হাফেজ মাওলানা আল আমিন সরকার

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, হজরত ফাতেমা (রা.) ও আলী ইবনে আবু তালেব (রা.)-এর পুত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষ অবলম্বন করে যে জীবনোৎসর্গ করেছেন, তা আজও কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে অমলিন অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
কারবালা ইরাকের বাগদাদ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি ময়দানের নাম। ৬১ হিজরির ১০ মহররম আশুরার দিন ফোরাত নদীর তীরে এই প্রান্তরে সংঘটিত হয় ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার-পরিজনসহ প্রায় ৭২ জন শাহাদত বরণ করেন। তাঁর একমাত্র জীবিত পুত্র হজরত জায়নুল আবেদিন (রহ.) ছাড়া কেউই সেদিন বাঁচতে পারেনি।
এই কারবালার যুদ্ধ কোনো আকস্মিক সংঘর্ষ নয়, বরং এটি ছিল একটি গভীর রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও আদর্শিক দ্বন্দ্বের ফল। কারবালা যুদ্ধের অন্যতম কারণ হলো ইয়াজিদের অবৈধ মনোনয়ন। মহান সাহাবি হজরত মুআবিয়া (রা.) নিজের পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকার ঘোষণা করলে অনেক সাহাবি ও তাবেয়ি এর বিরোধিতা করেন। এটি হজরত হাসান (রা.) ও মুআবিয়ার পূর্ব চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবেও বিবেচিত হয়। এর ফলে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। ইয়াজিদের চরিত্র, জীবনাচার ও শাসননীতি ইসলামের মৌল নীতিমালার পরিপন্থী হওয়ায় ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর প্রতি আনুগত্য অস্বীকার করেন এবং খেলাফতের ন্যায়পরায়ণতা রক্ষায় তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। (তারিখে তাবারি: ৫ম খণ্ড)
ঐতিহাসিক বর্ণনা থেকে জানা যায়, উমাইয়া শাসনের অধীনে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছিল। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) খেলাফতের পুনর্জীবন এবং নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের লক্ষ্যে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। এর পেছনে ছিল কুফাবাসীর আহ্বান।
কারবালার ঘটনার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল কুফাবাসীর বিশ্বাসঘাতকতা। কুফাবাসী ইয়াজিদের শাসনের বিরুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.)-কে নেতা হিসেবে আহ্বান জানায়। তবে পরে তারা ভীত হয়ে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। পথিমধ্যে ইয়াজিদ ইমাম হুসাইনকে আটকে ফেলার নির্দেশ দেয়। কারবালা নামক স্থানে হুসাইনি কাফেলাকে অবরোধ করা হয়। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) ইয়াজিদ বাহিনীকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ১. তাঁকে মদিনায় ফিরে যেতে দেওয়া হোক। ২. সীমান্তে গিয়ে জীবন কাটাতে দেওয়া হোক। ৩. এ দুটোর একটিও না হলে ইয়াজিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু নিষ্ঠুর ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান থেকে এক চুলও সরে আসেনি।
ঐতিহাসিকেরা লেখেন, ১০ মহররম, ফজরের নামাজের পর ইয়াজিদের চার হাজার সৈন্য ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারকে পানি সরবরাহ বন্ধ রেখে ঘিরে ফেলে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত এক অসম যুদ্ধ চলে। ইমাম হুসাইন (রা.) একে একে তাঁর পরিবার ও অনুচরদের শাহাদত প্রত্যক্ষ করেন। শেষে তিনি নিজেও শাহাদত বরণ করেন।
তাঁর শাহাদত এতটাই নির্মম ছিল যে, শরীরে ৩৩টি বর্শা, ৩৪টি তরবারির আঘাত এবং অসংখ্য তীরের ক্ষত চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকারী ছিল সিনান ইবনে আনাস নাখায়ি, এবং সহযোগী হিসেবে ছিল খাওলি ইবনে ইয়াজিদ। তাঁর মস্তক কেটে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে পাঠানো হয়। (কারবালার ইতিহাস, আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফি)
ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত ইয়াজিদের জন্য এক ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনে। ইয়াজিদ ছিল ইসলামি ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণিত শাসকদের একজন। তাঁর তিন বছরের শাসনামলে তিনটি ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়। ১. ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত। ২. মদিনায় লুট ও ধর্ষণ এবং মসজিদে নববীর অবমাননা। ৩. কাবা শরিফে আগুন লাগানো। এই অপরাধগুলোর কারণে ইসলামি ইতিহাসে ইয়াজিদের মৃত্যু রহস্যজনকভাবে ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কেউ বলেন, বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে, কেউ বলেন পানির পিপাসায় বা দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। সব মতেই এটি একটি করুণ ও অপমানজনক মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর তাঁর পুত্র দ্বিতীয় মুআবিয়া মাত্র তিন মাসেই মৃত্যুবরণ করেন এবং উমাইয়া শাসনের এই অযাচিত অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। (ইসলামি ঐতিহাসিক দলিল, তাবারি, ইবনে আসাকির, বদায়েউজ্জমান, ইবনে কাসির)
ইয়াজিদের ব্যাপারে জমহুর আহলে সুন্নতের মত হলো, ইয়াজিদ একজন ফাসেক শাসক ছিল। কেউ কেউ ফতোয়া দিয়েছেন, তাকে কাফের বলা যাবে না। আবার তার প্রশংসাও করা যাবে না। চুপ থাকাই উত্তম। ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বিপক্ষে গিয়ে ইয়াজিদ যে অন্যায় করেছে, তাতে সে চিরকাল ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে পতিত থাকবে। (শরহুল আমালি, মোল্লা আলী কারি)
তবে তাফসিরে রুহুল মাআনিতে আল্লামা আলুসি এক দীর্ঘ আলোচনায় দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করেছেন, ইয়াজিদ নবীজির রিসালাতকে অস্বীকার করত এবং সে নিকৃষ্ট কাফেরদের একজন ছিলেন।
কারবালা কেবল এক ইতিহাস নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক, সত্যের জন্য আত্মোৎসর্গের চিরন্তন দৃষ্টান্ত। ইমাম হুসাইন (রা.) আমাদের শিখিয়ে গেছেন, শক্তিশালী শাসক হলেও যদি সে অন্যায় করে, তবে তার সামনে মাথা নত নয় বরং সত্যের পথে দৃঢ় থাকতে হয়।
আর আশুরা মানেই কেবল শোক নয়, বরং চেতনার পুনর্জাগরণ। হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন, আত্মত্যাগই প্রকৃত বিজয়। আমাদের উচিত তাঁর জীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং সত্য, ন্যায় ও ইসলামের মূল নীতিতে অবিচল থাকা।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, চরপাথালিয়া সালমান ফারসী (রা.) মাদরাসা, মুন্সিগঞ্জ।

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, হজরত ফাতেমা (রা.) ও আলী ইবনে আবু তালেব (রা.)-এর পুত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষ অবলম্বন করে যে জীবনোৎসর্গ করেছেন, তা আজও কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে অমলিন অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
কারবালা ইরাকের বাগদাদ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি ময়দানের নাম। ৬১ হিজরির ১০ মহররম আশুরার দিন ফোরাত নদীর তীরে এই প্রান্তরে সংঘটিত হয় ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার-পরিজনসহ প্রায় ৭২ জন শাহাদত বরণ করেন। তাঁর একমাত্র জীবিত পুত্র হজরত জায়নুল আবেদিন (রহ.) ছাড়া কেউই সেদিন বাঁচতে পারেনি।
এই কারবালার যুদ্ধ কোনো আকস্মিক সংঘর্ষ নয়, বরং এটি ছিল একটি গভীর রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও আদর্শিক দ্বন্দ্বের ফল। কারবালা যুদ্ধের অন্যতম কারণ হলো ইয়াজিদের অবৈধ মনোনয়ন। মহান সাহাবি হজরত মুআবিয়া (রা.) নিজের পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকার ঘোষণা করলে অনেক সাহাবি ও তাবেয়ি এর বিরোধিতা করেন। এটি হজরত হাসান (রা.) ও মুআবিয়ার পূর্ব চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবেও বিবেচিত হয়। এর ফলে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। ইয়াজিদের চরিত্র, জীবনাচার ও শাসননীতি ইসলামের মৌল নীতিমালার পরিপন্থী হওয়ায় ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর প্রতি আনুগত্য অস্বীকার করেন এবং খেলাফতের ন্যায়পরায়ণতা রক্ষায় তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। (তারিখে তাবারি: ৫ম খণ্ড)
ঐতিহাসিক বর্ণনা থেকে জানা যায়, উমাইয়া শাসনের অধীনে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছিল। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) খেলাফতের পুনর্জীবন এবং নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের লক্ষ্যে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। এর পেছনে ছিল কুফাবাসীর আহ্বান।
কারবালার ঘটনার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল কুফাবাসীর বিশ্বাসঘাতকতা। কুফাবাসী ইয়াজিদের শাসনের বিরুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.)-কে নেতা হিসেবে আহ্বান জানায়। তবে পরে তারা ভীত হয়ে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। পথিমধ্যে ইয়াজিদ ইমাম হুসাইনকে আটকে ফেলার নির্দেশ দেয়। কারবালা নামক স্থানে হুসাইনি কাফেলাকে অবরোধ করা হয়। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) ইয়াজিদ বাহিনীকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ১. তাঁকে মদিনায় ফিরে যেতে দেওয়া হোক। ২. সীমান্তে গিয়ে জীবন কাটাতে দেওয়া হোক। ৩. এ দুটোর একটিও না হলে ইয়াজিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু নিষ্ঠুর ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান থেকে এক চুলও সরে আসেনি।
ঐতিহাসিকেরা লেখেন, ১০ মহররম, ফজরের নামাজের পর ইয়াজিদের চার হাজার সৈন্য ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারকে পানি সরবরাহ বন্ধ রেখে ঘিরে ফেলে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত এক অসম যুদ্ধ চলে। ইমাম হুসাইন (রা.) একে একে তাঁর পরিবার ও অনুচরদের শাহাদত প্রত্যক্ষ করেন। শেষে তিনি নিজেও শাহাদত বরণ করেন।
তাঁর শাহাদত এতটাই নির্মম ছিল যে, শরীরে ৩৩টি বর্শা, ৩৪টি তরবারির আঘাত এবং অসংখ্য তীরের ক্ষত চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকারী ছিল সিনান ইবনে আনাস নাখায়ি, এবং সহযোগী হিসেবে ছিল খাওলি ইবনে ইয়াজিদ। তাঁর মস্তক কেটে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে পাঠানো হয়। (কারবালার ইতিহাস, আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফি)
ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত ইয়াজিদের জন্য এক ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনে। ইয়াজিদ ছিল ইসলামি ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণিত শাসকদের একজন। তাঁর তিন বছরের শাসনামলে তিনটি ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়। ১. ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত। ২. মদিনায় লুট ও ধর্ষণ এবং মসজিদে নববীর অবমাননা। ৩. কাবা শরিফে আগুন লাগানো। এই অপরাধগুলোর কারণে ইসলামি ইতিহাসে ইয়াজিদের মৃত্যু রহস্যজনকভাবে ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কেউ বলেন, বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে, কেউ বলেন পানির পিপাসায় বা দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। সব মতেই এটি একটি করুণ ও অপমানজনক মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর তাঁর পুত্র দ্বিতীয় মুআবিয়া মাত্র তিন মাসেই মৃত্যুবরণ করেন এবং উমাইয়া শাসনের এই অযাচিত অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। (ইসলামি ঐতিহাসিক দলিল, তাবারি, ইবনে আসাকির, বদায়েউজ্জমান, ইবনে কাসির)
ইয়াজিদের ব্যাপারে জমহুর আহলে সুন্নতের মত হলো, ইয়াজিদ একজন ফাসেক শাসক ছিল। কেউ কেউ ফতোয়া দিয়েছেন, তাকে কাফের বলা যাবে না। আবার তার প্রশংসাও করা যাবে না। চুপ থাকাই উত্তম। ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বিপক্ষে গিয়ে ইয়াজিদ যে অন্যায় করেছে, তাতে সে চিরকাল ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে পতিত থাকবে। (শরহুল আমালি, মোল্লা আলী কারি)
তবে তাফসিরে রুহুল মাআনিতে আল্লামা আলুসি এক দীর্ঘ আলোচনায় দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করেছেন, ইয়াজিদ নবীজির রিসালাতকে অস্বীকার করত এবং সে নিকৃষ্ট কাফেরদের একজন ছিলেন।
কারবালা কেবল এক ইতিহাস নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক, সত্যের জন্য আত্মোৎসর্গের চিরন্তন দৃষ্টান্ত। ইমাম হুসাইন (রা.) আমাদের শিখিয়ে গেছেন, শক্তিশালী শাসক হলেও যদি সে অন্যায় করে, তবে তার সামনে মাথা নত নয় বরং সত্যের পথে দৃঢ় থাকতে হয়।
আর আশুরা মানেই কেবল শোক নয়, বরং চেতনার পুনর্জাগরণ। হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন, আত্মত্যাগই প্রকৃত বিজয়। আমাদের উচিত তাঁর জীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং সত্য, ন্যায় ও ইসলামের মূল নীতিতে অবিচল থাকা।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, চরপাথালিয়া সালমান ফারসী (রা.) মাদরাসা, মুন্সিগঞ্জ।
হাফেজ মাওলানা আল আমিন সরকার

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, হজরত ফাতেমা (রা.) ও আলী ইবনে আবু তালেব (রা.)-এর পুত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষ অবলম্বন করে যে জীবনোৎসর্গ করেছেন, তা আজও কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে অমলিন অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
কারবালা ইরাকের বাগদাদ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি ময়দানের নাম। ৬১ হিজরির ১০ মহররম আশুরার দিন ফোরাত নদীর তীরে এই প্রান্তরে সংঘটিত হয় ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার-পরিজনসহ প্রায় ৭২ জন শাহাদত বরণ করেন। তাঁর একমাত্র জীবিত পুত্র হজরত জায়নুল আবেদিন (রহ.) ছাড়া কেউই সেদিন বাঁচতে পারেনি।
এই কারবালার যুদ্ধ কোনো আকস্মিক সংঘর্ষ নয়, বরং এটি ছিল একটি গভীর রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও আদর্শিক দ্বন্দ্বের ফল। কারবালা যুদ্ধের অন্যতম কারণ হলো ইয়াজিদের অবৈধ মনোনয়ন। মহান সাহাবি হজরত মুআবিয়া (রা.) নিজের পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকার ঘোষণা করলে অনেক সাহাবি ও তাবেয়ি এর বিরোধিতা করেন। এটি হজরত হাসান (রা.) ও মুআবিয়ার পূর্ব চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবেও বিবেচিত হয়। এর ফলে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। ইয়াজিদের চরিত্র, জীবনাচার ও শাসননীতি ইসলামের মৌল নীতিমালার পরিপন্থী হওয়ায় ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর প্রতি আনুগত্য অস্বীকার করেন এবং খেলাফতের ন্যায়পরায়ণতা রক্ষায় তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। (তারিখে তাবারি: ৫ম খণ্ড)
ঐতিহাসিক বর্ণনা থেকে জানা যায়, উমাইয়া শাসনের অধীনে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছিল। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) খেলাফতের পুনর্জীবন এবং নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের লক্ষ্যে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। এর পেছনে ছিল কুফাবাসীর আহ্বান।
কারবালার ঘটনার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল কুফাবাসীর বিশ্বাসঘাতকতা। কুফাবাসী ইয়াজিদের শাসনের বিরুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.)-কে নেতা হিসেবে আহ্বান জানায়। তবে পরে তারা ভীত হয়ে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। পথিমধ্যে ইয়াজিদ ইমাম হুসাইনকে আটকে ফেলার নির্দেশ দেয়। কারবালা নামক স্থানে হুসাইনি কাফেলাকে অবরোধ করা হয়। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) ইয়াজিদ বাহিনীকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ১. তাঁকে মদিনায় ফিরে যেতে দেওয়া হোক। ২. সীমান্তে গিয়ে জীবন কাটাতে দেওয়া হোক। ৩. এ দুটোর একটিও না হলে ইয়াজিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু নিষ্ঠুর ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান থেকে এক চুলও সরে আসেনি।
ঐতিহাসিকেরা লেখেন, ১০ মহররম, ফজরের নামাজের পর ইয়াজিদের চার হাজার সৈন্য ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারকে পানি সরবরাহ বন্ধ রেখে ঘিরে ফেলে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত এক অসম যুদ্ধ চলে। ইমাম হুসাইন (রা.) একে একে তাঁর পরিবার ও অনুচরদের শাহাদত প্রত্যক্ষ করেন। শেষে তিনি নিজেও শাহাদত বরণ করেন।
তাঁর শাহাদত এতটাই নির্মম ছিল যে, শরীরে ৩৩টি বর্শা, ৩৪টি তরবারির আঘাত এবং অসংখ্য তীরের ক্ষত চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকারী ছিল সিনান ইবনে আনাস নাখায়ি, এবং সহযোগী হিসেবে ছিল খাওলি ইবনে ইয়াজিদ। তাঁর মস্তক কেটে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে পাঠানো হয়। (কারবালার ইতিহাস, আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফি)
ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত ইয়াজিদের জন্য এক ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনে। ইয়াজিদ ছিল ইসলামি ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণিত শাসকদের একজন। তাঁর তিন বছরের শাসনামলে তিনটি ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়। ১. ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত। ২. মদিনায় লুট ও ধর্ষণ এবং মসজিদে নববীর অবমাননা। ৩. কাবা শরিফে আগুন লাগানো। এই অপরাধগুলোর কারণে ইসলামি ইতিহাসে ইয়াজিদের মৃত্যু রহস্যজনকভাবে ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কেউ বলেন, বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে, কেউ বলেন পানির পিপাসায় বা দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। সব মতেই এটি একটি করুণ ও অপমানজনক মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর তাঁর পুত্র দ্বিতীয় মুআবিয়া মাত্র তিন মাসেই মৃত্যুবরণ করেন এবং উমাইয়া শাসনের এই অযাচিত অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। (ইসলামি ঐতিহাসিক দলিল, তাবারি, ইবনে আসাকির, বদায়েউজ্জমান, ইবনে কাসির)
ইয়াজিদের ব্যাপারে জমহুর আহলে সুন্নতের মত হলো, ইয়াজিদ একজন ফাসেক শাসক ছিল। কেউ কেউ ফতোয়া দিয়েছেন, তাকে কাফের বলা যাবে না। আবার তার প্রশংসাও করা যাবে না। চুপ থাকাই উত্তম। ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বিপক্ষে গিয়ে ইয়াজিদ যে অন্যায় করেছে, তাতে সে চিরকাল ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে পতিত থাকবে। (শরহুল আমালি, মোল্লা আলী কারি)
তবে তাফসিরে রুহুল মাআনিতে আল্লামা আলুসি এক দীর্ঘ আলোচনায় দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করেছেন, ইয়াজিদ নবীজির রিসালাতকে অস্বীকার করত এবং সে নিকৃষ্ট কাফেরদের একজন ছিলেন।
কারবালা কেবল এক ইতিহাস নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক, সত্যের জন্য আত্মোৎসর্গের চিরন্তন দৃষ্টান্ত। ইমাম হুসাইন (রা.) আমাদের শিখিয়ে গেছেন, শক্তিশালী শাসক হলেও যদি সে অন্যায় করে, তবে তার সামনে মাথা নত নয় বরং সত্যের পথে দৃঢ় থাকতে হয়।
আর আশুরা মানেই কেবল শোক নয়, বরং চেতনার পুনর্জাগরণ। হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন, আত্মত্যাগই প্রকৃত বিজয়। আমাদের উচিত তাঁর জীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং সত্য, ন্যায় ও ইসলামের মূল নীতিতে অবিচল থাকা।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, চরপাথালিয়া সালমান ফারসী (রা.) মাদরাসা, মুন্সিগঞ্জ।

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র, হজরত ফাতেমা (রা.) ও আলী ইবনে আবু তালেব (রা.)-এর পুত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষ অবলম্বন করে যে জীবনোৎসর্গ করেছেন, তা আজও কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ে অমলিন অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।
কারবালা ইরাকের বাগদাদ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি ময়দানের নাম। ৬১ হিজরির ১০ মহররম আশুরার দিন ফোরাত নদীর তীরে এই প্রান্তরে সংঘটিত হয় ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার-পরিজনসহ প্রায় ৭২ জন শাহাদত বরণ করেন। তাঁর একমাত্র জীবিত পুত্র হজরত জায়নুল আবেদিন (রহ.) ছাড়া কেউই সেদিন বাঁচতে পারেনি।
এই কারবালার যুদ্ধ কোনো আকস্মিক সংঘর্ষ নয়, বরং এটি ছিল একটি গভীর রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও আদর্শিক দ্বন্দ্বের ফল। কারবালা যুদ্ধের অন্যতম কারণ হলো ইয়াজিদের অবৈধ মনোনয়ন। মহান সাহাবি হজরত মুআবিয়া (রা.) নিজের পুত্র ইয়াজিদকে উত্তরাধিকার ঘোষণা করলে অনেক সাহাবি ও তাবেয়ি এর বিরোধিতা করেন। এটি হজরত হাসান (রা.) ও মুআবিয়ার পূর্ব চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবেও বিবেচিত হয়। এর ফলে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন। ইয়াজিদের চরিত্র, জীবনাচার ও শাসননীতি ইসলামের মৌল নীতিমালার পরিপন্থী হওয়ায় ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর প্রতি আনুগত্য অস্বীকার করেন এবং খেলাফতের ন্যায়পরায়ণতা রক্ষায় তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। (তারিখে তাবারি: ৫ম খণ্ড)
ঐতিহাসিক বর্ণনা থেকে জানা যায়, উমাইয়া শাসনের অধীনে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছিল। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) খেলাফতের পুনর্জীবন এবং নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের লক্ষ্যে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। এর পেছনে ছিল কুফাবাসীর আহ্বান।
কারবালার ঘটনার পেছনে অন্যতম কারণ ছিল কুফাবাসীর বিশ্বাসঘাতকতা। কুফাবাসী ইয়াজিদের শাসনের বিরুদ্ধে হজরত ইমাম হুসাইন (রা.)-কে নেতা হিসেবে আহ্বান জানায়। তবে পরে তারা ভীত হয়ে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। পথিমধ্যে ইয়াজিদ ইমাম হুসাইনকে আটকে ফেলার নির্দেশ দেয়। কারবালা নামক স্থানে হুসাইনি কাফেলাকে অবরোধ করা হয়। তখন ইমাম হুসাইন (রা.) ইয়াজিদ বাহিনীকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ১. তাঁকে মদিনায় ফিরে যেতে দেওয়া হোক। ২. সীমান্তে গিয়ে জীবন কাটাতে দেওয়া হোক। ৩. এ দুটোর একটিও না হলে ইয়াজিদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সুযোগ দেওয়া হোক। কিন্তু নিষ্ঠুর ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান থেকে এক চুলও সরে আসেনি।
ঐতিহাসিকেরা লেখেন, ১০ মহররম, ফজরের নামাজের পর ইয়াজিদের চার হাজার সৈন্য ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারকে পানি সরবরাহ বন্ধ রেখে ঘিরে ফেলে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত এক অসম যুদ্ধ চলে। ইমাম হুসাইন (রা.) একে একে তাঁর পরিবার ও অনুচরদের শাহাদত প্রত্যক্ষ করেন। শেষে তিনি নিজেও শাহাদত বরণ করেন।
তাঁর শাহাদত এতটাই নির্মম ছিল যে, শরীরে ৩৩টি বর্শা, ৩৪টি তরবারির আঘাত এবং অসংখ্য তীরের ক্ষত চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকারী ছিল সিনান ইবনে আনাস নাখায়ি, এবং সহযোগী হিসেবে ছিল খাওলি ইবনে ইয়াজিদ। তাঁর মস্তক কেটে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে পাঠানো হয়। (কারবালার ইতিহাস, আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফি)
ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত ইয়াজিদের জন্য এক ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনে। ইয়াজিদ ছিল ইসলামি ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণিত শাসকদের একজন। তাঁর তিন বছরের শাসনামলে তিনটি ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়। ১. ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদত। ২. মদিনায় লুট ও ধর্ষণ এবং মসজিদে নববীর অবমাননা। ৩. কাবা শরিফে আগুন লাগানো। এই অপরাধগুলোর কারণে ইসলামি ইতিহাসে ইয়াজিদের মৃত্যু রহস্যজনকভাবে ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কেউ বলেন, বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে, কেউ বলেন পানির পিপাসায় বা দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। সব মতেই এটি একটি করুণ ও অপমানজনক মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর তাঁর পুত্র দ্বিতীয় মুআবিয়া মাত্র তিন মাসেই মৃত্যুবরণ করেন এবং উমাইয়া শাসনের এই অযাচিত অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। (ইসলামি ঐতিহাসিক দলিল, তাবারি, ইবনে আসাকির, বদায়েউজ্জমান, ইবনে কাসির)
ইয়াজিদের ব্যাপারে জমহুর আহলে সুন্নতের মত হলো, ইয়াজিদ একজন ফাসেক শাসক ছিল। কেউ কেউ ফতোয়া দিয়েছেন, তাকে কাফের বলা যাবে না। আবার তার প্রশংসাও করা যাবে না। চুপ থাকাই উত্তম। ইমাম হুসাইন (রা.)-এর বিপক্ষে গিয়ে ইয়াজিদ যে অন্যায় করেছে, তাতে সে চিরকাল ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে পতিত থাকবে। (শরহুল আমালি, মোল্লা আলী কারি)
তবে তাফসিরে রুহুল মাআনিতে আল্লামা আলুসি এক দীর্ঘ আলোচনায় দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রমাণ করেছেন, ইয়াজিদ নবীজির রিসালাতকে অস্বীকার করত এবং সে নিকৃষ্ট কাফেরদের একজন ছিলেন।
কারবালা কেবল এক ইতিহাস নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক, সত্যের জন্য আত্মোৎসর্গের চিরন্তন দৃষ্টান্ত। ইমাম হুসাইন (রা.) আমাদের শিখিয়ে গেছেন, শক্তিশালী শাসক হলেও যদি সে অন্যায় করে, তবে তার সামনে মাথা নত নয় বরং সত্যের পথে দৃঢ় থাকতে হয়।
আর আশুরা মানেই কেবল শোক নয়, বরং চেতনার পুনর্জাগরণ। হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) তাঁর জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন, আত্মত্যাগই প্রকৃত বিজয়। আমাদের উচিত তাঁর জীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং সত্য, ন্যায় ও ইসলামের মূল নীতিতে অবিচল থাকা।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, চরপাথালিয়া সালমান ফারসী (রা.) মাদরাসা, মুন্সিগঞ্জ।

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ মিনিট আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’ (সুরা বাকারা: ২৬৯)
রাসুল (সা.) কৃপণতার নিন্দা করেছেন। কৃপণতাকে মারাত্মক রোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং উম্মতকে কৃপণতা থেকে সতর্ক করেছেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমাদের নেতা কে?’ আমরা বললাম, ‘জুদ ইবনে কায়েস। অবশ্য আমরা তাকে কৃপণ বলি।’ তিনি বলেন, ‘কৃপণতার চেয়ে মারাত্মক রোগ আর কী হতে পারে?’ (আদাবুল মুফরাদ: ২৯৬)
একদিন রাসুল (সা.) ভাষণ দেন এবং বলেন, ‘তোমরা কৃপণতার ব্যাপারে সাবধান হও। কেননা তোমাদের পূর্ববর্তীরা কৃপণতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অর্থলোভ তাদের কৃপণতার নির্দেশ দিয়েছে, ফলে তারা কৃপণতা করেছে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৯৮)
রাসুল (সা.) মহান আল্লাহর কাছে সর্বদা এই অভ্যাস থেকে আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপণতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি থেকে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ থেকে।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৪০)
একজন মুমিন কখনো কৃপণ হতে পারে না। যে ব্যক্তির চরিত্রে এই অভ্যাস থাকবে, সেই নিকৃষ্ট মানুষ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তির চরিত্রে কৃপণতা, ভীরুতা ও হীন মানসিকতা রয়েছে, সে খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৫১১) অন্য হাদিসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে দুটি স্বভাব একত্রে জমা থাকতে পারে না—কৃপণতা ও অসদাচরণ।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ: ১৮৭২)

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি।
০৬ জুলাই ২০২৫
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই বদনজরের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছোট্ট ঈর্ষা, অনিচ্ছাকৃত আগ্রহ বা প্রশংসার দৃষ্টি, সবই বদনজরের মাধ্যমে ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই ইসলামি শিক্ষা আমাদের সতর্ক করে, আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আমরা এ প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।
প্রাচীনকালে বদনজর লাগানোর জন্য সরাসরি দেখার প্রয়োজন হতো। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে, বিশেষ করে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদির মাধ্যমে বদনজরের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া একটি ‘প্রদর্শনীর মঞ্চ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে মানুষ তাদের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো; দামি খাবার, নতুন গাড়ি, বিলাসবহুল অবকাশ, সন্তানের সাফল্য, নতুন চাকরি ইত্যাদি প্রচারের মাধ্যমে শেয়ার করে।
যখন কেউ নিজের আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করে, তখন হাজারো ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার তা দেখেন। এর মধ্যে কারও দৃষ্টিতে হিংসা বা নানাভাবে ক্ষতিকর অভিপ্রায় যে আছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকে নিজের জীবনের অভাব বা দুঃখের সঙ্গে তুলনা করে হিংসা বা আফসোস অনুভব করতে পারেন। এই অদৃশ্য হিংসুকদের দৃষ্টি বদনজরের কারণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিখুঁত জীবনের ছবি তুলে ধরেন। এটি অন্যদের মধ্যে হতাশা এবং অবচেতনভাবে সে নিয়ামতগুলো হারিয়ে যাওয়ার কামনা সৃষ্টি করতে পারে, যা বদনজরের প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী দম্পতি হিসেবে পরিচিতদের কিছুদিন পর বিচ্ছেদ। সফল ব্যবসার ছবি পোস্ট করার পর হঠাৎ ব্যবসায় ক্ষতি বা শিশুর ভাইরাল ছবি দেখার পর তার অসুস্থতা। এ সবই বদনজরের সম্ভাব্য প্রভাবের উদাহরণ।
মুআজ বিন জাবাল (রা.) রাসুল (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে সফলতা লাভের জন্য তা গোপন রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর; কারণ প্রত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসিত হয়।’ (হাদিস সম্ভার: ২১৯১)
সোশ্যাল মিডিয়া এই হাদিসের সম্পূর্ণ বিপরীত পথ অনুসরণ করে। এখানে গোপনীয়তার বদলে জীবনের প্রতিটি নিয়ামত প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন করা হয়, যা মানুষকে সহজেই হিংসুক ও বদনজরের লক্ষ্য বানিয়ে দেয়।
বদনজর এমন এক অদৃশ্য বাস্তবতা, যার প্রভাব শুধু শরীরেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি মানুষের মন, পরিবার, অর্থনীতি, এমনকি ইমান ও আখিরাত পর্যন্ত গভীরভাবে আঘাত হানতে পারে। আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, কাজকর্মে আগ্রহ হারাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে, পরিবারে অশান্তি বাড়ছে। অনেক সময় এসবের পেছনে বদনজরের প্রভাবই কাজ করে। রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘বদনজর সত্য।’ (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
বদনজর প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রথমত: বদনজরের চিকিৎসা বা প্রতিকার হলো রুকইয়াহ শারইয়্যাহ, অর্থাৎ শরিয়তসম্মত ঝাড়ফুঁক। এর পদ্ধতি হলো সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেওয়া বা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর নির্ধারিত দোয়াগুলো পড়া।
দ্বিতীয়ত: অজু বা গোসলের পানি দিয়েও প্রতিকার করা যায়। সাহল ইবনু হুনাইফ (রা.)-এর ঘটনায় প্রমাণিত যে, যার কারণে বদনজর লেগেছিল, তার অজুর পানি আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর ঢেলে দেওয়া হয়েছিল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি আরোগ্য লাভ করেন।
তৃতীয়ত: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাওয়াক্কুল, অর্থাৎ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে, একমাত্র আল্লাহই আরোগ্য দানকারী ও রক্ষাকারী। কোনো প্রতিকার বা চিকিৎসা নিজে থেকে কার্যকর হয় না; বরং আল্লাহর অনুমতিতে তাতে প্রভাব সৃষ্টি হয়। তাই মুমিন কখনো কুসংস্কারে বিশ্বাস করে না; বরং আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখে।
লেখক: মুফতি আহমাদুল্লাহ মাসউদ, শিক্ষক, জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়া, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি।
০৬ জুলাই ২০২৫
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ মিনিট আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেমাহমুদ হাসান ফাহিম

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
পৃথিবীতে ভালোভাবে জীবনযাপন করার জন্য, উন্নতির জন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকা অপরিহার্য। আর শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার পর তা বজায় রাখার জন্য আপস-নিষ্পত্তির মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কেননা, বিচিত্র স্বভাবের মানুষ নিয়েই হয় সমাজ। সব মানুষ এক মেজাজের নয়। তুচ্ছ ও নগণ্য বিষয়েও অনেক সময় পরস্পরে মনোমালিন্য হয়, কথা-কাটাকাটি হয়। একসঙ্গে চলতে গেলে এমনটি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু বিষয়টি এভাবেই ছেড়ে দিলে একপর্যায়ে তা ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, সংঘর্ষ পর্যন্ত গড়ায়। তাই এই বিচিত্র স্বভাবের মানুষদের নিয়ে সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে নিজেদের মধ্যে রাখতে হবে আপস-নিষ্পত্তির অনন্য গুণ।
ইসলামপূর্ব সময়ে কাবা পুনর্নির্মাণের পর হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপনের বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন প্রিয় নবী (সা.) চাদরে হাজরে আসওয়াদ রেখে সব গোত্রপ্রধানকে নিয়ে নিজ হাতে তা প্রতিস্থাপন করেন এবং এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের নিষ্পত্তি করেন।
আপস-নিষ্পত্তি দ্বারা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের বিবাদ দূর হয় এবং শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিষ্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে।’ (সুরা শুরা: ৪০)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আপস-নিষ্পত্তিকে নামাজ, রোজা এবং জাকাত থেকেও উত্তম আমল বলেছেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৩৯)
স্বাভাবিক কথায় মীমাংসা করা সম্ভব না হলে, আগে বেড়ে কথা হেরফের করারও অনুমতি আছে। তা মিথ্যা হবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যারা এমন করে হাদিসে তাদের মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত না করে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। (সহিহ্ বুখারি: ২৫১৩)

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি।
০৬ জুলাই ২০২৫
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ মিনিট আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৫ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪৩ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৪ মিনিট | ০৫: ৫৯ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৮ মিনিট | ০৫: ২৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৫ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৪: ৪৩ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

ইসলামি ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর চিন্তা, চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেদনাবিধুর, হৃদয়বিদারক ও চিরন্তন শিক্ষা বহনকারী ঘটনা হলো কারবালা ট্র্যাজেডি।
০৬ জুলাই ২০২৫
কৃপণতা মানব চরিত্রের একটি মন্দ দিক। এটি কোনো মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। এ স্বভাব শয়তানই পছন্দ করে এবং মানুষকে কৃপণ হতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় আর কৃপণ হতে উৎসাহ জোগায়। অন্যদিকে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন।’
১২ মিনিট আগে
বদনজর হলো এমন এক অদৃশ্য প্রভাব, যা কোনো হিংসুক বা অতিমাত্রায় আগ্রহী ব্যক্তির দৃষ্টি থেকে অন্যের প্রতি প্রেরিত হয় এবং তার জীবনে ক্ষতি করতে পারে। আজকের সময়ে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তের সুখ, সাফল্য ও সৌন্দর্য যেন সবার সামনে প্রদর্শনের বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগে
সামাজিক জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরস্পরের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকলে দুনিয়াবি জীবন বিপর্যস্ত হয়, অনেক সময় দ্বীনদারিরও সর্বনাশ হয়ে যায়। এক পাপ আরও হাজারটা পাপ ডেকে আনে।
১ দিন আগে