Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে উত্থান ঘটছে ২০০০ বছর আগের ভাষার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ১২: ১৫
গুয়াতেমালার আদিবাসী জনগোষ্ঠী। ছবি: সংগৃহীত
গুয়াতেমালার আদিবাসী জনগোষ্ঠী। ছবি: সংগৃহীত

মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের প্রাচীন ভাষাগুলো নিয়ে যেন নতুন নতুন ভূখণ্ডে পা রাখছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের ফলে মায়া সভ্যতার সহস্রাব্দ প্রাচীন ভাষাগুলো নতুন করে প্রসার লাভ করছে। লাতিন আমেরিকান অভিবাসী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে।

লাতিনদের প্রাচীন ভাষা ও অভিবাসন নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, লাতিন আদিবাসীরা কীভাবে অভিবাসনের সঙ্গে নিয়ে আসছে ভাষা ও সংস্কৃতি। সেই ভাষার শব্দগুলো আবার ঢুকে পড়ছে ইংরেজি ভাষায়। এই আত্মীকরণ ঘটছে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই।

গুয়াতেমালার সান হুয়ান আতিতান গ্রামের বাসিন্দা আরোলদো বাবার মৃত্যুর তিন দিন পরও শোকে আচ্ছন্ন ছিলেন। পৈতৃক ভুট্টাখেত পরিচর্যা করার মানসিক শক্তিও ছিল না তাঁর। রাতের খাবারের সময় চুলায় কাঠের আগুনের দিকে তাকিয়ে আকাশ-পাতাল ভাবছিলেন আরোলদো। হঠাৎ করেই উপলব্ধী হলো, এবার তাজা বাতাস নেওয়ার সময় হয়েছে। পাশেই নীরবে খাবার খাচ্ছিলেন মা। মায়ের দিকে ফিরে মাম ভাষায় (গ্রামে প্রচলিত মায়া ভাষা) বললেন, ‘নান, ওয়াজি চিক্স তুজ কিতানুম মেশ’ অর্থাৎ, ‘মা, আমি শ্বেতাঙ্গদের দেশে যেতে চাই।’ তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা বুঝিয়েছিলেন।

মাম ভাষায় তাঁর মা উত্তর দিলেন, তিনি সব ব্যবস্থা করে দেবেন। তবে প্রথমে শোকের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এক বছর পর, ক্যালিফোর্নিয়ায় চাচাতো ভাইদের কাছে আরোলদো যাত্রা শুরু করেন। সিয়েরা মাদ্রে পর্বতমালার ঢাল বেয়ে নেমে, মেক্সিকো ও অ্যারিজোনার মরুভূমি পাড়ি দিয়ে সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ায় পৌঁছাতে তাঁর চার মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল।

আরোলদো স্প্যানিশও বলতে পারেন। তিনি বলেন, ‘ (বাবার) মৃত্যু আমাকে জীবনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। আমাকে বুঝতে শিখিয়েছিল, এবার একাই জীবনকে মোকাবিলা করার সময় হয়েছে।’ বে এরিয়ায় ডিসেম্বরের এক শীতল রাতে একটি ছবি, ঐতিহ্যবাহী টুপি এবং হাতে বোনা ম্যাজেন্টা শার্টের নিচে কালো ক্যাপিক্সায় পরে যেন তাঁকে পাহারা দিচ্ছিলেন বাবা।

আরোলদো সঙ্গে নিয়ে আসা অল্প কয়েকটি জিনিসের মধ্যে একটি ছিল তাঁর ভাষা, মাম। এই ভাষার শিকড় হাজার হাজার বছর আগে মধ্য আমেরিকায় রাজত্ব করা মায়া সভ্যতার গভীরে প্রোথিত। আজ মেক্সিকো, হন্ডুরাস, এল সালভাদর ও গুয়াতেমালার আদিবাসীরা অভিবাসনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের ভাষা ছড়িয়ে দেওয়ার কারণে মাম ও অন্যান্য মায়া ভাষার প্রসার বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মূলত ইউকাতান উপদ্বীপে কথিত মায়া ভাষাগুলো যুক্তরাষ্ট্রে এতটাই প্রচলিত হয়েছে যে, কিচে (বা কুইচে) এবং মাম এখন মার্কিন অভিবাসন আদালতগুলোতে ব্যবহৃত শীর্ষস্থানীয় ভাষাগুলোর মধ্যে স্থান করে নিয়েছে।

সান ফ্রান্সিসকো মেট্রোপলিটন এলাকা লাতিন আমেরিকান অভিবাসীদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য। মার্কিন আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বে এরিয়ার ৭০ লাখেরও বেশি বাসিন্দার মধ্যে চারজনের একজন লাতিন। তাদের অধিকাংশই মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকা থেকে এসেছে।

মার্কিন সরকার তাদের সবাইকে দেশে প্রবেশের পর ‘হিস্পানিক’ হিসেবে গণ্য করে, যা স্প্যানিশভাষী দেশগুলোর মানুষকে বোঝায়। যদিও আরোলদোর মতো কিছু অভিবাসীর জন্য স্প্যানিশ মাতৃভাষা নয়, বরং এটি তারা তাদের গ্রামের বাইরের মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য ব্যবহার করে। মায়া অভিবাসী ও বিশেষজ্ঞের মতে, অন্যরা স্প্যানিশ মোটেও বলতে পারে না, তারা শুধু আদিবাসী ভাষাতেই কথা বলে।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের মাম ভাষা বিশেষজ্ঞ টেস্কা স্কট বলেন, ‘অনেক মামভাষী যুক্তরাষ্ট্রে আসে এবং স্প্যানিশভাষী ও আদিবাসী সংস্কৃতির বাইরের মানুষের তুলনায় তাদের ভিন্ন চাহিদা, অভিজ্ঞতা এবং ইতিহাস রয়েছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘যদি আপনি গুয়াতেমালার প্রত্যেককে হিস্পানিক বলেন, তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন যে সেই গোষ্ঠীর সবাই সাবলীলভাবে স্প্যানিশ বলতে পারে, কিন্তু আসলে তারা তা পারে না।’

ক্যালিফোর্নিয়ায়, ২০২৪ সালে পাস হওয়া একটি নতুন আইন অনুযায়ী, রাজ্য সংস্থাগুলোকে ল্যাটিন আমেরিকান অভিবাসীদের পছন্দের ভাষা, যার মধ্যে কিচে এবং মামের মতো আদিবাসী ভাষাগুলোও অন্তর্ভুক্ত, সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে, যাতে তাদের চাহিদা আরও ভালোভাবে বোঝা যায় এবং পূরণ করা যায়।

মায়া আদিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন খোঁজার কারণ হিসেবে স্কট বলেন, গুয়াতেমালায় অনেক মায়া সংস্কৃতির আদিবাসীরা প্রায়শই ভিন্ন সামাজিক শ্রেণির মানুষের দ্বারা তীব্র বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হয়। তাদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার প্রধান কারণ এটিই।

যুক্তরাষ্ট্রে মায়া সম্প্রদায়ের বৃদ্ধি তাদের প্রাচীন ভাষাগুলোকে নতুন প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের যোগ। যদিও প্রাচীন মায়া শহরগুলোর ধ্বংসাবশেষ এবং খোদাই করা হায়ারোগ্লিফগুলো একটি দীর্ঘস্থায়ী সভ্যতার নিদর্শন বলে মনে হতে পারে। অনেক মায়া সম্প্রদায় ১৬০০ শতাব্দীর স্প্যানিশ উপনিবেশন থেকে থেকে বেঁচে গিয়েছিল। তারা তাদের সংস্কৃতি ও ভাষা সংরক্ষণ করেছিল। বে এরিয়ার মতো জায়গাগুলোতে এখন রেডিওতে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে এমনকি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলোতেও মায়া ভাষায় পড়ানো হয়।

১৬০০ শতাব্দীতে স্প্যানিশরা যখন ইউকাতান উপদ্বীপের উপকূলে অবতরণ করেছিল, তখন তারা প্রায় এক ডজন মায়া নগররাজ্য খুঁজে পেয়েছিল। এগুলোর একটি সাধারণ অতীত ছিল, তবে তাদের মধ্যে গভীর বিভেদও ছিল। কিছু মায়া শাসক স্প্যানিশদের আগমনকে পুরোনো উত্তেজনা নিষ্পত্তির সুযোগ হিসেবে দেখেছিল। তারা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী শহরগুলোকে দমন করার জন্য ইউরোপীয়দের সাথে মৈত্রী করেছিল। এই নতুন জোট বজায় রাখতে ইচ্ছুক স্প্যানিশদের জন্য এই অঞ্চলে কথিত ভাষাগুলো শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একবার উপদ্বীপ জয় করা হলে স্প্যানিশরা স্থানীয় ভাষাগুলো ধর্ম প্রচার, প্রশাসন এবং একটি নতুন সমাজ তৈরি করতে ব্যবহার করেছিল।

স্প্যানিশ ধর্মপ্রচারক ফ্রে বার্তোলোমে দে লাস কাসাস তাঁর আমেরিকা ভ্রমণে একটি ব্যাপক স্থানীয় রীতির বর্ণনা দিয়েছেন: মায়া সংস্কৃতিতে আচার-অনুষ্ঠানে তামাক জাত বস্তু দিয়ে ধূমপান এবং পান করা হতো। দে লাস কাসাসের ভাষায়, সেই শুকনো ভেষজগুলো একটি বিশেষ পাতায় মোড়ানো থাকতো। ধূমপানের কাজটি প্রাচীন মায়া ভাষায় বলা হতো ‘সিয়ার’। সেটিই পরে স্প্যানিশ ‘সিগারো’ এবং তারও অনেক পরে, ইংরেজিতে ‘সিগার’ নামে ছড়িয়ে পড়ে এবং তামাক পাতার একটি রোলকে বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহৃত হতে থাকে।

অন্য একটি মায়া শব্দ যা অন্যান্য ভাষায় প্রবেশ করেছে তা হলো ‘কাকাও’। এই বস্তু চকোলেট তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। দে লাস কাসাস নিজেই ১৫৪৪ সালে এটি ইউরোপে নিয়ে এসেছিলেন।

বর্তমানে, ৩০ টিরও বেশি মায়া ভাষা টিকে আছে। বিশ্বজুড়ে অন্তত ৬০ লাখ মানুষ এই ভাষায় কথা বলে। যদিও চিকোমুসেলতেক এবং চোলতি-এর মতো কিছু ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে বা বিলুপ্তির পথে। তবে কিচে, ইউকাতেক এবং কিউকচি-এর মতো অন্যগুলোর প্রতিটিতে কথা বলে প্রায় ১০ লাখ মানুষ।

এগুলো সবই একই ভাষা, প্রোটো-মায়ান থেকে এসেছে। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ সালের আগে এই ভাষা প্রচলিত ছিল। তবে এগুলো একে অপরের থেকে এতটাই আলাদা যে, প্রায় ৫ লাখ জনসংখ্যার মাম ভাষার বক্তারা কিচে ভাষা বুঝতে পারে না। আবার ইউকাতেকানরা মাম ভাষা বুঝতে পারে না। আরোলদো ইউকাতেক সম্পর্কে বলেন, ‘এটি আমার কাছে জার্মান ভাষার মতো লাগে।’

প্রায় ২,০০০ বছর ধরে, মায়া ভাষাগুলোর নিজস্ব লিখন পদ্ধতি ছিল। এগুলো ক্ল্যাসিক মায়া নামে পরিচিত। লেখন পদ্ধতি ছিল হায়ারোগ্লিফ। এটি কেবল সামাজিক পিরামিডের শীর্ষে থাকা ব্যক্তিরাই ব্যবহার করত। অভিজাতরাই শুধু এসব ভাষার লেখ্য ও তথাকথিত প্রমিত রূপ ব্যবহার করত। বাকি জনগণ তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলত। এগুলো ধীরে ধীরে লাতিনের সাথে মিশে গেছে।

স্প্যানিশ ধর্মপ্রচারকেরা হায়ারোগ্লিফগুলোকে ‘পৌত্তলিক’ বলে মনে করতেন। এই ধারণা থেকে তারা পদ্ধতিগতভাবে সেগুলো মুছে ফেলতেন। মায়া অভিজাতদের পুত্র ও কন্যাদের হায়ারোগ্লিফিক লেখা পরিত্যাগ করতে এবং লাতিন বর্ণমালা ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়েছিল। সেই সময়ে লেখা বেশিরভাগ বই, যা কোডেক্স নামে পরিচিত, ধ্বংস করা হয়েছিল। কিন্তু মৌখিক ভাষাগুলো টিকে ছিল। সেগুলো পরবর্তীতে লাতিন বর্ণমালায় টিকে আছে।

পশ্চিমা পণ্ডিতরা উনিশ শতাব্দীতে মায়া হায়ারোগ্লিফগুলো অধ্যয়ন শুরু করেন। আমেরিকান এবং রুশ ভাষাবিদরা বিশ শতাব্দী জুড়ে সেগুলো পাঠোদ্ধার করতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছিলেন। ২০০০-এর দশকে যখন মায়া পণ্ডিত এবং ভাষাভাষিদের এই আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল তখন দারুণ সাফল্য অর্জিত হয়েছিল। তখনই গবেষকেরা বুঝতে পেরেছিলেন, হায়ারোগ্লিফগুলো কেবল জটিল ধারণাগুলোকেই নয়, শব্দ গঠনকারী অক্ষরগুলোকেও প্রতিনিধিত্ব করে।

যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানো প্রথম মায়া আদিবাসীরা ব্রাসেরো প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে এসেছিলেন। বহু আমেরিকান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গেলে শ্রমিক সংকট নিরসনে মেক্সিকান শ্রমিকদের নেওয়া শুরু হয়। তবে সবচেয়ে বেশি মানুষ আমেরিকায় যায় আরও কয়েক দশক পরে, ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে এবং ২০০০ এর দশকে।

অভিবাসন এখন বিশেষ করে গুয়াতেমালাকে ভুট্টা ও শিম জাতীয় শস্য-ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে রেমিটেন্স-নির্ভর অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসরায়েলের আপত্তিতে গাজার যৌথবাহিনী থেকে বাদ পড়ছে তুরস্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ১০ অক্টোবর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত ভবনগুলোর পাশে শিশু কোলে এক নারী অন্যান্য ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন। ছবি: এএফপি
গত ১০ অক্টোবর দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত ভবনগুলোর পাশে শিশু কোলে এক নারী অন্যান্য ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছেন। ছবি: এএফপি

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে স্থিতিশীলতা আনতে ৫ হাজার সদস্যের একটি বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে তুরস্কের আগ্রহ থাকলেও আপত্তি জানিয়েছে ইসরায়েল। তারা বলছে, এ বাহিনীতে তুর্কি সেনাদের অংশগ্রহণ চায় না ইসরায়েল।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এই বহুজাতিক বাহিনীর জাতীয়তা নিয়ে ইসরায়েলের স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা একটি আবশ্যকীয় শর্ত। গাজায় ব্যাপক পুনর্গঠন কাজ শুরু হলে একটি নিরাপত্তা শূন্যতা (security vacuum) তৈরি হওয়া রোধ করতে এই বাহিনী গঠন করা হচ্ছে।

এই বাহিনীতে তুরস্ক সৈন্য পাঠাতে আগ্রহী হলেও ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা তুর্কি সৈন্যদের এই বাহিনীতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিচ্ছে না।

ইসরায়েল ও তুরস্কের সম্পর্কে তিক্ততা আগেই বেড়ে গিয়েছিল সিরিয়া নিয়ে। আর ইসরায়েল মনে করে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মুসলিম ব্রাদারহুড ও হামাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ।

তবে গাজা স্থিতিশীলতা বাহিনী থেকে তুরস্ককে বাদ দেওয়া বিতর্কিত সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তুরস্ক ট্রাম্পের ২০ দফা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম ‘জামিনদার’ এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সক্ষম সামরিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত।

এই বাহিনীর নেতৃত্ব মিশরের হাতে যেতে পারে।

এটি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী না হলেও ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ স্থিতিশীলতা বাহিনীর বেশিরভাগ দেশ চাচ্ছে বাহিনীটিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেট দেওয়া হোক।

এর পরিবর্তে, এটি দক্ষিণ ইসরায়েলের শহর কিরিয়াত গাতে অবস্থিত মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক সেল সিভিল-মিলিটারি কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (সিএমসিসি)-এর সঙ্গে সমন্বয় করবে।

গত মঙ্গলবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এই সেলের উদ্বোধন করেন। সেলটিতে কয়েকজন ব্রিটিশ, ফরাসি, জর্ডানীয় ও আমিরাতি উপদেষ্টা রয়েছেন। এই সেল গাজায় ত্রাণ সমন্বয়ের ভূমিকাও গ্রহণ করছে বলে মনে হচ্ছে। যদিও ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের প্রধান ক্রসিংগুলো এখনো বন্ধ রয়েছে।

এই বাহিনীর কাজ হবে হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিনি সরকারকে নিরাপত্তা দেওয়া, যে সরকার গঠন নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে। যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অংশগ্রহণ বাতিল করে দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে গতকাল শুক্রবার প্রধান ফিলিস্তিনি দলগুলো একমত হয়েছে, রাজনীতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন কমিটি এই অঞ্চল পরিচালনার দায়িত্ব নেবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার গাজায় ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মৃতদেহ খুঁজে বের করতে পাঠানো তুরস্কের দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বিশেষজ্ঞদের ইসরায়েলের অনুমোদনের জন্য গাজা সীমান্তের কাছে মিশরের সীমানায় অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে যে উত্তেজনা বাড়ছে তারই লক্ষণ এটি।

জীবন সনাক্তকরণ ডিভাইস এবং প্রশিক্ষিত সার্চ ডগ নিয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ৮১ সদস্যের এই দলটি।

শুক্রবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে ইসরায়েলকে চাপে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কিছু করা উচিত, যার মধ্যে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা এবং অস্ত্র বিক্রয় নিষিদ্ধ করা।

এদিকে হামাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার প্রশাসন একটি অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিন কমিটির হাতে হস্তান্তর করা হবে, যা স্বাধীন ‘টেকনোক্রেট’দের সমন্বয়ে গঠিত। এই কমিটি আরব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মিলিতভাবে জীবন ও মৌলিক সেবার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। কায়রোর বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ১১
জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলি। ছবি: এএফপি
জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলি। ছবি: এএফপি

জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি গারিবাশভিলির বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দেশটির রাজধানী তিবলিসির একটি আদালত প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪০০ ডলার জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বিচারক একা বারবাকাদজে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। জামিনের অর্থ পরিশোধের জন্য তিনি ৩০ দিন সময় পেয়েছেন বলে জানিয়েছে কিয়েভ পোস্ট।

শুনানির সময় আদালতে কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান গারিবাশভিলি। বিচারক তাঁকে কোনো বিবৃতি দিতে চান কি না জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছুই না।’

পরে তাঁর আইনজীবী আমিরান গিগুয়াশভিলি সাংবাদিকদের জানান, তাঁর মক্কেল কারও বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য দেননি।

প্রসিকিউটর জেনারেল জিওর্গি গভারামিদজের মতে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী উভয় পদে দায়িত্ব পালনের সময় ‘গোপন ও অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যকলাপে’ যুক্ত ছিলেন গারিবাশভিলি।

তদন্তকারীদের অভিযোগ, জর্জিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘বিশেষভাবে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আয়’ করেছেন এবং কোম্পানি ও মধ্যস্থতাকারীদের একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেই অর্থ পাচার করেছেন।

গতকাল প্রসিকিউটর জেনারেল গভারামিদজে বলেন, মন্ত্রী পদে থাকাকালে গারিবাশভিলি গোপনে এবং আড়ালে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন এবং অবৈধ উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি তাঁর আয় ও ব্যয় উভয়ই ঘোষণা করতে বাধ্য ছিলেন।

জর্জিয়ার দণ্ডবিধির ১৯৪ ধারার ৩(জি) উপধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ৯ থেকে ১২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে গারিবাশভিলির।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এশিয়া সফরে কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের জল্পনা, উত্তর কোরিয়াকে ‘পারমাণবিক শক্তি’ আখ্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ০৮
প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এশিয়া সফরের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার প্রাক্কালে উত্তর কোরিয়াকে ‘একপ্রকার পারমাণবিক শক্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের জল্পনা চলছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এয়ারফোর্স ওয়ান বিমানে ট্রাম্পকে সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে উত্তর কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তিনি মানতে প্রস্তুত কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন: ‘আমি মনে করি তারা একপ্রকার পারমাণবিক শক্তি। যখন আপনারা বলেন তাদের পারমাণবিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, আমি বলব—তাদের প্রচুর পারমাণবিক অস্ত্র আছে।’

ট্রাম্পের এ মন্তব্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, কিম জং-উন গত মাসেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের ‘বিভ্রান্তিকর’ দাবি ত্যাগ করে, তবে তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। উত্তর কোরিয়া এর আগে একাধিকবার নিজেদের একটি ‘পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

ট্রাম্প আগামী বুধবার এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) ফোরামে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন অভ্যন্তরীণভাবে কিম জং-উনের সঙ্গে একটি বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা করছে। ট্রাম্প নিজেও আশা প্রকাশ করেছেন, তিনি সম্ভবত এ বছরই কিমের সঙ্গে আবারও দেখা করবেন।

গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রকরণ মন্ত্রী চুং ডং-ইয়ং বলেন, আগামী সপ্তাহে কোরিয়া উপদ্বীপে সফরের সময় কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাতের জোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের জানান, এই সফরসূচিতে কোনো বৈঠক ‘তালিকায় নেই’।

দুই নেতার বৈঠকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাতিসংঘ কমান্ড জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়ায় (জেএসএ) চলতি অক্টোবরের শেষ নাগাদ থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।

মন্ত্রী চুং জানিয়েছেন, গত বছর প্রথমবার জেএসএ-এর কাছাকাছি এলাকায় উত্তর কোরিয়ার কর্মীদের ‘সাজসজ্জা’ করতে দেখা গেছে। তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আগাছা পরিষ্কার করা এবং ফুলের টব গোছানোর কাজ করেছে। এটি সাধারণত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আগে দেখা যায়।

ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে কিমের সঙ্গে তিনবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন। তাঁদের শেষ বৈঠকটি ২০১৯ সালে দুই কোরিয়ার সীমান্ত বিভাজনকারী পানমুনজমে (জেএসএ) হয়েছিল। সেই সময় ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার মাটিতে কয়েক কদম হেঁটেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখা প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট তিনি।

তবে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রাগারের কতটা ত্যাগ করতে ইচ্ছুক এবং বিনিময়ে কী পাবে—এ বিষয় নিয়ে মতানৈক্যের কারণে সেই আলোচনা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাটডাউনে বন্ধুর উপহারের টাকায় সেনাবাহিনীর বেতন দিয়েছেন, দাবি ট্রাম্পের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

শাটডাউনের সময় এক ‘বন্ধু’র দেওয়া টাকায় সেনাবাহিনীর বেতন দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তহবিলের ঘাটতি মেটাতে প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনকে ওই বন্ধু ১৩০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, তাঁর ওই বন্ধু প্রচার বা পরিচয় প্রকাশ হোক চান না। সেনাবাহিনীর প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি এই অনুদান দিয়েছেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘একেই বলে দেশপ্রেম।’

গতকাল শুক্রবার বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক বিবৃতিতে পেন্টাগন অনুদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সামরিক বিভাগ ‘সাধারণ উপহার গ্রহণের ক্ষমতা’ (general gift acceptance authority) অনুযায়ী এক নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দাতার কাছ থেকে ১৩০ মিলিয়ন ডলারের অনুদান পেয়েছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানান, সেনাসদস্যদের বেতন ও সুবিধার পেছনে ব্যয় করার শর্তে এই অনুদান দেওয়া হয়েছে।

এই অনুদান নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই পেন্টাগনের এই অর্থ রাখা এবং ব্যয় করা আইনত বৈধ কি না।

কর্নেল ল’ স্কুলের তথ্যানুযায়ী, কোনো সংস্থা বা দপ্তর যদি কোনো উৎস থেকে এ ধরনের অনুদান পায়, তবে ‘যত দ্রুত সম্ভব কোনো কর্তন বা দাবি ছাড়া সেই অর্থ কোষাগারে জমা দিতে হবে।’

মার্কিন সংবিধানের অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন ক্লজ (Appropriations Clause)-এও বলা আছে, ‘আইন অনুযায়ী বরাদ্দ করা না হলে কোনো অর্থ কোষাগার থেকে তোলা যাবে না।’ অর্থাৎ, পেন্টাগনকে এই ১৩০ মিলিয়ন ডলার কোষাগারে জমা দিতে হবে এবং অর্থ ব্যবহারের জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন বা বরাদ্দ প্রয়োজন হবে।

সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা আইন (Affordable Care Act)-এর জন্য ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে কিনা, এই বিষয়ে মতপার্থক্যের কারণে কংগ্রেস একটি অর্থায়ন বিল পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় গত ১ অক্টোবর সরকার শাটডাউন হয়ে যায়। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ট্রাম্প চলতি অর্থবছরের অবশিষ্ট তহবিল ব্যবহারের অনুমোদন দিলে সেনাসদস্যরা বেতন পেতে শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আজকের রাশিফল: মেজাজ সামলে রাখুন, ফেসবুকে দার্শনিকতা বন্ধ করুন

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

সিনেমায় কাজ করতে চান সাফা, তবে ভয়ও পাচ্ছেন

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত