Ajker Patrika

হামাস যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে ইসরায়েলকে ফের হামলার অনুমতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হামাস যোদ্ধা। ছবি: এএফপি
হামাস যোদ্ধা। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার বলেছেন, তাঁর মধ্যস্থতায় গাজায় যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, সেটির শর্ত বাস্তবায়নে হামাস ব্যর্থ হলে তিনি ইসরায়েলকে আবারও সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দিতে পারেন। তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ট্রাম্প মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘হামাস নিয়ে যা চলছে—ওটা খুব তাড়াতাড়িই ঠিক হয়ে যাবে।’

সাংবাদিক যখন জানতে চান যে, হামাস যদি নিরস্ত্রীকরণে অস্বীকৃতি জানায়, তখন কী হবে—জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি শুধু বললেই ইসরায়েল আবার সেই রাস্তায় ফিরবে। যদি ইসরায়েল যেতে পারে আর ওদের একদম ধ্বংস করে দিতে পারে, ওরা সেটা করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকেই ওদের (ইসরায়েলকে) আটকাতে হয়েছে।’

ট্রাম্প বলেন, জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফেরত পাওয়া ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’, তবে এখন হামাসকে মৃত ইসরায়েলিদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং অস্ত্র নামাতে হবে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বুধবার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে তারা গাজায় নিহত আরও দুই ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ হস্তান্তর করবে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা ক্বাসাম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে জানায়, স্থানীয় সময় রাত ১০টায় মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা চুক্তির সব শর্ত মেনে চলেছি। আমাদের হাতে থাকা সব জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিয়েছি এবং যেসব দেহাবশেষ উদ্ধার সম্ভব হয়েছে, সেগুলোও হস্তান্তর করেছি।’

হামাস আরও জানায়, অবশিষ্ট দেহাবশেষ উদ্ধার করতে ‘বিশেষ সরঞ্জাম ও বিপুল পরিশ্রম’ প্রয়োজন, এবং তারা ‘এই অধ্যায়টি শেষ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।’

গত সপ্তাহে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ইসরায়েল ও হামাস তাঁর প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা, সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি এবং ধীরে ধীরে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হবে। পরিকল্পনার প্রথম ধাপ কার্যকর হয় গত শুক্রবার।

চুক্তির অধীনে, হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ৮ জনের দেহাবশেষ হস্তান্তর করেছে। এর বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।

পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে গাজায় নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করা হবে, যেখানে হামাস থাকবে না। পাশাপাশি একটি বহুজাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠন এবং হামাসের পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত করা হবে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৭ হাজার ৯০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। লাগাতার বোমাবর্ষণে উপত্যকাটি এখন প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত