ইজাজুল হক, ঢাকা
১০ শতকের শুরুর দিকে মুসলিম বিশ্বে ওষুধ হিসেবে কফি ব্যবহার করা হতো। তবে পানীয় হিসেবে কফির ব্যবহার আরও কয়েক শতক পরের ঘটনা। ১৫ শতকে প্রথম ইয়েমেনে পানীয় হিসেবে কফির ব্যবহার শুরু হয়। বলা হয়, ইয়েমেনের সুফি মাজারগুলোতেই প্রথম এই চল শুরু হয়। এরপর মুসলিমরা একে নিজেদের সংস্কৃতি হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে রাত জেগে ইবাদত করতে কফি পান করতেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
আরবি কাহওয়াহ শব্দ তুর্কিতে গিয়ে হয় কাহভে, ডাচ ভাষায় হয় কফি। ডাচ থেকে ইংরেজিতে কফি শব্দটি প্রবেশ করে। মিসরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কফিকে গাহওয়াহও বলা হয়। ইথিওপিয়াকে বলা হয় কফির জন্মভূমি। সেখান থেকে ইয়েমেন হয়ে ওসমানীয় খেলাফতের রাজধানী ইস্তাম্বুলে আসে কফি। দারুণ জনপ্রিয়তাও পায়। ১৬ শতকে ইস্তাম্বুলে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য কফিহাউস, যা একই সঙ্গে মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও প্রতিনিধিত্ব করতে শুরু করে। সুলতানের প্রাসাদে বিশেষ কারুকার্যখচিত কাপে রাজকীয় অতিথিদের কফি পরিবেশন করা হতো।
মুসলিম দেশগুলোতে তুমুল জনপ্রিয় কফিকে প্রথম দিকে ইউরোপীয়রা সন্দেহের চোখে দেখেছিল। পোপ ক্লিমেন্ট অষ্টম (১৫৩৬–১৬০৫) কফি পান নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। পরে তাঁকে কফি পান করানো হলে তিনি কফি পানের অনুমোদন দেন। এরপর ইউরোপে পানীয় হিসেবে কফি জনপ্রিয় হতে থাকে। ১৬৫০ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম কফিহাউস খোলা হয় এবং পরের ৫০ বছরে লন্ডনে কফি জনপ্রিয়তম পানীয়ে পরিণত হয়। ইংল্যান্ডের কফিহাউসগুলোর বাইরে ওসমানীয় ঐতিহ্যের বিভিন্ন নিদর্শন দেখা যেত।
তুর্কি ও আরবি কফি একই ধরনের। উভয় অঞ্চলের মানুষই ব্ল্যাক কফি পান করেন। তবে তুর্কি কফিতে এলাচ থাকে না। আরব কফি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কফি। এটি আরবদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। আরব কফিকে ইউনেসকো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ কফি আরবদের উদারতা, সৌহার্দ্য, একতা ও আতিথেয়তার প্রতীক। আরবি কফির স্বাদ এতো ভালো হওয়ার কারণ হলো, এর ব্যতিক্রম প্রস্তুত প্রণালি। আরবরা মাটির নিচে গর্ত করে চুলা বানিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে কফি জ্বাল দেয়।
মিসরেও সুফিদের হাত ধরে কফির যাত্রা হয়। সুফিরা অজিফা আদায়ের সময় এটি পান করতেন। ১৭ শতকের শেষের দিকে কায়রোতে ৬৪৩টি কফিহাউস ছিল। মিসর ও সিরিয়ায় কফির তিনটি ধরন রয়েছে: বেশি মিষ্টিকে জিয়াদা, মাঝারি মিষ্টিকে মাজবুত এবং কম মিষ্টিকে আরিহা বলা হয়। মিষ্টিবিহীন কফিকে বলা হয় সাদা, যা কেবল শোকপালনের সময় পান করা হয়।
সোমালীয়রা দুধ, এলাচ ও দারুচিনি মিশিয়ে কফি পান করে, যাকে কাহওয়ে বলা হয়। খেজুরের সঙ্গে এটি পান করা বেশ স্বাদের। সুদানে গুহওয়াহ নামে একটি বিশেষ কফি পাওয়া যায়, যা জেবেনা নামের বিশেষ লাল পাত্রে পরিবেশন করা হয়। এতে সাধারণত এলাচ, কালো গোলমরিচ এবং আদা যুক্ত করা হয়। ওমানের মানুষেরা কফিতে মসলা ব্যবহার করেন। তাঁরা কফিকে গাহওয়া বলেন। জাফরান, গোলাপ জল, এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি—সবই থাকে তাতে।
কফির উৎসভূমি ইথিওপিয়ার মানুষেরা বেশ আয়োজন করে কফি পান করেন। লাল জেবেনা থেকে ছোট কফিকাপ সিনিতে করে তা পরিবেশন করা হয়। ডালা নামের ঐতিহ্যবাহী পাত্র থেকে ফিনজান নামের ছোট কাপে ঢেলে কফি পান করেন কাতারিরা। তবে কাপটি পূর্ণ করা হয় না। পূর্ণ করে দেওয়াকে অপমানজনক বিবেচনা করা হয়। নৌসনৌস নামের কফি মরক্কোতে বেশ জনপ্রিয়।
সূত্র: বায়তুল ফন ডটকম
১০ শতকের শুরুর দিকে মুসলিম বিশ্বে ওষুধ হিসেবে কফি ব্যবহার করা হতো। তবে পানীয় হিসেবে কফির ব্যবহার আরও কয়েক শতক পরের ঘটনা। ১৫ শতকে প্রথম ইয়েমেনে পানীয় হিসেবে কফির ব্যবহার শুরু হয়। বলা হয়, ইয়েমেনের সুফি মাজারগুলোতেই প্রথম এই চল শুরু হয়। এরপর মুসলিমরা একে নিজেদের সংস্কৃতি হিসেবে গ্রহণ করে নেয়। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে রাত জেগে ইবাদত করতে কফি পান করতেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
আরবি কাহওয়াহ শব্দ তুর্কিতে গিয়ে হয় কাহভে, ডাচ ভাষায় হয় কফি। ডাচ থেকে ইংরেজিতে কফি শব্দটি প্রবেশ করে। মিসরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কফিকে গাহওয়াহও বলা হয়। ইথিওপিয়াকে বলা হয় কফির জন্মভূমি। সেখান থেকে ইয়েমেন হয়ে ওসমানীয় খেলাফতের রাজধানী ইস্তাম্বুলে আসে কফি। দারুণ জনপ্রিয়তাও পায়। ১৬ শতকে ইস্তাম্বুলে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য কফিহাউস, যা একই সঙ্গে মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও প্রতিনিধিত্ব করতে শুরু করে। সুলতানের প্রাসাদে বিশেষ কারুকার্যখচিত কাপে রাজকীয় অতিথিদের কফি পরিবেশন করা হতো।
মুসলিম দেশগুলোতে তুমুল জনপ্রিয় কফিকে প্রথম দিকে ইউরোপীয়রা সন্দেহের চোখে দেখেছিল। পোপ ক্লিমেন্ট অষ্টম (১৫৩৬–১৬০৫) কফি পান নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন। পরে তাঁকে কফি পান করানো হলে তিনি কফি পানের অনুমোদন দেন। এরপর ইউরোপে পানীয় হিসেবে কফি জনপ্রিয় হতে থাকে। ১৬৫০ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম কফিহাউস খোলা হয় এবং পরের ৫০ বছরে লন্ডনে কফি জনপ্রিয়তম পানীয়ে পরিণত হয়। ইংল্যান্ডের কফিহাউসগুলোর বাইরে ওসমানীয় ঐতিহ্যের বিভিন্ন নিদর্শন দেখা যেত।
তুর্কি ও আরবি কফি একই ধরনের। উভয় অঞ্চলের মানুষই ব্ল্যাক কফি পান করেন। তবে তুর্কি কফিতে এলাচ থাকে না। আরব কফি বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কফি। এটি আরবদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে পরিণত হয়েছে। আরব কফিকে ইউনেসকো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ কফি আরবদের উদারতা, সৌহার্দ্য, একতা ও আতিথেয়তার প্রতীক। আরবি কফির স্বাদ এতো ভালো হওয়ার কারণ হলো, এর ব্যতিক্রম প্রস্তুত প্রণালি। আরবরা মাটির নিচে গর্ত করে চুলা বানিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে কফি জ্বাল দেয়।
মিসরেও সুফিদের হাত ধরে কফির যাত্রা হয়। সুফিরা অজিফা আদায়ের সময় এটি পান করতেন। ১৭ শতকের শেষের দিকে কায়রোতে ৬৪৩টি কফিহাউস ছিল। মিসর ও সিরিয়ায় কফির তিনটি ধরন রয়েছে: বেশি মিষ্টিকে জিয়াদা, মাঝারি মিষ্টিকে মাজবুত এবং কম মিষ্টিকে আরিহা বলা হয়। মিষ্টিবিহীন কফিকে বলা হয় সাদা, যা কেবল শোকপালনের সময় পান করা হয়।
সোমালীয়রা দুধ, এলাচ ও দারুচিনি মিশিয়ে কফি পান করে, যাকে কাহওয়ে বলা হয়। খেজুরের সঙ্গে এটি পান করা বেশ স্বাদের। সুদানে গুহওয়াহ নামে একটি বিশেষ কফি পাওয়া যায়, যা জেবেনা নামের বিশেষ লাল পাত্রে পরিবেশন করা হয়। এতে সাধারণত এলাচ, কালো গোলমরিচ এবং আদা যুক্ত করা হয়। ওমানের মানুষেরা কফিতে মসলা ব্যবহার করেন। তাঁরা কফিকে গাহওয়া বলেন। জাফরান, গোলাপ জল, এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি—সবই থাকে তাতে।
কফির উৎসভূমি ইথিওপিয়ার মানুষেরা বেশ আয়োজন করে কফি পান করেন। লাল জেবেনা থেকে ছোট কফিকাপ সিনিতে করে তা পরিবেশন করা হয়। ডালা নামের ঐতিহ্যবাহী পাত্র থেকে ফিনজান নামের ছোট কাপে ঢেলে কফি পান করেন কাতারিরা। তবে কাপটি পূর্ণ করা হয় না। পূর্ণ করে দেওয়াকে অপমানজনক বিবেচনা করা হয়। নৌসনৌস নামের কফি মরক্কোতে বেশ জনপ্রিয়।
সূত্র: বায়তুল ফন ডটকম
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নতুন কাপড় কেনা ও তা পরিধান করা একটি সাধারণ ঘটনা। কেউ ঈদের জন্য কেনে, কেউ বিয়ে-সাদির জন্য, কেউ বা নিজের প্রয়োজনে। নতুন কাপড় কিনে পরিধান করার সময় দোয়া পড়লে আল্লাহর বিশেষ রহমত পাওয়া যায়।
৪ ঘণ্টা আগেসপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম ও সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ দিন। এই দিনটি মুসলমানদের জন্য একটি সাপ্তাহিক ঈদের মতো, যা আত্মশুদ্ধি, ইবাদত এবং কল্যাণ অর্জনের বিশেষ সুযোগ এনে দেয়। এই বরকতময় দিনে কী কী করণীয় তা জানা এবং তা মেনে চলা একজন মুমিনের দায়িত্ব।
১ দিন আগেমানুষের জীবনে সবচেয়ে কষ্টকর মুহূর্তগুলোর একটি হলো আপনজন হারানোর বেদনা। এমন শোকের সময় মানুষ থাকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, দুর্বল ও অনেকটা একা। ঠিক তখনই সে আশায় থাকে কারও সহানুভূতির, সান্ত্বনার কিংবা একটু অনুভব করার মতো মানবিক উপস্থিতির। এই বিপদ ও কষ্টের সময়টিতে...
১ দিন আগেহিজরি সনের দ্বিতীয় মাস সফর। জাহিলি যুগে এই মাসকে অশুভ, বিপৎসংকুল ও অলক্ষুনে মাস হিসেবে বিবেচনা করা হতো। মানুষ মনে করত, এ মাসে শুভ কিছু হয় না—বিয়ে করলে বিচ্ছেদ হয়, ব্যবসা করলে লোকসান হয়, রোগবালাই বাড়ে। এমনকি সফরকে বলা হতো ‘আস-সাফারুল মুসাফফার’, অর্থাৎ বিবর্ণ সফর মাস। কারণ তখন খরা ও খাদ্যসংকট দেখা...
১ দিন আগে