শরিফ আহমাদ
পবিত্র কোরআনের প্রথম সুরা হলো ‘ফাতেহা।’ এর মাহাত্ম্য এতই বেশি যে একে উম্মুল কিতাব (কিতাবের জননী) এবং সাবউল মাসানি (বারবার পঠিত সাতটি আয়াত) নামেও অভিহিত করা হয়। এই সুরা শুধু নামাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশই নয়; এটি একজন মুমিনের হৃদয়ের গভীরতম প্রার্থনা, জীবনের সঠিক পথনির্দেশ এবং মহান আল্লাহর রহমতের চাবিকাঠি। এর মাধ্যমে মুমিন বান্দারা মানসিক শান্তি, পরকালের মুক্তি ও রোগ-শোক থেকে আরোগ্য লাভের নিশ্চয়তা খুঁজে পান।
সুরা ফাতেহা যে কেবল বিশ্বাসের ভিত মজবুত করে, তা নয়, এটি যে বাস্তব জীবনেও এক অলৌকিক আরোগ্যক্ষমতা ধারণ করে—এর সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় সহিহ্ বুখারিতে বর্ণিত একটি তাৎপর্যপূর্ণ হাদিসে।
আরোগ্যের চাবিকাঠি: রাসুল (সা.)-এর অনুমোদন
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত একটি ঘটনা এর অসাধারণ বরকতকে তুলে ধরে। একবার সফরে থাকা অবস্থায় তাঁরা জানতে পারেন যে, একটি গোত্রের প্রধানকে সাপে কেটেছে। তখন তাঁদের দলের এক ব্যক্তি কেবল উম্মুল কিতাব সুরা ফাতেহা দিয়েই সেই গোত্রপ্রধানকে ঝাড়ফুঁক করেন। এতে গোত্রপ্রধান অলৌকিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং এর বিনিময়ে তাঁরা ৩০টি বকরি ও দুধ পান করার পুরস্কার লাভ করেন।
মদিনায় ফিরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ঘটনাটি বলার পর তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘সে কেমন করে জানল যে, তা (সুরা ফাতেহা) চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে? তোমরা নিজেদের মধ্যে এগুলো বণ্টন করে নাও এবং আমার জন্যও একাংশ রাখো।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০০৭)
এই একটি হাদিস থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শিক্ষা ও নির্দেশনা পাওয়া যায়:
১. সুরা ফাতিহার বরকত ও মাহাত্ম্য
কোরআনের ১১৪টি সুরার মধ্যে সুরা ফাতিহার নাম ও এর মাহাত্ম্য সবচেয়ে বেশি। এর প্রতিটি নামই সুরাটির গভীর বরকত ও আমলের সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এই সুরা যে আল্লাহর এক বিশেষ রহমত, এ ঘটনা তার প্রমাণ।
২. সাহাবায়ে কেরামের আস্থা ও উপলব্ধি
সাহাবিগণ আল্লাহর কালামের মর্যাদা গভীরভাবে উপলব্ধি করতেন। সাপে কাটা রোগীর মতো মারাত্মক অবস্থায় তাঁরা দ্বিধা না করে কেবল সুরা ফাতেহা দিয়েই ঝাড়ফুঁক করেছিলেন। এটি প্রমাণ করে, কোরআন ও এর নিরাময়ক্ষমতার প্রতি তাঁদের অটল বিশ্বাস ও ভালোবাসা ছিল।
৩. চিকিৎসা করা সুন্নত এবং রুকইয়ার অনুমোদন
ইসলাম ছোট-বড় যেকোনো রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সেই চিকিৎসার পাশাপাশি আল্লাহর কালামের মাধ্যমে দোয়া ও ঝাড়ফুঁক (রুকইয়া) করলে তাতে বিশেষ বরকত হয় এবং আরোগ্য লাভ সহজ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবির এই কাজকে প্রশংসা করার মাধ্যমে কোরআনের আয়াত বা হাদিসসম্মত রুকইয়ার মাধ্যমে চিকিৎসাকে বৈধতা দিয়েছেন।
৪. বৈধ সেবার বিনিময়ে পুরস্কার গ্রহণ
সাহাবিগণ এই রুকইয়ার বিনিময়ে বকরি গ্রহণ করেছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) সেই পুরস্কার থেকে নিজের জন্যও অংশ নিতে বলেছেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, বৈধ সেবার বিনিময়ে উপহার বা পুরস্কার গ্রহণ করা শরিয়তে অনুমোদিত। তবে এতে অবশ্যই লোভ বা বাড়াবাড়ি কাম্য নয়।
সুরা ফাতেহা মুমিনের জন্য শুধু কিয়ামত পর্যন্ত নামাজের একটি অংশ নয়, বরং এটি দুনিয়ার জীবনে তাঁর শারীরিক ও মানসিক সব কষ্টের আরোগ্য ও মুক্তির এক শক্তিশালী মাধ্যম। এই সুরার বরকত উপলব্ধি করে এর প্রতি পূর্ণ আস্থা স্থাপন করা প্রতিটি মুমিনের জন্য অপরিহার্য।
লেখক: খতিব ও মাদ্রাসাশিক্ষক
পবিত্র কোরআনের প্রথম সুরা হলো ‘ফাতেহা।’ এর মাহাত্ম্য এতই বেশি যে একে উম্মুল কিতাব (কিতাবের জননী) এবং সাবউল মাসানি (বারবার পঠিত সাতটি আয়াত) নামেও অভিহিত করা হয়। এই সুরা শুধু নামাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশই নয়; এটি একজন মুমিনের হৃদয়ের গভীরতম প্রার্থনা, জীবনের সঠিক পথনির্দেশ এবং মহান আল্লাহর রহমতের চাবিকাঠি। এর মাধ্যমে মুমিন বান্দারা মানসিক শান্তি, পরকালের মুক্তি ও রোগ-শোক থেকে আরোগ্য লাভের নিশ্চয়তা খুঁজে পান।
সুরা ফাতেহা যে কেবল বিশ্বাসের ভিত মজবুত করে, তা নয়, এটি যে বাস্তব জীবনেও এক অলৌকিক আরোগ্যক্ষমতা ধারণ করে—এর সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় সহিহ্ বুখারিতে বর্ণিত একটি তাৎপর্যপূর্ণ হাদিসে।
আরোগ্যের চাবিকাঠি: রাসুল (সা.)-এর অনুমোদন
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত একটি ঘটনা এর অসাধারণ বরকতকে তুলে ধরে। একবার সফরে থাকা অবস্থায় তাঁরা জানতে পারেন যে, একটি গোত্রের প্রধানকে সাপে কেটেছে। তখন তাঁদের দলের এক ব্যক্তি কেবল উম্মুল কিতাব সুরা ফাতেহা দিয়েই সেই গোত্রপ্রধানকে ঝাড়ফুঁক করেন। এতে গোত্রপ্রধান অলৌকিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং এর বিনিময়ে তাঁরা ৩০টি বকরি ও দুধ পান করার পুরস্কার লাভ করেন।
মদিনায় ফিরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ঘটনাটি বলার পর তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘সে কেমন করে জানল যে, তা (সুরা ফাতেহা) চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে? তোমরা নিজেদের মধ্যে এগুলো বণ্টন করে নাও এবং আমার জন্যও একাংশ রাখো।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫০০৭)
এই একটি হাদিস থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শিক্ষা ও নির্দেশনা পাওয়া যায়:
১. সুরা ফাতিহার বরকত ও মাহাত্ম্য
কোরআনের ১১৪টি সুরার মধ্যে সুরা ফাতিহার নাম ও এর মাহাত্ম্য সবচেয়ে বেশি। এর প্রতিটি নামই সুরাটির গভীর বরকত ও আমলের সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এই সুরা যে আল্লাহর এক বিশেষ রহমত, এ ঘটনা তার প্রমাণ।
২. সাহাবায়ে কেরামের আস্থা ও উপলব্ধি
সাহাবিগণ আল্লাহর কালামের মর্যাদা গভীরভাবে উপলব্ধি করতেন। সাপে কাটা রোগীর মতো মারাত্মক অবস্থায় তাঁরা দ্বিধা না করে কেবল সুরা ফাতেহা দিয়েই ঝাড়ফুঁক করেছিলেন। এটি প্রমাণ করে, কোরআন ও এর নিরাময়ক্ষমতার প্রতি তাঁদের অটল বিশ্বাস ও ভালোবাসা ছিল।
৩. চিকিৎসা করা সুন্নত এবং রুকইয়ার অনুমোদন
ইসলাম ছোট-বড় যেকোনো রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সেই চিকিৎসার পাশাপাশি আল্লাহর কালামের মাধ্যমে দোয়া ও ঝাড়ফুঁক (রুকইয়া) করলে তাতে বিশেষ বরকত হয় এবং আরোগ্য লাভ সহজ হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবির এই কাজকে প্রশংসা করার মাধ্যমে কোরআনের আয়াত বা হাদিসসম্মত রুকইয়ার মাধ্যমে চিকিৎসাকে বৈধতা দিয়েছেন।
৪. বৈধ সেবার বিনিময়ে পুরস্কার গ্রহণ
সাহাবিগণ এই রুকইয়ার বিনিময়ে বকরি গ্রহণ করেছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) সেই পুরস্কার থেকে নিজের জন্যও অংশ নিতে বলেছেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, বৈধ সেবার বিনিময়ে উপহার বা পুরস্কার গ্রহণ করা শরিয়তে অনুমোদিত। তবে এতে অবশ্যই লোভ বা বাড়াবাড়ি কাম্য নয়।
সুরা ফাতেহা মুমিনের জন্য শুধু কিয়ামত পর্যন্ত নামাজের একটি অংশ নয়, বরং এটি দুনিয়ার জীবনে তাঁর শারীরিক ও মানসিক সব কষ্টের আরোগ্য ও মুক্তির এক শক্তিশালী মাধ্যম। এই সুরার বরকত উপলব্ধি করে এর প্রতি পূর্ণ আস্থা স্থাপন করা প্রতিটি মুমিনের জন্য অপরিহার্য।
লেখক: খতিব ও মাদ্রাসাশিক্ষক
যশ-খ্যাতি ও পদ-পদবির জন্য জন্য আমরা কত কিছুই না করি। তবে ইতিহাসের পাতায় আমরা এমন অনেক উজ্জ্বল মনীষীর সন্ধান পাই, যাঁরা ক্ষমতা বা পদকে পদদলিত করে সর্বদাই নীতি ও আদর্শকে এগিয়ে রেখেছেন। এমনই একজন মহান মনীষী হলেন নুমান বিন সাবিত, যিনি মুসলিম বিশ্বে ইমাম আবু হানিফা নামে পরিচিত।
৩ ঘণ্টা আগেঅগ্নিকাণ্ড মানবজীবনে একটি অপ্রত্যাশিত ও ভয়ংকর দুর্যোগ, যা মুহূর্তেই জান ও মালের অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করে। এমন চরম বিপদের মুহূর্তে একজন মুমিনের কর্তব্য হলো, আগুন নেভানোর পার্থিব চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা।
১২ ঘণ্টা আগেনামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৯ ঘণ্টা আগেপবিত্র কোরআনের অন্যতম ছোট ও তাৎপর্যপূর্ণ সুরা হলো সুরা ইখলাস। মাত্র চার আয়াতবিশিষ্ট এই সুরাটির অন্তর্নিহিত ফজিলত ও গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামি শিক্ষার আলোকে এই সুরার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ (তাওহিদ), অদ্বিতীয়তা ও অনন্য মহিমা সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
১ দিন আগে