Ajker Patrika

ক্লিওপেট্রার সময়ের নৌবন্দর মিলল মিসরের সাগরতলে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৭
প্রায় দুই দশক ধরে অনুসন্ধানের পর মিসরের সমুদ্রতলে প্রাচীন এই বন্দরের সন্ধান পাওয়া গেছে। ছবি: ন্যাট জিওর সৌজন্যে
প্রায় দুই দশক ধরে অনুসন্ধানের পর মিসরের সমুদ্রতলে প্রাচীন এই বন্দরের সন্ধান পাওয়া গেছে। ছবি: ন্যাট জিওর সৌজন্যে

প্রায় দুই দশক ধরে অনুসন্ধানের পর মিসরের সমুদ্রতলে প্রাচীন এক বন্দরের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা রানি ক্লিওপেট্রার সময়কার বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই আবিষ্কারকে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক ক্লিওপেট্রার হারানো সমাধির সন্ধানে নতুন দিক হিসেবে দেখছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মিসরের পর্যটন ও প্রত্নকর্ম মন্ত্রণালয় এই আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। তাদের মতে, টাপোসিরিস ম্যাগনা শুধু একটি ধর্মীয় কেন্দ্রই ছিল না, বরং ছিল একটি সমৃদ্ধ সমুদ্র বাণিজ্যিক কেন্দ্রও।

ডোমিনিকান রিপাবলিকের আইনজীবী থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক হওয়া ক্যাথলিন মার্টিনেজ দীর্ঘকাল ধরে ক্লিওপেট্রার সমাধি খুঁজছিলেন। অধিকাংশ প্রত্নতাত্ত্বিক মনে করেন, ক্লিওপেট্রা তাঁর জন্ম ও শাসনকাল কাটানো আলেকজান্দ্রিয়ার রাজপ্রাসাদের কাছেই সমাহিত রয়েছেন। কিন্তু মার্টিনেজের ধারণা, তাঁর সমাধি অন্য কোথাও লুকানো। মার্টিনেজের এ ধারণা তাঁকে আলেকজান্দ্রিয়া থেকে প্রায় ৩০ মাইল পশ্চিমে বোর্গ এল আরব শহরে অবস্থিত টাপোসিরিস ম্যাগনা মন্দিরে নিয়ে যায়।

মার্টিনেজ বলেন, এটি প্রমাণ করে, মন্দিরটির গুরুত্ব অনেক। এখানেই হয়তো ক্লিওপেট্রা তাঁর প্রিয় রোমান নেতা মার্ক অ্যান্টনির সঙ্গে সমাহিত হতে চেয়েছিলেন।

২০২২ সালে মার্টিনেজ ও তাঁর দল মন্দিরে ক্লিওপেট্রার শাসনামলের নিদর্শনসহ প্রায় ৪ হাজার ৩০০ ফুট দীর্ঘ এক সুড়ঙ্গ খুঁজে পান, যা সাগরের দিকে এগিয়েছে। সুড়ঙ্গটি আংশিকভাবে পানিতে তলিয়ে ছিল এবং এর ভেতর থেকে টলেমীয় যুগের মাটির পাত্র ও মৃৎশিল্প পাওয়া যায়।

সম্প্রতি পানির নিচের আবিষ্কারের সঙ্গে এসব মিলিয়ে মার্টিনেজ বলেন, বন্দরটি ক্লিওপেট্রার সময়েও সক্রিয় ছিল। এই অনুসন্ধানে সহায়তা দেন টাইটানিকের আবিষ্কারক সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিক বব ব্যালার্ড। তাঁর নেতৃত্বে পানির নিচে বৃহদাকার মানবসৃষ্ট স্থাপনা, মসৃণ পাথরের মেঝে, নোঙর এবং গ্রিক-রোমান যুগের অ্যামফোরা পাত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।

মার্টিনেজ উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘ডুবুরিরা বন্দরের সন্ধান পেয়েছে। ২ হাজার বছর পর আমরা প্রথম মানুষ হিসেবে এখানে পা রাখলাম।’

ক্লিওপেট্রার জীবন ও মৃত্যু

খ্রিষ্টপূর্ব ৬৯ অব্দে জন্ম নেওয়া ক্লিওপেট্রা মাত্র ১৮ বছর বয়সে মিসরের সিংহাসনে বসেন এবং টলেমীয় সাম্রাজ্যের সর্বশেষ সক্রিয় শাসক (ফারাও বা ফেরাউন) হিসেবে পরিচিতি পান। ইতিহাসবিদদের মতে, তিনি ছিলেন দারুণ প্রভাবশালী এবং রোমানদের চোখে ‘প্রলোভনসুন্দরী’ (একই সঙ্গে বিপজ্জনক, সুন্দরী ও প্রলুব্ধকারী)। জুলিয়াস সিজারের মৃত্যুর পর ক্লিওপেট্রা ১১ বছর মার্ক অ্যান্টনির সঙ্গে প্রেম ও রাজনীতিতে জড়িয়ে ছিলেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৩১ অব্দে গ্রিস উপকূলে অক্টাভিয়ানের সঙ্গে নৌযুদ্ধে পরাজিত হয়ে অ্যান্টনি আত্মহত্যা করেন। এরপর বন্দী হওয়ার ভয়ে ক্লিওপেট্রাও আত্মহত্যা করেন বলে ধারণা করা হয়, তবে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল, তা আজও রহস্য।

ইতিহাসে উল্লেখ আছে, অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রাকে আলেকজান্দ্রিয়ায় নিজ সমাধিতে একসঙ্গে দাফন করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আজও কোনো সমাধি পাওয়া যায়নি। পরে বিভিন্ন সময়ে বড় ভূমিকম্প ও সুনামিতে শহরের অনেকাংশ পানির নিচে চলে যায়।

মার্টিনেজ মনে করেন, ক্লিওপেট্রা রোমানদের চোখ এড়িয়ে অন্যত্র নিজের দেহ গোপন করেছিলেন। এই বিশ্বাসে তিনি ২০০৫ সাল থেকে টাপোসিরিস ম্যাগনায় খনন শুরু করেন। এখন পর্যন্ত তাঁরা সোনায় মোড়ানো মমি, মৃৎপাত্র এবং ক্লিওপেট্রার প্রতিকৃতিখচিত ৩ শতাধিক মুদ্রা পেয়েছেন।

গবেষকদের মতে, নতুন আবিষ্কৃত বিশাল পাথরের গঠন, স্তম্ভ ও ভাস্কর্যের ভগ্নাংশগুলো সরাসরি টাপোসিরিস ম্যাগনার সঙ্গে সম্পর্কিত। ব্যালার্ড ও তাঁর দল এরই মধ্যে প্রায় ছয় মাইলজুড়ে সমুদ্রতলের মানচিত্র তৈরি করেছেন। মার্টিনেজ বিশ্বাস করেন, ক্লিওপেট্রার সমাধি খুঁজে পাওয়া এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। তিনি বলেন, ‘আমরা ভূমি ও সমুদ্র—দুই দিকে অনুসন্ধান চালিয়ে যাব। এটাই আমাদের বিশাল কাজের শুরু।’

তথ্যসূত্র: ন্যাট জিও

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও দুই মিত্র হারালেন মাদুরো, লাতিনে ভেনেজুয়েলার পাশে এখন কারা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গ্রিন কার্ড থেকে নাগরিকত্ব—১৯ দেশের অভিবাসীদের সব আবেদন থামিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে, তারা ইউরোপ বহির্ভূত ১৯টি দেশের অভিবাসীদের সব ধরনের আবেদন স্থগিত করেছে। এর মধ্যে গ্রিন কার্ড ও মার্কিন নাগরিকত্বের আবেদনও রয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এই স্থগিতাদেশ এমন ১৯টি দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যেগুলো জুন মাসেই আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছিল। এতে অভিবাসনের ওপর আরও কঠোর বিধিনিষেধ যোগ হলো, যা ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডার অন্যতম মূল প্রতিশ্রুতি। তালিকায় আফগানিস্তান ও সোমালিয়া রয়েছে।

নতুন নীতির সরকারি স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে ওয়াশিংটনে গত সপ্তাহে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলার কথা, যেখানে আফগান একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই হামলায় ন্যাশনাল গার্ডের একজন সদস্য নিহত হন, আরেকজন গুরুতর আহত হন।

ট্রাম্প সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সোমালিদের বিরুদ্ধে বক্তব্য আরও তীব্র করেছেন। তিনি তাদের ‘আবর্জনা’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, ‘আমরা তাদের আমাদের দেশে চাই না।’

জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই ট্রাম্প আক্রমণাত্মকভাবে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। বড় বড় মার্কিন শহরে ফেডারেল এজেন্ট পাঠানো, আর যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলো তাঁর নীতির অংশ। এতদিন প্রশাসন বহিষ্কারের অভিযানকে বেশি তুলে ধরলেও, আইনিভাবে অভিবাসন বদলে দেওয়ার প্রচেষ্টার দিকে তুলনামূলক কম নজর ছিল। তবে ন্যাশনাল গার্ডে হামলার পর একের পর এক নতুন বিধিনিষেধের ঘোষণা থেকে স্পষ্ট যে আইনি অভিবাসনেও তার নজর আরও কড়া হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার যুক্তিতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, আর দায় চাপানো হচ্ছে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির ওপর।

বুধবার প্রকাশিত স্মারকে যেসব দেশকে লক্ষ্য করা হয়েছে, তাদের মধ্যে আছে—আফগানিস্তান, বার্মা (মিয়ানমার), চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। জুনে এগুলোর ওপর সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রবেশ সম্পূর্ণ স্থগিত ছিল।

অন্যদিকে আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা বাকি দেশগুলো হলো বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।

নতুন নীতিতে এসব দেশের নাগরিকদের সব মুলতবি আবেদন আটকে দেওয়া হবে। পাশাপাশি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে আবেদনকারীদের ‘পুনরায় পূর্ণাঙ্গ পুনর্মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যেখানে প্রয়োজন হলে সাক্ষাৎকার এবং পুনঃসাক্ষাৎকারও নিতে হবে, যাতে জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার সব ঝুঁকি যাচাই করা যায়।’

স্মারকে সাম্প্রতিক বেশ কিছু অপরাধের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলোর জন্য অভিবাসীদের দায়ী করা হচ্ছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনাও রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও দুই মিত্র হারালেন মাদুরো, লাতিনে ভেনেজুয়েলার পাশে এখন কারা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে নতুন স্মার্টফোনে বাধ্যতামূলক সরকারি অ্যাপ—গোপনীয়তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: নিক্কেই এশিয়া
ছবি: নিক্কেই এশিয়া

ভারতে বিক্রি হওয়া সব নতুন স্মার্টফোনে ‘সঞ্চার সাথি’ নামে একটি সরকারি অ্যাপ বাধ্যতামূলকভাবে প্রি-ইনস্টল করার নির্দেশনা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। নির্দেশ অনুযায়ী, অ্যাপটি ডিভাইস থেকে মুছে ফেলা বা নিষ্ক্রিয় করা যাবে না। ফলে এটিকে অনেকেই নজরদারির ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন। অ্যাপল, ভিভোসহ সব নির্মাতাকে ৯০ দিনের মধ্যে এই শর্ত মানতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার।

ভারত সরকারের টেলিকম বিভাগ দাবি করেছে—‘সঞ্চার সাথি’ মূলত চুরি বা হারানো ফোন ট্র্যাক ও ব্লক করতে এবং ব্যবহারকারীর নামে থাকা ভুয়া মোবাইল সংযোগ শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। অ্যাপটি এখন পর্যন্ত স্বেচ্ছায় ডাউনলোডযোগ্য হলেও নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব নতুন ডিভাইসেই এটি প্রি-লোড করতে হবে এর ‘ফাংশনালিটি সীমিত বা নিষ্ক্রিয় করার’ কোনো উপায় না রেখেই। অর্থাৎ কেউ চাইলেই এটি ফোন থেকে ডিলিট করতে পারবে না।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এই বিষয়ে নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্তটি ‘গোপনীয়তায় স্থায়ী হস্তক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছে দেশটির ডিজিটাল অধিকার সংগঠন ‘ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন’ (আইএফএফ)। সংগঠনটি ঘোষণা করেছে, নির্দেশনা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাবে।

এ অবস্থায় জনমনে বিভ্রান্তি আরও বেড়েছে, যখন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া স্থানীয় গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন—ব্যবহারকারীরা নাকি চাইলেই অ্যাপটি ‘সক্রিয় বা মুছে ফেলতে’ পারবেন। তবে তিনি নির্দেশনার সেই অংশটি ব্যাখ্যা করেননি, যেখানে অ্যাপ নিষ্ক্রিয় বা সীমিত করা নিষিদ্ধ বলা আছে। সরকারও নতুন কোনো ঘোষণায় বিষয়টি স্পষ্ট করেনি।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে দিয়েছে। বহু ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন—অ্যাপটি ফোনের ক্যামেরা, কল লগ, ফাইল স্টোরেজ ও এসএমএস–সহ বিস্তৃত অ্যাকসেস চায়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টার-পয়েন্ট-এর তরুণ পাঠক বলেন, ‘ইউরোপের ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট ব্যবহারকারীকে অ্যাপ মুছে ফেলার অধিকার দেয়। আর আমরা সেই জায়গা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি।’

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্মাতা কোম্পানিগুলো প্রকাশ্যে অবস্থান না নিলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অ্যাপল ও চীনা ব্র্যান্ডগুলো শিল্প সংগঠনের মাধ্যমে নীরবে ভারত সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করবে। ভারতে ভিভো, অপ্পো ও শাওমি মিলেই বাজারের অর্ধেকের বেশি দখলে রেখেছে। অন্যদিকে অ্যাপল ইতিমধ্যে অ্যান্টিট্রাস্ট তদন্তের মুখে রয়েছে, যা তাদের জন্য আরও ঝুঁকি তৈরি করেছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, অ্যাপল এই নির্দেশনা মানতে আগ্রহী নয়। তবে কোম্পানিটি এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালতে গড়াতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও দুই মিত্র হারালেন মাদুরো, লাতিনে ভেনেজুয়েলার পাশে এখন কারা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউরোপ যুদ্ধ চাইলে আমরা এখনই প্রস্তুত: পুতিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউরোপ যদি যুদ্ধের পথে যেতে চায়, তবে রাশিয়া এখনই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। তিনি অভিযোগ করেছেন, ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইউক্রেনের সম্ভাব্য শান্তি প্রস্তাবে অগ্রহণযোগ্য শর্ত যোগ করছে এবং মূলত যুদ্ধের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে।

মস্কোতে এক বিনিয়োগ ফোরামে বক্তৃতাকালে পুতিন বলেন, ‘আমরা ইউরোপের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না—এটি শতবার বলেছি। কিন্তু যদি ইউরোপ যুদ্ধ শুরু করতে চায়, তবে আমরা এই মুহূর্তেই প্রস্তুত। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

এ সময় তিনি সতর্ক করেন—ইউরোপ যুদ্ধ শুরু করলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যেখানে আলোচনার জন্য কোনো পক্ষই অবশিষ্ট থাকবে না।

পুতিন দাবি করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো মার্কিন প্রশাসনের মধ্যস্থতায় চলমান শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এরই মধ্যে তিনি জানান, দোনেৎস্ক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরভস্কও এখন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রুশ বাহিনী। এ ছাড়া সম্প্রতি একটি রুশ তেলে ট্যাংকারে ইউক্রেনের হামলাকে ‘সমুদ্র দস্যুতা’ হিসেবে অভিহিত করেন পুতিন। তিনি ইউক্রেনের বন্দর ও জাহাজে রাশিয়ার পাল্টা হামলা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন।

এদিকে পুতিনের সঙ্গে শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মার্কিন মধ্যস্থতাকারী স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার এখন মস্কোতে আছেন। ওয়াশিংটন আশাবাদী, এই কথোপকথনের মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটানোর একটি রূপরেখা সামনে আসতে পারে।

অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মতো আয়ারল্যান্ড সফর করছেন ভলদিমির জেলেনস্কি। আইরিশ রাজধানী ডাবলিনে সাংবাদিকদের তিনি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসতে তিনি প্রস্তুত। তবে তা নির্ভর করবে মস্কোর আলোচনার সফলতার ওপর।

জেলেনস্কি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কিয়েভ ২০ দফা শান্তি কাঠামো তৈরি করেছে। তবে ‘সম্মানজনক ও মর্যাদাপূর্ণ শান্তি’ পেতে এখনো কিছু বিষয়ের সমাধান বাকি রয়েছে।

আয়ারল্যান্ড ইউক্রেনকে ১০০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের অ-প্রাণঘাতী সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে এ বছর ইউক্রেনে পাঠানো আয়ারল্যান্ডের মোট সহায়তা ২০০ মিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত করেছে। পাশাপাশি দুই দেশের নেতারা নতুন ‘ইউক্রেন–আইরিশ পার্টনারশিপ রোডম্যাপ ২০৩০ ’–এ সই করতে যাচ্ছেন, যেখানে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো পুনর্গঠন, ইইউ–এ অনুপ্রবেশ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচির কথা উল্লেখ আছে।

জেলেনস্কি আয়ারল্যান্ডের রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার সৎ ও নীতিগত অবস্থানকে প্রশংসা করেন এবং বলেন, রাশিয়ার স্থগিত সম্পদ অনেক আগেই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত হওয়া উচিত ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও দুই মিত্র হারালেন মাদুরো, লাতিনে ভেনেজুয়েলার পাশে এখন কারা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বোনের সঙ্গে ২০ মিনিটের আলাপে আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে ইমরান খানের অভিযোগ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইমরান খান ও আসিম মুনির। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান খান ও আসিম মুনির। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর বোন ডা. উজমা খানম। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরানের সঙ্গে ২০ মিনিটের সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, তিনি শারীরিকভাবে ঠিক আছেন। তবে মানসিকভাবে তাকে প্রচণ্ড চাপে রাখা হয়েছে। দিনভর সেলে আটকে রাখা হয়, বাইরে যেতে পারেন সামান্য সময়ের জন্য। কারও সঙ্গে যোগাযোগের কোনো সুযোগ নেই।’

উজমার ভাষ্য অনুযায়ী, ইমরান খান তার বর্তমান অবস্থার জন্য পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে দায়ী করেছেন। উজমা জানান, ইমরান মনে করেন—সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ নিজের হাতে নিয়ে মুনিরই সংবিধান পুনর্লিখন করেছেন এবং নিজে, অন্য বাহিনীর প্রধানগণ ও প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির আজীবন দায়মুক্তি নিশ্চিত করেছেন। ক্ষমতাকে এভাবে কেন্দ্রীকরণ করার জন্যই তাঁকে কারাগারে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইমরানের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ ও গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁর পরিবারকে দীর্ঘদিন দেখা করতে না দেওয়া এবং তাঁকে গোপনে হত্যা করা হয়েছে—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়। সম্প্রতি ইমরানের তিন বোন—নূরীন নিয়াজি, আলিমা খান ও উজমা খান অভিযোগ করেছিলেন, ভাইয়ের সাক্ষাৎ গেলে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। কাছাকাছি সময়ে ইমরানের দুই ছেলেও দাবি করেন, কারাগার প্রশাসন তাঁদের বাবার বিষয়ে ‘অপরিবর্তনীয়’ কিছু গোপন করছে। আদালতের নির্দেশ থাকার পরও পরিবার ও দলের লোকজনের সঙ্গে ইমরান খানকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।

এ ছাড়া ইমরানের ব্যক্তিগত চিকিৎসককেও কারাগারে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে পরিবার। প্রায় ২৫ দিন কাউকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়ায় গুজব ছড়ায় তাঁকে গোপনে হত্যা করা হয়েছে এবং সরকারের আশঙ্কা করছে, মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে লাখো সমর্থকের বিক্ষোভে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকারও চাপের মুখে পড়ে। বিশেষ করে, যখন পিটিআই–এর সিনেটর খুররম জিশান দাবি করেন, ইমরানকে জোর করে দেশ ত্যাগে বাধ্য করার জন্য বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। তাঁর মতে, ইমরানের বিপুল জনপ্রিয়তাই সরকারের আতঙ্কের কারণ।

৭২ বছর বয়সী বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে বন্দী। তাঁর মৃত্যুর গুজব প্রথম ছড়ায় আফগানিস্তানের কিছু সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে। দুই দেশের সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এমনটি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও দুই মিত্র হারালেন মাদুরো, লাতিনে ভেনেজুয়েলার পাশে এখন কারা

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক উদ্বোধন বৃহস্পতিবার, তোলা যাবে ২ লাখ টাকা

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন ৩ বাহিনীর প্রধানেরা

হঠাৎ বিদেশে শাহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সিডিএফ নিয়োগ নিয়ে বিড়ম্বনায় পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত