মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম
ঢাকা থকে রাত সাড়ে ১১টার বাসে চড়ে ভোর প্রায় ৬টায় খাগড়াছড়ি নামি। হোটেলে ব্যাগ রেখে বের হয়ে যাই পানছড়ি রোডের প্যারাছড়ার পথে। সেখানে আগেই হাজির ছিলেন গাইড জগৎ জ্যোতি ত্রিপুরা। অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে জগতের সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিই। এবার যাওয়ার পালা মূল গন্তব্য মায়ুং কপাল। পুরোটা পথ হেঁটেই যেতে হবে। আসা–যাওয়া প্রায় ৫ ঘণ্টার হাইকিং-ট্র্যাকিং। কিছু দূর যাওয়ার পরই চেঙ্গী নদী। ছোট্ট খেয়ায় পারাপার। নদীর প্রস্থ তেমন না হলেও গভীরতা ছিল বেশ। চেঙ্গীর মাঝামাঝি গিয়ে দেহ অনুভব করে মৃদু বাতাসের শিহরণ। নদীর দুকূলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বেশ নজর কাড়ে। পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলো এমনিতেই অন্য সব নদীর চেয়ে সৌন্দর্যে-স্বকীয়তায় অন্যরকম।
চেঙ্গী নদী পার হয়ে চ্যালাছড়া পাহাড়ি গ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে থাকি। যেতে যেতে চোখে পড়ে লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দির। আরও কিছুটা দূর এগোনোর পর শুরু হয় বুনো পথ। এখন শুধু ওপর দিকেই উঠছি। মাথার ওপর আকাশ ছোঁয়া গাছের ছায়া। অচেনা পাখপাখালির সুর মাতিয়ে রেখেছে চারপাশ। নাকে এসে লাগছে বুনো ফুলের ঘ্রাণ। সুনসান নীরবতাকে সঙ্গী করে যেতে যেতে শঙ্খমোহন পাড়ায় বট গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিই। এখানে ত্রিপুরাদের পাড়াটা ছবির মতো সুন্দর। বেশির ভাগ ঘর মাটি ও শণের তৈরি।
জিরানোর সময়টুকুর মধ্যেই গাইডের সংগ্রহ করা ফল খেয়ে আবারও হাইকিং। এবার কিছুটা বুনো পথ মাড়িয়ে দূর থেকেই দেখতে পাই কাঙ্ক্ষিত মায়ুং কপাল পাহাড়। প্রথম দেখাতেই চোখ জুড়িয়ে যায়। চারপাশে পাহাড় আর পাহাড়। সিঁড়ি বেয়ে ওপর দিকে উঠতে থাকি। সিঁড়িটা এমন খাড়া হয়ে ওপর দিকে উঠছে যে, একটা সময় মনে হবে এই বুঝি নীল আসমানে ভেসে বেড়ানো শুভ্র মেঘমালা ছুঁয়ে ফেলব আমাকে। সেই সঙ্গে ডানে-বামে পাহাড়ের ঢেউখেলানো দৃশ্যের অপার্থিব সৌন্দর্য।
গাইডের তথ্যমতে, ৩১৫টি সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে যাই মায়ুং কপাল পাহাড়ের ওপরে। এ যেন আরেক জগৎ। পাহাড়ে দাঁড়িয়ে পাহাড় দেখা। বৃষ্টির কারণে পাহাড়গুলো গাঢ় সবুজে মোড়ানো। গাছের পাতা ছিল বৃষ্টি ভেজা চকচকে সবুজ। দুচোখ যত দূর যায়, শুধু পাহাড় আর পাহাড়। আমরা আরও সামনের দিকে এগোতে চাই। কিন্তু গাইডের সবুজ সংকেত না থাকায় সিঁড়ির কাছাকাছিই থাকি। ওখান থেকেই নয়ন ভরে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করি।
মূলত পাহাড়ে বসবাস করা ত্রিপুরাসহ মোট ১৫টি জনগোষ্ঠীর জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য ২০১৫ সালের ১৩ জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সিঁড়িটি নির্মাণ করে। এখন এটি ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য অন্যতম দর্শনীয় স্থান। ত্রিপুরা ভাষায় হাতির মাথাকে মায়ুং কপাল বলা হয়। পাহাড়টির সামনের অংশ অনেকটা হাতির মাথার মতো দেখতে। সে কারণেই এর নাম মায়ুং কপাল। মোট ২৬৭ ধাপের সিঁড়িটির উচ্চতা প্রায় ৪০০ ফিট। আর মায়ুং কপাল পাহাড়ের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ২০৮ ফিট। সিঁড়িটি আনুমানিক ১২০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে খাড়া হয়ে ওপর দিকে উঠেছে।
যে কারণে অনেকেই স্বর্গের সিঁড়ি নামেও ডেকে থাকেন একে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় মাঝামাঝি অবস্থানে বাতাস আছড়ে পড়ে যেভাবে শরীর শীতল করে তোলে, সিঁড়ির নিচে বা ওপরে সেরকমটা পাওয়া যায় না। মায়ুং কপাল পাহাড়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় কাটিয়ে, দীপা ত্রিপুরার বাগানের পাহাড়ি আম রাঙগুই’র স্বাদ নিয়ে ফিরতি পথ ধরি।
যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস খাগড়াছড়ি যায়। খাগড়াছড়ি শহর থেকে অটোরিকশা বা যেকোনো বাহনে পানছড়ি সড়কের প্যারাছড়া ব্রিক ফিল্ড। সেখান থেকে চেঙ্গী নদী পার হয়ে ঘণ্টা দুই হাইকিং-ট্র্যাকিং। তবে নদী পার হয়েই চ্যালাছড়া পাড়ার কোনো দোকানির সঙ্গে কথা বলে, স্থানীয় কাউকে নিয়ে গাইড হিসেবে নেওয়াটাই ভালো হবে।
সতর্কতা: মায়ুং কপাল ভ্রমণের জন্য পেশাদার গাইড নেই। সুতরাং স্থানীয় যাকে গাইড হিসেবে নেবেন, তাঁকে বুঝেশুনে নিতে হবে। পর্যাপ্ত সুপেয় পানি ও পরিমাণ অনুযায়ী শুকনো খাবার সঙ্গে নিতে হবে। গাইডের পরামর্শ ছাড়া কোনো পাড়া বা পাহাড়ের পথে যাবেন না।
ঢাকা থকে রাত সাড়ে ১১টার বাসে চড়ে ভোর প্রায় ৬টায় খাগড়াছড়ি নামি। হোটেলে ব্যাগ রেখে বের হয়ে যাই পানছড়ি রোডের প্যারাছড়ার পথে। সেখানে আগেই হাজির ছিলেন গাইড জগৎ জ্যোতি ত্রিপুরা। অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে জগতের সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিই। এবার যাওয়ার পালা মূল গন্তব্য মায়ুং কপাল। পুরোটা পথ হেঁটেই যেতে হবে। আসা–যাওয়া প্রায় ৫ ঘণ্টার হাইকিং-ট্র্যাকিং। কিছু দূর যাওয়ার পরই চেঙ্গী নদী। ছোট্ট খেয়ায় পারাপার। নদীর প্রস্থ তেমন না হলেও গভীরতা ছিল বেশ। চেঙ্গীর মাঝামাঝি গিয়ে দেহ অনুভব করে মৃদু বাতাসের শিহরণ। নদীর দুকূলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বেশ নজর কাড়ে। পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলো এমনিতেই অন্য সব নদীর চেয়ে সৌন্দর্যে-স্বকীয়তায় অন্যরকম।
চেঙ্গী নদী পার হয়ে চ্যালাছড়া পাহাড়ি গ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে থাকি। যেতে যেতে চোখে পড়ে লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দির। আরও কিছুটা দূর এগোনোর পর শুরু হয় বুনো পথ। এখন শুধু ওপর দিকেই উঠছি। মাথার ওপর আকাশ ছোঁয়া গাছের ছায়া। অচেনা পাখপাখালির সুর মাতিয়ে রেখেছে চারপাশ। নাকে এসে লাগছে বুনো ফুলের ঘ্রাণ। সুনসান নীরবতাকে সঙ্গী করে যেতে যেতে শঙ্খমোহন পাড়ায় বট গাছের ছায়ায় জিরিয়ে নিই। এখানে ত্রিপুরাদের পাড়াটা ছবির মতো সুন্দর। বেশির ভাগ ঘর মাটি ও শণের তৈরি।
জিরানোর সময়টুকুর মধ্যেই গাইডের সংগ্রহ করা ফল খেয়ে আবারও হাইকিং। এবার কিছুটা বুনো পথ মাড়িয়ে দূর থেকেই দেখতে পাই কাঙ্ক্ষিত মায়ুং কপাল পাহাড়। প্রথম দেখাতেই চোখ জুড়িয়ে যায়। চারপাশে পাহাড় আর পাহাড়। সিঁড়ি বেয়ে ওপর দিকে উঠতে থাকি। সিঁড়িটা এমন খাড়া হয়ে ওপর দিকে উঠছে যে, একটা সময় মনে হবে এই বুঝি নীল আসমানে ভেসে বেড়ানো শুভ্র মেঘমালা ছুঁয়ে ফেলব আমাকে। সেই সঙ্গে ডানে-বামে পাহাড়ের ঢেউখেলানো দৃশ্যের অপার্থিব সৌন্দর্য।
গাইডের তথ্যমতে, ৩১৫টি সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে যাই মায়ুং কপাল পাহাড়ের ওপরে। এ যেন আরেক জগৎ। পাহাড়ে দাঁড়িয়ে পাহাড় দেখা। বৃষ্টির কারণে পাহাড়গুলো গাঢ় সবুজে মোড়ানো। গাছের পাতা ছিল বৃষ্টি ভেজা চকচকে সবুজ। দুচোখ যত দূর যায়, শুধু পাহাড় আর পাহাড়। আমরা আরও সামনের দিকে এগোতে চাই। কিন্তু গাইডের সবুজ সংকেত না থাকায় সিঁড়ির কাছাকাছিই থাকি। ওখান থেকেই নয়ন ভরে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করি।
মূলত পাহাড়ে বসবাস করা ত্রিপুরাসহ মোট ১৫টি জনগোষ্ঠীর জনগণের চলাচলের সুবিধার জন্য ২০১৫ সালের ১৩ জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সিঁড়িটি নির্মাণ করে। এখন এটি ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য অন্যতম দর্শনীয় স্থান। ত্রিপুরা ভাষায় হাতির মাথাকে মায়ুং কপাল বলা হয়। পাহাড়টির সামনের অংশ অনেকটা হাতির মাথার মতো দেখতে। সে কারণেই এর নাম মায়ুং কপাল। মোট ২৬৭ ধাপের সিঁড়িটির উচ্চতা প্রায় ৪০০ ফিট। আর মায়ুং কপাল পাহাড়ের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ২০৮ ফিট। সিঁড়িটি আনুমানিক ১২০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে খাড়া হয়ে ওপর দিকে উঠেছে।
যে কারণে অনেকেই স্বর্গের সিঁড়ি নামেও ডেকে থাকেন একে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় মাঝামাঝি অবস্থানে বাতাস আছড়ে পড়ে যেভাবে শরীর শীতল করে তোলে, সিঁড়ির নিচে বা ওপরে সেরকমটা পাওয়া যায় না। মায়ুং কপাল পাহাড়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় কাটিয়ে, দীপা ত্রিপুরার বাগানের পাহাড়ি আম রাঙগুই’র স্বাদ নিয়ে ফিরতি পথ ধরি।
যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস খাগড়াছড়ি যায়। খাগড়াছড়ি শহর থেকে অটোরিকশা বা যেকোনো বাহনে পানছড়ি সড়কের প্যারাছড়া ব্রিক ফিল্ড। সেখান থেকে চেঙ্গী নদী পার হয়ে ঘণ্টা দুই হাইকিং-ট্র্যাকিং। তবে নদী পার হয়েই চ্যালাছড়া পাড়ার কোনো দোকানির সঙ্গে কথা বলে, স্থানীয় কাউকে নিয়ে গাইড হিসেবে নেওয়াটাই ভালো হবে।
সতর্কতা: মায়ুং কপাল ভ্রমণের জন্য পেশাদার গাইড নেই। সুতরাং স্থানীয় যাকে গাইড হিসেবে নেবেন, তাঁকে বুঝেশুনে নিতে হবে। পর্যাপ্ত সুপেয় পানি ও পরিমাণ অনুযায়ী শুকনো খাবার সঙ্গে নিতে হবে। গাইডের পরামর্শ ছাড়া কোনো পাড়া বা পাহাড়ের পথে যাবেন না।
প্রকৃতিকে দূষণমুক্ত রাখতে আর ভবিষ্যৎ পর্যটকদের নিরাপদ পর্যটনকেন্দ্র উপহার দিতে অনেক দেশ কাজ শুরু করেছে। এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ওয়ান টাইম প্ল্যাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধ করেছে ২০টি দেশ। দেশগুলো পর্যটন স্থানে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য, যেমন বোতল, ব্যাগ, স্ট্র, খাবারের প্যাকেট ইত্যাদি ব্যবহার নিষিদ্ধ
১৬ ঘণ্টা আগেটেসলা, স্পেসএক্স, নিউরালিংক, এক্সএআই ও দ্য বোরিং কোম্পানির প্রধান নির্বাহী মাস্ককে ঘিরে রহস্যের কমতি নেই। এই বিশাল কর্মভারের মাঝেও তিনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি চালু করছেন, সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন তুলছেন, আবার কখনো হয়ে উঠছেন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। তবে সবকিছু তিনি সামলান কীভাবে তা নিয়ে মনে প্রশ্ন
২ দিন আগেএবার বেশিরভাগ মানুষের ছুটির কোনো সমস্যা নেই। ঈদ শেষেও ছুটি হাতে থেকে যাবে। সেই থেকে যাওয়া ছুটিকে কাজে লাগাতে পারেন। এই ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন মৌলভীবাজার।
২ দিন আগেঈদে দাওয়াত রক্ষা করতে যাওয়া কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে বারবিকিউ পার্টি হবে না, সেটা ভাবা কষ্টকর। সেসব বিশেষ অনুষ্ঠানে খাবারের লিস্টে অনেকেই স্টেক রাখার কথা ভাবেন। স্টেকের স্বাদ তখনই সঠিকভাবে উপভোগ্য হয়ে ওঠে যখন এর সাইড ডিশগুলোও ঠিক তেমনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর সঙ্গে মিলিয়ে এমন সাইড ডিশ বাছাই করত
৩ দিন আগে