Ajker Patrika

মোবাইল পরিষেবা ব্যবসায় নামছেন ট্রাম্প, আলোচনায় স্বার্থের সংঘাত

অনলাইন ডেস্ক
এই নতুন ওয়্যারলেস পরিষেবা ও হ্যান্ডসেট ট্রাম্প পরিবারের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের আরেকটি প্রয়াস। ছবি: সংগৃহীত
এই নতুন ওয়্যারলেস পরিষেবা ও হ্যান্ডসেট ট্রাম্প পরিবারের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের আরেকটি প্রয়াস। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প অর্গানাইজেশন সোমবার ‘ট্রাম্প মোবাইল’ নামে একটি নতুন মোবাইল পরিষেবা এবং ৪৯৯ ডলারের একটি স্মার্টফোন বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই উদ্যোগ মূলধারার টেলিকম পরিষেবাগুলোর একটি বিকল্প হিসেবে, বিশেষ করে রক্ষণশীল ভোক্তাদের লক্ষ্য করে চালু করা হয়েছে।

নতুন এই মোবাইল পরিষেবায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কল সেন্টার এবং দেশে তৈরি স্মার্টফোন ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন। রিয়েল এস্টেট ব্যবসা, বিলাসবহুল হোটেল ও গলফ রিসোর্টের জন্য পরিচিত ট্রাম্প পরিবার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিজিটাল মিডিয়া ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো নতুন খাতেও প্রবেশ করেছে।

ট্রাম্প অর্গানাইজেশন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে ট্রাম্প তাঁর ব্যবসায়িক নিয়ন্ত্রণ সন্তানের কাছে হস্তান্তর করবেন, যা তাঁর প্রথম মেয়াদের প্রেসিডেন্ট থাকার সময়কার ব্যবস্থার পুনরাবৃত্তি। তবে, স্বার্থসংঘাত নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক বার্কলেসের মার্কিন মিডিয়া, কেব্‌ল ও টেলিকম গবেষণা বিভাগ জানিয়েছে, ‘একজন বর্তমান প্রেসিডেন্টের নাম বাণিজ্যিক ও নিয়ন্ত্রিত কোনো পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হওয়া নজিরবিহীন। এখনো কোনো টেলিকম কোম্পানি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের সঙ্গে এমভিএনও (MVNO) চুক্তির ঘোষণা দেয়নি। ফলে পরিষেবাটি কোন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে, তা স্পষ্ট নয়।

টেলিকম খাতটি অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত, যেখানে নীতিনির্ধারকদের প্রভাব অনেক বেশি। বর্তমান এফসিসি চেয়ারম্যান ব্রেন্ডন কার প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং ‘প্রজেক্ট ২০২৫ ’-এর সহলেখক। এই প্রেক্ষাপটে, ভেরিজন এবং এটিঅ্যান্ডটির মতো বড় টেলিকম কোম্পানিগুলোর ওপর রাজনৈতিক চাপ ও নজরদারি বাড়তে পারে। বিশেষ করে তারা যখন নতুন চুক্তি বা নিয়ন্ত্রক অনুমোদনের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

এ ছাড়া এসব কোম্পানির পূর্ববর্তী চুক্তিতে ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ (এমএফএন) শর্ত থাকলে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা অন্য কোম্পানিরাও দাবি করতে পারে।

ডি এ ডেভিডসন অ্যান্ড কোম্পানির প্রযুক্তি গবেষণাপ্রধান গিল লুরিয়া বলেন, ‘এই নতুন ওয়্যারলেস পরিষেবা ও হ্যান্ডসেট ট্রাম্প পরিবারের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের আরেকটি প্রয়াস। আগে যেমন ট্রুথ সোশ্যাল, ডিজিটাল ও ক্রিপ্টো উদ্যোগের ক্ষেত্রে দেখা গেছে।’

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক লরেন্স লেসিগ বলেন, ‘যাঁরা সতর্কভাবে দেখছেন, তাঁদের কাছে এটি নতুন কিছু নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর পদকে পারিবারিক সম্পদ বৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ ঘটনা হয়তো আরও অনেককে তা বুঝতে সাহায্য করবে।’

পিপি ফোরসাইটের টিএমটি বিশ্লেষক পাওলো পেস্কাতোরে বলেন, ‘এই উদ্যোগে অনেক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, বিশেষ করে টেলিকম কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক কতটা গভীর—তা স্পষ্ট নয়। আগে যেমনটা দেখা গেছে, এবারও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। সবাই নজর রাখবে ভবিষ্যৎ অগ্রগতির দিকে।’

জ্যাকস ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্রায়ান মুলবারি বলেন, ‘এই ফোন অ্যাপলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ এটি অ্যাপল বা স্যামসাংয়ের তুলনায় অনেক সস্তা। স্মার্টফোনের মূল কাজগুলো এখন খুব বেশি উন্নত হচ্ছে না। তাই কম দামে একই কাজের সুবিধা পেলে তার বাজার থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের নাম যুক্ত থাকায় অবশ্যই বাড়তি মনোযোগ পাবে। তবে বাজার প্রতিযোগিতার জন্য ভালো, যা ব্যবহারকারীদেরও উপকারে আসবে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোবাইল হাতে ধোঁয়ার ভেতর থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসেন রমেশ, ভিডিও প্রকাশ

ইরানের জন্য ইসরায়েলকে বিসর্জন দেবে রাশিয়া?

রাস্তায় নারীকে চড় মেরে বাইকচালক বললেন, ‘নিজের দেশে ফিরে যাও!’

নেতানিয়াহু বাংকারে লুকিয়ে, ট্রাম্পের একটি ফোনকলই যথেষ্ট: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইরানের ভান্ডারে কত ক্ষেপণাস্ত্র আছে—কত দিন যুদ্ধ চলবে এতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত