Ajker Patrika

সংকটের সন্ধিক্ষণে থাকা ইরাক কি মধ্যপ্রাচ্যের পরবর্তী রণক্ষেত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৩৪
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে নতুন করে ভূকৌশলগত প্রাসঙ্গিকতা পেয়েছে ইরাক। ছবি: আল–মায়েদিনের সৌজন্যে
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে নতুন করে ভূকৌশলগত প্রাসঙ্গিকতা পেয়েছে ইরাক। ছবি: আল–মায়েদিনের সৌজন্যে

পশ্চিম এশিয়া তথা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা এখন চরমে। এই অস্থিরতার মধ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ইরাক। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মঞ্চ থেকে সরাসরি ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এতে প্রশ্ন উঠেছে—ইসরায়েলের লক্ষ্য কী, আর এই বার্তার আসল অর্থ কী?

এই ঘটনা ঘটছে এমন এক সময়ে, যখন ইরাকের ভেতরে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর কাছে অস্ত্র থাকা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। সামনে নির্বাচনও রয়েছে। তার ওপর সিরিয়া সীমান্ত থেকে আসা হুমকিও অব্যাহত। সব মিলিয়ে ইরাক এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে—বাগদাদ কি ইসরায়েলের যুদ্ধের নতুন ফ্রন্টে পরিণত হতে যাচ্ছে, নাকি টিকে থাকবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ভঙ্গুর কিন্তু কার্যকর এক ভূমিকা নিয়ে?

গত ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া বক্তৃতায় নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে ইরাকের নাম উল্লেখ করে বলেন, প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে তাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। জবাবে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন এই হুমকিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা করেন। তিনি বলেন, একজন ইরাকি নাগরিকের ওপর কোনো হামলা হলে, তা পুরো জাতির ওপর হামলার সমান ধরা হবে।

আল-মায়েদিন ইরাককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বতন্ত্র রাজনীতিক আবু মিসাক আল-মাসার নেতানিয়াহুর হুমকিকে ‘অর্থহীন’ বলে উড়িয়ে দেন। তাঁর মতে, নেতানিয়াহু দুর্বল অবস্থায় আছেন। গাজায় কোনো স্পষ্ট বিজয় তিনি আনতে পারেননি, বন্দীদের মুক্ত করতেও ব্যর্থ হয়েছেন। তাহলে তিনি কোন শক্তিতে এমন অকারণ হুমকি দিচ্ছেন? আল-মাসার বলেন, ইরাকের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন চালালে ইসরায়েল নিজেই জড়িয়ে পড়বে ব্যয়বহুল এক বিপদে।

সভরেইন্টি অ্যালায়েন্স পার্টির নেতা আম্মার আল-আজজাওয়ি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা সমর্থন না থাকলে নেতানিয়াহু এমন বক্তব্য দেওয়ার সাহসই পেতেন না। তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘে তাঁর বক্তৃতার সময় অর্ধেক হল খালি ছিল। এটি প্রমাণ করে যে, তিনি এখন দুর্বলতম অবস্থায় আছেন। ব্যর্থতা ঢাকতেই তিনি মনোযোগ অন্যদিকে ঘোরাতে চাইছেন।’

আজজাওয়ি আরও বলেন, ‘ইরাক এখন প্রতিরোধ অক্ষের মূল স্তম্ভ হয়ে উঠেছে।’ এসব গোষ্ঠী ইরাকি সমাজ ও রাজনীতির গভীরে প্রোথিত। ফলে নেতানিয়াহুর হুমকি তাদের দুর্বল করেনি, বরং নির্বাচনী সম্ভাবনা আরও শক্তিশালী করেছে। তাঁর ভাষায়, ‘ইসরায়েল ইরাকের মুখোমুখি নীরব থাকতে পারে না, কিন্তু সংঘাতের পরিণতিও সহ্য করতে পারবে না।’

ইসরায়েল বেপরোয়া বক্তব্য দিলেও বাস্তবে ইরাকের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়াবে—এমন সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। আল মায়েদিন ইরাককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজনৈতিক বিশ্লেষক আঈদ আল-হিলালি বলেছেন, ‘বাগদাদ, প্রতিরোধ গোষ্ঠী ও ওয়াশিংটনের মধ্যে হওয়া সমঝোতার কারণে এখনো তুলনামূলক শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এ সমঝোতার পেছনে আন্তর্জাতিকভাবে তেল সরবরাহের স্থিতিশীলতা আর ইরাকে বৈশ্বিক বিনিয়োগের নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’

ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে নিরস্ত্র করা বহুদিন ধরেই দেশটির রাজনীতির একটি কেন্দ্রীয় ইস্যু। এদিকে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ অক্ষকে দুর্বল করার প্রচেষ্টা তীব্রতর হয়েছে। এই কৌশলের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাগদাদকে ‘ইরান থেকে দূরে’ রাখতে চাপ বাড়িয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইরাকের চারটি প্রতিরোধ গোষ্ঠী—আল-নুজাবা মুভমেন্ট, কাতাইব সাইয়্যেদ আল-শুহাদা, আনসারুল্লাহ আল-আউফিয়া ও কাতাইব ইমাম আলী—কে তাদের কথিত সন্ত্রাসী তালিকায় যুক্ত করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আল-আজজাওয়ি বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে ইরাকি গোষ্ঠীগুলোকে দুর্বল করা ইসরায়েলের ধারাবাহিক লক্ষ্য। যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ ও রাজনৈতিক অনুপ্রবেশের মাধ্যমে তারা এই লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করেছে। তবে নিরস্ত্রীকরণের দাবি কেবল প্রচারমূলক কথাবার্তাই বলে তিনি মনে করেন। তাঁর ভাষায়, ‘একটি বা দশটি গোষ্ঠী নিরস্ত্র করলেও বাস্তবতা বদলাবে না। সব ইরাকি ইসরায়েলকে প্রত্যাখ্যান করে এবং প্রয়োজনে তারা নিজেরাই অস্ত্র তুলে নেবে।’ তাঁর মতে, ইসরায়েলি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অক্ষের কৌশলগত ঘাঁটি ইরাক। ফলে ইরাককে দুর্বল করার চেষ্টা আসলে পুরো প্রতিরোধ অক্ষকে দুর্বল করারই অংশ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক হুসেইন আল-কিনানি আল মায়েদিন ইরাককে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত ইরাকের বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। তাঁর ভাষায়, ‘মার্কিন স্বার্থই ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে প্রতিরোধ গোষ্ঠীর হামলা থামানোর যে সমঝোতা হয়েছিল, সেটিই মূল ভূমিকা রেখেছে।’ তিনি আরও বলেন, বহু ইরাকির কাছে নিরস্ত্রীকরণের ধারণাই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো কোনো সেনাবাহিনী নয়, যাদের ট্যাংক বা যুদ্ধবিমান আছে। বরং তারা জাতীয় মর্যাদা রক্ষার ইচ্ছা ও দখলদারদের মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। জোর করে অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে—যেমনটি আগেও মার্কিন সেনারা ইরাকের বিভিন্ন শহরে করেছে—তা নতুন করে গৃহযুদ্ধ ডেকে আনতে পারে।

ইসরায়েলের সরাসরি হুমকি আর দেশীয় বিতর্ক ছাড়াও ইরাককে সিরিয়া থেকেও নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী সিরিয়ার ইরাক সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করছে। এতে সীমান্ত পেরিয়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা যেমন আছে, তেমনি ইরাকের বিরুদ্ধে নতুন ইসরায়েলি অভিযানের অজুহাতও তৈরি হতে পারে।

এ অবস্থায় বাগদাদ সতর্ক কূটনৈতিক ভঙ্গি বজায় রেখেছে। একদিকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে, অন্যদিকে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনও ধরে রাখছে। এতে দেশীয় শান্তি বজায় থাকছে, পাশাপাশি বাইরের পদক্ষেপও হিসেব করে নেওয়া যাচ্ছে। আল-কিনানি বলেন, ‘বিশেষ করে, ইরাক-সিরিয়া সীমান্তকে স্থিতিশীল রাখার জন্য একটি সুস্পষ্ট আন্তর্জাতিক ইচ্ছা রয়েছে। এটা এই কারণে নয় যে ওয়াশিংটন হঠাৎ প্রতিরোধ গোষ্ঠীর পক্ষে গেছে। আসল কারণ হলো, ইসরায়েল ইতিমধ্যেই একাধিক ফ্রন্টে চাপে রয়েছে।’

কিনানি আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার আল-হাওল শিবির এই দুর্বলতাকেই উন্মোচিত করছে। সেখানে হাজার হাজার সাবেক আইএস যোদ্ধা ও তাদের পরিবার বসবাস করছে। এই শিবির এখনো চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়ানোর বড় কেন্দ্র হিসেবে রয়ে গেছে, যা ইরাকের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। শিবিরটি নিয়ন্ত্রণ করছে কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এবং এর বেসামরিক শাখা নর্থ অ্যান্ড ইস্ট সিরিয়া স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসন।

এই ইস্যুতে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সশস্ত্রবাহিনী শাখা সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) বৈঠকের পর কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার বলেন, সিরিয়ার আল-হাওল শিবিরে আটক ও বাস্তুচ্যুত বিদেশি নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরানো এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পদক্ষেপ। তাঁর মতে, এ উদ্যোগ আইএস দমনে কার্যকর হবে এবং তাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে সাহায্য করবে।

বাগদাদ এই শিবির ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করলেও বাস্তবে নানা জটিলতা আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশি সরকারগুলো নিজেদের নাগরিককে ফেরাতে রাজি নয়। এতে রাজনৈতিক ও লজিস্টিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি ইঙ্গিত করছে—ইরাক এখন এমন এক চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে নিরাপত্তা হুমকি ঘরোয়া, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক—তিন স্তরেই সক্রিয়।

বর্তমানে ইরাকের অবস্থান নাজুক। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর হুমকি বেপরোয়া হলেও তা সরাসরি সামরিক পদক্ষেপে গড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে না। কারণ, বৈশ্বিক তেলের প্রবাহে ইরাকের গুরুত্ব অনেক। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এক ধরনের ভারসাম্যও টিকে আছে। অন্যদিকে ইরাকে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ, তারা শুধু সমাজের ভেতরেই মিশে নেই, বরং দখলদারিত্ব আর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ শক্তি হিসেবেও কাজ করছে।

সিরিয়া সীমান্তও ইরাকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এ ঝুঁকি তারা পুরোপুরি দূর করতে পারবে না। কেবল কূটনীতি আর সতর্ক নিরাপত্তা নীতি দিয়ে সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ইরাক একই সঙ্গে দুর্বল ও অপরিহার্য। তাদের স্থিতিশীলতা নির্ভর করছে ভেতরের শক্তি, প্রতিরোধের গ্রহণযোগ্যতা এবং বিশ্ব পরিমণ্ডলের স্বীকৃতির ওপর। বাগদাদ এখন নতুন আঞ্চলিক সংঘাতের ময়দান হবে, নাকি স্থিতিশীলতার কেন্দ্র হয়ে উঠবে—তা শুধু ইরাকের সিদ্ধান্তে নয়, বরং তাদের মিত্র ও প্রতিপক্ষের হিসাব-নিকাশের ওপরও নির্ভর করছে।

লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল–মায়েদিন থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাতিল হচ্ছে শত শত ফ্লাইট, তবু চড়ামূল্যে টিকিট বিক্রি করছে ইন্ডিগো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৬
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়। ছবি: পিটিআই

ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগোর শত শত ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে হাজারো যাত্রী। দেশটির আকাশপথে দেখা দিয়েছে বড় রকমের শিডিউল বিপর্যয়। এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা গেছে, ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এত ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।

কিন্তু এই বিপর্যয় সত্ত্বেও ইন্ডিগো তাদের পুরো বিমানবহর গ্রাউন্ড করেনি বা প্রতিদিন পরিচালিত ২ হাজার ২০০-এর বেশি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট বাতিলও করেনি। ফলে বিলম্ব ও বিঘ্নের কারণে গতকাল শুক্রবার ১ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়।

বাতিলের তালিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল দিল্লি থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো। কলকাতা-গুয়াহাটি, চেন্নাই-কোয়েম্বাটুর রুট এবং যেসব রুট নন-মেট্রো শহরগুলোকে যুক্ত করে যেসব ফ্লাইট রুট রয়েছে, সেগুলো চলছে। তবে সেগুলোতে কমেছে ফ্লাইটের সংখ্যা, বেড়েছে বিলম্ব।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে প্রতিদিন এত ফ্লাইট বাতিলের পরও তারা কেন এবং কীভাবে এত টিকিট বিক্রি করছে আর ভাড়াই বা এত বেশি কেন?

সাধারণত এয়ারলাইনসগুলো প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই ফ্লাইট বাতিল করে না, যদি না পুরো সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইন্ডিগোর ক্ষেত্রে এই বিঘ্নগুলো দৈনন্দিন ভিত্তিতে সামলানো হচ্ছে। অর্থাৎ আজকের ফ্লাইট বাতিল হতে পারে, কিন্তু তিন দিন বা এমনকি দুই দিন পরের ফ্লাইটগুলোর বুকিং খোলা আছে, এই আশায় যে ওই সময়ের মধ্যে কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, ফ্লাইটগুলো বাতিল করা ছিল এককালীন ‘সিস্টেম রিবুট’-এর অংশ, যাতে বিমান ও ক্রু পুনর্বিন্যস্ত করা যায় এবং নিয়মিত সময়সূচি পুনরায় চালু করা যায়। তারা আশা করছে, ধাপে ধাপে অপারেশন স্বাভাবিক হবে এবং ১০-১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

ভারতের বাণিজ্যিক অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন বাজারের অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে ইন্ডিগো। কিছু হিসাবে ৬০ শতাংশের বেশি। তাই বিপুলসংখ্যক ফ্লাইট বাতিলের ফলে মুহূর্তেই সব এয়ারলাইনসের মোট আসনের সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু যাত্রীদের চাহিদা একই রয়ে গেছে।

আর চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এই আকস্মিক ও চরম বৈপরীত্যের কারণে টিকিটের মূল্যও উচ্চ হারে বাড়ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লি-মুম্বাই ওয়ান-ওয়ে ভাড়া বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা আর রিটার্ন ভাড়া ছুঁয়েছে ৬০ হাজার। অন্যদিকে দিল্লি-বেঙ্গালুরু টিকিটের দাম ১ লাখ টাকায় পৌঁছে যায়। বেঙ্গালুরু-মুম্বাই সর্বোচ্চ ভাড়া থাকে প্রায় ৭ হাজার টাকা, যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার টাকায়।

এ অবস্থায় অনেকেই বলছেন, এখন মনে হচ্ছে দিল্লি-লন্ডন টিকিটই যেন সস্তা!

নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলছেন, সংকট বা জরুরি অবস্থার সময়ে এয়ারলাইন ও সরকার কি এসব অ্যালগরিদম নিষ্ক্রিয় করবে না? যাত্রীদের কাছ থেকে আরও বেশি টাকা আদায় করার বদলে যারা ইতিমধ্যে অর্থ প্রদান করেছেন তাদের পরিস্থিতি বিবেচনা করা কি জরুরি নয়?

বিঘ্নের সময়ে কোনো ফ্লাইটে ক্রু পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বা বিমান ঘুরে আসার (aircraft rotation) প্রক্রিয়া ব্যর্থ না হওয়া পর্যন্ত এয়ারলাইনস সেই ফ্লাইটের সিট বিক্রি চালিয়ে যেতে পারে। শুধু এসব নিশ্চিত হওয়ার পরই ফ্লাইটটিকে ‘বাতিল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ফলস্বরূপ এয়ারলাইনের সিস্টেম এমনভাবে তৈরি, যদি না পরিচালনা করা যাবে না এমন নিশ্চিত হওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলে। টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হবে কেবল তখনই, যদি ইন্ডিগো নিজে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় বা বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ সেবা স্থগিতের নির্দেশ দেয়। যার কোনোটিই এখনো ঘটেনি।

ইন্ডিগো জানিয়েছে, শনিবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা হচ্ছে, তবে পুরোপুরি স্থিতিশীল হতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩০
তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি
তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়েছে। ছবি: এনডিটিভি

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় নতুন করে ‘বাবরি মসজিদ’ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবির। আজ শনিবার এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা রয়েছে। এ আয়োজনে সৌদি আরব থেকে আলেমদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ আয়োজনকে ঘিরে ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না করা হচ্ছে বিরিয়ানি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেস ও বিজেপি ঘুরে তৃণমূলে আসেন মুর্শিদাবাদের প্রভাবশালী নেতা। গত বৃহস্পতিবার দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যেই তিনি এই মসজিদ নিয়ে উঠেপড়ে লেগে আছেন। বহিষ্কার নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া বা প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে কোনোভাবেই বিচলিত নন এই নেতা।

হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের জানান, শনিবার মোরাদিঘির কাছে ২৫ বিঘা জায়গাজুড়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ জড়ো হবে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত হবে এখানে।

হুমায়ুন কবির আরও জানান, সকালে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিশেষ কনভয়ে করে সৌদি আরব থেকে দুজন আলেম আসবেন।

রাজ্যের একমাত্র উত্তর-দক্ষিণ মহাসড়ক এনএইচ-১২ লাগোয়া বিশাল এক এলাকায় চলছে এই আয়োজন। মুর্শিদাবাদের সাতটি কেটারিং প্রতিষ্ঠানকে শাহি বিরিয়ানি রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হুমায়ুন কবিরের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী জানান, অতিথিদের জন্য প্রায় ৪০ হাজার প্যাকেট এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য আরও ২০ হাজার প্যাকেট তৈরি করা হচ্ছে। শুধু খাবারের ব্যয়ই ৩০ লাখ রুপির বেশি হয়ে যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে আয়োজনের বাজেট ৬০-৭০ লাখ রুপিতে পৌঁছাবে বলে জানান তিনি।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের জন্য ধানখেতের ওপর ১৫০ ফুট লম্বা ও ৮০ ফুট চওড়া এক বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এ মঞ্চে প্রায় ৪০০ অতিথির বসার ব্যবস্থা থাকবে। এর নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ রুপি।

আয়োজকেরা জানান, প্রায় ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে ২ হাজার জন শুক্রবার ভোর থেকেই কাজ শুরু করেছেন। তাঁরা এই বড় জনস্রোত নিয়ন্ত্রণ, প্রবেশপথ সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা ও এনএইচ-১২-তে যাতে জ্যাম না লেগে যায়, সেই বিষয়টি খেয়াল রাখবেন।

হুমায়ুন কবির জানান, সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হবে। এরপর দুপুর ১২টায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠিত হবে।

হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকতা দুই ঘণ্টা আগে থেকেই শুরু হবে। পুলিশি নির্দেশনা অনুযায়ী বিকেল ৪টার মধ্যে মাঠ খালি করা হবে।’

এদিকে এত বিশাল আয়োজন প্রশাসনের উদ্বেগও বাড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশনার পর জেলা পুলিশ হুমায়ুন কবিরের দলের সঙ্গে এক দফা আলোচনায় বসে। জনশৃঙ্খলা বজায় এবং এনএইচ-১২–তে যান চলাচল ঠিক রাখতে বৈঠক করে তারা।

একজন জ্যেষ্ঠ জেলা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বেলডাঙা ও রানীনগর থানার আওতাজুড়ে প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান উদ্বেগ হচ্ছে জাতীয় মহাসড়ক সচল রাখা। সদর দপ্তর থেকে অতিরিক্ত ফোর্স এসে গেছে। একাধিক ডাইভারশন পরিকল্পনা প্রস্তুত আছে।’

মুর্শিদাবাদের অন্যতম বড় মহাসড়ক এনএইচ-১২-তে এই বিশাল আয়োজনের কারণে যানজট ও জনজট তৈরি হতে পারে—এ আশঙ্কায় আছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

বলা হচ্ছে, এই মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ তৃণমূল কংগ্রেসের ভেতরে অস্বস্তি তৈরি করছে। হুমায়ুন কবিরের জন্য এই আয়োজন একদিকে যেমন জনসমাবেশ গঠনের পরীক্ষা, তেমনি একপ্রকার প্রতিরোধ প্রদর্শনও।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া এবং নিরাপত্তাবলয়ের চিন্তা উড়িয়ে দিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মানুষ আসবে, কারণ এটি এই এলাকার জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীমান্তে ফের সংঘাতে জড়াল পাকিস্তান ও আফগান তালেবান, নিহত ৪

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০০
উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গোলাম খান এলাকার সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর টহল। ছবি: এএফপি
উত্তর ওয়াজিরিস্তানের গোলাম খান এলাকার সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর টহল। ছবি: এএফপি

কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তালেবান বাহিনীর মধ্যে নতুন করে সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষই এই সংঘর্ষের জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে।

২ হাজার ৫৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তরেখা বরাবর অবস্থিত আফগানিস্তানের শহর স্পিন বোলদাক থেকে বাসিন্দারা সারা রাত ধরে পালিয়ে গেছেন। কান্দাহার শহরের একটি মেডিকেল সূত্র বিবিসি পশতুকে জানিয়েছে, স্থানীয় হাসপাতাল চারজনের মরদেহ গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের দিক থেকে তিনজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

উভয় পক্ষই রাতভর চার ঘণ্টার এই সংঘর্ষের কথা নিশ্চিত করেছে। তবে কে প্রথমে গুলি চালায়, তা নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মুখপাত্র মোশাররফ জাইদি তালেবানকে ‘বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ’-এর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাৎক্ষণিক, উপযুক্ত এবং তীব্র জবাব দিয়েছে। পাকিস্তান তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ সতর্ক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

অন্যদিকে, তালেবানের এক মুখপাত্রের দাবি, পাকিস্তান ‘আবারও হামলা শুরু করেছে’ এবং তাঁরা জবাব দিতে বাধ্য হয়েছেন।

সংঘর্ষের পর প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক আফগান নাগরিক হেঁটে ও যানবাহনে করে স্পিন বোলদাক থেকে পালাচ্ছেন। আশপাশের শহরগুলোর বাসিন্দারাও নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন।

এই সংঘাত এমন এক সময়ে শুরু হলো, যখন দুই মাসেরও কম সময় আগে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর এটি ছিল দুই পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াইয়ের সমাপ্তি, যদিও তারপর থেকে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে রয়েছে।

ইসলামাবাদ সরকার দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানের শাসক তালেবানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে। এই গোষ্ঠীগুলো প্রায়ই পাকিস্তানে হামলা চালায়। তবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজস্ব ব্যর্থতার’ জন্য পাকিস্তান অন্যকে দোষারোপ করে বলে অভিযোগ করে এসেছে।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদল বৃহত্তর বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সৌদি আরবে চতুর্থ দফা আলোচনায় মিলিত হয়েছিল। যদিও কোনো চুক্তি হয়নি, তবে সূত্র জানায়, উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে। সেই ঐকমত্য সত্ত্বেও, এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত আঞ্চলিক অস্থিরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শশী থারুর কি কংগ্রেস ছাড়ছেন, জবাবে যা বললেন তিনি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ০০
ভারতের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। ফাইল ছবি
ভারতের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। ফাইল ছবি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজে একমাত্র কংগ্রেস নেতা হিসেবে শশী থারুর আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এতে দলের অভ্যন্তরে এবং রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। লোকসভা ও রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতাদের (রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে) আমন্ত্রণ না জানানোর আবহে শশী থারুরের এই যোগদান নিঃসন্দেহে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। থারুর নিজেই এই নৈশভোজকে ‘চমৎকার’ বলে বর্ণনা করেছেন।

থারুর স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁর এই আমন্ত্রণের নেপথ্যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই; বরং তাঁর পদাধিকারের গুরুত্ব রয়েছে। তিনি বর্তমানে বিদেশবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান। এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শশী থারুর বলেন, ‘কিছুদিন পর আবার রাষ্ট্রপতি ভবনে এলাম। আমার মনে হয়, বেশ কিছু বছর ধরে একটি ভিন্ন মনোভাব ছিল, কিন্তু এবার তারা অন্য কণ্ঠস্বরদের জন্য একটু বেশি দরজা খুলে দিতে রাজি হয়েছে। অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক যেহেতু সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দেখভাল করে, তাই আলাপ-আলোচনার পরিবেশ এবং কথোপকথনের কিছু অন্তর্দৃষ্টি পাওয়া সহায়ক। এই কারণেই আমি এখানে এসে খুব খুশি। এর চেয়ে বেশি বা কম কিছু নয়।’

থারুর আরও গর্বের সঙ্গে স্মরণ করেন যে প্রায় ২০ বছর আগে ভূরাজনৈতিক সংহতি নিয়ে তিনি যে শব্দটি তৈরি করেছিলেন, তা আজ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

তবে বিরোধী দলনেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে দলের নেতা পবন খেড়া এবং জয়রাম রমেশ যে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সে প্রসঙ্গে থারুর বলেন, আমন্ত্রণ জানানোর ভিত্তি সম্পর্কে তিনি অবগত নন, কিন্তু আমন্ত্রিত হয়ে তিনি অবশ্যই সম্মানিত।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে শশী থারুরকে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে। এটি তাঁর নিজ দলের অসন্তোষ বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে থারুর সরকারের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে তাঁর নীতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচনী এলাকার উন্নতির জন্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করা একটি ভিন্ন আলোচনা, যার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে আমন্ত্রিত হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

শশী থারুর বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রশ্নে আপনি আপনার বিশ্বাস বা নীতিগুলো বিসর্জন দেন না, বরং আপনি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে বের করেন। গণতন্ত্রের একটি অংশ হলো সরকার এবং বিরোধী দলের মধ্যে সাধারণ ভিত্তি খুঁজে নিয়ে কাজ করা। আমরা কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করি, কিছু বিষয়ে একমত, এবং যেখানে আমরা একমত, সেখানে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো কূটনৈতিক মিশনে তাঁকে অন্তর্ভুক্ত করার ঘটনা কংগ্রেসের জন্য বারবার অস্বস্তির কারণ হয়েছে। এই আবহে কেরালার তিরুবনন্তপুরমের এই সংসদ সদস্য কি কোনো বড় রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে চলেছেন?

এই জল্পনার জবাবে থারুর একটি পরিমিত এবং রহস্যময় উত্তর দেন: ‘আমি জানি না কেন এই প্রশ্নটি করতে হবে। আমি কংগ্রেস পার্টির একজন সংসদ সদস্য। আমি নির্বাচিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট কষ্ট করেছি। অন্য কিছু হতে গেলে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা এবং বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করতে হবে।’

থারুর দৃঢ়ভাবে জানান, ভোটারদের প্রতি তাঁর দায়িত্ব সবার আগে। তিনি বলেন, ‘ভোটারদের এবং আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতি আমার বাধ্যবাধকতা পূরণের জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এমনকি নৈশভোজের আগে কিছু কথোপকথনেও আমি আমাদের সরকারের কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে আমার নির্বাচনী এলাকার জন্য নির্দিষ্ট কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছিলাম। জনগণের জন্য কাজ আদায় করার এটাই রাজনৈতিক জীবনের মূল চালিকাশক্তি বা লাইফ ব্লাড।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপির জেলা ও নগর আহ্বায়ক দুই মেরুতে

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

স্বপ্নের দেশে যাত্রা: এক মাস ধরে যোগাযোগ বন্ধ, অবশেষে বাড়িতে এল নৌকাডুবির খবর

এ বছর জীবনযাত্রার মানে সেরা ১০ দেশের নাম জেনে নিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত