Ajker Patrika

বিসিএস লিখিত: বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি

আনিসুল ইসলাম নাঈম
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১৬: ১৪
Thumbnail image

৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর শুরু হবে। বিসিএস পরীক্ষার দ্বিতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে লিখিত পরীক্ষা। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় যাঁরা উত্তীর্ণ হন, তাঁরাই লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। সাধারণত ছয়টি বিষয়ের ওপর ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়ে থাকে। সেখানে সাধারণ এবং উভয় ক্যাডার প্রার্থীদের বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের জন্য ২০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হয়। ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিসিএস লিখিত প্রস্তুতির জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরামর্শ তুলে ধরা হলো। আজ থাকছে পর্ব-২

বাংলা দ্বিতীয় পত্রে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। এখানে মূলত পড়ালেখা ও পরীক্ষার সময় ব্যবস্থাপনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

ক. অনুবাদ: ইংরেজি থেকে বাংলা (১৫ নম্বর)
অনুবাদের ক্ষেত্রে প্রথমেই একটি বিষয় মাথায় গেঁথে নেবেন সেটি হলো—চর্চা। তাই প্রথম অনুবাদ করার প্রক্রিয়া জানতে এবং ভাবার্থ করার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। The Daily Star থেকে অথবা মহিদ সম্পাদকীয় থেকে অথবা Preceptor Translation Manual অনুবাদ বই থেকে প্রতিদিন অনুবাদ অনুশীলন করার চেষ্টা করতে হবে। কারণ অনুবাদ বাংলা ও ইংরেজি উভয় বিষয়েই রয়েছে। তাই এখানে ভালো করলে খুব সহজেই অনেক নম্বর পাওয়া সম্ভব। কিছু কমন টপিক যেমন মুক্তিযুদ্ধ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ইত্যাদি থেকে প্রায়ই অনুবাদের প্রশ্ন আসে। তাই এখানে শব্দের অর্থ জানার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর করার জন্য সর্বোচ্চ সময় ১৫ মিনিট।

খ. কাল্পনিক সংলাপ (১৫ নম্বর)
কাল্পনিক সংলাপের ক্ষেত্রে প্রথম চরিত্র ও সুনির্দিষ্ট একটি প্লট সাজিয়ে নিয়ে এরপর শুরু করা উচিত। অ্যাসিওরেন্সের বাংলা/ওরাকল বাংলা লিখিত গাইড বই থেকে বিগত ও অন্যান্য কাল্পনিক সংলাপ একবার করে রিডিং পড়ে একটা ধারণা তৈরি করে নিতে পারেন। পরীক্ষায় কাল্পনিক সংলাপের মধ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স ও পুঙ্খানুপুঙ্খ বিস্তারিত নিয়ে আসবেন। অনেক সময় সংলাপে অতিরিক্ত একটি পক্ষ এনে লেখাকে সুন্দর করা যায়। যুক্তিমূলক ও বিভিন্ন তথ্যসমৃদ্ধি আলোচনা করে খাতায় উপস্থাপন করতে হবে, যাতে আলোচনাটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। কমপক্ষে ১৫ প্যারা লেখার চেষ্টা করতে হবে। পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর করার জন্য সর্বোচ্চ সময় ১৫ মিনিট।

ছবি: গ্রিন ইউনিভার্সিটি গ. পত্র লিখন (১৫ নম্বর)
এখানে সংবাদপত্রে প্রকাশের প্রতিবেদন ও পত্র দুটি বিষয় আসে। সংবাদপত্রে প্রকাশের প্রতিবেদনের জন্য হায়াৎ মাহমুদের ‘ভাষা ও শিক্ষা’ বই থেকে ফরম্যাট শিখে রাখতে হবে। সংবাদপত্রে প্রকাশের প্রতিবেদন/ পত্রের ফরম্যাট ঠিক থাকলে একটি নির্দিষ্ট নম্বর পাওয়া যাবে বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া বিগত বছরের প্রশ্নগুলোয় একটু চোখ বুলিয়ে গেলে পরীক্ষায় ভালো করা যাবে। পরীক্ষায় বাম পৃষ্ঠা থেকে লেখা শুরু করার চেষ্টা করবেন এবং প্রশ্নের উত্তর করার জন্য সর্বোচ্চ সময় ১৭ মিনিট ব্যয় করবেন।

ঘ. গ্রন্থ সমালোচনা (১৫ নম্বর)
গ্রন্থ সমালোচনার জন্য অ্যাসিওরেন্সের বাংলা বইটি দেখতে পারেন। মোহসীনা নাজিলার শীকর গ্রন্থ সমালোচনা বইটি ভুলেও অনুসরণ করবেন না। কারণ এখানে গ্রন্থ সমালোচনার স্থলে গ্রন্থের কাহিনি দিয়ে রেখেছে। একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাট অনুসরণ করলে ভালো হয়। তারেক মঞ্জুর স্যারের ৮ অনুচ্ছেদ/ প্যারার ফরম্যাট খুব জনপ্রিয়, এটি অনুসরণ করতে পারেন। (সংক্ষেপে: গ্রন্থের পরিচয়, লেখক পরিচয়, গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য, গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত কাহিনি ও চরিত্র, মতবাদ, তুলনা, লেখকের সফলতা-ব্যর্থতা, মন্তব্য /গুরুত্ব)। মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক উপন্যাস/ কাব্যগ্রন্থ/ স্মৃতিকাহিনি/ নাটক, ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উপন্যাস/ নাটক/ প্রবন্ধগ্রন্থ, বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যভিত্তিক/ লোকসাহিত্যনির্ভর কোনো গ্রন্থ আঞ্চলিক উপন্যাস/ রূপক-সাংকেতিক নাটক/ আত্মজীবনী, বঙ্গবন্ধু-সম্পর্কিত লিখিত বই ও বিখ্যাত কিছু উপন্যাস, বহুল পরিচিত সুনির্দিষ্ট গ্রন্থ এবং বিগত বছরগুলোতে আসা গ্রন্থ সমালোচনার ওপর প্রস্তুতি নিয়ে গেলে পরীক্ষায় কমন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর করার জন্য সর্বোচ্চ সময় ১৮ মিনিট।

ঙ. রচনা (৪০ নম্বর)
রচনা অংশের জন্য অ্যাসিওরেন্সের ডাইজেস্ট এবং বিসিএস লিখিত বাংলা রচনা ও English Essay বইটি অনুসরণ করতে পারেন। প্রয়োজনীয় ডেটা, ম্যাপ, চিত্র, গ্রাফ, উক্তি—সবকিছুই সুন্দর করে দেওয়া আছে বইটিতে। বিগত বছরের বিসিএস প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা, অর্থনৈতিক কার্যাবলি, সমসাময়িক আলোচিত বিষয়াবলি, সরকারের সফলতা, পরিবেশ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক টপিকগুলো থেকে বেশি রচনা পরীক্ষায় আসে। বাংলা ও ইংরেজি রচনা বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির সঙ্গে অনেক কিছুই মিল পাওয়া যাবে, তাই এ দুই বিষয়ের সঙ্গে মিলিয়ে পড়লে অনেক সহজেই বিভিন্ন তথ্য আয়ত্তে এনে সুন্দর রচনা পরীক্ষায় উপস্থাপন করে আসা যায়। রচনা লেখার সময় ভূমিকা এবং উপসংহারের ক্ষেত্রে বেশি লেখা উচিত নয়, মূল কনটেন্টের ওপরে বেশি লিখতে হবে। পরীক্ষায় প্রশ্নের উত্তর করার জন্য সর্বোচ্চ সময় ৬৫-৭০ মিনিট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত