Ajker Patrika

তাড়াহুড়ো করে কানাডা ছাড়লেন ট্রাম্প, নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৫, ০৯: ৪৯
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

কানাডায় চলমান জি৭ সম্মেলন শেষ না করেই দেশে ফিরছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার একটি প্রেস কনফারেন্সে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেদিন সম্মেলনে থাকছেন না। হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে কাতারি সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটির তথ্যমতে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অন্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলোচনায় জানিয়েছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার একটি পথ উন্মুক্ত হতে পারে। ট্রাম্পের সফর সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্তকে তিনি আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।

এদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদকে অবিলম্বে হোয়াইট হাউসের ‘সিচুয়েশন রুম’-এ হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘তেহরানের সব বাসিন্দার উচিত এখনই শহরটি ছেড়ে চলে যাওয়া।’ ট্রাম্পের এই পোস্টকে সরলভাবে দেখতে চাইছেন না অনেকেই।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, তেহরানবাসীদের প্রতি ট্রাম্পের এই আহ্বান পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক তীব্রতারই প্রতিফলন। তাঁর মতে, বিষয়টি এখন এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখান থেকে পরিস্থিতি যেকোনো দিকে মোড় নিতে পারে।

ফলে প্রশ্ন উঠছে—এই মুহূর্তে কি যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা রয়েছে? নাকি আরও ভয়াবহ অবনতি আসন্ন? পর্যবেক্ষকদের মতে, এ অবস্থায় ঘটনাপ্রবাহকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা না করে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক ভূমিকা নিয়ে এখন ওয়াশিংটনজুড়ে বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা বারবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পষ্টভাবে জানাচ্ছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে জড়াতে যাচ্ছে—এমন সব খবর ভুয়া। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান ‘আত্মরক্ষামূলক’।

অনেকের মতে, বিভ্রান্তিই কখনো কখনো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। আর এখন তিনি হয়তো সেটিই করার চেষ্টা করছেন। আল জাজিরার সাংবাদিক পেটি কুলহেইন বলেন, তিনি যদি সত্যিই জি৭ সম্মেলনে অন্য নেতাদের মতো করে যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালাতে চান, তাহলে তাঁর যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল’-এর জরুরি বৈঠক আহ্বান করার প্রয়োজন নেই। অত গুরুতর কিছু না হলে সাধারণত ‘সিচুয়েশন রুম’ সক্রিয় করা হয় না।

তবে বিভিন্ন দিক থেকে আসা ইঙ্গিত বলছে, পরিস্থিতি সহজ নয়। ট্রাম্পের হঠাৎ কানাডা থেকে দেশে ফেরার ঘোষণা হয়তো যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার ইঙ্গিত করছে, আবার এটি যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধে জড়িত হওয়ার ইঙ্গিতও হতে পারে। বিশেষ করে তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা দলের বৈঠক এবং সে-সংক্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে পড়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

এর পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তেহরানবাসীদের দ্রুত শহর ছাড়ার পরামর্শ দেওয়াও উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। তাঁর এমন আহ্বানকে নিছক ‘সতর্কবার্তা’ হিসেবে দেখছেন না বিশ্লেষকেরা।

পেটি বলেন, ওয়াশিংটন ডিসিতে দিন যত গড়াচ্ছে, উদ্বেগ তত বাড়ছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সমর্থকেরাও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছেন—এই লড়াই ‘আমেরিকার নয়’। তাই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একদিকে হস্তক্ষেপ না করার আশ্বাস, অন্যদিকে সামরিক প্রস্তুতির ইঙ্গিত—এই দুই বিপরীত অবস্থানে বিভ্রান্তি বাড়ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে না আসা পর্যন্ত আসলে কিছুই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোবাইল হাতে ধোঁয়ার ভেতর থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসেন রমেশ, ভিডিও প্রকাশ

ইরানের জন্য ইসরায়েলকে বিসর্জন দেবে রাশিয়া?

রাস্তায় নারীকে চড় মেরে বাইকচালক বললেন, ‘নিজের দেশে ফিরে যাও!’

নেতানিয়াহু বাংকারে লুকিয়ে, ট্রাম্পের একটি ফোনকলই যথেষ্ট: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের ভান্ডারে কত ক্ষেপণাস্ত্র আছে—কত দিন যুদ্ধ চলবে এতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত