Ajker Patrika

ইবনে বতুতার বর্ণনায় মসজিদুল আকসা

আমজাদ ইউনুস 
ইবনে বতুতার বর্ণনায় মসজিদুল আকসা

বিশ্ববিখ্যাত মুসলিম পর্যটক ইবনে বতুতা টানা ৩০ বছর বিশ্বের নানা প্রান্ত চষে বেড়িয়েছিলেন। তাঁর ভ্রমণকাহিনির বই ‘তুহফাহ আন-নাজ্জার ফি গারায়িব আল আমসার ওয়া আজায়িব আল আসফার’ মানুষের কাছে ‘আর রিহলাহ’ নামে পরিচিত। বইয়ের বর্ণনা থেকে জানা যায়, তিনি ফিলিস্তিন, গাজা ও জেরুজালেম ভ্রমণ করেছিলেন। লিখেছেন আমজাদ ইউনুস

১৪ শতকের প্রথম দিকে ইবনে বতুতা পবিত্র জেরুজালেমের দিকে যাত্রা করেন। টাঙ্গিয়ার শহর থেকে উত্তর আফ্রিকা, তারপর মিসর হয়ে সেই যাত্রা শুরু করেন। তখন মিসর মামলুক সুলতান আল-নাসির মুহাম্মদ বিন কালাউনের শাসনাধীন ছিল। মিসরে থাকা অবস্থায় তিনি জেরুজালেম ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। গাজা থেকে তাঁর ভ্রমণ শুরু হয়। তারপর হেবরন শহরে যান। সেখানে তিনি ইব্রাহিমি মসজিদ পরিদর্শন করেছিলেন। এরপর ফিলিস্তিন ভ্রমণ করেন।

ফিলিস্তিনে ভ্রমণকালে তিনি সেখানকার কয়েকজন ধর্মীয় পণ্ডিত ও সুফির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি গাজার প্রখ্যাত ব্যক্তি কাজি শামসুদ্দীন মুহাম্মাদ বিন সালেম আর আনাতোলিয়ার বিখ্যাত সুফি আস সালেহ আল আবেদ আবু আবদুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন। পাশাপাশি মসজিদুল আকসা ও সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন এবং সেই সবের বিস্তারিত বিবরণ মার্জিত ও সত্য ভাষায় তাঁর ভ্রমণকাহিনিতে তুলে ধরেন।

ডোম অব দ্য রকের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইবনে বতুতা। এটি তাঁর জীবনে দেখা সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ভবনগুলোর একটি বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘খ্যাতির দিক থেকে পবিত্র তীর্থস্থান মক্কা ও মদিনার পরে জেরুজালেম তৃতীয়। এখান থেকেই আমাদের নবী (সা.) মিরাজে গমন করেন। খ্রিষ্টানরা এই নগর অধিকার করে সুরক্ষিতভাবে বসবাস শুরু করতে পারে আশঙ্কা করে বিখ্যাত সম্রাট সালাহউদ্দিন ও তাঁর পরবর্তী শাসকগণ এর প্রাচীরগুলো নষ্ট করে ফেলেন। জেরুজালেমের পবিত্র মসজিদ অতি সুদৃশ্য এবং পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মসজিদ। পূর্ব থেকে পশ্চিমে এর দৈর্ঘ্য ৭৫২ হাত এবং প্রস্থ ৪৩৫ হাত। মসজিদের তিন দিকে অনেক প্রবেশপথ আছে। যত দূর দেখেছি, মসজিদটির দক্ষিণ দিকে আছে মাত্র একটি দরজা। এই দরজা দিয়ে শুধু ইমাম প্রবেশ করেন। এই মসজিদ অনাবৃত একটি বৃহৎ চত্বরবিশেষ।’

ইবনে বতুতা আরও লেখেন, ‘কিন্তু আল-আকসা এর ব্যতিক্রম। আল-আকসা মসজিদের ছাদ কারুকার্যখচিত এবং সোনালি ও বিভিন্ন রঙে রঞ্জিত। মসজিদের অংশবিশেষ ছাদ দ্বারা আবৃত। মসজিদটির গম্বুজ গঠনের শোভা সৌন্দর্য ও দৃঢ়তায় অতুলনীয়। গম্বুজটি মাঝখানে অবস্থিত। মার্বেল পাথরের একটি সিঁড়ি রয়েছে। গম্বুজের চারটি দরজা, চতুষ্পার্শ্ব ও অভ্যন্তর মার্বেল পাথরে মণ্ডিত। ভেতর এবং বাইরের কারুকার্য ও সাজসজ্জা এত সুন্দর যে ভাষায় তা বর্ণনা করা যায় না। এর অধিকাংশই স্বর্ণাবৃত। তাকালেই চোখ ঝলসে যায়, বিদ্যুচ্চমকের মতো মনে হয়। গম্বুজের মধ্যস্থলে পবিত্র প্রস্তরখণ্ড। এখান থেকেই আমাদের প্রিয় নবী (সা.) মিরাজে গমন করেন। এই প্রস্তরখণ্ড একটি মানুষের সমান বাইরের দিকে বাড়ানো। তার নিচেই রয়েছে ছোট একটি প্রকোষ্ঠ। নিচে নেমে যাওয়ার সিঁড়িও রয়েছে। প্রস্তরখণ্ড ঘিরে আছে দুই প্রস্থ আবেষ্টনী। যে আবেষ্টনী প্রস্তরখণ্ড থেকে অপেক্ষাকৃত কাছে, সেটি অতি সুন্দরভাবে লোহা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। অন্যটি কাঠের তৈরি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত