Ajker Patrika

আমাদের ডাকটিকিটের জন্মদিন

এ টি এম আনোয়ারুল কাদির
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৪, ১১: ১৪
আমাদের ডাকটিকিটের জন্মদিন

১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই মুক্তিযুদ্ধকালে ‘বাংলাদেশ’ নামে ৮টি ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছিল। এই ডাকটিকিটগুলো গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে। সেই সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে ডাকটিকিট সংগ্রাহকদের রেজিস্টার্ড সংগঠন ‘ফিলাটেলিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (পিএবি) ২০০৩ সাল থেকে এই বিশেষ দিনটিকে ডাকটিকিট দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করে আসছে।

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশর অস্থায়ী সরকার গঠন হয়। দেশে তখন অবিরাম যুদ্ধ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা একপ্রকার বিচ্ছিন্ন। তাই অস্থায়ী সরকার ডাক ব্যবস্থা গড়ে তোলার গুরুত্ব অনুধাবন করে। সেই সঙ্গে  এক সময় সরকার উপলব্ধি করে, স্বাধীনতার স্বপক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে ডাকটিকিট বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ব্রিটিশ ডাক বিভাগের পোস্টমাস্টার জেনারেল ছিলেন সে সময়কার পার্লামেন্টের সদস্য জন স্টোনহাউস। তিনি বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি তাজউদ্দীন আহমদকে জানিয়েছিলেন, মুক্তাঞ্চলে চিঠি আদান প্রদানের জন্য ‘বাংলাদেশ’ নামে ডাকটিকিট ব্যবহার করা হলে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে। অস্থায়ী সরকার এই প্রস্তাবের পর বাংলাদেশ নামে ডাকটিকিট প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল জন স্টোনহাউস লন্ডনপ্রবাসী ভারতীয় বাঙালি ডিজাইনার বিমান মল্লিককে ডাকটিকিট ডিজাইনের দায়িত্ব দেন। বিমান মল্লিক ৮টি ডাকটিকিটের ডিজাইন করেন এবং অস্থায়ী বাংলাদেশ  সরকার তা অনুমোদন করে। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই লন্ডনের হাউস অব কমন্সে জন স্টোন হাউস ও প্রবাসে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ দূত বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী এই ডাকটিকিটগুলো দেখিয়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জোর দাবি উত্থাপন করেন।

এরই প্রেক্ষিতে পশ্চিম জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড ও জাপানসহ বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়। বিদেশে অবস্থানরত ১২২ জন বাঙালি কূটনীতিক পাকিস্তানের আনুগত্য অস্বীকার করে বাংলাদেশের পক্ষে চলে আসেন। বিমান মল্লিকের ডিজাইন করা ৮টি ডাকটিকিট ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই একযোগে মুজিবনগর, কলকাতার বাংলাদেশ মিশন এবং লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। এই ডাকটিকিটগুলো দেশের অস্তিত্ব প্রমাণে বড় ভূমিকা পালন করে। এ কারণেই ২৯ জুলাইকে ডাকটিকিট দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়।

২০০৩ সালের শুরুর দিকে ফিলাটেলিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ২৯ থেকে ৩১ জুলাই শিশুকিশোরদের সংগ্রহ নিয়ে ‘চাইল্ডপেক্স ২০০৩’ নামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রদর্শনীর আগে কয়েকটি স্কুলে ফিলাটেলির ওপর ক্লাস নেওয়া হয়। প্রদর্শনীর তারিখ হিসেবে বেছে নেওয়া হয় ২৯ জুলাই। 
প্রদর্শনী ও জাতীয় ডাকটিকিট দিবস উদ্‌যাপন প্রচারণার জন্য বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ২০০৩ সালের ২২ জুলাই ১ টাকার ওভার প্রিন্ট রেজিস্টার্ড খাম প্রকাশ করে। ওভার প্রিন্টে পিএবির লোগো এবং চাইল্ডপেক্সে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ২৯ জুলাই বাংলাদেশ ডাক বিভাগ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে একটি বিশেষ খাম এবং প্রদর্শনীর ৩ দিন তিনটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করে। এভাবে ডাকটিকিট দিবসের যাত্রা শুরু হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ  ডাক বিভাগ ডাকটিকিট দিবস পালনে পিএবিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এর সঙ্গে অন্যান্য ফিলাটেলিক সংগঠনও পরবর্তীতে দিবসটি উদ্‌যাপন করতে শুরু করে।

ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ পর্যন্ত বেশ কিছুসংখ্যক স্মারক ডাকটিকিট, স্মারক শিট, উদ্বোধনী খাম, বিশেষ খাম, পোস্টাল স্টেশনারি এবং বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করেছে। দিনটি পালনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ২০০৩ সালে প্রথমবারের মতো একটি ওভার প্রিন্ট স্টেশনারি, একটি বিশেষ খাম এবং ৩টি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করে। এগুলোর নকশা করেছিলেন মৃণাল চক্রবর্তী। ২০০৬ সালে ডাক বিভাগ একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করে। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ জুলাই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ও পিএবি যৌথভাবে ডাকটিকিট দিবস উদ্‌যাপন করে এবং স্বাধীনতা বিষয়ক একটি ডাকটিকিট প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এ উপলক্ষে ডাক বিভাগ ৫০ টাকা মূল্যমানের ১টি স্মারক শিট ও ১টি ফোল্ডার প্রকাশ করে। এগুলোর নকশা করেছিলেন জসিম উদ্দিন। ডিজাইনে প্রথম ৮টি ডাকটিকিটের ছবি স্থান পায়।

২০০৮ সালে জানা যায় বাংলাদেশের প্রথম ডাকটিকিটের ডিজাইনার বিমান মল্লিক জীবিত আছেন। তাঁকে ডাকটিকিট দিবস উদ্‌যাপনের বিষয়টি জানানো হয় এবং দিবসটি পালনের জন্য একটি ডাকটিকিট নকশা করার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর থেকে তিনি প্রতিবছর এই বিশেষ দিনটির খোঁজ রাখতেন। 

২০১২ সালের ২৯ জুলাই ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে পিএবি ডাক বিভাগের সহযোগিতায় আলোচনা সভা এবং ডাকটিকিট বিষয়ক ডকুমেন্টারি ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা নেয়। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ একটি বিশেষ খাম এবং একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করে। এগুলোর নকশা করেছিলেন মো. কামরুল ইসলাম। এরপর ২০১৩  সালে ডাক বিভাগ বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করে। ২০১৫ সালে বিমান মল্লিক ডাকটিকিট দিবসের জন্য প্রথমবারের মতো ১০ টাকা মূল্যমানের ১টি ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহরের নকশা করেন।

২০১৬ সালের ২৯ জুলাই সনজীব কান্তি দাস ১০ টাকা মূল্যমানের ১টি স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর এবং ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে আনোয়ার হোসেন ১০ টাকা মূল্যমানের ১টি স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই  সনজীব কান্তি দাস ১০টাকা মূল্যমানের ১টি স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর নকশা করেছিলেন। ২০১৯ সালে জামালপুরের মেয়ে সাদিয়া আফরিন লামিয়ার চিত্রকর্ম ‘চল দেখি বায়োস্কোপ’ অবলম্বনে ডাকটিকিট দিবসে ১০ টাকা মূল্যমানের ১টি স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করা হয়। এর নকশা করেছিলেন সনজীব কান্তি দাস। এ ছাড়া একই দিনে জাতীয় ডাকটিকিট প্রদর্শনী  ‘বাংলাপেক্স ২০১৯’ এর সমাপনী দিনে ডাকটিকিট দিবস উপলক্ষে একটি বিশেষ খাম ও বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করা হয়। এর নকশাকার ছিলেন সাকিল হক।

২০২০ সালে ১০ টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর প্রকাশিত হয় সনজীব কান্তি দাসের নকশায়। এরপর ২০২২ সালে ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ওভার প্রিন্ট পোস্টাল স্টেশনারি ও বিশেষ সিলমোহর প্রকাশিত হয়। ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ডাকটিকিট দিবস উদ্‌যাপনের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি বিশেষ খাম ও একটি বিশেষ সিলমোহর প্রকাশ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের তালিকায় সিলেট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভ্রমণে শ্রীলঙ্কার সেরা ৫

ফিচার ডেস্ক
ভ্রমণে শ্রীলঙ্কার সেরা ৫

সবুজ বন, বালুকাময় সৈকত এবং শতাব্দীপ্রাচীন সমুদ্র-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কারণে শ্রীলঙ্কা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। খুব কম সময় হাতে নিয়ে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণে যাওয়ার কথা ভাবাই উচিত নয়। সমুদ্রসৈকত, সার্ফিং বিচ, বন্য প্রাণীতে ভরা জাতীয় উদ্যান, এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মন্দির, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষসহ অনেক আকর্ষণীয় গন্তব্য থাকায় দেশটির ঠিক কোথা থেকে দেখা শুরু করবেন, তা ভাবতেই সময় চলে যাবে। আপনার বাজেট যা-ই হোক, জেনে নিন শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের জন্য বিশেষ ৫টি জায়গার কথা।

কলম্বো

খাবার, সংস্কৃতি ও শহুরে জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য শ্রীলঙ্কার আদর্শ শহর এটি। দেশটির সাংস্কৃতিক রাজধানী কলম্বো ভ্রমণ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ। শহরটিতে আছে ঔপনিবেশিক যুগের ঐতিহাসিক ভবন। এর মধ্যে রয়েছে ১৬০০ সালে প্রতিষ্ঠিত টেরাকোটা-ছাদযুক্ত ডাচ হাসপাতাল।

কলম্বোর জনপ্রিয় সমুদ্র উপকূলীয় ওয়াকিংওয়ে গ্যাল ফেস গ্রিনে কিছু সময় কাটাতে ভুলবেন না। এটি দেশটির স্থানীয় খাবার ও সূর্যাস্ত দেখার অনন্য জায়গা। অবেলায় পানিতে নামতে না চাইলে তীরে বসে পাশের রেস্তোরাঁয় ডুবো তেলে ভাজা চিংড়ি, মসুর ডাল ভাজা, মসলাদার সম্বর দিয়ে সাজানো থালি অর্ডার করুন।

ত্রিঙ্কোমালি

স্থাপত্য, স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদি মিলিয়ে সলো ট্রাভেলারদের জন্য ত্রিঙ্কোমালি বিশেষ আকর্ষণের জায়গা। এখানকার পানি স্নোরকেলিংয়ের জন্য উপযুক্ত। মাইলের পর মাইল প্রবালপ্রাচীর আর সমৃদ্ধ সামুদ্রিক জীবন দেখার সুযোগ মিলবে এখানে। তবে জেনে রাখা ভালো, এখানকার সৈকতে লাইফগার্ড নেই; তাই সাঁতার কাটার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

আরুগাম উপসাগর

এককথায় সার্ফারদের প্রিয় গন্তব্য় এটি। শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলের এই উপসাগর সুন্দরতম সৈকত ও সার্ফিংয়ের জন্য পুরো বিশ্বে পরিচিত। অভিজ্ঞ সার্ফারদের জন্য আরুগাম উপসাগরের চেয়ে মনোরম আর বন্য জায়গা খুব কমই আছে। সার্ফিংয়ের বাইরে সূর্যাস্ত উপভোগ, বালুতে শুয়ে রৌদ্রস্নানসহ বিভিন্ন অ্যাকটিভিটি করার দুর্দান্ত জায়গা এটি। এখানে রয়েছে সার্ফ স্কুল, অসংখ্য রেস্তোরাঁ ও বিশ্রামাগার। এখানে ভ্রমণের সেরা সময় এপ্রিল থেকে অক্টোবর।

মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান

হাতিপ্রেমীদের জন্য এটি স্বর্গের সমান! মিনেরিয়া জাতীয় উদ্যান শ্রীলঙ্কার উত্তর-মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। নৈসর্গিক মিনেরিয়া হ্রদকে কেন্দ্র করে এ-জাতীয় উদ্যানের প্রায় ৯ হাজার হেক্টর

বন ও তৃণভূমিজুড়ে ঘুরে বেড়ায় বন্য হাতির দল। শুষ্ক মৌসুমে পার্কের প্রায় ৩০০ হাতি হ্রদের তীরে জড়ো হয়, যা বিশ্বের এশিয়ান হাতির বৃহত্তম সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনা এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যে ঘটে। ফলে যেতে চাইলে এই সময়ের মধ্য়েই সাফারি প্রি-বুক করতে হবে।

অনুরাধাপুর

প্রাচীন বৌদ্ধ ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার জন্য সেরা এই ঐতিহাসিক শহর। অনুরাধাপুরে আছে ঘড়ির টাওয়ার, পুরোনো রেলস্টেশন ইত্যাদি। এই শহরের উপকণ্ঠে আছে প্রাচীন শ্রীলঙ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ। আছে প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির, সুউচ্চ দাগোবা বা স্তূপ এবং পবিত্র মহা বোধি গাছ। ভারতের বোধগয়াতে

বুদ্ধ যে গাছের নিচে নির্বাণ লাভ করেছিলেন, তার অংশ থেকে এটি জন্মানো বলে বিশ্বাস করা হয়। এসবের বাইরে আশপাশের জঙ্গল ও গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আরও নানা ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক বিস্ময়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের তালিকায় সিলেট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্তর্মুখী সন্তানের বাবা-মায়ের যা জানা জরুরি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
অন্তর্মুখী শিশুদের কাছের মানুষ হয়ে উঠতে প্রয়োজন একটু বেশি ধৈর্য আর ভালোবাসা। ছবি: পেক্সেলস
অন্তর্মুখী শিশুদের কাছের মানুষ হয়ে উঠতে প্রয়োজন একটু বেশি ধৈর্য আর ভালোবাসা। ছবি: পেক্সেলস

আপনার সন্তান সব সময় নিজের মতো থাকতে ভালোবাসে? দীর্ঘ সময় একা থাকতেও তার খারাপ লাগে না? অন্য শিশুদের মতো ভিড়ের মধ্য়ে ছোটাছুটি তার পছন্দ নয়? বারবার প্রশ্ন করে কোনো কিছু জানার চেয়ে নিজেই পর্যবেক্ষণ করে জানতে বেশি আরাম পায়? একটা ‘ছড়া বল’ বললেই ঘরভর্তি লোকের সামনে আবৃত্তি করতে তার অস্বস্তি রয়েছে? বিভিন্ন সময়ই অন্যরা তাকে ‘লাজুক’ বা ‘মিশতে পারে না’ বলে মন্তব্য করে বসে? আপনি কি এমন এক শিশুরই বাবা কিংবা মা? তাহলে এই লেখা আপনার জন্য।

‘শিশু ইনট্রোভার্ট হলে শিশুর নয়, নিজের চোখে আয়না ধরা প্রয়োজন যে, বাবা-মা হিসেবে তাদের কোন কোন আচরণ শিশুটিকে ইনট্রোভার্ট করছে।’ ডা. সানজিদা শাহরিয়া, চিকিৎসক, কাউন্সেলর ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বিডি

অন্তর্মুখী মানেই বোকাসোকা বা নেতিবাচক কিছু নয়

প্রতিটি শিশুর শারীরিক গঠনের মতো আচরণও ভিন্ন। ইনট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী হওয়া কোনো শিশুর অক্ষমতা নয়, এটা সবার আগে শিশুর বাবা-মাকেই বুঝতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাবা-মা শিশুর বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেন না। ফলে শিশুর ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। ‘তোমার বন্ধু এটা করছে, তুমি কেন করতে পারছ না।’—এমন হাজারো তুলনা প্রতিনিয়তই বাবা-মায়ের পক্ষ থেকে আসে অন্তর্মুখী শিশুটির জন্য। ফলে শিশুটি চুপচাপ থেকে আরও চুপচাপ হয়ে যায়। হ্যাঁ, অন্তর্মুখী শিশুদের বোঝা একটু কঠিন হতে পারে। তবে অসম্ভব নয়। কাছের মানুষ হয়ে উঠতে প্রয়োজন একটু বেশি ধৈর্য আর ভালোবাসা।

চিকিৎসক, কাউন্সেলর ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার ডা. সানজিদা শাহরিয়া বলেন, ‘ইনট্রোভার্ট শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত। কিন্তু শিশু ইনট্রোভার্ট হলেই আমরা মনে করি, পেছনে পড়ে যাবে না তো? বাবা-মা ভয় পেয়ে যান। অনেক সময় দেখা যায়, বাড়িতে অতিথি এলে মাথা নিচু করে লুকিয়ে পড়া অথবা ছড়া বলতে বললে শিশু কথা বলে না; লজ্জা পায়। এসব আচরণ কিন্তু খুবই স্বাভাবিক। এসব নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশপাশের পরিবেশ থেকে শিশু কী বার্তা গ্রহণ করছে এবং সেই বার্তা শিশুর মনোজগৎকে কীভাবে প্রভাবিত করছে, সেটা সময় নিয়ে বাবা-মায়ের বোঝা জরুরি। তার আগেই ‘আমার সন্তান ইনট্রোভার্ট’ বলে ট্যাগ দেওয়াটা সন্তানের জন্য পীড়াদায়ক। প্রত্যেক মানুষের, এমনকি শিশুদেরও চিন্তার প্রক্রিয়া এবং চারপাশের পরিবেশ থেকে প্রতিক্রিয়া গ্রহণ করার সংবেদনশীলতা ভিন্ন। প্রত্যেকের দেখার চোখ যেহেতু আলাদা, চলতি কথায় যাকে আমরা ইনট্রোভার্ট বলি, হতে পারে শৈশবে তার প্রাথমিক কেয়ারগিভার বা চারপাশের মানুষগুলো তার জন্য যথেষ্ট আবেগীয়ভাবে উপস্থিত ছিলেন না বা ইমোশনালি অ্যাভেইলেবল ছিলেন না।’

বাবা-মা যা করতে পারেন

ধীরে এগোতে দিন

বহির্মুখী হওয়ার জন্য চাপাচাপি করতে যাবেন না। ‘খেলতে যাও, প্রতিযোগিতায় নাম লেখাও, জোরে কথা বলছ না কেন, চুপচাপ বসে থাকো কেন’—এ জাতীয় কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। চাপ দিয়ে কিছু করাতে যাবেন না। তাতে ওর মনে অতিরিক্ত চাপ পড়বে। মন খুলে হুট করে সবার সঙ্গে মিশে যাওয়া ওর স্বভাববিরুদ্ধ। জোর করলে ও নিজেকে হয়তো আরও গুটিয়ে নেবে। অপ্রীতিকর ভয়ও কাজ করতে পারে। ওকে সময় দিন নিজের মতো করে মানিয়ে নেওয়ার।

বহির্মুখী হওয়ার জন্য চাপাচাপি করতে যাবেন না। ছবি: পেক্সেলস
বহির্মুখী হওয়ার জন্য চাপাচাপি করতে যাবেন না। ছবি: পেক্সেলস

শিশুর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যকে সম্মান করুন

অন্তর্মুখী শিশুদের বাবা-মায়েদের প্রায় সময়ই বলতে শোনা যায়, ‘সবার সঙ্গে না মিশলে লোকে ভালো বলে না, কোথাও গিয়ে টিকতে পারবে না, আনস্মার্টরা এমন হয়’ ইত্যাদি। কিন্তু অভিভাবকদের জেনে রাখা জরুরি, এ ধরনের শিশুরা খুব সংবেদনশীল হয়। আপনি হয়তো সোজাসাপ্টা বলে দিলেন, কিন্তু সে ভেতরে-ভেতরে কষ্ট পাচ্ছে আবার সেটা মুখ ফুটে বলছেও না। যেটার ফল হতে পারে সুদূরপ্রসারী। আপনার সামনে যদি অন্য কেউ এ রকম করে, তাকেও এভাবে বলতে বারণ করুন।

উৎসাহ দিন

গবেষণায় দেখা গেছে, এক্সট্রোভার্টদের তুলনায় ইন্ট্রোভার্টদের মস্তিষ্কের সামনের লোবে রক্তের প্রবাহ বেশি থাকে। মস্তিষ্কের এই অংশ স্মৃতিশক্তি রক্ষা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে সহায়তা করে। এই শিশুরা কল্পনাপ্রবণ হয়। সেই কল্পনাগুলো গল্প, কবিতা বা আঁকার মাধ্যমে তারা অনেক সময় ফুটিয়ে তোলে। সেগুলোতে ওকে আরও উৎসাহ দিন।

কারও সঙ্গে তুলনা করবেন না

আপনার সন্তানের যেন কোনোভাবেই মনে না হয়, বাবা-মা হিসেবে আপনারা ওকে নিয়ে অখুশি। এটা কিন্তু তার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সে নিজেকে আরও গুটিয়ে নিতে পারে। কারণ, কখনো কিছুতে খারাপ লাগলে তা মুখের ওপর বলে দেওয়া এ ধরনের শিশুদের স্বভাববিরুদ্ধ। তাই চেষ্টা করুন শিশুর সঙ্গে এমনভাবে মিশতে, যাতে সে আপনাকে ভরসা করতে পারে। তার আবেগীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

বুলিং ঠেকাতে সীমারেখা নির্ধারণ করুন

এক্সট্রোভার্ট বা বহির্মুখী মানুষদের আমরা যেমন সেলিব্রেট করি, তেমনি ইনট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী একজন মানুষও কিন্তু স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তার আনন্দ, উচ্ছ্বাস প্রকাশের ধরন ও মাধ্যমটা হয়তো আলাদা। ফলে এই মানুষগুলোকে বোকা, মিশতে জানে না—এসব বলে বুলিং করা বন্ধ করতে হবে। সন্তানকে এসব বলে কেউ বুলিই করলে বাবা-মাকেও বুঝিয়ে দিতে হবে যে ওর সম্পর্কে এসব ধারণা ভুল। শিশু মানেই তারা হইচই করে ঘর মাতিয়ে রাখবে, এমন না-ও হতে পারে। প্রত্যেকের নিজস্ব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকে। প্রতিটি শিশুই নিজের মতো করে সুন্দর। এই ধরনের শিশুরা হয়তো সবার সঙ্গে মিশতে পারে না। তবে এমনও হতে পারে, তারা অন্যদের তুলনায় একটু বেশিই সৃজনশীল। বাবা-মায়েদের উচিত, তাদের চাপ না দিয়ে বরং শক্তির জায়গাগুলোকে খুঁজে বের করে উৎসাহ দেওয়া। তাহলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের তালিকায় সিলেট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হেনলি ওপেননেস ইনডেক্সে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই দেশ

ফিচার ডেস্ক  
হেনলি ওপেননেস ইনডেক্সে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই দেশ

এই বছরের হেনলি ওপেননেস ইনডেক্সে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পূর্ব তিমুর বা টিমোর-লেস্তে এবং কম্বোডিয়া জায়গা করে নিয়েছে। এই দুটি দেশে যেতে বিশ্বের শত শত দেশ এবং অঞ্চলের নাগরিকদের ভিসার প্রয়োজন নেই।

সম্প্রতি প্রকাশিত সূচকটি বিশ্বজুড়ে ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলের ওপর জরিপ চালিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এ জরিপে দেখা হয়, কোন দেশগুলোতে পূর্বে অনুমোদিত ভিসা ছাড়া কতগুলো জাতীয়তার নাগরিকদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। তার ওপর ভিত্তি করে এই র‍্যাঙ্কিং করা হয়।

সূচক অনুসারে, টিমোর-লেস্তেসহ ১১টি দেশ সীমান্ত উন্মুক্ততার ক্ষেত্রে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। টিমোর-লেস্তে একমাত্র দেশ হিসেবে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় প্রতিনিধি হিসেবে তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই দেশটি ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের নাগরিকদের জন্য ভিসা অব্যাহতি দিয়ে থাকে। অন্যদিকে কম্বোডিয়া দ্বিতীয় স্থান ভাগাভাগি করে নিয়েছে ডমিনিকা, গিনি-বিসাউ, মালদ্বীপ ও মাদাগাস্কারের সঙ্গে। দেশগুলো ১৯৭টি দেশ এবং অঞ্চলের নাগরিকদের জন্য ভিসা ছাড় সুবিধা দেয়। পর্যটন উন্মুক্ততার ক্ষেত্রে উচ্চ র‍্যাঙ্কিং থাকা সত্ত্বেও, টিমোর-লেস্তে ও কম্বোডিয়া বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টগুলোর বৈশ্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা নিচের দিকে অবস্থান করছে।

বিশ্বের ৫৬তম শক্তিশালী পাসপোর্ট বহন করে ২২৭টি গন্তব্যের মধ্যে ৯৪টিতে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পায় টিমোর-লেস্তের নাগরিকেরা। কম্বোডিয়ার পাসপোর্টের অবস্থান ৯২তম। দেশটির নাগরিকেরা মাত্র ৫০টি গন্তব্যে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকারের সুবিধা পায়।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের তালিকায় সিলেট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বাস্থ্যকর প্রোটিন পাউডার তৈরি করুন বাড়িতেই, জেনে নিন এর ভালো-মন্দ

ফিচার ডেস্ক
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকাল বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন পাউডারের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। যাঁরা প্রতিদিন জিমে যান, তাঁরা তো বটেই; এখন ট্রেন্ড ফলোয়াররাও ঝুঁকছেন প্রোটিন পাউডার ব্যবহারের দিকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন ও প্রোটিন পাউডার দিয়ে তৈরি পানীয় গ্রহণ করেন তাঁদের পেশির বৃদ্ধি ভালো হয়। এটি শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায় ও শরীরে শক্তি জোগায়। তবে মনে রাখতে হবে, বিষয়টি শর্তহীন নয়। অর্থাৎ সবার জন্য সমান নয়।

এ বিষয়ে বারিধারা ফরাজি হসপিটালের পুষ্টিবিদ নাহিদা আহমেদ বলেন, ‘মেয়েদের ঋতু ও গর্ভকালে প্রোটিনের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। প্রোটিন শরীরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেই ইচ্ছেমতো গ্রহণ করা যাবে না। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে শরীরে পানিশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়াসহ নানান সমস্যা দেখা দিতে হতে পারে। কিডনি রোগসহ বিশেষ বিশেষ কিছু রোগের ক্ষেত্রে পরিমাণ চিকিৎসকের পরামর্শমতো কমতে থাকবে।’

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

প্রোটিন পাউডার কী

প্রোটিন পাউডার সারা বিশ্বে একটি জনপ্রিয় পুষ্টিকর সম্পূরক হিসেবে পরিচিত। প্রোটিন একটি অপরিহার্য ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা পেশি গঠন, টিস্যু মেরামত, এনজাইম ও হরমোন তৈরিতে সহায়তা করে। নিয়মিত প্রোটিন পাউডার গ্রহণ ওজন কমাতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি পেশিগুলোকে টোন করতে সাহায্য করে এই সম্পূরক।

প্রোটিন পাউডারে কী কী থাকে

হুই (পনির তৈরির উপজাত থেকে তৈরি), ডিম, সয়া, বিভিন্ন ধরনের বীজ ও বাদাম, মটর বা চাল, মূলত এগুলোই এর উপাদান।  এ ছাড়া, অনেক পাউডারে ভিটামিন, খনিজ, আঁশ, চর্বি এবং বিভিন্ন উদ্ভিদজাত উপাদান, যেমন সবুজ শাকসবজি যুক্ত করা হয়।  প্যাকেটজাত প্রোটিন পাউডার কেনার বিষয়ে যদি আপনার সন্দেহ থাকে, তাহলে আপনি বাড়িতেও এটি তৈরি করতে পারেন। বাজারে পাওয়া যায় এমন সহজলভ্য উপকরণ দিয়েই তৈরি করা সম্ভব এই প্রোটিন পাউডার।

কোনো ব্যক্তির আদর্শ ওজন ৬০ কেজি হলে প্রতিদিন ৬০ গ্রামের মতো প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। নাহিদা আহমেদ, পুষ্টিবিদ, ফরাজি হসপিটাল, বারিধারা

রেসিপি

যাঁরা প্রথম প্রোটিন পাউডার গ্রহণ করার কথা ভাবছেন, একই সঙ্গে একটু স্বাদযুক্ত প্রোটিন পাউডার তৈরি করতে চাচ্ছেন, তাঁদের জন্যই এই রেসিপি। প্রায় ৩ কাপ প্রোটিন পাউডার তৈরির রেসিপিটি দেখে নিন।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

যা যা লাগবে

বাদাম ১ কাপ, আখরোট আধা কাপ, কাঁচা চিনাবাদাম আধা কাপ, পেস্তা ও কাজু বাদাম ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ করে, তরমুজের বীজ ২ টেবিল চামচ (সহজলভ্য হলে), কুমড়োর বীজ ২ টেবিল চামচ, সূর্যমুখী বীজ ২ টেবিল চামচ, তিসির বীজ ১ টেবিল চামচ, চিয়া বীজ ২ টেবিল চামচ, শুকনো খেজুর ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ।

প্রণালি

খেজুর বাদে বাকি সব উপকরণ একটি কড়াইয়ে অল্প আঁচে ৩ থেকে ৪ মিনিট টেলে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন পুড়ে না যায়। এবার একটি চওড়া প্লেটে এগুলো ঢেলে ঠান্ডা হতে দিন। মিশ্রণটি সম্পূর্ণ ঠান্ডা হলে শুকনো খেজুরসহ একটি ব্লেন্ডার জারে ঢালুন। তারপর একেবারে সূক্ষ্ম গুঁড়ো করে ব্লেন্ড করুন। ব্যস্, আপনার ঘরে তৈরি প্রোটিন পাউডার তৈরি!

যেভাবে ব্যবহার করবেন

প্রোটিন পাউডার দিয়ে শেক তৈরি করতে একটি গ্লাসে ১ কাপ গরম দুধ নিন। তাতে ৩ টেবিল চামচ ঘরে তৈরি প্রোটিন পাউডার যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

প্রোটিন শেক পান করার উপকারিতা

প্রোটিন শেক পান করলে আপনার প্রতিদিনের প্রোটিনের ঘাটতি দূর হবে। ব্যায়ামের সঙ্গে যদি উচ্চ প্রোটিন ডায়েট যোগ করা যায়, তাহলে ওজন কমে বলে বিভিন্ন গবেষণার তথ্যে জানা যায়। প্রোটিন শেক খাওয়ার কিছু উপকারিতা রয়েছে। সেগুলো হলো–

  • দীর্ঘসময় ক্ষুধার অনুভূতি থেকে দূরে রাখে।
  • ক্যালরি পোড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করে বিপাক বাড়াতে সাহায্য করে।

কখন প্রোটিন শেক পান করা উচিত

ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা ব্যায়াম করার ১৫ থেকে ৬০ মিনিট পরে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পরামর্শ দেন। এই সময়সীমাকে অ্যানাবলিক উইন্ডো বলা হয় এবং এটি প্রোটিনের মতো পুষ্টি থেকে সর্বাধিক উপকার পেতে সাহায্য করে বলে বিশ্বাস করা হয়।

প্রোটিন পাউডার গ্রহণ করার আগে জেনে নিন

যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রোটিনের চাহিদা কিছুটা বেশি। তাঁদের শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য দৈনিক দেড় থেকে দুই গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। তবে প্রোটিন বেশি হয়ে গেলেও কিন্তু শরীরে নানা রকম সমস্যা তৈরি হতে পারে। যেমন–

  • প্রোটিন পাউডার দীর্ঘ দিন ধরে খেলে তা কিডনি ও লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
  • অতিমাত্রায় খেলে মাথা ঘোরা, ক্ষুধামান্দ্য, ডায়রিয়া কিংবা মানসিক চাপের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত প্রোটিন পাউডার শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। ফলে বাতের ঝুঁকি বাড়ে।
  • প্রোটিন পাউডার সেবন করলে তা হজম করতে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে সারা দিন। নয়তো শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামের তালিকায় সিলেট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত