ইসলাম ডেস্ক
আত্মীয়তার বন্ধন আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। পারস্পরিক সম্পর্কের এ বন্ধন না থাকলে হয়তো পৃথিবীর রূপ ভিন্ন থাকত। মা তার সন্তানের প্রতি, ভাই তার ভাইয়ের প্রতি, স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার যে রূপ আমরা দেখতে পাই—তা হয়তো থাকত না। কোরআন ও হাদিসে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। আর কিছুতেই অপব্যয় করো না।’ (সুরা বনী ইসরাইল: ২৬)
অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করো না। আর পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি, মুসাফির এবং তোমাদের দাস-দাসীর প্রতি সদাচরণ কর।’ (সুরা নিসা: ৩৬)
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার কারণে মানুষ জান্নাতের নিকটবর্তী হয়। এক বেদুইন নবী (সা.)-এর এক সফরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলল, ‘যা আমাকে বেহেশতের নিকটবর্তী এবং দোজখের দূরবর্তী করবে তা আমাকে অবহিত করুন।’ নবীজি (সা.) বলেন, ‘তুমি আল্লাহর ইবাদত করো, তার সঙ্গে কিছু শরিক করো না, নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখো।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৪৯)
আমাদের সমাজে এমনও অনেকে রয়েছেন যারা ছোট থেকে ছোট বিষয় নিয়ে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে। অথচ হাদিসে উল্লেখ হয়েছে ভালো ব্যবহার করার পরও যদি কেউ খারাপ আচরণ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা ভালো ব্যবহারকারীর সাহায্যে একজন ফেরেশতা নিয়োগ করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর নিকট এসে বলল, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আছে। আমি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখি, কিন্তু তারা সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমি তাদের উপকার করি, কিন্তু তারা আমার ক্ষতি করে। তারা আমার সঙ্গে মূর্খের আচরণ করে, কিন্তু আমি তা সহ্য করি।’ তিনি বলেন, ‘যদি তোমার বক্তব্য সঠিক হয়, তবে তুমি যেন তাদের মুখে উত্তপ্ত ছাই পুরে দিচ্ছ। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এরূপ করতে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী তাদের মোকাবিলায় তোমার সঙ্গে থাকবেন।’ (সহিহ্ মুসলিম ৪৬১৯)
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, এ বন্ধন যারা ছিন্ন করে আল্লাহ তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। আর যারা এ বন্ধন রক্ষা করে আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করবেন। আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘মহামহিম আল্লাহ বলেন—আমার নাম রহমান-দয়াময়। আমি রেহেম তথা আত্মীয় সম্পর্ককে সৃষ্টি করেছি এবং আমার নাম থেকে তার নাম নির্গত করেছি। সুতরাং যে তাকে যুক্ত রাখবে আমিও তাকে আমার সঙ্গে যুক্ত রাখব এবং যে তাকে ছিন্ন করবে আমিও তাকে আমার থেকে ছিন্ন করব।’ (জামে তিরমিজি: ১৯০৭)
এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে আল্লাহ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। আর যাদের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা সম্পর্ক ছিন্ন হয় তাদের স্থান জাহান্নাম ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে যারা এ সম্পর্ক অটুট রাখে তাদের সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্ক যুক্ত হয়। যাদের সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্কযুক্ত হয় নিঃসন্দেহে তাদের স্থান হবে জান্নাত।
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করলে হায়াত বাড়ে। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি চায় যে, তার জীবিকা প্রশস্ত হোক এবং তার আয়ু বৃদ্ধি হোক, সে যেন তার আত্মীয় সম্পর্ক বজায় রাখে।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৫৬)
লেখক: মুফতি মতিউর রহমান, ইসলামবিষয়ক গবেষক
আত্মীয়তার বন্ধন আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। পারস্পরিক সম্পর্কের এ বন্ধন না থাকলে হয়তো পৃথিবীর রূপ ভিন্ন থাকত। মা তার সন্তানের প্রতি, ভাই তার ভাইয়ের প্রতি, স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার যে রূপ আমরা দেখতে পাই—তা হয়তো থাকত না। কোরআন ও হাদিসে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। আর কিছুতেই অপব্যয় করো না।’ (সুরা বনী ইসরাইল: ২৬)
অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করো না। আর পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি, মুসাফির এবং তোমাদের দাস-দাসীর প্রতি সদাচরণ কর।’ (সুরা নিসা: ৩৬)
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার কারণে মানুষ জান্নাতের নিকটবর্তী হয়। এক বেদুইন নবী (সা.)-এর এক সফরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলল, ‘যা আমাকে বেহেশতের নিকটবর্তী এবং দোজখের দূরবর্তী করবে তা আমাকে অবহিত করুন।’ নবীজি (সা.) বলেন, ‘তুমি আল্লাহর ইবাদত করো, তার সঙ্গে কিছু শরিক করো না, নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখো।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৪৯)
আমাদের সমাজে এমনও অনেকে রয়েছেন যারা ছোট থেকে ছোট বিষয় নিয়ে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে। অথচ হাদিসে উল্লেখ হয়েছে ভালো ব্যবহার করার পরও যদি কেউ খারাপ আচরণ করে তাহলে আল্লাহ তাআলা ভালো ব্যবহারকারীর সাহায্যে একজন ফেরেশতা নিয়োগ করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-এর নিকট এসে বলল, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আছে। আমি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখি, কিন্তু তারা সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমি তাদের উপকার করি, কিন্তু তারা আমার ক্ষতি করে। তারা আমার সঙ্গে মূর্খের আচরণ করে, কিন্তু আমি তা সহ্য করি।’ তিনি বলেন, ‘যদি তোমার বক্তব্য সঠিক হয়, তবে তুমি যেন তাদের মুখে উত্তপ্ত ছাই পুরে দিচ্ছ। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এরূপ করতে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী তাদের মোকাবিলায় তোমার সঙ্গে থাকবেন।’ (সহিহ্ মুসলিম ৪৬১৯)
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, এ বন্ধন যারা ছিন্ন করে আল্লাহ তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। আর যারা এ বন্ধন রক্ষা করে আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করবেন। আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘মহামহিম আল্লাহ বলেন—আমার নাম রহমান-দয়াময়। আমি রেহেম তথা আত্মীয় সম্পর্ককে সৃষ্টি করেছি এবং আমার নাম থেকে তার নাম নির্গত করেছি। সুতরাং যে তাকে যুক্ত রাখবে আমিও তাকে আমার সঙ্গে যুক্ত রাখব এবং যে তাকে ছিন্ন করবে আমিও তাকে আমার থেকে ছিন্ন করব।’ (জামে তিরমিজি: ১৯০৭)
এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে আল্লাহ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। আর যাদের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা সম্পর্ক ছিন্ন হয় তাদের স্থান জাহান্নাম ছাড়া আর কিছু নয়। অন্যদিকে যারা এ সম্পর্ক অটুট রাখে তাদের সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্ক যুক্ত হয়। যাদের সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্কযুক্ত হয় নিঃসন্দেহে তাদের স্থান হবে জান্নাত।
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করলে হায়াত বাড়ে। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি চায় যে, তার জীবিকা প্রশস্ত হোক এবং তার আয়ু বৃদ্ধি হোক, সে যেন তার আত্মীয় সম্পর্ক বজায় রাখে।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৫৬)
লেখক: মুফতি মতিউর রহমান, ইসলামবিষয়ক গবেষক
পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর জন্যই মৃত্যু এক অবধারিত ও ধ্রুব সত্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)। মৃত্যু জীবনের সমাপ্তি নয়, বরং এটি এক নতুন জীবনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হওয়া। এই চরম সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও জীবিতদের জন্য একটি
২৬ মিনিট আগে১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস, যা ২০০০ সাল থেকে জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী পালন করে আসছে। এর উদ্দেশ্য তরুণদের দায়িত্বশীল ও প্রভাবশালী নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা, তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং নীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
১২ ঘণ্টা আগেযখন একজন মানুষ শারীরিক বা মানসিক দুর্বলতায় ভোগেন, তখন তার পাশে দাঁড়ানো, সান্ত্বনা দেওয়া এবং খোঁজখবর নেওয়া শুধু একটি মানবিক কর্তব্য নয়, বরং ইসলামের দৃষ্টিতে এটি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক অনন্য মাধ্যম। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া মানে আল্লাহর সন্তুষ্টির সন্ধান করা।
১৩ ঘণ্টা আগেমানুষ স্বভাবতই আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন একটি প্রাণী। এই আত্মমর্যাদা ও সম্মানবোধ স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা মানুষকে দান করেছেন। তিনি তাঁর সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষকে বৈচিত্র্যপূর্ণ রং, আকার ও আকৃতি দিয়ে তৈরি করেছেন।
১৫ ঘণ্টা আগে