Ajker Patrika

একনজরে ইসরায়েলের আজকের হামলায় নিহত ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ১০ ব্যক্তি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ২২: ০৭
নিহত বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি, ফেরেইদুন আব্বাসি ও জেনারেল গোলামালি রাশিদের ছবি হাতে তেহরানে ইরানিদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি, ফেরেইদুন আব্বাসি ও জেনারেল গোলামালি রাশিদের ছবি হাতে তেহরানে ইরানিদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

আজ শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের চালানো হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক কর্মসূচির শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এই হামলাকে বিশ্লেষকেরা ইরানের প্রতিরক্ষা কাঠামো ও পরমাণু কর্মসূচির ওপর একটি গুরুতর আঘাত হিসেবে দেখছেন। নিচে নিহত ব্যক্তিদের নাম ও তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা হলো—

সামরিক জেনারেলেরা

সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি: ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ও সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক কমান্ডার ছিলেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি। তিনি ইরানের প্রতিরক্ষা নীতিমালার কেন্দ্রে ছিলেন এবং অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর মোকাবিলায় মুখ্য ভূমিকা পালন করতেন।

জেনারেল হোসেইন সালামি: ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার। এই বাহিনী ইরানের প্রধান সামরিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা থেকে শুরু করে আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে অত্যন্ত সক্রিয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ: আইআরজিসির বিমানবাহিনীর কমান্ডার। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।

জেনারেল গোলামালি রাশিদ: সশস্ত্র বাহিনীর উপসর্বাধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। প্রতিরক্ষা কৌশল ও সামরিক পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর।

পরমাণুবিজ্ঞানীরা

ফেরেইদুন আব্বাসি: ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান ও পরমাণু পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি ডিগ্রিধারী। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে তাঁর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি: ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। তিনি আগে শাহিদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একজন খ্যাতনামা অধ্যাপক।

আবদুল হামিদ মিনুচেহর: পারমাণবিক প্রকৌশলে পিএইচডি ডিগ্রিধারী, শাহিদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক প্রকৌশল অনুষদের ডিন ছিলেন। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর দক্ষতা ও নিরাপত্তা বাড়াতে গবেষণা করতেন।

আহমদ রেজা জুলফাঘারি: শাহিদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পারমাণবিক প্রকৌশলের অধ্যাপক। তাঁর গবেষণা মূলত জ্বালানি চক্র ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীভূত ছিল।

আমির হোসেইন ফাঘিহি: শাহিদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের সদস্য এবং পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (এইওআই) সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পারমাণবিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মোতাল্লেবজাদেহ: একজন পরমাণুবিজ্ঞানী, যিনি তাঁর স্ত্রীসহ হামলায় নিহত হয়েছেন। তিনি একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর গবেষণা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই হামলার ফলে ইরানের সামরিক নেতৃত্ব ও পারমাণবিক কর্মসূচিতে একটি বড় ধাক্কা লেগেছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মত দিচ্ছেন। এটি শুধু একটি প্রতীকী আঘাত নয়, বরং ইরানের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ কৌশলের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান কী পদক্ষেপ নেয়, সে দিকেই এখন নজর বিশ্বসম্প্রদায়ের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত