Ajker Patrika

ইউসিএলএ ক্যাম্পাসে তাঁবু ও ব্যারিকেড ভেঙে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ মে ২০২৪, ২০: ৪৩
Thumbnail image

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় (ইউসিএলএ) স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের তাঁবু ভেঙে ফেলেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। দাঙ্গা দমনের সাজে সজ্জিত হেলমেটধারী শতাধিক পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্লাজায় প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীদের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে এবং গ্রেপ্তার করে কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে।

পুলিশ ক্যাম্পের বাইরে জড়ো হওয়া জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে মাইকে বলতে থাকে, ‘ওদের যেতে দাও!’ এ সময় ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টারকে টহল দিতে দেখা গেছে।

পুলিশ এ সময় বিক্ষোভকারীদের তাঁবুতে প্রবেশের সিঁড়ি অবরুদ্ধ করে রাখে। স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য সেখানে থাকা হলুদ জ্যাকেট পরা শিক্ষার্থীরা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, তাঁদের সেখানে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

এই ক্যাম্পাসেই ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের আক্রমণ করেছিল ইসরায়েলপন্থী সমর্থকেরা। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ হচ্ছে, তাতে সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনাই ছিল গত মঙ্গলবার রাতে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ এবং মুখোশধারী ইসরায়েলপন্থী সমর্থকদের হামলা। লাইভ টিভি ভিডিওতে সে সময় অন্তত ছয়জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার হতে দেখা গেছে। মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে বিক্ষোভকারীদের হাত পিঠের পেছনে নিয়ে বাঁধা হয়েছিল।

শত শত ইসরায়েলপন্থী আক্রমণকারী ইউসিএলএতে বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনিপন্থী শিক্ষার্থীদের একটি ক্যাম্পে হামলা চালায়। আক্রমণকারীরা অস্থায়ী ব্যারিকেড ভেদ করার চেষ্টা করার সময় ক্যাম্পে আতশবাজি ও ককটেল ছোড়ে। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকের মুখোশ পরা ছিল।

সংঘর্ষের সময় পুলিশের ছোড়া স্টান গ্রেনেড থেকে কয়েক ডজন বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ঘটনাস্থলের লাইভ ভিডিওতে দেখা গেছে, গতকাল বুধবার সূর্যাস্তের সময় পুলিশ ইউসিএলএ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীদের তাঁবুগুলোর কাছাকাছি অবস্থান নেয়।

টেলিভিশনের ভিডিওতে আরও দেখা গেছে, লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। ধাতব ব্যারিকেড ভেঙে ফেলা হচ্ছে। অন্ধকারে একে অপরের দিকে আতশবাজি বা কিছু বিস্ফোরক বস্তু নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। পিপার স্প্রে ব্যবহার করেছে হামলাকারীরা। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে কেউই গুরুতর আহত নন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় টেলিভিশন স্টেশন কেএবিসি-টিভি দাবি করেছে, ৩০০ থেকে ৫০০ বিক্ষোভকারীকে পুলিশ তাদের তাঁবুর ভেতরে ঢুকতে বাধ্য করেছিল। এ সময় ব্যারিকেডের বাইরে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে জড়ো হয়েছিল আরও প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী।

পুলিশ সেখানে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিক্ষোভকারীদের তাঁবুতে প্রবেশ শুরু করে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলা তারা। তাঁবু ছেড়ে যেতে যাঁরা অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ইউসিএলএ কর্তৃপক্ষ এই বিক্ষোভ কর্মসূচিকে বেআইনি ঘোষণা করার এক দিন পর কিছু বিক্ষোভকারীকে শক্ত টুপি, চশমা ও শ্বাসযন্ত্রের মুখোশ পরতে দেখা গেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইসরায়েলপন্থী হামলাকারীরা কোনো মোটিফ থেকে এটি করেছে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। অনেকের বয়স দেখে শিক্ষার্থী বলে মনে হচ্ছে না। তারা বহিরাগত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি বন্ধ করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরায়েলপন্থী সমর্থকদের আক্রমণের পর গতকাল শ্রেণি কার্যক্রম বাতিল করেছিল ইউসিএলএ কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত