Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

ভবিষ্যৎ গ্রাহক গড়ে তুলছে ইসলামী ব্যাংক

ভবিষ্যৎ গ্রাহক গড়ে তুলছে ইসলামী ব্যাংক
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৫৭

আজকের পত্রিকা: কবে থেকে স্কুল ব্যাংকিংয়ে যুক্ত ইসলামী ব্যাংক?

ওমর ফারুক খাঁন: ইসলামী ব্যাংক শুরু থেকে এই কার্যক্রমে যুক্ত। আমরা ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘মুদারাবা স্কুল স্টুডেন্ট সেভিংস অ্যাকাউন্ট’ চালু করেছি, যেখানে অভিভাবকেরা সন্তানদের পক্ষ থেকে হিসাব পরিচালনা করেন। মূল লক্ষ্য হলো শিশু-কিশোরদের সুদমুক্ত অর্থনীতিতে যুক্ত করা এবং ভবিষ্যতে দায়িত্বশীল ব্যাংক গ্রাহক হিসেবে গড়ে তোলা।

আজকের পত্রিকা: তাহলে এ খাতে ইসলামী ব্যাংকের অবস্থান কীভাবে দেখছেন?

ওমর ফারুক খাঁন: বর্তমানে আমাদের ৬ লাখ ৬১ হাজার শিক্ষার্থী হিসাব রয়েছে, যা দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্ক, গ্রামীণ পর্যায়ে সেবা সম্প্রসারণ এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। মাত্র ১০০ টাকায় হিসাব খোলা যায়, কোনো বার্ষিক চার্জ নেই, শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ডেবিট কার্ডও পায়। ফলে আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের সন্তানেরাও সহজে এই সুযোগ নিতে পারছে।

আজকের পত্রিকা: স্কুল ব্যাংকিং বিস্তারে ব্যাংকগুলোর ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

ওমর ফারুক খাঁন: এখন ৬১ ব্যাংকের মধ্যে ৫৯টি এই কার্যক্রমে যুক্ত; যা বলে দেয় ব্যাংকগুলো কতটা সক্রিয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি শাখা অন্তত একটি স্কুলে স্কুল ব্যাংকিং পরিচালনা করছে; পাশাপাশি ব্যাংকগুলো সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণ আয়োজন করছে, যাতে শিক্ষার্থীরা সঞ্চয়ের গুরুত্ব এবং ব্যাংক ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা পায়। আশাব্যঞ্জক দিক হলো, এই হিসাবগুলোর ৫৪ শতাংশই গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের নামে।

আজকের পত্রিকা: শিক্ষার্থীরা সাধারণত কোথা থেকে সঞ্চয়ের অর্থ পায়?

ওমর ফারুক খাঁন: বেশির ভাগ টিফিনের টাকা, হাতখরচ, উপহার অথবা বৃত্তির অর্থ থেকে সঞ্চয় করে। কেউ কেউ টিউশন বা ছোটখাটো অনলাইন কাজ থেকে আয় করে জমা রাখে। অভিভাবকেরাও সন্তানদের সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে নিয়মিত কিছু টাকা জমা দেন। এই ছোট ছোট জমা মিলিয়েই তৈরি হচ্ছে একটি বড় আর্থিক ভিত্তি।

আজকের পত্রিকা: তবে সাম্প্রতিক সময়ে জমার প্রবাহ কিছুটা কমে এসেছে। কেন?

ওমর ফারুক খাঁন: এর পেছনে প্রধান কারণ অর্থনৈতিক চাপ ও সচেতনতার অভাব। অনেক পরিবার আগের মতো সঞ্চয়ের জন্য আলাদা অর্থ রাখতে পারছে না। অন্যদিকে কিছু ব্যাংক করপোরেট খাতে বেশি মনোযোগ দেওয়ায় এই খাতের উদ্যোগও কিছুটা কমেছে। তবে নীতিগত সহায়তা, ডিজিটাল সুবিধা এবং প্রচার বাড়ানো গেলে দ্রুতই তা ঘুরে দাঁড়াবে।

আজকের পত্রিকা: জাতীয় অর্থনীতিতে খুদে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় কতটা শক্তি জোগাচ্ছে?

ওমর ফারুক খাঁন: এই ক্ষুদ্র সঞ্চয়গুলো একত্রে ব্যাংকের আমানত বাড়াচ্ছে, যা পরে বিনিয়োগ ও উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। এতে কর্মসংস্থান বাড়ে, অর্থনীতি সচল হয়। একই সঙ্গে শিশুরা ছোটবেলা থেকে অর্থের মূল্য, সঞ্চয় ও আর্থিক শৃঙ্খলা শেখে। আমার বিশ্বাস, এটি শুধু ব্যাংক উদ্যোগ নয়; এক সামাজিক পরিবর্তনের আন্দোলন, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অর্থনৈতিকভাবে সচেতন এবং আত্মনির্ভর করে গড়ে তুলবে।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ