Ajker Patrika

প্রায় মার্কিন নাগরিক হয়েছিলেন তাঁরা, বাগড়া দিলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইরানি অভিবাসী সানাম মার্কিন নাগরিক হওয়ার শেষ ধাপে ছিলেন। ছবি: এএফপি
ইরানি অভিবাসী সানাম মার্কিন নাগরিক হওয়ার শেষ ধাপে ছিলেন। ছবি: এএফপি

এক দশকের বেশি আগে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ইরানি অভিবাসী সানাম মার্কিন নাগরিক হওয়ার শেষ ধাপে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তাঁর নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যায়। ৩ ডিসেম্বর তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ঠিক এক দিন আগে ট্রাম্প প্রশাসন কোনো কারণ ছাড়া অনুষ্ঠানটি বাতিল করে দেয়।

সানাম প্রথমে হতবাক হলেও পরে জানতে পারেন, তাঁর জন্মস্থানই এর কারণ। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘এত বছর ধরে কাগজপত্র, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর এখন মনে হচ্ছে, আমি আর এগোতে পারব না। এটি খুবই হৃদয়বিদারক।’

সানামের মতো আরও অনেক বৈধ অভিবাসী মার্কিন নাগরিক হওয়ার প্রতিটি ধাপ পার করে কেবল চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিকতার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু তাঁরা সবাই এখন ট্রাম্প প্রশাসনের একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন।

চলতি মাসের ২ ডিসেম্বর ট্রাম্প প্রশাসন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ১৯টি দেশের (যার মধ্যে ইরান অন্যতম) অভিবাসীর নাগরিকত্বের শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করে। শুধু চূড়ান্ত ধাপে থাকা ব্যক্তিরাই নন, প্রক্রিয়াটির যেকোনো পর্যায়ে থাকা অভিবাসীদের জন্যও ইমিগ্রেশন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস) জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা, আমেরিকানদের জীবন বাঁচাতে ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

এর পেছনের কারণ গত ২৬ নভেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলা। ওই দিন আফগান বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তির হামলায় ন্যাশনাল গার্ডের একজন সদস্য নিহত ও আরেকজন গুরুতর আহত হন। এরপরই ট্রাম্প প্রশাসন ইমিগ্রেশনের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। সে সময় নতুন করে ন্যাশনাল গার্ডের আরও ৫০০ সদস্যকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হয়। এর পাশাপাশি ওয়ার্কিং ভিসার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ মাস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিভিন্ন অভিবাসী অধিকার গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী অলাভজনক সংস্থা নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের (এনওয়াইআইসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে শুধু নিউইয়র্কেই ভেনেজুয়েলায় জন্মগ্রহণকারী আনুমানিক ১ লাখ ৩২ হাজার মানুষ বসবাস করতেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ১৯টি দেশের মধ্যে ভেনেজুয়েলাও রয়েছে। তাহলে এখন প্রশ্ন হতে পারে—ট্রাম্প প্রশাসন কি ভেনেজুয়েলায় জন্মগ্রহণকারী প্রায় দেড় লাখ অভিবাসীকে দেশ থেকে বের করে দেবে? তাঁরা মার্কিন নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাবেন?

নিউইয়র্ক ইমিগ্রেশন কোয়ালিশনের নীতিবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মারিও ব্রুজোন বিবিসিকে বলেন, সহজ কথায়, একটি অনির্দিষ্টকালের স্থগিতাদেশ মানেই নিষেধাজ্ঞা। তারা ওয়াশিংটন ডিসির হামলার ঘটনাকে অভিবাসী ও শরণার্থীদের ওপর আক্রমণ বাড়ানোর একটি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে।

ভেনেজুয়েলার অভিবাসী জর্জেরও ৩ ডিসেম্বর শপথ অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা আগে তিনি জানতে পারেন, এটি বাতিল করা হয়েছে। জর্জ বলেন, ‘আমার সবকিছু প্রস্তুত ছিল...কিন্তু পরের দিন শপথ অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ায় এখন কী হবে কিছুই বুঝতে পারছি না।’

জর্জ অবশ্য ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একমত যে অভিবাসীদের বিষয়ে ‘কঠোর যাচাই-বাছাই’ হওয়া উচিত। তিনি বাইডেন প্রশাসনকে দেশে অতিরিক্ত অভিবাসী প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য দোষারোপ করেন। জর্জ বলেন, তিনি যদি ভোট দিতে পারতেন, তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই সমর্থন করতেন।

সানামের স্বামী নিরাপত্তার ভয়ে নাম প্রকাশ না করে বিবিসিকে বলেন, ‘দেখুন, আমাদের কেমন ভাগ্য! যদি ন্যাশনাল গার্ডের ওপর গত সপ্তাহে হামলা না হয়ে এই সপ্তাহে হতো, তবে আমার স্ত্রী এখন একজন মার্কিন নাগরিক হতেন।’

প্রসঙ্গত, ২ ডিসেম্বর ট্রাম্প প্রশাসন ১৯টি দেশের অভিবাসীদের নাগরিকত্বের আবেদন স্থগিত করে। ১৯টি দেশ হলো ভেনেজুয়েলা, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় অভিযোগ

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

আজকের রাশিফল: ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঠকানোর চেষ্টা করবে, সঙ্গী ঘরের কাজ করিয়ে নেবে

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

হাদির জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায়, সিঙ্গাপুরে যাত্রা দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ