
মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
ইয়াজিদি কিশোরী রোজা। উত্তর ইরাকের সিনজার শহরে জন্ম তার। শহরটি ধর্মীয় ইয়াজিদি সংখ্যালঘুদের ছিটমহল হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালে রোজার বয়স ছিল মাত্র এগারো, তখন একদিন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায় রোজাকে। ২০১৪ সালের সেই দিনে শুধু রোজাকেই তুলে নিয়ে যায়নি আইএস বাহিনী, তুলে নিয়ে গিয়েছিল আরও কয়েক হাজার ইয়াজিদি নারীকে।
সিনজার শহর থেকে কিশোরী রোজাকে সিরিয়ার নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। শুধু একবার নয়, একাধিকবার বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করা হয় তাকে। শুরু হয় বন্দী জীবন, জিম্মি জীবন, ভয়াবহ নির্যাতনের জীবন।
সময় গড়াতে থাকে। কিশোরী থেকে তরুণী হয়ে ওঠেন রোজা। বয়স হয়ে যায় আঠারো। কিন্তু নির্যাতনের সূর্য অস্তমিত হয় না তাঁর জীবন থেকে। আঠারো বছর বয়স হতে হতে কতবার যে তাকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, তা আজও আঙুলে গুণে শেষ করতে পারেন না। এর মধ্যে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয় তাঁর। এক সময় সেই ছেলেটিকেও হারিয়ে ফেলেন। আজও তাকে খুঁজে পাননি রোজা। জীবন থেকে কত কিছু হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে স্থানীয় কুর্দি উপভাষা কুরমাঞ্জি, যে ভাষায় তিনি এক সময় কথা বলতেন, সেই ভাষায় এখন খুব একটা কথা বলতে পারেন না। প্রায় ভুলে গেছেন মাতৃভাষা, কিন্তু ভোলেননি তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের দিনগুলো।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে আইএস বাহিনী আপাত পরাজিত হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আইএস যোদ্ধাদের। সেই সঙ্গে তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় আটক শিবিরে। সে সময় কপালগুণে পালিয়ে যেতে সক্ষম হোন রোজা। কিন্তু পালিয়ে আর যাবেন কোথায়? বাড়িতে? বাড়ি যেন কোথায়? রোজা ভাবতে থাকেন, সেই সিনজার শহর কি এখনো তেমন আছে? মা–বাবা কি বেঁচে আছে? সেই ছোট্ট ছিমছাম বাড়িটা কি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে? রোজা ভেবে কূল পান না, তিনি বাড়িতে ফিরবেন কী করে, রাস্তা তো চিনেন না। যদিও বা একে ওকে জিজ্ঞেস করে রাস্তা চিনে নেওয়া যায়, কিন্তু এই মুখ তিনি নিজ সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখাবেন কি করে! ডুকরে কেঁদে ওঠেন রোজা বারাকাত।
নানা পথ ঘুরে অবশেষে রোজার ঠাঁই হয় সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামের তুজুর গোষ্ঠীর এক আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, ‘আমার সঙ্গে আরও যারা আইএস শিবিরে বন্দী ছিল, তারা বছরের পর পর বছর ধরে আমাকে বলেছে যে আমি ফিরে গেলে আমাকে আমার সম্প্রদায় কখনোই গ্রহণ করবে না। আমি তাদের কথা বিশ্বাস করেছি।’
ইয়াজিদি ও সিরীয় কুর্দি কর্মকর্তারা বলেন, আইএস বাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের ইয়াজিদি সম্প্রদায় কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে সত্যিই মতভেদ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার ইয়াজিদি সংগঠন ইয়াজিদি হাউসের কো-চেয়ার ফারুক তুজু বলেন, ‘১২ বছর বয়সে ধর্ষিত হওয়া শিশুটির কাছ থেকে আপনি কী আশা করেন? তারা এত বেশি আঘাত পেয়েছে, এত বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে যে, তারা এই পৃথিবীর ওপর থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। এ পৃথিবীর কোথাও নেই তারা।’
সাক্ষাৎকারে রোজা নির্যাতনের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা এক কথায় ভয়াবহ। তিনি বলেন, ‘সর্বপ্রথম আমাকে যার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আমার বাবার চেয়েও বয়সে বড় এক ব্যক্তি। তিনি আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন। এরপর তিনি আমাকে বিক্রি করে দেন অন্য একজনের কাছে।’
এরপর এক শুভাকাঙ্ক্ষী রোজাকে পরামর্শ দেন, তিনি যদি ইসলামে ধর্মান্তরিত হোন এবং একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তাহলে এভাবে আর বিক্রি হতে হবে না। বিক্রি হওয়া এড়াতে রোজা ধর্মান্তরিত হোন এবং আইএস যোদ্ধাদের খাবার সরবরাহ করত এমন একজন লেবানিজকে বিয়ে করেন।
রোজা বলেন, ‘এই লেবানিজ ভদ্রলোক অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো ছিলেন। তার সঙ্গে আমি আইএসের রাজধানী রাক্কা শহরে বাস করতাম। সে সময় ‘হুদ’ নামে একটি পুত্র সন্তান হয় আমাদের।’
২০১৯ সালের দিকে আইএসের শাসন যখন ভেঙে পড়ছিল, তখন রোজা তার স্বামীর সঙ্গে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেইর এল-জোরে পালিয়ে যান। সেখান থেকে আবার পালিয়ে যান বাঘৌজ শহরে। এই শহরটি আইএসের শেষ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক বাহিনী এক সময় বাঘৌজকে ঘিরে ফেলে এবং নারী ও শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়।
এই সুযোগ রোজা গ্রহণ করতে পারতেন এবং নিজেকে ইয়াজিদি পরিচয় দিয়ে নিরাপত্তা চাইতে পারতেন। কিন্তু তার পরিবর্তে, তিনি হুদকে আঁকড়ে আইএস যোদ্ধাদের অন্যান্য স্ত্রীদের সঙ্গে শহর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এই সিদ্ধান্তই কাল হয় রোজার জীবনে। পালাতে গিয়ে তার স্বামী নিহত হয়। হারিয়ে ফেলেন সন্তান। সে আদৌ বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, জানেন না রোজা। বিশ্বাস করতে চান, তার সন্তান হুদ এখনো বেঁচে আছে এই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও।
বাঘৌজ থেকে পালিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিবে আইএস যোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রীদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন রোজা বারাকাত। সেখানে একজন চোরাকারবারির সাহায্য নিয়ে তিনি দেইর এল-জোর শহরে চলে যান এবং সেখান থেকে তুরস্কে পালিয়ে যান। তুরস্কে একটি পোশাকের বাজারে কাজ জুটিয়ে নেন রোজা বারাকাত। কিন্তু গত মাসে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ধরে ফেলে। নানা জিজ্ঞাসাবাদের পর রোজাকে সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামে একটি নিরাপদ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রোজা এখনো সেখানেই আছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, তিনি আর ইরাকের সিনজারে ফিরে যেতে চান না। তাঁর ধারণা, সিনজারে তাঁর পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোজা বারাকাত বলছিলেন, ‘সেখানে ফিরে যাওয়ার কী আছে! আমার এখন নিজেকে সময় দেওয়া দরকার।’
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, আরব নিউজ, এবিসি নিউজ, নাইন নিউজ ডট কম ও ইয়াহু নিউজ

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
ইয়াজিদি কিশোরী রোজা। উত্তর ইরাকের সিনজার শহরে জন্ম তার। শহরটি ধর্মীয় ইয়াজিদি সংখ্যালঘুদের ছিটমহল হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালে রোজার বয়স ছিল মাত্র এগারো, তখন একদিন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায় রোজাকে। ২০১৪ সালের সেই দিনে শুধু রোজাকেই তুলে নিয়ে যায়নি আইএস বাহিনী, তুলে নিয়ে গিয়েছিল আরও কয়েক হাজার ইয়াজিদি নারীকে।
সিনজার শহর থেকে কিশোরী রোজাকে সিরিয়ার নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। শুধু একবার নয়, একাধিকবার বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করা হয় তাকে। শুরু হয় বন্দী জীবন, জিম্মি জীবন, ভয়াবহ নির্যাতনের জীবন।
সময় গড়াতে থাকে। কিশোরী থেকে তরুণী হয়ে ওঠেন রোজা। বয়স হয়ে যায় আঠারো। কিন্তু নির্যাতনের সূর্য অস্তমিত হয় না তাঁর জীবন থেকে। আঠারো বছর বয়স হতে হতে কতবার যে তাকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, তা আজও আঙুলে গুণে শেষ করতে পারেন না। এর মধ্যে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয় তাঁর। এক সময় সেই ছেলেটিকেও হারিয়ে ফেলেন। আজও তাকে খুঁজে পাননি রোজা। জীবন থেকে কত কিছু হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে স্থানীয় কুর্দি উপভাষা কুরমাঞ্জি, যে ভাষায় তিনি এক সময় কথা বলতেন, সেই ভাষায় এখন খুব একটা কথা বলতে পারেন না। প্রায় ভুলে গেছেন মাতৃভাষা, কিন্তু ভোলেননি তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের দিনগুলো।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে আইএস বাহিনী আপাত পরাজিত হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আইএস যোদ্ধাদের। সেই সঙ্গে তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় আটক শিবিরে। সে সময় কপালগুণে পালিয়ে যেতে সক্ষম হোন রোজা। কিন্তু পালিয়ে আর যাবেন কোথায়? বাড়িতে? বাড়ি যেন কোথায়? রোজা ভাবতে থাকেন, সেই সিনজার শহর কি এখনো তেমন আছে? মা–বাবা কি বেঁচে আছে? সেই ছোট্ট ছিমছাম বাড়িটা কি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে? রোজা ভেবে কূল পান না, তিনি বাড়িতে ফিরবেন কী করে, রাস্তা তো চিনেন না। যদিও বা একে ওকে জিজ্ঞেস করে রাস্তা চিনে নেওয়া যায়, কিন্তু এই মুখ তিনি নিজ সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখাবেন কি করে! ডুকরে কেঁদে ওঠেন রোজা বারাকাত।
নানা পথ ঘুরে অবশেষে রোজার ঠাঁই হয় সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামের তুজুর গোষ্ঠীর এক আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, ‘আমার সঙ্গে আরও যারা আইএস শিবিরে বন্দী ছিল, তারা বছরের পর পর বছর ধরে আমাকে বলেছে যে আমি ফিরে গেলে আমাকে আমার সম্প্রদায় কখনোই গ্রহণ করবে না। আমি তাদের কথা বিশ্বাস করেছি।’
ইয়াজিদি ও সিরীয় কুর্দি কর্মকর্তারা বলেন, আইএস বাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের ইয়াজিদি সম্প্রদায় কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে সত্যিই মতভেদ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার ইয়াজিদি সংগঠন ইয়াজিদি হাউসের কো-চেয়ার ফারুক তুজু বলেন, ‘১২ বছর বয়সে ধর্ষিত হওয়া শিশুটির কাছ থেকে আপনি কী আশা করেন? তারা এত বেশি আঘাত পেয়েছে, এত বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে যে, তারা এই পৃথিবীর ওপর থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। এ পৃথিবীর কোথাও নেই তারা।’
সাক্ষাৎকারে রোজা নির্যাতনের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা এক কথায় ভয়াবহ। তিনি বলেন, ‘সর্বপ্রথম আমাকে যার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আমার বাবার চেয়েও বয়সে বড় এক ব্যক্তি। তিনি আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন। এরপর তিনি আমাকে বিক্রি করে দেন অন্য একজনের কাছে।’
এরপর এক শুভাকাঙ্ক্ষী রোজাকে পরামর্শ দেন, তিনি যদি ইসলামে ধর্মান্তরিত হোন এবং একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তাহলে এভাবে আর বিক্রি হতে হবে না। বিক্রি হওয়া এড়াতে রোজা ধর্মান্তরিত হোন এবং আইএস যোদ্ধাদের খাবার সরবরাহ করত এমন একজন লেবানিজকে বিয়ে করেন।
রোজা বলেন, ‘এই লেবানিজ ভদ্রলোক অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো ছিলেন। তার সঙ্গে আমি আইএসের রাজধানী রাক্কা শহরে বাস করতাম। সে সময় ‘হুদ’ নামে একটি পুত্র সন্তান হয় আমাদের।’
২০১৯ সালের দিকে আইএসের শাসন যখন ভেঙে পড়ছিল, তখন রোজা তার স্বামীর সঙ্গে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেইর এল-জোরে পালিয়ে যান। সেখান থেকে আবার পালিয়ে যান বাঘৌজ শহরে। এই শহরটি আইএসের শেষ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক বাহিনী এক সময় বাঘৌজকে ঘিরে ফেলে এবং নারী ও শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়।
এই সুযোগ রোজা গ্রহণ করতে পারতেন এবং নিজেকে ইয়াজিদি পরিচয় দিয়ে নিরাপত্তা চাইতে পারতেন। কিন্তু তার পরিবর্তে, তিনি হুদকে আঁকড়ে আইএস যোদ্ধাদের অন্যান্য স্ত্রীদের সঙ্গে শহর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এই সিদ্ধান্তই কাল হয় রোজার জীবনে। পালাতে গিয়ে তার স্বামী নিহত হয়। হারিয়ে ফেলেন সন্তান। সে আদৌ বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, জানেন না রোজা। বিশ্বাস করতে চান, তার সন্তান হুদ এখনো বেঁচে আছে এই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও।
বাঘৌজ থেকে পালিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিবে আইএস যোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রীদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন রোজা বারাকাত। সেখানে একজন চোরাকারবারির সাহায্য নিয়ে তিনি দেইর এল-জোর শহরে চলে যান এবং সেখান থেকে তুরস্কে পালিয়ে যান। তুরস্কে একটি পোশাকের বাজারে কাজ জুটিয়ে নেন রোজা বারাকাত। কিন্তু গত মাসে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ধরে ফেলে। নানা জিজ্ঞাসাবাদের পর রোজাকে সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামে একটি নিরাপদ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রোজা এখনো সেখানেই আছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, তিনি আর ইরাকের সিনজারে ফিরে যেতে চান না। তাঁর ধারণা, সিনজারে তাঁর পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোজা বারাকাত বলছিলেন, ‘সেখানে ফিরে যাওয়ার কী আছে! আমার এখন নিজেকে সময় দেওয়া দরকার।’
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, আরব নিউজ, এবিসি নিউজ, নাইন নিউজ ডট কম ও ইয়াহু নিউজ

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
ইয়াজিদি কিশোরী রোজা। উত্তর ইরাকের সিনজার শহরে জন্ম তার। শহরটি ধর্মীয় ইয়াজিদি সংখ্যালঘুদের ছিটমহল হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালে রোজার বয়স ছিল মাত্র এগারো, তখন একদিন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায় রোজাকে। ২০১৪ সালের সেই দিনে শুধু রোজাকেই তুলে নিয়ে যায়নি আইএস বাহিনী, তুলে নিয়ে গিয়েছিল আরও কয়েক হাজার ইয়াজিদি নারীকে।
সিনজার শহর থেকে কিশোরী রোজাকে সিরিয়ার নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। শুধু একবার নয়, একাধিকবার বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করা হয় তাকে। শুরু হয় বন্দী জীবন, জিম্মি জীবন, ভয়াবহ নির্যাতনের জীবন।
সময় গড়াতে থাকে। কিশোরী থেকে তরুণী হয়ে ওঠেন রোজা। বয়স হয়ে যায় আঠারো। কিন্তু নির্যাতনের সূর্য অস্তমিত হয় না তাঁর জীবন থেকে। আঠারো বছর বয়স হতে হতে কতবার যে তাকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, তা আজও আঙুলে গুণে শেষ করতে পারেন না। এর মধ্যে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয় তাঁর। এক সময় সেই ছেলেটিকেও হারিয়ে ফেলেন। আজও তাকে খুঁজে পাননি রোজা। জীবন থেকে কত কিছু হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে স্থানীয় কুর্দি উপভাষা কুরমাঞ্জি, যে ভাষায় তিনি এক সময় কথা বলতেন, সেই ভাষায় এখন খুব একটা কথা বলতে পারেন না। প্রায় ভুলে গেছেন মাতৃভাষা, কিন্তু ভোলেননি তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের দিনগুলো।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে আইএস বাহিনী আপাত পরাজিত হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আইএস যোদ্ধাদের। সেই সঙ্গে তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় আটক শিবিরে। সে সময় কপালগুণে পালিয়ে যেতে সক্ষম হোন রোজা। কিন্তু পালিয়ে আর যাবেন কোথায়? বাড়িতে? বাড়ি যেন কোথায়? রোজা ভাবতে থাকেন, সেই সিনজার শহর কি এখনো তেমন আছে? মা–বাবা কি বেঁচে আছে? সেই ছোট্ট ছিমছাম বাড়িটা কি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে? রোজা ভেবে কূল পান না, তিনি বাড়িতে ফিরবেন কী করে, রাস্তা তো চিনেন না। যদিও বা একে ওকে জিজ্ঞেস করে রাস্তা চিনে নেওয়া যায়, কিন্তু এই মুখ তিনি নিজ সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখাবেন কি করে! ডুকরে কেঁদে ওঠেন রোজা বারাকাত।
নানা পথ ঘুরে অবশেষে রোজার ঠাঁই হয় সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামের তুজুর গোষ্ঠীর এক আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, ‘আমার সঙ্গে আরও যারা আইএস শিবিরে বন্দী ছিল, তারা বছরের পর পর বছর ধরে আমাকে বলেছে যে আমি ফিরে গেলে আমাকে আমার সম্প্রদায় কখনোই গ্রহণ করবে না। আমি তাদের কথা বিশ্বাস করেছি।’
ইয়াজিদি ও সিরীয় কুর্দি কর্মকর্তারা বলেন, আইএস বাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের ইয়াজিদি সম্প্রদায় কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে সত্যিই মতভেদ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার ইয়াজিদি সংগঠন ইয়াজিদি হাউসের কো-চেয়ার ফারুক তুজু বলেন, ‘১২ বছর বয়সে ধর্ষিত হওয়া শিশুটির কাছ থেকে আপনি কী আশা করেন? তারা এত বেশি আঘাত পেয়েছে, এত বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে যে, তারা এই পৃথিবীর ওপর থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। এ পৃথিবীর কোথাও নেই তারা।’
সাক্ষাৎকারে রোজা নির্যাতনের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা এক কথায় ভয়াবহ। তিনি বলেন, ‘সর্বপ্রথম আমাকে যার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আমার বাবার চেয়েও বয়সে বড় এক ব্যক্তি। তিনি আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন। এরপর তিনি আমাকে বিক্রি করে দেন অন্য একজনের কাছে।’
এরপর এক শুভাকাঙ্ক্ষী রোজাকে পরামর্শ দেন, তিনি যদি ইসলামে ধর্মান্তরিত হোন এবং একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তাহলে এভাবে আর বিক্রি হতে হবে না। বিক্রি হওয়া এড়াতে রোজা ধর্মান্তরিত হোন এবং আইএস যোদ্ধাদের খাবার সরবরাহ করত এমন একজন লেবানিজকে বিয়ে করেন।
রোজা বলেন, ‘এই লেবানিজ ভদ্রলোক অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো ছিলেন। তার সঙ্গে আমি আইএসের রাজধানী রাক্কা শহরে বাস করতাম। সে সময় ‘হুদ’ নামে একটি পুত্র সন্তান হয় আমাদের।’
২০১৯ সালের দিকে আইএসের শাসন যখন ভেঙে পড়ছিল, তখন রোজা তার স্বামীর সঙ্গে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেইর এল-জোরে পালিয়ে যান। সেখান থেকে আবার পালিয়ে যান বাঘৌজ শহরে। এই শহরটি আইএসের শেষ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক বাহিনী এক সময় বাঘৌজকে ঘিরে ফেলে এবং নারী ও শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়।
এই সুযোগ রোজা গ্রহণ করতে পারতেন এবং নিজেকে ইয়াজিদি পরিচয় দিয়ে নিরাপত্তা চাইতে পারতেন। কিন্তু তার পরিবর্তে, তিনি হুদকে আঁকড়ে আইএস যোদ্ধাদের অন্যান্য স্ত্রীদের সঙ্গে শহর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এই সিদ্ধান্তই কাল হয় রোজার জীবনে। পালাতে গিয়ে তার স্বামী নিহত হয়। হারিয়ে ফেলেন সন্তান। সে আদৌ বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, জানেন না রোজা। বিশ্বাস করতে চান, তার সন্তান হুদ এখনো বেঁচে আছে এই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও।
বাঘৌজ থেকে পালিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিবে আইএস যোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রীদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন রোজা বারাকাত। সেখানে একজন চোরাকারবারির সাহায্য নিয়ে তিনি দেইর এল-জোর শহরে চলে যান এবং সেখান থেকে তুরস্কে পালিয়ে যান। তুরস্কে একটি পোশাকের বাজারে কাজ জুটিয়ে নেন রোজা বারাকাত। কিন্তু গত মাসে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ধরে ফেলে। নানা জিজ্ঞাসাবাদের পর রোজাকে সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামে একটি নিরাপদ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রোজা এখনো সেখানেই আছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, তিনি আর ইরাকের সিনজারে ফিরে যেতে চান না। তাঁর ধারণা, সিনজারে তাঁর পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোজা বারাকাত বলছিলেন, ‘সেখানে ফিরে যাওয়ার কী আছে! আমার এখন নিজেকে সময় দেওয়া দরকার।’
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, আরব নিউজ, এবিসি নিউজ, নাইন নিউজ ডট কম ও ইয়াহু নিউজ

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
ইয়াজিদি কিশোরী রোজা। উত্তর ইরাকের সিনজার শহরে জন্ম তার। শহরটি ধর্মীয় ইয়াজিদি সংখ্যালঘুদের ছিটমহল হিসেবে পরিচিত। ২০১৪ সালে রোজার বয়স ছিল মাত্র এগারো, তখন একদিন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায় রোজাকে। ২০১৪ সালের সেই দিনে শুধু রোজাকেই তুলে নিয়ে যায়নি আইএস বাহিনী, তুলে নিয়ে গিয়েছিল আরও কয়েক হাজার ইয়াজিদি নারীকে।
সিনজার শহর থেকে কিশোরী রোজাকে সিরিয়ার নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। শুধু একবার নয়, একাধিকবার বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করা হয় তাকে। শুরু হয় বন্দী জীবন, জিম্মি জীবন, ভয়াবহ নির্যাতনের জীবন।
সময় গড়াতে থাকে। কিশোরী থেকে তরুণী হয়ে ওঠেন রোজা। বয়স হয়ে যায় আঠারো। কিন্তু নির্যাতনের সূর্য অস্তমিত হয় না তাঁর জীবন থেকে। আঠারো বছর বয়স হতে হতে কতবার যে তাকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, তা আজও আঙুলে গুণে শেষ করতে পারেন না। এর মধ্যে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয় তাঁর। এক সময় সেই ছেলেটিকেও হারিয়ে ফেলেন। আজও তাকে খুঁজে পাননি রোজা। জীবন থেকে কত কিছু হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে স্থানীয় কুর্দি উপভাষা কুরমাঞ্জি, যে ভাষায় তিনি এক সময় কথা বলতেন, সেই ভাষায় এখন খুব একটা কথা বলতে পারেন না। প্রায় ভুলে গেছেন মাতৃভাষা, কিন্তু ভোলেননি তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের দিনগুলো।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে আইএস বাহিনী আপাত পরাজিত হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আইএস যোদ্ধাদের। সেই সঙ্গে তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় আটক শিবিরে। সে সময় কপালগুণে পালিয়ে যেতে সক্ষম হোন রোজা। কিন্তু পালিয়ে আর যাবেন কোথায়? বাড়িতে? বাড়ি যেন কোথায়? রোজা ভাবতে থাকেন, সেই সিনজার শহর কি এখনো তেমন আছে? মা–বাবা কি বেঁচে আছে? সেই ছোট্ট ছিমছাম বাড়িটা কি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে? রোজা ভেবে কূল পান না, তিনি বাড়িতে ফিরবেন কী করে, রাস্তা তো চিনেন না। যদিও বা একে ওকে জিজ্ঞেস করে রাস্তা চিনে নেওয়া যায়, কিন্তু এই মুখ তিনি নিজ সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখাবেন কি করে! ডুকরে কেঁদে ওঠেন রোজা বারাকাত।
নানা পথ ঘুরে অবশেষে রোজার ঠাঁই হয় সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামের তুজুর গোষ্ঠীর এক আশ্রয়কেন্দ্রে। সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, ‘আমার সঙ্গে আরও যারা আইএস শিবিরে বন্দী ছিল, তারা বছরের পর পর বছর ধরে আমাকে বলেছে যে আমি ফিরে গেলে আমাকে আমার সম্প্রদায় কখনোই গ্রহণ করবে না। আমি তাদের কথা বিশ্বাস করেছি।’
ইয়াজিদি ও সিরীয় কুর্দি কর্মকর্তারা বলেন, আইএস বাহিনীর নৃশংস নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের ইয়াজিদি সম্প্রদায় কীভাবে গ্রহণ করবে, তা নিয়ে সত্যিই মতভেদ রয়েছে। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার ইয়াজিদি সংগঠন ইয়াজিদি হাউসের কো-চেয়ার ফারুক তুজু বলেন, ‘১২ বছর বয়সে ধর্ষিত হওয়া শিশুটির কাছ থেকে আপনি কী আশা করেন? তারা এত বেশি আঘাত পেয়েছে, এত বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে যে, তারা এই পৃথিবীর ওপর থেকেই বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। এ পৃথিবীর কোথাও নেই তারা।’
সাক্ষাৎকারে রোজা নির্যাতনের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা এক কথায় ভয়াবহ। তিনি বলেন, ‘সর্বপ্রথম আমাকে যার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আমার বাবার চেয়েও বয়সে বড় এক ব্যক্তি। তিনি আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছেন। এরপর তিনি আমাকে বিক্রি করে দেন অন্য একজনের কাছে।’
এরপর এক শুভাকাঙ্ক্ষী রোজাকে পরামর্শ দেন, তিনি যদি ইসলামে ধর্মান্তরিত হোন এবং একজন আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তাহলে এভাবে আর বিক্রি হতে হবে না। বিক্রি হওয়া এড়াতে রোজা ধর্মান্তরিত হোন এবং আইএস যোদ্ধাদের খাবার সরবরাহ করত এমন একজন লেবানিজকে বিয়ে করেন।
রোজা বলেন, ‘এই লেবানিজ ভদ্রলোক অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো ছিলেন। তার সঙ্গে আমি আইএসের রাজধানী রাক্কা শহরে বাস করতাম। সে সময় ‘হুদ’ নামে একটি পুত্র সন্তান হয় আমাদের।’
২০১৯ সালের দিকে আইএসের শাসন যখন ভেঙে পড়ছিল, তখন রোজা তার স্বামীর সঙ্গে সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর দেইর এল-জোরে পালিয়ে যান। সেখান থেকে আবার পালিয়ে যান বাঘৌজ শহরে। এই শহরটি আইএসের শেষ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক বাহিনী এক সময় বাঘৌজকে ঘিরে ফেলে এবং নারী ও শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়।
এই সুযোগ রোজা গ্রহণ করতে পারতেন এবং নিজেকে ইয়াজিদি পরিচয় দিয়ে নিরাপত্তা চাইতে পারতেন। কিন্তু তার পরিবর্তে, তিনি হুদকে আঁকড়ে আইএস যোদ্ধাদের অন্যান্য স্ত্রীদের সঙ্গে শহর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এই সিদ্ধান্তই কাল হয় রোজার জীবনে। পালাতে গিয়ে তার স্বামী নিহত হয়। হারিয়ে ফেলেন সন্তান। সে আদৌ বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, জানেন না রোজা। বিশ্বাস করতে চান, তার সন্তান হুদ এখনো বেঁচে আছে এই পৃথিবীর কোথাও না কোথাও।
বাঘৌজ থেকে পালিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিবে আইএস যোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রীদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন রোজা বারাকাত। সেখানে একজন চোরাকারবারির সাহায্য নিয়ে তিনি দেইর এল-জোর শহরে চলে যান এবং সেখান থেকে তুরস্কে পালিয়ে যান। তুরস্কে একটি পোশাকের বাজারে কাজ জুটিয়ে নেন রোজা বারাকাত। কিন্তু গত মাসে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ধরে ফেলে। নানা জিজ্ঞাসাবাদের পর রোজাকে সিরিয়ার হাসাকেহ প্রদেশের বারজান গ্রামে একটি নিরাপদ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রোজা এখনো সেখানেই আছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রোজা বলেন, তিনি আর ইরাকের সিনজারে ফিরে যেতে চান না। তাঁর ধারণা, সিনজারে তাঁর পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রোজা বারাকাত বলছিলেন, ‘সেখানে ফিরে যাওয়ার কী আছে! আমার এখন নিজেকে সময় দেওয়া দরকার।’
তথ্যসূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, আরব নিউজ, এবিসি নিউজ, নাইন নিউজ ডট কম ও ইয়াহু নিউজ

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘৃণামূলক ও মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে প্যারিসে ১০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তাঁরা অনলাইনে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডিকে হয়রানি করেছেন এবং তাঁর লিঙ্গ নিয়ে ভিত্তিহীন অপপ্রচার ছড়িয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, রোববার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে টহলরত বাহিনীর ওপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে উড়তে থাকা একটি ইসরায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ঘটনাটি সীমান্তবর্তী শহর কফর কিলার কাছে ঘটেছে।
৯ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে এক চোখ হারানো লেখক স্যার সালমান রুশদি বলেছেন, তিনি কখনোই ওই আক্রমণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জীবন বদলে দেওয়া ওই হামলার কথা স্মরণ করেন সামলান।
১০ ঘণ্টা আগে
১৮১২ সালে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট রাশিয়া আক্রমণের উদ্দেশ্যে অর্ধ লক্ষাধিক সেনা নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ছয় মাস পর সেই অভিযানের এমন পরিণতি হয় যে, এটিকে ইউরোপের ইতিহাসের এক ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘৃণামূলক ও মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে প্যারিসে ১০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তাঁরা অনলাইনে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডিকে হয়রানি করেছেন এবং তাঁর লিঙ্গ নিয়ে ভিত্তিহীন অপপ্রচার ছড়িয়েছেন।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মামলাটি শুরু হয়েছে ব্রিজিত মাখোঁর ২০২৪ সালে করা অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযুক্ত ১০ জনের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। তাঁদের বয়স ৪১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। তাঁরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ব্রিজিত মাখোঁর লিঙ্গ ও যৌনতা নিয়ে ঘৃণামূলক মন্তব্য করেছেন এবং স্বামীর সঙ্গে তাঁর বয়সের ব্যবধানকে নির্দেশ করে তাঁকে ‘শিশুকামী’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।
মামলাটিতে অন্যতম অভিযুক্ত দুই নারীর একজন হলেন অরেলিয়ান পুয়াসোঁ-আতলান। সামাজিক মাধ্যমে তিনি ‘জোয়ে সাগাঁ’ নামে পরিচিত এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারের সঙ্গে যুক্ত। আরেকজন হলেন দেলফিন জে। তিনি একটি আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলে ‘আমানদিন রোয়া’ নামে পরিচিত। ২০২১ সালে তিনি ইউটিউবে চার ঘণ্টার এক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেন এবং দাবি করেন, ব্রিজিত মাখোঁ একসময় পুরুষ ছিলেন।
এই দুই নারীকে ২০২৪ সালে ব্রিজিত ও তাঁর ভাইয়ের মানহানি করার দায়ে জরিমানা দিতে বলা হয়েছিল। পরে অবশ্য আপিলের মাধ্যমে তাঁদের সাজা বাতিল হয়। তবে ফরাসি সর্বোচ্চ আদালতে এখনো এই মামলার আপিল চলছে।
এদিকে এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রে মাখোঁ দম্পতির করা আরেকটি মানহানির মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। গত জুলাইয়ে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থী পডকাস্টার ক্যান্ডেস ওয়েন্সের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওয়েন্স মিথ্যাভাবে প্রচার করেছেন যে, ব্রিজিত আসলে ‘জ্যঁ-মিশেল ট্রগনু’ নামে জন্ম নেওয়া এক পুরুষ। এই দাবি ‘ভয়াবহভাবে মিথ্যা ও অপমানজনক’—এমনটাই দাবি করেছেন মাখোঁ দম্পতি।
আসলে জ্যঁ-মিশেল ট্রগনু ব্রিজিত মাখোঁর বড় ভাই। তিনি ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলীয় শহর অ্যামিয়েঁতে বাস করেন। তিনি ব্রিজিতের সঙ্গে ২০১৭ ও ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট মাখোঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিজিত মাখোঁ পুরুষ—এই মিথ্যা গুজব প্রথম ছড়ায় ২০১৭ সালে মাখোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর। পরবর্তীতে এটি ফরাসি ও মার্কিন ডানপন্থী ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীদের হাতে আরও জোরালো হয়।
২০২২ সালে ব্রিজিত মাখোঁ ফরাসি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, এই অভিযোগ ‘অসম্ভব’ এবং তাঁর পরিবারের জন্য ‘অপমানজনক আঘাত’।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘৃণামূলক ও মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে প্যারিসে ১০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তাঁরা অনলাইনে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডিকে হয়রানি করেছেন এবং তাঁর লিঙ্গ নিয়ে ভিত্তিহীন অপপ্রচার ছড়িয়েছেন।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মামলাটি শুরু হয়েছে ব্রিজিত মাখোঁর ২০২৪ সালে করা অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযুক্ত ১০ জনের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। তাঁদের বয়স ৪১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। তাঁরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ব্রিজিত মাখোঁর লিঙ্গ ও যৌনতা নিয়ে ঘৃণামূলক মন্তব্য করেছেন এবং স্বামীর সঙ্গে তাঁর বয়সের ব্যবধানকে নির্দেশ করে তাঁকে ‘শিশুকামী’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।
মামলাটিতে অন্যতম অভিযুক্ত দুই নারীর একজন হলেন অরেলিয়ান পুয়াসোঁ-আতলান। সামাজিক মাধ্যমে তিনি ‘জোয়ে সাগাঁ’ নামে পরিচিত এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারের সঙ্গে যুক্ত। আরেকজন হলেন দেলফিন জে। তিনি একটি আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলে ‘আমানদিন রোয়া’ নামে পরিচিত। ২০২১ সালে তিনি ইউটিউবে চার ঘণ্টার এক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেন এবং দাবি করেন, ব্রিজিত মাখোঁ একসময় পুরুষ ছিলেন।
এই দুই নারীকে ২০২৪ সালে ব্রিজিত ও তাঁর ভাইয়ের মানহানি করার দায়ে জরিমানা দিতে বলা হয়েছিল। পরে অবশ্য আপিলের মাধ্যমে তাঁদের সাজা বাতিল হয়। তবে ফরাসি সর্বোচ্চ আদালতে এখনো এই মামলার আপিল চলছে।
এদিকে এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রে মাখোঁ দম্পতির করা আরেকটি মানহানির মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। গত জুলাইয়ে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থী পডকাস্টার ক্যান্ডেস ওয়েন্সের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওয়েন্স মিথ্যাভাবে প্রচার করেছেন যে, ব্রিজিত আসলে ‘জ্যঁ-মিশেল ট্রগনু’ নামে জন্ম নেওয়া এক পুরুষ। এই দাবি ‘ভয়াবহভাবে মিথ্যা ও অপমানজনক’—এমনটাই দাবি করেছেন মাখোঁ দম্পতি।
আসলে জ্যঁ-মিশেল ট্রগনু ব্রিজিত মাখোঁর বড় ভাই। তিনি ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলীয় শহর অ্যামিয়েঁতে বাস করেন। তিনি ব্রিজিতের সঙ্গে ২০১৭ ও ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট মাখোঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিজিত মাখোঁ পুরুষ—এই মিথ্যা গুজব প্রথম ছড়ায় ২০১৭ সালে মাখোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর। পরবর্তীতে এটি ফরাসি ও মার্কিন ডানপন্থী ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীদের হাতে আরও জোরালো হয়।
২০২২ সালে ব্রিজিত মাখোঁ ফরাসি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, এই অভিযোগ ‘অসম্ভব’ এবং তাঁর পরিবারের জন্য ‘অপমানজনক আঘাত’।

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, রোববার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে টহলরত বাহিনীর ওপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে উড়তে থাকা একটি ইসরায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ঘটনাটি সীমান্তবর্তী শহর কফর কিলার কাছে ঘটেছে।
৯ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে এক চোখ হারানো লেখক স্যার সালমান রুশদি বলেছেন, তিনি কখনোই ওই আক্রমণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জীবন বদলে দেওয়া ওই হামলার কথা স্মরণ করেন সামলান।
১০ ঘণ্টা আগে
১৮১২ সালে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট রাশিয়া আক্রমণের উদ্দেশ্যে অর্ধ লক্ষাধিক সেনা নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ছয় মাস পর সেই অভিযানের এমন পরিণতি হয় যে, এটিকে ইউরোপের ইতিহাসের এক ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, রোববার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে টহলরত বাহিনীর ওপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে উড়তে থাকা একটি ইসরায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ঘটনাটি সীমান্তবর্তী শহর কফর কিলার কাছে ঘটেছে।
বিবৃতিতে ইউএনআইএফআইএল জানায়, ড্রোনটি শান্তিরক্ষী দলের খুব কাছাকাছি চলে আসায় প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ড্রোনটি ছিল তাদের নিয়মিত গোয়েন্দা তৎপরতার অংশ।
ইসরায়েলের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি এক্স-এ লিখেছেন, ‘ইউএনআইএফআইএল ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোনটিতে গুলি চালায়, যদিও এটি কোনো হুমকি তৈরি করেনি।’
শোশানি জানান, পরে ইসরায়েলি বাহিনী ওই এলাকায় একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে যেখানে ড্রোনটি পড়ে ছিল। তবে এ সময় শান্তিরক্ষীদের দিকে কোনো গুলি চালানো হয়নি। ঘটনাটি সামরিক সমন্বয় চ্যানেলের মাধ্যমে তদন্তাধীন আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ইউএনআইএফআইএল জানিয়েছে, এরপর আরেকটি ইসরায়েলি ড্রোন কাছাকাছি এলাকায় একটি গ্রেনেড ফেলে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে একটি ইসরায়েলি ট্যাংক শান্তিরক্ষীদের দিকে গুলি চালায়। সৌভাগ্যক্রমে এতে কেউ আহত হয়নি।
গত বছরের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল নিয়মিতভাবে লেবাননের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। তাঁরা দাবি করে, এসব হামলার লক্ষ্য হিজবুল্লাহর পুনর্গঠন রোধ করা। তবে জাতিসংঘ ও লেবানন সরকার বলছে, এসব অভিযান লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করছে।
১৯৭৮ সালে গঠিত ইউএনআইএফআইএলের হাতে ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটে ২০২৪ সালের অক্টোবরে—সে সময় ইউনিফিলের অংশ হিসেবে থাকা একটি জার্মান নৌযান লেবাননের উপকূলে একটি ড্রোন আটক করেছিল।
এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, বর্তমান উত্তেজনা সীমান্তজুড়ে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। আগামী সপ্তাহে মার্কিন, ফরাসি ও আরব কূটনীতিকদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবিত করা ও দক্ষিণ লেবাননে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।

লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, রোববার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে টহলরত বাহিনীর ওপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে উড়তে থাকা একটি ইসরায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ঘটনাটি সীমান্তবর্তী শহর কফর কিলার কাছে ঘটেছে।
বিবৃতিতে ইউএনআইএফআইএল জানায়, ড্রোনটি শান্তিরক্ষী দলের খুব কাছাকাছি চলে আসায় প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ড্রোনটি ছিল তাদের নিয়মিত গোয়েন্দা তৎপরতার অংশ।
ইসরায়েলের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি এক্স-এ লিখেছেন, ‘ইউএনআইএফআইএল ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোনটিতে গুলি চালায়, যদিও এটি কোনো হুমকি তৈরি করেনি।’
শোশানি জানান, পরে ইসরায়েলি বাহিনী ওই এলাকায় একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে যেখানে ড্রোনটি পড়ে ছিল। তবে এ সময় শান্তিরক্ষীদের দিকে কোনো গুলি চালানো হয়নি। ঘটনাটি সামরিক সমন্বয় চ্যানেলের মাধ্যমে তদন্তাধীন আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ইউএনআইএফআইএল জানিয়েছে, এরপর আরেকটি ইসরায়েলি ড্রোন কাছাকাছি এলাকায় একটি গ্রেনেড ফেলে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে একটি ইসরায়েলি ট্যাংক শান্তিরক্ষীদের দিকে গুলি চালায়। সৌভাগ্যক্রমে এতে কেউ আহত হয়নি।
গত বছরের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল নিয়মিতভাবে লেবাননের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। তাঁরা দাবি করে, এসব হামলার লক্ষ্য হিজবুল্লাহর পুনর্গঠন রোধ করা। তবে জাতিসংঘ ও লেবানন সরকার বলছে, এসব অভিযান লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করছে।
১৯৭৮ সালে গঠিত ইউএনআইএফআইএলের হাতে ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটে ২০২৪ সালের অক্টোবরে—সে সময় ইউনিফিলের অংশ হিসেবে থাকা একটি জার্মান নৌযান লেবাননের উপকূলে একটি ড্রোন আটক করেছিল।
এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, বর্তমান উত্তেজনা সীমান্তজুড়ে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। আগামী সপ্তাহে মার্কিন, ফরাসি ও আরব কূটনীতিকদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবিত করা ও দক্ষিণ লেবাননে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘৃণামূলক ও মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে প্যারিসে ১০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তাঁরা অনলাইনে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডিকে হয়রানি করেছেন এবং তাঁর লিঙ্গ নিয়ে ভিত্তিহীন অপপ্রচার ছড়িয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে এক চোখ হারানো লেখক স্যার সালমান রুশদি বলেছেন, তিনি কখনোই ওই আক্রমণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জীবন বদলে দেওয়া ওই হামলার কথা স্মরণ করেন সামলান।
১০ ঘণ্টা আগে
১৮১২ সালে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট রাশিয়া আক্রমণের উদ্দেশ্যে অর্ধ লক্ষাধিক সেনা নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ছয় মাস পর সেই অভিযানের এমন পরিণতি হয় যে, এটিকে ইউরোপের ইতিহাসের এক ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে এক চোখ হারানো লেখক সালমান রুশদি বলেছেন, তিনি কখনোই ওই আক্রমণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জীবন বদলে দেওয়া ওই হামলার কথা স্মরণ করেন সামলান।
২০২২ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের চাটাকুয়া ইনস্টিটিউশনে বুকার পুরস্কারজয়ী এই লেখকের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তিনি এক চোখে অন্ধ হয়ে যান এবং তাঁর এক হাত আংশিকভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
ঘটনার তিন বছর পর, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হাদি মাতারকে হত্যাচেষ্টা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে তাঁকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সাক্ষাৎকারে ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘ওকে (আক্রমণকারী) আমি খুবই তুচ্ছ একজন মানুষ মনে করেছি—এই ছোট্ট বোকা লোকটা। এতে আমার মনে ঘৃণা জাগে। পরে ভাবলাম, এমন তুচ্ছ লোকও মানুষকে হত্যা করতে পারে—আমাকেও প্রায় মেরে ফেলেছিল। সে একবারও আমার চোখের দিকে তাকায়নি।’
রুশদি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘যখন বিচার শুরু হয়, তখন আক্রমণের পর প্রায় তিন বছর কেটে গেছে। এত দিনে বিষয়টা হজম করতে, ভাবতে ও কিছুটা সেরে উঠতে সময় লেগেছে। তাই আমি শুধু আমাকে করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছি এবং বাড়ি ফিরে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি চোখ হারানো আর একটি হাত সঠিকভাবে কাজ না করা—এই বিষয়গুলো প্রতিদিনই অনুভব করি। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবি, ধুর! আমি তো ডান চোখে কিছুই দেখতে পাই না। আমি কখনোই এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব না। এটা শুধু মেনে নিয়ে বাঁচতে হয়। কিন্তু আমি ভাবি না যে, ঠিক আছে, আরেকটা চোখ তো আছেই।’
তবে এসব সত্ত্বেও রুশদি জানালেন, তিনি লেখালেখি চালিয়ে যাবেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমি এখনো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ভাবি। তাই যত দিন বাঁচি, লিখে যেতে চাই।’
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইভনিং টাইমস জানিয়েছে, সালমান রুশদির এই পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হবে ট্যাটলার ম্যাগাজিনের ডিসেম্বর সংখ্যায়। তবে ৩০ অক্টোবর থেকে এটি ম্যাগাজিনের ডিজিটাল সংস্করণেও পাওয়া যাবে।

নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে এক চোখ হারানো লেখক সালমান রুশদি বলেছেন, তিনি কখনোই ওই আক্রমণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জীবন বদলে দেওয়া ওই হামলার কথা স্মরণ করেন সামলান।
২০২২ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের চাটাকুয়া ইনস্টিটিউশনে বুকার পুরস্কারজয়ী এই লেখকের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তিনি এক চোখে অন্ধ হয়ে যান এবং তাঁর এক হাত আংশিকভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
ঘটনার তিন বছর পর, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হাদি মাতারকে হত্যাচেষ্টা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে তাঁকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সাক্ষাৎকারে ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘ওকে (আক্রমণকারী) আমি খুবই তুচ্ছ একজন মানুষ মনে করেছি—এই ছোট্ট বোকা লোকটা। এতে আমার মনে ঘৃণা জাগে। পরে ভাবলাম, এমন তুচ্ছ লোকও মানুষকে হত্যা করতে পারে—আমাকেও প্রায় মেরে ফেলেছিল। সে একবারও আমার চোখের দিকে তাকায়নি।’
রুশদি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘যখন বিচার শুরু হয়, তখন আক্রমণের পর প্রায় তিন বছর কেটে গেছে। এত দিনে বিষয়টা হজম করতে, ভাবতে ও কিছুটা সেরে উঠতে সময় লেগেছে। তাই আমি শুধু আমাকে করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছি এবং বাড়ি ফিরে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি চোখ হারানো আর একটি হাত সঠিকভাবে কাজ না করা—এই বিষয়গুলো প্রতিদিনই অনুভব করি। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবি, ধুর! আমি তো ডান চোখে কিছুই দেখতে পাই না। আমি কখনোই এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব না। এটা শুধু মেনে নিয়ে বাঁচতে হয়। কিন্তু আমি ভাবি না যে, ঠিক আছে, আরেকটা চোখ তো আছেই।’
তবে এসব সত্ত্বেও রুশদি জানালেন, তিনি লেখালেখি চালিয়ে যাবেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমি এখনো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ভাবি। তাই যত দিন বাঁচি, লিখে যেতে চাই।’
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইভনিং টাইমস জানিয়েছে, সালমান রুশদির এই পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হবে ট্যাটলার ম্যাগাজিনের ডিসেম্বর সংখ্যায়। তবে ৩০ অক্টোবর থেকে এটি ম্যাগাজিনের ডিজিটাল সংস্করণেও পাওয়া যাবে।

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘৃণামূলক ও মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে প্যারিসে ১০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তাঁরা অনলাইনে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডিকে হয়রানি করেছেন এবং তাঁর লিঙ্গ নিয়ে ভিত্তিহীন অপপ্রচার ছড়িয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, রোববার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে টহলরত বাহিনীর ওপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে উড়তে থাকা একটি ইসরায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ঘটনাটি সীমান্তবর্তী শহর কফর কিলার কাছে ঘটেছে।
৯ ঘণ্টা আগে
১৮১২ সালে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট রাশিয়া আক্রমণের উদ্দেশ্যে অর্ধ লক্ষাধিক সেনা নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ছয় মাস পর সেই অভিযানের এমন পরিণতি হয় যে, এটিকে ইউরোপের ইতিহাসের এক ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
১১ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

১৮১২ সালে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট রাশিয়া আক্রমণের উদ্দেশ্যে অর্ধ লক্ষাধিক সেনা নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ছয় মাস পর সেই অভিযানের এমন পরিণতি হয় যে, এটিকে ইউরোপের ইতিহাসের এক ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যুদ্ধ, অনাহার, তীব্র শীত ও টাইফাস মহামারির কারণে হাজার হাজার সৈন্য মারা যায়। অবশেষে মাত্র কয়েক হাজার সৈন্য ফ্রান্সে বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়।
তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা নেপোলিয়নের সৈন্যদের দেহাবশেষের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে নতুন তথ্য পেয়েছেন। ২০০১ সালে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে উদ্ধার হওয়া একটি গণকবর থেকে পাওয়া দাঁতের নমুনা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, সৈন্যদের মৃত্যু শুধু টাইফাস মহামারিতে হয়নি, বরং আরও অন্তত দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়া তখন মারাত্মক ভূমিকা রেখেছিল।
গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ‘কারেন্ট বায়োলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় ব্যাকটেরিয়া দুটিকে ‘সালমোনেলা এন্টেরিকা’ ও ‘বোরেলিয়া রিকারেন্টিস’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘সালমোনেলা এন্টেরিকা’ প্যারাটাইফয়েড জ্বর ঘটায় এবং ‘বোরেলিয়া রিকারেন্টিস’ রিল্যাপসিং বা পুনরাবৃত্ত জ্বর ঘটায়।
গবেষণার প্রধান লেখক ও বর্তমানে এস্তোনিয়ার টার্টু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রেমি বারবিয়েরি বলেন, আগে মনে করা হতো, টাইফাসই ছিল সৈন্যদের মৃত্যুর একমাত্র কারণ। কিন্তু নতুন ডিএনএ বিশ্লেষণ প্রমাণ করছে, সেখানে একাধিক সংক্রমণ একযোগে কাজ করেছিল।
২০০৬ সালে প্রথমবার টাইফাস ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছিল নেপোলিয়নের সৈন্যদের দাঁতে। তবে তখনকার প্রযুক্তি সীমিত ছিল। এবার গবেষকেরা ব্যবহার করেছেন ‘হাই-থ্রুপুট সিকোয়েন্সিং’ পদ্ধতি, যা একসঙ্গে লাখ লাখ ডিএনএ খণ্ড বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। ফলে দুই শতাব্দী পুরোনো জিনগত উপাদান থেকেও নতুন তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
গবেষণায় ১৩টি দাঁতের নমুনা বিশ্লেষণ করা হলেও তাতে টাইফাসের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গবেষক নিকোলাস রাসকোভান জানান, এটি আগের গবেষণাকে অস্বীকার করছে না, বরং নতুন প্রমাণ দিচ্ছে যে, নেপোলিয়নের সৈন্যদের মধ্যে একাধিক সংক্রামক রোগ ছড়িয়েছিল। হয়তো আরও অনেক অজানা রোগ তখন ছিল, যা এখনো শনাক্ত হয়নি।
বিশেষজ্ঞ সিসিল লুইস বলেন, এই গবেষণা ইতিহাস বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। কারণ, প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষণ এখন অতীতের রোগবালাই ও তার বিবর্তন সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিচ্ছে।
প্যারাটাইফয়েড ও রিল্যাপসিং জ্বর পৃথিবীতে এখনো বিরাজমান। তবে এ জ্বরগুলো অতীতের মতো আর প্রাণঘাতী নয়। নেপোলিয়ন নিজে বেঁচে গেলেও তাঁর পরাজিত ও রুগ্ণ সেনাবাহিনীই শেষপর্যন্ত তাঁর পতনের পথ তৈরি করে দিয়েছিল।
গবেষকদের মতে, মাত্র এক দশকের মধ্যেই ডিএনএ প্রযুক্তির এই অগ্রগতি ভবিষ্যতে ইতিহাস ও জীববিজ্ঞানের আরও বহু অজানা রহস্য উন্মোচনের সুযোগ এনে দিয়েছে।

১৮১২ সালে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট রাশিয়া আক্রমণের উদ্দেশ্যে অর্ধ লক্ষাধিক সেনা নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ছয় মাস পর সেই অভিযানের এমন পরিণতি হয় যে, এটিকে ইউরোপের ইতিহাসের এক ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যুদ্ধ, অনাহার, তীব্র শীত ও টাইফাস মহামারির কারণে হাজার হাজার সৈন্য মারা যায়। অবশেষে মাত্র কয়েক হাজার সৈন্য ফ্রান্সে বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়।
তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা নেপোলিয়নের সৈন্যদের দেহাবশেষের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে নতুন তথ্য পেয়েছেন। ২০০১ সালে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে উদ্ধার হওয়া একটি গণকবর থেকে পাওয়া দাঁতের নমুনা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, সৈন্যদের মৃত্যু শুধু টাইফাস মহামারিতে হয়নি, বরং আরও অন্তত দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়া তখন মারাত্মক ভূমিকা রেখেছিল।
গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ‘কারেন্ট বায়োলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় ব্যাকটেরিয়া দুটিকে ‘সালমোনেলা এন্টেরিকা’ ও ‘বোরেলিয়া রিকারেন্টিস’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘সালমোনেলা এন্টেরিকা’ প্যারাটাইফয়েড জ্বর ঘটায় এবং ‘বোরেলিয়া রিকারেন্টিস’ রিল্যাপসিং বা পুনরাবৃত্ত জ্বর ঘটায়।
গবেষণার প্রধান লেখক ও বর্তমানে এস্তোনিয়ার টার্টু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রেমি বারবিয়েরি বলেন, আগে মনে করা হতো, টাইফাসই ছিল সৈন্যদের মৃত্যুর একমাত্র কারণ। কিন্তু নতুন ডিএনএ বিশ্লেষণ প্রমাণ করছে, সেখানে একাধিক সংক্রমণ একযোগে কাজ করেছিল।
২০০৬ সালে প্রথমবার টাইফাস ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছিল নেপোলিয়নের সৈন্যদের দাঁতে। তবে তখনকার প্রযুক্তি সীমিত ছিল। এবার গবেষকেরা ব্যবহার করেছেন ‘হাই-থ্রুপুট সিকোয়েন্সিং’ পদ্ধতি, যা একসঙ্গে লাখ লাখ ডিএনএ খণ্ড বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। ফলে দুই শতাব্দী পুরোনো জিনগত উপাদান থেকেও নতুন তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
গবেষণায় ১৩টি দাঁতের নমুনা বিশ্লেষণ করা হলেও তাতে টাইফাসের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গবেষক নিকোলাস রাসকোভান জানান, এটি আগের গবেষণাকে অস্বীকার করছে না, বরং নতুন প্রমাণ দিচ্ছে যে, নেপোলিয়নের সৈন্যদের মধ্যে একাধিক সংক্রামক রোগ ছড়িয়েছিল। হয়তো আরও অনেক অজানা রোগ তখন ছিল, যা এখনো শনাক্ত হয়নি।
বিশেষজ্ঞ সিসিল লুইস বলেন, এই গবেষণা ইতিহাস বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। কারণ, প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষণ এখন অতীতের রোগবালাই ও তার বিবর্তন সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিচ্ছে।
প্যারাটাইফয়েড ও রিল্যাপসিং জ্বর পৃথিবীতে এখনো বিরাজমান। তবে এ জ্বরগুলো অতীতের মতো আর প্রাণঘাতী নয়। নেপোলিয়ন নিজে বেঁচে গেলেও তাঁর পরাজিত ও রুগ্ণ সেনাবাহিনীই শেষপর্যন্ত তাঁর পতনের পথ তৈরি করে দিয়েছিল।
গবেষকদের মতে, মাত্র এক দশকের মধ্যেই ডিএনএ প্রযুক্তির এই অগ্রগতি ভবিষ্যতে ইতিহাস ও জীববিজ্ঞানের আরও বহু অজানা রহস্য উন্মোচনের সুযোগ এনে দিয়েছে।

মাত্র এগারো বছর বয়সেই উচ্ছল কিশোরী রোজা বারাকাতের জীবনে নেমে এসেছিল গভীর অন্ধকার। সেই অন্ধকার তাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে, ভাবতেই দুচোখ অশ্রুতে ভরে ওঠে তার। যতবার মনে পড়ে সেই নৃশংস দিনগুলো, ততবার লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন রোজা। অস্ফুটে বলে ওঠেন, ‘এই মুখ আমি কীভাবে দেখাব?’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘৃণামূলক ও মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে প্যারিসে ১০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তাঁরা অনলাইনে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডিকে হয়রানি করেছেন এবং তাঁর লিঙ্গ নিয়ে ভিত্তিহীন অপপ্রচার ছড়িয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, রোববার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে টহলরত বাহিনীর ওপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে উড়তে থাকা একটি ইসরায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ঘটনাটি সীমান্তবর্তী শহর কফর কিলার কাছে ঘটেছে।
৯ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে এক চোখ হারানো লেখক স্যার সালমান রুশদি বলেছেন, তিনি কখনোই ওই আক্রমণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জীবন বদলে দেওয়া ওই হামলার কথা স্মরণ করেন সামলান।
১০ ঘণ্টা আগে