মইনুল হাসান

ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
জীবনকে খাদ্য থেকে আলাদা করা যায় না। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। আর ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যের বিকল্প কিছু নেই। অন্তত এখনো সে বিকল্প মানুষের অজানা।
বিজ্ঞান কল্পকাহিনি যেমন রটিয়ে বেড়াচ্ছে, ভবিষ্যতে মানুষ একটি মাত্র ছোট ট্যাবলেট, অর্থাৎ পুরিয়া মুখে পুরে দিব্যি বছরখানেক না খেয়ে থাকতে পারবে বা শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে হাজার বছরের লম্বা এক ঘুম দিয়ে জেগে উঠে নতুন পৃথিবী দেখবে।
একদিন হয়তো একটি ট্যাবলেট আমাদের খাদ্য সংকট থেকে রক্ষা করবে। তবে সে ভরসা করে বিজ্ঞ বিজ্ঞানীরা বসে থাকতে পারেন না। অতটা সময় এখন আর এ গ্রহের মানুষের হাতে নেই। কারণ, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। স্বাভাবিকভাবেই জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাহিদা। প্রধান চাহিদা হচ্ছে খাদ্য, বিশেষ করে আমিষের চাহিদা মেটাতে যেসব পশু-পাখি, মাছ আমরা লালন–পালন করি, তা বেশ সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য। এ জন্য বাড়তি স্থান এবং উত্তরোত্তর দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠা পানযোগ্য পানির বিপুল অপচয় হয়। ব্যাপক রাসায়নিক সার, কীট-পতঙ্গ এবং আবর্জনানাশক ইত্যাদি ব্যবহার মোটেই পরিবেশবান্ধব নয়। চাষযোগ্য জমিও আর বাকি নেই। মানুষ, পালিত পশু-পাখি ও মাছের জন্য খাদ্য জোগাতে উজাড় হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস বনভূমি। এর সঙ্গে আছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন।
আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ১০০০ কোটির কাছে চলে যাবে। বাড়তি মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া হবে অনেকটাই অসাধ্যসাধনের মতো একটা চ্যালেঞ্জ। উন্নত প্রযুক্তির কারণে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়লেও ‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ পত্রিকা জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকেরা ২১ শতাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। এ কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে খাদ্য অপচয়। জমি থেকে আমাদের মুখ পর্যন্ত পৌঁছানোর মাঝখানে পথেই হারিয়ে যায় ৩০ শতাংশ খাদ্য। তা ছাড়া মানুষের ব্যবহারের জন্য এক বছরে আমাদের এই পৃথিবী যেটুকু নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপন্ন করে, তা দিয়ে আট মাসও চলে না। ২০২০ সালেই যেমন নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ ২২ আগস্টেই সাবাড় করে দিয়েছিল পৃথিবীর মানুষেরা। ফলে বছরের বাকি চার মাস সময় আমাদের ধারের ওপর চলতে হয়েছে। এমনটিই জানিয়েছে গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট নেটওয়ার্ক।
বর্তমানে প্রতি ১০ জনে ১ জন মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে। ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে। এসব বিবেচনায় ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা সমাধানে জৈবপ্রযুক্তিবিদেরা আমাদের খাদ্যের নতুন উৎসের সন্ধান দিচ্ছেন। আগামী দিনে নিশ্চিতভাবে যেসব খাদ্যে পরিতৃপ্ত থাকতে হবে, সেগুলোর সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় থাকা ভালো।
কীট-পতঙ্গ
প্রথমবারের মতো চলতি বছরের ৪ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭টি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা গুবরেপোকার লার্ভা বা শুককীট মানুষের খাদ্য হিসেবে নিরাপদ বলে ছাড়পত্র দিয়েছে। ফ্রান্সের পোকামাকড় দিয়ে খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা মাইক্রোনিউট্রিসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় খাদ্যনিরাপত্তা সংস্থা আমিষের নতুন উৎস হিসেবে কীটপতঙ্গকে বিবেচনায় নিয়েছে। ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর ইউরোপের দেশগুলোতে গুবরেপোকার লার্ভা মানুষের নতুন খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
এক কথায় উন্নত আমিষ ফাইবার, আয়রন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ কীট-পতঙ্গ স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব, সময় ও অর্থসাশ্রয়ী। বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, প্রাণিজগতের এক বিশাল অংশ (৮৫ শতাংশ) দখল করে আছে এই সন্ধিপদী কীটপতঙ্গেরা। এদের রয়েছে এক বিশাল ও বৈচিত্র্যময় ভান্ডার। তাই পোকামাকড়ের এমন আমিষ, প্রচলিত আমিষের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও উন্নত বিকল্প হতে পারে। এতে মাত্র ২৫ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন হবে।
শৈবাল
বহুদিন আগে থেকেই পৃথিবীর বহু অঞ্চলে কীট-পতঙ্গের মতো শৈবালও মানুষের খাদ্য হিসেবে সমাদর লাভ করেছে। তবে তা নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সবজির বিকল্প হিসেবে বেশ কিছু প্রজাতির শৈবালকে চিহ্নিত করেছেন। সেসব শৈবাল পুষ্টিমানে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য; বিশেষ করে উন্নত আমিষ, আঁশ, ভিটামিন ও উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড, যেমন ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ।
চীন ও নাইজারে নীল অণু শৈবাল ‘স্পিরুলিনা’ মানুষ এবং পশু-পাখির খাদ্য হিসেবে উৎপাদনে সাফল্য লাভ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মরু অঞ্চলে অপেয় পানি ব্যবহার করে এমন পুষ্টিকর অণু শৈবাল উৎপাদন করা সম্ভব।
বিজ্ঞানীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সহজে উৎপাদন করা যায় এমন বেশ কিছু খাবার যোগ্য শৈবাল। এ তালিকায় স্থান পেয়েছে প্রায় ১০ হাজার ধরনের শৈবাল। এর মধ্যে ১৪৫ ধরনের শৈবাল ইতিমধ্যে মানুষের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
অণুজীব থেকে দুধ, ডিম ও চকলেট উৎপাদন
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আরেকটি চমকপ্রদ খবরের খোঁজ দিয়েছেন। এটি আমাদের বলছে, দুধের জন্য আর গাভির দরকার হবে না। ভবিষ্যতে এককোষী অণুজীব হবে দুধের প্রধান উৎস। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক তামির টুলের ও খাদ্য-প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ড. আইয়াল ইফারগান দুজন মিলে এককোষী ছত্রাক ইস্ট থেকে দুধ উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছেন। পুষ্টিগুণের সঙ্গে রং, ঘ্রাণ, স্বাদ ও গঠন বিবেচনায় অণুজীব উৎপাদিত দুধ কোনো অংশেই কম যায় না। বরং আরও কিছু পুষ্টিগুণ যোগ করে স্বাস্থ্যের জন্য আরও উত্তম করা যাবে বলে জানিয়েছেন। এমনকি এ থেকে উৎকৃষ্ট মানের চিজ অর্থাৎ পনির তৈরি করা যাবে।
জিনতত্ত্ব প্রকৌশল প্রয়োগ করে অণুজীব থেকে ‘ঈশ্বরের খাদ্য’ নামে পরিচিত বিশ্বব্যাপী সমাদৃত জাদুকরী স্বাদের চকলেট উৎপাদন করতে প্রযুক্তিবিদেরা সফল হয়েছেন। তাঁরা এই ইস্ট ব্যবহার করে ডিমের কুসুম ও সাদা অংশ উৎপাদনেও সমর্থ হয়েছেন। ডিমের বাড়তি চাহিদা, জনপ্রিয়তার কথা ভেবেই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উদ্ভিজ্জ কৃত্রিম ডিম নিয়ে বাজার জাঁকিয়ে বসেছে।
আজ অণুজীব থেকে দুধ, ডিম, মজার চকলেট উৎপাদনের জৈবপ্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয় আছে। বলে রাখা ভালো, অণুজীব হলেও এই প্রজাতির ইস্ট খুব নিরাপদ ও উপকারী।
গবেষণাগারে মাংস উৎপাদন
গত বছর ২ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ গবেষণাগারে তৈরি কৃত্রিম মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ অচিরেই অনুমোদন দিতে যাচ্ছে এটিকে। পশু-পাখি ও মাছের একটি টিস্যু থেকে অবিকল স্বাদ, ঘ্রাণ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ মাংস এখন আর কোনো কল্পকাহিনি নয়। অচিরেই সস্তা, ক্ষতিকর উপাদানমুক্ত ‘ক্লিন মিট’ যে জনপ্রিয়তা পাবে, তাতে মোটেই সন্দেহ নেই। আর স্বাদে, গন্ধে, পুষ্টিতে অতুলনীয় এ বিকল্প আমিষ সবার জন্য হবে এক উপাদেয় খাদ্য। এ ব্যাপারে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। খাদ্যের জন্য পশু-পাখি, মাছ বধ করতে হবে না অদূর ভবিষ্যতে।
ভবিষ্যতে রেস্তোরাঁয় থাকবে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টার। আধুনিক প্রযুক্তিতে ঠাসা এই যন্ত্র গ্রাহকের পছন্দের খাবার তার সামনেই তৈরি করে দেবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের পকেটে বা ত্বকের নিচে থাকা খুবই ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য কার্ড (হেলথ কার্ড) বিশ্লেষণ করে গ্রাহকের জন্য ক্ষতিকর উপাদান বাদ দিয়ে উপকারী উপাদান যোগ করে সুষম ও মুখরোচক খাবার পরিবেশন করবে।
আজ কল্পকাহিনি মনে হলেও অচিরেই তা হবে অনেকটাই নিত্যনৈমিত্তিক; সাধারণ ব্যাপার। তাই এ মুহূর্তে যে প্রশ্ন বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, তা হলো, ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
লেখক: গবেষক ও লেখক, ফ্রান্স

ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
জীবনকে খাদ্য থেকে আলাদা করা যায় না। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। আর ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যের বিকল্প কিছু নেই। অন্তত এখনো সে বিকল্প মানুষের অজানা।
বিজ্ঞান কল্পকাহিনি যেমন রটিয়ে বেড়াচ্ছে, ভবিষ্যতে মানুষ একটি মাত্র ছোট ট্যাবলেট, অর্থাৎ পুরিয়া মুখে পুরে দিব্যি বছরখানেক না খেয়ে থাকতে পারবে বা শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে হাজার বছরের লম্বা এক ঘুম দিয়ে জেগে উঠে নতুন পৃথিবী দেখবে।
একদিন হয়তো একটি ট্যাবলেট আমাদের খাদ্য সংকট থেকে রক্ষা করবে। তবে সে ভরসা করে বিজ্ঞ বিজ্ঞানীরা বসে থাকতে পারেন না। অতটা সময় এখন আর এ গ্রহের মানুষের হাতে নেই। কারণ, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। স্বাভাবিকভাবেই জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাহিদা। প্রধান চাহিদা হচ্ছে খাদ্য, বিশেষ করে আমিষের চাহিদা মেটাতে যেসব পশু-পাখি, মাছ আমরা লালন–পালন করি, তা বেশ সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য। এ জন্য বাড়তি স্থান এবং উত্তরোত্তর দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠা পানযোগ্য পানির বিপুল অপচয় হয়। ব্যাপক রাসায়নিক সার, কীট-পতঙ্গ এবং আবর্জনানাশক ইত্যাদি ব্যবহার মোটেই পরিবেশবান্ধব নয়। চাষযোগ্য জমিও আর বাকি নেই। মানুষ, পালিত পশু-পাখি ও মাছের জন্য খাদ্য জোগাতে উজাড় হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস বনভূমি। এর সঙ্গে আছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন।
আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ১০০০ কোটির কাছে চলে যাবে। বাড়তি মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া হবে অনেকটাই অসাধ্যসাধনের মতো একটা চ্যালেঞ্জ। উন্নত প্রযুক্তির কারণে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়লেও ‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ পত্রিকা জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকেরা ২১ শতাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। এ কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে খাদ্য অপচয়। জমি থেকে আমাদের মুখ পর্যন্ত পৌঁছানোর মাঝখানে পথেই হারিয়ে যায় ৩০ শতাংশ খাদ্য। তা ছাড়া মানুষের ব্যবহারের জন্য এক বছরে আমাদের এই পৃথিবী যেটুকু নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপন্ন করে, তা দিয়ে আট মাসও চলে না। ২০২০ সালেই যেমন নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ ২২ আগস্টেই সাবাড় করে দিয়েছিল পৃথিবীর মানুষেরা। ফলে বছরের বাকি চার মাস সময় আমাদের ধারের ওপর চলতে হয়েছে। এমনটিই জানিয়েছে গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট নেটওয়ার্ক।
বর্তমানে প্রতি ১০ জনে ১ জন মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে। ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে। এসব বিবেচনায় ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা সমাধানে জৈবপ্রযুক্তিবিদেরা আমাদের খাদ্যের নতুন উৎসের সন্ধান দিচ্ছেন। আগামী দিনে নিশ্চিতভাবে যেসব খাদ্যে পরিতৃপ্ত থাকতে হবে, সেগুলোর সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় থাকা ভালো।
কীট-পতঙ্গ
প্রথমবারের মতো চলতি বছরের ৪ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭টি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা গুবরেপোকার লার্ভা বা শুককীট মানুষের খাদ্য হিসেবে নিরাপদ বলে ছাড়পত্র দিয়েছে। ফ্রান্সের পোকামাকড় দিয়ে খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা মাইক্রোনিউট্রিসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় খাদ্যনিরাপত্তা সংস্থা আমিষের নতুন উৎস হিসেবে কীটপতঙ্গকে বিবেচনায় নিয়েছে। ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর ইউরোপের দেশগুলোতে গুবরেপোকার লার্ভা মানুষের নতুন খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
এক কথায় উন্নত আমিষ ফাইবার, আয়রন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ কীট-পতঙ্গ স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব, সময় ও অর্থসাশ্রয়ী। বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, প্রাণিজগতের এক বিশাল অংশ (৮৫ শতাংশ) দখল করে আছে এই সন্ধিপদী কীটপতঙ্গেরা। এদের রয়েছে এক বিশাল ও বৈচিত্র্যময় ভান্ডার। তাই পোকামাকড়ের এমন আমিষ, প্রচলিত আমিষের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও উন্নত বিকল্প হতে পারে। এতে মাত্র ২৫ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন হবে।
শৈবাল
বহুদিন আগে থেকেই পৃথিবীর বহু অঞ্চলে কীট-পতঙ্গের মতো শৈবালও মানুষের খাদ্য হিসেবে সমাদর লাভ করেছে। তবে তা নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সবজির বিকল্প হিসেবে বেশ কিছু প্রজাতির শৈবালকে চিহ্নিত করেছেন। সেসব শৈবাল পুষ্টিমানে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য; বিশেষ করে উন্নত আমিষ, আঁশ, ভিটামিন ও উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড, যেমন ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ।
চীন ও নাইজারে নীল অণু শৈবাল ‘স্পিরুলিনা’ মানুষ এবং পশু-পাখির খাদ্য হিসেবে উৎপাদনে সাফল্য লাভ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মরু অঞ্চলে অপেয় পানি ব্যবহার করে এমন পুষ্টিকর অণু শৈবাল উৎপাদন করা সম্ভব।
বিজ্ঞানীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সহজে উৎপাদন করা যায় এমন বেশ কিছু খাবার যোগ্য শৈবাল। এ তালিকায় স্থান পেয়েছে প্রায় ১০ হাজার ধরনের শৈবাল। এর মধ্যে ১৪৫ ধরনের শৈবাল ইতিমধ্যে মানুষের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
অণুজীব থেকে দুধ, ডিম ও চকলেট উৎপাদন
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আরেকটি চমকপ্রদ খবরের খোঁজ দিয়েছেন। এটি আমাদের বলছে, দুধের জন্য আর গাভির দরকার হবে না। ভবিষ্যতে এককোষী অণুজীব হবে দুধের প্রধান উৎস। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক তামির টুলের ও খাদ্য-প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ড. আইয়াল ইফারগান দুজন মিলে এককোষী ছত্রাক ইস্ট থেকে দুধ উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছেন। পুষ্টিগুণের সঙ্গে রং, ঘ্রাণ, স্বাদ ও গঠন বিবেচনায় অণুজীব উৎপাদিত দুধ কোনো অংশেই কম যায় না। বরং আরও কিছু পুষ্টিগুণ যোগ করে স্বাস্থ্যের জন্য আরও উত্তম করা যাবে বলে জানিয়েছেন। এমনকি এ থেকে উৎকৃষ্ট মানের চিজ অর্থাৎ পনির তৈরি করা যাবে।
জিনতত্ত্ব প্রকৌশল প্রয়োগ করে অণুজীব থেকে ‘ঈশ্বরের খাদ্য’ নামে পরিচিত বিশ্বব্যাপী সমাদৃত জাদুকরী স্বাদের চকলেট উৎপাদন করতে প্রযুক্তিবিদেরা সফল হয়েছেন। তাঁরা এই ইস্ট ব্যবহার করে ডিমের কুসুম ও সাদা অংশ উৎপাদনেও সমর্থ হয়েছেন। ডিমের বাড়তি চাহিদা, জনপ্রিয়তার কথা ভেবেই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উদ্ভিজ্জ কৃত্রিম ডিম নিয়ে বাজার জাঁকিয়ে বসেছে।
আজ অণুজীব থেকে দুধ, ডিম, মজার চকলেট উৎপাদনের জৈবপ্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয় আছে। বলে রাখা ভালো, অণুজীব হলেও এই প্রজাতির ইস্ট খুব নিরাপদ ও উপকারী।
গবেষণাগারে মাংস উৎপাদন
গত বছর ২ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ গবেষণাগারে তৈরি কৃত্রিম মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ অচিরেই অনুমোদন দিতে যাচ্ছে এটিকে। পশু-পাখি ও মাছের একটি টিস্যু থেকে অবিকল স্বাদ, ঘ্রাণ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ মাংস এখন আর কোনো কল্পকাহিনি নয়। অচিরেই সস্তা, ক্ষতিকর উপাদানমুক্ত ‘ক্লিন মিট’ যে জনপ্রিয়তা পাবে, তাতে মোটেই সন্দেহ নেই। আর স্বাদে, গন্ধে, পুষ্টিতে অতুলনীয় এ বিকল্প আমিষ সবার জন্য হবে এক উপাদেয় খাদ্য। এ ব্যাপারে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। খাদ্যের জন্য পশু-পাখি, মাছ বধ করতে হবে না অদূর ভবিষ্যতে।
ভবিষ্যতে রেস্তোরাঁয় থাকবে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টার। আধুনিক প্রযুক্তিতে ঠাসা এই যন্ত্র গ্রাহকের পছন্দের খাবার তার সামনেই তৈরি করে দেবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের পকেটে বা ত্বকের নিচে থাকা খুবই ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য কার্ড (হেলথ কার্ড) বিশ্লেষণ করে গ্রাহকের জন্য ক্ষতিকর উপাদান বাদ দিয়ে উপকারী উপাদান যোগ করে সুষম ও মুখরোচক খাবার পরিবেশন করবে।
আজ কল্পকাহিনি মনে হলেও অচিরেই তা হবে অনেকটাই নিত্যনৈমিত্তিক; সাধারণ ব্যাপার। তাই এ মুহূর্তে যে প্রশ্ন বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, তা হলো, ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
লেখক: গবেষক ও লেখক, ফ্রান্স
মইনুল হাসান

ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
জীবনকে খাদ্য থেকে আলাদা করা যায় না। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। আর ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যের বিকল্প কিছু নেই। অন্তত এখনো সে বিকল্প মানুষের অজানা।
বিজ্ঞান কল্পকাহিনি যেমন রটিয়ে বেড়াচ্ছে, ভবিষ্যতে মানুষ একটি মাত্র ছোট ট্যাবলেট, অর্থাৎ পুরিয়া মুখে পুরে দিব্যি বছরখানেক না খেয়ে থাকতে পারবে বা শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে হাজার বছরের লম্বা এক ঘুম দিয়ে জেগে উঠে নতুন পৃথিবী দেখবে।
একদিন হয়তো একটি ট্যাবলেট আমাদের খাদ্য সংকট থেকে রক্ষা করবে। তবে সে ভরসা করে বিজ্ঞ বিজ্ঞানীরা বসে থাকতে পারেন না। অতটা সময় এখন আর এ গ্রহের মানুষের হাতে নেই। কারণ, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। স্বাভাবিকভাবেই জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাহিদা। প্রধান চাহিদা হচ্ছে খাদ্য, বিশেষ করে আমিষের চাহিদা মেটাতে যেসব পশু-পাখি, মাছ আমরা লালন–পালন করি, তা বেশ সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য। এ জন্য বাড়তি স্থান এবং উত্তরোত্তর দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠা পানযোগ্য পানির বিপুল অপচয় হয়। ব্যাপক রাসায়নিক সার, কীট-পতঙ্গ এবং আবর্জনানাশক ইত্যাদি ব্যবহার মোটেই পরিবেশবান্ধব নয়। চাষযোগ্য জমিও আর বাকি নেই। মানুষ, পালিত পশু-পাখি ও মাছের জন্য খাদ্য জোগাতে উজাড় হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস বনভূমি। এর সঙ্গে আছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন।
আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ১০০০ কোটির কাছে চলে যাবে। বাড়তি মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া হবে অনেকটাই অসাধ্যসাধনের মতো একটা চ্যালেঞ্জ। উন্নত প্রযুক্তির কারণে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়লেও ‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ পত্রিকা জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকেরা ২১ শতাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। এ কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে খাদ্য অপচয়। জমি থেকে আমাদের মুখ পর্যন্ত পৌঁছানোর মাঝখানে পথেই হারিয়ে যায় ৩০ শতাংশ খাদ্য। তা ছাড়া মানুষের ব্যবহারের জন্য এক বছরে আমাদের এই পৃথিবী যেটুকু নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপন্ন করে, তা দিয়ে আট মাসও চলে না। ২০২০ সালেই যেমন নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ ২২ আগস্টেই সাবাড় করে দিয়েছিল পৃথিবীর মানুষেরা। ফলে বছরের বাকি চার মাস সময় আমাদের ধারের ওপর চলতে হয়েছে। এমনটিই জানিয়েছে গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট নেটওয়ার্ক।
বর্তমানে প্রতি ১০ জনে ১ জন মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে। ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে। এসব বিবেচনায় ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা সমাধানে জৈবপ্রযুক্তিবিদেরা আমাদের খাদ্যের নতুন উৎসের সন্ধান দিচ্ছেন। আগামী দিনে নিশ্চিতভাবে যেসব খাদ্যে পরিতৃপ্ত থাকতে হবে, সেগুলোর সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় থাকা ভালো।
কীট-পতঙ্গ
প্রথমবারের মতো চলতি বছরের ৪ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭টি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা গুবরেপোকার লার্ভা বা শুককীট মানুষের খাদ্য হিসেবে নিরাপদ বলে ছাড়পত্র দিয়েছে। ফ্রান্সের পোকামাকড় দিয়ে খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা মাইক্রোনিউট্রিসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় খাদ্যনিরাপত্তা সংস্থা আমিষের নতুন উৎস হিসেবে কীটপতঙ্গকে বিবেচনায় নিয়েছে। ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর ইউরোপের দেশগুলোতে গুবরেপোকার লার্ভা মানুষের নতুন খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
এক কথায় উন্নত আমিষ ফাইবার, আয়রন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ কীট-পতঙ্গ স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব, সময় ও অর্থসাশ্রয়ী। বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, প্রাণিজগতের এক বিশাল অংশ (৮৫ শতাংশ) দখল করে আছে এই সন্ধিপদী কীটপতঙ্গেরা। এদের রয়েছে এক বিশাল ও বৈচিত্র্যময় ভান্ডার। তাই পোকামাকড়ের এমন আমিষ, প্রচলিত আমিষের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও উন্নত বিকল্প হতে পারে। এতে মাত্র ২৫ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন হবে।
শৈবাল
বহুদিন আগে থেকেই পৃথিবীর বহু অঞ্চলে কীট-পতঙ্গের মতো শৈবালও মানুষের খাদ্য হিসেবে সমাদর লাভ করেছে। তবে তা নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সবজির বিকল্প হিসেবে বেশ কিছু প্রজাতির শৈবালকে চিহ্নিত করেছেন। সেসব শৈবাল পুষ্টিমানে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য; বিশেষ করে উন্নত আমিষ, আঁশ, ভিটামিন ও উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড, যেমন ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ।
চীন ও নাইজারে নীল অণু শৈবাল ‘স্পিরুলিনা’ মানুষ এবং পশু-পাখির খাদ্য হিসেবে উৎপাদনে সাফল্য লাভ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মরু অঞ্চলে অপেয় পানি ব্যবহার করে এমন পুষ্টিকর অণু শৈবাল উৎপাদন করা সম্ভব।
বিজ্ঞানীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সহজে উৎপাদন করা যায় এমন বেশ কিছু খাবার যোগ্য শৈবাল। এ তালিকায় স্থান পেয়েছে প্রায় ১০ হাজার ধরনের শৈবাল। এর মধ্যে ১৪৫ ধরনের শৈবাল ইতিমধ্যে মানুষের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
অণুজীব থেকে দুধ, ডিম ও চকলেট উৎপাদন
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আরেকটি চমকপ্রদ খবরের খোঁজ দিয়েছেন। এটি আমাদের বলছে, দুধের জন্য আর গাভির দরকার হবে না। ভবিষ্যতে এককোষী অণুজীব হবে দুধের প্রধান উৎস। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক তামির টুলের ও খাদ্য-প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ড. আইয়াল ইফারগান দুজন মিলে এককোষী ছত্রাক ইস্ট থেকে দুধ উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছেন। পুষ্টিগুণের সঙ্গে রং, ঘ্রাণ, স্বাদ ও গঠন বিবেচনায় অণুজীব উৎপাদিত দুধ কোনো অংশেই কম যায় না। বরং আরও কিছু পুষ্টিগুণ যোগ করে স্বাস্থ্যের জন্য আরও উত্তম করা যাবে বলে জানিয়েছেন। এমনকি এ থেকে উৎকৃষ্ট মানের চিজ অর্থাৎ পনির তৈরি করা যাবে।
জিনতত্ত্ব প্রকৌশল প্রয়োগ করে অণুজীব থেকে ‘ঈশ্বরের খাদ্য’ নামে পরিচিত বিশ্বব্যাপী সমাদৃত জাদুকরী স্বাদের চকলেট উৎপাদন করতে প্রযুক্তিবিদেরা সফল হয়েছেন। তাঁরা এই ইস্ট ব্যবহার করে ডিমের কুসুম ও সাদা অংশ উৎপাদনেও সমর্থ হয়েছেন। ডিমের বাড়তি চাহিদা, জনপ্রিয়তার কথা ভেবেই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উদ্ভিজ্জ কৃত্রিম ডিম নিয়ে বাজার জাঁকিয়ে বসেছে।
আজ অণুজীব থেকে দুধ, ডিম, মজার চকলেট উৎপাদনের জৈবপ্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয় আছে। বলে রাখা ভালো, অণুজীব হলেও এই প্রজাতির ইস্ট খুব নিরাপদ ও উপকারী।
গবেষণাগারে মাংস উৎপাদন
গত বছর ২ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ গবেষণাগারে তৈরি কৃত্রিম মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ অচিরেই অনুমোদন দিতে যাচ্ছে এটিকে। পশু-পাখি ও মাছের একটি টিস্যু থেকে অবিকল স্বাদ, ঘ্রাণ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ মাংস এখন আর কোনো কল্পকাহিনি নয়। অচিরেই সস্তা, ক্ষতিকর উপাদানমুক্ত ‘ক্লিন মিট’ যে জনপ্রিয়তা পাবে, তাতে মোটেই সন্দেহ নেই। আর স্বাদে, গন্ধে, পুষ্টিতে অতুলনীয় এ বিকল্প আমিষ সবার জন্য হবে এক উপাদেয় খাদ্য। এ ব্যাপারে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। খাদ্যের জন্য পশু-পাখি, মাছ বধ করতে হবে না অদূর ভবিষ্যতে।
ভবিষ্যতে রেস্তোরাঁয় থাকবে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টার। আধুনিক প্রযুক্তিতে ঠাসা এই যন্ত্র গ্রাহকের পছন্দের খাবার তার সামনেই তৈরি করে দেবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের পকেটে বা ত্বকের নিচে থাকা খুবই ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য কার্ড (হেলথ কার্ড) বিশ্লেষণ করে গ্রাহকের জন্য ক্ষতিকর উপাদান বাদ দিয়ে উপকারী উপাদান যোগ করে সুষম ও মুখরোচক খাবার পরিবেশন করবে।
আজ কল্পকাহিনি মনে হলেও অচিরেই তা হবে অনেকটাই নিত্যনৈমিত্তিক; সাধারণ ব্যাপার। তাই এ মুহূর্তে যে প্রশ্ন বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, তা হলো, ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
লেখক: গবেষক ও লেখক, ফ্রান্স

ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
জীবনকে খাদ্য থেকে আলাদা করা যায় না। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের প্রয়োজন। আর ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যের বিকল্প কিছু নেই। অন্তত এখনো সে বিকল্প মানুষের অজানা।
বিজ্ঞান কল্পকাহিনি যেমন রটিয়ে বেড়াচ্ছে, ভবিষ্যতে মানুষ একটি মাত্র ছোট ট্যাবলেট, অর্থাৎ পুরিয়া মুখে পুরে দিব্যি বছরখানেক না খেয়ে থাকতে পারবে বা শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে হাজার বছরের লম্বা এক ঘুম দিয়ে জেগে উঠে নতুন পৃথিবী দেখবে।
একদিন হয়তো একটি ট্যাবলেট আমাদের খাদ্য সংকট থেকে রক্ষা করবে। তবে সে ভরসা করে বিজ্ঞ বিজ্ঞানীরা বসে থাকতে পারেন না। অতটা সময় এখন আর এ গ্রহের মানুষের হাতে নেই। কারণ, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। স্বাভাবিকভাবেই জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাহিদা। প্রধান চাহিদা হচ্ছে খাদ্য, বিশেষ করে আমিষের চাহিদা মেটাতে যেসব পশু-পাখি, মাছ আমরা লালন–পালন করি, তা বেশ সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য। এ জন্য বাড়তি স্থান এবং উত্তরোত্তর দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠা পানযোগ্য পানির বিপুল অপচয় হয়। ব্যাপক রাসায়নিক সার, কীট-পতঙ্গ এবং আবর্জনানাশক ইত্যাদি ব্যবহার মোটেই পরিবেশবান্ধব নয়। চাষযোগ্য জমিও আর বাকি নেই। মানুষ, পালিত পশু-পাখি ও মাছের জন্য খাদ্য জোগাতে উজাড় হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস বনভূমি। এর সঙ্গে আছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন।
আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ১০০০ কোটির কাছে চলে যাবে। বাড়তি মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া হবে অনেকটাই অসাধ্যসাধনের মতো একটা চ্যালেঞ্জ। উন্নত প্রযুক্তির কারণে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়লেও ‘নেচার ক্লাইমেট চেঞ্জ’ পত্রিকা জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকেরা ২১ শতাংশ ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না। এ কারণে উদ্বেগ বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে খাদ্য অপচয়। জমি থেকে আমাদের মুখ পর্যন্ত পৌঁছানোর মাঝখানে পথেই হারিয়ে যায় ৩০ শতাংশ খাদ্য। তা ছাড়া মানুষের ব্যবহারের জন্য এক বছরে আমাদের এই পৃথিবী যেটুকু নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ উৎপন্ন করে, তা দিয়ে আট মাসও চলে না। ২০২০ সালেই যেমন নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ ২২ আগস্টেই সাবাড় করে দিয়েছিল পৃথিবীর মানুষেরা। ফলে বছরের বাকি চার মাস সময় আমাদের ধারের ওপর চলতে হয়েছে। এমনটিই জানিয়েছে গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট নেটওয়ার্ক।
বর্তমানে প্রতি ১০ জনে ১ জন মানুষ ক্ষুধার্ত থাকে। ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে। এসব বিবেচনায় ভবিষ্যতে খাদ্য সমস্যা সমাধানে জৈবপ্রযুক্তিবিদেরা আমাদের খাদ্যের নতুন উৎসের সন্ধান দিচ্ছেন। আগামী দিনে নিশ্চিতভাবে যেসব খাদ্যে পরিতৃপ্ত থাকতে হবে, সেগুলোর সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় থাকা ভালো।
কীট-পতঙ্গ
প্রথমবারের মতো চলতি বছরের ৪ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ২৭টি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা গুবরেপোকার লার্ভা বা শুককীট মানুষের খাদ্য হিসেবে নিরাপদ বলে ছাড়পত্র দিয়েছে। ফ্রান্সের পোকামাকড় দিয়ে খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা মাইক্রোনিউট্রিসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় খাদ্যনিরাপত্তা সংস্থা আমিষের নতুন উৎস হিসেবে কীটপতঙ্গকে বিবেচনায় নিয়েছে। ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর ইউরোপের দেশগুলোতে গুবরেপোকার লার্ভা মানুষের নতুন খাদ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
এক কথায় উন্নত আমিষ ফাইবার, আয়রন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ কীট-পতঙ্গ স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব, সময় ও অর্থসাশ্রয়ী। বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, প্রাণিজগতের এক বিশাল অংশ (৮৫ শতাংশ) দখল করে আছে এই সন্ধিপদী কীটপতঙ্গেরা। এদের রয়েছে এক বিশাল ও বৈচিত্র্যময় ভান্ডার। তাই পোকামাকড়ের এমন আমিষ, প্রচলিত আমিষের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও উন্নত বিকল্প হতে পারে। এতে মাত্র ২৫ শতাংশ গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপন্ন হবে।
শৈবাল
বহুদিন আগে থেকেই পৃথিবীর বহু অঞ্চলে কীট-পতঙ্গের মতো শৈবালও মানুষের খাদ্য হিসেবে সমাদর লাভ করেছে। তবে তা নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সবজির বিকল্প হিসেবে বেশ কিছু প্রজাতির শৈবালকে চিহ্নিত করেছেন। সেসব শৈবাল পুষ্টিমানে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য; বিশেষ করে উন্নত আমিষ, আঁশ, ভিটামিন ও উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড, যেমন ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ।
চীন ও নাইজারে নীল অণু শৈবাল ‘স্পিরুলিনা’ মানুষ এবং পশু-পাখির খাদ্য হিসেবে উৎপাদনে সাফল্য লাভ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মরু অঞ্চলে অপেয় পানি ব্যবহার করে এমন পুষ্টিকর অণু শৈবাল উৎপাদন করা সম্ভব।
বিজ্ঞানীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সহজে উৎপাদন করা যায় এমন বেশ কিছু খাবার যোগ্য শৈবাল। এ তালিকায় স্থান পেয়েছে প্রায় ১০ হাজার ধরনের শৈবাল। এর মধ্যে ১৪৫ ধরনের শৈবাল ইতিমধ্যে মানুষের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
অণুজীব থেকে দুধ, ডিম ও চকলেট উৎপাদন
সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আরেকটি চমকপ্রদ খবরের খোঁজ দিয়েছেন। এটি আমাদের বলছে, দুধের জন্য আর গাভির দরকার হবে না। ভবিষ্যতে এককোষী অণুজীব হবে দুধের প্রধান উৎস। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক তামির টুলের ও খাদ্য-প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ড. আইয়াল ইফারগান দুজন মিলে এককোষী ছত্রাক ইস্ট থেকে দুধ উৎপাদনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে এক বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছেন। পুষ্টিগুণের সঙ্গে রং, ঘ্রাণ, স্বাদ ও গঠন বিবেচনায় অণুজীব উৎপাদিত দুধ কোনো অংশেই কম যায় না। বরং আরও কিছু পুষ্টিগুণ যোগ করে স্বাস্থ্যের জন্য আরও উত্তম করা যাবে বলে জানিয়েছেন। এমনকি এ থেকে উৎকৃষ্ট মানের চিজ অর্থাৎ পনির তৈরি করা যাবে।
জিনতত্ত্ব প্রকৌশল প্রয়োগ করে অণুজীব থেকে ‘ঈশ্বরের খাদ্য’ নামে পরিচিত বিশ্বব্যাপী সমাদৃত জাদুকরী স্বাদের চকলেট উৎপাদন করতে প্রযুক্তিবিদেরা সফল হয়েছেন। তাঁরা এই ইস্ট ব্যবহার করে ডিমের কুসুম ও সাদা অংশ উৎপাদনেও সমর্থ হয়েছেন। ডিমের বাড়তি চাহিদা, জনপ্রিয়তার কথা ভেবেই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান উদ্ভিজ্জ কৃত্রিম ডিম নিয়ে বাজার জাঁকিয়ে বসেছে।
আজ অণুজীব থেকে দুধ, ডিম, মজার চকলেট উৎপাদনের জৈবপ্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয় আছে। বলে রাখা ভালো, অণুজীব হলেও এই প্রজাতির ইস্ট খুব নিরাপদ ও উপকারী।
গবেষণাগারে মাংস উৎপাদন
গত বছর ২ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগ গবেষণাগারে তৈরি কৃত্রিম মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ অচিরেই অনুমোদন দিতে যাচ্ছে এটিকে। পশু-পাখি ও মাছের একটি টিস্যু থেকে অবিকল স্বাদ, ঘ্রাণ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ মাংস এখন আর কোনো কল্পকাহিনি নয়। অচিরেই সস্তা, ক্ষতিকর উপাদানমুক্ত ‘ক্লিন মিট’ যে জনপ্রিয়তা পাবে, তাতে মোটেই সন্দেহ নেই। আর স্বাদে, গন্ধে, পুষ্টিতে অতুলনীয় এ বিকল্প আমিষ সবার জন্য হবে এক উপাদেয় খাদ্য। এ ব্যাপারে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। খাদ্যের জন্য পশু-পাখি, মাছ বধ করতে হবে না অদূর ভবিষ্যতে।
ভবিষ্যতে রেস্তোরাঁয় থাকবে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টার। আধুনিক প্রযুক্তিতে ঠাসা এই যন্ত্র গ্রাহকের পছন্দের খাবার তার সামনেই তৈরি করে দেবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের পকেটে বা ত্বকের নিচে থাকা খুবই ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য কার্ড (হেলথ কার্ড) বিশ্লেষণ করে গ্রাহকের জন্য ক্ষতিকর উপাদান বাদ দিয়ে উপকারী উপাদান যোগ করে সুষম ও মুখরোচক খাবার পরিবেশন করবে।
আজ কল্পকাহিনি মনে হলেও অচিরেই তা হবে অনেকটাই নিত্যনৈমিত্তিক; সাধারণ ব্যাপার। তাই এ মুহূর্তে যে প্রশ্ন বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, তা হলো, ভবিষ্যতে আমরা কী খাব?
লেখক: গবেষক ও লেখক, ফ্রান্স

বিশ্বের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেশ বা শহর নিয়ে প্রতিবছর আলোচনা হয়। কিন্তু এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যেগুলোতে শহরের আধুনিক সুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সেসব গ্রামে আলাদা করে কোনো নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই পরিষ্কার রাখার জন্য। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচ্ছন্ন...
৪ ঘণ্টা আগে
এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতির ঋতু হেমন্ত। নীরব আবেগে ঠাসা। শেষ শরতে ছাতিমের গন্ধে হেমন্ত আসে শিশিরভেজা হালকা শীতের ঘ্রাণ নিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু বলে একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। বর্ষার শেষের দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে উঠত, আর হেমন্তের অঘ্রানে পেকেও যেত।
৮ ঘণ্টা আগে
আপনার অর্থভাগ্য আজ ‘খুব খারাপ’ ঘোষণা হয়ে গেছে (সূত্রমতে, ঋণগ্রস্ত হতে পারেন)। এর অর্থ, ওয়ালেট আজ আন্তর্জাতিক ছুটি ঘোষণা করেছে এবং পকেটের অবস্থা ম্যালেরিয়া রোগীর মতো—একেবারে রুগ্ণ। আজ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার আগে দশবার ভাবুন।
৮ ঘণ্টা আগে
অতিথি আপ্যায়নে পাতে আমিষের এক পদ তুলে না দিলে আপ্যায়ন যেন অপূর্ণ থাকে। রাঁধতে যখন হবে, একটু ভিন্ন স্বাদের আমিষ রেঁধে মন ভরিয়ে দিতে পারেন অতিথির। চেনা আমিষের ভিন্ন পদের রেসিপি...
৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

বিশ্বের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেশ বা শহর নিয়ে প্রতিবছর আলোচনা হয়। কিন্তু এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যেগুলোতে শহরের আধুনিক সুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সেসব গ্রামে আলাদা করে কোনো নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই পরিষ্কার রাখার জন্য। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। এই গ্রামগুলো শুধু সুন্দর নয়, একই সঙ্গে সামাজিক ও পরিবেশগত সচেতনতার অনন্য উদাহরণ।
পেংলিপুরান, ইন্দোনেশিয়া
বালির ব্যাংলি জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন গ্রাম পেংলিপুরান। এখানে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের বাড়ি, পাথরের রাস্তা, ফুল-বাগানসহ গ্রামীণ পরিবেশ অত্যন্ত যত্নসহকারে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। গ্রামটির প্রতিটি পরিবারের সবাই পরিবেশ বিষয়ে সচেতন। তারা বর্জ্য পুনর্ব্যবহার এবং জৈব বর্জ্য সার ব্যবহার করে। সেখানে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ। গ্রামটিতে গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ। এর পাশাপাশি পর্যটকের সংখ্যা সীমিত রাখার কারণে সেখানকার পরিবেশ ও শান্তি ঠিক নির্বিঘ্ন আছে। পেংলিপুরান গ্রামের অধিবাসীদের ঐতিহ্যের অংশ পেনজোর ও বান্টেন উৎসব। এসব গ্রামের হোমস্টেগুলোতে থাকলে স্থানীয়দের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাওয়া যায়। সুযোগ পাওয়া যায় তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা দেখার। সব মিলিয়ে পরিচ্ছন্নতা ধরে রাখায় পেংলিপুরান গ্রাম পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
গিয়েথুর্ন, নেদারল্যান্ডস

‘উত্তরের ভেনিস’ বলে খ্যাত নেদারল্যান্ডসের গিয়েথুর্ন গ্রাম। সেখানে পাওয়া যায় না গাড়ির শব্দ, নেই রাস্তাঘাটে ব্যস্ততা। আছে শুধু শান্ত পানিপথ, ফুলে ভরা বাগান আর ছোট ছোট বাড়ি। গ্রামটিতে চলাচলের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় নৌকার ওপর। আরেকটি ব্যবস্থা আছে, সেটা হলো হাঁটা। স্থানীয়রা পরিবেশ রক্ষায় বেশ সচেতন। গ্রামটির খালে পানিও থাকে বারো মাস। পুরো গ্রাম ঘুরেও কোনো প্লাস্টিক বর্জ্য চোখে পড়বে না। এ গ্রামের মানুষ প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট না করতে পর্যটকদের অনুরোধ করে থাকে সব সময়। শীতকালে বরফে জমে যাওয়া খালে জমে ওঠে স্থানীয় মানুষদের স্কেটিং। গিয়েথুর্ন যেন আধুনিক সভ্যতার কোলাহলের বাইরে প্রকৃতির কোলে শান্ত জীবনের এক নিদর্শন।
মাওলাইনং, ভারত
এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম হিসেবে খ্যাত মাওলাইনং। গ্রামটিতে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় বাঁশের ডাস্টবিন। স্থানীয়রা নিয়মিত গ্রামের সবকিছু পরিষ্কার রাখে। গ্রামের প্রতিটি রাস্তা দেখলেই সেখানকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতার কথা উপলব্ধি করা যায়। গ্রামীণ সৌন্দর্যের উপভোগের পাশাপাশি সেখানকার পরিবেশ-সচেতনতা দেখতেও পর্যটকেরা ভিড় জমায় প্রতিবছর।

ইয়ানা, ভারত
দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের আছে ইয়ানা নামের এই গ্রাম। ঘন জঙ্গলের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা কালো চুনাপাথরের বিশাল শিলাখণ্ড ভৈরবেশ্বর ও মহাশক্তি শিখর গ্রামটির প্রধান আকর্ষণ। এখানের বাতাসে ভেসে বেড়ায় আসে বৃষ্টির গন্ধ আর পাখির ডাক। ইয়ানার বাসিন্দারা পরিচ্ছন্নতা ও প্রকৃতি রক্ষায় অত্যন্ত সচেতন। গ্রামটিতে প্লাস্টিক ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পর্যটকদেরও বর্জ্য নিজের সঙ্গে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। স্থানীয়রা পরিবেশবান্ধব পর্যটনকে উৎসাহিত করে, যাতে গ্রামের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক থাকে। গ্রামজুড়ে হাঁটার পথগুলো ঝকঝকে পরিষ্কার। আশপাশের ঝরনা ও পাহাড়ের দৃশ্য মিলিয়ে ইয়ানা ভ্রমণ বেশ উপভোগ্য অভিজ্ঞতা দেয়।
খোনোমা, ভারত

‘গ্রিন ভিলেজ’ নামে পরিচিত ভারতের নাগাল্যান্ডের খোনোমা গ্রাম। এটি ভারতের প্রথম পরিবেশবান্ধব গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। পাহাড় ঘেরা এই গ্রামের জনগণ একসময় শিকারনির্ভর জীবনে অভ্যস্ত ছিল। এখন গ্রামজুড়ে পরিষ্কার রাস্তা, কাঠের ছাদের ঐতিহ্যবাহী ঘর আর সবুজ ধানখেত মিলে তৈরি করেছে পোস্টকার্ডের মতো দৃশ্য। গ্রামটির মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস করে, তারা অতিথিপরায়ণ এবং নিজেদের সংস্কৃতি গর্বের সঙ্গে তুলে ধরে।
এই গ্রামগুলো শুধু ভ্রমণের জন্যই পরিচিতি পায়নি। এসব গ্রাম আমাদের শিখিয়েছে, আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শুধু সরকারের নির্দেশ থাকলেই হয় না। কমিউনিটি উদ্যোগ, সচেতনতা ও পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে পরিবেশ ও জীবনধারা পরিচ্ছন্ন তো বটেই, উন্নত করাও সম্ভব।
সূত্র: ট্রিপ অ্যাডভাইজার, ফোর্বস, ইন্ডিয়া ট্রাভেল

বিশ্বের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেশ বা শহর নিয়ে প্রতিবছর আলোচনা হয়। কিন্তু এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যেগুলোতে শহরের আধুনিক সুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সেসব গ্রামে আলাদা করে কোনো নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই পরিষ্কার রাখার জন্য। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। এই গ্রামগুলো শুধু সুন্দর নয়, একই সঙ্গে সামাজিক ও পরিবেশগত সচেতনতার অনন্য উদাহরণ।
পেংলিপুরান, ইন্দোনেশিয়া
বালির ব্যাংলি জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন গ্রাম পেংলিপুরান। এখানে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের বাড়ি, পাথরের রাস্তা, ফুল-বাগানসহ গ্রামীণ পরিবেশ অত্যন্ত যত্নসহকারে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। গ্রামটির প্রতিটি পরিবারের সবাই পরিবেশ বিষয়ে সচেতন। তারা বর্জ্য পুনর্ব্যবহার এবং জৈব বর্জ্য সার ব্যবহার করে। সেখানে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ। গ্রামটিতে গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ। এর পাশাপাশি পর্যটকের সংখ্যা সীমিত রাখার কারণে সেখানকার পরিবেশ ও শান্তি ঠিক নির্বিঘ্ন আছে। পেংলিপুরান গ্রামের অধিবাসীদের ঐতিহ্যের অংশ পেনজোর ও বান্টেন উৎসব। এসব গ্রামের হোমস্টেগুলোতে থাকলে স্থানীয়দের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাওয়া যায়। সুযোগ পাওয়া যায় তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা দেখার। সব মিলিয়ে পরিচ্ছন্নতা ধরে রাখায় পেংলিপুরান গ্রাম পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
গিয়েথুর্ন, নেদারল্যান্ডস

‘উত্তরের ভেনিস’ বলে খ্যাত নেদারল্যান্ডসের গিয়েথুর্ন গ্রাম। সেখানে পাওয়া যায় না গাড়ির শব্দ, নেই রাস্তাঘাটে ব্যস্ততা। আছে শুধু শান্ত পানিপথ, ফুলে ভরা বাগান আর ছোট ছোট বাড়ি। গ্রামটিতে চলাচলের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় নৌকার ওপর। আরেকটি ব্যবস্থা আছে, সেটা হলো হাঁটা। স্থানীয়রা পরিবেশ রক্ষায় বেশ সচেতন। গ্রামটির খালে পানিও থাকে বারো মাস। পুরো গ্রাম ঘুরেও কোনো প্লাস্টিক বর্জ্য চোখে পড়বে না। এ গ্রামের মানুষ প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট না করতে পর্যটকদের অনুরোধ করে থাকে সব সময়। শীতকালে বরফে জমে যাওয়া খালে জমে ওঠে স্থানীয় মানুষদের স্কেটিং। গিয়েথুর্ন যেন আধুনিক সভ্যতার কোলাহলের বাইরে প্রকৃতির কোলে শান্ত জীবনের এক নিদর্শন।
মাওলাইনং, ভারত
এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম হিসেবে খ্যাত মাওলাইনং। গ্রামটিতে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হয় এবং ব্যবহার করা হয় বাঁশের ডাস্টবিন। স্থানীয়রা নিয়মিত গ্রামের সবকিছু পরিষ্কার রাখে। গ্রামের প্রতিটি রাস্তা দেখলেই সেখানকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতার কথা উপলব্ধি করা যায়। গ্রামীণ সৌন্দর্যের উপভোগের পাশাপাশি সেখানকার পরিবেশ-সচেতনতা দেখতেও পর্যটকেরা ভিড় জমায় প্রতিবছর।

ইয়ানা, ভারত
দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের আছে ইয়ানা নামের এই গ্রাম। ঘন জঙ্গলের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকা কালো চুনাপাথরের বিশাল শিলাখণ্ড ভৈরবেশ্বর ও মহাশক্তি শিখর গ্রামটির প্রধান আকর্ষণ। এখানের বাতাসে ভেসে বেড়ায় আসে বৃষ্টির গন্ধ আর পাখির ডাক। ইয়ানার বাসিন্দারা পরিচ্ছন্নতা ও প্রকৃতি রক্ষায় অত্যন্ত সচেতন। গ্রামটিতে প্লাস্টিক ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পর্যটকদেরও বর্জ্য নিজের সঙ্গে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। স্থানীয়রা পরিবেশবান্ধব পর্যটনকে উৎসাহিত করে, যাতে গ্রামের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক থাকে। গ্রামজুড়ে হাঁটার পথগুলো ঝকঝকে পরিষ্কার। আশপাশের ঝরনা ও পাহাড়ের দৃশ্য মিলিয়ে ইয়ানা ভ্রমণ বেশ উপভোগ্য অভিজ্ঞতা দেয়।
খোনোমা, ভারত

‘গ্রিন ভিলেজ’ নামে পরিচিত ভারতের নাগাল্যান্ডের খোনোমা গ্রাম। এটি ভারতের প্রথম পরিবেশবান্ধব গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। পাহাড় ঘেরা এই গ্রামের জনগণ একসময় শিকারনির্ভর জীবনে অভ্যস্ত ছিল। এখন গ্রামজুড়ে পরিষ্কার রাস্তা, কাঠের ছাদের ঐতিহ্যবাহী ঘর আর সবুজ ধানখেত মিলে তৈরি করেছে পোস্টকার্ডের মতো দৃশ্য। গ্রামটির মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস করে, তারা অতিথিপরায়ণ এবং নিজেদের সংস্কৃতি গর্বের সঙ্গে তুলে ধরে।
এই গ্রামগুলো শুধু ভ্রমণের জন্যই পরিচিতি পায়নি। এসব গ্রাম আমাদের শিখিয়েছে, আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শুধু সরকারের নির্দেশ থাকলেই হয় না। কমিউনিটি উদ্যোগ, সচেতনতা ও পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে পরিবেশ ও জীবনধারা পরিচ্ছন্ন তো বটেই, উন্নত করাও সম্ভব।
সূত্র: ট্রিপ অ্যাডভাইজার, ফোর্বস, ইন্ডিয়া ট্রাভেল

নানা জাতের শৈবাল মানুষের খাদ্যতালিকায় রয়েছে। এ তালিকা আরও লম্বা হচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে গুবরে পোকার মতো নানা কীটপতঙ্গ। মানুষের ভবিষ্যৎ খাদ্যতালিকায় এমন অনেক কিছুই স্থান পাবে, যার কথা এখন ভাবাটাই কষ্টকর। ভবিষ্যতের খাবার নিয়ে লিখেছেন মইনুল হাসান
২৮ জুন ২০২১
এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতির ঋতু হেমন্ত। নীরব আবেগে ঠাসা। শেষ শরতে ছাতিমের গন্ধে হেমন্ত আসে শিশিরভেজা হালকা শীতের ঘ্রাণ নিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু বলে একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। বর্ষার শেষের দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে উঠত, আর হেমন্তের অঘ্রানে পেকেও যেত।
৮ ঘণ্টা আগে
আপনার অর্থভাগ্য আজ ‘খুব খারাপ’ ঘোষণা হয়ে গেছে (সূত্রমতে, ঋণগ্রস্ত হতে পারেন)। এর অর্থ, ওয়ালেট আজ আন্তর্জাতিক ছুটি ঘোষণা করেছে এবং পকেটের অবস্থা ম্যালেরিয়া রোগীর মতো—একেবারে রুগ্ণ। আজ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার আগে দশবার ভাবুন।
৮ ঘণ্টা আগে
অতিথি আপ্যায়নে পাতে আমিষের এক পদ তুলে না দিলে আপ্যায়ন যেন অপূর্ণ থাকে। রাঁধতে যখন হবে, একটু ভিন্ন স্বাদের আমিষ রেঁধে মন ভরিয়ে দিতে পারেন অতিথির। চেনা আমিষের ভিন্ন পদের রেসিপি...
৯ ঘণ্টা আগেছন্দা ব্যানার্জি

এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতির ঋতু হেমন্ত। নীরব আবেগে ঠাসা। শেষ শরতে ছাতিমের গন্ধে হেমন্ত আসে শিশিরভেজা হালকা শীতের ঘ্রাণ নিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু বলে একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। বর্ষার শেষের দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে উঠত, আর হেমন্তের অঘ্রানে পেকেও যেত। এই রূপ শুধু প্রকৃতিতেই নয়, বাঙালির খাবারের ঐতিহ্যেও ফুটে উঠেছে।
হেমন্তের খাবার বাঙালির কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। এই সময় নতুন ফসলের আমেজ নিয়ে আসে নতুন স্বাদ ও গন্ধ। নতুন চালের ভাত বাঙালির কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। এখন যে সবজির ফলন হয়, ফুল ফোটে, ফল হয়, তা দুই বাংলার মানুষের বিশেষ আকর্ষণ আর ঐতিহ্যেরও বটে।
বাংলায় হেমন্তের খাদ্য উৎসব শুরু হয় আশ্বিনের সংক্রান্তি থেকে। কথায় আছে, আশ্বিনে রাঁধে কার্তিকে খায়। কেউ কেউ বলেন ডাকসংক্রান্তি, আবার কেউ নলসংক্রান্তি। বাংলাদেশ থেকে শুরু করে রাঢ়বঙ্গের দেশঘরে, ব্রত আর পার্বণের দিন শুরু হয় সে সময় থেকে। কৃষিজীবন আর অ-কৃষিজাত শাকসবজি, আনাজের কাছে ফিরে যাওয়ার দিন শুরু হয়। প্রায় হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাসের মধ্যে ভেসে ওঠে খানিকটা খড়কুটোর মতো—গাডুর ডাল, সজলান্ন কিংবা ব্রতের ভাত।
গোলাভরা আউশের আশ্বাস আর খেতভরা আমনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে গর্ভিণী ধানের সাধভক্ষণ—নলসংক্রান্তি। এই ধান্য লক্ষ্মীর পূজা আসলে পৃথিবীর কাছে ফিরে যাওয়ার দিন। গ্রাম-বাংলার অ-কৃষিজাত কন্দমূল ও গাছগাছালিকে চিনে নেওয়ার সময়ও হেমন্তকাল। বাংলাদেশে কত রকমের যে কচু ছিল, সেই সব দিয়ে, শালুকের গোড়া, মটর বা খেসারির ডাল দিয়ে যে গাডুর ডাল রান্না হয়, সেই ডালকে মানুষ বলে ‘আসমবারি’।
এই হেমন্তের শুরুতে আসে ধন্বন্তরি বা অশ্বিনী দেবের পূজা। এদের ডাকপুরুষও বলে। সেই পূজার উপোস ভাঙতে এই ডাল আর ব্রতের ভাত খাওয়া হয়। ব্রতের ভাত রান্না হয় শ্যামা চালে। রেসিপি আলাদা। এই ভাতের সঙ্গে ডাল, নারকেল, পাকা কলা, গুড়, গ্রাম-বাংলার চালের পিঠা সব দেবতাকে নিবেদন করে তারপর খাওয়া হয়। আসলে হেমন্ত ঋতুতে এই পূজাগুলো আমাদের শেখায়, কোন শস্য কখন খেতে হয়, কোন শস্য বিষাক্ত কোন সময়ে।
হেমন্ত ঋতুতে ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে নবান্ন উৎসব হয়। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব এই নবান্ন। নতুন আমন ধান কাটার পর তা থেকে চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব এটি। কাঁচা দুধ, ছোট-বড় ছোলা, মটর, গোটা মটর, গোটা সবুজ মুগসহ ভেজানো ডালজাতীয় সব শস্যদানা, কামরাঙা, পানিফল, পেয়ারা, কমলালেবু, নারকেল ইত্যাদি হেমন্তে উৎপাদিত নানান ফলের টুকরা আর আমন ধান থেকে হওয়া নতুন চাল দিয়ে নবান্ন উৎসব হয়।
বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে ফসল তোলার পরের দিনেই নতুন চালের পায়েস, ক্ষীর, পিঠা আত্মীয়স্বজন এবং পড়শিদের ঘরে ঘরে বিতরণ করা হয়। হেমন্ত ঋতুর শুরুতে খেজুর ও তালগাছের রস গ্রাম-বাংলার অত্যন্ত প্রিয় পানীয়। ভোরে সূর্যের তেজ বাড়ার আগেই তা করতে হয় এই পানীয়। এই রস জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় খেজুর বা তালের গুড়।
হেমন্তে নতুন চাল থেকে তৈরি হয় খই। নতুন গুড় ও খই তৈরি হয় মোয়া, খেজুরের নতুন গুড়ের পায়েস, ক্ষীর, পিঠের আয়োজনে উৎসব শুরু হয়ে যায় পৌষ পার্বণের আগেই। এ ছাড়া হেমন্তকালের শুরুতে নদী, নালা, পুকুর, খাল, বিল—এসবের জল শুকিয়ে যেতে শুরু করে। এই সময় অন্যান্য পরিচিত মাছের সঙ্গে পুঁটি, চাঁদা, খলসে, গেঁড়ি গুগলি এবং কাঁকড়া পাওয়া যায় প্রচুর। তাই সাধারণ বাঙালি ঘরে এসব দিয়ে রান্না করা হয় বিভিন্ন পদ। এসব খাবার শরীরে পুষ্টি ও প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে পুরো বছরের জন্য।
এই সবকিছু মিলিয়ে হেমন্তের সুঘ্রাণ দুই বাংলায় ছড়িয়ে থাকে।
ছন্দা ব্যানার্জি, রন্ধনশিল্পী ও খাদ্যবিষয়ক লেখক

এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতির ঋতু হেমন্ত। নীরব আবেগে ঠাসা। শেষ শরতে ছাতিমের গন্ধে হেমন্ত আসে শিশিরভেজা হালকা শীতের ঘ্রাণ নিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু বলে একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। বর্ষার শেষের দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে উঠত, আর হেমন্তের অঘ্রানে পেকেও যেত। এই রূপ শুধু প্রকৃতিতেই নয়, বাঙালির খাবারের ঐতিহ্যেও ফুটে উঠেছে।
হেমন্তের খাবার বাঙালির কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। এই সময় নতুন ফসলের আমেজ নিয়ে আসে নতুন স্বাদ ও গন্ধ। নতুন চালের ভাত বাঙালির কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। এখন যে সবজির ফলন হয়, ফুল ফোটে, ফল হয়, তা দুই বাংলার মানুষের বিশেষ আকর্ষণ আর ঐতিহ্যেরও বটে।
বাংলায় হেমন্তের খাদ্য উৎসব শুরু হয় আশ্বিনের সংক্রান্তি থেকে। কথায় আছে, আশ্বিনে রাঁধে কার্তিকে খায়। কেউ কেউ বলেন ডাকসংক্রান্তি, আবার কেউ নলসংক্রান্তি। বাংলাদেশ থেকে শুরু করে রাঢ়বঙ্গের দেশঘরে, ব্রত আর পার্বণের দিন শুরু হয় সে সময় থেকে। কৃষিজীবন আর অ-কৃষিজাত শাকসবজি, আনাজের কাছে ফিরে যাওয়ার দিন শুরু হয়। প্রায় হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাসের মধ্যে ভেসে ওঠে খানিকটা খড়কুটোর মতো—গাডুর ডাল, সজলান্ন কিংবা ব্রতের ভাত।
গোলাভরা আউশের আশ্বাস আর খেতভরা আমনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে গর্ভিণী ধানের সাধভক্ষণ—নলসংক্রান্তি। এই ধান্য লক্ষ্মীর পূজা আসলে পৃথিবীর কাছে ফিরে যাওয়ার দিন। গ্রাম-বাংলার অ-কৃষিজাত কন্দমূল ও গাছগাছালিকে চিনে নেওয়ার সময়ও হেমন্তকাল। বাংলাদেশে কত রকমের যে কচু ছিল, সেই সব দিয়ে, শালুকের গোড়া, মটর বা খেসারির ডাল দিয়ে যে গাডুর ডাল রান্না হয়, সেই ডালকে মানুষ বলে ‘আসমবারি’।
এই হেমন্তের শুরুতে আসে ধন্বন্তরি বা অশ্বিনী দেবের পূজা। এদের ডাকপুরুষও বলে। সেই পূজার উপোস ভাঙতে এই ডাল আর ব্রতের ভাত খাওয়া হয়। ব্রতের ভাত রান্না হয় শ্যামা চালে। রেসিপি আলাদা। এই ভাতের সঙ্গে ডাল, নারকেল, পাকা কলা, গুড়, গ্রাম-বাংলার চালের পিঠা সব দেবতাকে নিবেদন করে তারপর খাওয়া হয়। আসলে হেমন্ত ঋতুতে এই পূজাগুলো আমাদের শেখায়, কোন শস্য কখন খেতে হয়, কোন শস্য বিষাক্ত কোন সময়ে।
হেমন্ত ঋতুতে ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে নবান্ন উৎসব হয়। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব এই নবান্ন। নতুন আমন ধান কাটার পর তা থেকে চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব এটি। কাঁচা দুধ, ছোট-বড় ছোলা, মটর, গোটা মটর, গোটা সবুজ মুগসহ ভেজানো ডালজাতীয় সব শস্যদানা, কামরাঙা, পানিফল, পেয়ারা, কমলালেবু, নারকেল ইত্যাদি হেমন্তে উৎপাদিত নানান ফলের টুকরা আর আমন ধান থেকে হওয়া নতুন চাল দিয়ে নবান্ন উৎসব হয়।
বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে ফসল তোলার পরের দিনেই নতুন চালের পায়েস, ক্ষীর, পিঠা আত্মীয়স্বজন এবং পড়শিদের ঘরে ঘরে বিতরণ করা হয়। হেমন্ত ঋতুর শুরুতে খেজুর ও তালগাছের রস গ্রাম-বাংলার অত্যন্ত প্রিয় পানীয়। ভোরে সূর্যের তেজ বাড়ার আগেই তা করতে হয় এই পানীয়। এই রস জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় খেজুর বা তালের গুড়।
হেমন্তে নতুন চাল থেকে তৈরি হয় খই। নতুন গুড় ও খই তৈরি হয় মোয়া, খেজুরের নতুন গুড়ের পায়েস, ক্ষীর, পিঠের আয়োজনে উৎসব শুরু হয়ে যায় পৌষ পার্বণের আগেই। এ ছাড়া হেমন্তকালের শুরুতে নদী, নালা, পুকুর, খাল, বিল—এসবের জল শুকিয়ে যেতে শুরু করে। এই সময় অন্যান্য পরিচিত মাছের সঙ্গে পুঁটি, চাঁদা, খলসে, গেঁড়ি গুগলি এবং কাঁকড়া পাওয়া যায় প্রচুর। তাই সাধারণ বাঙালি ঘরে এসব দিয়ে রান্না করা হয় বিভিন্ন পদ। এসব খাবার শরীরে পুষ্টি ও প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করে পুরো বছরের জন্য।
এই সবকিছু মিলিয়ে হেমন্তের সুঘ্রাণ দুই বাংলায় ছড়িয়ে থাকে।
ছন্দা ব্যানার্জি, রন্ধনশিল্পী ও খাদ্যবিষয়ক লেখক

নানা জাতের শৈবাল মানুষের খাদ্যতালিকায় রয়েছে। এ তালিকা আরও লম্বা হচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে গুবরে পোকার মতো নানা কীটপতঙ্গ। মানুষের ভবিষ্যৎ খাদ্যতালিকায় এমন অনেক কিছুই স্থান পাবে, যার কথা এখন ভাবাটাই কষ্টকর। ভবিষ্যতের খাবার নিয়ে লিখেছেন মইনুল হাসান
২৮ জুন ২০২১
বিশ্বের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেশ বা শহর নিয়ে প্রতিবছর আলোচনা হয়। কিন্তু এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যেগুলোতে শহরের আধুনিক সুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সেসব গ্রামে আলাদা করে কোনো নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই পরিষ্কার রাখার জন্য। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচ্ছন্ন...
৪ ঘণ্টা আগে
আপনার অর্থভাগ্য আজ ‘খুব খারাপ’ ঘোষণা হয়ে গেছে (সূত্রমতে, ঋণগ্রস্ত হতে পারেন)। এর অর্থ, ওয়ালেট আজ আন্তর্জাতিক ছুটি ঘোষণা করেছে এবং পকেটের অবস্থা ম্যালেরিয়া রোগীর মতো—একেবারে রুগ্ণ। আজ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার আগে দশবার ভাবুন।
৮ ঘণ্টা আগে
অতিথি আপ্যায়নে পাতে আমিষের এক পদ তুলে না দিলে আপ্যায়ন যেন অপূর্ণ থাকে। রাঁধতে যখন হবে, একটু ভিন্ন স্বাদের আমিষ রেঁধে মন ভরিয়ে দিতে পারেন অতিথির। চেনা আমিষের ভিন্ন পদের রেসিপি...
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আপনার অর্থভাগ্য আজ ‘খুব খারাপ’ ঘোষণা হয়ে গেছে (সূত্রমতে, ঋণগ্রস্ত হতে পারেন)। এর অর্থ, ওয়ালেট আজ আন্তর্জাতিক ছুটি ঘোষণা করেছে এবং পকেটের অবস্থা ম্যালেরিয়া রোগীর মতো—একেবারে রুগ্ণ। আজ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার আগে দশবার ভাবুন। যদি ভাবা সম্ভব না হয়, তবে ভাবুন, ‘হতে পারে এটা আমার জীবনের সেরা কেনাকাটা!’ জ্যোতিষীরা বলছেন, প্রিয়জনের কুকর্মের জন্য বাড়িতে বিবাদ হতে পারে। সম্ভবত আপনার প্রিয়জন লুকিয়ে রাখা চকলেট বা রিমোট কন্ট্রোল চুরি করেছে—এর চেয়ে বড় কুকর্ম আর কী হতে পারে! কেউ যদি ‘বিনিয়োগ করুন, দ্বিগুণ হবে’ বলে, তবে দৌড়ে পালান। দৌড়াতে না পারলে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকুন।
বৃষ
অফিসে কোনো সহকর্মীর সঙ্গে বিবাদ হতে পারে। মনে রাখবেন, বৃষ রাশির জাতক হিসেবে আপনার জেদ বা একগুঁয়েমি ষাঁড়ের মতোই খ্যাত! অফিসের ঝগড়াটা সম্ভবত বড় কোনো বিষয় নিয়ে হবে না—হতে পারে কে এসির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কমিয়েছিল, অথবা কে শেষ বিস্কুটটা খেলো। যদি কেউ কোনো ‘অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে অধিক চর্চা’ করতে নিষেধ করে, তবে ধরে নিন সে আপনার নতুন প্রতিভাবান সহকর্মী, যে আপনার কফির বয়াম চুরি করতে পারে। অবসাদ এড়াতে, দুপুরে একটা শর্ট ন্যাপ নিন। যদি বস ধরে ফেলে, বলুন—ধ্যান করছিলাম, নক্ষত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছিলাম। আজ শান্ত থাকুন। যদি খুব রাগ হয়, তবে চেঁচানোর বদলে মনে মনে রবীন্দ্রসংগীত শুনুন।
মিথুন
নতুন প্রকল্পে কাজ শুরুর আগে ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করে নিন। আপনার শত্রু আজ সক্রিয় থাকবে, কিন্তু আর্থিক লাভের সম্ভাবনাও রয়েছে। আপনার ‘নতুন প্রকল্প’ যদি হয় ফ্রিজের পুরোনো খাবার পরিষ্কার করা, তবে সত্যিই ভালোভাবে চিন্তা করুন—গ্যাস মাস্ক লাগবে কি না। বন্ধুরা আজ আপনার সঙ্গে ভালো সময় কাটাবে, কারণ আপনার নতুন আয়ের খবর তারা জেনে গেছে। শত্রু সক্রিয় মানে এই নয় যে কেউ আপনার ক্ষতি করবে; হতে পারে সে শুধু আপনার ফেসবুক পোস্টগুলোতে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দিয়ে যাবে। এর চেয়ে যন্ত্রণাদায়ক আর কী আছে! আজ দ্বৈত-চরিত্রটি কাজে লাগান। এক মিথুন কাজ করবে, অন্য মিথুন হিসাব রাখবে।
কর্কট
দাম্পত্য জীবন সুখে কাটবে এবং প্রায় সব কাজই পূর্ণ হবে। তবে কথা বলার সময় সাবধান থাকুন। আপনার দাম্পত্য জীবন সুখে কাটবে কারণ...সম্ভবত সঙ্গী আজ সারা দিন ব্যস্ত থাকবেন এবং রিমোট কন্ট্রোলটির ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য পাবেন। আপনার সব কাজ পূর্ণ হবে, এমনকি সেই কাজটিও—যেটা গত তিন সপ্তাহ ধরে ‘পরে করব’ বলে ফেলে রেখেছিলেন। সাবধানতা অবলম্বন করে কথা বলুন—বিশেষ করে যখন কেউ জিজ্ঞেস করবে, ‘তুমি কি আমার জন্য কিছু কিনেছ?’ মিথ্যা বলা বারণ। যাত্রা শুভ।
সিংহ
পরিবার নিয়ে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন। অন্য কারও বিবাদে জড়াবেন না। আয় বাড়বে। আয় বাড়ার সুসংবাদ শুনেছেন, তাই আজ নিজেকে রাজা বা রানির মতো অনুভব করবেন। তবে অন্য কারও বিবাদে জড়াবেন না। কারণ, যেই মুহূর্তে মাঝখানে মধ্যস্থতা করতে যাবেন, সবাই আপনার বিরুদ্ধেই জোট বাঁধবে—সিংহ মশাই, সাবধান! ‘সামাজিক কাজে অংশ নিতে পারেন’ মানে সম্ভবত পাড়ার কোনো জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রচুর খাবার খেতে পারেন। আপনার মনোমুগ্ধকর মনোভাব আজ কাজে লাগান—কিন্তু বিল মেটানোর সময় ভেজা বিড়াল হয়ে থাকুন।
কন্যা
আলস্য করবেন না। অচেনা ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকুন। ব্যবসা সংক্রান্ত কাজ পূর্ণ হবে। গ্রহরা যেন আজ আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে শাসিয়ে গেছে—‘আলস্য নৈব নৈব চ!’ যদি সকালে অ্যালার্ম বাজানোর পরও বিছানায় থাকার চেষ্টা করেন, তবে ধরে নিন, গ্রহদের কাছ থেকে কড়া বার্তা আসবে। অচেনা ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকুন, কারণ আজকের দিনে আপনার সবচেয়ে অচেনা ব্যক্তিটি হতে পারে সেই যিনি নিজেকে ‘ডায়েট চার্ট’ বা ‘ব্যালেন্স শিট’ বলে দাবি করছেন। আলস্য না করে অন্তত একবার টেবিল গুছিয়ে নিন—সেটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় সাফল্য। পরিবারে আনন্দের পরিবেশ থাকবে, কারণ আপনি অবশেষে কাজ শুরু করেছেন!
তুলা
চাকরিজীবীরা সুখবর পাবেন। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। ঝুঁকি নেবেন না। চাকরিজীবীরা সুখবর পাবেন, যেমন—বস অবশেষে আপনার পাঠানো ই-মেলের রিপ্লাই দিয়েছেন। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধান—সেটা যেন টিভি দেখার প্রতিযোগিতা না হয়। ‘ঝুঁকি নেবেন না’ মানে হলো, আজ কোনোমতেই সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করবেন না যে তার ওজন বেড়েছে কিনা। নতুন মানুষদের সঙ্গে দেখা হতে পারে, কিন্তু তারা আপনাকে নতুন দায়িত্বের ফাঁদে ফেলতে পারে—তাই হাসি-খুশি থাকুন, কিন্তু নীরব। আনন্দে দিন কাটবে, যদি আপনি মনের ভেতরের বিচারপতিকে আজ ছুটি দিতে পারেন।
বৃশ্চিক
আবেগগত যোগাযোগে আরও ভালো থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন হবে এবং শুভ সংবাদ পাবেন। আজ আবেগগতভাবে এত ভালো থাকবেন যে পথে কুকুর দেখলেও তাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করতে পারে! আপনার ‘শুভ সংবাদ’ সম্ভবত এটাই যে আপনি পুরোনো প্যান্টের পকেটে কিছু টাকা খুঁজে পেয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন হবে—যেমন ধরুন, আপনি ইউটিউবের শর্টস দেখা শেষ করে অবশেষে মূল বা লং ভিডিও দেখা শুরু করবেন। অন্যদের আকৃষ্ট করার জন্য কথা বলার সময় সুন্দর থাকুন। তবে সুন্দর কথাগুলো যেন লোন বা ধার চাওয়ার জন্য ব্যবহার না হয়। আর্থিক বিষয়গুলো গতি পাবে, তাই আজই পুরোনো লোনগুলো পরিশোধ করার কথা ভাবুন...যদি পকেটে কিছু থাকে।
ধনু
নিজেকে অস্বস্তিকর ও চাপের মধ্যে অনুভব করতে পারেন। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকুন এবং খাওয়া-দাওয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন। আপনি অস্বস্তিকর বোধ করবেন কারণ আপনার মন আপনাকে সারা বিশ্বে ঘোরার জন্য চাপ দিচ্ছে, কিন্তু আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ঘরে বসে নেটফ্লিক্স দেখতে বলছে। ‘খাওয়া-দাওয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন’ এই পরামর্শটি আপনার জন্য আজ সম্পূর্ণ হাস্যকর। গ্রহরা কি জানে না যে, পৃথিবীতে এত মুখরোচক খাবার থাকতে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব? নেতিবাচক আবেগ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন, যেমন ধরুন—অন্যের খাবার শেষ হয়ে গেলেও আপনার প্লেটে আরও আছে, এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। ইতিবাচক থাকুন! আজ আপনি যা কিছু খাবেন, সেটাই আপনার জন্য শক্তি—এই সহজ সত্যিটা মেনে নিন।
মকর
লক্ষ্যের ওপর মনোযোগ বজায় থাকবে। কাঙ্ক্ষিত অফার পাবেন এবং কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। মকর রাশির জাতক হিসেবে আপনার লক্ষ্যের ওপর মনোযোগ বজায় থাকবে—বিশেষ করে, যদি লক্ষ্যটি হয় সময়মতো রাতের খাবার খাওয়া। আর আপনি কাঙ্ক্ষিত অফার পাবেন! সম্ভবত কোনো প্রিয় রেস্টুরেন্টে বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি-এর অফার। কাজের গতি কার্যকর থাকবে, যার ফলে অফিস থেকে সবার আগে বেরোনোর সুযোগ পাবেন। পেশাগত স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে— চেয়ারটা আজ আপনাকে সবচেয়ে বেশি আরাম দেবে। ব্যক্তিগত জীবনে ধৈর্য ও ধর্ম নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে—বিশেষ করে যখন কেউ আপনাকে কাজ শেখাতে আসে।
কুম্ভ
কাজের ব্যস্ততা বাড়তে পারে। স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন এবং পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের যত্ন নিন। কাজের ব্যস্ততা বাড়বে, কারণ সমস্ত কাজ ফেলে রেখে নতুন করে কাজ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আজ যোগব্যায়াম করুন। যদি যোগব্যায়াম করতে আলস্য লাগে, তবে অন্তত ফ্রিজ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করুন, সেটাও একপ্রকার ব্যায়াম। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের যত্ন নিন—কিন্তু তার আগে নিশ্চিত হন যে, তাদের টিভি সিরিয়ালের সময়টা নষ্ট করছেন না। আজকের দিনটি স্বাভাবিক হতে চলেছে, মানে কোনো অলৌকিক ঘটনা না ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। ক্যারিয়ারে রাজনীতির শিকার হওয়া এড়িয়ে চলুন। অর্থাৎ, বসের কানের কাছে কোনো গসিপ করতে যাবেন না।
মীন
প্রেমের জীবনে আজ একটি চমকের সম্মুখীন হতে পারেন। আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো। শরীরকে বিশ্রাম দিন। প্রেমের জীবনে ‘চমক’ হয়তো এটাই যে, আপনার সঙ্গী আজ নিজেই শেষ চকলেটটি না খেয়ে আপনার জন্য রেখে দিয়েছে। আপনার আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো, কিন্তু সেটার ব্যবহার করে একটা লটারি না কেটে বরং নিজের জন্য একটা ভালো কফি কিনুন। শরীরকে বিশ্রাম দিন—কিন্তু বিশ্রাম নিতে নিতে যদি ঘুমিয়ে পড়েন, তবে গ্রহরা আপনাকে দোষ দেবে না। কর্মক্ষেত্রের কাজ দ্রুত শেষ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরুন। জ্যোতিষীরা বলছেন, পরিবারের সঙ্গে পার্কে বা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন। যদি সিনেমা দেখতে ভালো না লাগে, তবে একাই বারান্দায় বসে প্রকৃতির নাটক দেখতে পারেন! আপনার নেওয়া একটি দৃঢ় পদক্ষেপ আজ ইতিবাচক ফল দেবে। হয়তো অবশেষে জামাকাপড় কাচার কাজটা শুরু করে দিয়েছেন!

মেষ
আপনার অর্থভাগ্য আজ ‘খুব খারাপ’ ঘোষণা হয়ে গেছে (সূত্রমতে, ঋণগ্রস্ত হতে পারেন)। এর অর্থ, ওয়ালেট আজ আন্তর্জাতিক ছুটি ঘোষণা করেছে এবং পকেটের অবস্থা ম্যালেরিয়া রোগীর মতো—একেবারে রুগ্ণ। আজ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার আগে দশবার ভাবুন। যদি ভাবা সম্ভব না হয়, তবে ভাবুন, ‘হতে পারে এটা আমার জীবনের সেরা কেনাকাটা!’ জ্যোতিষীরা বলছেন, প্রিয়জনের কুকর্মের জন্য বাড়িতে বিবাদ হতে পারে। সম্ভবত আপনার প্রিয়জন লুকিয়ে রাখা চকলেট বা রিমোট কন্ট্রোল চুরি করেছে—এর চেয়ে বড় কুকর্ম আর কী হতে পারে! কেউ যদি ‘বিনিয়োগ করুন, দ্বিগুণ হবে’ বলে, তবে দৌড়ে পালান। দৌড়াতে না পারলে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকুন।
বৃষ
অফিসে কোনো সহকর্মীর সঙ্গে বিবাদ হতে পারে। মনে রাখবেন, বৃষ রাশির জাতক হিসেবে আপনার জেদ বা একগুঁয়েমি ষাঁড়ের মতোই খ্যাত! অফিসের ঝগড়াটা সম্ভবত বড় কোনো বিষয় নিয়ে হবে না—হতে পারে কে এসির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কমিয়েছিল, অথবা কে শেষ বিস্কুটটা খেলো। যদি কেউ কোনো ‘অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে অধিক চর্চা’ করতে নিষেধ করে, তবে ধরে নিন সে আপনার নতুন প্রতিভাবান সহকর্মী, যে আপনার কফির বয়াম চুরি করতে পারে। অবসাদ এড়াতে, দুপুরে একটা শর্ট ন্যাপ নিন। যদি বস ধরে ফেলে, বলুন—ধ্যান করছিলাম, নক্ষত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছিলাম। আজ শান্ত থাকুন। যদি খুব রাগ হয়, তবে চেঁচানোর বদলে মনে মনে রবীন্দ্রসংগীত শুনুন।
মিথুন
নতুন প্রকল্পে কাজ শুরুর আগে ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করে নিন। আপনার শত্রু আজ সক্রিয় থাকবে, কিন্তু আর্থিক লাভের সম্ভাবনাও রয়েছে। আপনার ‘নতুন প্রকল্প’ যদি হয় ফ্রিজের পুরোনো খাবার পরিষ্কার করা, তবে সত্যিই ভালোভাবে চিন্তা করুন—গ্যাস মাস্ক লাগবে কি না। বন্ধুরা আজ আপনার সঙ্গে ভালো সময় কাটাবে, কারণ আপনার নতুন আয়ের খবর তারা জেনে গেছে। শত্রু সক্রিয় মানে এই নয় যে কেউ আপনার ক্ষতি করবে; হতে পারে সে শুধু আপনার ফেসবুক পোস্টগুলোতে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট দিয়ে যাবে। এর চেয়ে যন্ত্রণাদায়ক আর কী আছে! আজ দ্বৈত-চরিত্রটি কাজে লাগান। এক মিথুন কাজ করবে, অন্য মিথুন হিসাব রাখবে।
কর্কট
দাম্পত্য জীবন সুখে কাটবে এবং প্রায় সব কাজই পূর্ণ হবে। তবে কথা বলার সময় সাবধান থাকুন। আপনার দাম্পত্য জীবন সুখে কাটবে কারণ...সম্ভবত সঙ্গী আজ সারা দিন ব্যস্ত থাকবেন এবং রিমোট কন্ট্রোলটির ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য পাবেন। আপনার সব কাজ পূর্ণ হবে, এমনকি সেই কাজটিও—যেটা গত তিন সপ্তাহ ধরে ‘পরে করব’ বলে ফেলে রেখেছিলেন। সাবধানতা অবলম্বন করে কথা বলুন—বিশেষ করে যখন কেউ জিজ্ঞেস করবে, ‘তুমি কি আমার জন্য কিছু কিনেছ?’ মিথ্যা বলা বারণ। যাত্রা শুভ।
সিংহ
পরিবার নিয়ে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন। অন্য কারও বিবাদে জড়াবেন না। আয় বাড়বে। আয় বাড়ার সুসংবাদ শুনেছেন, তাই আজ নিজেকে রাজা বা রানির মতো অনুভব করবেন। তবে অন্য কারও বিবাদে জড়াবেন না। কারণ, যেই মুহূর্তে মাঝখানে মধ্যস্থতা করতে যাবেন, সবাই আপনার বিরুদ্ধেই জোট বাঁধবে—সিংহ মশাই, সাবধান! ‘সামাজিক কাজে অংশ নিতে পারেন’ মানে সম্ভবত পাড়ার কোনো জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রচুর খাবার খেতে পারেন। আপনার মনোমুগ্ধকর মনোভাব আজ কাজে লাগান—কিন্তু বিল মেটানোর সময় ভেজা বিড়াল হয়ে থাকুন।
কন্যা
আলস্য করবেন না। অচেনা ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকুন। ব্যবসা সংক্রান্ত কাজ পূর্ণ হবে। গ্রহরা যেন আজ আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে শাসিয়ে গেছে—‘আলস্য নৈব নৈব চ!’ যদি সকালে অ্যালার্ম বাজানোর পরও বিছানায় থাকার চেষ্টা করেন, তবে ধরে নিন, গ্রহদের কাছ থেকে কড়া বার্তা আসবে। অচেনা ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকুন, কারণ আজকের দিনে আপনার সবচেয়ে অচেনা ব্যক্তিটি হতে পারে সেই যিনি নিজেকে ‘ডায়েট চার্ট’ বা ‘ব্যালেন্স শিট’ বলে দাবি করছেন। আলস্য না করে অন্তত একবার টেবিল গুছিয়ে নিন—সেটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় সাফল্য। পরিবারে আনন্দের পরিবেশ থাকবে, কারণ আপনি অবশেষে কাজ শুরু করেছেন!
তুলা
চাকরিজীবীরা সুখবর পাবেন। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। ঝুঁকি নেবেন না। চাকরিজীবীরা সুখবর পাবেন, যেমন—বস অবশেষে আপনার পাঠানো ই-মেলের রিপ্লাই দিয়েছেন। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন, কিন্তু সাবধান—সেটা যেন টিভি দেখার প্রতিযোগিতা না হয়। ‘ঝুঁকি নেবেন না’ মানে হলো, আজ কোনোমতেই সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করবেন না যে তার ওজন বেড়েছে কিনা। নতুন মানুষদের সঙ্গে দেখা হতে পারে, কিন্তু তারা আপনাকে নতুন দায়িত্বের ফাঁদে ফেলতে পারে—তাই হাসি-খুশি থাকুন, কিন্তু নীরব। আনন্দে দিন কাটবে, যদি আপনি মনের ভেতরের বিচারপতিকে আজ ছুটি দিতে পারেন।
বৃশ্চিক
আবেগগত যোগাযোগে আরও ভালো থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন হবে এবং শুভ সংবাদ পাবেন। আজ আবেগগতভাবে এত ভালো থাকবেন যে পথে কুকুর দেখলেও তাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করতে পারে! আপনার ‘শুভ সংবাদ’ সম্ভবত এটাই যে আপনি পুরোনো প্যান্টের পকেটে কিছু টাকা খুঁজে পেয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন হবে—যেমন ধরুন, আপনি ইউটিউবের শর্টস দেখা শেষ করে অবশেষে মূল বা লং ভিডিও দেখা শুরু করবেন। অন্যদের আকৃষ্ট করার জন্য কথা বলার সময় সুন্দর থাকুন। তবে সুন্দর কথাগুলো যেন লোন বা ধার চাওয়ার জন্য ব্যবহার না হয়। আর্থিক বিষয়গুলো গতি পাবে, তাই আজই পুরোনো লোনগুলো পরিশোধ করার কথা ভাবুন...যদি পকেটে কিছু থাকে।
ধনু
নিজেকে অস্বস্তিকর ও চাপের মধ্যে অনুভব করতে পারেন। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকুন এবং খাওয়া-দাওয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন। আপনি অস্বস্তিকর বোধ করবেন কারণ আপনার মন আপনাকে সারা বিশ্বে ঘোরার জন্য চাপ দিচ্ছে, কিন্তু আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ঘরে বসে নেটফ্লিক্স দেখতে বলছে। ‘খাওয়া-দাওয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন’ এই পরামর্শটি আপনার জন্য আজ সম্পূর্ণ হাস্যকর। গ্রহরা কি জানে না যে, পৃথিবীতে এত মুখরোচক খাবার থাকতে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব? নেতিবাচক আবেগ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন, যেমন ধরুন—অন্যের খাবার শেষ হয়ে গেলেও আপনার প্লেটে আরও আছে, এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। ইতিবাচক থাকুন! আজ আপনি যা কিছু খাবেন, সেটাই আপনার জন্য শক্তি—এই সহজ সত্যিটা মেনে নিন।
মকর
লক্ষ্যের ওপর মনোযোগ বজায় থাকবে। কাঙ্ক্ষিত অফার পাবেন এবং কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। মকর রাশির জাতক হিসেবে আপনার লক্ষ্যের ওপর মনোযোগ বজায় থাকবে—বিশেষ করে, যদি লক্ষ্যটি হয় সময়মতো রাতের খাবার খাওয়া। আর আপনি কাঙ্ক্ষিত অফার পাবেন! সম্ভবত কোনো প্রিয় রেস্টুরেন্টে বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি-এর অফার। কাজের গতি কার্যকর থাকবে, যার ফলে অফিস থেকে সবার আগে বেরোনোর সুযোগ পাবেন। পেশাগত স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে— চেয়ারটা আজ আপনাকে সবচেয়ে বেশি আরাম দেবে। ব্যক্তিগত জীবনে ধৈর্য ও ধর্ম নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে—বিশেষ করে যখন কেউ আপনাকে কাজ শেখাতে আসে।
কুম্ভ
কাজের ব্যস্ততা বাড়তে পারে। স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন এবং পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের যত্ন নিন। কাজের ব্যস্ততা বাড়বে, কারণ সমস্ত কাজ ফেলে রেখে নতুন করে কাজ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আজ যোগব্যায়াম করুন। যদি যোগব্যায়াম করতে আলস্য লাগে, তবে অন্তত ফ্রিজ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করুন, সেটাও একপ্রকার ব্যায়াম। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের যত্ন নিন—কিন্তু তার আগে নিশ্চিত হন যে, তাদের টিভি সিরিয়ালের সময়টা নষ্ট করছেন না। আজকের দিনটি স্বাভাবিক হতে চলেছে, মানে কোনো অলৌকিক ঘটনা না ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। ক্যারিয়ারে রাজনীতির শিকার হওয়া এড়িয়ে চলুন। অর্থাৎ, বসের কানের কাছে কোনো গসিপ করতে যাবেন না।
মীন
প্রেমের জীবনে আজ একটি চমকের সম্মুখীন হতে পারেন। আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো। শরীরকে বিশ্রাম দিন। প্রেমের জীবনে ‘চমক’ হয়তো এটাই যে, আপনার সঙ্গী আজ নিজেই শেষ চকলেটটি না খেয়ে আপনার জন্য রেখে দিয়েছে। আপনার আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো, কিন্তু সেটার ব্যবহার করে একটা লটারি না কেটে বরং নিজের জন্য একটা ভালো কফি কিনুন। শরীরকে বিশ্রাম দিন—কিন্তু বিশ্রাম নিতে নিতে যদি ঘুমিয়ে পড়েন, তবে গ্রহরা আপনাকে দোষ দেবে না। কর্মক্ষেত্রের কাজ দ্রুত শেষ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরুন। জ্যোতিষীরা বলছেন, পরিবারের সঙ্গে পার্কে বা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন। যদি সিনেমা দেখতে ভালো না লাগে, তবে একাই বারান্দায় বসে প্রকৃতির নাটক দেখতে পারেন! আপনার নেওয়া একটি দৃঢ় পদক্ষেপ আজ ইতিবাচক ফল দেবে। হয়তো অবশেষে জামাকাপড় কাচার কাজটা শুরু করে দিয়েছেন!

নানা জাতের শৈবাল মানুষের খাদ্যতালিকায় রয়েছে। এ তালিকা আরও লম্বা হচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে গুবরে পোকার মতো নানা কীটপতঙ্গ। মানুষের ভবিষ্যৎ খাদ্যতালিকায় এমন অনেক কিছুই স্থান পাবে, যার কথা এখন ভাবাটাই কষ্টকর। ভবিষ্যতের খাবার নিয়ে লিখেছেন মইনুল হাসান
২৮ জুন ২০২১
বিশ্বের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেশ বা শহর নিয়ে প্রতিবছর আলোচনা হয়। কিন্তু এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যেগুলোতে শহরের আধুনিক সুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সেসব গ্রামে আলাদা করে কোনো নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই পরিষ্কার রাখার জন্য। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচ্ছন্ন...
৪ ঘণ্টা আগে
এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতির ঋতু হেমন্ত। নীরব আবেগে ঠাসা। শেষ শরতে ছাতিমের গন্ধে হেমন্ত আসে শিশিরভেজা হালকা শীতের ঘ্রাণ নিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু বলে একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। বর্ষার শেষের দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে উঠত, আর হেমন্তের অঘ্রানে পেকেও যেত।
৮ ঘণ্টা আগে
অতিথি আপ্যায়নে পাতে আমিষের এক পদ তুলে না দিলে আপ্যায়ন যেন অপূর্ণ থাকে। রাঁধতে যখন হবে, একটু ভিন্ন স্বাদের আমিষ রেঁধে মন ভরিয়ে দিতে পারেন অতিথির। চেনা আমিষের ভিন্ন পদের রেসিপি...
৯ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

অতিথি আপ্যায়নে পাতে আমিষের এক পদ তুলে না দিলে আপ্যায়ন যেন অপূর্ণ থাকে। রাঁধতে যখন হবে, একটু ভিন্ন স্বাদের আমিষ রেঁধে মন ভরিয়ে দিতে পারেন অতিথির। চেনা আমিষের ভিন্ন পদের রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
উপকরণ
ইলিশের রিং পিস ৫ থেকে ৬ টুকরা, হলুদগুঁড়া এক চা-চামচ, শুকনা মরিচ ৭ থেকে ৮টি, রসুনের কোয়া ১২ থেকে ১৪টি, সিরকা ৬ থেকে ৭ টেবিল চামচ, সরিষাবাটা ৪ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ৬ থেকে ৭ টেবিল চামচ।
প্রণালি
রিং পিস করা ইলিশ মাছ লবণ মাখিয়ে নেওয়ার পর ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর শুকনা মরিচ, রসুনের কোয়া, সরিষাবাটা, লবণ, হলুদগুঁড়া, সিরকা দিয়ে ব্লেন্ডারে অথবা পাটায় পেস্ট করে নিন। এবার হাঁড়িতে সরিষার তেল দিন। তারপর পেস্ট করা মিশ্রণটি দিয়ে নেড়ে নিন। এরপর লবণ দিয়ে মাখা মাছ দিয়ে এপিঠ-ওপিঠ করে হালকা ভেজে ঢাকনা দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে রান্না করুন ১০ মিনিট। তারপর নামিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন ইলিশের উল্লাস।

অতিথি আপ্যায়নে পাতে আমিষের এক পদ তুলে না দিলে আপ্যায়ন যেন অপূর্ণ থাকে। রাঁধতে যখন হবে, একটু ভিন্ন স্বাদের আমিষ রেঁধে মন ভরিয়ে দিতে পারেন অতিথির। চেনা আমিষের ভিন্ন পদের রেসিপি ও ছবি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
উপকরণ
ইলিশের রিং পিস ৫ থেকে ৬ টুকরা, হলুদগুঁড়া এক চা-চামচ, শুকনা মরিচ ৭ থেকে ৮টি, রসুনের কোয়া ১২ থেকে ১৪টি, সিরকা ৬ থেকে ৭ টেবিল চামচ, সরিষাবাটা ৪ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ৬ থেকে ৭ টেবিল চামচ।
প্রণালি
রিং পিস করা ইলিশ মাছ লবণ মাখিয়ে নেওয়ার পর ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর শুকনা মরিচ, রসুনের কোয়া, সরিষাবাটা, লবণ, হলুদগুঁড়া, সিরকা দিয়ে ব্লেন্ডারে অথবা পাটায় পেস্ট করে নিন। এবার হাঁড়িতে সরিষার তেল দিন। তারপর পেস্ট করা মিশ্রণটি দিয়ে নেড়ে নিন। এরপর লবণ দিয়ে মাখা মাছ দিয়ে এপিঠ-ওপিঠ করে হালকা ভেজে ঢাকনা দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে রান্না করুন ১০ মিনিট। তারপর নামিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন ইলিশের উল্লাস।

নানা জাতের শৈবাল মানুষের খাদ্যতালিকায় রয়েছে। এ তালিকা আরও লম্বা হচ্ছে। সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে গুবরে পোকার মতো নানা কীটপতঙ্গ। মানুষের ভবিষ্যৎ খাদ্যতালিকায় এমন অনেক কিছুই স্থান পাবে, যার কথা এখন ভাবাটাই কষ্টকর। ভবিষ্যতের খাবার নিয়ে লিখেছেন মইনুল হাসান
২৮ জুন ২০২১
বিশ্বের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেশ বা শহর নিয়ে প্রতিবছর আলোচনা হয়। কিন্তু এমন অনেক গ্রাম রয়েছে, যেগুলোতে শহরের আধুনিক সুবিধা না থাকলেও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সেসব গ্রামে আলাদা করে কোনো নিয়ম বেঁধে দেওয়া নেই পরিষ্কার রাখার জন্য। স্থানীয়দের জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে পরিচ্ছন্ন...
৪ ঘণ্টা আগে
এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতির ঋতু হেমন্ত। নীরব আবেগে ঠাসা। শেষ শরতে ছাতিমের গন্ধে হেমন্ত আসে শিশিরভেজা হালকা শীতের ঘ্রাণ নিয়ে। ধান উৎপাদনের ঋতু বলে একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। বর্ষার শেষের দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে উঠত, আর হেমন্তের অঘ্রানে পেকেও যেত।
৮ ঘণ্টা আগে
আপনার অর্থভাগ্য আজ ‘খুব খারাপ’ ঘোষণা হয়ে গেছে (সূত্রমতে, ঋণগ্রস্ত হতে পারেন)। এর অর্থ, ওয়ালেট আজ আন্তর্জাতিক ছুটি ঘোষণা করেছে এবং পকেটের অবস্থা ম্যালেরিয়া রোগীর মতো—একেবারে রুগ্ণ। আজ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার আগে দশবার ভাবুন।
৮ ঘণ্টা আগে