রায়হান আল ইমরান
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম ও আত্মমর্যাদাবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁরা ভিক্ষাবৃত্তিকে প্রশ্রয় দেননি, বরং এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ইসলামে হালাল উপার্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর এই উপার্জনের জন্য প্রয়োজন হয় নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও সাধনার।
ইসলামি সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি এড়াতে এবং মানুষকে উপার্জনে উৎসাহিত করতে কিছু কার্যকর ব্যবস্থা রয়েছে:
কর্মের প্রতি উৎসাহ প্রদান
ইসলামে আল্লাহর ওপর ভরসার পাশাপাশি কর্ম ও পরিশ্রমের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এর একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এক আনসারি সাহাবি নবীজি (সা.)-এর কাছে ভিক্ষা চাইতে এলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার ঘরে কি কিছু আছে?’ সাহাবি উত্তর দিলেন, ‘একটি কম্বল আছে, যার অর্ধেক দিয়ে আমি শরীর ঢাকি আর বাকি অর্ধেক বিছানা হিসেবে ব্যবহার করি। আর একটি বড় পাত্র আছে, যাতে পানি পান করি।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘এই দুটি জিনিস আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি সেগুলো নিয়ে এলে তিনি উপস্থিত সাহাবিদের বললেন, ‘এ দুটি কে কিনবে?’ একজন বলল, ‘আমি এক দিরহামে কিনব।’ নবীজি (সা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এর চেয়ে বেশি কেউ দেবে?’ অবশেষে একজন দুই দিরহামে তা কিনে নিল। এরপর নবীজি (সা.) সাহাবিকে বললেন, ‘এক দিরহামে খাবার কিনে পরিবারকে দাও, আর অন্য এক দিরহামে একটি কুঠার কিনে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি তা-ই করলেন। নবীজি নিজ হাতে কুঠারটিতে হাতল লাগিয়ে দিলেন এবং বললেন, ‘এখন যাও, কাঠ কেটে বিক্রি করো। আগামী ১৫ দিন যেন তোমাকে আমার কাছে না দেখি।’ সাহাবি কাঠ কেটে বিক্রি করতে লাগলেন। ১৫ দিন পর তিনি ১০ দিরহাম নিয়ে নবীজি (সা.)-এর কাছে এলেন। তিনি সে টাকা দিয়ে কিছু কাপড় ও খাবার কিনলেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন, ‘ভিক্ষা করে বেড়ানোর চেয়ে পরিশ্রম করে খাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ১২১৮)
জাকাত ও সদকায়ে ফিতর
ইসলাম সমাজের অসচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের জন্য একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যার গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্তম্ভ হলো জাকাত ও সদকায়ে ফিতর। ধনীদের জন্য জাকাত আদায় করা ফরজ। এটি কেবল দান নয়, বরং ইবাদতের অংশ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত আদায় করো।’ (সুরা বাকারা: ১১০)। একইভাবে, সদকায়ে ফিতর রমজানের শেষে দেওয়া হয়, যাতে দরিদ্ররাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এই দুটি ব্যবস্থা সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য এনে ধনী ও গরিবের মাঝে মানবিক বন্ধন তৈরি করে।
অপচয় পরিহার ও মিতব্যয়িতা
ইসলামে অপচয়কে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই অপচয়কারী শয়তানের ভাই।’ (সুরা ইসরা: ২৭) অপচয় শুধু সম্পদের অপব্যবহারই নয়, বরং এটি দারিদ্র্যের কারণ হতে পারে। একজন মুমিনের উচিত সম্পদ ব্যয়ে মিতব্যয়ী হওয়া, যা আত্মসংযম ও ধৈর্যের পরিচয় বহন করে।
ভিক্ষাবৃত্তির কঠোর নিন্দা
ভিক্ষাবৃত্তি মানুষের আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ন করে। তাই মহানবী (সা.) এটিকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কারও জন্য রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে বের হওয়া ভিক্ষাবৃত্তি থেকে উত্তম।’ (সহিহ বুখারি: ২০৭৫)।
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম ও আত্মমর্যাদাবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁরা ভিক্ষাবৃত্তিকে প্রশ্রয় দেননি, বরং এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ইসলামে হালাল উপার্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর এই উপার্জনের জন্য প্রয়োজন হয় নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও সাধনার।
ইসলামি সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি এড়াতে এবং মানুষকে উপার্জনে উৎসাহিত করতে কিছু কার্যকর ব্যবস্থা রয়েছে:
কর্মের প্রতি উৎসাহ প্রদান
ইসলামে আল্লাহর ওপর ভরসার পাশাপাশি কর্ম ও পরিশ্রমের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এর একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এক আনসারি সাহাবি নবীজি (সা.)-এর কাছে ভিক্ষা চাইতে এলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার ঘরে কি কিছু আছে?’ সাহাবি উত্তর দিলেন, ‘একটি কম্বল আছে, যার অর্ধেক দিয়ে আমি শরীর ঢাকি আর বাকি অর্ধেক বিছানা হিসেবে ব্যবহার করি। আর একটি বড় পাত্র আছে, যাতে পানি পান করি।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘এই দুটি জিনিস আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি সেগুলো নিয়ে এলে তিনি উপস্থিত সাহাবিদের বললেন, ‘এ দুটি কে কিনবে?’ একজন বলল, ‘আমি এক দিরহামে কিনব।’ নবীজি (সা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এর চেয়ে বেশি কেউ দেবে?’ অবশেষে একজন দুই দিরহামে তা কিনে নিল। এরপর নবীজি (সা.) সাহাবিকে বললেন, ‘এক দিরহামে খাবার কিনে পরিবারকে দাও, আর অন্য এক দিরহামে একটি কুঠার কিনে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি তা-ই করলেন। নবীজি নিজ হাতে কুঠারটিতে হাতল লাগিয়ে দিলেন এবং বললেন, ‘এখন যাও, কাঠ কেটে বিক্রি করো। আগামী ১৫ দিন যেন তোমাকে আমার কাছে না দেখি।’ সাহাবি কাঠ কেটে বিক্রি করতে লাগলেন। ১৫ দিন পর তিনি ১০ দিরহাম নিয়ে নবীজি (সা.)-এর কাছে এলেন। তিনি সে টাকা দিয়ে কিছু কাপড় ও খাবার কিনলেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন, ‘ভিক্ষা করে বেড়ানোর চেয়ে পরিশ্রম করে খাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ১২১৮)
জাকাত ও সদকায়ে ফিতর
ইসলাম সমাজের অসচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের জন্য একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যার গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্তম্ভ হলো জাকাত ও সদকায়ে ফিতর। ধনীদের জন্য জাকাত আদায় করা ফরজ। এটি কেবল দান নয়, বরং ইবাদতের অংশ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত আদায় করো।’ (সুরা বাকারা: ১১০)। একইভাবে, সদকায়ে ফিতর রমজানের শেষে দেওয়া হয়, যাতে দরিদ্ররাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এই দুটি ব্যবস্থা সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য এনে ধনী ও গরিবের মাঝে মানবিক বন্ধন তৈরি করে।
অপচয় পরিহার ও মিতব্যয়িতা
ইসলামে অপচয়কে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই অপচয়কারী শয়তানের ভাই।’ (সুরা ইসরা: ২৭) অপচয় শুধু সম্পদের অপব্যবহারই নয়, বরং এটি দারিদ্র্যের কারণ হতে পারে। একজন মুমিনের উচিত সম্পদ ব্যয়ে মিতব্যয়ী হওয়া, যা আত্মসংযম ও ধৈর্যের পরিচয় বহন করে।
ভিক্ষাবৃত্তির কঠোর নিন্দা
ভিক্ষাবৃত্তি মানুষের আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ন করে। তাই মহানবী (সা.) এটিকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কারও জন্য রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে বের হওয়া ভিক্ষাবৃত্তি থেকে উত্তম।’ (সহিহ বুখারি: ২০৭৫)।
রায়হান আল ইমরান
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম ও আত্মমর্যাদাবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁরা ভিক্ষাবৃত্তিকে প্রশ্রয় দেননি, বরং এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ইসলামে হালাল উপার্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর এই উপার্জনের জন্য প্রয়োজন হয় নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও সাধনার।
ইসলামি সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি এড়াতে এবং মানুষকে উপার্জনে উৎসাহিত করতে কিছু কার্যকর ব্যবস্থা রয়েছে:
কর্মের প্রতি উৎসাহ প্রদান
ইসলামে আল্লাহর ওপর ভরসার পাশাপাশি কর্ম ও পরিশ্রমের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এর একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এক আনসারি সাহাবি নবীজি (সা.)-এর কাছে ভিক্ষা চাইতে এলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার ঘরে কি কিছু আছে?’ সাহাবি উত্তর দিলেন, ‘একটি কম্বল আছে, যার অর্ধেক দিয়ে আমি শরীর ঢাকি আর বাকি অর্ধেক বিছানা হিসেবে ব্যবহার করি। আর একটি বড় পাত্র আছে, যাতে পানি পান করি।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘এই দুটি জিনিস আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি সেগুলো নিয়ে এলে তিনি উপস্থিত সাহাবিদের বললেন, ‘এ দুটি কে কিনবে?’ একজন বলল, ‘আমি এক দিরহামে কিনব।’ নবীজি (সা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এর চেয়ে বেশি কেউ দেবে?’ অবশেষে একজন দুই দিরহামে তা কিনে নিল। এরপর নবীজি (সা.) সাহাবিকে বললেন, ‘এক দিরহামে খাবার কিনে পরিবারকে দাও, আর অন্য এক দিরহামে একটি কুঠার কিনে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি তা-ই করলেন। নবীজি নিজ হাতে কুঠারটিতে হাতল লাগিয়ে দিলেন এবং বললেন, ‘এখন যাও, কাঠ কেটে বিক্রি করো। আগামী ১৫ দিন যেন তোমাকে আমার কাছে না দেখি।’ সাহাবি কাঠ কেটে বিক্রি করতে লাগলেন। ১৫ দিন পর তিনি ১০ দিরহাম নিয়ে নবীজি (সা.)-এর কাছে এলেন। তিনি সে টাকা দিয়ে কিছু কাপড় ও খাবার কিনলেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন, ‘ভিক্ষা করে বেড়ানোর চেয়ে পরিশ্রম করে খাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ১২১৮)
জাকাত ও সদকায়ে ফিতর
ইসলাম সমাজের অসচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের জন্য একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যার গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্তম্ভ হলো জাকাত ও সদকায়ে ফিতর। ধনীদের জন্য জাকাত আদায় করা ফরজ। এটি কেবল দান নয়, বরং ইবাদতের অংশ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত আদায় করো।’ (সুরা বাকারা: ১১০)। একইভাবে, সদকায়ে ফিতর রমজানের শেষে দেওয়া হয়, যাতে দরিদ্ররাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এই দুটি ব্যবস্থা সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য এনে ধনী ও গরিবের মাঝে মানবিক বন্ধন তৈরি করে।
অপচয় পরিহার ও মিতব্যয়িতা
ইসলামে অপচয়কে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই অপচয়কারী শয়তানের ভাই।’ (সুরা ইসরা: ২৭) অপচয় শুধু সম্পদের অপব্যবহারই নয়, বরং এটি দারিদ্র্যের কারণ হতে পারে। একজন মুমিনের উচিত সম্পদ ব্যয়ে মিতব্যয়ী হওয়া, যা আত্মসংযম ও ধৈর্যের পরিচয় বহন করে।
ভিক্ষাবৃত্তির কঠোর নিন্দা
ভিক্ষাবৃত্তি মানুষের আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ন করে। তাই মহানবী (সা.) এটিকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কারও জন্য রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে বের হওয়া ভিক্ষাবৃত্তি থেকে উত্তম।’ (সহিহ বুখারি: ২০৭৫)।
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম ও আত্মমর্যাদাবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁরা ভিক্ষাবৃত্তিকে প্রশ্রয় দেননি, বরং এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ইসলামে হালাল উপার্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর এই উপার্জনের জন্য প্রয়োজন হয় নিষ্ঠা, পরিশ্রম ও সাধনার।
ইসলামি সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি এড়াতে এবং মানুষকে উপার্জনে উৎসাহিত করতে কিছু কার্যকর ব্যবস্থা রয়েছে:
কর্মের প্রতি উৎসাহ প্রদান
ইসলামে আল্লাহর ওপর ভরসার পাশাপাশি কর্ম ও পরিশ্রমের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। হাদিসে এর একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এক আনসারি সাহাবি নবীজি (সা.)-এর কাছে ভিক্ষা চাইতে এলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার ঘরে কি কিছু আছে?’ সাহাবি উত্তর দিলেন, ‘একটি কম্বল আছে, যার অর্ধেক দিয়ে আমি শরীর ঢাকি আর বাকি অর্ধেক বিছানা হিসেবে ব্যবহার করি। আর একটি বড় পাত্র আছে, যাতে পানি পান করি।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘এই দুটি জিনিস আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি সেগুলো নিয়ে এলে তিনি উপস্থিত সাহাবিদের বললেন, ‘এ দুটি কে কিনবে?’ একজন বলল, ‘আমি এক দিরহামে কিনব।’ নবীজি (সা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এর চেয়ে বেশি কেউ দেবে?’ অবশেষে একজন দুই দিরহামে তা কিনে নিল। এরপর নবীজি (সা.) সাহাবিকে বললেন, ‘এক দিরহামে খাবার কিনে পরিবারকে দাও, আর অন্য এক দিরহামে একটি কুঠার কিনে আমার কাছে নিয়ে এসো।’ সাহাবি তা-ই করলেন। নবীজি নিজ হাতে কুঠারটিতে হাতল লাগিয়ে দিলেন এবং বললেন, ‘এখন যাও, কাঠ কেটে বিক্রি করো। আগামী ১৫ দিন যেন তোমাকে আমার কাছে না দেখি।’ সাহাবি কাঠ কেটে বিক্রি করতে লাগলেন। ১৫ দিন পর তিনি ১০ দিরহাম নিয়ে নবীজি (সা.)-এর কাছে এলেন। তিনি সে টাকা দিয়ে কিছু কাপড় ও খাবার কিনলেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন, ‘ভিক্ষা করে বেড়ানোর চেয়ে পরিশ্রম করে খাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: ১২১৮)
জাকাত ও সদকায়ে ফিতর
ইসলাম সমাজের অসচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের জন্য একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, যার গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্তম্ভ হলো জাকাত ও সদকায়ে ফিতর। ধনীদের জন্য জাকাত আদায় করা ফরজ। এটি কেবল দান নয়, বরং ইবাদতের অংশ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত আদায় করো।’ (সুরা বাকারা: ১১০)। একইভাবে, সদকায়ে ফিতর রমজানের শেষে দেওয়া হয়, যাতে দরিদ্ররাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। এই দুটি ব্যবস্থা সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য এনে ধনী ও গরিবের মাঝে মানবিক বন্ধন তৈরি করে।
অপচয় পরিহার ও মিতব্যয়িতা
ইসলামে অপচয়কে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই অপচয়কারী শয়তানের ভাই।’ (সুরা ইসরা: ২৭) অপচয় শুধু সম্পদের অপব্যবহারই নয়, বরং এটি দারিদ্র্যের কারণ হতে পারে। একজন মুমিনের উচিত সম্পদ ব্যয়ে মিতব্যয়ী হওয়া, যা আত্মসংযম ও ধৈর্যের পরিচয় বহন করে।
ভিক্ষাবৃত্তির কঠোর নিন্দা
ভিক্ষাবৃত্তি মানুষের আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ন করে। তাই মহানবী (সা.) এটিকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমাদের কারও জন্য রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে বের হওয়া ভিক্ষাবৃত্তি থেকে উত্তম।’ (সহিহ বুখারি: ২০৭৫)।
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।
তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।
নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।
অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।
লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা
বিয়ে মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এটি কেবল দুটি মানুষের মিলন নয়, বরং দুটি পরিবার, দুটি আত্মা ও দুটি হৃদয়ের পবিত্র বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্যজীবনে গড়ে ওঠে পারস্পরিক ভালোবাসা, শান্তি ও মধুর সম্পর্ক।
তাই ইসলাম এই সম্পর্ককে শুধু সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখেনি, বরং একে করেছে ইবাদতের অংশ। এ কারণেই নবীজি (সা.) পুরুষদের স্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘নারীকে চারটি কারণে বিয়ে করা হয়। ১. তার সম্পদ, ২. তার বংশমর্যাদা, ৩. তার সৌন্দর্য, ৪. তার দ্বীনদার। অতএব তুমি দ্বীনদারকেই প্রাধান্য দাও। না হলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০৯০)
এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
কারণ, সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, সম্পদ পরিবর্তনশীল, বংশমর্যাদা বাহ্যিক মর্যাদা মাত্র; কিন্তু দ্বীনদার হলো এমন এক গুণ, যা জীবনকে আখিরাতের সফলতার পথে নিয়ে যায় এবং দাম্পত্যসম্পর্ককে প্রকৃত অর্থে স্থায়ী সুখ-শান্তির নিশ্চয়তা দেয়।
নবীজি (সা.)-এর এ নির্দেশনার মূল কথা হলো, যখনই দ্বীনদার কোনো নারী পাওয়া যাবে, তখন তাকেই সর্বাগ্রে বিবেচনায় নিতে হবে। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো গুণসম্পন্নাকে প্রাধান্য দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না।
কারণ দ্বীনদার ছাড়া অন্য সব গুণ একসময় ম্লান হয়ে যায়, কিন্তু দ্বীনদারের আলো দাম্পত্যজীবনকে চিরভালোবাসা, আস্থা ও সন্তুষ্টিতে ভরিয়ে রাখে।
অতএব, একজন মুসলিম যুবকের জন্য স্ত্রী নির্বাচনকালে সর্বোত্তম নির্দেশনা হলো, এমন নারীকে বেছে নেওয়া, যিনি দ্বীনদার, আল্লাহভীরু ও ইসলামি আদর্শে জীবন পরিচালনা করতে অভ্যস্ত। এর মাধ্যমে সংসার হবে শান্তিময়, জীবন হবে কল্যাণময় এবং আখিরাত হবে সফল।
লেখক: ইবরাহীম আল খলীল, সহকারী শিক্ষাসচিব, মাদ্রাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম...
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেশাব্বির আহমদ
চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ। কেউ যখন লজ্জাবোধ হারায়, তার তখন নৈতিক পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কেননা কোনো পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ব্যক্তির আর কোনো দ্বিধা থাকে না।
নবী করিম (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘লজ্জা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (সহিহ্ বুখারি)। আর এ লজ্জাবোধ মানুষকে ইমান ও স্বচ্ছতার পথে চলতে সহযোগিতা করে। বলা যায়, লজ্জা হলো একটি অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির কাঠগড়া, যা মানুষকে পাপ ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। যার মধ্যে লাজুকতা যতটুকু থাকে, সে পাপ ও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে ততটাই সংকোচবোধ করে।
লজ্জাহীনতা কেন নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ? কারণ, যখন লজ্জা চলে যায়, তখন আর কোনো কিছুই নৈতিক মানদণ্ড হিসেবে অবশিষ্ট থাকে না। নবীজি (সা.) চরম লজ্জাহীনতার পরিণতি বোঝাতে গিয়ে বলেন, ‘যখন তুমি নির্লজ্জ হয়ে পড়বে, তখন যা ইচ্ছা তা-ই করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। তাঁর এ কথাটি মূলত একটি হুঁশিয়ারি। লজ্জাহীনতা মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করে। পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। হাদিসের ভাষায়, ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ, আর ইমানদারের স্থান জান্নাত। লজ্জাহীনতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ, আর দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম।’ (জামে তিরমিজি)
চরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ। কেউ যখন লজ্জাবোধ হারায়, তার তখন নৈতিক পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কেননা কোনো পাপকাজে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাহীন ব্যক্তির আর কোনো দ্বিধা থাকে না।
নবী করিম (সা.) স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘লজ্জা ইমানের একটি বিশেষ শাখা।’ (সহিহ্ বুখারি)। আর এ লজ্জাবোধ মানুষকে ইমান ও স্বচ্ছতার পথে চলতে সহযোগিতা করে। বলা যায়, লজ্জা হলো একটি অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির কাঠগড়া, যা মানুষকে পাপ ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। যার মধ্যে লাজুকতা যতটুকু থাকে, সে পাপ ও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে ততটাই সংকোচবোধ করে।
লজ্জাহীনতা কেন নৈতিক পতনের প্রথম ধাপ? কারণ, যখন লজ্জা চলে যায়, তখন আর কোনো কিছুই নৈতিক মানদণ্ড হিসেবে অবশিষ্ট থাকে না। নবীজি (সা.) চরম লজ্জাহীনতার পরিণতি বোঝাতে গিয়ে বলেন, ‘যখন তুমি নির্লজ্জ হয়ে পড়বে, তখন যা ইচ্ছা তা-ই করো।’ (সহিহ্ বুখারি)। তাঁর এ কথাটি মূলত একটি হুঁশিয়ারি। লজ্জাহীনতা মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজের দিকে ঠেলে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত করে। পক্ষান্তরে লজ্জাশীলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়। হাদিসের ভাষায়, ‘লজ্জা ইমানের অঙ্গ, আর ইমানদারের স্থান জান্নাত। লজ্জাহীনতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ, আর দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম।’ (জামে তিরমিজি)
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম...
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ০৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
---|---|---|
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ৪: ৪২ মিনিট |
ফজর | ০৪: ৪৩ মিনিট | ০৫: ৫৭ মিনিট |
জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৪৯ মিনিট |
আসর | ০৩: ৫০ মিনিট | ০৫: ২৬ মিনিট |
মাগরিব | ০৫: ২৮ মিনিট | ০৬: ৪২ মিনিট |
এশা | ০৬: ৪৩ মিনিট | ০৪: ৪২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম...
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেযশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
১ দিন আগেরায়হান আল ইমরান
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
আবু হানিফা (রহ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তাঁর পুরো নাম, নুমান বিন সাবেত বিন মারজুবান আল-কুফি। তবে ‘আবু হানিফা’ উপাধিতেই বেশি পরিচিত। বর্ণনা অনুযায়ী, তৎকালীন কুফায় ‘হানিফা’ শব্দটি দোয়াত বা কলমের কালি বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। যেহেতু তিনি অধিকাংশ সময় গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত থাকতেন, তাই তিনি ‘আবু হানিফা’ উপাধি লাভ করেন।
তিনি ৮০ হিজরি বর্তমান ইরাকের কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ মেধাবী ও অধ্যবসায়ী ছিলেন। মেধা ও সাধনার সমন্বয়েই একসময় তিনি নিজেকে সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসির হিসেবে গড়ে তোলেন।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা
তিনি ইসলামি ফিকহ তথা আইনশাস্ত্রের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। ফিকহ গবেষণায় তাঁর গভীর যুক্তি, তীক্ষ্ণ চিন্তাশক্তি ও উপলব্ধিই একদিন তাঁকে পরিণত করে হানাফি মাজহাবের স্থপতিতে, যা আজও বিশ্বের বহু দেশে অনুসৃত।
তিনি একজন তাবেয়ি
তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি, যা তাঁর মর্যাদাকে ফুটিয়ে তোলে। তিনি কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহাবির সাক্ষাৎ পেয়ে ধন্য হোন। যাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন, তাঁরা হলেন হজরত আনাস বিন মালিক, আবদুল্লাহ বিন হারিস, আমর বিন হুরাইস, জাবির বিন আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা, সাহল বিন সাদ, আবু তোফাইল, ওয়াসেলা বিন আসকা, আবদুল্লাহ বিন উনাইস, মাকিল বিন ইয়াসার, আয়েশা বিনতে আজরাদ (রা.)।
বিচারপতি পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি
তখন ক্ষমতার মসনদে ছিলেন উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন হুবায়রা। তিনি একদিন সময়ের শ্রেষ্ঠ ফকিহ ইমাম আবু হানিফা (রা.)-কে ডেকে পাঠান রাজপ্রসাদে। সেখানে এলে তিনি তাঁকে কুফার বিচারপতি (কাজি) হওয়ার প্রস্তাব দেন।
এ প্রস্তাব বাহ্যিকভাবে যদিও সম্মানের; কিন্তু এর পেছনে ছিল খলিফার চতুর রাজনীতি। খলিফা মনে করতেন—তিনি বিচারপতি হলে খিলাফতের ভিত মজবুত হবে, খলিফার বৈধতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কিন্তু এ দায়িত্ব যে এতটা মসৃণ নয়; তা আবু হানিফা (রহ.) আগে থেকেই বুঝতে সক্ষম হোন। তাই তিনি স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানান।
ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর এই স্পষ্ট অস্বীকৃতিতে থমকে যায় পুরো রাজদরবার। কিন্তু শাসকের ক্রোধ থামেনি। তিনি ইমামকে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দেন।
শাসকের আদেশ লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। তাই শুরু হয় মর্মান্তিক শাস্তি। প্রতিদিন ১০টি করে মোট ১০০টি বেত্রাঘাত করা হয় তাঁকে। তবু তিনি ন্যায়ের পথ থেকে একচুলও নড়েননি।
আবারও প্রস্তাব, আবারও প্রত্যাখ্যান
সময় গড়ায়। ক্ষমতায় আসেন আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল-মানসুর। এবার তিনিও আবু হানিফা (রহ.)-কে একই পদের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু হানিফা (রহ.) আগের মতোই দৃঢ়ভাবে নাকচ করেন এবং খলিফার রোষানলে পড়েন। খলিফা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারের জীবদ্দশায় খলিফা একদিন আবু হানিফা (রহ.)-কে ডেকে নেন এবং জিজ্ঞেস করেন, এ দায়িত্ব গ্রহণে কেন আপনি অনিচ্ছুক? তিনি জবাব দেন—আমি নিজেকে এ দায়িত্বের যোগ্য মনে করি না। তাঁর এ কথায় খলিফা ক্ষুব্ধ হন। বললেন, তুমি মিথ্যা বলছ! আবু হানিফা (রহ.) দৃঢ়ভাবে জবাব দেন, যদি আমি সত্য বলি, তবে আমি অযোগ্য; আর যদি মিথ্যা বলি, তবে আপনি একজন মিথ্যাবাদীকে বিচারপতি বানাতে চাচ্ছেন। খলিফা তাঁর এমন যুক্তিসংগত কথায় খুব বেশি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁকে পুনরায় কারাগারে বন্দী ও বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
খলিফার কথামতো বেত্রাঘাতসহ নানা নিপীড়ন শুরু হয় তাঁর ওপর। ফলে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অতঃপর ১৫০ হিজরিতে, বন্দিদশায়ই আপন প্রভুর সান্নিধ্যে গমন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা
সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে, তবুও সত্য বলাই শ্রেয়। সম্মান বা পদ নয়, একজন মানুষের আসল পরিচয়—তার নীতি ও আদর্শ। ক্ষমতার মোহ সবাইকে পায় না; বরং কেউ হন ব্যতিক্রম, যিনি যুগে যুগে স্মরণীয় হয়ে থাকেন।
তথ্যসূত্র: উকুদুল জুমান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান ও আল-খাইরাতুল হিসান ফি মানাকিবিল ইমাম আজম আবি হানিফা আন নুমান।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তিকে অত্যন্ত ঘৃণিত একটি কাজ হিসেবে দেখে। এটি কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিতেও নিন্দনীয়। ইসলাম মানুষকে কর্মঠ ও আত্মনির্ভরশীল হতে শেখায় এবং পরনির্ভরতাকে কঠোরভাবে নিরুৎসাহিত করে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং সাহাবিদের জীবন ছিল পরিশ্রম...
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, একজন পুরুষ যখন স্ত্রী নির্বাচন করবে, তখন তার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মূলত চারটি দিক কাজ করে। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশমর্যাদা ও দ্বীনদার। এগুলো মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। কিন্তু এর মধ্যে ইসলাম সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দ্বীনদার ও আদর্শবান নারীকে।
২ ঘণ্টা আগেচরিত্রের এক অসাধারণ ও স্বভাবজাত গুণ—লজ্জা। এই গুণ মানুষকে পশুত্বের স্তর থেকে পৃথক করে মনুষ্যত্বের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে। এটি যেমন মানবিক বৈশিষ্ট্য, তেমন ইসলামের দৃষ্টিতে ইমানের অপরিহার্য অঙ্গ।
১৩ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগে