Ajker Patrika

ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানি বহিষ্কার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০০
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পাকিস্তানি নাগরিকদের ওপর নজরদারি জোরদার করেছে। শুধু তা-ই নয়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানিকে ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিভিন্ন দেশ বহিষ্কার করেছে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের মতে, এই প্রবণতা দেশটির আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

চলতি বছর ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে সৌদি আরব ২৪ হাজার পাকিস্তানিকে বহিষ্কার করেছে। অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত অধিকাংশ পাকিস্তানি নাগরিকের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির দাবি, অনেকে সে দেশে পৌঁছানোর পর ‘অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, ২০২৫ সালে সংগঠিত ভিক্ষুক সিন্ডিকেট নির্মূল এবং অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরগুলোতে ৬৬ হাজার ১৫৪ জন যাত্রীকে নামিয়ে দিয়েছে (অফলোড করেছে)।

এফআইএর মহাপরিচালক রিফাত মুখতার বলেন, এই নেটওয়ার্কগুলো পাকিস্তানের সুনাম নষ্ট করছে। তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রবণতা শুধু উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আফ্রিকা ও ইউরোপ ভ্রমণের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘটনা শনাক্ত হয়েছে এবং কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মতো দেশে পর্যটন ভিসার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

মুখতারের তথ্য অনুযায়ী, ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে সৌদি আরব এ বছর ২৪ হাজার পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠিয়েছে। দুবাই প্রায় ৬ হাজার ব্যক্তিকে এবং আজারবাইজান প্রায় আড়াই হাজার পাকিস্তানি ভিক্ষুককে বহিষ্কার করেছে। অর্থ্যাৎ ৩২ হাজারের বেশি পাকিস্তানিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিষয়টি গত বছরই সৌদি কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০২৪ সালে রিয়াদ আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছিল, যেন ভিক্ষুকেরা মক্কা ও মদিনায় ওমরাহ ভিসার অপব্যবহার করে ভিক্ষা করতে না পারে। সৌদি আরবের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় তখন সতর্ক করে দিয়েছিল যে এই চর্চা বন্ধে ব্যর্থ হলে তা পাকিস্তানের ওমরাহ ও হজযাত্রীদের জন্য বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

পাকিস্তানের আইন বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করেছেন। গত বছর দ্য ডন পত্রিকায় অ্যাটর্নি রাফিয়া জাকারিয়া ভিক্ষাবৃত্তিকে নিছক অভাবের তাড়না নয়, বরং একটি সুসংগঠিত উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি লিখেছিলেন, ‘পাকিস্তানের একটি শিল্প, যা অত্যন্ত সুসংগঠিত এবং এর সদস্যদের কাজ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বেশ সফল, তা হলো ভিক্ষাবৃত্তি। এটি এখন এতই সফল একটি উদ্যোগ যে এটি অন্য দেশে রপ্তানি এবং সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘অনেক পাকিস্তানি হয়তো হজের সময় নিজের চোখে দেখেছেন, এই ভিক্ষুকেরা মক্কা ও মদিনার পবিত্র স্থানগুলোর বাইরে আস্তানা গড়ে তোলে। তারা সেখানে বিদেশি হজযাত্রীদের টাকার জন্য সেভাবেই হয়রানি করে, যেভাবে পাকিস্তানের বাজারগুলোতে ক্রেতাদের করে থাকে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ