Ajker Patrika

ইরানের গতিদানব ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ’ কতটা বিধ্বংসী

আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ২০: ৪৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ষষ্ঠ দিনে আজ বুধবার ভোররাতে ইসরায়েলের ওপর দ্বিতীয় দফায় বড় ধরনের হামলা চালায় ইরান। এই হামলায় তারা ব্যবহার করে ফাত্তাহ-১ নামের হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রের কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা—এই ফাত্তাহ-১ আসলে কতটা বিধ্বংসী?

হাইপারসনিক ‘ফাত্তাহ’: গতি ও ধ্বংসক্ষমতার দানব

‘ফাত্তাহ’ (ফার্সিতে যার অর্থ ‘বিজয়ী’ বা ‘উন্মোচনকারী’) ইরানের প্রথম হাইপারসনিক মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) কর্তৃক নির্মিত। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বলতে বোঝায়, যেগুলোর গতি শব্দের গতির পাঁচগুণ বা তার বেশি এবং যেগুলো আকাশপথে চলাচলের সময় দিক পরিবর্তন করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের রাডার শনাক্তকরণ ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে ধ্বংস করাকে প্রায় অসম্ভব করে তোলে।

ফাত্তাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্রটির দৈর্ঘ্য ১২ মিটার, এটি এক ধাপে চালিত হয় এবং একবারে ২০০ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম। এর পাল্লা প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটি কঠিন জ্বালানিতে চালিত হয়। এর গতি ‘মাক-৫’ বা শব্দের গতির পাঁচগুণ—ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার ১০০ কিলোমিটার।

ইতিহাস ও উন্নয়ন

ফাত্তাহ-১-এর উৎপত্তির ইতিহাস ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অন্যতম মূল স্থপতি হাসান তেহরানি মোঘদামের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুর ১১তম বার্ষিকীতে IRGC-এর মহাকাশ শাখার প্রধান আমির আলি হাজিজাদে ঘোষণা করেন, ইরান একটি উন্নত হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কাজ সম্পন্ন করেছে। পরে ২০২৩ সালের জুন মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিজ হাতে এর নামকরণ করেন—‘ফাত্তাহ’। তেহরানের ভাষ্যমতে, এটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে একটি ‘প্রজন্মগত লাফ’।

ফাত্তাহ-১-এর ব্যবহার

যদিও চলমান সংঘাতে এই প্রথমবার ফাত্তাহ-১ ব্যবহার করা হলো, তবে এটি একেবারে নতুন নয়। গত বছর ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর ইরান যখন জেরুজালেমে হামলা চালিয়েছিল, তখনও এই ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার হয়েছিল বলে গোপন সূত্রের বরাতে জানা যায়।

আজকের হামলার সময় ইরান শুধু ফাত্তাহ-১ ব্যবহারেই থেমে থাকেনি, বরং এরপর ‘ড্রোনের ঝাঁক’ও পাঠায় ইসরায়েলের দিকে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ডেড সি অঞ্চলে দুটি ড্রোনকে তারা ভূপাতিত করেছে।

প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ইরানি কোর কমান্ডার আলি শাদমানি ও তাঁর পূর্বসূরি গোলাম আলী রাশিদ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তেল আবিব। একই সঙ্গে তেহরানে ব্যাপক বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।

এই টানটান পরিস্থিতির মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি এক বক্তব্যে বলেন, ইসরায়েলের প্রতি দয়া দেখানোর সুযোগ নেই। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে খামেনির উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা জানি সে কোথায় লুকিয়ে আছে, সে একটি সহজ লক্ষ্য। এখনই তাঁকে সরাব না, কিন্তু আমাদের ধৈর্যের সীমা ফুরিয়ে আসছে।’

কৌশলগত প্রভাব ও উদ্বেগ

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাত্তাহ-১ শুধু একটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়, বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এর উচ্চগতি, গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা ও স্বল্প সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে উৎক্ষেপণ ক্ষমতা এটিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তোলে।

যদিও কিছু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ফাত্তাহকে আসল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নয় বলে অভিহিত করেছেন, কারণ অনেক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যবস্তুতে নামার সময় হাইপারসনিক গতিতে পৌঁছায়। তবে ফাত্তাহ-১-এর প্রধান শক্তি এর গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা ও প্রতিরোধের অসুবিধা।

যদি ইরান সত্যিই ফাত্তাহ-১ ব্যবহার করে থাকে, তবে এটি মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের জন্য এক নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগের নাম। সংঘাত যখন ধীরে ধীরে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে, তখন এই ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিতি আরও অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন, আল-জাজিরা, ইরান ওয়াচ, IISS, CNBCTV 18

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশ কর্মকর্তা ৪ বার ধর্ষণ করেছে—মহারাষ্ট্রে নারী চিকিৎসকের হাতে লেখা সুইসাইড নোট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৩
ছবি: এনডিটিভি
ছবি: এনডিটিভি

ভারতের মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলায় একটি হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক নারী চিকিৎসক ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। গত পাঁচ মাসে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) তাঁকে চারবার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করে গেছেন তিনি।

ওই চিকিৎসক এসআই গোপাল বাদনের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ বাঁ হাতের তালুতে লিখে গেছেন।

ওই চিকিৎসক লিখেছেন, বাদনের লাগাতার হয়রানিই তাঁকে নিজের জীবন দিতে বাধ্য করেছে। এ ছাড়া আরও এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রশান্ত বাংকারের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ হাতে লিখে যান ওই নারী।

তাঁর হাতে লেখা ছিল, ‘পুলিশ ইন্সপেক্টর গোপাল বাদনেই আমার মৃত্যুর কারণ। সে আমাকে চারবার ধর্ষণ করেছে। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে সে আমাকে ধর্ষণ করেছে। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছে।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সাতারা জেলায় ফাল্টান মহকুমা হাসপাতালে মেডিকেল কর্মকর্তা ছিলেন ওই চিকিৎসক। আত্মহত্যার কয়েক মাস আগে গত ১৯ জুন ফাল্টান সাবডিভিশনাল অফিসের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশকে (ডিএসপি) লেখা এক চিঠিতে একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

চিঠিতে ওই চিকিৎসক ফাল্টান গ্রামীণ পুলিশ বিভাগের দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ আনেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।

চিঠিতে তিনি গোপাল বাদনে, সাবডিভিশনাল পুলিশ ইন্সপেক্টর পাটিল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইন্সপেক্টর লাদপুত্রের নাম উল্লেখ করেন।

চিঠিতে ওই চিকিৎসক বলেছিলেন, ‘চরম মানসিক চাপের মধ্যে আছি। অনুরোধ করছি, গুরুতর বিষয়টি তদন্ত করা হোক এবং দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

একাধিক সূত্র বলছে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশের নির্দেশে গোপাল বাদনেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল রাতের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মহারাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

রাজ্য কংগ্রেস নেতা বিজয় নামদেভরাও ওয়াদেত্তিবার এ ঘটনায় ক্ষমতাসীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বিজয় নামদেভরাও বলেন, ‘যখন রক্ষকই ভক্ষক হয়! পুলিশের কাজ হলো সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু তারাই যদি একজন নারী চিকিৎসককে নির্যাতন করে, ন্যায়বিচার তাহলে কীভাবে হবে? মেয়েটি যখন অভিযোগ করেছিল, তখন কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? রাজ্য সরকার বারবার পুলিশকে আড়াল করছে। ফলে পুলিশের নৃশংসতা বাড়ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেষ হলো চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মহাসম্মেলন, ইশতেহারে তিন বিষয়ে জোর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বৃহস্পতিবার শেষ হলো চার দিনব্যাপী মহাসম্মেলন। ছবি: সিনহুয়া
বৃহস্পতিবার শেষ হলো চার দিনব্যাপী মহাসম্মেলন। ছবি: সিনহুয়া

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) চার দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় কমিটির প্লেনাম (পূর্ণাঙ্গ সভা) শেষ হলো গতকাল বৃহস্পতিবার। এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দলের সাধারণ সম্পাদক প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং।

সভা শেষে প্রকাশিত ইশতেহারে চীনের পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এই ইশতেহার থেকে চীনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, সামরিক শুদ্ধি অভিযান এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির ক্ষেত্রে তিনটি প্রধান বার্তা পাওয়া যায়।

ধারণার চেয়েও বড় হতে পারে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান

প্লেনাম বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটির ২০৫ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ১৬৮ জনের উপস্থিতি চীন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে জল্পনা বাড়িয়েছে। প্লেনামের মতো গুরুত্বপূর্ণ সভায় গুরুতর কারণ ছাড়া এতো নেতার অনুপস্থিতি স্বাভাবিক নয়। জানা গেছে, একজন সদস্যের মৃত্যু এবং ১০ জন বহিষ্কারের পরও ২৬ জন ক্যাডার অনুপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, অনুপস্থিত ছিলেন কয়েক ডজন ‘বিকল্প’ প্রতিনিধি। এই বৃহৎ অনুপস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, পার্টির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা পরিদর্শন দলগুলোর সর্বশেষ ‘দুর্নীতি বিরোধী’ অভিযানে সরকারিভাবে ঘোষিত সংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অপসারিত হয়েছেন।

সেনাবাহিনীতেও চিত্রটি অত্যন্ত স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদমর্যাদার ৩৩ জন জেনারেলের মধ্যে ২২ জন প্লেনামে যোগ দেননি। যদিও ৮ জনের অপসারণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে, বাকি ১৪ জনের অনুপস্থিতি রহস্যজনক।

এই ঘটনাকে সি চিনপিংয়ের শক্তি না দুর্বলতা হিসেবে দেখা হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। এটি কি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া ক্ষমতার কেন্দ্রগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন একজন নেতার পদক্ষেপ, নাকি পদমর্যাদা নির্বিশেষে অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত একজন দৃঢ় নেতার ইঙ্গিত? তবে একটি বিষয় স্পষ্ট—পার্টির পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে এই অভিযান থামবে না। কেন্দ্রীয় নীতি গবেষণা কার্যালয়ের পরিচালক জিয়াং জিনকুয়ান জানিয়েছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবিচল দৃঢ়তা বজায় রাখা হবে, এর কোনো শেষ সীমা নেই।

প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে চীনের ঝোঁক

ইশতেহারে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে, তা হলো ‘বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত স্বয়ংসম্পূর্ণতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ অর্জন করা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য বিরোধের কারণে চীন বিশেষত কম্পিউটার চিপ এবং উন্নত সফটওয়্যার-এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে চাচ্ছে। সিপিসি-র এই পদক্ষেপের মূল কথা হলো: কোনো বিষয়ে সন্দেহ থাকলে, তা নিজেদেরই তৈরি করতে হবে।

সিপিসি নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াও এটিকে স্পষ্ট করে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণতা’ শব্দ উল্লেখ করে বলেছে, ‘দেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বৃহত্তর স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও শক্তি অর্জন করতে হবে এবং নতুন গুণগত উৎপাদনশীল শক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে।’ সি চিনপিংয়ের এই ‘নতুন গুণগত উৎপাদনশীল শক্তি’ সামরিক প্রয়োগসহ উচ্চ-স্তরের প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে বোঝায়, যা বেসরকারি খাত, রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ এবং পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) মধ্যে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে গড়ে উঠবে। এর মূল লক্ষ্য হলো—আমেরিকান নির্ভরতা ছাড়াই উন্নত প্রযুক্তি তৈরি করা।

আত্মনির্ভরতার ওপর জোর দিলেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। ছবি: সিনহুয়া
আত্মনির্ভরতার ওপর জোর দিলেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। ছবি: সিনহুয়া

স্থানীয় জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের আরেকটি বড় প্রভাব হলো রপ্তানি বাজার হারানো। চীন ঐতিহ্যগতভাবে রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় এটি অর্থনীতির জন্য একটি কঠিন ধাক্কা। অর্থনীতিবিদেরা দীর্ঘদিন ধরে পরামর্শ দিচ্ছিলেন যে চীনকে অভ্যন্তরীণ ভোগ বা ব্যয়ের ওপর বেশি জোর দিয়ে অর্থনীতিকে পুনর্গঠন করতে হবে।

আমেরিকান শুল্কের কারণে চীনে তৈরি পণ্যের রপ্তানি কিছুটা কমেছে। এই ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে, চীন এখন তার বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজারের দিকে মনোযোগ দিতে চাচ্ছে। ইশতেহার অনুযায়ী, দেশে একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরি করতে হবে এবং উন্নয়নের একটি নতুন প্যাটার্ন তৈরি করতে দ্রুত কাজ করতে হবে।

তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, আবাসন সংকট এবং উচ্চ বেকারত্বের কারণে যখন জনগণ সঞ্চয় করতে বেশি আগ্রহী, তখন তাদের কীভাবে বেশি ব্যয় করতে উৎসাহিত করা হবে—সে বিষয়ে এই বৈঠকে কোনো সুনির্দিষ্ট নতুন ধারণা উঠে আসেনি। একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরির কথা বলা হলেও, বাস্তবে তা কার্যকর করতে কী পদক্ষেপের প্রয়োজন সেটি স্পষ্ট নয়।

সূত্র: বিবিসি

বিষয়:

চীন
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একসঙ্গে দুই চাকরি: যুক্তরাষ্ট্রে ৪৯ লাখ রুপি আয়ের পর ধরা খেলেন ভারতীয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মেহুল গোস্বামী। ছবি: এনডিটিভি
মেহুল গোস্বামী। ছবি: এনডিটিভি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গোপনে ঠিকাদার হিসেবে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিযোগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩৯ বছর বয়সী মেহুল গোস্বামী নামের ওই নাগরিকের বিরুদ্ধে করদাতাদের অর্থ অপচয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পুলিশের মহাপরিদর্শকের কার্যালয় এবং সারাটোগা কাউন্টি শেরিফের কার্যালয়ের যৌথ তদন্তে জানা গেছে, মেহুলের এই অবৈধ কার্যকলাপের ফলে করদাতাদের ৫০ হাজার ডলার (প্রায় ৪০ লাখ রুপি) অপব্যবহার হয়েছে।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিসেসের জন্য দূর থেকে কাজ করতেন মেহুল। এটিই ছিল তাঁর মূল চাকরি। কিন্তু পাশাপাশি ২০২২ সালের মার্চ থেকে সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি গ্লোবালফাউন্ড্রিজে ঠিকাদার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।

একটি বেনামি ই-মেইল থেকে বিষয়টি ফাঁস হলে মেহুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।

পুলিশের মহাপরিদর্শক লুসি ল্যাং বলেন, সরকারি কর্মচারীদের সততার সঙ্গে জনগণের সেবা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেহুল গোস্বামীর এহেন আচরণ সেই আস্থার গুরুতর লঙ্ঘন। সরকারি চাকরিতে থাকার সময় দ্বিতীয় পূর্ণকালীন চাকরি করা সরকারি সম্পদ ও করদাতার অর্থের অপব্যবহার।

১৫ অক্টোবর সারাটোগা কাউন্টি শেরিফ কার্যালয় মেহুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ কোরিয়ায় বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প ও সি চিন পিং

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং। ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ায় এক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস।

বিশ্বের বৃহৎ দুই অর্থনীতির দেশের এই দুই নেতার বৈঠকের প্রস্তুতি কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছিল। তবে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় বৈঠক আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।

বৈঠকটি হলে তা হবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গতকাল বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বলা হচ্ছে, দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠক হবে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনের ফাঁকে, যা ৩১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর গিয়ংজুতে অনুষ্ঠিত হবে।

ট্রাম্প এরই মধ্যে বলেছেন, ‘আমাদের বেশ দীর্ঘ বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে। আমরা আমাদের অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ মিটিয়ে নিতে পারব এবং একসঙ্গে আমাদের বিশাল সম্ভাবনাগুলো নিয়ে কাজ করতে পারব। আমার মনে হয়, কোনো না কোনো সমাধান পাওয়া যাবে। আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন আলোচনাকে ঘিরে আজ শুক্রবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও।

ওয়াং ওয়েনতাও বলেন, আগের আলোচনাগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, দুই পক্ষের উদ্বেগের সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্পূর্ণ সম্ভব এবং এতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের সুস্থ, স্থিতিশীল ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত