Ajker Patrika

গাজায় যুদ্ধবিরতি

বন্দিবিনিময়ের পর চুক্তি স্বাক্ষর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজা যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দিবিনিময়। এর অংশ হিসেবে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা বন্দীরা ফিরেছেন নিজভূমে। গতকাল গাজার খান ইউনিসে পৌঁছালে তাঁদের স্বাগত জানান ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এএফপি
গাজা যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দিবিনিময়। এর অংশ হিসেবে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা বন্দীরা ফিরেছেন নিজভূমে। গতকাল গাজার খান ইউনিসে পৌঁছালে তাঁদের স্বাগত জানান ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির নথিতে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং অন্য দেশের নেতারা। গতকাল সোমবার মিসরের শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এরপর মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিসহ অন্য বিশ্বনেতারা নথিতে স্বাক্ষর করেন।

স্বাক্ষরিত নথি সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে আর কিছু জানা যায়নি। তবে চুক্তিতে স্বাক্ষরের পর গাজা যুদ্ধবিরতি অসাধারণভাবে কার্যকর হচ্ছে মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এ পর্যায়ে পৌঁছাতে ৩ হাজার বছর লেগেছে। এটা কি আপনারা বিশ্বাস করেন? এটা চলতেই থাকবে।’

এর আগে গতকাল হামাসের হাতে বন্দী থাকা ২০ ইসরায়েলি নিজে দেশে পৌঁছেছে। আর ইসরায়েলের কারাগার থেকে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছে। এমন সময়ে এই বন্দিবিনিময় হলো, যখন ইসরায়েল সফর করে মিসরে গাজাবিষয়ক শান্তি সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন ট্রাম্প।

হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল বন্দিবিনিময়। গতকাল এই শর্তের এক বড় অংশই পূর্ণ হলো। এদিন হামাস তাদের কাছে জিম্মি থাকা ২০ ইসরায়েলিকে মুক্তি দেয়। এদিনই তারা পরিবারগুলোর কাছে ফিরে গেছে। এই বন্দীদের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোয়। এ ছাড়া দুই বন্দীর মরদেহ ফেরত দিয়েছে হামাস। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারি উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ান থেকে টেলিভিশনে জিম্মিদের মুক্তির দৃশ্য দেখেছেন। তাঁর প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, একই দিনে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ১ হাজার ৯৬৮ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পেয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, তাদের মধ্যে ৮৮ জনকে পশ্চিম তীরে নেওয়া হয়েছে, বাকিদের নেওয়া হয়েছে গাজায়।

নির্বাসনে ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও ১৫৪ বন্দীকে চলে যেতে হচ্ছে নির্বাসনে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এই বন্দীদের পরিবারগুলো। অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স মিডিয়া অফিস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে তাদের কোথায় পাঠানো হবে, সে সম্পর্কে ইসরায়েল এখনো বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

এর আগে গত জানুয়ারিতে বন্দী মুক্তির সময় কয়েক ডজন বন্দীকে এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ; যেমন তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া ও তুরস্কে নির্বাসিত করা হয়েছিল। পর্যবেক্ষকেরা বলেছেন, এই জোরপূর্বক নির্বাসন মুক্তি পাওয়া বন্দীদের অধিকারের লঙ্ঘন। এ প্রসঙ্গে দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের পাবলিক পলিসির সহযোগী অধ্যাপক তামার কারমুত আল জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ যে অবৈধ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ইসরায়েলে ট্রাম্প, পার্লামেন্টে বিপত্তি

গতকাল যখন ইসরায়েলি জিম্মিরা নিজ দেশে ফিরছিল, তখন তেল আবিবে পৌঁছান ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী সরকারি উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ান তেল আবিবের উপকণ্ঠে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় সেখানে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তাঁর স্ত্রী সারা, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এবং তাঁর স্ত্রী ও ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প।

এরপর ট্রাম্প তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আজ একটি নতুন মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক ভোর।’ ভাষণে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানান। তাঁকে ‘অসাধারণ সাহসী একজন মানুষ’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প।

ইরান প্রসঙ্গে ট্রাম্প তাঁর ভাষণে বলেন, ইরানের সঙ্গে যদি কোনো শান্তিচুক্তি সম্ভব হয়, তবে তা দারুণ হবে।

এদিকে এই ভাষণের সময় বিপত্তিতে পড়েন ট্রাম্প। ভাষণ দেওয়ার সময় দেশটির দুই এমপি ‘ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিন!’ লেখাসংবলিত একটি কাগজ উঁচিয়ে ধরেছিলেন। এতে ট্রাম্পের বক্তৃতা সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়।

নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ওই দুই এমপিকে পার্লামেন্ট ভবন থেকে দ্রুত বের করে নিয়ে যান এবং দুই এমপির হাতে থাকা কাগজ ছিনিয়ে নেন। তাঁরা হলেন আইমান ওদেহ ও ওফের কাসিফ। দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, ওদেহ ‘হাদাশ-তাল’ পার্টির চেয়ারম্যান। এটি মূলত আরব-ইসরায়েলিদের একটি দল। আর কাসিফ দলটির একমাত্র ইহুদি এমপি।

মিসরে সম্মেলনে ট্রাম্প

ইসরায়েল সফর শেষে গাজা যুদ্ধ বন্ধে আয়োজিত ‘শান্তি সম্মেলনে’ অংশ নিতে মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে যান ট্রাম্প। সেখানে বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।

মিসরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা যতটা জানি, আলোচনার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়ে গেছে। আপনারা জানেন, ধাপগুলো একটি অপরটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে ট্রাম্প মিসরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেন। এই সম্মেলনের জন্য সিসির প্রশংসা করেন ট্রাম্প।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ‘শান্তি সম্মেলনে’ যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন ট্রাম্প ও সিসি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ ২০টির বেশি দেশের নেতারা এতে অংশ নিচ্ছেন। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বা হামাসের কোনো প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শুরু থেকে শেষ: হংকংয়ের মাটিতে বাংলাদেশের ড্র

ভারতে দলিত পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহত্যায় তোলপাড়, সুইসাইড নোটে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ

বাংলাদেশ-হংকং ফুটবল ম্যাচ টিভিতে দেখাবে না, তাহলে দেখার উপায়

সখীপুরে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ভারতে আত্মহত্যা করা পুলিশকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে তদন্ত কর্মকর্তারও আত্মহত্যা, রেখে গেলেন তিন পাতার ‘সুইসাইড নোট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত