আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ষষ্ঠ দিনে আজ বুধবার ভোররাতে ইসরায়েলের ওপর দ্বিতীয় দফায় বড় ধরনের হামলা চালায় ইরান। এই হামলায় তারা ব্যবহার করে ফাত্তাহ-১ নামের হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রের কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা—এই ফাত্তাহ-১ আসলে কতটা বিধ্বংসী?
হাইপারসনিক ‘ফাত্তাহ’: গতি ও ধ্বংসক্ষমতার দানব
‘ফাত্তাহ’ (ফার্সিতে যার অর্থ ‘বিজয়ী’ বা ‘উন্মোচনকারী’) ইরানের প্রথম হাইপারসনিক মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) কর্তৃক নির্মিত। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বলতে বোঝায়, যেগুলোর গতি শব্দের গতির পাঁচগুণ বা তার বেশি এবং যেগুলো আকাশপথে চলাচলের সময় দিক পরিবর্তন করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের রাডার শনাক্তকরণ ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে ধ্বংস করাকে প্রায় অসম্ভব করে তোলে।
ফাত্তাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্রটির দৈর্ঘ্য ১২ মিটার, এটি এক ধাপে চালিত হয় এবং একবারে ২০০ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম। এর পাল্লা প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটি কঠিন জ্বালানিতে চালিত হয়। এর গতি ‘মাক-৫’ বা শব্দের গতির পাঁচগুণ—ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার ১০০ কিলোমিটার।
ইতিহাস ও উন্নয়ন
ফাত্তাহ-১-এর উৎপত্তির ইতিহাস ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অন্যতম মূল স্থপতি হাসান তেহরানি মোঘদামের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুর ১১তম বার্ষিকীতে IRGC-এর মহাকাশ শাখার প্রধান আমির আলি হাজিজাদে ঘোষণা করেন, ইরান একটি উন্নত হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কাজ সম্পন্ন করেছে। পরে ২০২৩ সালের জুন মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিজ হাতে এর নামকরণ করেন—‘ফাত্তাহ’। তেহরানের ভাষ্যমতে, এটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে একটি ‘প্রজন্মগত লাফ’।
ফাত্তাহ-১-এর ব্যবহার
যদিও চলমান সংঘাতে এই প্রথমবার ফাত্তাহ-১ ব্যবহার করা হলো, তবে এটি একেবারে নতুন নয়। গত বছর ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর ইরান যখন জেরুজালেমে হামলা চালিয়েছিল, তখনও এই ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার হয়েছিল বলে গোপন সূত্রের বরাতে জানা যায়।
আজকের হামলার সময় ইরান শুধু ফাত্তাহ-১ ব্যবহারেই থেমে থাকেনি, বরং এরপর ‘ড্রোনের ঝাঁক’ও পাঠায় ইসরায়েলের দিকে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ডেড সি অঞ্চলে দুটি ড্রোনকে তারা ভূপাতিত করেছে।
প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ইরানি কোর কমান্ডার আলি শাদমানি ও তাঁর পূর্বসূরি গোলাম আলী রাশিদ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তেল আবিব। একই সঙ্গে তেহরানে ব্যাপক বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
এই টানটান পরিস্থিতির মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি এক বক্তব্যে বলেন, ইসরায়েলের প্রতি দয়া দেখানোর সুযোগ নেই। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে খামেনির উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা জানি সে কোথায় লুকিয়ে আছে, সে একটি সহজ লক্ষ্য। এখনই তাঁকে সরাব না, কিন্তু আমাদের ধৈর্যের সীমা ফুরিয়ে আসছে।’
কৌশলগত প্রভাব ও উদ্বেগ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাত্তাহ-১ শুধু একটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়, বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এর উচ্চগতি, গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা ও স্বল্প সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে উৎক্ষেপণ ক্ষমতা এটিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তোলে।
যদিও কিছু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ফাত্তাহকে আসল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নয় বলে অভিহিত করেছেন, কারণ অনেক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যবস্তুতে নামার সময় হাইপারসনিক গতিতে পৌঁছায়। তবে ফাত্তাহ-১-এর প্রধান শক্তি এর গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা ও প্রতিরোধের অসুবিধা।
যদি ইরান সত্যিই ফাত্তাহ-১ ব্যবহার করে থাকে, তবে এটি মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের জন্য এক নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগের নাম। সংঘাত যখন ধীরে ধীরে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে, তখন এই ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিতি আরও অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন, আল-জাজিরা, ইরান ওয়াচ, IISS, CNBCTV 18
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের ষষ্ঠ দিনে আজ বুধবার ভোররাতে ইসরায়েলের ওপর দ্বিতীয় দফায় বড় ধরনের হামলা চালায় ইরান। এই হামলায় তারা ব্যবহার করে ফাত্তাহ-১ নামের হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ক্ষেপণাস্ত্রের কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আন্তর্জাতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা—এই ফাত্তাহ-১ আসলে কতটা বিধ্বংসী?
হাইপারসনিক ‘ফাত্তাহ’: গতি ও ধ্বংসক্ষমতার দানব
‘ফাত্তাহ’ (ফার্সিতে যার অর্থ ‘বিজয়ী’ বা ‘উন্মোচনকারী’) ইরানের প্রথম হাইপারসনিক মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) কর্তৃক নির্মিত। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বলতে বোঝায়, যেগুলোর গতি শব্দের গতির পাঁচগুণ বা তার বেশি এবং যেগুলো আকাশপথে চলাচলের সময় দিক পরিবর্তন করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের রাডার শনাক্তকরণ ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে ধ্বংস করাকে প্রায় অসম্ভব করে তোলে।
ফাত্তাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্রটির দৈর্ঘ্য ১২ মিটার, এটি এক ধাপে চালিত হয় এবং একবারে ২০০ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম। এর পাল্লা প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটি কঠিন জ্বালানিতে চালিত হয়। এর গতি ‘মাক-৫’ বা শব্দের গতির পাঁচগুণ—ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার ১০০ কিলোমিটার।
ইতিহাস ও উন্নয়ন
ফাত্তাহ-১-এর উৎপত্তির ইতিহাস ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অন্যতম মূল স্থপতি হাসান তেহরানি মোঘদামের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুর ১১তম বার্ষিকীতে IRGC-এর মহাকাশ শাখার প্রধান আমির আলি হাজিজাদে ঘোষণা করেন, ইরান একটি উন্নত হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কাজ সম্পন্ন করেছে। পরে ২০২৩ সালের জুন মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিজ হাতে এর নামকরণ করেন—‘ফাত্তাহ’। তেহরানের ভাষ্যমতে, এটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে একটি ‘প্রজন্মগত লাফ’।
ফাত্তাহ-১-এর ব্যবহার
যদিও চলমান সংঘাতে এই প্রথমবার ফাত্তাহ-১ ব্যবহার করা হলো, তবে এটি একেবারে নতুন নয়। গত বছর ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর ইরান যখন জেরুজালেমে হামলা চালিয়েছিল, তখনও এই ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার হয়েছিল বলে গোপন সূত্রের বরাতে জানা যায়।
আজকের হামলার সময় ইরান শুধু ফাত্তাহ-১ ব্যবহারেই থেমে থাকেনি, বরং এরপর ‘ড্রোনের ঝাঁক’ও পাঠায় ইসরায়েলের দিকে। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, ডেড সি অঞ্চলে দুটি ড্রোনকে তারা ভূপাতিত করেছে।
প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ইরানি কোর কমান্ডার আলি শাদমানি ও তাঁর পূর্বসূরি গোলাম আলী রাশিদ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তেল আবিব। একই সঙ্গে তেহরানে ব্যাপক বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
এই টানটান পরিস্থিতির মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি এক বক্তব্যে বলেন, ইসরায়েলের প্রতি দয়া দেখানোর সুযোগ নেই। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে খামেনির উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা জানি সে কোথায় লুকিয়ে আছে, সে একটি সহজ লক্ষ্য। এখনই তাঁকে সরাব না, কিন্তু আমাদের ধৈর্যের সীমা ফুরিয়ে আসছে।’
কৌশলগত প্রভাব ও উদ্বেগ
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাত্তাহ-১ শুধু একটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়, বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এর উচ্চগতি, গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা ও স্বল্প সময়ের প্রস্তুতি নিয়ে উৎক্ষেপণ ক্ষমতা এটিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক করে তোলে।
যদিও কিছু আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ফাত্তাহকে আসল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নয় বলে অভিহিত করেছেন, কারণ অনেক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যবস্তুতে নামার সময় হাইপারসনিক গতিতে পৌঁছায়। তবে ফাত্তাহ-১-এর প্রধান শক্তি এর গতিপথ পরিবর্তনের সক্ষমতা ও প্রতিরোধের অসুবিধা।
যদি ইরান সত্যিই ফাত্তাহ-১ ব্যবহার করে থাকে, তবে এটি মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের জন্য এক নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগের নাম। সংঘাত যখন ধীরে ধীরে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নিচ্ছে, তখন এই ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিতি আরও অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন, আল-জাজিরা, ইরান ওয়াচ, IISS, CNBCTV 18
একের পর এক মার্কিন রণতরী ইরানের ভুখণ্ডের দিকে রওনা দিচ্ছে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর বিমানবাহীর রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড নেওয়া হচ্ছে ভূমধ্যসাগরে।
২৮ মিনিট আগেআজ বুধবার মধ্যরাতে তেহরান থেকে তিনটি উড়োজাহাজ ওমানে গেছে। এর মধ্যে ইরান সরকারের ব্যবহৃত দুটি এবং একটি বেসরকারি উড়োজাহাজ রয়েছে।
৩০ মিনিট আগেইরানের ‘পটকা ফাঁদে’ পড়েছে ইসরায়েল। এই পটকা ফাঁদ বা ডিকয় ক্ষেপণাস্ত্রের কৌশলে ধরা খেয়ে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দুর্বল হয়ে গেছে। ফলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর ক্ষমতা কমে আসছে নেতানিয়াহুর সামরিক বাহিনীর। ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর ক্ষমতা কমার এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে খোদ মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়া
১ ঘণ্টা আগে‘গোঞ্জেস্কে দারান্দে’ (Gonjeshke Darande) বা প্রিডেটরি স্প্যারো নামে পরিচিত এই হ্যাকিং গ্রুপটি ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে সাইবার হামলা চালানোর জন্য কুখ্যাত। তারা নিজেদের ‘হ্যাকটিভিস্ট’ (হ্যাকার অ্যাকটিভিস্ট) গ্রুপ হিসেবে দাবি করে। এক বছরের বেশি সময় ধরে কোনো বড় ধরনের হামলা না চালালেও, ইসরায়েলের ইরান আক্রমণে
২ ঘণ্টা আগে