ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব ঠিক রাখার জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ—পরিবেশদূষণ। এর জন্য মানুষের কৃতকর্ম অনেকাংশে দায়ী। আল্লাহ তাআলা কখনো বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য বিপদাপদ দিলেও স্বাভাবিকভাবে এমনিতেই দুর্যোগ বা বিপদাপদ দেন না; বরং মানুষ তাদের নিজেদের কৃতকর্মের কারণেই এসব বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের ফলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রুম: ৪১)
ইসলামে এমন অনেক বিধান রয়েছে, যা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে বড় ভূমিকা রাখবে; বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে এসব বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে জোর দিলে মুসলমানদের দৈনন্দিন ধর্মীয় মূল্যবোধ সুরক্ষার পাশাপাশি স্বতঃস্ফূর্তভাবে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দারুণ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এখানে তেমন কয়েকটি শিষ্টাচারের কথা তুলে ধরা হলো:
দূষণমুক্ত পরিবেশ
মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন বাতাস প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পক্ষান্তরে দূষিত বাতাস স্বল্প সময়ে প্রকৃতির নির্মলতা নষ্ট করে। বায়ুদূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, পরিবেশ ও সম্পদ নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। তাই পরিবেশদূষণ থেকে মুক্ত থাকতে ইসলামের বিভিন্ন বিধান রয়েছে। যেমন:
» খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করতে নিষেধ করে ইসলাম। মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অভিশাপ ডেকে আনে এমন তিন কাজ থেকে বিরত থাকো। তা হলো, চলাচলের রাস্তায়, রাস্তার মোড়ে বা গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করা।’ (আবু দাউদ: ২৬)
» বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলার কথা বলেছে ইসলাম। মানুষ মারা গেলে যত দ্রুত সম্ভব সমাহিত করে দেওয়ার বিধান রয়েছে। ময়লা-আবর্জনা, মরা-পচা ও দুর্গন্ধময় বস্তু মাটিতে পুঁতে ফেলার তাগিদও এসেছে। পবিত্র কোরআন থেকেই এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আদম (আ.)-এর ছেলে কাবিল ভাই হাবিলকে হত্যা করার পর মৃতদেহ কী করবে, তা বুঝতে না পারলে আল্লাহ দুটি কাক পাঠান এবং দাফনের পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। (সুরা মায়েদা: ৩১) হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) বর্জ্য পুঁতে ফেলার আদেশ দিতেন। (আখলাকুন নবী, পৃ. ৩৫৯)
» দুর্গন্ধ পরিহারের নির্দেশ দেয় ইসলাম। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের থেকে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং ঘরে বসে থাকে।’ (বুখারি: ৫৪৫২)
» হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয় ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) যখন হাঁচি দিতেন, তখন এক টুকরো কাপড় বা নিজ হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলতেন এবং নিচের দিকে হয়ে আওয়াজ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৫)
» পানি পবিত্র, নিরাপদ ও দূষণমুক্ত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ আবদ্ধ পানিতে প্রস্রাব করে সেখানে যেন গোসল না করে।’ (বুখারি: ২৩৬; মুসলিম: ৬৮২)
ভূমির পরিকল্পিত ব্যবহার
ভূমির যথাযথ ও পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত হলে পরিবেশের ভারসাম্য সহজেই ফিরে আসবে। এ জন্য কৃষিজমিতে চাষাবাদ করতে হবে। অকৃষিজমিতে ঘরবাড়ি, খামার, বাণিজ্যিক অথবা অবাণিজ্যিক স্থাপনা অথবা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করতে হবে। জমির পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হাদিসে বারবার বলা হয়েছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার কাছে জমি আছে, সে যেন তা (নিজে) চাষাবাদ করে। যদি সে (নিজে) চাষাবাদ না করে, তবে যেন তার কোনো ভাইকে চাষাবাদ করতে দেয়।’ (মুসলিম: ৩৭৭৩)
বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন
বৃক্ষ-তরুলতা প্রকৃতির প্রাণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। কাজেই ব্যাপক হারে বৃক্ষ রোপণ এবং সেগুলোর পরিচর্যা করতে হবে। অপ্রয়োজনে তা নষ্ট করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণ করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এটিকে সদকা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে মুসলমান কোনো বৃক্ষ রোপণ করে, তারপর তা থেকে কোনো মানুষ, পশু বা পাখি ভক্ষণ করে, এর বিনিময়ে কেয়ামতে তার জন্য একটি সদকার সওয়াব রয়েছে।’ (মুসলিম: ৪০৫৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি রোপণ করবে।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদ আহমদ: ১৮৩)
প্রয়োজন ছাড়া গাছ কাটার শাস্তি সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটবে, আল্লাহ তার মাথা আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করবেন।’ (বায়হাকি: ১৪০)
প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার
জীবন ধারণের মূল উপাদানগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সহজলভ্য বলে অপচয় ও অপব্যবহার করা যাবে না। বর্ষায় চারদিকে পানি বেড়ে গেলেও পানির অপচয় ও অপব্যবহার রোধ করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদ (রা.)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন তিনি অজু করছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘কেন এই অপচয়?’ সাদ (রা.) বললেন, ‘অজুতেও কি অপচয় হয়?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ, এমনকি বহতা নদীতে অজু করলেও।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২৫)
জীবজন্তুর প্রতি দয়া
পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার জন্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস অনেকাংশে দায়ী। এ জন্য বন্য ও গৃহপালিত পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন ও দয়াশীল আচরণ করতে হবে। কোনো প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, জীবজন্তুর প্রতি দয়া প্রদর্শনের জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ। প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীর জন্য পুরস্কার আছে।’ (বুখারি: ৫৬৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব ঠিক রাখার জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ—পরিবেশদূষণ। এর জন্য মানুষের কৃতকর্ম অনেকাংশে দায়ী। আল্লাহ তাআলা কখনো বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য বিপদাপদ দিলেও স্বাভাবিকভাবে এমনিতেই দুর্যোগ বা বিপদাপদ দেন না; বরং মানুষ তাদের নিজেদের কৃতকর্মের কারণেই এসব বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের ফলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রুম: ৪১)
ইসলামে এমন অনেক বিধান রয়েছে, যা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে বড় ভূমিকা রাখবে; বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে এসব বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে জোর দিলে মুসলমানদের দৈনন্দিন ধর্মীয় মূল্যবোধ সুরক্ষার পাশাপাশি স্বতঃস্ফূর্তভাবে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দারুণ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এখানে তেমন কয়েকটি শিষ্টাচারের কথা তুলে ধরা হলো:
দূষণমুক্ত পরিবেশ
মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন বাতাস প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পক্ষান্তরে দূষিত বাতাস স্বল্প সময়ে প্রকৃতির নির্মলতা নষ্ট করে। বায়ুদূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, পরিবেশ ও সম্পদ নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। তাই পরিবেশদূষণ থেকে মুক্ত থাকতে ইসলামের বিভিন্ন বিধান রয়েছে। যেমন:
» খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করতে নিষেধ করে ইসলাম। মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অভিশাপ ডেকে আনে এমন তিন কাজ থেকে বিরত থাকো। তা হলো, চলাচলের রাস্তায়, রাস্তার মোড়ে বা গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করা।’ (আবু দাউদ: ২৬)
» বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলার কথা বলেছে ইসলাম। মানুষ মারা গেলে যত দ্রুত সম্ভব সমাহিত করে দেওয়ার বিধান রয়েছে। ময়লা-আবর্জনা, মরা-পচা ও দুর্গন্ধময় বস্তু মাটিতে পুঁতে ফেলার তাগিদও এসেছে। পবিত্র কোরআন থেকেই এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আদম (আ.)-এর ছেলে কাবিল ভাই হাবিলকে হত্যা করার পর মৃতদেহ কী করবে, তা বুঝতে না পারলে আল্লাহ দুটি কাক পাঠান এবং দাফনের পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। (সুরা মায়েদা: ৩১) হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) বর্জ্য পুঁতে ফেলার আদেশ দিতেন। (আখলাকুন নবী, পৃ. ৩৫৯)
» দুর্গন্ধ পরিহারের নির্দেশ দেয় ইসলাম। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের থেকে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং ঘরে বসে থাকে।’ (বুখারি: ৫৪৫২)
» হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয় ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) যখন হাঁচি দিতেন, তখন এক টুকরো কাপড় বা নিজ হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলতেন এবং নিচের দিকে হয়ে আওয়াজ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৫)
» পানি পবিত্র, নিরাপদ ও দূষণমুক্ত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ আবদ্ধ পানিতে প্রস্রাব করে সেখানে যেন গোসল না করে।’ (বুখারি: ২৩৬; মুসলিম: ৬৮২)
ভূমির পরিকল্পিত ব্যবহার
ভূমির যথাযথ ও পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত হলে পরিবেশের ভারসাম্য সহজেই ফিরে আসবে। এ জন্য কৃষিজমিতে চাষাবাদ করতে হবে। অকৃষিজমিতে ঘরবাড়ি, খামার, বাণিজ্যিক অথবা অবাণিজ্যিক স্থাপনা অথবা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করতে হবে। জমির পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হাদিসে বারবার বলা হয়েছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার কাছে জমি আছে, সে যেন তা (নিজে) চাষাবাদ করে। যদি সে (নিজে) চাষাবাদ না করে, তবে যেন তার কোনো ভাইকে চাষাবাদ করতে দেয়।’ (মুসলিম: ৩৭৭৩)
বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন
বৃক্ষ-তরুলতা প্রকৃতির প্রাণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। কাজেই ব্যাপক হারে বৃক্ষ রোপণ এবং সেগুলোর পরিচর্যা করতে হবে। অপ্রয়োজনে তা নষ্ট করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণ করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এটিকে সদকা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে মুসলমান কোনো বৃক্ষ রোপণ করে, তারপর তা থেকে কোনো মানুষ, পশু বা পাখি ভক্ষণ করে, এর বিনিময়ে কেয়ামতে তার জন্য একটি সদকার সওয়াব রয়েছে।’ (মুসলিম: ৪০৫৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি রোপণ করবে।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদ আহমদ: ১৮৩)
প্রয়োজন ছাড়া গাছ কাটার শাস্তি সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটবে, আল্লাহ তার মাথা আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করবেন।’ (বায়হাকি: ১৪০)
প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার
জীবন ধারণের মূল উপাদানগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সহজলভ্য বলে অপচয় ও অপব্যবহার করা যাবে না। বর্ষায় চারদিকে পানি বেড়ে গেলেও পানির অপচয় ও অপব্যবহার রোধ করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদ (রা.)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন তিনি অজু করছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘কেন এই অপচয়?’ সাদ (রা.) বললেন, ‘অজুতেও কি অপচয় হয়?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ, এমনকি বহতা নদীতে অজু করলেও।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২৫)
জীবজন্তুর প্রতি দয়া
পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার জন্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস অনেকাংশে দায়ী। এ জন্য বন্য ও গৃহপালিত পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন ও দয়াশীল আচরণ করতে হবে। কোনো প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, জীবজন্তুর প্রতি দয়া প্রদর্শনের জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ। প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীর জন্য পুরস্কার আছে।’ (বুখারি: ৫৬৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব ঠিক রাখার জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ—পরিবেশদূষণ। এর জন্য মানুষের কৃতকর্ম অনেকাংশে দায়ী। আল্লাহ তাআলা কখনো বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য বিপদাপদ দিলেও স্বাভাবিকভাবে এমনিতেই দুর্যোগ বা বিপদাপদ দেন না; বরং মানুষ তাদের নিজেদের কৃতকর্মের কারণেই এসব বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের ফলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রুম: ৪১)
ইসলামে এমন অনেক বিধান রয়েছে, যা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে বড় ভূমিকা রাখবে; বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে এসব বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে জোর দিলে মুসলমানদের দৈনন্দিন ধর্মীয় মূল্যবোধ সুরক্ষার পাশাপাশি স্বতঃস্ফূর্তভাবে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দারুণ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এখানে তেমন কয়েকটি শিষ্টাচারের কথা তুলে ধরা হলো:
দূষণমুক্ত পরিবেশ
মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন বাতাস প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পক্ষান্তরে দূষিত বাতাস স্বল্প সময়ে প্রকৃতির নির্মলতা নষ্ট করে। বায়ুদূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, পরিবেশ ও সম্পদ নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। তাই পরিবেশদূষণ থেকে মুক্ত থাকতে ইসলামের বিভিন্ন বিধান রয়েছে। যেমন:
» খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করতে নিষেধ করে ইসলাম। মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অভিশাপ ডেকে আনে এমন তিন কাজ থেকে বিরত থাকো। তা হলো, চলাচলের রাস্তায়, রাস্তার মোড়ে বা গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করা।’ (আবু দাউদ: ২৬)
» বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলার কথা বলেছে ইসলাম। মানুষ মারা গেলে যত দ্রুত সম্ভব সমাহিত করে দেওয়ার বিধান রয়েছে। ময়লা-আবর্জনা, মরা-পচা ও দুর্গন্ধময় বস্তু মাটিতে পুঁতে ফেলার তাগিদও এসেছে। পবিত্র কোরআন থেকেই এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আদম (আ.)-এর ছেলে কাবিল ভাই হাবিলকে হত্যা করার পর মৃতদেহ কী করবে, তা বুঝতে না পারলে আল্লাহ দুটি কাক পাঠান এবং দাফনের পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। (সুরা মায়েদা: ৩১) হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) বর্জ্য পুঁতে ফেলার আদেশ দিতেন। (আখলাকুন নবী, পৃ. ৩৫৯)
» দুর্গন্ধ পরিহারের নির্দেশ দেয় ইসলাম। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের থেকে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং ঘরে বসে থাকে।’ (বুখারি: ৫৪৫২)
» হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয় ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) যখন হাঁচি দিতেন, তখন এক টুকরো কাপড় বা নিজ হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলতেন এবং নিচের দিকে হয়ে আওয়াজ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৫)
» পানি পবিত্র, নিরাপদ ও দূষণমুক্ত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ আবদ্ধ পানিতে প্রস্রাব করে সেখানে যেন গোসল না করে।’ (বুখারি: ২৩৬; মুসলিম: ৬৮২)
ভূমির পরিকল্পিত ব্যবহার
ভূমির যথাযথ ও পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত হলে পরিবেশের ভারসাম্য সহজেই ফিরে আসবে। এ জন্য কৃষিজমিতে চাষাবাদ করতে হবে। অকৃষিজমিতে ঘরবাড়ি, খামার, বাণিজ্যিক অথবা অবাণিজ্যিক স্থাপনা অথবা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করতে হবে। জমির পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হাদিসে বারবার বলা হয়েছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার কাছে জমি আছে, সে যেন তা (নিজে) চাষাবাদ করে। যদি সে (নিজে) চাষাবাদ না করে, তবে যেন তার কোনো ভাইকে চাষাবাদ করতে দেয়।’ (মুসলিম: ৩৭৭৩)
বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন
বৃক্ষ-তরুলতা প্রকৃতির প্রাণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। কাজেই ব্যাপক হারে বৃক্ষ রোপণ এবং সেগুলোর পরিচর্যা করতে হবে। অপ্রয়োজনে তা নষ্ট করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণ করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এটিকে সদকা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে মুসলমান কোনো বৃক্ষ রোপণ করে, তারপর তা থেকে কোনো মানুষ, পশু বা পাখি ভক্ষণ করে, এর বিনিময়ে কেয়ামতে তার জন্য একটি সদকার সওয়াব রয়েছে।’ (মুসলিম: ৪০৫৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি রোপণ করবে।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদ আহমদ: ১৮৩)
প্রয়োজন ছাড়া গাছ কাটার শাস্তি সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটবে, আল্লাহ তার মাথা আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করবেন।’ (বায়হাকি: ১৪০)
প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার
জীবন ধারণের মূল উপাদানগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সহজলভ্য বলে অপচয় ও অপব্যবহার করা যাবে না। বর্ষায় চারদিকে পানি বেড়ে গেলেও পানির অপচয় ও অপব্যবহার রোধ করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদ (রা.)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন তিনি অজু করছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘কেন এই অপচয়?’ সাদ (রা.) বললেন, ‘অজুতেও কি অপচয় হয়?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ, এমনকি বহতা নদীতে অজু করলেও।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২৫)
জীবজন্তুর প্রতি দয়া
পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার জন্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস অনেকাংশে দায়ী। এ জন্য বন্য ও গৃহপালিত পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন ও দয়াশীল আচরণ করতে হবে। কোনো প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, জীবজন্তুর প্রতি দয়া প্রদর্শনের জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ। প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীর জন্য পুরস্কার আছে।’ (বুখারি: ৫৬৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব ঠিক রাখার জন্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ—পরিবেশদূষণ। এর জন্য মানুষের কৃতকর্ম অনেকাংশে দায়ী। আল্লাহ তাআলা কখনো বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য বিপদাপদ দিলেও স্বাভাবিকভাবে এমনিতেই দুর্যোগ বা বিপদাপদ দেন না; বরং মানুষ তাদের নিজেদের কৃতকর্মের কারণেই এসব বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের ফলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রুম: ৪১)
ইসলামে এমন অনেক বিধান রয়েছে, যা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে বড় ভূমিকা রাখবে; বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে এসব বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে জোর দিলে মুসলমানদের দৈনন্দিন ধর্মীয় মূল্যবোধ সুরক্ষার পাশাপাশি স্বতঃস্ফূর্তভাবে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে দারুণ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এখানে তেমন কয়েকটি শিষ্টাচারের কথা তুলে ধরা হলো:
দূষণমুক্ত পরিবেশ
মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন বাতাস প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পক্ষান্তরে দূষিত বাতাস স্বল্প সময়ে প্রকৃতির নির্মলতা নষ্ট করে। বায়ুদূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, পরিবেশ ও সম্পদ নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। তাই পরিবেশদূষণ থেকে মুক্ত থাকতে ইসলামের বিভিন্ন বিধান রয়েছে। যেমন:
» খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করতে নিষেধ করে ইসলাম। মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অভিশাপ ডেকে আনে এমন তিন কাজ থেকে বিরত থাকো। তা হলো, চলাচলের রাস্তায়, রাস্তার মোড়ে বা গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করা।’ (আবু দাউদ: ২৬)
» বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলার কথা বলেছে ইসলাম। মানুষ মারা গেলে যত দ্রুত সম্ভব সমাহিত করে দেওয়ার বিধান রয়েছে। ময়লা-আবর্জনা, মরা-পচা ও দুর্গন্ধময় বস্তু মাটিতে পুঁতে ফেলার তাগিদও এসেছে। পবিত্র কোরআন থেকেই এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। আদম (আ.)-এর ছেলে কাবিল ভাই হাবিলকে হত্যা করার পর মৃতদেহ কী করবে, তা বুঝতে না পারলে আল্লাহ দুটি কাক পাঠান এবং দাফনের পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। (সুরা মায়েদা: ৩১) হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) বর্জ্য পুঁতে ফেলার আদেশ দিতেন। (আখলাকুন নবী, পৃ. ৩৫৯)
» দুর্গন্ধ পরিহারের নির্দেশ দেয় ইসলাম। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের থেকে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং ঘরে বসে থাকে।’ (বুখারি: ৫৪৫২)
» হাঁচি ও কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয় ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) যখন হাঁচি দিতেন, তখন এক টুকরো কাপড় বা নিজ হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলতেন এবং নিচের দিকে হয়ে আওয়াজ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৫)
» পানি পবিত্র, নিরাপদ ও দূষণমুক্ত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ আবদ্ধ পানিতে প্রস্রাব করে সেখানে যেন গোসল না করে।’ (বুখারি: ২৩৬; মুসলিম: ৬৮২)
ভূমির পরিকল্পিত ব্যবহার
ভূমির যথাযথ ও পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত হলে পরিবেশের ভারসাম্য সহজেই ফিরে আসবে। এ জন্য কৃষিজমিতে চাষাবাদ করতে হবে। অকৃষিজমিতে ঘরবাড়ি, খামার, বাণিজ্যিক অথবা অবাণিজ্যিক স্থাপনা অথবা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করতে হবে। জমির পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হাদিসে বারবার বলা হয়েছে। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যার কাছে জমি আছে, সে যেন তা (নিজে) চাষাবাদ করে। যদি সে (নিজে) চাষাবাদ না করে, তবে যেন তার কোনো ভাইকে চাষাবাদ করতে দেয়।’ (মুসলিম: ৩৭৭৩)
বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন
বৃক্ষ-তরুলতা প্রকৃতির প্রাণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। কাজেই ব্যাপক হারে বৃক্ষ রোপণ এবং সেগুলোর পরিচর্যা করতে হবে। অপ্রয়োজনে তা নষ্ট করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণ করতে উৎসাহ দিয়েছেন। এটিকে সদকা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে মুসলমান কোনো বৃক্ষ রোপণ করে, তারপর তা থেকে কোনো মানুষ, পশু বা পাখি ভক্ষণ করে, এর বিনিময়ে কেয়ামতে তার জন্য একটি সদকার সওয়াব রয়েছে।’ (মুসলিম: ৪০৫৩)
অন্য হাদিসে এসেছে, আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে কিয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে, যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি রোপণ করবে।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৪৭৯; মুসনাদ আহমদ: ১৮৩)
প্রয়োজন ছাড়া গাছ কাটার শাস্তি সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটবে, আল্লাহ তার মাথা আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করবেন।’ (বায়হাকি: ১৪০)
প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার
জীবন ধারণের মূল উপাদানগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সহজলভ্য বলে অপচয় ও অপব্যবহার করা যাবে না। বর্ষায় চারদিকে পানি বেড়ে গেলেও পানির অপচয় ও অপব্যবহার রোধ করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদ (রা.)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন তিনি অজু করছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘কেন এই অপচয়?’ সাদ (রা.) বললেন, ‘অজুতেও কি অপচয় হয়?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ, এমনকি বহতা নদীতে অজু করলেও।’ (ইবনে মাজাহ: ৪২৫)
জীবজন্তুর প্রতি দয়া
পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার জন্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস অনেকাংশে দায়ী। এ জন্য বন্য ও গৃহপালিত পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন ও দয়াশীল আচরণ করতে হবে। কোনো প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, জীবজন্তুর প্রতি দয়া প্রদর্শনের জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ। প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীর জন্য পুরস্কার আছে।’ (বুখারি: ৫৬৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১ দিন আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেমাহমুদ হাসান ফাহিম

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১. ‘আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরজু, ফালা তাকিলনি ইলা নাফসি তারফাতা আইন, ওয়া আসলিহ লি শানি কুল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লাহ আনতা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে রহমত (মনের প্রশান্তি) চাই। আপনি এক মুহূর্তও আমাকে নফসের ওপর ছেড়ে দিয়েন না। বরং আপনিই আমার সমস্ত বিষয় ঠিক করে দিন। আপনি ছাড়া (মনের অস্থিরতা ও বিপদ থেকে রক্ষাকারী) কোনো ইলাহ নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০০২)
২. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’ অর্থ: ‘মহান, সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আরশের অধিপতি, মহান আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আসমান ও জমিনের রব এবং সম্মানিত আরশের রব আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৬৭২)
৩. ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসাল, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবন, ওয়া জিলাইদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশান থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৯৪)
৪. ‘আল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি; লা উশরিকু বিহি শাইআ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আল্লাহ। আমি আপনার সঙ্গে কাউকে শরিক করি না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫২৫)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোনো কারণে মনে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে উল্লিখিত দোয়াগুলো পড়া। এতে মনের অস্থিরতা ও পেরেশান দূর হবে ইনশা আল্লাহ।
লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক, টঙ্গী, গাজীপুর

মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১. ‘আল্লাহুম্মা রাহমাতাকা আরজু, ফালা তাকিলনি ইলা নাফসি তারফাতা আইন, ওয়া আসলিহ লি শানি কুল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লাহ আনতা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে রহমত (মনের প্রশান্তি) চাই। আপনি এক মুহূর্তও আমাকে নফসের ওপর ছেড়ে দিয়েন না। বরং আপনিই আমার সমস্ত বিষয় ঠিক করে দিন। আপনি ছাড়া (মনের অস্থিরতা ও বিপদ থেকে রক্ষাকারী) কোনো ইলাহ নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০০২)
২. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।’ অর্থ: ‘মহান, সহনশীল আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আরশের অধিপতি, মহান আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। আসমান ও জমিনের রব এবং সম্মানিত আরশের রব আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৬৭২)
৩. ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান, ওয়াল আজযি ওয়াল কাসাল, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবন, ওয়া জিলাইদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি দুশ্চিন্তা ও পেরেশান থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণভার ও লোকজনের প্রাধান্য থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৬৯৪)
৪. ‘আল্লাহু, আল্লাহু রাব্বি; লা উশরিকু বিহি শাইআ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রভু, আল্লাহ। আমি আপনার সঙ্গে কাউকে শরিক করি না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫২৫)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, কোনো কারণে মনে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে উল্লিখিত দোয়াগুলো পড়া। এতে মনের অস্থিরতা ও পেরেশান দূর হবে ইনশা আল্লাহ।
লেখক: মাদ্রাসাশিক্ষক, টঙ্গী, গাজীপুর

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
০২ জুন ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১ দিন আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৯ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৪ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৫ মিনিট | ০৬: ০০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৫ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৬ মিনিট | ০৫: ২২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২৪ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৯ মিনিট | ০৪: ৪৪ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
০২ জুন ২০২৩
মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১১ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১ দিন আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

মানুষের অভাব পূরণের প্রয়োজন থেকে ব্যবসার উৎপত্তি। সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবসা বৈধ জীবিকা নির্বাহের এক অনন্য উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ব্যবসা শুধু একটি পেশা নয়, গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা: ২৭৫)
পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে আজকের আধুনিক যুগ পর্যন্ত ব্যবসায়ের অসংখ্য ধরন বা শ্রেণি বিদ্যমান। কিন্তু মানুষের মধ্যে দুই ধরনের ব্যবসা থাকতে পারে:
এক. বস্তুগত ব্যবসা, যা দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণে একে অপরের সঙ্গে করে থাকে।
দুই. আধ্যাত্মিক ব্যবসা, যা আত্মার সন্তুষ্টির জন্য মহান আল্লাহর সঙ্গে হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশিত পন্থায় ব্যবসা করা নিঃসন্দেহে ইবাদতের একটি অংশ। তা ছাড়া মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে লাভজনক খাতে মূলধন, শ্রম ও মেধা বিনিয়োগ করা হয়। ফলস্বরূপ লাভ এবং ক্ষতির আশঙ্কা থাকে প্রায় সমান।
কিন্তু পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এমন এক ব্যবসার সুসংবাদ দিয়েছেন, যেখানে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই—আছে লাভ আর লাভ। সুরা সফফাতের ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
অর্থাৎ কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে তিনটি বিষয়কে উল্লেখ করেছেন:
এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনা। আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মুখে স্বীকার এবং তদনুযায়ী আমল এই ব্যবসার শ্রেষ্ঠ মূলধন।
দুই. দ্বীনি কাজে ধন-সম্পদ ব্যয় করা। আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনের জন্য সম্পদ ব্যয়ের ফলে মনে হয় তা কমেছে। কিন্তু আল্লাহর সঙ্গে আর্থিক এই ব্যবসা ক্ষতিবিহীন এবং অন্তহীন, যা দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আল্লাহ যে রিজিক দিয়েছেন, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করতে পারে; যা কখনো ধ্বংস হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)
তিন. জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ। জিহাদ নিয়ে বর্তমান সমাজে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান। কিন্তু জিহাদ বলতে কেবল যুদ্ধকেই বোঝানো হয় না। বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেকোনো প্রচেষ্টা। যেমন, নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান এবং দ্বীনের জন্য নিজের জীবন কিংবা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা অথবা দ্বীনকে রক্ষা করার অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা জিহাদের অংশ।
যেকোনো ব্যবসায় ক্রেতা অপরিহার্য। তবে বান্দা এবং রবে এই ব্যবসায় ক্রেতা যিনি, তিনি হলেন মহান আল্লাহ। তিনি কী কিনে নিচ্ছেন এবং বিনিময়ে আমরা কী লাভ করছি, তা সুরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের নিকট থেকে তাদের জান ও মালকে জান্নাতের বিনিময়ে।’
মহান রবের সঙ্গে ব্যবসার লাভ এবং উপকারিতা সম্পর্কে সুরা সফফাতের ১২ নম্বর আয়াতে তিনি আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত এবং স্থায়ী জান্নাতের উত্তম বাসগৃহে। এটাই মহাসাফল্য।’
ব্যবসায়ের চিরাচরিত ঝুঁকি থাকলেও খোদার সঙ্গে লেনদেনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নেই। নিশ্চিত লাভের আশায় মুমিনগণ আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টি করতে নিভৃতে ইবাদত করে। ওয়াল্লাহি মুমিনদের জন্য এর থেকে বড় ব্যবসা একটিও নেই।
লেখক: শারমিন আক্তার, শিক্ষার্থী, গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
০২ জুন ২০২৩
মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বর্তমান সময়ের শিশুরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম প্রযুক্তি জ্ঞান, ইংরেজি শেখা, বিভিন্ন খেলায় পারদর্শিতা অর্জন ইত্যাদি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানার যেমন দরকার আছে, তেমনি শিশুর মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মচর্চার শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বিকশিত হলে তার মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সমাজবোধ, সুষ্ঠু আচরণ, সততা, সত্যবাদিতা ও সময়নিষ্ঠতার শিক্ষালাভ করে। প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মধ্যে আল্লাহভীতি সৃষ্টি করে, ফলে সে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এ জন্য প্রথমেই দরকার শিশুর পরিবারের সবার মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাদান।
শিশু সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় তার পরিবারের সঙ্গে। এ জন্য পরিবারের সবার করণীয় শিশুর সঙ্গে ইসলামিক ভাবধারার আচরণ করা, ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্য গল্পের মাধ্যমে শোনানো, আল্লাহভীতি সৃষ্টি করা, আল্লাহর ৯৯ নামের অর্থ ব্যাখ্যা করা ইত্যাদি।
এ ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা নিয়মিত নামাজ, রোজা, কোরআন পাঠ, সত্য ও সদাচরণ করলে শিশুরা তা অনুসরণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ যদি শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে আলোকিত ও দায়িত্বশীল। শিক্ষকেরা যদি নিজেদের আচরণের মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার উদাহরণ দিতে পারেন, তবে সে প্রভাব অনেক গভীর হবে।
বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ শিশু প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। ছোট থেকেই ভিডিও গেমস ও অন্যান্য কনটেন্ট দেখায় তাদের আচার-আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে, যা তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় শিশু বেড়ে উঠলে তার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারা জাগ্রত হয়, যা তার ভবিষ্যৎ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করে। ধর্মীয় শিক্ষা শিশুর মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। এটি তাকে শেখায় কীভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কীভাবে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয় এবং কীভাবে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বুঝে এগিয়ে যেতে হয়।
একটি সমাজ তখনই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হয়, যখন সে সমাজের শিশুরা নৈতিক গুণাবলি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে গড়ে ওঠে। এ শিক্ষা শুধু আখিরাতের জন্য কল্যাণকর নয়; বরং দুনিয়ার জীবনকেও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। তাই সমাজের সব স্তরে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার চর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: রাখি আক্তার, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা ক্রমাগত হারে বেড়ে যাওয়া। এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে একসময় পৃথিবীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়। আর জলবায়ুর পরিবর্তনে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
০২ জুন ২০২৩
মানসিক অশান্তি থাকলে কোনো কাজেই মন বসে না। সারাক্ষণ অস্থিরতা বিরাজ করে। কাজে স্থিরতা আসার পূর্বশর্ত হলো মানসিক শান্তি। কোরআন-সুন্নাহয় এই অশান্তি বা অস্থিরতা ভাব দূর করার অনেক দোয়া রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৮ ঘণ্টা আগে
‘হে ইমানদারগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান বলে দেব না, যা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে রক্ষা করবে?’ এর পরের আয়াতেই আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তা এই যে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ইমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর পথে লড়াই করবে—এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে!’
১ দিন আগে