Ajker Patrika

মহানবী (সা.)–এর শেখানো মলমূত্র ত্যাগের আদব

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৫, ১৫: ৪৯
মহানবী (সা.)–এর শেখানো মলমূত্র ত্যাগের আদব

‘এস্তেনজা’ শব্দের অর্থ মুক্তি পাওয়া। মলমূত্র ত্যাগের পর পানি, পাথর, মাটি, কাগজ বা এমন অন্য কোনো বস্তুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করাকে ইসলামের পরিভাষায় ‘এস্তেনজা’ বলা হয়। পায়খানা-প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে যেসব নাপাক বের হয়, তা থেকে পবিত্র হতে এস্তেনজা করা আবশ্যক। 

পাথর, ঢিলা, টিস্যু পেপার ইত্যাদি দিয়ে এস্তেনজা করা বৈধ
পাথর এবং এমন জমাটবদ্ধ শুকনো বস্তু, যা দিয়ে নাপাক দূর করা যায় এবং যা ব্যবহার করা ইসলামে নিষিদ্ধ নয়, তা দিয়ে এস্তেনজা করা যাবে। যেমন— কাগজ, টিস্যু পেপার, ন্যাকড়া, শুকনো কাঠ, মাটির ঢেলা ইত্যাদি।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন এস্তেনজা করতে যায়, তখন সে যেন তিনটি পাথর সঙ্গে নিয়ে যায়, যা দিয়ে সে পবিত্রতা অর্জন করবে এবং এটাই তার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪০; নাসায়ি: ১ / ১৮; আহমাদ: ৬ / ১০৮-১৩৩) 

অন্য এক হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা কেউ তিনটির কম পাথর দিয়ে এস্তেনজা করবে না।’ (মুসলিম: ২৬২; নাসায়ি ১ / ১২; তিরমিজি: ১৬) 

এ ক্ষেত্রে তিনটি ব্যবহার করা অনেকেই আবশ্যক বলেছেন, অনেকে বলেন সুন্নত। তবে নাপাক দূর করতে যত দরকার, তত ব্যবহার করা আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই।

পানি ও টিস্যু পেপার দুটো ব্যবহার করাই উত্তম
এস্তেনজা পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম। পানি ও ঢিলা দুটোই ব্যবহার করে পবিত্রতা অর্জন করা এ ক্ষেত্রে উত্তম। আবার দুটোর মধ্যে পানি ব্যবহার করা উত্তম। মহানবী (সা.) কখনো দুটোই, আবার কখনো যেকোনো একটি ব্যবহার করতেন। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) টয়লেটে যেতেন, আমি ও আমার বয়সী আরেকটা ছেলে পানির পাত্র ও বর্শার মতো লাঠিসহ তাঁর জন্য পানি নিয়ে যেতাম। এ পানি দিয়ে তিনি শৌচকার্য সারতেন। (বুখারি: ১৫১; মুসলিম: ২৭০-২৭১) 

সাধারণত আরবের মানুষ এস্তেনজায় ঢিলা বা পাথর ব্যবহার করতেন। তবে মদিনার কুফাবাসীরা ঢিলা ও পানি দুটোই ব্যবহার করতেন। তাই পবিত্র কোরআনে কুফাবাসীর প্রশংসা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এখানে কিছু লোক রয়েছে, যারা পবিত্রতা পছন্দ করে।’ (সুরা তওবা: ১০৮)। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তারা (কুফাবাসী) পানি দিয়ে এস্তেনজা করে। ফলে আল্লাহ তাদের ব্যাপারে এই আয়াত নাজিল করেন।’ (আবু দাউদ: ৪৪; তিরমিজি: ৩১০০; ইবনে মাজাহ: ৩৫৭) 

শুকনো হাড় ও গোবর ব্যবহার করা যাবে না
এস্তেনজা করার উপাদানটি পবিত্র হতে হবে এবং নিষিদ্ধ বস্তু হতে পারবে না। যেমন— গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেনজা করা যাবে না। কারণ প্রথমটি নাপাক এবং দ্বিতীয়টি নিষিদ্ধ। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেনজা করো না। কারণ তা তোমাদের ভাই জিনদের খাবার।’ (মুসলিম: ৬৮২; তিরমিজি: ১৮; আহমাদ: ১ / ৪৩৬) 

অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, নবী (সা.) একবার শৌচকাজে যাওয়ার সময় তিনটি পাথর কুড়িয়ে দিতে আমাকে আদেশ দিলেন। আমি দুটি পাথর পেলাম এবং তৃতীয়টি খোঁজাখুঁজি করেও পেলাম না। তাই এক টুকরো শুকনো গোবর নিয়ে তাঁর কাছে গেলাম। তিনি পাথর দুটি নিলেন এবং গোবরটি ফেলে দিয়ে বললেন, ‘এটি অপবিত্র।’ (বুখারি: ১৫৬) 

বায়ুত্যাগ করলে এস্তেনজা করতে হবে না
বায়ুত্যাগ করলে বা ঘুম থেকে জাগলে এস্তেনজা করা জরুরি নয়। তবে নামাজ পড়তে হলে অবশ্যই অজু করতে হবে। কারণ এস্তেনজা নাপাক বস্তু দূর করার জন্য করা হয়। বায়ুত্যাগে কোনো নাপাক বস্তু দৃশ্যমান হয় না। তাই এস্তেনজা করতে হবে না। তবে বায়ুত্যাগ করলে বা ঘুমালে অজু ভেঙে যায়, তাই অজু করতে হবে। (আল-মুগনি: ১ / ২০৬) 

মলমূত্র ত্যাগের আদব
মলমূত্র ত্যাগ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু আদব রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তুলে ধরা হলো—

১. মানুষের দৃষ্টির আড়ালে নির্জন স্থানে, যেখান থেকে বাইরে দুর্গন্ধ আসে না— এমন স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করা উচিত। (তিরমিজি: ২০; আবু দাউদ: ২) 

২. নরম ও নিচু স্থান বেছে নেওয়া উচিত, যাতে প্রস্রাবের ছিটা শরীরে না লাগে। (আবু দাউদ: ৩; তিরমিজি: ২০) 

৩. টয়লেটে প্রবেশের সময় দোয়া পড়া—আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবাইস। অর্থ: হে আল্লাহ, আমি নাপাক ও শয়তানদের থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি। (বুখারি, হাদিস: ১৩৯)

৪. বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসা। এতে মল বের হওয়া সহজ হয়। (বায়হাকি: ৪৬৬; মজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০২০) 

৫. টয়লেটে বাঁ পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (নাসায়ি: ১১১; আহমাদ: ২৬৩২৬) 

৬. মাথা ঢেকে রাখা। (বায়হাকি: ৪৬৪) 

৭. গর্তে প্রস্রাব না করা। কারণ ভেতরে সাপ পোকামাকড় থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। (আবু দাউদ: ২৭; শরহুস সুন্নাহ: ১ / ৫৬) 

৮. রাস্তা অথবা কবরস্থানে প্রস্রাব–পায়খানা না করা। (মুসলিম: ৩৯৭; আল-ফিকহুল ইসলামি: ১ / ৩০৮-৩০৯) 

৯. মানুষের আশ্রয় নেয় এমন কোনো গাছের ছায়ায় বা ফলবান গাছের নিচে প্রস্রাব–পায়খানা করা নিষেধ। (মুসলিম: ৩৯৭; আবু দাউদ: ২৪; আল-ফিকহুল ইসলামি: ১ / ৩১০) 

১০. প্রস্রাব–পায়খানা করার সময় প্রয়োজন ছাড়া কথা বলা কিংবা কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির করা অনুচিত। (আবু দাউদ: ১৪; মুসলিম: ৫৫৫)

১১. কিবলার দিকে মুখ করে বা পেছনে ফিরে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তাহরিমি তথা অতি নিন্দনীয়। (বুখারি: ৩৮০)

১২. চৌবাচ্চা, পানির ট্যাংক বা ছোট আয়তনের বদ্ধ পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তাহরিমি। (মুসলিম: ৪২৩, শরহুন নববি: ১ / ৪৫৪) 

১৩. বদ্ধ বেশি পানি অথবা প্রবহমান পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ তানজিহি। (মুসলিম: ৪২৫, আল-বাহরুর রায়েক: ১ / ৩০১)   

১৪. গোসলের স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (তিরমিজি: ২১) 

১৫. কূপ, নদী ও চৌবাচ্চার আশপাশে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (আবু দাউদ: ২৪)

১৬. খোলা স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় সতর ঢেকে রাখা উচিত। (মুসলিম: ৫১৭)

১৭. কোনো অপারগতা ছাড়া ডান হাতে এস্তেনজা করা মাকরুহ। (আহমাদ: ২৬৩২৬)

১৮. অপারগতা ছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরুহ। এতে প্রস্রাবের ছিটা গায়ে লাগার আশঙ্কা থাকে। (তিরমিজি: ১২; আহমাদ: ১৯৫৫৫) 

১৯. প্রস্রাব-পায়খানা শেষে বের হওয়ার পর দোয়া পড়া—আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়াফানি। অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমার অস্বস্তি দূর করে স্বস্তি দিয়েছেন।   

২০. এস্তেনজা করার পর মাটিতে হাত মাজবে বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে হাত ধুয়ে নেবে। (বুখারি: ২৬৬; মুসলিম: ৩১৭; আবু দাউদ: ৪৫; ইবনে মাজাহ: ৬৭৮; নাসায়ি: ১ / ৪৫)

২১. সন্দেহ দূর করতে প্রস্রাবের পর কাপড় বা লজ্জাস্থানে পানি ছিটানো সুন্নত। (দারেমি: ৭১১; বায়হাকি: ১ / ১৬১) 

২২. আল্লাহর নাম আছে এমন বস্তু নিয়ে টয়লেটে যাওয়া অনুচিত। (সুরা হজ: ৩২; বুখারি: ৫৮৭২; মুসলিম: ২০৯; মাজমু: ২ / ৮৭; মুগনি: ১ / ২২৭)
 
২৩. ঢিলা ধরে জনসম্মুখে হাঁটাহাঁটি-নাচানাচি করা অনুচিত। এ ছাড়া ঢিলা ধরে ৪০ কদম হাঁটার কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। (আহসানুল ফাতওয়া, ১ম খণ্ড)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

মাহমুদ হাসান ফাহিম 
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৪১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।

১. ‘আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরজু, ফালা তাকিলনি ইলা নাফসি তারফাতা আইন, ওয়া আসলিহ লি শানি কুল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লাহ আনতা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে রহমত (মনের প্রশান্তি) চাই। আপনি এক মুহূর্তও আমাকে নফসের ওপর ছেড়ে দিয়েন না। বরং আপনিই আমার সমস্ত বিষয় ঠিক করে দিন। আপনি ছাড়া (মনের অস্থিরতা ও বিপদ থেকে রক্ষাকারী) কোনো ইলাহ নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০০২)

২. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’ অর্থ: ‘মহান, সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আরশের অধিপতি, মহান আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আসমান ও জমিনের রব এবং সম্মানিত আরশের রব আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৬৭২)

৩. ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসাল, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবন, ওয়া জিলাইদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশান থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৯৪)

৪. ‘আল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি; লা উশরিকু বিহি শাইআ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আল্লাহ। আমি আপনার সঙ্গে কাউকে শরিক করি না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫২৫)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোনো কারণে মনে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে উল্লিখিত দোয়াগুলো পড়া। এতে মনের অস্থিরতা ও পেরেশান দূর হবে ইনশা আল্লাহ।

লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক, টঙ্গী, গাজীপুর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৭ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪৪ মিনিট
ফজর০৪: ৪৫ মিনিট০৬: ০০ মিনিট
জোহর১১: ৪৩ মিনিট০৩: ৪৫ মিনিট
আসর০৩: ৪৬ মিনিট০৫: ২২ মিনিট
মাগরিব০৫: ২৪ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৪: ৪৪ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—

চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট

সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—

খুলনা: ০৩ মিনিট

রাজশাহী: ০৭ মিনিট

রংপুর: ০৮ মিনিট

বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আল্লাহর সঙ্গে লাভজনক ব্যবসা, মুনাফা যেখানে জান্নাত

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)

পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:

এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।

দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।

মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।

কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’

অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:

এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।

দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)

তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।

যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’

মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’

ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।

লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশুদের নৈতিক বিকাশে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব

ইসলাম ডেস্ক 
দাদা ও নাতি। ছবি: সংগৃহীত
দাদা ও নাতি। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।

শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।

এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।

বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।

একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত