তানিয়া ফেরদৌস

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা—এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সেই ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদামের বিষয়টি আগে যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
‘এই বাদেম, বাদেম, চীনাবাদেম...’—উচ্চারণ কিংবা বানান যতই ভুল হোক না কেন, এই হাঁক শুনলে যে কারও মন আনচান করে ওঠে। পার্কের বেঞ্চে অলস সময় কাটাতে, দূরের যাত্রাপথে রেল-বাস বা লঞ্চে—কোথায় নেই বাদামের উপস্থিতি? ইংরেজিতে পিনাট বা গ্রাউন্ড নাট বলে পরিচিত এই বাদাম আসলে চীন দেশের জিনিস। তবে জানা যায়, লেগাম গোত্রের এই প্রজাতির জন্মস্থান দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোয়। জন্ম যেখানেই হোক না কেন, কর্মগুণে উৎকৃষ্ট চীনাবাদামের চাষ দেখা যায় ভারতীয় উপমহাদেশ, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মধ্য আফ্রিকা, মাদাগাস্কারসহ আরও অনেক উষ্ণমণ্ডলীয় দেশে।
চীনাবাদাম আমাদের দেশের খাদ্যতালিকায় বহু যুগ ধরে জায়গা করে নিয়েছে। বৃষ্টির দিনে বারান্দায় বসে পরিবারের সবাই মিলে ঝাল লবণ সহযোগে বাদাম ছিলে খাওয়ার কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা। স্কুল-কলেজ পালিয়ে পার্কের বেঞ্চে বসে কাগজের ঠোঙায় ভাজা বাদাম খাওয়ার স্মৃতি আর যা হোক ভোলা যাবে না পুরো জীবনে।
খাদ্যোপকরণ হিসেবে বাদাম
চিনি বা গুড়ের শিরায় ডোবানো বাদাম, তিল বাদামের নাড়ু, আগুন ঝাল বাদামভর্তা কিংবা ভেজে নিয়ে এমনি এমনি খাওয়া—রসনাবিলাসে বাদামের অবদান বহুমাত্রিক। গ্রামগঞ্জে সেমাই বা চই পিঠা রাঁধতে, কাঁচা রসের পায়েসে, বিভিন্ন পিঠা ও মিষ্টান্ন পরিবেশনে বাদাম ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু যুগ ধরে। আবার নবাবি ঘরানার বিহারি কাবাব, আস্ত মোরগ বা খাসির রোস্ট, সুতলি কাবাব, হাঁড়ি কাবাবে চীনাবাদাম বাটা দিতেই হবে। সেটা আবার হতে হবে কাঁচা বাদাম।
ফলে কাঁচা বাদাম হোক বা ভাজা, রসনায় তার গুরুত্ব অপার।

বাদামের চাষবাস
ঝুরঝুরে বেলে মাটিতে ভালো ফলন হয় বলে দেশের চরাঞ্চলগুলোতে যুগ যুগ ধরে দেশি জাতের চীনাবাদামের চাষ হয়ে আসছে। প্রতিবছর দেশের ১০টি অঞ্চলে ৮৫-৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে এক থেকে দেড় লাখ টনের মতো বাদামের ফলন হয়। চীনাবাদাম চাষের জন্য হালকা বেলে দো-আঁশ, দো-আঁশ ও চরাঞ্চলের মাটি বেশি উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের চরাঞ্চলে বেশি চাষ হয় চীনাবাদামের। তবে ইদানীং পঞ্চগড়েও বাদামের চাষ হচ্ছে বেশ। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলেও বাদামের চাষ হতে দেখা যাচ্ছে এখন।
দেশি জাতগুলো ছাড়াও উচ্চফলনশীল বাসন্তী, ত্রিদানা ও বারি চীনাবাদামের চাহিদা রয়েছে দেশে।
দেশে দেশে চীনাবাদাম
শুধু শখে নয়, টালা বা সেদ্ধ চীনাবাদাম চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মতো দূর প্রাচ্যের দেশগুলোর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। সে দেশগুলোর রন্ধন প্রক্রিয়ার একটি বিশেষ ব্যাপার হচ্ছে, উচ্চ আঁচে খুব অল্প সময়ের জন্য রান্না করা। এর জন্য অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার উপযোগী তেল হিসেবে বাদাম তেল তালিকার ওপরের দিকে আছে। এই তেল নিরপেক্ষ স্বাদ-গন্ধ-বর্ণবিশিষ্ট বলে সাধারণত সব ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত খাবার সাঁতে বা কাঠিতে গাঁথা ঝলসানো মাংসের স্লাইসের সঠিক স্বাদ পেতে গেলে পিনাট সসের বিকল্প নেই। মালয়েশিয়ান ভাত-ডিমের ঝোল বা নাসি লেমাকের প্লেটে কয়েকটি ভাজা চীনাবাদাম না থাকলেই নয়। চাইনিজ বা ইন্দো-চাইনিজ কুং পাও চিকেন রান্নাতেও চীনাবাদাম অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে খাবার পরিবেশনে চীনাবাদাম টেলে আধা ভাঙা করে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। ভারতের নিরামিষভোজী অনেক পরিবারেই কাঁচা বাদামের মসলায় ভুনে নেওয়া পদ ভাত-রুটির সঙ্গে দারুণ চলে।
আবার আড্ডায় অবসরে সঙ্গী হিসেবে অথবা অযথাই কিছু চিবোতে মুখ চুলবুল করে উঠলে সারা বিশ্বে লোকে বাদামের দিকে হাত বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্যাকেটজাত ভাজা চীনাবাদাম অত্যন্ত জনপ্রিয় স্ন্যাক্স। আর মার্কিনরা তার চেয়েও বেশি খেয়ে থাকে চীনাবাদামের মাখন বা পিনাট বাটার। এই পিনাট বাটার তাদের খাদ্য সংস্কৃতির সঙ্গে এতই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো যে, পিনাট বাটার স্যান্ডউইচ ছাড়া তাদের একদিনও চলে না। বিভিন্ন বিখ্যাত চকলেট ও ডেজার্টেও পিনাট বাটারের ব্যবহার রয়েছে। বিশ্বখ্যাত চকলেট বার স্নিকার্স, রিযেস কোম্পানির পিনাট বাটার চকলেট কাপ আর শিশুমোহনী রং-বেরঙের এম অ্যান্ড এম চকলেটের প্রধান উপাদানই হচ্ছে চীনাবাদাম। এই চকলেটগুলো বিশ্বজুড়ে অসম্ভব রকমের জনপ্রিয়।
চীনাবাদামের অনন্য পুষ্টিগুণ
যারা কম খরচে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খুঁজছেন ভগ্নস্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে, চীনাবাদাম হতে পারে তাদের জন্য খুবই সহায়ক। ১০০ গ্রাম চীনাবাদাম প্রায় ৫৬৭ ক্যালোরি জোগান দিতে পারে শরীরে। এতে উদ্ভিজ্জ আমিষের পরিমাণও অবাক হওয়ার মতো। ১০০ গ্রাম মুরগির মাংসের সমপরিমাণ বাদামে থাকে প্রায় ২৫ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ। অথচ একই পরিমাণ ডালে এর চার ভাগের এক ভাগ আমিষ মেলে। এদিকে চীনাবাদামের সবচেয়ে বিশিষ্ট স্বাস্থ্যগুণ এর মনো স্যাচুরেটেড উপকারী চর্বির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে মনো স্যাচুরেটেড চর্বির পরিমাণ ২৪ দশমিক ৪৩ গ্রামের মতো।
আবার এতে শর্করা খুবই কম বলে কম শর্করাযুক্ত খাবার হিসেবে খাদ্যতালিকায় নিশ্চিন্তে স্থান করে নিতে পারে। ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে আছে নামমাত্র ১৩-১৬ গ্রাম শর্করা।
জরুরি ভিটামিন আর মিনারেলের উৎকৃষ্ট উৎস
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, এতে আছে অনন্য সব ভিটামিন আর মিনারেলের সমাহার। বায়োটিন ধরনের ভিটামিন ‘বি’র ভালো প্রাকৃতিক উৎস এটি। চীনাবাদাম গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন বি৩ বা নিয়াসিনও আছে চীনাবাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে। গর্ভাবস্থায় ফোলেট বা ভিটামিন বি৯-এর জন্য প্রায়ই সাপ্লিমেন্ট খেতে হয় হবু মায়েদের। অথচ রোজ বিকেলে এক মুঠো চীনাবাদাম থেকেই মিলবে রোজকার দরকারি ফোলিক অ্যাসিড। ভিটামিন বি প্যান বা থিয়ামিনের শক্তিশালী জোগানদার এই চীনাবাদাম। এদিকে এতে ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়ামের সঙ্গে আছে ভালো পরিমাণে ভিটামিন ই।
সুস্বাস্থ্যের জন্য চীনাবাদাম
আগেই বলা হয়েছে, নেট দুনিয়ায় যতই কাঁচা আর ভাজা বাদাম নিয়ে আলোচনা থিতিয়ে আসুক, এটি আমাদের স্বাস্থ্যবন্ধু। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিষয়টি।
ওজন নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
এত বেশি ক্যালোরি ও চর্বিযুক্ত একটি খাবার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, তা শুনলে কিছুটা অবাকই হতে হয়। কিন্তু বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে চীনাবাদাম খেলে সঠিক ওজন রক্ষা করা যায়। ধারণা করা হয়, উপকারী তেল ও প্রোটিন আছে অথচ শর্করা নেই বলেই এমনটি হয়। এতে ক্যালোরি পোড়ানো বা ক্ষয় হয় সহজ। তা ছাড়া চীনাবাদাম খেলে পেট ভরা ভাব থাকে বেশ কিছুটা সময়।
হৃদ্যন্ত্রের যত্নে চীনাবাদাম
চীনাবাদামে হৃদ্যন্ত্রবান্ধব বেশ কিছু উপাদান আছে যথেষ্ট পরিমাণে। এর মধ্যে আছে ম্যাগনেশিয়াম, নিয়াসিন, কপার, ওলেইক অ্যাসিড ইত্যাদি। আবার চীনাবাদামে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তার মধ্যে রেজভেরাট্রল নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। এ ছাড়া, চীনাবাদামে মনো-স্যাচুরেটেড চর্বি বেশি থাকায় তা এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের জোগান বাড়িয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমিয়ে আনে। এতে হার্টের ব্লক, স্ট্রোকসহ অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো যায়।

পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ
পিত্তরসের কাজই হচ্ছে খাদ্যের চর্বিকে ভেঙে সরলীকরণ করা। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, পিত্তথলির পাথর মূলত জটিল গঠনের চর্বি দিয়েই তৈরি। তাই চীনাবাদামের কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষমতাই এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে বলে গবেষকেরা মনে করেন।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
খুব দ্রুত রক্তে শর্করার লোড বাড়িয়ে দিতে পারে এমন খাবার বা পানীয়, যেমন—এক গ্লাস শরবত বা খানকয় লুচির সঙ্গে যদি কয়েকটি চীনাবাদাম চিবিয়ে নেওয়া যায়, তবে ডায়বেটিস পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বাদামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। তাই খুব উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডসম্পন্ন খাবার বা পানীয়ের ক্ষতিকর প্রভাব চীনাবাদাম কিছুটা হলেও কমিয়ে আনে।

চীনাবাদামের ক্যানসার প্রতিরোধক ভূমিকা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে ক্যানসার প্রতিরোধে তা একটি লক্ষণীয় ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে কোলোরেকটাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে এ কথা যথেষ্ট জোর দিয়ে বলা যায়। চীনাবাদামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন—আইফোনের, রেসভেরাট্রল ও ফেনোলিক অ্যাসিড ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে চীনাবাদামে কারও কারও মারাত্মক অ্যালার্জি হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই চীনাবাদাম চিবিয়ে একদিকে স্বাস্থ্যরক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে সুলভে সুস্বাদু কিছুর আস্বাদনও মিলে যাচ্ছে।
শিঙাড়ায় বাদামের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তর্কবিতর্ক চললেও চানাচুরে এর কদর আছে বেশ। তবে বালিতে ভাজা খোসাসহ বাদাম ছিলে ছিলে খাওয়ার মধ্যে একটা অন্যরকম ব্যাপার আছে।

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা—এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সেই ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদামের বিষয়টি আগে যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
‘এই বাদেম, বাদেম, চীনাবাদেম...’—উচ্চারণ কিংবা বানান যতই ভুল হোক না কেন, এই হাঁক শুনলে যে কারও মন আনচান করে ওঠে। পার্কের বেঞ্চে অলস সময় কাটাতে, দূরের যাত্রাপথে রেল-বাস বা লঞ্চে—কোথায় নেই বাদামের উপস্থিতি? ইংরেজিতে পিনাট বা গ্রাউন্ড নাট বলে পরিচিত এই বাদাম আসলে চীন দেশের জিনিস। তবে জানা যায়, লেগাম গোত্রের এই প্রজাতির জন্মস্থান দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোয়। জন্ম যেখানেই হোক না কেন, কর্মগুণে উৎকৃষ্ট চীনাবাদামের চাষ দেখা যায় ভারতীয় উপমহাদেশ, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মধ্য আফ্রিকা, মাদাগাস্কারসহ আরও অনেক উষ্ণমণ্ডলীয় দেশে।
চীনাবাদাম আমাদের দেশের খাদ্যতালিকায় বহু যুগ ধরে জায়গা করে নিয়েছে। বৃষ্টির দিনে বারান্দায় বসে পরিবারের সবাই মিলে ঝাল লবণ সহযোগে বাদাম ছিলে খাওয়ার কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা। স্কুল-কলেজ পালিয়ে পার্কের বেঞ্চে বসে কাগজের ঠোঙায় ভাজা বাদাম খাওয়ার স্মৃতি আর যা হোক ভোলা যাবে না পুরো জীবনে।
খাদ্যোপকরণ হিসেবে বাদাম
চিনি বা গুড়ের শিরায় ডোবানো বাদাম, তিল বাদামের নাড়ু, আগুন ঝাল বাদামভর্তা কিংবা ভেজে নিয়ে এমনি এমনি খাওয়া—রসনাবিলাসে বাদামের অবদান বহুমাত্রিক। গ্রামগঞ্জে সেমাই বা চই পিঠা রাঁধতে, কাঁচা রসের পায়েসে, বিভিন্ন পিঠা ও মিষ্টান্ন পরিবেশনে বাদাম ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু যুগ ধরে। আবার নবাবি ঘরানার বিহারি কাবাব, আস্ত মোরগ বা খাসির রোস্ট, সুতলি কাবাব, হাঁড়ি কাবাবে চীনাবাদাম বাটা দিতেই হবে। সেটা আবার হতে হবে কাঁচা বাদাম।
ফলে কাঁচা বাদাম হোক বা ভাজা, রসনায় তার গুরুত্ব অপার।

বাদামের চাষবাস
ঝুরঝুরে বেলে মাটিতে ভালো ফলন হয় বলে দেশের চরাঞ্চলগুলোতে যুগ যুগ ধরে দেশি জাতের চীনাবাদামের চাষ হয়ে আসছে। প্রতিবছর দেশের ১০টি অঞ্চলে ৮৫-৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে এক থেকে দেড় লাখ টনের মতো বাদামের ফলন হয়। চীনাবাদাম চাষের জন্য হালকা বেলে দো-আঁশ, দো-আঁশ ও চরাঞ্চলের মাটি বেশি উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের চরাঞ্চলে বেশি চাষ হয় চীনাবাদামের। তবে ইদানীং পঞ্চগড়েও বাদামের চাষ হচ্ছে বেশ। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলেও বাদামের চাষ হতে দেখা যাচ্ছে এখন।
দেশি জাতগুলো ছাড়াও উচ্চফলনশীল বাসন্তী, ত্রিদানা ও বারি চীনাবাদামের চাহিদা রয়েছে দেশে।
দেশে দেশে চীনাবাদাম
শুধু শখে নয়, টালা বা সেদ্ধ চীনাবাদাম চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মতো দূর প্রাচ্যের দেশগুলোর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। সে দেশগুলোর রন্ধন প্রক্রিয়ার একটি বিশেষ ব্যাপার হচ্ছে, উচ্চ আঁচে খুব অল্প সময়ের জন্য রান্না করা। এর জন্য অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার উপযোগী তেল হিসেবে বাদাম তেল তালিকার ওপরের দিকে আছে। এই তেল নিরপেক্ষ স্বাদ-গন্ধ-বর্ণবিশিষ্ট বলে সাধারণত সব ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত খাবার সাঁতে বা কাঠিতে গাঁথা ঝলসানো মাংসের স্লাইসের সঠিক স্বাদ পেতে গেলে পিনাট সসের বিকল্প নেই। মালয়েশিয়ান ভাত-ডিমের ঝোল বা নাসি লেমাকের প্লেটে কয়েকটি ভাজা চীনাবাদাম না থাকলেই নয়। চাইনিজ বা ইন্দো-চাইনিজ কুং পাও চিকেন রান্নাতেও চীনাবাদাম অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে খাবার পরিবেশনে চীনাবাদাম টেলে আধা ভাঙা করে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। ভারতের নিরামিষভোজী অনেক পরিবারেই কাঁচা বাদামের মসলায় ভুনে নেওয়া পদ ভাত-রুটির সঙ্গে দারুণ চলে।
আবার আড্ডায় অবসরে সঙ্গী হিসেবে অথবা অযথাই কিছু চিবোতে মুখ চুলবুল করে উঠলে সারা বিশ্বে লোকে বাদামের দিকে হাত বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্যাকেটজাত ভাজা চীনাবাদাম অত্যন্ত জনপ্রিয় স্ন্যাক্স। আর মার্কিনরা তার চেয়েও বেশি খেয়ে থাকে চীনাবাদামের মাখন বা পিনাট বাটার। এই পিনাট বাটার তাদের খাদ্য সংস্কৃতির সঙ্গে এতই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো যে, পিনাট বাটার স্যান্ডউইচ ছাড়া তাদের একদিনও চলে না। বিভিন্ন বিখ্যাত চকলেট ও ডেজার্টেও পিনাট বাটারের ব্যবহার রয়েছে। বিশ্বখ্যাত চকলেট বার স্নিকার্স, রিযেস কোম্পানির পিনাট বাটার চকলেট কাপ আর শিশুমোহনী রং-বেরঙের এম অ্যান্ড এম চকলেটের প্রধান উপাদানই হচ্ছে চীনাবাদাম। এই চকলেটগুলো বিশ্বজুড়ে অসম্ভব রকমের জনপ্রিয়।
চীনাবাদামের অনন্য পুষ্টিগুণ
যারা কম খরচে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খুঁজছেন ভগ্নস্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে, চীনাবাদাম হতে পারে তাদের জন্য খুবই সহায়ক। ১০০ গ্রাম চীনাবাদাম প্রায় ৫৬৭ ক্যালোরি জোগান দিতে পারে শরীরে। এতে উদ্ভিজ্জ আমিষের পরিমাণও অবাক হওয়ার মতো। ১০০ গ্রাম মুরগির মাংসের সমপরিমাণ বাদামে থাকে প্রায় ২৫ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ। অথচ একই পরিমাণ ডালে এর চার ভাগের এক ভাগ আমিষ মেলে। এদিকে চীনাবাদামের সবচেয়ে বিশিষ্ট স্বাস্থ্যগুণ এর মনো স্যাচুরেটেড উপকারী চর্বির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে মনো স্যাচুরেটেড চর্বির পরিমাণ ২৪ দশমিক ৪৩ গ্রামের মতো।
আবার এতে শর্করা খুবই কম বলে কম শর্করাযুক্ত খাবার হিসেবে খাদ্যতালিকায় নিশ্চিন্তে স্থান করে নিতে পারে। ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে আছে নামমাত্র ১৩-১৬ গ্রাম শর্করা।
জরুরি ভিটামিন আর মিনারেলের উৎকৃষ্ট উৎস
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, এতে আছে অনন্য সব ভিটামিন আর মিনারেলের সমাহার। বায়োটিন ধরনের ভিটামিন ‘বি’র ভালো প্রাকৃতিক উৎস এটি। চীনাবাদাম গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন বি৩ বা নিয়াসিনও আছে চীনাবাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে। গর্ভাবস্থায় ফোলেট বা ভিটামিন বি৯-এর জন্য প্রায়ই সাপ্লিমেন্ট খেতে হয় হবু মায়েদের। অথচ রোজ বিকেলে এক মুঠো চীনাবাদাম থেকেই মিলবে রোজকার দরকারি ফোলিক অ্যাসিড। ভিটামিন বি প্যান বা থিয়ামিনের শক্তিশালী জোগানদার এই চীনাবাদাম। এদিকে এতে ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়ামের সঙ্গে আছে ভালো পরিমাণে ভিটামিন ই।
সুস্বাস্থ্যের জন্য চীনাবাদাম
আগেই বলা হয়েছে, নেট দুনিয়ায় যতই কাঁচা আর ভাজা বাদাম নিয়ে আলোচনা থিতিয়ে আসুক, এটি আমাদের স্বাস্থ্যবন্ধু। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিষয়টি।
ওজন নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
এত বেশি ক্যালোরি ও চর্বিযুক্ত একটি খাবার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, তা শুনলে কিছুটা অবাকই হতে হয়। কিন্তু বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে চীনাবাদাম খেলে সঠিক ওজন রক্ষা করা যায়। ধারণা করা হয়, উপকারী তেল ও প্রোটিন আছে অথচ শর্করা নেই বলেই এমনটি হয়। এতে ক্যালোরি পোড়ানো বা ক্ষয় হয় সহজ। তা ছাড়া চীনাবাদাম খেলে পেট ভরা ভাব থাকে বেশ কিছুটা সময়।
হৃদ্যন্ত্রের যত্নে চীনাবাদাম
চীনাবাদামে হৃদ্যন্ত্রবান্ধব বেশ কিছু উপাদান আছে যথেষ্ট পরিমাণে। এর মধ্যে আছে ম্যাগনেশিয়াম, নিয়াসিন, কপার, ওলেইক অ্যাসিড ইত্যাদি। আবার চীনাবাদামে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তার মধ্যে রেজভেরাট্রল নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। এ ছাড়া, চীনাবাদামে মনো-স্যাচুরেটেড চর্বি বেশি থাকায় তা এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের জোগান বাড়িয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমিয়ে আনে। এতে হার্টের ব্লক, স্ট্রোকসহ অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো যায়।

পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ
পিত্তরসের কাজই হচ্ছে খাদ্যের চর্বিকে ভেঙে সরলীকরণ করা। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, পিত্তথলির পাথর মূলত জটিল গঠনের চর্বি দিয়েই তৈরি। তাই চীনাবাদামের কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষমতাই এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে বলে গবেষকেরা মনে করেন।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
খুব দ্রুত রক্তে শর্করার লোড বাড়িয়ে দিতে পারে এমন খাবার বা পানীয়, যেমন—এক গ্লাস শরবত বা খানকয় লুচির সঙ্গে যদি কয়েকটি চীনাবাদাম চিবিয়ে নেওয়া যায়, তবে ডায়বেটিস পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বাদামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। তাই খুব উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডসম্পন্ন খাবার বা পানীয়ের ক্ষতিকর প্রভাব চীনাবাদাম কিছুটা হলেও কমিয়ে আনে।

চীনাবাদামের ক্যানসার প্রতিরোধক ভূমিকা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে ক্যানসার প্রতিরোধে তা একটি লক্ষণীয় ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে কোলোরেকটাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে এ কথা যথেষ্ট জোর দিয়ে বলা যায়। চীনাবাদামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন—আইফোনের, রেসভেরাট্রল ও ফেনোলিক অ্যাসিড ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে চীনাবাদামে কারও কারও মারাত্মক অ্যালার্জি হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই চীনাবাদাম চিবিয়ে একদিকে স্বাস্থ্যরক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে সুলভে সুস্বাদু কিছুর আস্বাদনও মিলে যাচ্ছে।
শিঙাড়ায় বাদামের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তর্কবিতর্ক চললেও চানাচুরে এর কদর আছে বেশ। তবে বালিতে ভাজা খোসাসহ বাদাম ছিলে ছিলে খাওয়ার মধ্যে একটা অন্যরকম ব্যাপার আছে।
তানিয়া ফেরদৌস

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা—এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সেই ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদামের বিষয়টি আগে যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
‘এই বাদেম, বাদেম, চীনাবাদেম...’—উচ্চারণ কিংবা বানান যতই ভুল হোক না কেন, এই হাঁক শুনলে যে কারও মন আনচান করে ওঠে। পার্কের বেঞ্চে অলস সময় কাটাতে, দূরের যাত্রাপথে রেল-বাস বা লঞ্চে—কোথায় নেই বাদামের উপস্থিতি? ইংরেজিতে পিনাট বা গ্রাউন্ড নাট বলে পরিচিত এই বাদাম আসলে চীন দেশের জিনিস। তবে জানা যায়, লেগাম গোত্রের এই প্রজাতির জন্মস্থান দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোয়। জন্ম যেখানেই হোক না কেন, কর্মগুণে উৎকৃষ্ট চীনাবাদামের চাষ দেখা যায় ভারতীয় উপমহাদেশ, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মধ্য আফ্রিকা, মাদাগাস্কারসহ আরও অনেক উষ্ণমণ্ডলীয় দেশে।
চীনাবাদাম আমাদের দেশের খাদ্যতালিকায় বহু যুগ ধরে জায়গা করে নিয়েছে। বৃষ্টির দিনে বারান্দায় বসে পরিবারের সবাই মিলে ঝাল লবণ সহযোগে বাদাম ছিলে খাওয়ার কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা। স্কুল-কলেজ পালিয়ে পার্কের বেঞ্চে বসে কাগজের ঠোঙায় ভাজা বাদাম খাওয়ার স্মৃতি আর যা হোক ভোলা যাবে না পুরো জীবনে।
খাদ্যোপকরণ হিসেবে বাদাম
চিনি বা গুড়ের শিরায় ডোবানো বাদাম, তিল বাদামের নাড়ু, আগুন ঝাল বাদামভর্তা কিংবা ভেজে নিয়ে এমনি এমনি খাওয়া—রসনাবিলাসে বাদামের অবদান বহুমাত্রিক। গ্রামগঞ্জে সেমাই বা চই পিঠা রাঁধতে, কাঁচা রসের পায়েসে, বিভিন্ন পিঠা ও মিষ্টান্ন পরিবেশনে বাদাম ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু যুগ ধরে। আবার নবাবি ঘরানার বিহারি কাবাব, আস্ত মোরগ বা খাসির রোস্ট, সুতলি কাবাব, হাঁড়ি কাবাবে চীনাবাদাম বাটা দিতেই হবে। সেটা আবার হতে হবে কাঁচা বাদাম।
ফলে কাঁচা বাদাম হোক বা ভাজা, রসনায় তার গুরুত্ব অপার।

বাদামের চাষবাস
ঝুরঝুরে বেলে মাটিতে ভালো ফলন হয় বলে দেশের চরাঞ্চলগুলোতে যুগ যুগ ধরে দেশি জাতের চীনাবাদামের চাষ হয়ে আসছে। প্রতিবছর দেশের ১০টি অঞ্চলে ৮৫-৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে এক থেকে দেড় লাখ টনের মতো বাদামের ফলন হয়। চীনাবাদাম চাষের জন্য হালকা বেলে দো-আঁশ, দো-আঁশ ও চরাঞ্চলের মাটি বেশি উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের চরাঞ্চলে বেশি চাষ হয় চীনাবাদামের। তবে ইদানীং পঞ্চগড়েও বাদামের চাষ হচ্ছে বেশ। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলেও বাদামের চাষ হতে দেখা যাচ্ছে এখন।
দেশি জাতগুলো ছাড়াও উচ্চফলনশীল বাসন্তী, ত্রিদানা ও বারি চীনাবাদামের চাহিদা রয়েছে দেশে।
দেশে দেশে চীনাবাদাম
শুধু শখে নয়, টালা বা সেদ্ধ চীনাবাদাম চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মতো দূর প্রাচ্যের দেশগুলোর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। সে দেশগুলোর রন্ধন প্রক্রিয়ার একটি বিশেষ ব্যাপার হচ্ছে, উচ্চ আঁচে খুব অল্প সময়ের জন্য রান্না করা। এর জন্য অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার উপযোগী তেল হিসেবে বাদাম তেল তালিকার ওপরের দিকে আছে। এই তেল নিরপেক্ষ স্বাদ-গন্ধ-বর্ণবিশিষ্ট বলে সাধারণত সব ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত খাবার সাঁতে বা কাঠিতে গাঁথা ঝলসানো মাংসের স্লাইসের সঠিক স্বাদ পেতে গেলে পিনাট সসের বিকল্প নেই। মালয়েশিয়ান ভাত-ডিমের ঝোল বা নাসি লেমাকের প্লেটে কয়েকটি ভাজা চীনাবাদাম না থাকলেই নয়। চাইনিজ বা ইন্দো-চাইনিজ কুং পাও চিকেন রান্নাতেও চীনাবাদাম অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে খাবার পরিবেশনে চীনাবাদাম টেলে আধা ভাঙা করে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। ভারতের নিরামিষভোজী অনেক পরিবারেই কাঁচা বাদামের মসলায় ভুনে নেওয়া পদ ভাত-রুটির সঙ্গে দারুণ চলে।
আবার আড্ডায় অবসরে সঙ্গী হিসেবে অথবা অযথাই কিছু চিবোতে মুখ চুলবুল করে উঠলে সারা বিশ্বে লোকে বাদামের দিকে হাত বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্যাকেটজাত ভাজা চীনাবাদাম অত্যন্ত জনপ্রিয় স্ন্যাক্স। আর মার্কিনরা তার চেয়েও বেশি খেয়ে থাকে চীনাবাদামের মাখন বা পিনাট বাটার। এই পিনাট বাটার তাদের খাদ্য সংস্কৃতির সঙ্গে এতই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো যে, পিনাট বাটার স্যান্ডউইচ ছাড়া তাদের একদিনও চলে না। বিভিন্ন বিখ্যাত চকলেট ও ডেজার্টেও পিনাট বাটারের ব্যবহার রয়েছে। বিশ্বখ্যাত চকলেট বার স্নিকার্স, রিযেস কোম্পানির পিনাট বাটার চকলেট কাপ আর শিশুমোহনী রং-বেরঙের এম অ্যান্ড এম চকলেটের প্রধান উপাদানই হচ্ছে চীনাবাদাম। এই চকলেটগুলো বিশ্বজুড়ে অসম্ভব রকমের জনপ্রিয়।
চীনাবাদামের অনন্য পুষ্টিগুণ
যারা কম খরচে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খুঁজছেন ভগ্নস্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে, চীনাবাদাম হতে পারে তাদের জন্য খুবই সহায়ক। ১০০ গ্রাম চীনাবাদাম প্রায় ৫৬৭ ক্যালোরি জোগান দিতে পারে শরীরে। এতে উদ্ভিজ্জ আমিষের পরিমাণও অবাক হওয়ার মতো। ১০০ গ্রাম মুরগির মাংসের সমপরিমাণ বাদামে থাকে প্রায় ২৫ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ। অথচ একই পরিমাণ ডালে এর চার ভাগের এক ভাগ আমিষ মেলে। এদিকে চীনাবাদামের সবচেয়ে বিশিষ্ট স্বাস্থ্যগুণ এর মনো স্যাচুরেটেড উপকারী চর্বির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে মনো স্যাচুরেটেড চর্বির পরিমাণ ২৪ দশমিক ৪৩ গ্রামের মতো।
আবার এতে শর্করা খুবই কম বলে কম শর্করাযুক্ত খাবার হিসেবে খাদ্যতালিকায় নিশ্চিন্তে স্থান করে নিতে পারে। ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে আছে নামমাত্র ১৩-১৬ গ্রাম শর্করা।
জরুরি ভিটামিন আর মিনারেলের উৎকৃষ্ট উৎস
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, এতে আছে অনন্য সব ভিটামিন আর মিনারেলের সমাহার। বায়োটিন ধরনের ভিটামিন ‘বি’র ভালো প্রাকৃতিক উৎস এটি। চীনাবাদাম গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন বি৩ বা নিয়াসিনও আছে চীনাবাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে। গর্ভাবস্থায় ফোলেট বা ভিটামিন বি৯-এর জন্য প্রায়ই সাপ্লিমেন্ট খেতে হয় হবু মায়েদের। অথচ রোজ বিকেলে এক মুঠো চীনাবাদাম থেকেই মিলবে রোজকার দরকারি ফোলিক অ্যাসিড। ভিটামিন বি প্যান বা থিয়ামিনের শক্তিশালী জোগানদার এই চীনাবাদাম। এদিকে এতে ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়ামের সঙ্গে আছে ভালো পরিমাণে ভিটামিন ই।
সুস্বাস্থ্যের জন্য চীনাবাদাম
আগেই বলা হয়েছে, নেট দুনিয়ায় যতই কাঁচা আর ভাজা বাদাম নিয়ে আলোচনা থিতিয়ে আসুক, এটি আমাদের স্বাস্থ্যবন্ধু। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিষয়টি।
ওজন নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
এত বেশি ক্যালোরি ও চর্বিযুক্ত একটি খাবার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, তা শুনলে কিছুটা অবাকই হতে হয়। কিন্তু বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে চীনাবাদাম খেলে সঠিক ওজন রক্ষা করা যায়। ধারণা করা হয়, উপকারী তেল ও প্রোটিন আছে অথচ শর্করা নেই বলেই এমনটি হয়। এতে ক্যালোরি পোড়ানো বা ক্ষয় হয় সহজ। তা ছাড়া চীনাবাদাম খেলে পেট ভরা ভাব থাকে বেশ কিছুটা সময়।
হৃদ্যন্ত্রের যত্নে চীনাবাদাম
চীনাবাদামে হৃদ্যন্ত্রবান্ধব বেশ কিছু উপাদান আছে যথেষ্ট পরিমাণে। এর মধ্যে আছে ম্যাগনেশিয়াম, নিয়াসিন, কপার, ওলেইক অ্যাসিড ইত্যাদি। আবার চীনাবাদামে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তার মধ্যে রেজভেরাট্রল নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। এ ছাড়া, চীনাবাদামে মনো-স্যাচুরেটেড চর্বি বেশি থাকায় তা এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের জোগান বাড়িয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমিয়ে আনে। এতে হার্টের ব্লক, স্ট্রোকসহ অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো যায়।

পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ
পিত্তরসের কাজই হচ্ছে খাদ্যের চর্বিকে ভেঙে সরলীকরণ করা। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, পিত্তথলির পাথর মূলত জটিল গঠনের চর্বি দিয়েই তৈরি। তাই চীনাবাদামের কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষমতাই এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে বলে গবেষকেরা মনে করেন।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
খুব দ্রুত রক্তে শর্করার লোড বাড়িয়ে দিতে পারে এমন খাবার বা পানীয়, যেমন—এক গ্লাস শরবত বা খানকয় লুচির সঙ্গে যদি কয়েকটি চীনাবাদাম চিবিয়ে নেওয়া যায়, তবে ডায়বেটিস পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বাদামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। তাই খুব উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডসম্পন্ন খাবার বা পানীয়ের ক্ষতিকর প্রভাব চীনাবাদাম কিছুটা হলেও কমিয়ে আনে।

চীনাবাদামের ক্যানসার প্রতিরোধক ভূমিকা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে ক্যানসার প্রতিরোধে তা একটি লক্ষণীয় ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে কোলোরেকটাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে এ কথা যথেষ্ট জোর দিয়ে বলা যায়। চীনাবাদামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন—আইফোনের, রেসভেরাট্রল ও ফেনোলিক অ্যাসিড ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে চীনাবাদামে কারও কারও মারাত্মক অ্যালার্জি হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই চীনাবাদাম চিবিয়ে একদিকে স্বাস্থ্যরক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে সুলভে সুস্বাদু কিছুর আস্বাদনও মিলে যাচ্ছে।
শিঙাড়ায় বাদামের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তর্কবিতর্ক চললেও চানাচুরে এর কদর আছে বেশ। তবে বালিতে ভাজা খোসাসহ বাদাম ছিলে ছিলে খাওয়ার মধ্যে একটা অন্যরকম ব্যাপার আছে।

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা—এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সেই ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদামের বিষয়টি আগে যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
‘এই বাদেম, বাদেম, চীনাবাদেম...’—উচ্চারণ কিংবা বানান যতই ভুল হোক না কেন, এই হাঁক শুনলে যে কারও মন আনচান করে ওঠে। পার্কের বেঞ্চে অলস সময় কাটাতে, দূরের যাত্রাপথে রেল-বাস বা লঞ্চে—কোথায় নেই বাদামের উপস্থিতি? ইংরেজিতে পিনাট বা গ্রাউন্ড নাট বলে পরিচিত এই বাদাম আসলে চীন দেশের জিনিস। তবে জানা যায়, লেগাম গোত্রের এই প্রজাতির জন্মস্থান দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোয়। জন্ম যেখানেই হোক না কেন, কর্মগুণে উৎকৃষ্ট চীনাবাদামের চাষ দেখা যায় ভারতীয় উপমহাদেশ, চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মধ্য আফ্রিকা, মাদাগাস্কারসহ আরও অনেক উষ্ণমণ্ডলীয় দেশে।
চীনাবাদাম আমাদের দেশের খাদ্যতালিকায় বহু যুগ ধরে জায়গা করে নিয়েছে। বৃষ্টির দিনে বারান্দায় বসে পরিবারের সবাই মিলে ঝাল লবণ সহযোগে বাদাম ছিলে খাওয়ার কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা। স্কুল-কলেজ পালিয়ে পার্কের বেঞ্চে বসে কাগজের ঠোঙায় ভাজা বাদাম খাওয়ার স্মৃতি আর যা হোক ভোলা যাবে না পুরো জীবনে।
খাদ্যোপকরণ হিসেবে বাদাম
চিনি বা গুড়ের শিরায় ডোবানো বাদাম, তিল বাদামের নাড়ু, আগুন ঝাল বাদামভর্তা কিংবা ভেজে নিয়ে এমনি এমনি খাওয়া—রসনাবিলাসে বাদামের অবদান বহুমাত্রিক। গ্রামগঞ্জে সেমাই বা চই পিঠা রাঁধতে, কাঁচা রসের পায়েসে, বিভিন্ন পিঠা ও মিষ্টান্ন পরিবেশনে বাদাম ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহু যুগ ধরে। আবার নবাবি ঘরানার বিহারি কাবাব, আস্ত মোরগ বা খাসির রোস্ট, সুতলি কাবাব, হাঁড়ি কাবাবে চীনাবাদাম বাটা দিতেই হবে। সেটা আবার হতে হবে কাঁচা বাদাম।
ফলে কাঁচা বাদাম হোক বা ভাজা, রসনায় তার গুরুত্ব অপার।

বাদামের চাষবাস
ঝুরঝুরে বেলে মাটিতে ভালো ফলন হয় বলে দেশের চরাঞ্চলগুলোতে যুগ যুগ ধরে দেশি জাতের চীনাবাদামের চাষ হয়ে আসছে। প্রতিবছর দেশের ১০টি অঞ্চলে ৮৫-৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে এক থেকে দেড় লাখ টনের মতো বাদামের ফলন হয়। চীনাবাদাম চাষের জন্য হালকা বেলে দো-আঁশ, দো-আঁশ ও চরাঞ্চলের মাটি বেশি উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের চরাঞ্চলে বেশি চাষ হয় চীনাবাদামের। তবে ইদানীং পঞ্চগড়েও বাদামের চাষ হচ্ছে বেশ। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলেও বাদামের চাষ হতে দেখা যাচ্ছে এখন।
দেশি জাতগুলো ছাড়াও উচ্চফলনশীল বাসন্তী, ত্রিদানা ও বারি চীনাবাদামের চাহিদা রয়েছে দেশে।
দেশে দেশে চীনাবাদাম
শুধু শখে নয়, টালা বা সেদ্ধ চীনাবাদাম চীন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মতো দূর প্রাচ্যের দেশগুলোর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। সে দেশগুলোর রন্ধন প্রক্রিয়ার একটি বিশেষ ব্যাপার হচ্ছে, উচ্চ আঁচে খুব অল্প সময়ের জন্য রান্না করা। এর জন্য অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার উপযোগী তেল হিসেবে বাদাম তেল তালিকার ওপরের দিকে আছে। এই তেল নিরপেক্ষ স্বাদ-গন্ধ-বর্ণবিশিষ্ট বলে সাধারণত সব ধরনের রান্নায় ব্যবহার করা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত খাবার সাঁতে বা কাঠিতে গাঁথা ঝলসানো মাংসের স্লাইসের সঠিক স্বাদ পেতে গেলে পিনাট সসের বিকল্প নেই। মালয়েশিয়ান ভাত-ডিমের ঝোল বা নাসি লেমাকের প্লেটে কয়েকটি ভাজা চীনাবাদাম না থাকলেই নয়। চাইনিজ বা ইন্দো-চাইনিজ কুং পাও চিকেন রান্নাতেও চীনাবাদাম অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে খাবার পরিবেশনে চীনাবাদাম টেলে আধা ভাঙা করে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। ভারতের নিরামিষভোজী অনেক পরিবারেই কাঁচা বাদামের মসলায় ভুনে নেওয়া পদ ভাত-রুটির সঙ্গে দারুণ চলে।
আবার আড্ডায় অবসরে সঙ্গী হিসেবে অথবা অযথাই কিছু চিবোতে মুখ চুলবুল করে উঠলে সারা বিশ্বে লোকে বাদামের দিকে হাত বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রে প্যাকেটজাত ভাজা চীনাবাদাম অত্যন্ত জনপ্রিয় স্ন্যাক্স। আর মার্কিনরা তার চেয়েও বেশি খেয়ে থাকে চীনাবাদামের মাখন বা পিনাট বাটার। এই পিনাট বাটার তাদের খাদ্য সংস্কৃতির সঙ্গে এতই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো যে, পিনাট বাটার স্যান্ডউইচ ছাড়া তাদের একদিনও চলে না। বিভিন্ন বিখ্যাত চকলেট ও ডেজার্টেও পিনাট বাটারের ব্যবহার রয়েছে। বিশ্বখ্যাত চকলেট বার স্নিকার্স, রিযেস কোম্পানির পিনাট বাটার চকলেট কাপ আর শিশুমোহনী রং-বেরঙের এম অ্যান্ড এম চকলেটের প্রধান উপাদানই হচ্ছে চীনাবাদাম। এই চকলেটগুলো বিশ্বজুড়ে অসম্ভব রকমের জনপ্রিয়।
চীনাবাদামের অনন্য পুষ্টিগুণ
যারা কম খরচে বেশি ক্যালোরিযুক্ত খাবার খুঁজছেন ভগ্নস্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে, চীনাবাদাম হতে পারে তাদের জন্য খুবই সহায়ক। ১০০ গ্রাম চীনাবাদাম প্রায় ৫৬৭ ক্যালোরি জোগান দিতে পারে শরীরে। এতে উদ্ভিজ্জ আমিষের পরিমাণও অবাক হওয়ার মতো। ১০০ গ্রাম মুরগির মাংসের সমপরিমাণ বাদামে থাকে প্রায় ২৫ দশমিক ৮ গ্রাম আমিষ। অথচ একই পরিমাণ ডালে এর চার ভাগের এক ভাগ আমিষ মেলে। এদিকে চীনাবাদামের সবচেয়ে বিশিষ্ট স্বাস্থ্যগুণ এর মনো স্যাচুরেটেড উপকারী চর্বির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে মনো স্যাচুরেটেড চর্বির পরিমাণ ২৪ দশমিক ৪৩ গ্রামের মতো।
আবার এতে শর্করা খুবই কম বলে কম শর্করাযুক্ত খাবার হিসেবে খাদ্যতালিকায় নিশ্চিন্তে স্থান করে নিতে পারে। ১০০ গ্রাম চীনাবাদামে আছে নামমাত্র ১৩-১৬ গ্রাম শর্করা।
জরুরি ভিটামিন আর মিনারেলের উৎকৃষ্ট উৎস
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, এতে আছে অনন্য সব ভিটামিন আর মিনারেলের সমাহার। বায়োটিন ধরনের ভিটামিন ‘বি’র ভালো প্রাকৃতিক উৎস এটি। চীনাবাদাম গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন বি৩ বা নিয়াসিনও আছে চীনাবাদামে পর্যাপ্ত পরিমাণে। গর্ভাবস্থায় ফোলেট বা ভিটামিন বি৯-এর জন্য প্রায়ই সাপ্লিমেন্ট খেতে হয় হবু মায়েদের। অথচ রোজ বিকেলে এক মুঠো চীনাবাদাম থেকেই মিলবে রোজকার দরকারি ফোলিক অ্যাসিড। ভিটামিন বি প্যান বা থিয়ামিনের শক্তিশালী জোগানদার এই চীনাবাদাম। এদিকে এতে ম্যাংগানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়ামের সঙ্গে আছে ভালো পরিমাণে ভিটামিন ই।
সুস্বাস্থ্যের জন্য চীনাবাদাম
আগেই বলা হয়েছে, নেট দুনিয়ায় যতই কাঁচা আর ভাজা বাদাম নিয়ে আলোচনা থিতিয়ে আসুক, এটি আমাদের স্বাস্থ্যবন্ধু। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিষয়টি।
ওজন নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
এত বেশি ক্যালোরি ও চর্বিযুক্ত একটি খাবার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে, তা শুনলে কিছুটা অবাকই হতে হয়। কিন্তু বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে চীনাবাদাম খেলে সঠিক ওজন রক্ষা করা যায়। ধারণা করা হয়, উপকারী তেল ও প্রোটিন আছে অথচ শর্করা নেই বলেই এমনটি হয়। এতে ক্যালোরি পোড়ানো বা ক্ষয় হয় সহজ। তা ছাড়া চীনাবাদাম খেলে পেট ভরা ভাব থাকে বেশ কিছুটা সময়।
হৃদ্যন্ত্রের যত্নে চীনাবাদাম
চীনাবাদামে হৃদ্যন্ত্রবান্ধব বেশ কিছু উপাদান আছে যথেষ্ট পরিমাণে। এর মধ্যে আছে ম্যাগনেশিয়াম, নিয়াসিন, কপার, ওলেইক অ্যাসিড ইত্যাদি। আবার চীনাবাদামে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তার মধ্যে রেজভেরাট্রল নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। এ ছাড়া, চীনাবাদামে মনো-স্যাচুরেটেড চর্বি বেশি থাকায় তা এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের জোগান বাড়িয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমিয়ে আনে। এতে হার্টের ব্লক, স্ট্রোকসহ অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো যায়।

পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ
পিত্তরসের কাজই হচ্ছে খাদ্যের চর্বিকে ভেঙে সরলীকরণ করা। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, পিত্তথলির পাথর মূলত জটিল গঠনের চর্বি দিয়েই তৈরি। তাই চীনাবাদামের কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষমতাই এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখে বলে গবেষকেরা মনে করেন।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে চীনাবাদাম
খুব দ্রুত রক্তে শর্করার লোড বাড়িয়ে দিতে পারে এমন খাবার বা পানীয়, যেমন—এক গ্লাস শরবত বা খানকয় লুচির সঙ্গে যদি কয়েকটি চীনাবাদাম চিবিয়ে নেওয়া যায়, তবে ডায়বেটিস পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, বাদামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। তাই খুব উচ্চ গ্লাইসেমিক লোডসম্পন্ন খাবার বা পানীয়ের ক্ষতিকর প্রভাব চীনাবাদাম কিছুটা হলেও কমিয়ে আনে।

চীনাবাদামের ক্যানসার প্রতিরোধক ভূমিকা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম খেলে ক্যানসার প্রতিরোধে তা একটি লক্ষণীয় ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে কোলোরেকটাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে এ কথা যথেষ্ট জোর দিয়ে বলা যায়। চীনাবাদামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন—আইফোনের, রেসভেরাট্রল ও ফেনোলিক অ্যাসিড ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাদাম কাঁচা হোক বা ভাজা, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে চীনাবাদামে কারও কারও মারাত্মক অ্যালার্জি হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই চীনাবাদাম চিবিয়ে একদিকে স্বাস্থ্যরক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে সুলভে সুস্বাদু কিছুর আস্বাদনও মিলে যাচ্ছে।
শিঙাড়ায় বাদামের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তর্কবিতর্ক চললেও চানাচুরে এর কদর আছে বেশ। তবে বালিতে ভাজা খোসাসহ বাদাম ছিলে ছিলে খাওয়ার মধ্যে একটা অন্যরকম ব্যাপার আছে।

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের ইউরোপের সেরা গন্তব্যের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। গত বছর এই তালিকায় সেরা দেশ হিসেবে গ্রিস সম্মাননা পেলেও আবার আবারও শিরোপা এসেছে পর্তুগালের কাছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পর্তুগাল মোট ছয়বার জিতেছে। এটি ছিল পুরস্কারের ৩২তম সংস্করণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
বিমান ভ্রমণ অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ওপর শারীরিক অস্বস্তি যোগ হলে তা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার খাদ্য ও পানীয়ের ওপর মনোযোগ দিলে এই যাত্রা অনেক বেশি আরামদায়ক হতে পারে। এমন কিছু খাবার ও অভ্যাস আছে, যা যাত্রার আগে এড়িয়ে চললে তুলনামূলকভাবে ভালো...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমরা সবাই জানি যে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠিক কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রায় ১৩ হাজার পারমাণবিক ওয়ারহেডের বৈশ্বিক মজুতের কারণে এর বিধ্বস্ততা হবে আরও ভয়াবহ। কাজ না থাকা অলস দুপুরে ঘরে বসে এ বিষয়ে ভাবতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না।
১৮ ঘণ্টা আগে
প্রাজক্তা কোলিকে এ প্রজন্মের তরুণীদের চিনতে না পারার কিছু নেই। ভারতীয় ইউটিউবার ও অভিনেত্রী প্রাজক্তা কোলি। তিনি আরও পরিচিত নেটফ্লিক্সের ‘মিসম্যাচড’ সিরিজের জন্য। প্রাজক্তা কোলি তার ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য রান্নাঘর থেকে উপকরণ নিয়ে ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। তাঁর ভাষ্য, এই উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য
২০ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের ইউরোপের সেরা গন্তব্যের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। গত বছর এই তালিকায় সেরা দেশ হিসেবে গ্রিস সম্মাননা পেলেও আবার আবারও শিরোপা এসেছে পর্তুগালের কাছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পর্তুগাল মোট ছয়বার জিতেছে। এটি ছিল পুরস্কারের ৩২তম সংস্করণ। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি ইতালির সার্ডিনিয়াতে অনুষ্ঠিত হয়।
এ বছর পর্তুগাল মোট ১২টি ইউরোপীয় অঞ্চলের মনোনীতদের পরাজিত করেছে। যার মধ্যে ছিল অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্ক। পর্যটন, বাণিজ্য ও পরিষেবা বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি পেড্রো মাচাদো এই সম্মানকে ‘পর্যটনকে আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভে পরিণত করা সব পেশাদারি কাজ, উৎসর্গ এবং গুণমানের প্রতিফলন’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, ট্যুরিজম দে পর্তুগালের সভাপতি কার্লোস আবাদ মন্তব্য করেন, এই পুরস্কার প্রমাণ করে যে ‘ইউরোপের সেরা পর্যটন গন্তব্যগুলোর মধ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পর্তুগালের দুর্দান্ত ক্ষমতা রয়েছে’। এটি দেশের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফসল।
পর্তুগালের আইকনিক গন্তব্য
পুরো দেশের পাশাপাশি পর্তুগালের একাধিক অঞ্চলও ২০২৫ সালের বিশ্ব ভ্রমণ পুরস্কারে স্বীকৃতি লাভ করেছে, যা দেশটির পর্যটন মানকে আরও দৃঢ় করেছে। যেমন—ইউরোপের সেরা দ্বীপ গন্তব্য হয়েছে মাদেইরা। মহাদেশের সেরা শহুরে গন্তব্য পোর্তো। শহর বিরতির জন্য সেরা স্থান হয়েছে লিসবন।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি:
হিউস্কা লা ম্যাজিয়া (স্পেন): অ্যাডভেঞ্চার পর্যটনের জন্য সেরা গন্তব্য হিসেবে আজোরসকে পেছনে ফেলেছে।
কোস্টা কারোনারিনো (গ্রিস: মহাদেশের বিচ হলিডেজের জন্য সেরা স্থান হিসেবে মনোনীত হয়।
বাতুমি (জর্জিয়া): বছরের ‘সব ঋতুর জন্য সেরা গন্তব্য’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ডুব্রোভনিক (ক্রোয়েশিয়া): টানা তৃতীয়বারের মতো ‘শীর্ষস্থানীয় ক্রুজ গন্তব্য’ হিসেবে নাম কুড়িয়েছে।

পর্তুগালের পর্যটন শক্তির মূল দিকগুলো
২০২৫ সালের এই স্বীকৃতি পর্তুগালের পর্যটন শিল্পের অবিচল প্রচেষ্টা এবং পেশাদারির সাক্ষ্য বহন করে। দেশটি ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের এক চমৎকার মিশ্রণ ঘটিয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে এটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পর্তুগালে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলোর প্রাচুর্য রয়েছে। যেমন—লিসবনের বেলেম টাওয়ার এবং ঐতিহাসিক পোর্তো শহর; যা ইতিহাসপ্রেমীদের আকর্ষণ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকেও এগিয়ে আছে দেশটি। আলগারভের সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু করে উত্তরের ডুরো ভ্যালি পর্যন্ত, পর্তুগাল বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্য প্রদান করে। মাদেইরার মতো দ্বীপগুলো অ্যাডভেঞ্চার এবং প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গরাজ্য। পর্তুগিজ খাবার বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশেষত, বাখালহাও (শুকনো লবণযুক্ত কডফিশ) এবং পাস্তেইস দে নাতা (কাস্টার্ড টার্ট) খাদ্যরসিকদের আকৃষ্ট করে।

লিসবন, পোর্তো ও মাদেইরার বিশেষত্ব
মাদেইরা: সেরা দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে দ্বিপটি। তার সুন্দর পর্বতমালা, উষ্ণ জলবায়ু এবং বিদেশি বাগানগুলোর জন্য বিখ্যাত। এটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য সারা বছরের গন্তব্য।
পোর্তো: এটি সেরা শহুরে গন্তব্য। যা ঐতিহাসিক রিবেইরা জেলা, বিখ্যাত ওয়াইন সেলার এবং ডুরো ভ্যালির নৈকট্যের কারণে পোর্তো উত্তর পর্তুগালের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
লিসবন: ঐতিহাসিক ট্রাম, আলফামার মতো প্রাণবন্ত পাড়া এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার মিশ্রণে লিসবন শহরের বিরতির জন্য একটি গতিশীল ও খাঁটি অভিজ্ঞতা দেয়।
ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি: টেকসই পর্যটন
পর্তুগালের এই সাফল্য টেকসই পর্যটনের প্রতি দেশটির অঙ্গীকারকেও তুলে ধরে। দেশটি পরিবেশগতভাবে দায়িত্বশীল ভ্রমণ বিকল্পগুলোতে মনোনিবেশ করছে, যাতে পর্যটন বৃদ্ধি হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষিত থাকে। পর্তুগালের এই ধারাবাহিক সাফল্য প্রমাণ করে যে সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং আধুনিকতাকে সঠিকভাবে মিশিয়ে কীভাবে একটি গন্তব্য বিশ্বমানের আকর্ষণ তৈরি করতে পারে।
সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ওয়ার্ল্ড

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের ইউরোপের সেরা গন্তব্যের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। গত বছর এই তালিকায় সেরা দেশ হিসেবে গ্রিস সম্মাননা পেলেও আবার আবারও শিরোপা এসেছে পর্তুগালের কাছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পর্তুগাল মোট ছয়বার জিতেছে। এটি ছিল পুরস্কারের ৩২তম সংস্করণ। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি ইতালির সার্ডিনিয়াতে অনুষ্ঠিত হয়।
এ বছর পর্তুগাল মোট ১২টি ইউরোপীয় অঞ্চলের মনোনীতদের পরাজিত করেছে। যার মধ্যে ছিল অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও তুরস্ক। পর্যটন, বাণিজ্য ও পরিষেবা বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি পেড্রো মাচাদো এই সম্মানকে ‘পর্যটনকে আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান স্তম্ভে পরিণত করা সব পেশাদারি কাজ, উৎসর্গ এবং গুণমানের প্রতিফলন’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, ট্যুরিজম দে পর্তুগালের সভাপতি কার্লোস আবাদ মন্তব্য করেন, এই পুরস্কার প্রমাণ করে যে ‘ইউরোপের সেরা পর্যটন গন্তব্যগুলোর মধ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার জন্য পর্তুগালের দুর্দান্ত ক্ষমতা রয়েছে’। এটি দেশের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফসল।
পর্তুগালের আইকনিক গন্তব্য
পুরো দেশের পাশাপাশি পর্তুগালের একাধিক অঞ্চলও ২০২৫ সালের বিশ্ব ভ্রমণ পুরস্কারে স্বীকৃতি লাভ করেছে, যা দেশটির পর্যটন মানকে আরও দৃঢ় করেছে। যেমন—ইউরোপের সেরা দ্বীপ গন্তব্য হয়েছে মাদেইরা। মহাদেশের সেরা শহুরে গন্তব্য পোর্তো। শহর বিরতির জন্য সেরা স্থান হয়েছে লিসবন।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি:
হিউস্কা লা ম্যাজিয়া (স্পেন): অ্যাডভেঞ্চার পর্যটনের জন্য সেরা গন্তব্য হিসেবে আজোরসকে পেছনে ফেলেছে।
কোস্টা কারোনারিনো (গ্রিস: মহাদেশের বিচ হলিডেজের জন্য সেরা স্থান হিসেবে মনোনীত হয়।
বাতুমি (জর্জিয়া): বছরের ‘সব ঋতুর জন্য সেরা গন্তব্য’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ডুব্রোভনিক (ক্রোয়েশিয়া): টানা তৃতীয়বারের মতো ‘শীর্ষস্থানীয় ক্রুজ গন্তব্য’ হিসেবে নাম কুড়িয়েছে।

পর্তুগালের পর্যটন শক্তির মূল দিকগুলো
২০২৫ সালের এই স্বীকৃতি পর্তুগালের পর্যটন শিল্পের অবিচল প্রচেষ্টা এবং পেশাদারির সাক্ষ্য বহন করে। দেশটি ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের এক চমৎকার মিশ্রণ ঘটিয়েছে, যা পর্যটকদের কাছে এটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পর্তুগালে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলোর প্রাচুর্য রয়েছে। যেমন—লিসবনের বেলেম টাওয়ার এবং ঐতিহাসিক পোর্তো শহর; যা ইতিহাসপ্রেমীদের আকর্ষণ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকেও এগিয়ে আছে দেশটি। আলগারভের সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু করে উত্তরের ডুরো ভ্যালি পর্যন্ত, পর্তুগাল বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্য প্রদান করে। মাদেইরার মতো দ্বীপগুলো অ্যাডভেঞ্চার এবং প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গরাজ্য। পর্তুগিজ খাবার বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশেষত, বাখালহাও (শুকনো লবণযুক্ত কডফিশ) এবং পাস্তেইস দে নাতা (কাস্টার্ড টার্ট) খাদ্যরসিকদের আকৃষ্ট করে।

লিসবন, পোর্তো ও মাদেইরার বিশেষত্ব
মাদেইরা: সেরা দ্বীপ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে দ্বিপটি। তার সুন্দর পর্বতমালা, উষ্ণ জলবায়ু এবং বিদেশি বাগানগুলোর জন্য বিখ্যাত। এটি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য সারা বছরের গন্তব্য।
পোর্তো: এটি সেরা শহুরে গন্তব্য। যা ঐতিহাসিক রিবেইরা জেলা, বিখ্যাত ওয়াইন সেলার এবং ডুরো ভ্যালির নৈকট্যের কারণে পোর্তো উত্তর পর্তুগালের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
লিসবন: ঐতিহাসিক ট্রাম, আলফামার মতো প্রাণবন্ত পাড়া এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার মিশ্রণে লিসবন শহরের বিরতির জন্য একটি গতিশীল ও খাঁটি অভিজ্ঞতা দেয়।
ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি: টেকসই পর্যটন
পর্তুগালের এই সাফল্য টেকসই পর্যটনের প্রতি দেশটির অঙ্গীকারকেও তুলে ধরে। দেশটি পরিবেশগতভাবে দায়িত্বশীল ভ্রমণ বিকল্পগুলোতে মনোনিবেশ করছে, যাতে পর্যটন বৃদ্ধি হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষিত থাকে। পর্তুগালের এই ধারাবাহিক সাফল্য প্রমাণ করে যে সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং আধুনিকতাকে সঠিকভাবে মিশিয়ে কীভাবে একটি গন্তব্য বিশ্বমানের আকর্ষণ তৈরি করতে পারে।
সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর ওয়ার্ল্ড

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা, এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সে ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদাম বিষয়টি আগেও যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
১৭ ডিসেম্বর ২০২১
বিমান ভ্রমণ অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ওপর শারীরিক অস্বস্তি যোগ হলে তা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার খাদ্য ও পানীয়ের ওপর মনোযোগ দিলে এই যাত্রা অনেক বেশি আরামদায়ক হতে পারে। এমন কিছু খাবার ও অভ্যাস আছে, যা যাত্রার আগে এড়িয়ে চললে তুলনামূলকভাবে ভালো...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমরা সবাই জানি যে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠিক কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রায় ১৩ হাজার পারমাণবিক ওয়ারহেডের বৈশ্বিক মজুতের কারণে এর বিধ্বস্ততা হবে আরও ভয়াবহ। কাজ না থাকা অলস দুপুরে ঘরে বসে এ বিষয়ে ভাবতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না।
১৮ ঘণ্টা আগে
প্রাজক্তা কোলিকে এ প্রজন্মের তরুণীদের চিনতে না পারার কিছু নেই। ভারতীয় ইউটিউবার ও অভিনেত্রী প্রাজক্তা কোলি। তিনি আরও পরিচিত নেটফ্লিক্সের ‘মিসম্যাচড’ সিরিজের জন্য। প্রাজক্তা কোলি তার ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য রান্নাঘর থেকে উপকরণ নিয়ে ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। তাঁর ভাষ্য, এই উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য
২০ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বিমান ভ্রমণ অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ওপর শারীরিক অস্বস্তি যোগ হলে তা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার খাদ্য ও পানীয়ের ওপর মনোযোগ দিলে এই যাত্রা অনেক বেশি আরামদায়ক হতে পারে। এমন কিছু খাবার ও অভ্যাস আছে, যা যাত্রার আগে এড়িয়ে চললে তুলনামূলকভাবে ভালো একটি যাত্রা পাওয়া সম্ভব।
খাবারের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়
গ্যাস সৃষ্টিকারী ও ফোলাভাবের জন্য দায়ী খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কারণ, পেট ফাঁপা ও অস্বস্তি এড়াতে কিছু খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলা জরুরি। গ্যাস সৃষ্টিকারী খাবার পরিহার করুন। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের চিকিৎসক ও নিবন্ধিত খাদ্য বিশেষজ্ঞ মাররা বারোজ পরামর্শ দেন যে, সাধারণত গ্যাস উৎপাদনের জন্য পরিচিত খাবারগুলো ভ্রমণকালে এড়িয়ে চলাই ভালো। শিম, মসুর ডাল (অধিকাংশ শস্যদানা) এবং ক্রুসিফেরাস সবজি যেমন বাঁধাকপি, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, ফুলকপি ও ব্রকলি এড়িয়ে চলুন। কারণ, এই খাবারগুলো থেকে সৃষ্ট ফোলাভাব, গ্যাস ও পেটের খিঁচুনি উড়ানের সময় চাপের পরিবর্তনের কারণে আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চললে অস্বস্তি ও বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।
কার্বনেটেড পানীয়
হোলিস্টিক পুষ্টিবিদ অ্যাম্বার অ্যাটেল উড়ানের সময় মিষ্টি সোডা বা অন্যান্য ফিজযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। কারণ, বিমান চলার সময় নিম্নচাপের কারণে এমনিতেই শরীরে ফোলাভাব হতে পারে আর কার্বনেটেড পানীয় পেটের ভেতরের সেই গ্যাসের চাপকে আরও বাড়িয়ে দেয়, যা প্রচণ্ড অস্বস্তির সৃষ্টি করে।
উচ্চ সোডিয়াম ও চিনিযুক্ত খাবার
বিমানবন্দরের সহজলভ্য চিপস ও নোনতা বাদামের মতন স্ন্যাকসগুলোও এড়িয়ে চলতে হবে। খাদ্য বিশেষজ্ঞ বারোজ জানান, ভ্রমণের সময় অনেকের পায়ে ফোলাভাব দেখা দেয়। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ এই ফোলাভাবকে আরও খারাপ করে তোলে। মিষ্টি কিছু খাওয়ার লোভ সামলে নিন। এ বিষয়ে বারোজ বলেন, অতিরিক্ত চিনি বা সাধারণ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার (যা অন্য কোনো ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট দ্বারা ভারসাম্যপূর্ণ নয়) খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি কমে আসে এবং ক্লান্তি বাড়ে। যদি মিষ্টি খেতেই হয়, তবে তা চর্বি ও প্রোটিনের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
অ্যালকোহল ও কফি
ফাংশনাল ডায়াগনস্টিক নিউট্রিশন প্র্যাকটিশনার এলিজাবেথ কাটজম্যান এই দুটি জনপ্রিয় পানীয় বর্জন করার পরামর্শ দেন। কারণ, কেবিনের শুষ্ক বাতাস এমনিতেই শরীর থেকে আর্দ্রতা টেনে নেয় আর অ্যালকোহল ও কফি এই পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ডায়েটিশিয়ান ফিওরেলা ডিকার্লো পরামর্শ দেন, বিমানে অ্যালকোহল পান করলে ডিহাইড্রেশন ছাড়াও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে। পাশাপাশি হৃদ্স্পন্দন বাড়তে পারে। এর ফলে ঘুম ব্যাহত হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এবং জেট ল্যাগ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

ট্যাপের পানি
বিমান থেকে সরবরাহ করা পানি বা বরফ পান করা উচিত নয়। কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির পুষ্টি বিভাগের চেয়ার হোপ বারকোউইস নিশ্চিত করেছেন যে, বিমানের পানির ট্যাংকগুলো কখনোই জীবাণুমুক্ত পরিবেশের জন্য পুরস্কৃত হয় না। এর পরিবর্তে, সিল করা ও ব্যক্তিগত বোতলজাত পানি পানের পরামর্শ দেন তিনি।
আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য সেরা বিকল্প
যদিও অনেক কিছু এড়িয়ে চলার তালিকা রয়েছে, তবুও এমন অনেক স্ন্যাকস আছে, যা আপনি উপভোগ করতে পারেন এবং যা আপনাকে নতুন গন্তব্যে দ্রুত সচল হতে সাহায্য করবে। যেমন প্রোটিনভিত্তিক স্ন্যাকস বিশেষজ্ঞরা এমন স্ন্যাকস নেওয়ার পরামর্শ দেন, যা প্রোটিন-প্রধান এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। লবণ ছাড়া বাদাম যেমন আমন্ড, কাজু, পেস্তা, গ্রিক ইয়োগার্ট, শুকনো মাংসের স্টিক, নাট বাটার ও হুমাস, এগুলো খেতে পারেন।

আর্দ্রতাদানকারী ও সহজে হজমযোগ্য খাবার
অ্যাম্বার অ্যাটেল পরামর্শ দেন, উড়ানের আগে ও চলাকালে সহজে হজমযোগ্য ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। তাজা ফল, সবুজ শাকসবজি, হার্বাল চা ও সাধারণ গোটা খাবারের স্ন্যাকস আপনার সিস্টেমকে হালকা ও সতেজ রাখে। শসা, সেলারি বা আপেলের টুকরাগুলোর সঙ্গে এক মুঠো কাঁচা বাদাম খেতে পারেন। আর সারাক্ষণ পানি পান করা জরুরি। উড়ানের সময় পানি বা মিষ্টি ছাড়া নারকেলের পানি পান করলে অনেক পার্থক্য দেখা যায়।
খালি পেটে যাত্রা নয়
তালিকা দেখে হয়তো মনে হতে পারে, খালি পেটে থাকাটাই ভালো। কিন্তু রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান হান্না থম্পসনের পরামর্শ অনুযায়ী, যাত্রাপথে কিছু খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উড়ান চাপযুক্ত হতে পারে এবং ভুল জিনিস খাওয়ার ভয়ে বা খাবারের সীমাবদ্ধতার কারণে খাবার এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় না খেলে ক্লান্তি বাড়ে এবং দীর্ঘ যাত্রার পরে শরীর পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

বিমান ভ্রমণ অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ওপর শারীরিক অস্বস্তি যোগ হলে তা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার খাদ্য ও পানীয়ের ওপর মনোযোগ দিলে এই যাত্রা অনেক বেশি আরামদায়ক হতে পারে। এমন কিছু খাবার ও অভ্যাস আছে, যা যাত্রার আগে এড়িয়ে চললে তুলনামূলকভাবে ভালো একটি যাত্রা পাওয়া সম্ভব।
খাবারের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়
গ্যাস সৃষ্টিকারী ও ফোলাভাবের জন্য দায়ী খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কারণ, পেট ফাঁপা ও অস্বস্তি এড়াতে কিছু খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলা জরুরি। গ্যাস সৃষ্টিকারী খাবার পরিহার করুন। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের চিকিৎসক ও নিবন্ধিত খাদ্য বিশেষজ্ঞ মাররা বারোজ পরামর্শ দেন যে, সাধারণত গ্যাস উৎপাদনের জন্য পরিচিত খাবারগুলো ভ্রমণকালে এড়িয়ে চলাই ভালো। শিম, মসুর ডাল (অধিকাংশ শস্যদানা) এবং ক্রুসিফেরাস সবজি যেমন বাঁধাকপি, ব্রাসেলস স্প্রাউটস, ফুলকপি ও ব্রকলি এড়িয়ে চলুন। কারণ, এই খাবারগুলো থেকে সৃষ্ট ফোলাভাব, গ্যাস ও পেটের খিঁচুনি উড়ানের সময় চাপের পরিবর্তনের কারণে আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চললে অস্বস্তি ও বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।
কার্বনেটেড পানীয়
হোলিস্টিক পুষ্টিবিদ অ্যাম্বার অ্যাটেল উড়ানের সময় মিষ্টি সোডা বা অন্যান্য ফিজযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। কারণ, বিমান চলার সময় নিম্নচাপের কারণে এমনিতেই শরীরে ফোলাভাব হতে পারে আর কার্বনেটেড পানীয় পেটের ভেতরের সেই গ্যাসের চাপকে আরও বাড়িয়ে দেয়, যা প্রচণ্ড অস্বস্তির সৃষ্টি করে।
উচ্চ সোডিয়াম ও চিনিযুক্ত খাবার
বিমানবন্দরের সহজলভ্য চিপস ও নোনতা বাদামের মতন স্ন্যাকসগুলোও এড়িয়ে চলতে হবে। খাদ্য বিশেষজ্ঞ বারোজ জানান, ভ্রমণের সময় অনেকের পায়ে ফোলাভাব দেখা দেয়। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ এই ফোলাভাবকে আরও খারাপ করে তোলে। মিষ্টি কিছু খাওয়ার লোভ সামলে নিন। এ বিষয়ে বারোজ বলেন, অতিরিক্ত চিনি বা সাধারণ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার (যা অন্য কোনো ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট দ্বারা ভারসাম্যপূর্ণ নয়) খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি কমে আসে এবং ক্লান্তি বাড়ে। যদি মিষ্টি খেতেই হয়, তবে তা চর্বি ও প্রোটিনের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
অ্যালকোহল ও কফি
ফাংশনাল ডায়াগনস্টিক নিউট্রিশন প্র্যাকটিশনার এলিজাবেথ কাটজম্যান এই দুটি জনপ্রিয় পানীয় বর্জন করার পরামর্শ দেন। কারণ, কেবিনের শুষ্ক বাতাস এমনিতেই শরীর থেকে আর্দ্রতা টেনে নেয় আর অ্যালকোহল ও কফি এই পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ডায়েটিশিয়ান ফিওরেলা ডিকার্লো পরামর্শ দেন, বিমানে অ্যালকোহল পান করলে ডিহাইড্রেশন ছাড়াও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে। পাশাপাশি হৃদ্স্পন্দন বাড়তে পারে। এর ফলে ঘুম ব্যাহত হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এবং জেট ল্যাগ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

ট্যাপের পানি
বিমান থেকে সরবরাহ করা পানি বা বরফ পান করা উচিত নয়। কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির পুষ্টি বিভাগের চেয়ার হোপ বারকোউইস নিশ্চিত করেছেন যে, বিমানের পানির ট্যাংকগুলো কখনোই জীবাণুমুক্ত পরিবেশের জন্য পুরস্কৃত হয় না। এর পরিবর্তে, সিল করা ও ব্যক্তিগত বোতলজাত পানি পানের পরামর্শ দেন তিনি।
আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য সেরা বিকল্প
যদিও অনেক কিছু এড়িয়ে চলার তালিকা রয়েছে, তবুও এমন অনেক স্ন্যাকস আছে, যা আপনি উপভোগ করতে পারেন এবং যা আপনাকে নতুন গন্তব্যে দ্রুত সচল হতে সাহায্য করবে। যেমন প্রোটিনভিত্তিক স্ন্যাকস বিশেষজ্ঞরা এমন স্ন্যাকস নেওয়ার পরামর্শ দেন, যা প্রোটিন-প্রধান এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। লবণ ছাড়া বাদাম যেমন আমন্ড, কাজু, পেস্তা, গ্রিক ইয়োগার্ট, শুকনো মাংসের স্টিক, নাট বাটার ও হুমাস, এগুলো খেতে পারেন।

আর্দ্রতাদানকারী ও সহজে হজমযোগ্য খাবার
অ্যাম্বার অ্যাটেল পরামর্শ দেন, উড়ানের আগে ও চলাকালে সহজে হজমযোগ্য ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। তাজা ফল, সবুজ শাকসবজি, হার্বাল চা ও সাধারণ গোটা খাবারের স্ন্যাকস আপনার সিস্টেমকে হালকা ও সতেজ রাখে। শসা, সেলারি বা আপেলের টুকরাগুলোর সঙ্গে এক মুঠো কাঁচা বাদাম খেতে পারেন। আর সারাক্ষণ পানি পান করা জরুরি। উড়ানের সময় পানি বা মিষ্টি ছাড়া নারকেলের পানি পান করলে অনেক পার্থক্য দেখা যায়।
খালি পেটে যাত্রা নয়
তালিকা দেখে হয়তো মনে হতে পারে, খালি পেটে থাকাটাই ভালো। কিন্তু রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান হান্না থম্পসনের পরামর্শ অনুযায়ী, যাত্রাপথে কিছু খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উড়ান চাপযুক্ত হতে পারে এবং ভুল জিনিস খাওয়ার ভয়ে বা খাবারের সীমাবদ্ধতার কারণে খাবার এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় না খেলে ক্লান্তি বাড়ে এবং দীর্ঘ যাত্রার পরে শরীর পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
সূত্র: ট্রাভেল+লিজার

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা, এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সে ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদাম বিষয়টি আগেও যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
১৭ ডিসেম্বর ২০২১
ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের ইউরোপের সেরা গন্তব্যের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। গত বছর এই তালিকায় সেরা দেশ হিসেবে গ্রিস সম্মাননা পেলেও আবার আবারও শিরোপা এসেছে পর্তুগালের কাছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পর্তুগাল মোট ছয়বার জিতেছে। এটি ছিল পুরস্কারের ৩২তম সংস্করণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
আমরা সবাই জানি যে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠিক কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রায় ১৩ হাজার পারমাণবিক ওয়ারহেডের বৈশ্বিক মজুতের কারণে এর বিধ্বস্ততা হবে আরও ভয়াবহ। কাজ না থাকা অলস দুপুরে ঘরে বসে এ বিষয়ে ভাবতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না।
১৮ ঘণ্টা আগে
প্রাজক্তা কোলিকে এ প্রজন্মের তরুণীদের চিনতে না পারার কিছু নেই। ভারতীয় ইউটিউবার ও অভিনেত্রী প্রাজক্তা কোলি। তিনি আরও পরিচিত নেটফ্লিক্সের ‘মিসম্যাচড’ সিরিজের জন্য। প্রাজক্তা কোলি তার ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য রান্নাঘর থেকে উপকরণ নিয়ে ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। তাঁর ভাষ্য, এই উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য
২০ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আমরা সবাই জানি যে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠিক কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রায় ১৩ হাজার পারমাণবিক ওয়ারহেডের বৈশ্বিক মজুতের কারণে এর বিধ্বস্ততা হবে আরও ভয়াবহ। কাজ না থাকা অলস দুপুরে ঘরে বসে এ বিষয়ে ভাবতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না। তবে হ্যাঁ পারমাণবিক মহাপ্রলয় এলে বেঁচে থাকার জন্য কোন দেশগুলো সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকবে—এ সম্পর্কে জেনে রাখাই যায়। রিস্ক এনালাইসিস নামক একটি জার্নাল সম্প্রতি জানিয়েছে একটি গবেষণার ফলাফল। তারা সেখানে কিছু দ্বীপ দেশকে চিহ্নিত করেছে—যা পারমাণবিক যুদ্ধ, সুপার আগ্নেয়গিরি বা গ্রহাণুর আঘাতের মতো ‘সূর্যালোক হঠাৎ হ্রাসকারী বিপর্যয়’-এর পরেও তাদের জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন চালিয়ে যেতে সক্ষম।

পারমাণবিক যুদ্ধের উদ্বেগ ও ভয়াবহ পরিণতি
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু এবং পরবর্তী ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার পর থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, একটি পারমাণবিক সংঘাত মানবতা এবং গ্রহের জন্য কী পরিণতি নিয়ে আসবে।
বিপর্যয়কর পরিণতি: একটি পারমাণবিক সংঘাতের সরাসরি বিস্ফোরণে প্রাথমিক মৃত্যু থেকে শুরু করে বিকিরণের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পর্যন্ত ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।
ব্যাপক প্রযুক্তিগত পতন: এমনকি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হয়, এমন স্থানগুলোতেও প্রযুক্তির পতন ঘটবে। এটি সহযোগিতা, সমন্বয় এবং স্থিতিস্থাপক খাদ্য উৎপাদনে মারাত্মকভাবে বাধা দেবে।
দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ ফল: ৬৩ শতাংশ জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষে মারা যাবে। রাটগার্স ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা অনুসারে, একটি পূর্ণমাত্রার পারমাণবিক যুদ্ধের পরে পাঁচ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যাবে। যা বিশ্বের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ৬৩ শতাংশ।
খাদ্য উৎপাদন হ্রাস: পারমাণবিক যুদ্ধে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য উৎপাদন ৯৭ শতাংশ হ্রাস হবে।
বেঁচে থাকা মানুষ: সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও বিশ্বজুড়ে বেঁচে যাওয়া মানুষ থাকবে বলে মনে করা হয়।
বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে স্থিতিস্থাপক দেশ
'রিস্ক অ্যানালাইসিস'-এ প্রকাশিত গবেষণাটি ৩৮টি দ্বীপ দেশকে ১৩টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে তুলনা করেছে। এই দেশগুলো একটি মহাপ্রলয়ের পরের বেঁচে থাকার রাজ্যের সাফল্যের পূর্বাভাস দিতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে খাদ্য উৎপাদন, শক্তির স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উৎপাদন এবং জলবায়ুর ওপর বিপর্যয়ের প্রভাব। সূর্যালোক হঠাৎ হ্রাসকারী বিপর্যয়ের পরেও এই দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।

বেঁচে থাকার সম্ভাবনার ভিত্তিতে দেশের তালিকা
অস্ট্রেলিয়া: এই তালিকায় প্রথমেই আছে অস্ট্রেলিয়া। খাদ্য সরবরাহের বিশাল বাফার এই দেশটি। এখানে আছে কোটি কোটি অতিরিক্ত মানুষকে খাওয়ানোর সম্ভাবনা। ভালো অবকাঠামো, বিশাল শক্তির উদ্বৃত্ত, উচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা বাজেট দেশটিকে সম্ভাবনাময় করে তোলে। তবে কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক এই দেশটিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক যুদ্ধের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

নিউজিল্যান্ড: তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নিউজিল্যান্ড। পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তু থেকে দূরত্ব এবং দীর্ঘস্থায়ী পারমাণবিক-মুক্ত মর্যাদা এ দেশটিকে সুরক্ষিত রাখবে। একে চরম তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করে সমুদ্রের নৈকট্য। কার্যকর খাদ্য রপ্তানি অর্থনীতি তাদের জনসংখ্যাকে একাধিকবার খাওয়াতে পারে। এমনকি ফসলের ৬১ শতাংশ হ্রাস হলেও সেখানে পর্যাপ্ত খাদ্য থাকবে।

আইসল্যান্ড: এই তালিকায় স্থান পাওয়া উত্তর গোলার্ধের একমাত্র দেশ আইসল্যান্ড। দেশটির দূরত্বের কারণে সবচেয়ে পারমাণবিক যুদ্ধ অঞ্চলের মধ্যে একটি নিরাপদ দেশ। তবে ছোট অর্থনীতির কারণে এটি আমদানিকৃত পণ্য এবং অবকাঠামো পতনে ভুগতে পারে।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু: তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে আছে যথাক্রমে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ভূগোল এবং সাধারণ সময়ে প্রচুর খাদ্য উৎপাদন দেশটিকে সুরক্ষিত রাখে। উচ্চপ্রযুক্তিগত উৎপাদন ও জ্ঞান অর্থনীতির অভাব দেশগুলোর পুনরুদ্ধার কঠিন করে তুলবে। তবে, প্রতিবেশী বেঁচে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে তারা বাণিজ্যে অংশ নিতে পারে।
অন্যান্য দেশ: এরপরেই আছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও মরিশাস। পারমাণবিক যুদ্ধের পরে তাদের জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্যের সম্ভাবনা। দুর্নীতি এবং সামাজিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাস তাদের স্থিতিস্থাপকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রিস্ক অ্যানালাইসিস

আমরা সবাই জানি যে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠিক কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রায় ১৩ হাজার পারমাণবিক ওয়ারহেডের বৈশ্বিক মজুতের কারণে এর বিধ্বস্ততা হবে আরও ভয়াবহ। কাজ না থাকা অলস দুপুরে ঘরে বসে এ বিষয়ে ভাবতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না। তবে হ্যাঁ পারমাণবিক মহাপ্রলয় এলে বেঁচে থাকার জন্য কোন দেশগুলো সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকবে—এ সম্পর্কে জেনে রাখাই যায়। রিস্ক এনালাইসিস নামক একটি জার্নাল সম্প্রতি জানিয়েছে একটি গবেষণার ফলাফল। তারা সেখানে কিছু দ্বীপ দেশকে চিহ্নিত করেছে—যা পারমাণবিক যুদ্ধ, সুপার আগ্নেয়গিরি বা গ্রহাণুর আঘাতের মতো ‘সূর্যালোক হঠাৎ হ্রাসকারী বিপর্যয়’-এর পরেও তাদের জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন চালিয়ে যেতে সক্ষম।

পারমাণবিক যুদ্ধের উদ্বেগ ও ভয়াবহ পরিণতি
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু এবং পরবর্তী ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার পর থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, একটি পারমাণবিক সংঘাত মানবতা এবং গ্রহের জন্য কী পরিণতি নিয়ে আসবে।
বিপর্যয়কর পরিণতি: একটি পারমাণবিক সংঘাতের সরাসরি বিস্ফোরণে প্রাথমিক মৃত্যু থেকে শুরু করে বিকিরণের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পর্যন্ত ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।
ব্যাপক প্রযুক্তিগত পতন: এমনকি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হয়, এমন স্থানগুলোতেও প্রযুক্তির পতন ঘটবে। এটি সহযোগিতা, সমন্বয় এবং স্থিতিস্থাপক খাদ্য উৎপাদনে মারাত্মকভাবে বাধা দেবে।
দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ ফল: ৬৩ শতাংশ জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষে মারা যাবে। রাটগার্স ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা অনুসারে, একটি পূর্ণমাত্রার পারমাণবিক যুদ্ধের পরে পাঁচ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যাবে। যা বিশ্বের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ৬৩ শতাংশ।
খাদ্য উৎপাদন হ্রাস: পারমাণবিক যুদ্ধে চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য উৎপাদন ৯৭ শতাংশ হ্রাস হবে।
বেঁচে থাকা মানুষ: সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও বিশ্বজুড়ে বেঁচে যাওয়া মানুষ থাকবে বলে মনে করা হয়।
বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে স্থিতিস্থাপক দেশ
'রিস্ক অ্যানালাইসিস'-এ প্রকাশিত গবেষণাটি ৩৮টি দ্বীপ দেশকে ১৩টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে তুলনা করেছে। এই দেশগুলো একটি মহাপ্রলয়ের পরের বেঁচে থাকার রাজ্যের সাফল্যের পূর্বাভাস দিতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে খাদ্য উৎপাদন, শক্তির স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উৎপাদন এবং জলবায়ুর ওপর বিপর্যয়ের প্রভাব। সূর্যালোক হঠাৎ হ্রাসকারী বিপর্যয়ের পরেও এই দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।

বেঁচে থাকার সম্ভাবনার ভিত্তিতে দেশের তালিকা
অস্ট্রেলিয়া: এই তালিকায় প্রথমেই আছে অস্ট্রেলিয়া। খাদ্য সরবরাহের বিশাল বাফার এই দেশটি। এখানে আছে কোটি কোটি অতিরিক্ত মানুষকে খাওয়ানোর সম্ভাবনা। ভালো অবকাঠামো, বিশাল শক্তির উদ্বৃত্ত, উচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা বাজেট দেশটিকে সম্ভাবনাময় করে তোলে। তবে কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক এই দেশটিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক যুদ্ধের লক্ষ্যবস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

নিউজিল্যান্ড: তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে নিউজিল্যান্ড। পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তু থেকে দূরত্ব এবং দীর্ঘস্থায়ী পারমাণবিক-মুক্ত মর্যাদা এ দেশটিকে সুরক্ষিত রাখবে। একে চরম তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করে সমুদ্রের নৈকট্য। কার্যকর খাদ্য রপ্তানি অর্থনীতি তাদের জনসংখ্যাকে একাধিকবার খাওয়াতে পারে। এমনকি ফসলের ৬১ শতাংশ হ্রাস হলেও সেখানে পর্যাপ্ত খাদ্য থাকবে।

আইসল্যান্ড: এই তালিকায় স্থান পাওয়া উত্তর গোলার্ধের একমাত্র দেশ আইসল্যান্ড। দেশটির দূরত্বের কারণে সবচেয়ে পারমাণবিক যুদ্ধ অঞ্চলের মধ্যে একটি নিরাপদ দেশ। তবে ছোট অর্থনীতির কারণে এটি আমদানিকৃত পণ্য এবং অবকাঠামো পতনে ভুগতে পারে।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু: তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে আছে যথাক্রমে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ভানুয়াতু। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ভূগোল এবং সাধারণ সময়ে প্রচুর খাদ্য উৎপাদন দেশটিকে সুরক্ষিত রাখে। উচ্চপ্রযুক্তিগত উৎপাদন ও জ্ঞান অর্থনীতির অভাব দেশগুলোর পুনরুদ্ধার কঠিন করে তুলবে। তবে, প্রতিবেশী বেঁচে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে তারা বাণিজ্যে অংশ নিতে পারে।
অন্যান্য দেশ: এরপরেই আছে ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও মরিশাস। পারমাণবিক যুদ্ধের পরে তাদের জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্যের সম্ভাবনা। দুর্নীতি এবং সামাজিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাস তাদের স্থিতিস্থাপকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রিস্ক অ্যানালাইসিস

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা, এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সে ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদাম বিষয়টি আগেও যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
১৭ ডিসেম্বর ২০২১
ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের ইউরোপের সেরা গন্তব্যের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। গত বছর এই তালিকায় সেরা দেশ হিসেবে গ্রিস সম্মাননা পেলেও আবার আবারও শিরোপা এসেছে পর্তুগালের কাছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পর্তুগাল মোট ছয়বার জিতেছে। এটি ছিল পুরস্কারের ৩২তম সংস্করণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
বিমান ভ্রমণ অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ওপর শারীরিক অস্বস্তি যোগ হলে তা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার খাদ্য ও পানীয়ের ওপর মনোযোগ দিলে এই যাত্রা অনেক বেশি আরামদায়ক হতে পারে। এমন কিছু খাবার ও অভ্যাস আছে, যা যাত্রার আগে এড়িয়ে চললে তুলনামূলকভাবে ভালো...
১৪ ঘণ্টা আগে
প্রাজক্তা কোলিকে এ প্রজন্মের তরুণীদের চিনতে না পারার কিছু নেই। ভারতীয় ইউটিউবার ও অভিনেত্রী প্রাজক্তা কোলি। তিনি আরও পরিচিত নেটফ্লিক্সের ‘মিসম্যাচড’ সিরিজের জন্য। প্রাজক্তা কোলি তার ত্বকের সমস্যা সমাধানের জন্য রান্নাঘর থেকে উপকরণ নিয়ে ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। তাঁর ভাষ্য, এই উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য
২০ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

প্রাজক্তা কোলিকে এ প্রজন্মের তরুণীদের চিনতে না পারার কিছু নেই। ভারতীয় ইউটিউবার ও অভিনেত্রী প্রাজক্তা কোলি। তিনি আরও পরিচিত নেটফ্লিক্সের ‘মিসম্যাচড’ সিরিজের জন্য। প্রাজক্তা কোলি তাঁর ত্বকের সমস্যার সমাধানে রান্নাঘর থেকে উপকরণ নিয়ে ব্যবহার করতেই বেশি পছন্দ করেন। তাঁর ভাষ্য, এই উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য ঘরোয়া উপাদানে তৈরি এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব ও প্যাক।
যদিও বাজারে হালের প্রচুর স্কিন কেয়ার পণ্য পাওয়া যায়, তবু প্রকৃতিপ্রদত্ত উপাদানই তাঁর ভরসা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রাজক্তা কোলির স্কিন কেয়ার সিক্রেট
গালফ নিউজের সঙ্গে একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে প্রাজক্তা কোলি কী করে ঘরোয়া উপাদানে ত্বকের যত্ন নেন, সে কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ত্বকের জন্য জাদুকরের মতো কাজ করে এমন একটি প্যাক হচ্ছে বেসন, হলুদ, দই ও মধু।’ এসব উপকরণে তৈরি পেস্ট মুখে লাগান তিনি। কখনো বেসনের পরিবর্তে চালের গুঁড়াও ব্যবহার করেন। এটিও নাকি জাদুর মতো কাজ করে। প্রাজক্তার ভাষায়, এটিই তাঁর জীবনে ব্যবহৃত সেরা স্ক্রাব।
প্রাজক্তা ত্বকযত্নে যেসব উপাদান ব্যবহার করেন, সেগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন—
বেসন
প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ বেসন ত্বকে পুষ্টি জোগায়। ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বেসন ব্রণ নিরাময়ে, ট্যান দূর করতে এবং মৃত ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করতে পারে।
হলুদ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ও প্রদাহনাশক হওয়ায় হলুদ ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদে থাকা কারকিউমিন নামক উপাদান ব্রণ, কালো দাগ এবং ত্বকের নিস্তেজ ভাব দূর করতে সাহায্য় করে। ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতেও হলুদ খুব ভালো কাজ করে।
টক দই
ত্বক আর্দ্র রাখতে, উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে, অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করতে, স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে, বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এই টক দই।

মধু
মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এ ছাড়া মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বককে হাইড্রেট করতে, ব্রণ দূর করতে এবং ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর করতে সহায়তা করে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ডার্মাটোলজির মতে, মধু যেকোনো ত্বকের যত্নের রুটিনে একটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে এবং এটি এটোপিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস ইত্যাদি ত্বকের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।
প্রাজক্তা কোলির মতো আপনারও কি এই প্যাক ব্যবহার করা উচিত?
যেহেতু এই প্যাকে ব্যবহৃত সব উপাদান ত্বকের জন্য ভালো। তাই এটি ত্বক পরিষ্কার, এক্সফোলিয়েট এবং উজ্জ্বল করার জন্য একটি কার্যকর মুখের প্যাক হয়ে উঠতে পারে।
যদিও এসব উপাদান একেবারেই প্রাকৃতিক। তবু প্রথমবার ব্যবহার করার আগে ত্বকবিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে তারপর ব্যবহার করাই নিরাপদ।
সূত্র: এনডিটিভি

প্রাজক্তা কোলিকে এ প্রজন্মের তরুণীদের চিনতে না পারার কিছু নেই। ভারতীয় ইউটিউবার ও অভিনেত্রী প্রাজক্তা কোলি। তিনি আরও পরিচিত নেটফ্লিক্সের ‘মিসম্যাচড’ সিরিজের জন্য। প্রাজক্তা কোলি তাঁর ত্বকের সমস্যার সমাধানে রান্নাঘর থেকে উপকরণ নিয়ে ব্যবহার করতেই বেশি পছন্দ করেন। তাঁর ভাষ্য, এই উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য ঘরোয়া উপাদানে তৈরি এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব ও প্যাক।
যদিও বাজারে হালের প্রচুর স্কিন কেয়ার পণ্য পাওয়া যায়, তবু প্রকৃতিপ্রদত্ত উপাদানই তাঁর ভরসা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রাজক্তা কোলির স্কিন কেয়ার সিক্রেট
গালফ নিউজের সঙ্গে একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে প্রাজক্তা কোলি কী করে ঘরোয়া উপাদানে ত্বকের যত্ন নেন, সে কথাই বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ত্বকের জন্য জাদুকরের মতো কাজ করে এমন একটি প্যাক হচ্ছে বেসন, হলুদ, দই ও মধু।’ এসব উপকরণে তৈরি পেস্ট মুখে লাগান তিনি। কখনো বেসনের পরিবর্তে চালের গুঁড়াও ব্যবহার করেন। এটিও নাকি জাদুর মতো কাজ করে। প্রাজক্তার ভাষায়, এটিই তাঁর জীবনে ব্যবহৃত সেরা স্ক্রাব।
প্রাজক্তা ত্বকযত্নে যেসব উপাদান ব্যবহার করেন, সেগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন—
বেসন
প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ বেসন ত্বকে পুষ্টি জোগায়। ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বেসন ব্রণ নিরাময়ে, ট্যান দূর করতে এবং মৃত ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করতে পারে।
হলুদ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ও প্রদাহনাশক হওয়ায় হলুদ ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদে থাকা কারকিউমিন নামক উপাদান ব্রণ, কালো দাগ এবং ত্বকের নিস্তেজ ভাব দূর করতে সাহায্য় করে। ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতেও হলুদ খুব ভালো কাজ করে।
টক দই
ত্বক আর্দ্র রাখতে, উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে, অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করতে, স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে, বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এই টক দই।

মধু
মধু প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার। এ ছাড়া মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বককে হাইড্রেট করতে, ব্রণ দূর করতে এবং ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর করতে সহায়তা করে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ডার্মাটোলজির মতে, মধু যেকোনো ত্বকের যত্নের রুটিনে একটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে এবং এটি এটোপিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস ইত্যাদি ত্বকের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।
প্রাজক্তা কোলির মতো আপনারও কি এই প্যাক ব্যবহার করা উচিত?
যেহেতু এই প্যাকে ব্যবহৃত সব উপাদান ত্বকের জন্য ভালো। তাই এটি ত্বক পরিষ্কার, এক্সফোলিয়েট এবং উজ্জ্বল করার জন্য একটি কার্যকর মুখের প্যাক হয়ে উঠতে পারে।
যদিও এসব উপাদান একেবারেই প্রাকৃতিক। তবু প্রথমবার ব্যবহার করার আগে ত্বকবিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে তারপর ব্যবহার করাই নিরাপদ।
সূত্র: এনডিটিভি

এই কয়েক দিন আগেও বাদাম কাঁচা খাওয়া হবে, নাকি ভাজা, এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা ছিল উত্তাল। সে ঝড় কিছুটা থিতু হলেও বাদামের জনপ্রিয়তা ও গুণাগুণ কমেনি একটুও। ফলে বাদাম বিষয়টি আগেও যা ছিল, এখনো তাই আছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু।
১৭ ডিসেম্বর ২০২১
ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডের ইউরোপের সেরা গন্তব্যের শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। গত বছর এই তালিকায় সেরা দেশ হিসেবে গ্রিস সম্মাননা পেলেও আবার আবারও শিরোপা এসেছে পর্তুগালের কাছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি পর্তুগাল মোট ছয়বার জিতেছে। এটি ছিল পুরস্কারের ৩২তম সংস্করণ।
১৩ ঘণ্টা আগে
বিমান ভ্রমণ অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ওপর শারীরিক অস্বস্তি যোগ হলে তা আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার খাদ্য ও পানীয়ের ওপর মনোযোগ দিলে এই যাত্রা অনেক বেশি আরামদায়ক হতে পারে। এমন কিছু খাবার ও অভ্যাস আছে, যা যাত্রার আগে এড়িয়ে চললে তুলনামূলকভাবে ভালো...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমরা সবাই জানি যে একটি পারমাণবিক যুদ্ধ ঠিক কতটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। প্রায় ১৩ হাজার পারমাণবিক ওয়ারহেডের বৈশ্বিক মজুতের কারণে এর বিধ্বস্ততা হবে আরও ভয়াবহ। কাজ না থাকা অলস দুপুরে ঘরে বসে এ বিষয়ে ভাবতে নিশ্চয়ই ভালো লাগবে না।
১৮ ঘণ্টা আগে