আমজাদ ইউনুস

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন। তিনি ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি ও সৃজনশীলতার সঙ্গে মানুষের ভুলত্রুটি সংশোধন করেছেন। এখানে তেমনি কয়েকটি কৌশলের কথা তুলে ধরা হলো।
ভুলে নজর দেওয়া
রাসুল (সা.) পরম ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে সুকৌশলে ভুল সংশোধন করতেন। কখনো কখনো ভুলের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করতেন এবং তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়া থেকে বিরত থাকতেন। কখনো কখনো ভুল শোধরাতে নীরব থাকতেন। একবার তিনি তাঁর সাহাবিদের একটি কাজে অনুমতির ইঙ্গিত দিতে তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হাঁটছিলেন। তাঁর অঙ্গভঙ্গির পরিবর্তন দেখে সাহাবিরা বুঝে নিলেন, তাঁদের কাজটি সঠিক নয়। যখন ভুল বড় ধরনের হতো, তখন তাঁর কথায় জোর দিতেন এবং একই কথা বারবার বলতেন।
উসামা ইবনে যায়েদ একবার রাসুল (সা.)-এর কাছে এক যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন। এক শত্রু সৈন্যের কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘সৈন্যটি চিৎকার করে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। সে এ আশায় কালেমা বলছিল যে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’ উসামা আরও জানালেন, ‘তিনি ওই সৈন্যকে তরবারির আঘাতে হত্যা করেছেন। এ কথা শুনে নবী (সা.)-এর মুখের রং বদলে গেল। তিনি বারবার বলতে থাকলেন, ‘কীভাবে তুমি তাকে হত্যা করলে, যখন সে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোমল আচরণ
দুর্বল-অসহায়দের ভুল অতি কোমলভাবে শুধরে দিতেন মহানবী (সা.)। একদিন এক বেদুইন রাসুল (সা.)-এর মসজিদে প্রথম প্রবেশ করল। এরপর মসজিদের মেঝেতে প্রস্রাব করে দিল। রাসুল (সা.) নম্রভাবে সংশোধন করে বললেন, ‘আমরা মসজিদে প্রস্রাব করি না। এই ঘরগুলো ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দেওয়া
ভুল শোধরাতে মহানবী (সা.) মানুষকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। তাদের জন্য দোয়া করতেন। রাসুল (সা.) একদিন আবু মাসুদ আনসারিকে দাস প্রহার করতে দেখে একটি কথাই বলেছিলেন, ‘তুমি তার ওপর যে ক্ষমতা রাখো, তার তুলনায় আল্লাহ তোমার ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা রাখেন।’ আবু মাসুদ তৎক্ষণাৎ দাসটি মুক্ত করে দিলেন। (মুসলিম)
পরিচয় গোপন রাখা
শ্রোতাদের সামনে অভিনব কৌশলে ভুল সংশোধন করতেন মহানবী (সা.)। সবার উপকারে ভুল শোধরাতে সুকৌশলে সম্পৃক্ত ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে কথা বলতেন। বলতেন, ‘কী হলো লোকজনের, তারা এমন এমন কাজ করছে।’ এভাবে তিনি সাধারণ ভুল করা লোকদের সতর্ক করতেন, একই সঙ্গে সুকৌশলে ভুলে জড়িত ব্যক্তিদের তওবা করে নেওয়ার ইঙ্গিত দিতেন। অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াতেন না। সাহাবিদেরও এ কাজে নিরুৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছেন, ‘যে অন্য ভাইয়ের পাপ খুঁজে বেড়ায়, আল্লাহও তার দোষ খুঁজে বের করবেন।’ (তিরমিজি)
কঠোরতা অবলম্বন
ভুল শোধরাতে কখনো কখনো রাসুল (সা.) কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ভুলের সংশোধন করতেন। একদিন এক সাহাবিকে গিবত করতে দেখলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কড়া কথা শুনিয়ে দিলেন এবং সতর্ক করলেন। (আল মুজামুল কবির)
মানুষের মর্যাদা রক্ষা
ভুল সংশোধনের সময় মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতেন মহানবী (সা.)। ভুলের সমালোচনা করতেন; তবে ভুলকারীকে দোষ দিতেন না। উপহাস কিংবা খাটো করতেন না। একবার মাদকাসক্তি ছাড়তে অক্ষম এক ব্যক্তিকে লোকজন অভিশাপ দিচ্ছিল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে লানত দিয়ো না। আমি তার ব্যাপারে জানি, সে আল্লাহ এবং তার রাসুলকে ভালোবাসে।’ (বুখারি)
লেখক: শিক্ষক ও অনুবাদক

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন। তিনি ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি ও সৃজনশীলতার সঙ্গে মানুষের ভুলত্রুটি সংশোধন করেছেন। এখানে তেমনি কয়েকটি কৌশলের কথা তুলে ধরা হলো।
ভুলে নজর দেওয়া
রাসুল (সা.) পরম ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে সুকৌশলে ভুল সংশোধন করতেন। কখনো কখনো ভুলের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করতেন এবং তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়া থেকে বিরত থাকতেন। কখনো কখনো ভুল শোধরাতে নীরব থাকতেন। একবার তিনি তাঁর সাহাবিদের একটি কাজে অনুমতির ইঙ্গিত দিতে তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হাঁটছিলেন। তাঁর অঙ্গভঙ্গির পরিবর্তন দেখে সাহাবিরা বুঝে নিলেন, তাঁদের কাজটি সঠিক নয়। যখন ভুল বড় ধরনের হতো, তখন তাঁর কথায় জোর দিতেন এবং একই কথা বারবার বলতেন।
উসামা ইবনে যায়েদ একবার রাসুল (সা.)-এর কাছে এক যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন। এক শত্রু সৈন্যের কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘সৈন্যটি চিৎকার করে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। সে এ আশায় কালেমা বলছিল যে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’ উসামা আরও জানালেন, ‘তিনি ওই সৈন্যকে তরবারির আঘাতে হত্যা করেছেন। এ কথা শুনে নবী (সা.)-এর মুখের রং বদলে গেল। তিনি বারবার বলতে থাকলেন, ‘কীভাবে তুমি তাকে হত্যা করলে, যখন সে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোমল আচরণ
দুর্বল-অসহায়দের ভুল অতি কোমলভাবে শুধরে দিতেন মহানবী (সা.)। একদিন এক বেদুইন রাসুল (সা.)-এর মসজিদে প্রথম প্রবেশ করল। এরপর মসজিদের মেঝেতে প্রস্রাব করে দিল। রাসুল (সা.) নম্রভাবে সংশোধন করে বললেন, ‘আমরা মসজিদে প্রস্রাব করি না। এই ঘরগুলো ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দেওয়া
ভুল শোধরাতে মহানবী (সা.) মানুষকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। তাদের জন্য দোয়া করতেন। রাসুল (সা.) একদিন আবু মাসুদ আনসারিকে দাস প্রহার করতে দেখে একটি কথাই বলেছিলেন, ‘তুমি তার ওপর যে ক্ষমতা রাখো, তার তুলনায় আল্লাহ তোমার ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা রাখেন।’ আবু মাসুদ তৎক্ষণাৎ দাসটি মুক্ত করে দিলেন। (মুসলিম)
পরিচয় গোপন রাখা
শ্রোতাদের সামনে অভিনব কৌশলে ভুল সংশোধন করতেন মহানবী (সা.)। সবার উপকারে ভুল শোধরাতে সুকৌশলে সম্পৃক্ত ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে কথা বলতেন। বলতেন, ‘কী হলো লোকজনের, তারা এমন এমন কাজ করছে।’ এভাবে তিনি সাধারণ ভুল করা লোকদের সতর্ক করতেন, একই সঙ্গে সুকৌশলে ভুলে জড়িত ব্যক্তিদের তওবা করে নেওয়ার ইঙ্গিত দিতেন। অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াতেন না। সাহাবিদেরও এ কাজে নিরুৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছেন, ‘যে অন্য ভাইয়ের পাপ খুঁজে বেড়ায়, আল্লাহও তার দোষ খুঁজে বের করবেন।’ (তিরমিজি)
কঠোরতা অবলম্বন
ভুল শোধরাতে কখনো কখনো রাসুল (সা.) কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ভুলের সংশোধন করতেন। একদিন এক সাহাবিকে গিবত করতে দেখলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কড়া কথা শুনিয়ে দিলেন এবং সতর্ক করলেন। (আল মুজামুল কবির)
মানুষের মর্যাদা রক্ষা
ভুল সংশোধনের সময় মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতেন মহানবী (সা.)। ভুলের সমালোচনা করতেন; তবে ভুলকারীকে দোষ দিতেন না। উপহাস কিংবা খাটো করতেন না। একবার মাদকাসক্তি ছাড়তে অক্ষম এক ব্যক্তিকে লোকজন অভিশাপ দিচ্ছিল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে লানত দিয়ো না। আমি তার ব্যাপারে জানি, সে আল্লাহ এবং তার রাসুলকে ভালোবাসে।’ (বুখারি)
লেখক: শিক্ষক ও অনুবাদক
আমজাদ ইউনুস

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন। তিনি ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি ও সৃজনশীলতার সঙ্গে মানুষের ভুলত্রুটি সংশোধন করেছেন। এখানে তেমনি কয়েকটি কৌশলের কথা তুলে ধরা হলো।
ভুলে নজর দেওয়া
রাসুল (সা.) পরম ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে সুকৌশলে ভুল সংশোধন করতেন। কখনো কখনো ভুলের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করতেন এবং তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়া থেকে বিরত থাকতেন। কখনো কখনো ভুল শোধরাতে নীরব থাকতেন। একবার তিনি তাঁর সাহাবিদের একটি কাজে অনুমতির ইঙ্গিত দিতে তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হাঁটছিলেন। তাঁর অঙ্গভঙ্গির পরিবর্তন দেখে সাহাবিরা বুঝে নিলেন, তাঁদের কাজটি সঠিক নয়। যখন ভুল বড় ধরনের হতো, তখন তাঁর কথায় জোর দিতেন এবং একই কথা বারবার বলতেন।
উসামা ইবনে যায়েদ একবার রাসুল (সা.)-এর কাছে এক যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন। এক শত্রু সৈন্যের কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘সৈন্যটি চিৎকার করে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। সে এ আশায় কালেমা বলছিল যে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’ উসামা আরও জানালেন, ‘তিনি ওই সৈন্যকে তরবারির আঘাতে হত্যা করেছেন। এ কথা শুনে নবী (সা.)-এর মুখের রং বদলে গেল। তিনি বারবার বলতে থাকলেন, ‘কীভাবে তুমি তাকে হত্যা করলে, যখন সে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোমল আচরণ
দুর্বল-অসহায়দের ভুল অতি কোমলভাবে শুধরে দিতেন মহানবী (সা.)। একদিন এক বেদুইন রাসুল (সা.)-এর মসজিদে প্রথম প্রবেশ করল। এরপর মসজিদের মেঝেতে প্রস্রাব করে দিল। রাসুল (সা.) নম্রভাবে সংশোধন করে বললেন, ‘আমরা মসজিদে প্রস্রাব করি না। এই ঘরগুলো ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দেওয়া
ভুল শোধরাতে মহানবী (সা.) মানুষকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। তাদের জন্য দোয়া করতেন। রাসুল (সা.) একদিন আবু মাসুদ আনসারিকে দাস প্রহার করতে দেখে একটি কথাই বলেছিলেন, ‘তুমি তার ওপর যে ক্ষমতা রাখো, তার তুলনায় আল্লাহ তোমার ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা রাখেন।’ আবু মাসুদ তৎক্ষণাৎ দাসটি মুক্ত করে দিলেন। (মুসলিম)
পরিচয় গোপন রাখা
শ্রোতাদের সামনে অভিনব কৌশলে ভুল সংশোধন করতেন মহানবী (সা.)। সবার উপকারে ভুল শোধরাতে সুকৌশলে সম্পৃক্ত ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে কথা বলতেন। বলতেন, ‘কী হলো লোকজনের, তারা এমন এমন কাজ করছে।’ এভাবে তিনি সাধারণ ভুল করা লোকদের সতর্ক করতেন, একই সঙ্গে সুকৌশলে ভুলে জড়িত ব্যক্তিদের তওবা করে নেওয়ার ইঙ্গিত দিতেন। অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াতেন না। সাহাবিদেরও এ কাজে নিরুৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছেন, ‘যে অন্য ভাইয়ের পাপ খুঁজে বেড়ায়, আল্লাহও তার দোষ খুঁজে বের করবেন।’ (তিরমিজি)
কঠোরতা অবলম্বন
ভুল শোধরাতে কখনো কখনো রাসুল (সা.) কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ভুলের সংশোধন করতেন। একদিন এক সাহাবিকে গিবত করতে দেখলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কড়া কথা শুনিয়ে দিলেন এবং সতর্ক করলেন। (আল মুজামুল কবির)
মানুষের মর্যাদা রক্ষা
ভুল সংশোধনের সময় মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতেন মহানবী (সা.)। ভুলের সমালোচনা করতেন; তবে ভুলকারীকে দোষ দিতেন না। উপহাস কিংবা খাটো করতেন না। একবার মাদকাসক্তি ছাড়তে অক্ষম এক ব্যক্তিকে লোকজন অভিশাপ দিচ্ছিল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে লানত দিয়ো না। আমি তার ব্যাপারে জানি, সে আল্লাহ এবং তার রাসুলকে ভালোবাসে।’ (বুখারি)
লেখক: শিক্ষক ও অনুবাদক

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন। তিনি ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি ও সৃজনশীলতার সঙ্গে মানুষের ভুলত্রুটি সংশোধন করেছেন। এখানে তেমনি কয়েকটি কৌশলের কথা তুলে ধরা হলো।
ভুলে নজর দেওয়া
রাসুল (সা.) পরম ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে সুকৌশলে ভুল সংশোধন করতেন। কখনো কখনো ভুলের প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি করতেন এবং তাৎক্ষণিক জবাব দেওয়া থেকে বিরত থাকতেন। কখনো কখনো ভুল শোধরাতে নীরব থাকতেন। একবার তিনি তাঁর সাহাবিদের একটি কাজে অনুমতির ইঙ্গিত দিতে তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হাঁটছিলেন। তাঁর অঙ্গভঙ্গির পরিবর্তন দেখে সাহাবিরা বুঝে নিলেন, তাঁদের কাজটি সঠিক নয়। যখন ভুল বড় ধরনের হতো, তখন তাঁর কথায় জোর দিতেন এবং একই কথা বারবার বলতেন।
উসামা ইবনে যায়েদ একবার রাসুল (সা.)-এর কাছে এক যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন। এক শত্রু সৈন্যের কথা উল্লেখ করে বললেন, ‘সৈন্যটি চিৎকার করে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। সে এ আশায় কালেমা বলছিল যে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’ উসামা আরও জানালেন, ‘তিনি ওই সৈন্যকে তরবারির আঘাতে হত্যা করেছেন। এ কথা শুনে নবী (সা.)-এর মুখের রং বদলে গেল। তিনি বারবার বলতে থাকলেন, ‘কীভাবে তুমি তাকে হত্যা করলে, যখন সে বলছিল—লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কোমল আচরণ
দুর্বল-অসহায়দের ভুল অতি কোমলভাবে শুধরে দিতেন মহানবী (সা.)। একদিন এক বেদুইন রাসুল (সা.)-এর মসজিদে প্রথম প্রবেশ করল। এরপর মসজিদের মেঝেতে প্রস্রাব করে দিল। রাসুল (সা.) নম্রভাবে সংশোধন করে বললেন, ‘আমরা মসজিদে প্রস্রাব করি না। এই ঘরগুলো ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দেওয়া
ভুল শোধরাতে মহানবী (সা.) মানুষকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। তাদের জন্য দোয়া করতেন। রাসুল (সা.) একদিন আবু মাসুদ আনসারিকে দাস প্রহার করতে দেখে একটি কথাই বলেছিলেন, ‘তুমি তার ওপর যে ক্ষমতা রাখো, তার তুলনায় আল্লাহ তোমার ওপর অনেক বেশি ক্ষমতা রাখেন।’ আবু মাসুদ তৎক্ষণাৎ দাসটি মুক্ত করে দিলেন। (মুসলিম)
পরিচয় গোপন রাখা
শ্রোতাদের সামনে অভিনব কৌশলে ভুল সংশোধন করতেন মহানবী (সা.)। সবার উপকারে ভুল শোধরাতে সুকৌশলে সম্পৃক্ত ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে কথা বলতেন। বলতেন, ‘কী হলো লোকজনের, তারা এমন এমন কাজ করছে।’ এভাবে তিনি সাধারণ ভুল করা লোকদের সতর্ক করতেন, একই সঙ্গে সুকৌশলে ভুলে জড়িত ব্যক্তিদের তওবা করে নেওয়ার ইঙ্গিত দিতেন। অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াতেন না। সাহাবিদেরও এ কাজে নিরুৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছেন, ‘যে অন্য ভাইয়ের পাপ খুঁজে বেড়ায়, আল্লাহও তার দোষ খুঁজে বের করবেন।’ (তিরমিজি)
কঠোরতা অবলম্বন
ভুল শোধরাতে কখনো কখনো রাসুল (সা.) কঠোরতা অবলম্বন করতেন। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ভুলের সংশোধন করতেন। একদিন এক সাহাবিকে গিবত করতে দেখলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কড়া কথা শুনিয়ে দিলেন এবং সতর্ক করলেন। (আল মুজামুল কবির)
মানুষের মর্যাদা রক্ষা
ভুল সংশোধনের সময় মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতেন মহানবী (সা.)। ভুলের সমালোচনা করতেন; তবে ভুলকারীকে দোষ দিতেন না। উপহাস কিংবা খাটো করতেন না। একবার মাদকাসক্তি ছাড়তে অক্ষম এক ব্যক্তিকে লোকজন অভিশাপ দিচ্ছিল। রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে লানত দিয়ো না। আমি তার ব্যাপারে জানি, সে আল্লাহ এবং তার রাসুলকে ভালোবাসে।’ (বুখারি)
লেখক: শিক্ষক ও অনুবাদক

মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৪ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৫ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৫ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন।
১৩ অক্টোবর ২০২৩
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৪ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৫ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৫ ঘণ্টা আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক মহামুহূর্ত তৈরি করে।
জমাদিউল আউয়াল মাস হিজরি বর্ষপঞ্জির মধ্যবর্তী এক শান্ত সময়। ইসলামি ইতিহাসে এই মাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে—বিশেষত নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিদের কিছু যুদ্ধ এবং ইসলামি সমাজের পুনর্গঠনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এটি এমন এক মাস, যা আমাদের আল্লাহর পথে অবিচল থাকার, আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন যারা তাঁর পথে দৃঢ় থাকে।’ (সুরা সাফ: ৪)
জুমা শ্রেষ্ঠতম দিন
নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হয়, এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো শুক্রবার। এই দিনেই আদম সৃষ্টি হয়েছেন, এই দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছেন এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। কিয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য বিশেষ ইবাদতের দিন। এদিনে গোসল করা, সুন্দর পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা ও সালাত আদায় করা—এসব আমল অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমুআ: ৯)
এই জুমা ও পুরো মাসে কিছু আমল করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত পাওয়ার আশা করা যায়:
১. আত্মশুদ্ধি ও তওবা: অতীতের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
২. সুরা কাহফ তিলাওয়াত: নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবারে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করে, আল্লাহ তাআলা তাকে এক শুক্রবার থেকে পরের শুক্রবার পর্যন্ত নুর দান করেন।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ৩৩৯২)
৩. দরুদ শরিফ বেশি পরিমাণে পড়া: নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার প্রতি বেশি দরুদ পাঠ করো—কারণ, তোমাদের দরুদ আমাকে পৌঁছে দেওয়া হয়।’ (সুনান আবু দাউদ: ১৫৩১)
৪. দরিদ্র ও অভাবীদের সহায়তা: মাসের শুরুতে দান-সদকা করলে পুরো মাসে বরকত আসে।
৫. দোয়া কবুলের সময়: শুক্রবারে আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টি বিশেষ দোয়া কবুলের সময়।
এই জুমা হোক জীবনের নতুন দিকনির্দেশনা
জমাদিউল আউয়ালের প্রথম জুমা কেবল একটি তারিখ নয়; এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু নেক আমল চিরস্থায়ী। নতুন মাসের শুরু যেন নতুন প্রেরণা হয়ে আসে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ: ১১)। তাই আসুন, এই পবিত্র জুমায় নিজেদের পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করি—নামাজে মনোযোগ দিই, কোরআন পাঠে নিয়মিত হই, মনের গ্লানি দূর করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জীবন উৎসর্গ করি।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক মহামুহূর্ত তৈরি করে।
জমাদিউল আউয়াল মাস হিজরি বর্ষপঞ্জির মধ্যবর্তী এক শান্ত সময়। ইসলামি ইতিহাসে এই মাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে—বিশেষত নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিদের কিছু যুদ্ধ এবং ইসলামি সমাজের পুনর্গঠনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এটি এমন এক মাস, যা আমাদের আল্লাহর পথে অবিচল থাকার, আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন যারা তাঁর পথে দৃঢ় থাকে।’ (সুরা সাফ: ৪)
জুমা শ্রেষ্ঠতম দিন
নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হয়, এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো শুক্রবার। এই দিনেই আদম সৃষ্টি হয়েছেন, এই দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছেন এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। কিয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য বিশেষ ইবাদতের দিন। এদিনে গোসল করা, সুন্দর পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা ও সালাত আদায় করা—এসব আমল অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমুআ: ৯)
এই জুমা ও পুরো মাসে কিছু আমল করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত পাওয়ার আশা করা যায়:
১. আত্মশুদ্ধি ও তওবা: অতীতের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
২. সুরা কাহফ তিলাওয়াত: নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবারে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করে, আল্লাহ তাআলা তাকে এক শুক্রবার থেকে পরের শুক্রবার পর্যন্ত নুর দান করেন।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ৩৩৯২)
৩. দরুদ শরিফ বেশি পরিমাণে পড়া: নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার প্রতি বেশি দরুদ পাঠ করো—কারণ, তোমাদের দরুদ আমাকে পৌঁছে দেওয়া হয়।’ (সুনান আবু দাউদ: ১৫৩১)
৪. দরিদ্র ও অভাবীদের সহায়তা: মাসের শুরুতে দান-সদকা করলে পুরো মাসে বরকত আসে।
৫. দোয়া কবুলের সময়: শুক্রবারে আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টি বিশেষ দোয়া কবুলের সময়।
এই জুমা হোক জীবনের নতুন দিকনির্দেশনা
জমাদিউল আউয়ালের প্রথম জুমা কেবল একটি তারিখ নয়; এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু নেক আমল চিরস্থায়ী। নতুন মাসের শুরু যেন নতুন প্রেরণা হয়ে আসে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ: ১১)। তাই আসুন, এই পবিত্র জুমায় নিজেদের পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করি—নামাজে মনোযোগ দিই, কোরআন পাঠে নিয়মিত হই, মনের গ্লানি দূর করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জীবন উৎসর্গ করি।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন।
১৩ অক্টোবর ২০২৩
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৫ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৫ ঘণ্টা আগেকাউসার লাবীব

মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা করেছে। ধর্ষণকে ইসলামে ব্যভিচারের (জিনা) চেয়েও ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে ইসলাম ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধি থেকে শুরু করে সামাজিক প্রতিরোধ এবং অপরাধীর জন্য কঠোর শাস্তির সমন্বিত ব্যবস্থা দিয়েছে।
ধর্ষণ বা ব্যভিচার এক দিনে সংঘটিত হয় না; বরং এটি ধাপে ধাপে অশ্লীলতার পথ ধরে আসে। তাই ইসলাম অপরাধের উৎসমুখেই লাগাম টেনে ধরার জন্য নারী-পুরুষ উভয়কে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
কঠোরভাবে পর্দার বিধান ও অবাধ মেলামেশা বন্ধ: পর্দার বিধান নারী-পুরুষের মধ্যে দূরত্ব ও নিরাপদ সম্পর্ক বজায় রাখে। নারীদের তাদের রূপ-সৌন্দর্য স্বামী ও মাহরাম (যাদের সঙ্গে বিয়ে বৈধ নয়) ব্যতীত অন্য কারও সামনে প্রকাশ না করতে এবং বাইরে যাওয়ার সময় শালীন পোশাক পরিধান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, পরিবার ও শিক্ষাব্যবস্থায় তাকওয়াভিত্তিক (খোদাভীতি) নৈতিক শিক্ষা দেওয়া অপরিহার্য, যা আত্মশুদ্ধি ও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে সহায়ক।
ধর্ষকের কঠোরতম শাস্তির নিশ্চয়তা
ইসলামে ব্যভিচার, বলপ্রয়োগ এবং সম্ভ্রম লুণ্ঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি মারাত্মক অপরাধ হলো ধর্ষণ। তাই ধর্ষকের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর এবং তাতে কোনো প্রকার দয়া-মায়া প্রদর্শনের সুযোগ নেই।

মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা করেছে। ধর্ষণকে ইসলামে ব্যভিচারের (জিনা) চেয়েও ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে ইসলাম ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধি থেকে শুরু করে সামাজিক প্রতিরোধ এবং অপরাধীর জন্য কঠোর শাস্তির সমন্বিত ব্যবস্থা দিয়েছে।
ধর্ষণ বা ব্যভিচার এক দিনে সংঘটিত হয় না; বরং এটি ধাপে ধাপে অশ্লীলতার পথ ধরে আসে। তাই ইসলাম অপরাধের উৎসমুখেই লাগাম টেনে ধরার জন্য নারী-পুরুষ উভয়কে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
কঠোরভাবে পর্দার বিধান ও অবাধ মেলামেশা বন্ধ: পর্দার বিধান নারী-পুরুষের মধ্যে দূরত্ব ও নিরাপদ সম্পর্ক বজায় রাখে। নারীদের তাদের রূপ-সৌন্দর্য স্বামী ও মাহরাম (যাদের সঙ্গে বিয়ে বৈধ নয়) ব্যতীত অন্য কারও সামনে প্রকাশ না করতে এবং বাইরে যাওয়ার সময় শালীন পোশাক পরিধান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, পরিবার ও শিক্ষাব্যবস্থায় তাকওয়াভিত্তিক (খোদাভীতি) নৈতিক শিক্ষা দেওয়া অপরিহার্য, যা আত্মশুদ্ধি ও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে সহায়ক।
ধর্ষকের কঠোরতম শাস্তির নিশ্চয়তা
ইসলামে ব্যভিচার, বলপ্রয়োগ এবং সম্ভ্রম লুণ্ঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি মারাত্মক অপরাধ হলো ধর্ষণ। তাই ধর্ষকের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর এবং তাতে কোনো প্রকার দয়া-মায়া প্রদর্শনের সুযোগ নেই।

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন।
১৩ অক্টোবর ২০২৩
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৪ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৫ ঘণ্টা আগেমুফতি এনায়েতুল্লাহ ফাহাদ

আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল। আর আউয়াল মানে প্রথম। তথা প্রথম জুমাদা বা প্রথম শীত। মূলত এই মাসটিতে আরবে ঠান্ডা নেমে আসত—প্রচণ্ড শীতে কিংবা প্রবল শৈত্যপ্রবাহে সবকিছু প্রায় জমে স্থির হয়ে যায়। তাই এ মাসের নাম জমাদিউল আউয়াল বা শীতকালের প্রথম মাস।
আসন্ন ‘শীতকাল’ বাংলা বছরের ছয়টি ঋতুর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঋতু। এটি প্রকৃতির মাঝে এক শীতল ও মনোরম রূপ নিয়ে আসে, যা মানুষের ইবাদত-বন্দেগিতে এক বিশেষ প্রভাব ফেলে। আসলে শীত ও গ্রীষ্ম সবই আল্লাহপ্রদত্ত প্রকৃতির অবদান। এর প্রতিটিতে রয়েছে কুদরতের নিদর্শন ও নিগূঢ় রহস্য। কোরআন করিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেহেতু কুরাইশদের অনুরাগ রয়েছে! তাদের আগ্রহ আছে শীত ও গ্রীষ্মে ভ্রমণের। অতএব তাদের ইবাদত করা উচিত এই (কাবা) গৃহের রবের। যিনি তাদের ক্ষুধায় অন্ন দান করেন এবং শঙ্কায় নিরাপত্তা দান করেন।’ (সুরা কুরাইশ: ১-৪)
জুমাদাল উলা মাস—নতুন ঋতু হিসেবেও মুমিনের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিমরা নতুন বছর ও মাসের চাঁদ দেখে আনন্দিত হয়, পাশাপাশি নতুন ঋতু পেয়েও তাদের মন হয় পুলকিত। কারণ প্রত্যেক মানুষ দুনিয়ায় আগমন করেছে নির্দিষ্ট কিছু সময় নিয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের পর কোনো প্রাণী বা সৃষ্টির বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। তাই তো প্রতিটি মুমিনের কাছে প্রতি মুহূর্তের দাম সোনার চেয়েও দামি। সময়-কাল-মুহূর্তের আগমন হলেই মুমিন দোয়া পড়বে। সাহাবি তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) যখন নতুন চাঁদ বা আবহ পরিবর্তন লক্ষ করতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন—‘আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ইমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।’ (সুনানে দারিমি: ১৭২৫)
প্রসঙ্গত, রমজান ও মহররমের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিবস আর ফজিলতের কথা এই মাসে না থাকলেও রাসুল (সা.)-এর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট একটি আমলের কথা হাদিসে এসেছে—তিনি প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা রাখতেন। (সহিহ বুখারি: ১৯৭৫)। এ জন্যই আমাদের উচিত যেসব দিনের ও যেসব মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সেসব দিনে ও মাসে ইবাদত করা। আর যেসব দিন ও মাসের বিশেষ ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়নি, সেসব দিন ও মাসে বেশি করে নেক আমল করা। ফলে আখিরাতের ময়দানে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
আমরা পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনা করলে দেখতে পাব জমাদিউল আউয়াল মাস ইবাদতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নফল রোজা, নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-কালাম, দান-সদকাহ খয়রাত, ওমরাহ, হজ ইত্যাদির মাধ্যমে এই মাসকে সার্থক ও সাফল্যময় করা যায়। সুতরাং আমাদের উচিত এই মাস ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা।
লেখক: মুহাদ্দিস ও খতিব

আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল। আর আউয়াল মানে প্রথম। তথা প্রথম জুমাদা বা প্রথম শীত। মূলত এই মাসটিতে আরবে ঠান্ডা নেমে আসত—প্রচণ্ড শীতে কিংবা প্রবল শৈত্যপ্রবাহে সবকিছু প্রায় জমে স্থির হয়ে যায়। তাই এ মাসের নাম জমাদিউল আউয়াল বা শীতকালের প্রথম মাস।
আসন্ন ‘শীতকাল’ বাংলা বছরের ছয়টি ঋতুর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঋতু। এটি প্রকৃতির মাঝে এক শীতল ও মনোরম রূপ নিয়ে আসে, যা মানুষের ইবাদত-বন্দেগিতে এক বিশেষ প্রভাব ফেলে। আসলে শীত ও গ্রীষ্ম সবই আল্লাহপ্রদত্ত প্রকৃতির অবদান। এর প্রতিটিতে রয়েছে কুদরতের নিদর্শন ও নিগূঢ় রহস্য। কোরআন করিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেহেতু কুরাইশদের অনুরাগ রয়েছে! তাদের আগ্রহ আছে শীত ও গ্রীষ্মে ভ্রমণের। অতএব তাদের ইবাদত করা উচিত এই (কাবা) গৃহের রবের। যিনি তাদের ক্ষুধায় অন্ন দান করেন এবং শঙ্কায় নিরাপত্তা দান করেন।’ (সুরা কুরাইশ: ১-৪)
জুমাদাল উলা মাস—নতুন ঋতু হিসেবেও মুমিনের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিমরা নতুন বছর ও মাসের চাঁদ দেখে আনন্দিত হয়, পাশাপাশি নতুন ঋতু পেয়েও তাদের মন হয় পুলকিত। কারণ প্রত্যেক মানুষ দুনিয়ায় আগমন করেছে নির্দিষ্ট কিছু সময় নিয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের পর কোনো প্রাণী বা সৃষ্টির বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। তাই তো প্রতিটি মুমিনের কাছে প্রতি মুহূর্তের দাম সোনার চেয়েও দামি। সময়-কাল-মুহূর্তের আগমন হলেই মুমিন দোয়া পড়বে। সাহাবি তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) যখন নতুন চাঁদ বা আবহ পরিবর্তন লক্ষ করতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন—‘আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ইমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।’ (সুনানে দারিমি: ১৭২৫)
প্রসঙ্গত, রমজান ও মহররমের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিবস আর ফজিলতের কথা এই মাসে না থাকলেও রাসুল (সা.)-এর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট একটি আমলের কথা হাদিসে এসেছে—তিনি প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা রাখতেন। (সহিহ বুখারি: ১৯৭৫)। এ জন্যই আমাদের উচিত যেসব দিনের ও যেসব মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সেসব দিনে ও মাসে ইবাদত করা। আর যেসব দিন ও মাসের বিশেষ ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়নি, সেসব দিন ও মাসে বেশি করে নেক আমল করা। ফলে আখিরাতের ময়দানে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
আমরা পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনা করলে দেখতে পাব জমাদিউল আউয়াল মাস ইবাদতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নফল রোজা, নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-কালাম, দান-সদকাহ খয়রাত, ওমরাহ, হজ ইত্যাদির মাধ্যমে এই মাসকে সার্থক ও সাফল্যময় করা যায়। সুতরাং আমাদের উচিত এই মাস ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা।
লেখক: মুহাদ্দিস ও খতিব

ভুল মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সবার জীবনে ছোট-বড় ভুল হয়ে থাকে। ভুল আমাদের অপূর্ণতা দূর করে পূর্ণতা লাভে সাহায্য করে। রাসুল (সা.) মানবতার সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদ ছিলেন। তিনি ভুলকে লজ্জার কারণ হিসেবে নয়; বরং শিক্ষণীয় মুহূর্ত হিসেবে গ্রহণ করতে শিখিয়েছেন।
১৩ অক্টোবর ২০২৩
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
২ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৪ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৫ ঘণ্টা আগে