ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এ অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন গুনাহ
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখে ইসলাম। মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো যাতে প্রকাশ হয়ে না পড়ে, সে জন্য কোনো সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটুকুই নয়, বরং নিজের ঘরের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের জন্যও একান্ত ব্যক্তিগত সময়গুলোতে মা-বাবার কক্ষে প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়নি, তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে—ফজরের নামাজের আগে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখো এবং এশার নামাজের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়।’ (সুরা নুর: ৫৮)
অনুমতি ছাড়া কারও একান্ত সময়ে তাঁর কাছে যাওয়া গুনাহের কাজ। আর কারও অজান্তে ঘরের ভেতরের ব্যক্তিগত মুহূর্ত নজরদারি করা বা উঁকি দেওয়া আরও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এ ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাহাল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক লোক রাসুল (সা.)-এর কোনো এক কক্ষে উঁকি দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে একটা চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেন, যদি আমি জানতাম তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। তাকানোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান আবশ্যক করা হয়েছে। (বুখারি)
অনুমতি না পেলে ফিরে যাওয়া উচিত
কারও ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নুর: ২৭)
আর কারও দরজায় টোকা দিয়ে তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও যদি সে সাড়া না দেয়, তাহলে ফিরে যাওয়া উচিত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু মুসা (রা.) উমর (রা.)-এর কক্ষে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি কোনো অনুমতি পাননি। উমর (রা.) তাঁকে পরে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি ফিরে গেলে কেন?’ তিনি জবাব দেন, ‘আমি আপনার কাছে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলাম—যেমনটা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছিলেন, কিন্তু আপনি কোনো অনুমতি দেননি, তাই আমি প্রবেশ করিনি।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে বুশর (রা.) বলেন, ‘যখন কারও দরজায় কেউ এসে দাঁড়াবে এবং অনুমতি চাইবে, তখন একেবারে দরজার সোজাসুজি দাঁড়াবে না, বরং একটু ডান পাশে বা বাঁ পাশে সরে দাঁড়াবে। যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তবে প্রবেশ করবে, অন্যথায় ফিরে যাবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)
নিজের গোপনীয়তা প্রকাশ করাও গুনাহ
দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো গোপন রাখা আবশ্যক। এ বিষয়গুলো মানুষকে বলে বেড়ানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই পুরুষ, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে মিলিত হয় এবং স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে মিলিত হয়, এরপর সে স্ত্রীর রহস্য প্রকাশ করে দেয়।’ (মুসলিম)
একইভাবে গোপন পাপের কথা মানুষকে বলে বেড়ানোও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো, কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হওয়ার পর সে নিজেই অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক, জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়ামাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের বিষয়টি সেই ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল!’ (বুখারি)
অন্যের দোষ গোপন করার ফজিলত
অন্যের কোনো দোষ জানা থাকলেও তা প্রকাশ না করাই ইসলামের শিক্ষা। বিশেষ করে ওই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাঁর দোষচর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় গিবত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘...তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা একে ঘৃণাই করো।’ (সুরা হুজুরাত: ১২) মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মর্ম সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, ‘এটা কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘কেউ ব্যভিচার করার পর তওবা করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু যে গিবত করে তার গুনাহ প্রতিপক্ষ মাফ না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।’ (তিরমিজি)
অন্যের দোষ প্রকাশ না করার ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্যের দোষ অনুসন্ধান করা নিষেধ
কারও দোষ অনুসন্ধান করা এবং অনুমান করে খারাপ ধারণা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারও পেছনে গুপ্তচরবৃত্তি করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা বেশির ভাগ অনুমান থেকে দূরে থাকো। কেননা, অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ। তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান কোরো না এবং একে অপরের পেছনে নিন্দা কোরো না।’ (সুরা হুজুরাত: ১২)
মহানবী (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় উদ্ঘাটনে লেগে যাও, তবে তোমরা তাকে ধ্বংস করে দেবে কিংবা অন্তত ধ্বংসের প্রান্তে পৌঁছে দেবে।’ (আবু দাউদ) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা। কারো দোষ খুঁজে বেড়িও না, গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত হয়ো না এবং একে অন্যকে ধোঁকা দিয়ো না। …’ (বুখারি)
বৃহত্তর স্বার্থে গোয়েন্দাগিরির অনুমতি
মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এবং জাতীয় স্বার্থে কখনো-সখনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যক্তিগত বিষয় অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে। ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার বিধান অনুসারে কারও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে। তবে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা সরাসরি বিষয়টির সঙ্গে জড়িতদের কাছেই হতে হবে। সাধারণ সমাজে তা প্রচার করা যাবে না। এরশাদ হয়েছে, ‘যখন শান্তি বা শঙ্কার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে, তখন তারা তা প্রচার করে থাকে। যদি তারা তা রাসুল বা তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের গোচরে আনত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে, তারা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। …’ (সুরা নিসা: ৮৩)

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এ অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন গুনাহ
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখে ইসলাম। মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো যাতে প্রকাশ হয়ে না পড়ে, সে জন্য কোনো সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটুকুই নয়, বরং নিজের ঘরের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের জন্যও একান্ত ব্যক্তিগত সময়গুলোতে মা-বাবার কক্ষে প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়নি, তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে—ফজরের নামাজের আগে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখো এবং এশার নামাজের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়।’ (সুরা নুর: ৫৮)
অনুমতি ছাড়া কারও একান্ত সময়ে তাঁর কাছে যাওয়া গুনাহের কাজ। আর কারও অজান্তে ঘরের ভেতরের ব্যক্তিগত মুহূর্ত নজরদারি করা বা উঁকি দেওয়া আরও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এ ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাহাল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক লোক রাসুল (সা.)-এর কোনো এক কক্ষে উঁকি দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে একটা চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেন, যদি আমি জানতাম তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। তাকানোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান আবশ্যক করা হয়েছে। (বুখারি)
অনুমতি না পেলে ফিরে যাওয়া উচিত
কারও ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নুর: ২৭)
আর কারও দরজায় টোকা দিয়ে তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও যদি সে সাড়া না দেয়, তাহলে ফিরে যাওয়া উচিত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু মুসা (রা.) উমর (রা.)-এর কক্ষে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি কোনো অনুমতি পাননি। উমর (রা.) তাঁকে পরে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি ফিরে গেলে কেন?’ তিনি জবাব দেন, ‘আমি আপনার কাছে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলাম—যেমনটা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছিলেন, কিন্তু আপনি কোনো অনুমতি দেননি, তাই আমি প্রবেশ করিনি।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে বুশর (রা.) বলেন, ‘যখন কারও দরজায় কেউ এসে দাঁড়াবে এবং অনুমতি চাইবে, তখন একেবারে দরজার সোজাসুজি দাঁড়াবে না, বরং একটু ডান পাশে বা বাঁ পাশে সরে দাঁড়াবে। যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তবে প্রবেশ করবে, অন্যথায় ফিরে যাবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)
নিজের গোপনীয়তা প্রকাশ করাও গুনাহ
দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো গোপন রাখা আবশ্যক। এ বিষয়গুলো মানুষকে বলে বেড়ানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই পুরুষ, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে মিলিত হয় এবং স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে মিলিত হয়, এরপর সে স্ত্রীর রহস্য প্রকাশ করে দেয়।’ (মুসলিম)
একইভাবে গোপন পাপের কথা মানুষকে বলে বেড়ানোও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো, কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হওয়ার পর সে নিজেই অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক, জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়ামাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের বিষয়টি সেই ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল!’ (বুখারি)
অন্যের দোষ গোপন করার ফজিলত
অন্যের কোনো দোষ জানা থাকলেও তা প্রকাশ না করাই ইসলামের শিক্ষা। বিশেষ করে ওই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাঁর দোষচর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় গিবত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘...তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা একে ঘৃণাই করো।’ (সুরা হুজুরাত: ১২) মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মর্ম সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, ‘এটা কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘কেউ ব্যভিচার করার পর তওবা করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু যে গিবত করে তার গুনাহ প্রতিপক্ষ মাফ না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।’ (তিরমিজি)
অন্যের দোষ প্রকাশ না করার ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্যের দোষ অনুসন্ধান করা নিষেধ
কারও দোষ অনুসন্ধান করা এবং অনুমান করে খারাপ ধারণা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারও পেছনে গুপ্তচরবৃত্তি করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা বেশির ভাগ অনুমান থেকে দূরে থাকো। কেননা, অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ। তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান কোরো না এবং একে অপরের পেছনে নিন্দা কোরো না।’ (সুরা হুজুরাত: ১২)
মহানবী (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় উদ্ঘাটনে লেগে যাও, তবে তোমরা তাকে ধ্বংস করে দেবে কিংবা অন্তত ধ্বংসের প্রান্তে পৌঁছে দেবে।’ (আবু দাউদ) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা। কারো দোষ খুঁজে বেড়িও না, গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত হয়ো না এবং একে অন্যকে ধোঁকা দিয়ো না। …’ (বুখারি)
বৃহত্তর স্বার্থে গোয়েন্দাগিরির অনুমতি
মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এবং জাতীয় স্বার্থে কখনো-সখনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যক্তিগত বিষয় অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে। ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার বিধান অনুসারে কারও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে। তবে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা সরাসরি বিষয়টির সঙ্গে জড়িতদের কাছেই হতে হবে। সাধারণ সমাজে তা প্রচার করা যাবে না। এরশাদ হয়েছে, ‘যখন শান্তি বা শঙ্কার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে, তখন তারা তা প্রচার করে থাকে। যদি তারা তা রাসুল বা তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের গোচরে আনত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে, তারা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। …’ (সুরা নিসা: ৮৩)
ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এ অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন গুনাহ
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখে ইসলাম। মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো যাতে প্রকাশ হয়ে না পড়ে, সে জন্য কোনো সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটুকুই নয়, বরং নিজের ঘরের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের জন্যও একান্ত ব্যক্তিগত সময়গুলোতে মা-বাবার কক্ষে প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়নি, তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে—ফজরের নামাজের আগে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখো এবং এশার নামাজের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়।’ (সুরা নুর: ৫৮)
অনুমতি ছাড়া কারও একান্ত সময়ে তাঁর কাছে যাওয়া গুনাহের কাজ। আর কারও অজান্তে ঘরের ভেতরের ব্যক্তিগত মুহূর্ত নজরদারি করা বা উঁকি দেওয়া আরও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এ ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাহাল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক লোক রাসুল (সা.)-এর কোনো এক কক্ষে উঁকি দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে একটা চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেন, যদি আমি জানতাম তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। তাকানোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান আবশ্যক করা হয়েছে। (বুখারি)
অনুমতি না পেলে ফিরে যাওয়া উচিত
কারও ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নুর: ২৭)
আর কারও দরজায় টোকা দিয়ে তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও যদি সে সাড়া না দেয়, তাহলে ফিরে যাওয়া উচিত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু মুসা (রা.) উমর (রা.)-এর কক্ষে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি কোনো অনুমতি পাননি। উমর (রা.) তাঁকে পরে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি ফিরে গেলে কেন?’ তিনি জবাব দেন, ‘আমি আপনার কাছে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলাম—যেমনটা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছিলেন, কিন্তু আপনি কোনো অনুমতি দেননি, তাই আমি প্রবেশ করিনি।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে বুশর (রা.) বলেন, ‘যখন কারও দরজায় কেউ এসে দাঁড়াবে এবং অনুমতি চাইবে, তখন একেবারে দরজার সোজাসুজি দাঁড়াবে না, বরং একটু ডান পাশে বা বাঁ পাশে সরে দাঁড়াবে। যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তবে প্রবেশ করবে, অন্যথায় ফিরে যাবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)
নিজের গোপনীয়তা প্রকাশ করাও গুনাহ
দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো গোপন রাখা আবশ্যক। এ বিষয়গুলো মানুষকে বলে বেড়ানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই পুরুষ, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে মিলিত হয় এবং স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে মিলিত হয়, এরপর সে স্ত্রীর রহস্য প্রকাশ করে দেয়।’ (মুসলিম)
একইভাবে গোপন পাপের কথা মানুষকে বলে বেড়ানোও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো, কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হওয়ার পর সে নিজেই অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক, জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়ামাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের বিষয়টি সেই ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল!’ (বুখারি)
অন্যের দোষ গোপন করার ফজিলত
অন্যের কোনো দোষ জানা থাকলেও তা প্রকাশ না করাই ইসলামের শিক্ষা। বিশেষ করে ওই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাঁর দোষচর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় গিবত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘...তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা একে ঘৃণাই করো।’ (সুরা হুজুরাত: ১২) মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মর্ম সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, ‘এটা কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘কেউ ব্যভিচার করার পর তওবা করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু যে গিবত করে তার গুনাহ প্রতিপক্ষ মাফ না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।’ (তিরমিজি)
অন্যের দোষ প্রকাশ না করার ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্যের দোষ অনুসন্ধান করা নিষেধ
কারও দোষ অনুসন্ধান করা এবং অনুমান করে খারাপ ধারণা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারও পেছনে গুপ্তচরবৃত্তি করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা বেশির ভাগ অনুমান থেকে দূরে থাকো। কেননা, অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ। তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান কোরো না এবং একে অপরের পেছনে নিন্দা কোরো না।’ (সুরা হুজুরাত: ১২)
মহানবী (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় উদ্ঘাটনে লেগে যাও, তবে তোমরা তাকে ধ্বংস করে দেবে কিংবা অন্তত ধ্বংসের প্রান্তে পৌঁছে দেবে।’ (আবু দাউদ) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা। কারো দোষ খুঁজে বেড়িও না, গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত হয়ো না এবং একে অন্যকে ধোঁকা দিয়ো না। …’ (বুখারি)
বৃহত্তর স্বার্থে গোয়েন্দাগিরির অনুমতি
মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এবং জাতীয় স্বার্থে কখনো-সখনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যক্তিগত বিষয় অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে। ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার বিধান অনুসারে কারও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে। তবে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা সরাসরি বিষয়টির সঙ্গে জড়িতদের কাছেই হতে হবে। সাধারণ সমাজে তা প্রচার করা যাবে না। এরশাদ হয়েছে, ‘যখন শান্তি বা শঙ্কার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে, তখন তারা তা প্রচার করে থাকে। যদি তারা তা রাসুল বা তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের গোচরে আনত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে, তারা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। …’ (সুরা নিসা: ৮৩)

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এ অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন গুনাহ
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখে ইসলাম। মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো যাতে প্রকাশ হয়ে না পড়ে, সে জন্য কোনো সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটুকুই নয়, বরং নিজের ঘরের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের জন্যও একান্ত ব্যক্তিগত সময়গুলোতে মা-বাবার কক্ষে প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়নি, তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে—ফজরের নামাজের আগে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখো এবং এশার নামাজের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়।’ (সুরা নুর: ৫৮)
অনুমতি ছাড়া কারও একান্ত সময়ে তাঁর কাছে যাওয়া গুনাহের কাজ। আর কারও অজান্তে ঘরের ভেতরের ব্যক্তিগত মুহূর্ত নজরদারি করা বা উঁকি দেওয়া আরও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এ ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাহাল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক লোক রাসুল (সা.)-এর কোনো এক কক্ষে উঁকি দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে একটা চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেন, যদি আমি জানতাম তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। তাকানোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান আবশ্যক করা হয়েছে। (বুখারি)
অনুমতি না পেলে ফিরে যাওয়া উচিত
কারও ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নুর: ২৭)
আর কারও দরজায় টোকা দিয়ে তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও যদি সে সাড়া না দেয়, তাহলে ফিরে যাওয়া উচিত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু মুসা (রা.) উমর (রা.)-এর কক্ষে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি কোনো অনুমতি পাননি। উমর (রা.) তাঁকে পরে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি ফিরে গেলে কেন?’ তিনি জবাব দেন, ‘আমি আপনার কাছে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলাম—যেমনটা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছিলেন, কিন্তু আপনি কোনো অনুমতি দেননি, তাই আমি প্রবেশ করিনি।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে বুশর (রা.) বলেন, ‘যখন কারও দরজায় কেউ এসে দাঁড়াবে এবং অনুমতি চাইবে, তখন একেবারে দরজার সোজাসুজি দাঁড়াবে না, বরং একটু ডান পাশে বা বাঁ পাশে সরে দাঁড়াবে। যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তবে প্রবেশ করবে, অন্যথায় ফিরে যাবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)
নিজের গোপনীয়তা প্রকাশ করাও গুনাহ
দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো গোপন রাখা আবশ্যক। এ বিষয়গুলো মানুষকে বলে বেড়ানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই পুরুষ, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে মিলিত হয় এবং স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে মিলিত হয়, এরপর সে স্ত্রীর রহস্য প্রকাশ করে দেয়।’ (মুসলিম)
একইভাবে গোপন পাপের কথা মানুষকে বলে বেড়ানোও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো, কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হওয়ার পর সে নিজেই অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক, জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়ামাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের বিষয়টি সেই ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল!’ (বুখারি)
অন্যের দোষ গোপন করার ফজিলত
অন্যের কোনো দোষ জানা থাকলেও তা প্রকাশ না করাই ইসলামের শিক্ষা। বিশেষ করে ওই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাঁর দোষচর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় গিবত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘...তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা একে ঘৃণাই করো।’ (সুরা হুজুরাত: ১২) মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মর্ম সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, ‘এটা কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘কেউ ব্যভিচার করার পর তওবা করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু যে গিবত করে তার গুনাহ প্রতিপক্ষ মাফ না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।’ (তিরমিজি)
অন্যের দোষ প্রকাশ না করার ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্যের দোষ অনুসন্ধান করা নিষেধ
কারও দোষ অনুসন্ধান করা এবং অনুমান করে খারাপ ধারণা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারও পেছনে গুপ্তচরবৃত্তি করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা বেশির ভাগ অনুমান থেকে দূরে থাকো। কেননা, অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ। তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান কোরো না এবং একে অপরের পেছনে নিন্দা কোরো না।’ (সুরা হুজুরাত: ১২)
মহানবী (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় উদ্ঘাটনে লেগে যাও, তবে তোমরা তাকে ধ্বংস করে দেবে কিংবা অন্তত ধ্বংসের প্রান্তে পৌঁছে দেবে।’ (আবু দাউদ) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা। কারো দোষ খুঁজে বেড়িও না, গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত হয়ো না এবং একে অন্যকে ধোঁকা দিয়ো না। …’ (বুখারি)
বৃহত্তর স্বার্থে গোয়েন্দাগিরির অনুমতি
মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এবং জাতীয় স্বার্থে কখনো-সখনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যক্তিগত বিষয় অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে। ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার বিধান অনুসারে কারও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে। তবে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা সরাসরি বিষয়টির সঙ্গে জড়িতদের কাছেই হতে হবে। সাধারণ সমাজে তা প্রচার করা যাবে না। এরশাদ হয়েছে, ‘যখন শান্তি বা শঙ্কার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে, তখন তারা তা প্রচার করে থাকে। যদি তারা তা রাসুল বা তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের গোচরে আনত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে, তারা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। …’ (সুরা নিসা: ৮৩)

হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১৪ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৬ ঘণ্টা আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন অত্যন্ত হাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। সাহাবায়ে-কেরামের সঙ্গে তিনি কখনো হালকা রসিকতা করতেন; কিন্তু কখনোই তাঁর মুখ থেকে অসত্য বা আঘাতমূলক কোনো কথা বের হতো না। হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমি তো মজা করেও সত্য ছাড়া কিছু বলি না।’ (জামে তিরমিজি: ১৯৯০)। এই হাদিসে শিক্ষণীয় বিষয় হলো—মজার মধ্যেও সত্যতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সমাজে অনেকেই হাস্যরসের নামে মিথ্যা, গালি কিংবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেন, যা ইসলামে নিষিদ্ধ।
হাসি-কৌতুক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হৃদয়ের কোমলতা নষ্ট হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অতিরিক্ত হাসি হৃদয়কে মেরে ফেলে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪১৯৩)। অনবরত হাসাহাসি ও কৌতুক অনুচিত কাজ। ইসলাম মানুষকে আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেনি; বরং আনন্দকে করেছে সংযমের মাধ্যমে সুন্দর ও অর্থবহ। কারও দোষ, আকৃতি, জাতি, ভাষা বা আর্থিক অবস্থা নিয়ে উপহাস করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। হতে পারে তারা তাদের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
বর্তমান সময়ে বিনোদনের নামে টিভি-অনুষ্ঠান, ইউটিউব-ভিডিও কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন কৌতুক ছড়িয়ে পড়ছে। প্র্যাংকের নামে অন্যের সম্মান নষ্ট করতেও মানুষের দ্বিধাবোধ হচ্ছে না। অথচ একজন মুমিনের হাসি-কৌতুক হওয়া উচিত বিনয়ী, শালীন ও কল্যাণমুখী, যা কাউকে আঘাত না করে; বরং ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বাড়ায়।
অতএব একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আমাদের জন্য হাসি-কৌতুকে পরিমিতি বোধ বজায় রাখা জরুরি।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন অত্যন্ত হাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। সাহাবায়ে-কেরামের সঙ্গে তিনি কখনো হালকা রসিকতা করতেন; কিন্তু কখনোই তাঁর মুখ থেকে অসত্য বা আঘাতমূলক কোনো কথা বের হতো না। হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমি তো মজা করেও সত্য ছাড়া কিছু বলি না।’ (জামে তিরমিজি: ১৯৯০)। এই হাদিসে শিক্ষণীয় বিষয় হলো—মজার মধ্যেও সত্যতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সমাজে অনেকেই হাস্যরসের নামে মিথ্যা, গালি কিংবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেন, যা ইসলামে নিষিদ্ধ।
হাসি-কৌতুক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হৃদয়ের কোমলতা নষ্ট হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অতিরিক্ত হাসি হৃদয়কে মেরে ফেলে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪১৯৩)। অনবরত হাসাহাসি ও কৌতুক অনুচিত কাজ। ইসলাম মানুষকে আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেনি; বরং আনন্দকে করেছে সংযমের মাধ্যমে সুন্দর ও অর্থবহ। কারও দোষ, আকৃতি, জাতি, ভাষা বা আর্থিক অবস্থা নিয়ে উপহাস করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। হতে পারে তারা তাদের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
বর্তমান সময়ে বিনোদনের নামে টিভি-অনুষ্ঠান, ইউটিউব-ভিডিও কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন কৌতুক ছড়িয়ে পড়ছে। প্র্যাংকের নামে অন্যের সম্মান নষ্ট করতেও মানুষের দ্বিধাবোধ হচ্ছে না। অথচ একজন মুমিনের হাসি-কৌতুক হওয়া উচিত বিনয়ী, শালীন ও কল্যাণমুখী, যা কাউকে আঘাত না করে; বরং ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বাড়ায়।
অতএব একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আমাদের জন্য হাসি-কৌতুকে পরিমিতি বোধ বজায় রাখা জরুরি।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১৪ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৬ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৫ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৬ মিনিট | ০৬: ০১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪৪ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৫ মিনিট | ০৫: ২০ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২২ মিনিট | ০৬: ৩৭ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৮ মিনিট | ০৪: ৪৫ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১৪ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৬ ঘণ্টা আগেসাকী মাহবুব

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।
প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।
সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।
আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।
সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)
সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।
লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
১৬ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের গৌরব ছড়িয়ে দেওয়া তিনবারের বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী।
আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর হাফেজ ত্বকীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্বজয়ী এই হাফেজ জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অর্জন করেন অসামান্য সাফল্য।
২০১৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জর্ডানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৬২টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন হাফেজ ত্বকী। পরবর্তী সময় কুয়েত ও বাহরাইনেও তিনি কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন।
প্রতিভাবান এই হাফেজ ২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসাশিক্ষক।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই শোক প্রকাশ করছেন তরুণ এই হাফেজের জন্য।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।
১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’
১৪ ঘণ্টা আগে