Ajker Patrika

ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা

আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪, ১৫: ৩২
ফিলিস্তিনের নতুন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা

দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোস্তফাকে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পুনর্গঠনের মার্কিন চাপের মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেন আব্বাস। 

মার্কিন শিক্ষিত অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিকভাবে স্বতন্ত্র মোস্তফার ওপর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নতুন সরকার গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশে মোস্তফার সীমিত ক্ষমতা রয়েছে। 

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই নিয়োগের কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে আব্বাস মোস্তফাকে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা প্রশাসনকে পুনরায় একত্রিত করা, সরকার, নিরাপত্তা পরিষেবা ও অর্থনীতি পুনর্গঠনে নেতৃত্ব দেওয়া এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকল্পনা করার আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফাতাহ নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ অধিকৃত পশ্চিম তীরে সীমিত স্বায়ত্তশাসনের চর্চা করতে পারে। তবে ২০০৭ সালে দলটি হামাসের কাছে গাজার নিয়ন্ত্রণ হারায়। 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রবল বিরোধিতা ও চলমান যুদ্ধের মুখেও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের শাসন আবার একত্রিত করতে চায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে আলোচনা করতে চলতি সপ্তাহেই ফাতাহ ও হামাসের মস্কোতে বৈঠক করার কথা রয়েছে। 

৬৯ বছর বয়সী মোস্তফা এর আগে বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পদসহ ফিলিস্তিনের উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৫ সালে আব্বাস মোস্তফাকে ফিলিস্তিন ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের (পিআইএফ) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেন। এই সংস্থার অধীনে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলজুড়ে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের সম্পদ ও তহবিল প্রকল্প রয়েছে। 

২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোস্তফা অঞ্চলটির অর্থনীতিবিষয়ক উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় সাত সপ্তাহের যুদ্ধ শেষে গাজা পুনর্নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি কমিটির নেতৃত্ব দেন তিনি। ওই যুদ্ধে ২ হাজার ১০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল। 

গত জানুয়ারিতে দাভোসে এক বক্তৃতায় মোস্তফা বলেন, গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের ‘বিপর্যয় ও মানবিক প্রভাব’ এক দশক আগের তুলনায় অনেক বেশি। 

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অন্তত ৩১ হাজার ৩৪১ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে এবং অঞ্চলটির ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায়ই বেশির ভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা উপত্যকাটিতে এখন খাদ্য ও খাওয়ার পানির অভাবে ধুঁকছে লাখ লাখ মানুষ।   

যুদ্ধোত্তর গাজা শাসনের জন্য বাইডেন প্রশাসন পুনর্গঠিত ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষে প্রযুক্তিবিদ ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞসহ নতুন মুখ আনার আহ্বান জানিয়েছে। তবে এটা স্পষ্ট নয় যে, আব্বাসের ঘনিষ্ঠ মিত্রের নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা নিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কারের দাবি পূরণের জন্য যথেষ্ট হবে কি না। নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হলেও সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ৮৮ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের হাতেই থাকবে। 

এদিকে ইসরায়েল বলছে, তারা এমন কোনো ফিলিস্তিনি সরকারকে কখনোই সহযোগিতা করবে না, যারা হামাস ও ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলাকে প্রত্যাখ্যান করতে অস্বীকার করে। 

দাভোসে মোস্তফা ৭ অক্টোবরের হামলাকে ‘সবার জন্য দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘তবে এটি আরও বড় সমস্যার লক্ষণ ... যে ফিলিস্তিনি জনগণ ৭৫ বছর ধরে অবিরাম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমরা এখনো বিশ্বাস করি যে ফিলিস্তিনিদের জন্য রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এগিয়ে যাওয়ার পথ। তাই আমরা আশা করি, এবার আমরা তা অর্জন করতে সক্ষম হব, যেন এই অঞ্চলের সব মানুষ নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত