Ajker Patrika

পাকিস্তানের পার্লামেন্টে কোন দলের কত আসন 

আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২২, ১৭: ৫৮
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে কোন দলের কত আসন 

পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে চলছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটির অধিবেশন। ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাসের  জন্য ৩৪২ আসনের মধ্যে বিরোধীদের প্রয়োজন ১৭২টি আসন। বিরোধীদের দাবি, ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক সমর্থন তাদের হাতে রয়েছে। 

তবে একক দল হিসেবে কোনো দলেরই সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। একক দল হিসেবে কেবল ইমরান খানের দলেরই দেড় শতাধিক আসন রয়েছে। দলটির মোট আসনসংখ্যা ১৫৫টি। বিপরীতে প্রধান দুই বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সম্মিলিত আসনসংখ্যা ১৪০টি। আলাদাভাবে এই দল দুটির আসনসংখ্যা যথাক্রমে ৮৪ ও ৫৬টি করে। 

পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দলগুলোর আসন বিন্যাস। তবে, ইমরান খানের জোটের অন্যতম বড় অংশীদার মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান ইমরান খানের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করায় সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন ইমরান খান। দলটির আসনসংখ্যা ৭টি। তবে এই ৭টি আসন যদি বিরোধী শিবিরে যোগ না হতো, তবে বিরোধীরা ইমরান খানের পতনের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক আসন পেত না। পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) মুখপাত্র মরিয়ম আওরঙ্গজেবের এক টুইট থেকে দেখা যায় বিরোধী জোটের মোট আসন ১৭৬টি। এসবের মধ্যে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) আস ৮৪টি, পাকিস্তান পিপলস পার্টির ৫৬টি, মুত্তাহিদা মজলিশ-ই-আলম পাকিস্তানের ১৪টি, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির ১টি, বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির ৪টি, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তানের ৬টি, বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির ৪টি, পাকিস্তান মুসলিম লিগের (কায়েদে আজম) ২টি, জমহুরি ওয়াতান পার্টির ১টি এবং স্বতন্ত্র আসন ৪টি। 

এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তানের ৬টি আসন ছাড়া বিরোধীদের হাতে থাকত ১৭০টি। অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য প্রয়োজন ১৭২টি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন

জোহরান মামদানির জয় কি অভিজাতদের পরাজয়?

  • শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক মামদানির।
  • ব্যয়বহুল বিলবোর্ডের বদলে গেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে।
  • করপোরেট প্রভাবের বিরুদ্ধে জয়ের প্রতীক।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির বিজয় স্পষ্ট হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁর সমর্থকেরা। ভোটের এই ফলকে ‘ধনীদের রাজনীতির ওপর গরিবের জয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তাঁরা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে ব্রুকলিন প্যারামাউন্ট থিয়েটারে। ছবি: এএফপি
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির বিজয় স্পষ্ট হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁর সমর্থকেরা। ভোটের এই ফলকে ‘ধনীদের রাজনীতির ওপর গরিবের জয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তাঁরা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে ব্রুকলিন প্যারামাউন্ট থিয়েটারে। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে কয়েক মাস ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জোহরান মামদানি। বাসচালকদের সংগঠক থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা এই তরুণ যখন ভোটের মাঠে নামলেন, তখন কেউ ভাবেনি, তিনি এত দূর যাবেন। তবে শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী অভিজাতদের পরাস্ত করে হাজির হলেন বিজয়ীর বেশে। রেকর্ড গড়লেন নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে। হোয়াইট হাউসে যখন ট্রাম্পের মতো একজন তীব্র অভিবাসীবিরোধী প্রেসিডেন্ট, সেই সময়ে নিউইয়র্কে তাঁর মতো একজন অভিবাসী প্রার্থীর জয় নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্কের রাজনীতি ছিল করপোরেট অনুদাননির্ভর ও অভিজাত শ্রেণির নিয়ন্ত্রণে। সেখানে অভিবাসী পরিবারের সন্তান মামদানির উত্থান যেন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

মামদানির প্রচারের ধরন ছিল একেবারে আলাদা। অন্য প্রার্থীদের মতো তিনি ব্যয়বহুল বিলবোর্ড বা টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে যাননি। বরং চষে বেড়িয়েছেন পাড়ায় পাড়ায়, মানুষের দরজায় দরজায়। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন চোখে চোখ রেখে। জিজ্ঞেস করেছেন, ‘আপনার বাড়িভাড়া কত বেড়েছে? সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি কীভাবে দিচ্ছেন?’ এই সাধারণ প্রশ্নগুলোর মধ্যেই ছিল তাঁর আসল বার্তা; রাজনীতি মানে মানুষের পাশে থাকা।

মামদানির শিকড় দক্ষিণ এশিয়ায়। বাবা উগান্ডা থেকে আসা অভিবাসী, মা ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার। জন্ম ও বেড়ে ওঠা নিউইয়র্কে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে যুক্ত হন বাসচালকদের সংগঠনে। রাজনীতিতে আসার পরও নিজেকে পরিচয় দেন ‘কমিউনিটি অর্গানাইজার’ হিসেবে; নেতা হিসেবে নয়।

নির্বাচনের আগের মাসগুলোয় অ্যাস্টোরিয়া এলাকায় দেখা গেছে ভিন্ন এক দৃশ্য। একদল তরুণ রাতে কাজ শেষে বেরিয়ে পড়েছেন পোস্টার লাগাতে। কেউ কলেজে পড়েন, কেউ দোকানে কাজ করেন। হাতে লেখা স্লোগান, মুনাফার চেয়ে জীবন গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের কণ্ঠে দৃঢ়তা, ‘আমরা এমন কাউকে চাই, যিনি আমাদের মতো।’

গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভোটে তাঁদের বিশ্বাস বাস্তবে রূপ নেয়। সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রে ছিল উপচে পড়া ভিড়। হিজাব পরা নারী, রেস্টুরেন্টকর্মী, তরুণ, অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ সবাই হাজির কেন্দ্রে। কোলের শিশু নিয়েও ভোট দিয়েছেন অনেকে। এই ভোটারদের বড় অংশের বিশ্বাস, মামদানি শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি এক নতুন আশার প্রতীক।

ভোটে মামদানির বিজয় স্পষ্ট হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন জনতা। তাঁর কার্যালয়ে উপস্থিত ভোটারদের কেউ বলছিলেন, এটা ধনীদের রাজনীতির ওপর গরিবের জয়। আবার কেউ বলেছেন, ‘আমরা এমন এক শহর তৈরি করতে চাই, যেখানে রাজনীতি মানে মানবিকতা।’

ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে ধনীদের বদলে মানুষের জন্য রাজনীতি করার প্রত্যয়ের কথা জানান মামদানি। তিনি বলেন, ‘এই বিজয় আমার নয়। এটি তাঁদের বিজয়, যাঁরা ঘর হারিয়েছেন, যাঁদের সন্তান ঋণ শোধ করতে করতে কলেজ ছেড়ে দিয়েছেন; যাঁদের চিকিৎসা বিল দিতে হিমশিম খেতে হয়।’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, মামদানির জয় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির জন্য একটি বড় বার্তা। এটি করপোরেট প্রভাব, ধনীদের দখলদারত্ব আর দলীয় সিন্ডিকেটের রাজনীতির প্রতি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আটকে গেল ৩ চীনা নভোচারীর পৃথিবীতে ফেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
চীনের ‘শেনঝু-২০’ মহাকাশযানের তিন নভোচারী চেন দং, চেন ঝোংরুই এবং ওয়াং জি। ছবি: সংগৃহীত
চীনের ‘শেনঝু-২০’ মহাকাশযানের তিন নভোচারী চেন দং, চেন ঝোংরুই এবং ওয়াং জি। ছবি: সংগৃহীত

তিন চীনা নভোচারীর পৃথিবীতে ফেরার পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। কারণ তাঁদের ফিরে আসার মহাকাশযান ‘শেনঝু-২০’ সম্ভবত মহাকাশের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) চীনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন (সিএনএসএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নভোচারী চেন দং, চেন ঝোংরুই এবং ওয়াং জি ছয় মাসের মিশন শেষে বুধবারই পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ফেরার ঠিক আগমুহূর্তে ‘শেনঝু-২০’ এর সম্ভাব্য আঘাতজনিত ঝুঁকি চিহ্নিত হওয়ায় মিশন স্থগিত রাখা হয়েছে।

চীনা মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, বর্তমানে মহাকাশযানটির আঘাত বিশ্লেষণ ও ঝুঁকি মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলছে। ঠিক কতটা ক্ষতি হয়েছে বা কখন নভোচারীরা ফিরবেন, সেই বিষয়ে কোনো সময়সূচি প্রকাশ করা হয়নি। এই নভোচারীরা গত এপ্রিলে চীনের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়া অঞ্চল থেকে মহাকাশের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন।

এদিকে কয়েক দিন আগেই চীন সফলভাবে ‘শেনঝু-২১’ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে আরও তিন নতুন নভোচারীকে ‘তিয়ানগং’ বা ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’ নামে তাদের মহাকাশ স্টেশনে পাঠিয়েছে। নতুন এই দলটিতে রয়েছেন ৩২ বছর বয়সী উ ফেই, যিনি চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে তরুণ নভোচারী হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন। নতুন দলটি স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর পুরোনো দলটির পৃথিবীতে ফেরার কথা ছিল।

মহাকাশ স্টেশনে ‘শেনঝু-২১’ পৌঁছানোর পর নতুন ও পুরোনো দুটি মহাকাশচারী দলের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয় চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে। সেখানে পৃথিবীতে ফেরার অপেক্ষায় থাকা চেন দং বলেন, ‘আমরা এখন পৃথিবীতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ কিন্তু তাঁদের মহাকাশযান পরিদর্শনের পরই আটকে যায় পৃথিবীতে ফেরার প্রক্রিয়া।

চীনা মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, নভোচারীদের নিরাপত্তা ও শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শেনঝু কর্মসূচি প্রতি ছয় মাস পরপর পরিচালিত হয় এবং চীনের মহাকাশ অগ্রযাত্রার একটি বড় গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন মহাকাশ গবেষণায় দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে।

চীনের এই ধারাবাহিক উন্নতি যুক্তরাষ্ট্রে নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। যদিও মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা আবারও চাঁদে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত বছর মার্কিন নভোচারী সুনি উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরও বোয়িং স্টারলাইনারের ত্রুটির কারণে ৯ মাস ধরে মহাকাশে আটকে ছিলেন। তাঁরা অবশেষে স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলে করে পৃথিবীতে ফেরেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের মন্দিরে সোনা চুরি নিয়ে তুলকালাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৩৮
দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত সবরিমালা মন্দির। ছবি: বিবিসি
দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত সবরিমালা মন্দির। ছবি: বিবিসি

দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত সবরিমালা মন্দিরে সোনা চুরির অভিযোগে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কেরালা হাইকোর্ট জানিয়েছে, মন্দিরের কয়েকটি দেবমূর্তি থেকে সোনার আবরণ খুলে নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। প্রতিবছর লক্ষাধিক ভক্তের দর্শনস্থল এই মন্দিরে এমন কেলেঙ্কারি ভক্তদের হতবাক করেছে।

বুধবার (৫ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, সোনা চুরির ঘটনায় কেরালা হাইকোর্ট ইতিমধ্যে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছে এবং পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মন্দিরের সাবেক সহকারী পুরোহিত উণ্ণিকৃষ্ণন পট্টিও রয়েছেন। আদালতের দুই বিচারপতি রাজা বিজয়ারাঘবন ভি এবং কে ভি জয়কুমার গত সেপ্টেম্বর থেকে মামলাটি তদারক করছেন।

কী চুরি হয়েছে?

এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দুটি দ্বাররক্ষক মূর্তি। এই দুটি মূর্তি প্রধান দেবতা আয়াপ্পার গর্ভগৃহের বাইরে স্থাপিত। আদালতের নিযুক্ত সবরিমালা স্পেশাল কমিশনারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে—ওই মূর্তি দুটির বহু অংশ থেকে সোনার আবরণ অদৃশ্য।

মন্দিরের নথি অনুযায়ী, ১৯৯৮-৯৯ সালে ব্যবসায়ী বিজয় মাল্যর দান করা ৩০.২৯ কেজি সোনা ব্যবহার করে মূর্তি ও মন্দিরের দরজা, খিলান, স্তম্ভসহ বিভিন্ন অংশ সোনা দিয়ে মোড়ানো হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে ত্রিবাঙ্কুর দেবাসম বোর্ড (টিডিবি) তখনকার সহকারী পুরোহিত উণ্ণিকৃষ্ণন পট্টিকে নতুন করে সোনা দিয়ে মোড়ানোর জন্য দ্বাররক্ষক মূর্তি দুটিকে মন্দিরের বাইরে নেওয়ার অনুমতি দেয়—যা একটি বিরল ঘটনা।

দুই মাস পর মূর্তি ফেরত এলেও ওজন মাপা হয়নি। পরে তদন্তে দেখা যায়, মূর্তিগুলো অনেক হালকা হয়ে গেছে। এসআইটি জানায়, মূর্তি, পাদমূর্তি ও দরজার ফ্রেম মিলিয়ে প্রায় ৪ কেজি ৫৪০ গ্রাম সোনা নিখোঁজ হয়েছে। আদালত এই ঘটনাকে ‘সোনা ডাকাতি’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

বিচারকেরা তীব্র ভাষায় টিডিবিকে দোষারোপ করেছেন। কারণ তারা মূর্তিগুলো ‘তামার ফলক’ হিসেবে রেকর্ডে দেখিয়েছিল। এমনকি উণ্ণিকৃষ্ণন পট্টিকে ৪৭৫ গ্রাম সোনা নিজের কাছে রাখার অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। তিনি পরে ওই সোনা এক আত্মীয়ার বিয়েতে ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ইমেইল করেন। এই বিষয়টিকে ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন আদালত।

অভিযুক্ত ও প্রতিক্রিয়া

উণ্ণিকৃষ্ণন পট্টিকে আদালতে হাজির করার পর বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়। বের হওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে, সত্য একদিন প্রকাশ পাবে।’

এদিকে পুলিশ আরও দুই বোর্ড কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই কেলেঙ্কারি ঘিরে কেরালায় রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে। বিরোধী কংগ্রেস নেতা ভি ডি সতীসন অভিযোগ করে বলেছেন, ‘প্রায় ৫ কেজি সোনা চুরি গেছে, এর সঙ্গে কর্মকর্তারাও জড়িত।’ তিনি মন্দির বিষয়ক মন্ত্রী ভি এন বাসাবানের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

মন্ত্রী বাসাবান অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, ‘তদন্ত আদালতের নজরদারিতে চলছে, আমরা কিছুই লুকাব না।’

কেরালার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ছয় সপ্তাহের মধ্যেই এই তদন্ত শেষ করে দোষীদের পরিচয় বের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামা দুয়াজি শুধু মামদানির স্ত্রী নন, একজন প্রতিভাবান শিল্পীও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির পাশে তাঁর স্ত্রী রামা দুয়াজি। ছবি: দ্য পিপল
নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির পাশে তাঁর স্ত্রী রামা দুয়াজি। ছবি: দ্য পিপল

সিরীয়-আমেরিকান ইলাস্ট্রেটর ও ডিজাইনার রামা দুয়াজি সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন নিউইয়র্কের নতুন মেয়র জোহরান মামদানির স্ত্রী হিসেবে। তবে নিজস্ব পরিচয়ে তিনি একজন প্রতিভাবান শিল্পী। তিনি তাঁর কাজের ভেতর দিয়ে নারী, আরব পরিচয়, প্রতিরোধ ও সহমর্মিতার বিষয়গুলোকে গভীরভাবে অনুসন্ধান করেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, রামার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে। ৯ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে তিনি দুবাইয়ে চলে যান। সেখানেই বড় হন এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কাতারের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের রিচমন্ড ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়ে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেন।

রামা দুয়াজির শিল্পকর্ম মূলত কালো-সাদা রেখাচিত্রে নারীর প্রতিকৃতি, যেখানে দেখা যায় নারীসত্তা, অভিব্যক্তি ও বৈচিত্র্যের প্রতি গভীর মমতা। তাঁর কাজ প্রকাশিত হয়েছে দ্য নিউ ইয়র্কার, ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি, অ্যাপল, স্পোটিফাই, ভাইস এবং টেট মডার্ন–এর মতো বিশ্বখ্যাত মাধ্যমগুলোতে। পাশাপাশি ভার্জিনিয়া ও বৈরুতে তাঁর একক প্রদর্শনী হয়েছে।

২০২১ সালে এক ডেটিং অ্যাপে রামা ও জোহরান মামদানির পরিচয় হয়। পরে তাঁদের প্রথম দেখা হয় ব্রুকলিনের একটি ইয়েমেনি কফিশপে। এভাবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে। একপর্যায়ে তাঁরা লোয়ার ম্যানহাটনের আদালতে বিয়ে করেন। দুবাইয়ে তাঁদের বাগদান ও নিকাহ অনুষ্ঠানটি ছিল রূপকথার মতো। সূর্যাস্তের পটভূমিতে ফুল ও সবুজে সাজানো এক রোমান্টিক আবহ তৈরি করা হয়েছিল।

রামা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে শিল্পকর্ম ও সামাজিক বিষয়ে বেশি সক্রিয়। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের প্রতি তাঁর অবস্থান বহুবার প্রকাশ পেয়েছে। ২০২১ সালে একটি ইলাস্ট্রেশনে তিনজন মানুষকে তিনি একসঙ্গে কনুই মিলিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখিয়েছিলেন, যার ওপরে আরবিতে লেখা ছিল—‘আমরা ছাড়ব না।’ গাজায় ক্ষুধা ও মানবিক সংকট নিয়েও তিনি সচেতনতা তৈরির কাজ করেছেন।

মাত্র ২৮ বছর বয়সে রামা হবেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের বাসভবন গ্রেসি ম্যানসনে বসবাসকারী প্রথম জেনারেশন–জেড সদস্য। তবে জোহরান মামদানির ভাষায়, ‘রামা শুধু আমার স্ত্রী নন, তিনি একজন অসাধারণ শিল্পী, যিনি নিজের কাজ দিয়ে পরিচিত হওয়ার যোগ্য।’

করোনা মহামারির বেশ কিছু সময় পরিবারের সঙ্গে দুবাইয়ে কাটিয়েছিলেন রামা। পরে নিউইয়র্কে স্থায়ী হন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি নতুন শহরে এসেছিলাম, কাউকে চিনতাম না। তাই ইনস্টাগ্রামে দেখা সৃজনশীল মানুষদের বার্তা পাঠাতে শুরু করি। অবাক করা বিষয় হলো, নিউইয়র্কে মানুষ নতুন সম্পর্ক গড়ায় বেশ খোলা মন। এভাবেই আমি অনেক দারুণ আরব-আমেরিকান শিল্পীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছি।’

রামা দুয়াজি আজ শুধু নিউইয়র্কের মেয়রের স্ত্রী নন, বরং আধুনিক আরব নারীর এক সাহসী ও সৃজনশীল প্রতীক, যিনি শিল্পের মাধ্যমে নিজের শিকড় ও মানবিক দায়বদ্ধতা একসূত্রে বেঁধেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর

বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ

গভীর রাতে পিনাকীর বাড়ির সামনে আগুন জ্বেলে মোবাইল ফোনে ছবি তুলে চলে গেল দুই যুবক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত