Ajker Patrika

ইসরায়েল হুমকি নয়, ইরানের পক্ষে সংঘাতে জড়াবে না পাকিস্তান: প্রতিরক্ষামন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের তাফতান সীমান্তে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত। ছবি: এএফপি
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের তাফতান সীমান্তে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত। ছবি: এএফপি

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে কোনো পক্ষ নেবে না পাকিস্তান এবং দেশটির এই সংঘাতে জড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। এমনটাই জানিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। সম্প্রতি সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি।

খাজা আসিফ বলেন, গত ১৩ জুন ইরানে ইসরায়েলের অপারেশন রাইজিং লায়ন শুরুর পর ইসলামাবাদ ও তেহরানের মধ্যে নতুন কোনো সামরিক সহযোগিতা হয়নি। এ ছাড়া ইরান-ইসরায়েল চলমান সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তাদের কোনো আলাপ হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

আসিফ জানান, ‘পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়মিতই চলে, বিশেষ করে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান নিয়ে। তবে ইসরায়েলের হামলার পর নতুন করে কোনো যৌথ সামরিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়নি।’

প্রতিবেশী ইরান যখন ইসরায়েলকে পাল্টা হামলায় জবাব দিচ্ছে, তখন এই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন পুরো অঞ্চল। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, সরাসরি সংঘাতে রূপ নিলে এই যুদ্ধ শুধু ইরান-ইসরায়েল সীমিত থাকবে না, বরং ছড়িয়ে পড়বে গোটা অঞ্চলে—বিপন্ন করবে বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহ ও মধ্যপ্রাচ্যের ভঙ্গুর স্থিতিশীলতা।

খাজা আসিফ বলেন, গত পাঁচ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকট নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো আলোচনা না হলেও ‘আমরা সব সময়ই ওয়াশিংটনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’ তিনি বলেন, ‘শান্তির পক্ষে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। কীভাবে এই সংঘাতের ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায় তা নিয়ে চীন, মুসলিম বিশ্ব এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি।’

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অতীতে ইরান ও পাকিস্তানকে ‘উগ্র ইসলামপন্থী রাষ্ট্র’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা ইসরায়েলকে পাকিস্তানের জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছি না। ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, তবে এখনই এমন আশঙ্কা করছি না।’ এ সময় তিনি ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েল একটি আধিপত্যবাদী রাষ্ট্র, যার গাজা এবং ইরানে সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড পুরো অঞ্চলকে বিপদের মুখে ফেলেছে।’

ইসরায়েলের হামলার পর পাকিস্তান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কাছে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে খাজা আসিফ সরাসরি কিছু বলেননি। তবে জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কঠোরভাবে সুরক্ষিত। ভারতের সঙ্গে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের পর থেকেই আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি।’

গত মাসে ভারতের সঙ্গে যে সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র সামরিক সংঘর্ষ হয়েছে, সেটিকে পাকিস্তানের শক্তি প্রদর্শনের প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছি যে, পাকিস্তান তার ভূখণ্ড ও নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো আপস করবে না। আমাদের বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী ও জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে। এই অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই পাকিস্তানের দিকে হাত বাড়ানোর আগে নেতানিয়াহুর সরকারকেও অনেকবার ভাবাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত