Ajker Patrika

গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন শাসন করবে একক কর্তৃপক্ষ, হামাস-ফাতাহের ঐকমত্য

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ৫০
Thumbnail image
গাজা শাসনে একমত হয়েছে ফাতাহ ও হামাস। ছবি: সংগৃহীত

ঐক্যবদ্ধভাবে গাজা শাসন করার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে ফিলিস্তিনের দুই স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ফাতাহ। মিসরের রাজধানী কায়রোতে উভয় পক্ষ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। সেই চুক্তির একটি অনুলিপি লেবাননের সম্প্রচারমাধ্যম আল-মায়েদিনের হাতে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, হামাস ও ফাতাহের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটি শিগগির গাজায় তাদের কার্যক্রম শুরু করবে।

সমঝোতা স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় বেসামরিক বিষয়ে শাসনের দায়িত্ব পালন করবে ‘গাজা উপত্যকা সমাজকল্যাণ কমিটি’। এই কমিটি ফিলিস্তিনি সরকারের তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। নথি অনুসারে, এই কমিটি পশ্চিম তীর, আল-কুদস ও গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনস্থ থাকবে। এর অর্থ হলো, ভবিষ্যতে গাজা উপত্যকা আর অন্যান্য ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবে না।

পক্ষগুলো একমত হয়েছে যে, এই কমিটি ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। এতে স্বাধীন ও বিশেষজ্ঞ ফিলিস্তিনি ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ছাড়া, এই কমিটি গাজা উপত্যকায় বেসামরিক সব বিষয়ে শাসন পরিচালনা করবে এবং ফিলিস্তিনি নাগরিকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বার্থ সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে। কমিটির ক্ষমতা থাকবে ফিলিস্তিনি সরকার এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সংস্থাগুলোর অধীনে। তাদের কাজ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করা হবে।

আল-মায়েদিনের কাছে আসা নথি অনুসারে, কায়রোতে সব ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি বৈঠকের পর এই কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করবে। ওই বৈঠকে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে কমিটির সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হবে। অর্থাৎ, কোনো ধরনের বাধা না থাকলে এই কমিটি শিগগির কাজ শুরু করবে।

এদিকে, এক শীর্ষস্থানীয় ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা আল-মায়েদিনকে জানিয়েছেন, কায়রোতে অনুষ্ঠিত আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধপরবর্তী গাজা শাসনের জন্য গঠিত কমিটি সরকার ও প্রশাসনিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত হবে। কমিটির সদস্যরা গাজা থেকেই নেওয়া হবে। তিনি আরও নিশ্চিত করেন যে, রামাল্লায় ফিলিস্তিনি সরকার এই কমিটির কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবে।

ফাতাহ ও হামাস উভয়েই সম্মত হয়েছে যে, কমিটি পেশাদার ও নিরপেক্ষ থাকবে এবং এতে কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, কয়েকটি আরব দেশ এই শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ফিলিস্তিনি দলগুলোর সাম্প্রতিক আলোচনায় জাতীয় ঐক্যের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এর ফলে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অভিন্ন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। চীন, মিসরসহ একাধিক দেশ এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছে। এর আগে ফিলিস্তিনের দুই অঞ্চল পশ্চিম তীর ও গাজা শাসন করত দুই কর্তৃপক্ষ। যেখানে গাজার নিয়ন্ত্রণ ছিল হামাসের হাতে এবং পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ ফাতাহর হাতে।

চলতি বছরের জুলাই মাসে ফিলিস্তিনি দলগুলো বেইজিংয়ে বৈঠক করে জাতীয় বিভক্তি নিরসনের প্রচেষ্টা এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পুনর্মিলনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। ওই বৈঠকে ফাতাহ, হামাস, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ, পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন এবং ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনসহ ১৪টি ফিলিস্তিনি দল অংশ নেয়।

বেইজিং ঘোষণারও একটি কপি আল-মায়েদিনের হাতে এসেছে। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ফিলিস্তিনের জাতীয় বিভক্তি নিরসন এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রচেষ্টা একত্রিত করার পাশাপাশি গণহত্যা বন্ধের চেষ্টা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত