Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ধোঁয়াশা, ট্রাম্প কি কিছু গোপন করছেন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, ১১: ৫৪
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ধোঁয়াশা, ট্রাম্প কি কিছু গোপন করছেন

ইরানের প্রধান তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ফোরদো, নাতান্‌জ ও ইস্পাহানে হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনটি স্থাপনাই ‘শেষ’ করে দেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের হুমকি দূর করা হয়েছে।

কয়েক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। ইসরায়েলও বারবার যুক্তরাষ্ট্রকে প্ররোচিত করার চেষ্টা করছিল। কারণ ইরানের ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংসের সক্ষমতা আছে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের বাংকার বাস্টার বোমার। আর সেই বোমা বহন করতে হয় বি-২ বোমারু বিমান দিয়ে।

গতকাল শনিবার জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরির হোয়াইটম্যান এয়ারফোর্স ঘাঁটি থেকে বিশ্বের অন্যতম আধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত গুয়াম ঘাঁটির দিকে যাত্রা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুক্ষণ আগেই ঘোষণা দেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করেছে তাঁর দেশ। তিনি বলেন, ফোরদো ‘শেষ’। এর কিছুক্ষণ পর ইরানের কৌম প্রদেশের এক কর্মকর্তা জানান, ফোরদোর একাংশ শত্রুর হামলার শিকার হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, এই বোমারু বিমান দিয়েই ইরানে হামলা হয়েছে। তবে এতে বাংকার বাস্টার ব্যবহার করা হয়েছে কি না, আর ক্ষয়ক্ষতি কেমন হয়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করছেন, ইরানের তিনটি প্রধান পরমাণু স্থান ‘শেষ’। কিন্তু ইরান ও সৌদি আরব জানিয়েছে, হামলার পর উপসাগরীয় অঞ্চলে তেজস্ক্রিয়তা বেড়ে যাওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, ফোরদো, ইস্পাহান এবং নাতান্‌জ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি বসবাসকারী বাসিন্দাদের জন্য তেজস্ক্রিয়তা সিস্টেমের ডেটা ও ফিল্ড সার্ভেতে কোনো দূষণ বা বিপদের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

তারা আরও জানিয়েছে, এই স্থাপনাগুলোর আশপাশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের জন্য ‘কোনো বিপদ নেই’। নিরাপত্তা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।

সৌদি আরবের পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় নিয়ন্ত্রণ কমিশন জানিয়েছে, ইরানে মার্কিন হামলার পর সৌদি আরব ও প্রতিবেশী উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর পরিবেশে ‘কোনো তেজস্ক্রিয় প্রভাব শনাক্ত করা যায়নি’।

এ ছাড়া ইরানি কর্মকর্তারা বলছে, ফোরদোর এমন কোনো ক্ষতি হয়নি যে সেটি সারানো সম্ভব নয়। আর যুক্তরাষ্ট্র যতই হুমকি-ধমকি দিতে থাকুক না কেন, ইরান পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরবে না।

তাঁরা বলেছেন, ফোরদো থেকে গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক সরঞ্জাম ও উপকরণ আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর এমন কোনো ক্ষতি হয়নি যে সেটি সারানো সম্ভব নয়।

এর আগে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষা থিংক ট্যাংক, ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) এবং ক্রিটিক্যাল থ্রেটস প্রজেক্ট (সিটিপি), সংঘাতের সর্বশেষ যৌথ মূল্যায়নে বলেছিল, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) একজন সিনিয়র কমান্ডার বলেছেন, পারমাণবিক উপকরণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে এই হামলার অস্পষ্টতা নিয়ে কথা বলেছেন উত্তর আটলান্টিকের সামরিক জোট ন্যাটোর সাবেক কমান্ডার। ন্যাটোর সাবেক সুপ্রিম অ্যালাইড কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ওয়েসলি ক্লার্ক সিএনএনকে বলেছেন, বি-২ বোমারু বিমানের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু অবশ্যই, লক্ষ্যবস্তুর আসলে কী ক্ষতি হয়েছে তা আমরা জানি না।

তিনি বলেন, ‘আমি শুধু আশা করি, প্রেসিডেন্ট এই গতি এবং তিনি যে আধিপত্য অর্জন করেছেন, তা এই শাসনকে (ইরান) সত্যিই চাপ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করবেন।’ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে মধ্যপ্রাচ্যে ‘নাটকীয় পরিবর্তন আনার এক অনন্য সুযোগ’ তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

‘তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলেই জুলাই যোদ্ধাকে মারধর

কারাগারে ১০৫ মন্ত্রী-এমপি

বুশেহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে, বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি

ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ও পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত