Ajker Patrika

ফিলিস্তিন নিয়ে প্রবন্ধ লেখায় পিএইচডি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করল এমআইটি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪: ৩৯
এমআইটির বৈদ্যুতিক প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পিএইচডি করছেন আয়াঙ্গার। ছবি: সংগৃহীত ও পরিমার্জিত
এমআইটির বৈদ্যুতিক প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পিএইচডি করছেন আয়াঙ্গার। ছবি: সংগৃহীত ও পরিমার্জিত

ফিলিস্তিনের পক্ষে প্রবন্ধ লিখে বহিষ্কার হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক পিএইচডি শিক্ষার্থী। এমনকি তাঁর পাঁচ বছরের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ ফেলোশিপও বাতিল করা হয়েছে।

ফিলিস্তিন নিয়ে প্রবন্ধ লিখে সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন—এমন অভিযোগে প্রহ্লাদ আয়াঙ্গার নামে ওই শিক্ষার্থীর এমআইটিতে প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমআইটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আয়াঙ্গারের লেখাটিতে ক্যাম্পাসে সহিংস বিক্ষোভের আহ্বান জানানো হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের লেখা নিয়ে প্রকাশিত হয় রিটেন রেভল্যুশন নামে একটি ম্যাগাজিন। ওই ম্যাগাজিনে ফিলিস্তিন আন্দোলনের ওপর নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়। সেখানে আয়াঙ্গারের ‘অন প্যাসিফিজম’ শীর্ষ প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এখন ম্যাগাজিনটিকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

দ্য কমিউন ম্যাগাজিনের বরাতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, আয়াঙ্গারের লেখাটি সরাসরি সহিংস প্রতিরোধের আহ্বান জানায়নি। প্রবন্ধে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনের জন্য প্যাসিফিস্ট অর্থাৎ শান্তি, সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান সবচেয়ে ভালো উপায় না-ও হতে পারে।’

প্রবন্ধটিতে পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব ফিলিস্তিনের (পিএফএলপি) একটি লোগো ছিল। এই সংগঠন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট অনুসারে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’। তবে আয়াঙ্গারের দাবি, প্রবন্ধে ব্যবহৃত ছবিগুলো তাঁর দেওয়া নয়। অথচ এসব ছবির কারণে তাঁকে ‘সন্ত্রাসের অভিযোগে’ অভিযুক্ত করা হচ্ছে।

আয়াঙ্গারের বরাতে তাঁর আইনজীবী এরিক লি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানান, আয়াঙ্গারকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ সমর্থনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে প্রবন্ধটির সংস্করণে পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশনের পোস্টারের ছবি এবং সহিংস চিত্রের কারণে।

ডিন অব স্টুডেন্ট লাইফ ডেভিড ওয়ারেন র‍্যান্ডাল ম্যাগাজিনের সম্পাদকদের কাছে ই-মেইলে লিখেছেন, প্রবন্ধটিতে এমন ভাষা রয়েছে, যা ক্যাম্পাসে সহিংস বা ধ্বংসাত্মক প্রতিবাদের জন্য আহ্বানস্বরূপ।

আয়াঙ্গার এমআইটির সিদ্ধান্তকে অস্বাভাবিক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এমআইটির এই সিদ্ধান্ত বুঝিয়ে দেয়, মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কতটা অভাব রয়েছে।

আয়াঙ্গার এক বিবৃতির মাধ্যমে বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এমআইটির সবার অবস্থান নেওয়া উচিত। একটি প্রবন্ধের কারণে আমাকে বহিষ্কার করা, রিটেন রেভল্যুশনকে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অধিকারের ওপর নজিরবিহীন আঘাত।

বোস্টনের রেডিও চ্যানেল ডব্লিউবিইউআরকে আয়াঙ্গার বলেন, ম্যাগাজিনটির লক্ষ্য ছিল আমাদের কথা প্রকাশ করা। আমরা কী করছি, কেন আমরা এটি করছি এবং ক্যাম্পাসে কী ঘটছে, সেটি তুলে ধরা।

এমআইটির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে এমআইটি কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট অ্যাপার্টাইড। তারা জানায়, প্রহ্লাদ আয়াঙ্গার চ্যান্সেলরের কাছে আবেদন করছেন, যাতে তাঁর বিরুদ্ধে অন্যায় নিষেধাজ্ঞাগুলো কমানো হয়।

এমআইটি প্রশাসন যাতে শিক্ষার্থীদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করা বন্ধ করে, এ জন্য তাঁদের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য প্রচার শুরু করেছে সংগঠনটি। তাঁরা এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা সব সংগঠন এবং সচেতন প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানাই, তারা যেন এমআইটির দমননীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।

দ্য বোস্টন গ্লোবের সঙ্গে এমআইটি গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট সোফি কোপ্পিয়েটারস টি ওয়ালান্ট বলেন, ‘এমআইটি শিক্ষার্থীদের জীবিকা ও ক্যারিয়ারকে হুমকির মুখে ফেলছে। কারণ শিক্ষার্থীরা যা বলছে এবং যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, তার সঙ্গে এমআইটি একমত নয়, এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’

আয়াঙ্গার এমআইটির বিদ্যুৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পিএইচডি করছেন। গত বছরও ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

বগুড়ায় ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত