Ajker Patrika

আজ ‘মুক্তির দিন’, অভিষেক ভাষণে আরও যা বললেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ০৭
Thumbnail image
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশ সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাত ১১টায় ক্যাপিটল হিলে শপথ নেন তিনি। এরপর শুরু হয় তাঁর অভিষেক ভাষণ।

দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রাম্প ‘সাধারণ জ্ঞানের বিপ্লব’-এর ডাক দেন।

ভাষণে ২০১৭ সালে প্রথম মেয়াদের মতোই ‘আমেরিকানদের কম প্রাণহানির’ প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, ‘ন্যায়বিচারের মানদণ্ড পুনর্বিবেচনা করা হবে। বিচার বিভাগ এবং সরকারের নিষ্ঠুর, হিংসাত্মক এবং অন্যায্য অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অবসান ঘটবে।’

তিনি বলেন, ‘আমেরিকার স্বর্ণযুগের শুরু এখনই।’

ভাষণের শুরুতে ট্রাম্প উপস্থিত বেশ কয়েকজন সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘আজ থেকে, আমাদের দেশ সমৃদ্ধ হবে এবং সারা বিশ্বে আবার সম্মানিত হবে। আমরা প্রতিটি জাতির ঈর্ষার বিষয় হব এবং আমরা আর নিজেদের (দুর্বলতার) সুবিধা নিতে দেব না।’

অভিষেক ভাষণে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘দেশজুড়ে পরিবর্তনের জোয়ার বইছে।’

ট্রাম্প বলেন, ‘সারা বিশ্ব সূর্যালোকে ভেসে যাচ্ছে (সম্ভাবনা অর্থে) এবং আমেরিকার কাছে এই সম্ভাবনা আগের মতো কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে।’

ট্রাম্প তাঁর ভাষণে বাইডেন প্রশাসন এবং অভিবাসী সংকট মোকাবিলার কৌশল নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেছেন।

তিনি বলেন, দেশের (নেতিবাচক) চ্যালেঞ্জগুলোর বিনাশ ঘটবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘উগ্রপন্থী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থার’ সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।

তিনি বলেন, পূর্ববর্তী প্রশাসন ‘বিপজ্জনক অপরাধীদের’ আশ্রয় এবং সুরক্ষা দিয়েছে, যারা অবৈধভাবে আমাদের দেশে ঢুকেছে। সরকার ‘বিদেশি সীমান্ত রক্ষার জন্য সীমাহীন তহবিল’ দিয়েছে। কিন্তু আমেরিকার সীমান্ত রক্ষা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের এখন এমন একটি সরকার আছে, যারা ঘরের একটি সাধারণ সংকটও মোকাবিলা করতে পারে না।’ সম্প্রতি নর্থ ক্যারোলাইনার ঘূর্ণিঝড় এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলের দিকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগুন কিছু ধনী এবং সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে প্রভাবিত করেছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ এখন এখানে বসে আছেন। ক্যাপিটল রোটুন্ডায় দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তাদের আর কোনো ঘর নেই। এটা মজার ব্যাপার!’

ট্রাম্প বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি স্বাস্থ্যব্যবস্থা রয়েছে, যা দুর্যোগের সময় তেমন কোনো উপকারে আসে না। তিনি বলেন, অথচ বিশ্বের যেকোনো স্থানের তুলনায় এখানে স্বাস্থ্য খাতে বেশি অর্থ ব্যয় করা হয়।

তিনি আরও বলেন, দেশের এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা রয়েছে, যা ‘আমাদের শিশুদের নিজেদের লজ্জিত হতে শেখায়’। ট্রাম্প বলেন, ‘আজ থেকে শুরু করে এই সবকিছুই বদলে যাবে এবং এটি খুব দ্রুত বদলে যাবে।’

তিনি বলেন, তাঁকে ‘সম্পূর্ণ এবং সম্পূর্ণরূপে উল্টে দেওয়ার’ ম্যান্ডেট দেওয়া হয়েছে। তিনি আমেরিকান জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের ‘ভয়াবহ বিশ্বাসঘাতকতা’ করার অভিযোগ করেন। জনগণকে ‘তাঁদের বিশ্বাস, তাঁদের সম্পদ, তাঁদের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা’ ফিরিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্ত থেকে আমেরিকার পতনের সমাপ্তি।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, আজ, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ‘স্বাধীনতা দিবস’।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আমাদের দেশের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

আমেরিকাকে আবার মহান করে তোলার জন্যই ঈশ্বরের কৃপায় তাঁর ‘জীবন রক্ষা পেয়েছে’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণার সময় পেনসিলভানিয়ার বাটলারে তাঁকে হত্যাচেষ্টার প্রসঙ্গে এ কথা বলেন তিনি।

আমেরিকার বাণিজ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নাগরিকদের সমৃদ্ধ করার জন্য আমরা বিদেশি রাষ্ট্রগুলোতে শুল্ক আরোপ এবং কর আরোপ করব। এই উদ্দেশ্যে, আমরা সমস্ত শুল্ক, ট্যারিফ এবং রাজস্ব সংগ্রহের জন্য বহিঃরাজস্ব পরিষেবা প্রতিষ্ঠা করছি।’

ট্রাম্প বলেছেন, আজকের নির্বাহী আদেশ ‘কার্টেলগুলোকে (মাদক সিন্ডিকেট) বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘১৭৯৮ সালের এলিয়েন এনিমি আইন’ প্রয়োগ করে তিনি সরকারকে ‘মার্কিন মাটিতে বিদেশি গ্যাং’-এর তৎপরতা বন্ধ করার জন্য ‘ফেডারেল এবং রাজ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পূর্ণ এবং অপরিসীম ক্ষমতা’ ব্যবহার করার নির্দেশ দেবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত