োজনটি আরও বিশেষ হয়ে ওঠে। বন্ধু বা পরিবারের সহায়তাও নিতে পারেন। এতে কাজের পরিমাণ ও চাপ কমে যায়। কম বয়সী ছেলেমেয়েদের এ কাজে যুক্ত করুন। তাতে তারাও আনন্দে থাকবে। ছোট ছোট এই উদ্যোগগুলো মিলিয়ে পুরো বিয়ের বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

স্টেশনারি ডিজাইন অনলাইনে করুন

অনেক ফ্রি ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি নিজে দৃষ্টিনন্দন নিমন্ত্রণপত্র, মেনু বা অন্যান্য সজ্জার জিনিস তৈরি করতে পারবেন। এতে প্রফেশনাল ডিজাইনার ভাড়া করার প্রয়োজন পড়ে না বলে খরচ অনেকটা কমে যায়। এ ছাড়া ডিজাইন সম্পূর্ণ নিজের পছন্দ অনুযায়ী করা যায়। ক্যানভা বা অ্যাডোবি এক্সপ্রেসের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো শুরুতে ফ্রি অপশন দেয়, যেখানে বিভিন্ন টেমপ্লেট ব্যবহার করে খুব সহজে আকর্ষণীয় ডিজাইন তৈরি করা সম্ভব।

অপ্রয়োজনীয় ডেকর বাদ দিন

যদি অনুষ্ঠানটি প্রকৃতির মাঝে বা কোনো সুন্দর আউটডোর ভেন্যুতে হয়, তবে অতিরিক্ত সাজসজ্জার প্রয়োজন অনেক কমে যায়। চারপাশের সবুজ, ফুল-পাতা, নদী, সমুদ্র বা পাহাড়ের দৃশ্য নিজেই সজ্জায় মনোরম সৌন্দর্য এনে দেয়। এমন পরিবেশে ছোট ছোট ডিটেইলস; যেমন লাইটিং বা কয়েকটি ফুলের ব্যবস্থাপনা দিয়েই পুরো ভেন্যুতে রোমান্টিক ও দৃষ্টিনন্দন আবহ তৈরি করা যায়। এতে খরচও কমে এবং অতিথিরা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে দর-কষাকষি করুন

ডিজে, ফটোগ্রাফার বা ক্যাটারারের মতো পেশাদার সেবার ক্ষেত্রে সব সময় প্রয়োজন অনুযায়ী প্যাকেজ বেছে নেওয়া জরুরি। অতিরিক্ত সেবা বা সময় নেওয়ার দরকার না হলে প্যাকেজ কমিয়ে খরচ অনেকটা কমানো সম্ভব। সরাসরি সরবরাহকারীর সঙ্গে আলোচনা করলে অতিরিক্ত চার্জ কমানো বা কিছু সুবিধা পাওয়া যায়, যা বাজেট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

বিয়ের অনুষ্ঠানে আনন্দ করুন, কিন্তু অপচয় নয়। অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা দিন। অনুষ্ঠানের অনেক ত্রুটি চোখে পড়বে না।

সূত্র: টিডি স্টোরিজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভ্রমণের ভিন্ন ঠিকানা ক্রিসমাস মেলা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
ফিনল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে আছে সান্তা ক্লজ ভিলেজ। ডিসেম্বরে এখানে বসে এক দারুণ মেলা। ছবি: অ্যাডভেঞ্চভার ওয়ার্ল্ড
ফিনল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে আছে সান্তা ক্লজ ভিলেজ। ডিসেম্বরে এখানে বসে এক দারুণ মেলা। ছবি: অ্যাডভেঞ্চভার ওয়ার্ল্ড

ইউরোপে ডিসেম্বরের ভ্রমণ মানে বড়দিনের আমেজ। আলোকিত রাজধানী থেকে শুরু করে বরফে ঢাকা গ্রাম পর্যন্ত পুরো ইউরোপ যেন এক স্বপ্নিল ক্রিসমাস ওয়ান্ডারল্যান্ডে পরিণত হয় ডিসেম্বরের এ সময়। স্থানীয় কারুশিল্প, শীতকালীন মুখরোচক খাবার এবং রূপকথার পরিবেশ—সব মিলিয়ে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ইউরোপ সেজে ওঠে ক্রিসমাসের আনন্দে। এ সময় ভ্রমণের বাড়তি আকর্ষণে পরিণত হয় ক্রিসমাস মেলাগুলো। স্থায়ী পুরোনো বাজার কিংবা বিভিন্ন পার্কে বসা এই মেলাগুলো উৎসবের নিজস্ব মেজাজ ফুটিয়ে তোলে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসা এমন আটটি মেলার কথা।

বরফের জাদু ও নকশায় মোড়ানো জুরিখ

জুরিখ শহরের প্রধান স্টেশনের কেন্দ্রে বসে ইউরোপের অন্যতম বড় ইনডোর ক্রিসমাস মেলা, পোলারজাউবার। ছবি: লাইফ জার্নি ফর টু
জুরিখ শহরের প্রধান স্টেশনের কেন্দ্রে বসে ইউরোপের অন্যতম বড় ইনডোর ক্রিসমাস মেলা, পোলারজাউবার। ছবি: লাইফ জার্নি ফর টু

সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ক্রিসমাস যেন এক অভিজ্ঞতা অর্জনের খনি। এখানে আলপাইন ঐতিহ্য, আধুনিক শিল্প স্থাপনা এবং চিত্তাকর্ষক অভিজ্ঞতা একত্র হয়। শহরের প্রধান স্টেশনের কেন্দ্রে বসে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ ইনডোর ক্রিসমাস মেলা—পোলারজাউবার। এখানে সবকিছুর ওপরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে লিন্ডর ট্রাফলস দিয়ে সজ্জিত বিশাল আকারের ক্রিসমাস ট্রি। এই গাছ ঘিরে থাকে একটি চমৎকারভাবে তৈরি মিনি-উইন্টার ওয়ার্ল্ড। এ বছর এখানে প্রায় ১২০টি ব্র্যান্ড ও ডিজাইনার স্টল বসবে। ২০ নভেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই স্টলগুলো সেখানে খোলা থাকবে। এখানে উৎসবমুখর স্টেশন হল জুড়ে হাঁটা এবং ঐতিহ্যবাহী ক্রিসমাস খাবার উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকেরা। তিব্বতীয় ডাম্পলিং বা থাই খাবার থেকে শুরু করে হাতে তৈরি নুডলসসহ এমপানাদাস পর্যন্ত সবই পাওয়া যায় এখানে। যাঁরা উপহার খুঁজছেন, তাঁরা হাতে তৈরি সুগন্ধি মোমবাতি, স্থানীয় নকশার গয়না, সিরামিকসহ অনেক কিছুর সন্ধান এখানে পেয়ে যাবেন।

লা ভিলেতে জুরিখের আগমনী

প্যারিসের তৃতীয় বৃহত্তম পার্ক লা ভিলেতের ক্রিসমাস মেলায় প্রথমবারের মতো এসেছে জুরিখের ক্রিসমাস মেলা। সেখানে সুইস সৃজনশীলতার পরিবেশ ফুটিয়ে তুলতে দুটি আয়োজন রাখা হয়েছে বিশেষভাবে। একটি হলো, জুরিখ ফন্ডু শ্যালেট, অন্যটি আতেলিয়ার জুরিখ। জুরিখ ফন্ডু শ্যালেট হলো জুরিখের একটি শীতকালীন রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে; যেখানে সুস্বাদু ফন্ডু ও আরামদায়ক পরিবেশে সুইস আতিথেয়তার অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়। আতেলিয়ার জুরিখ মূলত একটি বার। এখানে জুরিখের সেরা ১০টি ব্র্যান্ডের জিনিস পাওয়া যায়, যা ক্রিসমাসের সেরা উপহার হিসেবে বিবেচিত। এই আয়োজন চলবে ২০ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ডের থিম পার্ক

লন্ডনের হাইড পার্কের ‘উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ড’ মেলা একটি উল্লেখযোগ্য জায়গা। এই মেলা লন্ডন শহরকে শীতকালীন থিম পার্কে পরিণত করে। এখানে রয়েছে বিশাল আইস স্কেটিং রিঙ্ক, সার্কাস, নাগরদোলা, রোলারকোস্টার এবং ম্যাজিক্যাল আইস কিংডম। কেবিনের স্টলগুলোতে গরম চকলেট এবং হাতে তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি হয়। এটি একটি জমজমাট উৎসবের অভিজ্ঞতা দেয়। ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন।

ভিয়েনায় মার্কেটের সমাহার

ভিয়েনায় ক্রিসমাস মার্কেটের প্রাচুর্য চোখে পড়ার মতো। টাউন হল স্কয়ার জুড়ে বসা রাথাউসপ্লাজ নামের এই মেলায় রয়েছে ১ হাজার ৮৫০ বর্গমিটারের একটি বরফের রিঙ্ক। সেখানে ছোট-বড় সবাই স্লাইড করতে পারে। এ ছাড়া মারিয়া-তেরেসিয়েন-প্লাজে কার্লিং খেলায় অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে দর্শনার্থীদের। আর যাঁরা মিষ্টি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য অ্যাম হফ মার্কেট এক স্বর্গ। গত ১৪ নভেম্বর শুরু হওয়া এই আয়োজন চলবে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

যারা মিষ্টি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য অ্যাম হফ মার্কেট যেন এক স্বর্গ। ছবি: ভিজিট ভিয়েনা
যারা মিষ্টি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য অ্যাম হফ মার্কেট যেন এক স্বর্গ। ছবি: ভিজিট ভিয়েনা

তাল্লিনে মধ্যযুগীয় পরিবেশ

উত্তর ইউরোপের বাল্টিক সাগরের পাড়ে যে দেশ, তার নাম এস্তোনিয়া। এর রাজধানী তাল্লিনে পনেরো শতকের টাউন হলের পাশে বসে একটি মেলা। এটি এর মধ্যযুগীয় পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। সেখানে প্রায় ৫০টি স্টলে উলে বোনা পোশাক থেকে শুরু করে জিঞ্জারব্রেড এবং বেইলিস স্বাদযুক্ত বিস্কুট ডোর মতো বিশেষ খাবার বিক্রি হয়। মার্কেটের কেন্দ্রে থাকে ১৬ মিটার উঁচু ক্রিসমাস ট্রি। ধারণা করা হয়, এটি ইউরোপের প্রথম ক্রিসমাস ট্রিগুলোর মধ্যে অন্যতম। আয়োজনটি চলবে ২১ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

কোপেনহেগেনের টিভোলি পার্কের রূপকথা

কোপেনহেগেনের কেন্দ্রে অবস্থিত ১৬০ বছরের পুরোনো টিভোলি পার্ক। ক্রিসমাসে এই পার্কের আয়োজন দর্শকদের রূপকথার জগতে নিয়ে যায়। এখানকার প্রধান আকর্ষণ রাইড, আইস রিঙ্ক, বিনোদনমূলক শো। এই মেলায় আছে ৬০টি স্টল। এই মেলাকে কেন্দ্র করে পুরো ডেনিশ রাজধানী কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোকিত থাকে। এই উৎসব আমেজ শুরু হয়েছে ১৪ নভেম্বর থেকে। এটি চলবে আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।

লিসবার্গ অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ঝলক

গোটেবর্গের লিসবার্গ অ্যামিউজমেন্ট পার্ক উত্তর ইউরোপের বৃহত্তম পার্ক। পাঁচ মিলিয়ন লন্ঠন, ৮০টি কেবিন স্টল এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ মিলিয়ে এক জাঁকালো ক্রিসমাস মেলায় পরিণত হয় এটি। এর মূল আকর্ষণ হলো আইস বার, রোলারকোস্টার, বিভিন্ন শো এবং গলগ বা সুইডিশ গরমমসলাযুক্ত ওয়াইন চেখে দেখার সুযোগ। এ বছর এই আয়োজন শুরু হয়েছে ১৬ নভেম্বর থেকে। চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সান্তা ক্লজ ভিলেজ

চলুন যাই ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েমিতে। ফিনল্যান্ডের এই জায়গায় আছে সান্তা ক্লজ ভিলেজ। তাই এটি সারা বিশ্বে অনন্য। এখানে পর্যটকেরা দেশটির জাদুকরি ক্রিসমাস অভিজ্ঞতা নিতে যায়। এখানে গেলে পাওয়া যাবে রূপকথার অভিজ্ঞতা। এখানে ফাদার ক্রিসমাসের সঙ্গে দেখা করা, স্লেজ রাইড করা এবং এল্ফদের কর্মশালা ঘুরে দেখার মতো অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। স্থানীয় হস্তশিল্প ও ল্যাপল্যান্ডের বিশেষত্ব এখানে পাওয়া যায়, যার প্রেক্ষাপটে থাকে বরফ এবং আরোরা।

সূত্র: ইএনভোলস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যে উপায়ে পাকা কলা সতেজ থাকবে মাসজুড়ে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সংরক্ষণের আগে কলাগুলো লবণ মেশানো পানিতে ধুয়ে নিন। এতেই মিলবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। ছবি: ফ্রিপিক
সংরক্ষণের আগে কলাগুলো লবণ মেশানো পানিতে ধুয়ে নিন। এতেই মিলবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। ছবি: ফ্রিপিক

পাকা কলা দ্রুত নরম হয়ে যায় এবং এর খোসা কালো হতে শুরু করে। এই দৃশ্য সবার পরিচিত। এমন কলা বেশির ভাগ মানুষ খেতে চান না। শিশুরাও মুখ ফিরিয়ে নেয়। তাহলে উপায় কী? একটা একটা করে কলা কিনে এনে একজন একজন করে খাওয়া? এটা যে সম্ভব নয়, সেটা বোঝা যাচ্ছে সহজে। ফলে যা সম্ভব তাই করুন। অর্থাৎ জেনে রাখুন, পাকা কলা সংরক্ষণের কিছু সহজ ও ঘরোয়া কৌশল। এভাবে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত কলা ভালো রাখা যাবে। সে সময় এগুলো থাকবে সতেজ ও শক্ত।

সংরক্ষণের আগে কলাগুলো লবণ মেশানো পানিতে ধুয়ে নিন। এতটুকুই! হ্যাঁ, এতেই মিলবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। খাদ্য অপচয় রোধ করা যেখানে আজকের দিনের একটি বড় উদ্বেগ, সেখানে সাধারণ লবণ ব্যবহার করে কীভাবে কলা সংরক্ষণের সময় বাড়ানো, আসলেই একটি সাশ্রয়ী উপায়।

কলা কিনে এভাবে ঝুলিয়ে রাখুন। ছবি: ফ্রিপিক
কলা কিনে এভাবে ঝুলিয়ে রাখুন। ছবি: ফ্রিপিক

লবণ-পানির সহজ প্রক্রিয়া

কলাগুলো সংরক্ষণ করার আগে এই সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

লবণ মিশ্রণ তৈরি: এক টেবিল চামচ লবণ পরিষ্কার পানির সঙ্গে গুলিয়ে নিন।

ধোয়ার প্রক্রিয়া: কলার পুরো ঝুঁকি বা ফানা লবণ মিশ্রিত পানিতে ডুবিয়ে দিন। খোসা আলতো করে ধুয়ে নিন এবং বিশেষ করে কলার ডাঁটির অংশটি ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।

সম্পূর্ণ শুকানো: কলাগুলো পানি থেকে তুলে একটি তোয়ালে দিয়ে মুছে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন। অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকলে কলায় ছাঁটা বা ফাঙ্গাস দেখা দিতে পারে, তাই শুকানো খুব জরুরি।

পুরোপুরি শুকানোর পর কলা ঠান্ডা ও বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় রাখুন।

কেন কাজ করে এই কৌশল

লবণ-পানি দিয়ে ধোয়ার এই পদ্ধতির কার্যকারিতা তিনটি মূল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে।

জীবাণু ও ছাঁটা দমন: কলার খোসায় বিভিন্ন অণুজীব ও ফাঙ্গাল স্পোর থাকে, যা পচনের প্রক্রিয়া শুরু করে। লবণের জীবাণুনাশক গুণ থাকার কারণে এটি সেই পচন সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোকে দূর করতে সাহায্য করে।

কলার ডাঁটির অংশটি প্লাস্টিকের মোড়ক বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে মুড়ে দিন। ছবি: ফ্রিপিক
কলার ডাঁটির অংশটি প্লাস্টিকের মোড়ক বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে মুড়ে দিন। ছবি: ফ্রিপিক

এনজাইম এবং ইথিলিন নিয়ন্ত্রণ: লবণ সেই এনজাইমগুলোর গতি কমিয়ে দেয়, যা কলাকে দ্রুত পাকাতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে এটি ইথিলিন গ্যাস নিঃসরণ ধীর করে দেয়। ইথিলিন গ্যাস ফলকে দ্রুত পরিপক্ব করে তোলে।

আর্দ্রতা বজায় রাখা: লবণ-পানি দিয়ে কলার ডাঁটির অংশ ধোয়ার ফলে খোসা তার আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে। এতে খোসায় দ্রুত বলিরেখা পড়া বা বাদামি হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ হয়।

অতিরিক্ত সংরক্ষণের টিপস

লবণ-পানির কৌশলের সঙ্গে আরও কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে কলার সতেজতা আরও বাড়াতে পারেন।

ডাঁটি মোড়ানো: কলার ডাঁটির অংশটি প্লাস্টিকের মোড়ক বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে মুড়ে দিন। এতে ইথিলিন গ্যাস ফলে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হয় এবং পাকার প্রক্রিয়া ধীর হয়।

ঝুলিয়ে রাখা: কলা টেবিলে বা বাটিতে রাখার চেয়ে পুরো ফানা ঝুলিয়ে রাখুন। এতে ওজনের কারণে নিচের কলাগুলো থেঁতলে যাবে না। ঝুলিয়ে রাখলে বাতাস চলাচল করতে পারে এবং কলা তার আকৃতি ধরে রাখতে পারে।

অন্যান্য ফল থেকে দূরে রাখুন: কলাকে আপেল, অ্যাভোকাডো এবং টমেটোর মতো ফল ও সবজি থেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ, এই ফলগুলো প্রচুর পরিমাণে ইথিলিন গ্যাস নিঃসরণ করে, যা কলাকে খুব দ্রুত অতিরিক্ত পাকিয়ে ফেলে।

সূত্র: ইভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজয়ের আমেজ যাচ্ছে পাওয়া

বিভাবরী রায়
ছবি : রঙ বাংলাদেশ
ছবি : রঙ বাংলাদেশ

ডিসেম্বর এলে বিজয় দিবস নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন চোখে পড়ে। ফ্যাশন দুনিয়ায় তা এখন প্রতিবছরের নতুন ইভেন্ট। তবে এর বাইরেও বিভিন্ন জিনিসে বিজয়ের ছাপ চোখে পড়ে বেশ। প্রতিদিন ব্যবহার করা ছোট ছোট জিনিস, যেগুলো হয়তো আমরা হুটহাট কিনে ফেলি, সেগুলোতেও বিজয় দিবসের ছাপ পড়ে গেছে অনেক আগেই। এখন কোন কোন হাউস সেগুলো কত উন্নত করতে পারে, কত সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন করতে পারে, চলে সেই প্রতিযোগিতা।

টি-শার্ট

দেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে স্টেটমেন্ট পোশাক হিসেবে টি-শার্ট নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে বেশ আগে। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো বিজয় দিবসকে বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়েটিভ নকশা করা টি-শার্ট বাজারে আনে প্রতিবছর। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নকশা করা টি-শার্টের মধ্যে অ্যাপ্লিক, স্ক্রিন প্রিন্ট, হ্যান্ড পেইন্ট ও এমব্রয়ডারির কাজ প্রাধান্য পাচ্ছে। বিজয় দিবসের জন্য টি-শার্টে লাল-সবুজ রঙের প্রাধান্য থাকলেও সাদা, কালো অথবা ছাই রঙের ওপরও কাজ হচ্ছে প্রচুর। নিত্য উপহার প্রতিবছর বিজয় দিবসের আয়োজনে ছোট ও বড় সবার জন্য বিভিন্ন ধরনের টি-শার্ট নিয়ে আসে। শাহবাগ ও মোহাম্মদপুর বিক্রয়কেন্দ্র ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকেও অর্ডার করা যাবে টি-শার্টগুলো। নিত্য উপহার ছাড়াও এখন অনেক ফ্যাশন হাউস টি-শার্টে লাল-সবুজ ও পতাকা নিয়ে কাজ করছে। যথাশিল্প, রঙ বাংলাদেশ, কে ক্র‍্যাফট, বিবিআনা, ডুয়েট ও অন্যান্য দেশীয় ফ্যাশন হাউসেও নারী-পুরুষ—উভয়ের পরার উপযোগী বিজয় দিবসের টি-শার্ট পাওয়া যাচ্ছে।

ছবি : বৃত্ত
ছবি : বৃত্ত

গয়না

বিজয় দিবসে পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে গয়না বেছে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। লাল-সবুজ পোশাকের সঙ্গে একই রঙের গয়না আপনাকে অন্য রকমভাবে রাঙিয়ে তুলবে। বেশ কিছু অনলাইন পেজ বিজয় দিবস সামনে রেখে নতুন ধরনের গয়না নিয়ে এসেছে। ক্লে, সুতা, কাঠের গয়নাগুলোতে লাল ও সবুজ রঙের ব্যবহার করা হয়েছে। নকশা হিসেবে রয়েছে মানচিত্র, পতাকা, শাপলা কিংবা জবা ফুল ইত্যাদি। এসব নকশার পাশাপাশি কিছু কিছু গয়নায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আলপনার মোটিফ। এসব গয়না সিঙ্গেল বা সেট হিসেবে কেনা যাবে ১০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকার মধ্য়ে। অনলাইন পেজ রূপসা, বৃত্ত, দেশি সাজসজ্জা ইত্যাদি পেজে পেয়ে যাবেন মনের মতো গয়না। এ ছাড়া ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া, মৌচাক মার্কেটে পেয়ে যাবেন বিজয়ের থিমের গয়না।

ছবি: যথাশিল্প
ছবি: যথাশিল্প

নোটবুক

ঐতিহ্যবাহী ও সমকালীন শিল্পকেন্দ্র ‘যথাশিল্প’ তাদের নোটবুকের নকশা করেছে লাল ও সবুজ রং দিয়ে। নোটবুকগুলোর প্রচ্ছদে রয়েছে গাঢ় সবুজ রং। মাঝে রয়েছে টকটকে লাল রঙের বৃত্ত। বৃত্তের ভেতরে আছে বাংলাদেশের হলুদ রঙের মানচিত্র; অর্থাৎ পুরো নোটবুকের প্রচ্ছদ করা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা দিয়ে। এখানে সবুজ সুতি কাপড়ের ওপর লাল ও হলুদ সুতার এমব্রয়ডারি করা হয়েছে। দেশে চায়নিজ নোটবুকের প্রাধান্যের যুগে যথাশিল্পের নোটবুকের এই নকশা একেবারে অভিনব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যথাশিল্পের নোটবুকগুলো ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এগুলোতে রয়েছে অফ হোয়াইট রঙের কার্টিজ পেপার। আকৃতিভেদে এগুলোর দাম ১ হাজার টাকার মধ্যে। যথাশিল্পের আউটলেট, ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে অর্ডার করে কেনা যাবে নোটবুকগুলো।

টিপ

লাল-সবুজ শাড়ির সঙ্গে মিল রেখে কপালে টিপ থাকবে না, তা কি হয়? বিজয়ের আনন্দে নিজেকে মাতাতে খুঁজে নিতে পারেন মনের মতো টিপ। বেশ কিছু অনলাইন পেজ ও উদ্যোক্তা অনুষঙ্গ হিসেবে বৈচিত্র্যময় টিপ তৈরি করেছেন এবার। টিপের ওপর ফুটিয়ে তুলেছেন মানচিত্র, পতাকা, ফুল, মাছ, প্যাঁচা, হাঁস ইত্যাদি। প্রতিটি টিপেই রয়েছে লাল ও সবুজের ছোঁয়া। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন বর্ণমালাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে টিপের মধ্যে। টিপ দেখে বোঝা যায়, এর মধ্যে লুকিয়ে আছে দেশ ও ভাষার প্রতি মমত্ববোধ। অনলাইন পেজ রূপসা, ত্রিনিত্রিসহ অনেক পেজে পেয়ে যাবেন মনের মতো টিপ।

4

মগ

দেশীয় বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস নিয়ে এসেছে বিজয়ের মগ। বিজয় দিবস উপলক্ষে মগের নকশায় লাল আর সবুজের প্রাধান্য থাকছে এবার বরাবরের মতো। জাতীয় পতাকা, স্টেনগান, বিজয়ের উল্লাসসহ বিভিন্ন প্রিন্টে এসেছে চীনামাটির মগ। এ ছাড়া স্মৃতিসৌধের নকশা করা মগও রয়েছে। টাইপোগ্রাফি, কবিতার পঙ্‌ক্তি, পতাকা কিংবা অপরাজেয় বাংলার মতো ভাস্কর্যের ছবিসহ মগ পাওয়া যাচ্ছে ফ্যাশন হাউস নিত্য উপহারে। শুধু সবুজ কিংবা লাল রং নয়, সাদাকালো রঙেও রয়েছে এই স্মারকগুলো। ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশে এসেছে কয়েক ধরনের মগ। শান্তির প্রতীক পায়রা, পতাকা ও জ্যামিতিক নকশার মগ এনেছে তারা। অঞ্জন’স ফ্যাশন হাউসে ছবি ও লেখা নিয়ে মগ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া লাল-সবুজ রঙে বর্ণমালার মগ পাবেন আড়ং ও যাত্রায়। চাইলে বিজয় দিবসের জন্য মগ কাস্টমাইজ করে নিতে পারেন। আজিজ সুপার মার্কেট ও কাটাবন মার্কেট থেকে পছন্দের মগ তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে আকাঙ্ক্ষিত মগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত