Ajker Patrika

রয়টার্সের প্রতিবেদন /চাকরি হারানো মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাদের ডাকছে চীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৫: ১২
চাকরি হারানোর পর কার্যালয় থেকে নিজের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত
চাকরি হারানোর পর কার্যালয় থেকে নিজের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। ছবি: সংগৃহীত

এক গোপন চীনা প্রযুক্তি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত একটি নেটওয়ার্ক সম্প্রতি ছাঁটাই হওয়া মার্কিন সরকারি কর্মীদের নিয়োগের চেষ্টা করছে। এমনকি তারা চাকরির বিজ্ঞাপনও দিয়েছে। এই প্রচারণা উন্মোচনকারী এক গবেষকের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসিসের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ম্যাক্স লেসার বলেছেন, নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া কিছু কোম্পানি ‘সাবেক (মার্কিন) সরকারি কর্মচারী এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) গবেষকদের লক্ষ্য করে তৈরি হওয়া ভুয়া কনসালটিং ও হেডহান্টিং ফার্মের একটি বৃহত্তর নেটওয়ার্কের অংশ।’

চারটি কনসালটেন্সি এবং নিয়োগকারী সংস্থা, যারা ব্যাপকভাবে এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত, তাদের সম্পর্কে খুব কম তথ্যই জনসাধারণের কাছে সহজলভ্য। রয়টার্সের প্রতিবেদন এবং লেসারের গবেষণা অনুসারে, কিছু ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু একই রকম, একই সার্ভারে হোস্ট করা অথবা অন্যান্য ডিজিটাল সংযোগ রয়েছে।

কোম্পানি চারটির ওয়েবসাইট স্মিয়াও ইন্টেলিজেন্স নামক একটি ইন্টারনেট পরিষেবা কোম্পানির সঙ্গে একই আইপি অ্যাড্রেসে হোস্ট করা হয়েছে। রয়টার্সের অনুসন্ধানের সময় স্মিয়াও ইন্টেলিজেন্সের ওয়েবসাইটটি বন্ধ ছিল। স্মিয়াও ইন্টেলিজেন্স এবং এই চারটি কোম্পানির মধ্যকার সম্পর্ক নির্ণয় করতে পারেনি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই চার কোম্পানি এবং স্মিয়াও ইন্টেলিজেন্সকে খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা বহুবার ব্যর্থ হয়েছে। রয়টার্স এই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ফোন কল, ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এমনকি ফোন নম্বর বন্ধ হয়ে গেছে বলেও অনুমান করা হচ্ছে। এসব কোম্পানি যেসব ঠিকানা দিয়েছিল সেগুলোরও কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি এবং পরে নিয়োগ বিজ্ঞাপনগুলো লিংকডিন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।

ম্যাক্স বলেন, এই প্রচারণা চীনা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ‘সুপ্রতিষ্ঠিত’ কৌশল অনুসরণ করেই পরিচালিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই কার্যকলাপ যে কারণে তাৎপর্যপূর্ণ তা হলো—এই নেটওয়ার্কটি সাম্প্রতিক ব্যাপক ছাঁটাইয়ের শিকার প্রাক্তন ফেডারেল কর্মীদের আর্থিক দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে চাইছে।’

কোম্পানিগুলো চীনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত কিনা অথবা কোনো প্রাক্তন ফেডারেল কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে কিনা, তা রয়টার্স নিশ্চিত করতে পারেনি। এই বিষয়ে তিন গোয়েন্দা বিশ্লেষক রয়টার্সকে বলেন, এই নেটওয়ার্কটি একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ যে কীভাবে বিদেশি সংস্থাগুলো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিলিয়নিয়ার প্রযুক্তি টাইকুন ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির বরখাস্ত বা অবসর নিতে বাধ্য করা কর্মীদের কাছ থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে।

বিশ্লেষকেরা বলেছেন, একবার নেটওয়ার্কে যুক্ত হলে ফেডারেল কর্মীদের সরকারি কার্যক্রম সম্পর্কে ক্রমশ সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করতে বা অতিরিক্ত ব্যক্তিদের সুপারিশ করতে বলা হতে পারে, যাদের ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত অংশগ্রহণের জন্য লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে।

ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়েছেন, চীন এই প্রচারণায় জড়িত কোনো সংস্থার বিষয়ে অবগত নয় এবং বেইজিং ডেটা গোপনীয়তা ও নিরাপত্তাকে সম্মান করে।

হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র বলেছেন, চীন ক্রমাগত গুপ্তচরবৃত্তি ও জবরদস্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ‘মুক্ত ও উন্মুক্ত ব্যবস্থাকে’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। মুখপাত্র বলেন, ‘বর্তমান ও প্রাক্তন সরকারি কর্মচারী উভয়কেই এই সরকারগুলোর সৃষ্ট বিপদ এবং সরকারি তথ্য সুরক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে।’

সিএনএন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জানায় যে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা বিশ্বাস করে—রাশিয়া ও চীন অসন্তুষ্ট মার্কিন সরকারি কর্মচারীদের লক্ষ্যবস্তু করছে এবং তারা বহু বছর ধরেই এই কাজ করে আসছে।

রয়টার্স এ মাসের শুরুতে জানিয়েছিল, শীর্ষ নিরাপত্তা ছাড়পত্র থাকা কিছু মার্কিন সরকারি কর্মীকে স্ট্যান্ডার্ড এক্সিট ব্রিফিং দেওয়া হয়নি। এই ব্রিফিংয়ে বিদেশি শত্রুরা যোগাযোগ করা হলে কী করতে হবে তা অন্তর্ভুক্ত থাকে।

এই নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত একটি কোম্পানি রিভারমার্জ স্ট্র্যাটেজিক। তারা তাদের ওয়েবসাইটে নিজেদের ‘পেশাদার ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি পরামর্শক সংস্থা’ হিসেবে অভিহিত করে এবং ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তাদের লিংকডিন পেজে দুটি চাকরির তালিকা পোস্ট করেছিল, যা পরে মুছে ফেলা হয়। তাদের লিংকডিন পেজ এখন আর অ্যাকসেস করা যাচ্ছে না।

এক বিজ্ঞাপনে সরকারি সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা বহুজাতিক করপোরেশনে অভিজ্ঞ ‘ভূ-রাজনৈতিক পরামর্শক উপদেষ্টা’ চাওয়া হয়েছিল, সেখানে লিংকডিন পোস্টের একটি স্ক্রিনশট অনুসারে দেখা গেছে যে ২০০ টিরও বেশি আবেদন জমা পড়েছিল।

অন্যটিতে এমন একজন মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ চাওয়া হয়েছিল যিনি ‘ওয়াশিংটনের ট্যালেন্ট পুল সম্পর্কে গভীর ধারণা ব্যবহার করে নীতি বা পরামর্শের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রার্থীদের চিহ্নিত করতে’ এবং ‘স্থানীয় পেশাদার নেটওয়ার্ক, থিংক ট্যাংক এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে’ সক্ষম হবেন।

রিভারমার্জ স্ট্র্যাটেজিসের ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত মার্কিন ফোন নম্বরটি আর চালু নেই। ওয়েবসাইটের কন্টাক্ট পেজে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত তালিকাভুক্ত একটি আলাদা চীনা ফোন নম্বর হলো শেনজেন সি জুন সফটওয়্যার কোম্পানি লিমিটেডের তালিকাভুক্ত একই নম্বর।

রিভারমার্জ স্ট্র্যাটেজিক সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত তাদের ওয়েবসাইটে দুটি ঠিকানা দিয়েছিল, একটি সিঙ্গাপুরে এবং অন্যটি কলোরাডোতে। সিঙ্গাপুরের ঠিকানাটি ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট অব সিঙ্গাপুরের ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি হোস্টেল ভবনের দিকে নির্দেশ করে, কিন্তু রয়টার্সের অনুসন্ধানে সেখানে কোম্পানিটির কোনো কার্যালয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের অন্য ঠিকানাটি কলোরাডোর বোল্ডারে অবস্থিত নর্থওয়েস্ট রেজিস্টার্ড এজেন্ট নামক একটি ব্যবসায়িক পরিষেবা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।

লিংকডিনে রিভারমার্জের এক কর্মচারী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেছেন, চীনে একটি নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে পরিচিত এক ব্যক্তি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং রিভারমার্জ স্ট্র্যাটেজিসের জন্য চাকরির তালিকা প্রচার করতে সাহায্য করতে বলে।

কলোরাডোর সেই ব্যক্তি জানান, ‘এরিক’ নামে পরিচিত সেই ব্যক্তি এবং ‘উইল’ নামে আরেকজন যোগাযোগকারী প্রতি দুই বা তিন মাস পর পর তাঁকে ১-২ হাজার ডলার করে বেতন দেওয়া হবে—এমন চাকরির তালিকা পোস্ট করার জন্য দেন।

রয়টার্সের অনুসন্ধানের প্রতিক্রিয়ায়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর এক মুখপাত্র সতর্ক করে বলেছেন, চীনা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ‘বর্তমান, প্রাক্তন এবং সম্ভাব্য’ মার্কিন সরকারি কর্মচারীদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য থিংক ট্যাংক, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান এবং নিয়োগকারী সংস্থা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে পারে। চীনা সরকারের এজেন্টরা অতীতেও একই ধরনের কৌশল ব্যবহার করেছে।

২০২০ সালে জুন ওয়েই ইয়েও নামে সিঙ্গাপুরের এক নাগরিক ২০১৫ সাল থেকে একটি বিদেশি শক্তির এজেন্ট হিসেবে কাজ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন। কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেছিলেন, তিনি রাষ্ট্রীয় সংবেদনশীল তথ্যে অ্যাকসেস থাকা আমেরিকানদের চিহ্নিত ও মূল্যায়ন করার জন্য কাজ করতেন এবং তাদের নামবিহীন এশিয়ান ক্লায়েন্টদের জন্য প্রতিবেদন লেখার জন্য অর্থ দিতেন, যদিও কাজটি আসলে চীনা সরকারের জন্য ছিল তা প্রকাশ করেননি।

আদালতের নথি অনুসারে, চীনা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইয়েওকে কীভাবে লক্ষ্যবস্তু নিয়োগ করতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বিশেষ করে, এসব মার্কিন কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসা করা যে, তারা ‘কাজে অসন্তুষ্ট কিনা, আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন কিনা বা তাদের সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব আছে কি না।’

মার্কিন বিচার বিভাগের সাবেক কৌঁসুলি ডেভিড অ্যারন রয়টার্সকে বলেছেন, বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রায়ই চাকরির নিয়োগের নামে প্রতারণার আশ্রয় নেয় যাতে তাদের অজান্তেই সূত্র নিয়োগ করা যায়।

অ্যারন বলেন, ‘আমি মনে করি, চীনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করবে। কারণ, তারা দেখছে যে, সরকারি কর্মচারীদের একটি বড় অংশ হঠাৎ করে নতুন চাকরি খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, অনেক সাবেক কর্মচারী দেশপ্রেম দ্বারা অনুপ্রাণিত হলেও, অনেকেই প্রতারণামূলক কৌশলের শিকার হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আদালতে শিনজো আবের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাইলেন হত্যায় অভিযুক্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শিনজো আবে হত্যায় অভিযুক্ত ইয়ামাগামি। ছবি: সংগৃহীত
শিনজো আবে হত্যায় অভিযুক্ত ইয়ামাগামি। ছবি: সংগৃহীত

২০২২ সালের জুলাইয়ে নির্বাচনী প্রচারণার সময় জাপানের নারা শহরে স্থানীয়ভাবে তৈরি বন্দুক দিয়ে গুলি করে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে হত্যা করেন ৪৫ বছর বয়সী ইয়ামাগামি। কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং অত্যন্ত কম অপরাধ প্রবণতার দেশ জাপানে এই হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলে।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, নারা জেলা আদালতে ১৪ তম শুনানিতে হাজির হয়ে আবে পরিবারের প্রতি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন ইয়ামাগামি। আদালতে তিনি বলেন, ‘আমি আবে পরিবারের ভোগান্তির জন্য অনুতপ্ত। তিন বছর ছয় মাস ধরে তারা যে কষ্টে আছে, তা আমি চাইনি, কিন্তু তা হয়েছে—এ জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’

তিনি জানান, নিজের পরিবারেও একজনকে হারানোর অভিজ্ঞতা থাকায় এই কষ্টের মূল্য তিনি বোঝেন।

ইয়ামাগামি স্বীকার করেছেন, তিনি পরিকল্পিতভাবেই ওই হামলা চালিয়েছিলেন। এর আগে আদালতে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিই হত্যা করেছি। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

হত্যাকাণ্ডের পেছনে ইয়ামাগামির উদ্দেশ্য ছিল ‘ইউনিফিকেশন চার্চ’ নিয়ে ক্ষোভ। তিনি দাবি করেন, এই ধর্মীয় সংগঠনে তাঁর মা বিপুল অর্থ দান করায় তাঁদের পরিবার দেউলিয়া হয়ে পড়ে। ইয়ামাগামির ভাষায়, আবে ছিলেন এই চার্চের অন্যতম প্রভাবশালী সমর্থক, তাই তিনি তাঁকে লক্ষ্য বানান।

ইয়ামাগামির আইনজীবী আদালতকে জানান, ব্যবহৃত অস্ত্রটি হাতে তৈরি হওয়ায় জাপানের ‘ফায়ারআর্মস অ্যান্ড সোয়ার্ডস কন্ট্রোল অ্যাক্ট’-এর অধীনে সাধারণ আগ্নেয়াস্ত্র হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। তাই শাস্তি কমানোর অনুরোধ জানানো হয়।

ইউনিফিকেশন চার্চের বিরুদ্ধে জাপানে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থ সংগ্রহ এবং সদস্য নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে। আবে হত্যার পর সংগঠনটির কার্যক্রম তদন্তের আওতায় আসে। চলতি বছরের মার্চে আদালত চার্চ বিলুপ্তির আদেশ দেয়, যদিও সংগঠনটি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

আদালতের শুনানিতে শিনজো আবের স্ত্রী আকিয়ে আবেও উপস্থিত থাকেন। তবে ক্ষমা প্রার্থনার দিন তিনি আদালতে ছিলেন না। আগের দিন তিনি হত্যাকারীর মুখোমুখি হন এবং নীরবে শুনানি পর্যবেক্ষণ করেন।

মামলার রায় এখনো ঘোষণা হয়নি। তবে জাপানে এটি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিল্লি সফর: ১০০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য চান পুতিন

  • ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে
  • কুদানকুলাম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সহযোগিতার বিস্তারিত আলোচনা করেন পুতিন
  • রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভারতকে রুশ অস্ত্র কেনার জন্য চাপ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার প্রসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এএফপি
রাশিয়ার প্রসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এএফপি

ভারতের সঙ্গে ১০ হাজার কোটি ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ লক্ষ্যের কথা জানান তিনি। ভারতে দুই দিনের সফরে এসে গতকাল শুক্রবার মোদির সঙ্গে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও অস্ত্র চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেন পুতিন।

মোদির সঙ্গে হওয়া বৈঠকে ‘গঠনমূলক ও বন্ধুত্বসুলভ’ বলে প্রশংসা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। ২০২৪ সালে প্রায় ৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য হওয়ার কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভারতে গতকাল রাশিয়ার টিভি চ্যানেল আরটিকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন পুতিন। এ সময় বৈশ্বিক ইস্যুতে ভারত ও রাশিয়া—দুই দেশের সামঞ্জস্যতার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। এ ছাড়া জ্বালানি খাত, বিশেষ করে কুদানকুলাম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সহযোগিতার বিস্তারিত আলোচনা করেন তিনি। ভারতীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাশিয়ার কালুগা অঞ্চলে একটি নতুন ওষুধ কারখানা স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট।

দুই দিনের সফরে পুতিনকে বিমানবন্দরে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর পরই পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লিতে অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর পুতিন ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেতে এ মন্তব্য মন্তব্য করেন। এই সফরের সময় উভয় দেশ পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর চেষ্টা করবে।

ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতকে রাশিয়াকে এড়িয়ে চলতে চাপ দিচ্ছে, ঠিক তখন চার বছরে পুতিনের এই প্রথম ভারত সফরের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও যুদ্ধবিমানের বিক্রি বাড়ানো এবং জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বাইরেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রসারিত করা।

নয়াদিল্লি ও মস্কোর মধ্যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং বহু দশক ধরে রাশিয়া ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহের উৎস। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত সমুদ্রপথে আসা রাশিয়ার তেলের শীর্ষ ক্রেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন বলছে, ভারতের সস্তায় রুশ তেল কেনা মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নে সাহায্য করছে, তখন ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্ক এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ার ফলে এই মাসে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হতে চলেছে।

পুতিন ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এখনো তার নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। সেটিও তো জ্বালানি।’

ভারত বলেছে, ট্রাম্পের শুল্ক অন্যায্য ও অযৌক্তিক এবং মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যের দিকে ইঙ্গিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পর্যন্ত কোটি কোটি ডলারের রাশিয়ান জ্বালানি ও পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে।

পশ্চিমাদের চাপের কারণে ভারতীয় তেলের ক্রয় কমেছে কি না, জানতে চাইলে পুতিন বলেন, ‘এই বছরের প্রথম ৯ মাসে সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণে কিছুটা হ্রাস দেখা গেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘এটা কেবল একটি সামান্য সমন্বয়। সামগ্রিকভাবে, আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় আগের মতোই আছে।’ তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার তেলের বাণিজ্য ভারতে মসৃণভাবে চলছে।

ভারত ও রাশিয়ার ট্রাম্প এবং তাঁর শুল্কের সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করা উচিত—জানতে চাইলে পুতিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন কিছু উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা বিশ্বাস করেন, এ ধরনের শুল্কনীতি বাস্তবায়ন চূড়ান্তভাবে মার্কিন অর্থনীতির জন্য উপকারী। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সব নিয়ম লঙ্ঘন সংশোধন করা হবে।’

এর কয়েক ঘণ্টা আগে নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে বিমানবন্দরে পুতিনকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরের রানওয়েতে লাল গালিচার ওপর তাঁরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের জন্য একই গাড়িতে তাঁরা চলে যান।

পুতিনের এই সফরে রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী এবং একটি বড় রাশিয়ান ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লিতে উপস্থিত ছিল। গতকাল দুই নেতা শীর্ষ বৈঠক করেন, যেখানে একাধিক চুক্তি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

পুতিন ভারতকে আরও রুশ অস্ত্র কেনার জন্য চাপ দেবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও নয়াদিল্লিকে ওয়াশিংটনের চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। মস্কো ভারতে আরও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এসইউ-৫৭ স্টেল্থ যুদ্ধবিমান বিক্রি করার আশা করছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য চাপ দিতে গতকালের বৈঠকের মাত্র কয়েক দিন আগে পুতিন মস্কোয় মার্কিন এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করেন। সেই বৈঠকের পর উভয় পক্ষই অগ্রগতির প্রশংসা করে, যদিও কোনো যুগান্তকারী সমাধান হয়নি। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন কর্মকর্তারা ইউক্রেনের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারত যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার নিন্দা করা থেকে বিরত থেকেছে এবং আলাপ-আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে শান্তির আহ্বান জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিমানে শালীন পোশাকের পরামর্শ মার্কিন মন্ত্রীর—প্রতিবাদে ‘অশালীন’ যাত্রীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বিমানবন্দরে যাত্রীদের পোশাক নিয়ে নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি সম্প্রতি যাত্রীদের ‘সম্মানজনক ও ভালো’ পোশাক পরার পরামর্শ দেওয়ায় অনেকেই তা মেনে নেওয়ার বদলে প্রতিবাদ হিসেবে বিমানবন্দরে পায়জামা পরে হাজির হচ্ছেন।

শুক্রবার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন গত নভেম্বর থেকে ‘দ্য গোল্ডেন এজ অব ট্রাভেল স্টার্টস উইথ ইউ’ শিরোনামে একটি প্রচারণা শুরু করেছে। এই প্রচারণার লক্ষ্য বিমান ভ্রমণে শালীনতা, সৌজন্য এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। এক সংবাদ সম্মেলনে ডাফি বলেন, ‘জিনস আর পরিষ্কার শার্টই যথেষ্ট। কিন্তু আমরা যেন অন্তত স্লিপার আর পায়জামা পরে বিমানবন্দরে না আসি।’ তাঁর দাবি—ভালো পোশাক মানুষকে আচরণেও আরও ভদ্র করে।

তবে ডাফির এই বক্তব্য অনেকের কাছে সীমা অতিক্রম বলে মনে হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ করে টিকটক ও এক্সে বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ডেমোক্রেটিক অ্যাকটিভিস্ট জনি পালমাদেসা পায়জামা পরে এক ভিডিওতে বলেন, ‘এই প্রশাসনের অগ্রাধিকার একেবারেই সঠিক নয়।’ তিনি মত দেন, ট্রাম্প এবং ডাফির উচিত বিমান ভাড়া ও ভ্রমণ ব্যয় কমানো, যাতে মানুষ চাইলেই সুন্দর পোশাক কিনতে পারে।

আরেকজন টিকটকার পায়জামা পরে বিমানবন্দরে যাওয়ার ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ‘যেহেতু নিষেধ করা হয়েছে, এখন অবশ্যই পায়জামা পরেই যাব!’

বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক বাড়তে থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন দপ্তর এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে, নতুন এই প্রচারণার পক্ষে বিভাগটি ২০১৯ সালের পর যাত্রী অসদাচরণ বৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরেছে। তাদের দাবি—গত চার বছরে যাত্রীদের প্রায় ১৪ হাজার বিশৃঙ্খল আচরণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যা আগের তুলনায় ৪০০ শতাংশ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যোগ হতে পারে ৩০টির বেশি দেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) প্রধান ক্রিস্টি নোয়েম। এএফপি
মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) প্রধান ক্রিস্টি নোয়েম। এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র তার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশের সংখ্যা আরও বাড়াতে যাচ্ছে। নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে বর্তমান তালিকায় নতুন আরও কিছু দেশ যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) প্রধান ক্রিস্টি নোয়েম। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ফক্স নিউজের ‘দ্য ইনগ্রাহাম অ্যাঙ্গেল’–এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বিষয়টি তুলে ধরেন।

সাক্ষাৎকারে নোয়েমকে প্রশ্ন করা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশের সংখ্যা ৩২-এ উন্নীত করতে যাচ্ছে কিনা। জবাবে তিনি সুনির্দিষ্ট সংখ্যা না জানালেও বলেন, ‘সংখ্যা ৩০-এর বেশি হবে এবং প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন দেশ নিয়ে বিবেচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।’

চলতি বছরের জুনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন এবং আরও ৭টি দেশের ওপর ভ্রমণ সীমাবদ্ধতা আরোপ করেন। বিদেশি সন্ত্রাসী ও নিরাপত্তা ঝুঁকি ঠেকাতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করে প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞা শুধু অভিবাসনের জন্য আবেদনকারীদের নয়, পর্যটক, ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

ক্রিস্টি নোয়েম জানান, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের স্থিতিশীলতা ও পরিচয় যাচাই ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘যদি কোনো দেশের স্থিতিশীল সরকার না থাকে এবং তারা তাদের নাগরিকদের পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে কেন আমরা সেই দেশের মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেব?’

ইতিপূর্বে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন আরও ৩৬টি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বিবেচনা করছে।

গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নীতি আরও কঠোর হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। ঘটনাটির সঙ্গে অভিযুক্ত আফগান নাগরিক ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রবেশ করেছিলেন, যা নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

এদিকে অভিবাসন অধিকার সংগঠন ও আইনপ্রণেতারা এই সিদ্ধান্তকে কঠোর ও বৈষম্যমূলক বলে সমালোচনা করছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই নীতি অভিবাসন প্রক্রিয়াকে অকারণে স্থবির করছে এবং এমনকি কিছু ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব প্রদানের অনুষ্ঠানও বাতিল করা হচ্ছে।

অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে আগ্রহী অনেক আবেদনকারীর ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত