Ajker Patrika

আন্দিজ পর্বতমালায় হাজারো গর্তের রহস্য উন্মোচনের দাবি বিজ্ঞানীদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

পেরুর দক্ষিণে পিসকো ভ্যালির এক বিস্ময়কর প্রত্নস্থল—মন্টে সিয়ের্পে বা ‘সর্প পর্বত’। এই পর্বতেরই দীর্ঘ প্রায় এক মাইলজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পাঁচ হাজারেরও বেশি গর্ত নিয়ে গত এক শতাব্দী ধরে মাথা ঘামিয়ে আসছেন গবেষকেরা।

১৯৩৩ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের আকাশ থেকে তোলা ছবি প্রথমবারের মতো এই স্থানটির দিকে সবার দৃষ্টি ঘুরিয়েছিল। কিন্তু কোথাও কোনো লিখিত প্রমাণ না থাকায় এই গর্তগুলো বহুদিন ধরেই রহস্য হয়ে ছিল। গর্তগুলোর কারণ হিসেবে প্রতিরক্ষা, হিসাবরক্ষণ, খাদ্য সংরক্ষণ, বাগান করা বা কুয়াশা ধরে পানি সংগ্রহের মতো নানা ধারণাই ঘুরে বেড়িয়েছে গবেষকদের মনে। এমনকি ভিনগ্রহবাসী বা এলিয়েন তত্ত্বের সমর্থকেরাও এসব গর্ত নিয়ে নানা কল্পনা করেছেন।

সর্বশেষ এক গবেষণায় নতুন একটি ব্যাখ্যা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ড্রোন চিত্রায়ণ ও গর্তের ভেতর পাওয়া পরাগের অণু বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা মত দিয়েছেন—ইনকা সাম্রাজ্যের আগে এটি ছিল একটি জমজমাট বাজার এলাকা। পরে ইনকারা এটি ব্যবহার করত হিসাবরক্ষণ বা কর সংগ্রহের কাজে। গবেষণাটি ‘অ্যান্টিকুইটি’ জার্নালে গত ১০ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণার নেতৃত্বদানকারী ড. জ্যাকব বংগার্স বলেছেন, ‘কেন প্রাচীন মানুষজন পাহাড়ের ঢালে ৫ হাজারের বেশি গর্ত তৈরি করেছিলেন? নিশ্চিত উত্তর আমরা এখনো জানি না, কিন্তু নতুন তথ্য আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিচ্ছে।’

ড্রোন প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্ত

গর্তগুলোর প্রতিটি প্রায় ১ থেকে ২ মিটার চওড়া এবং আধা মিটার থেকে ১ মিটার গভীর। ড্রোনচিত্রে দেখা গেছে, এগুলো প্রায় ৬০টি পৃথক অংশে ভাগ করা এবং প্রতিটি অংশের মাঝে ফাঁকা জায়গা আছে। কোথাও ১২ সারির একটি অংশে পর্যায়ক্রমে সাত ও আটটি গর্তের সারি দেখা গেছে—যা এলোমেলো নয় বরং স্পষ্ট ও সংগঠিত পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়।

মাইক্রো বোটানিক্যাল বিশ্লেষণে গর্তগুলোতে ভুট্টা, বুনো ঘাস, নলখাগড়া, উইলো প্রজাতির পরাগ পাওয়া গেছে—যেগুলো দিয়ে সাধারণত ঝুড়ি তৈরি হতো। গবেষকেরা ধারণা করছেন, বাজারে আনা পণ্যগুলো হয় ঝুড়িতে, নয়তো গর্তের মধ্যে পাতা বিছিয়ে রাখা হতো।

ইনকা সাম্রাজ্যের আগে চিনচা রাজ্যের মানুষজন এখানে এসে ভুট্টা, তুলা, কোকা, মরিচের মতো সামগ্রী বিনিময় করত। গর্তগুলো তখন একেকটি ‘একক’ হিসেবে কাজ করত। যেমন—নির্দিষ্ট সংখ্যক গর্তে ভুট্টা থাকলে তার বিনিময়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক গর্ত ভর্তি তুলা বা কোকা পাওয়া যেত।

ইনকা আমলে ‘হিসাবের খাতা’

গর্তগুলোর বয়স ৬০০–৭০০ বছরের মতো বলে ধারণা। সাইটে পাওয়া সাইট্রাস পরাগ ইঙ্গিত দেয়, স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক যুগে (১৫৩১–১৮২৫) সাইটটির ব্যবহার অব্যাহত ছিল। তবে স্প্যানিশদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে এই গর্তগুলো খাপ খাওয়াতে না পারায় স্থানটি ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত হয়।

গবেষকদের মতে, ইনকা শাসনামলে গর্তগুলোর বিস্তৃতি বেড়েছিল এবং এগুলো একধরনের বিশাল হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ইনকারা ‘কিপু’ নামে গিঁট দেওয়া দড়ি দিয়ে হিসাব রাখত—মন্টে সিয়ের্পের বিন্যাসে তার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।

উত্তর এখনো বাকি

বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রস্তাবনাগুলো আকর্ষণীয় হলেও আরও প্রমাণ প্রয়োজন। তবুও এটি আন্দিজ সভ্যতার অর্থনীতি ও স্থানীয় ঐতিহ্য বোঝার ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখছে।

ড. বংগার্সের ভাষায়, ‘স্থানীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে যে বয়ান আমরা গড়ে তুলি, তার বাস্তব প্রভাব আছে। তাই ব্যাখ্যা নির্মাণে অবশ্যই আদিবাসী দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, আহত ছয় শতাধিক

ভারতের বিপক্ষে চাপের মুহূর্তে মাথা কাজ করছিল না আকবরের

পাকিস্তানের মন্ত্রীকে যারা বড় জেঠা মনে করে, আমি তাদের বিরুদ্ধে: ফজলুর

নাইজেরিয়ায় শত শত স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হয় ‘আত্মমর্যাদা’ হারাব, নয়তো আমেরিকাকে: জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়া কেন ইউক্রেনের পোকরোভস্ক দখলে মরিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৩১
পোকরোভস্কে টহলরত এক ইউক্রেনের সেনা। ছবি: রয়টার্স
পোকরোভস্কে টহলরত এক ইউক্রেনের সেনা। ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্ক দখল নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে বহু মাস ধরে তীব্র লড়াই চলছে। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রুশ সেনাবাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জানিয়েছেন, তাঁর বাহিনী বর্তমানে শহরটির ৭৫ শতাংশের বেশি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

তবে ইউক্রেনীয় সেনারা এখনো উত্তরের অংশে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে রেখেছে বলে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।

পোকরোভস্ক কেন গুরুত্বপূর্ণ

পোকরোভস্ক ছিল একসময় দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি বড় রেল ও সড়ক জংশন। যুদ্ধের আগে সেখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বাস করতেন। ইউক্রেনীয় সেনাদের জন্য এটি ছিল একটি বড় রসদ কেন্দ্র। কারণ এখানকার সড়কপথ দিয়েই সামনের বিভিন্ন যুদ্ধ ক্ষেত্রে রসদ সরবরাহ করা হতো।

শহরটির চারপাশ এখন প্রায় ধ্বংসস্তূপ। অধিকাংশ বাসিন্দা শহর ছেড়েছেন। সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সব শিশুদের। শহরের কাছে অবস্থিত ইউক্রেনের একমাত্র কোকিং কয়লা খনিটিও যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। একইভাবে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টিও বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।

রাশিয়ার লক্ষ্য কী

রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক প্রদেশ নিয়ে গঠিত পুরো দনবাস অঞ্চল দখলে নেওয়া। বর্তমানে ইউক্রেন এই অঞ্চলের প্রায় ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। পোকরোভস্ক ও এর উত্তর-পূর্বে কোস্তিয়ান্তিনিভকা দখল করতে পারলে রাশিয়া উত্তরে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত ক্রামাতোর্স্ক ও স্লোভিয়ানস্ক নামে বড় দুই শহরের দিকে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পাবে।

পোকরোভস্ক দখল হলে তা হবে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে আভদিভকা দখলের পর রাশিয়ার সবচেয়ে বড় একক সাফল্য। পশ্চিমা দেশগুলোকে রাশিয়া বোঝাতে চায়, দোনেৎস্কের বাকি অংশ দখল এখন সময়ের ব্যাপার; তাই ইউক্রেনের উচিত শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে অঞ্চলটি ছেড়ে দেওয়া। অন্যদিকে ইউক্রেন দেখাতে চায়, তারা রাশিয়াকে বড় ক্ষতির মুখে ফেলতে সক্ষম, যাতে পশ্চিমা সামরিক সহায়তা অব্যাহত থাকে।

এত সময় লাগছে কেন

পোকরোভস্কের দিকে রাশিয়ার হামলা চলছে এক বছরের বেশি সময় ধরে। বাহমুতের মতো সরাসরি আক্রমণের বদলে রাশিয়া এখানে ধীর গতির পিঞ্চার কৌশল ব্যবহার করছে। এ ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে ঘিরে ফেলা, সরবরাহ লাইন কেটে দেওয়া, ছোট ইউনিট ও ড্রোন দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা, তারপর বড় বাহিনী নিয়ে এগোনোই রুশ বাহিনীর কৌশল।

ইউক্রেন বলছে—পোকরোভস্কের যুদ্ধে রাশিয়া বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। রাশিয়া অবশ্য দাবি করেছে, তাদের ধীর কৌশল ক্ষতি কমাতে সাহায্য করছে এবং জনশক্তির ঘাটতিতে ভুগছে ইউক্রেনই।

বর্তমান পরিস্থিতি

ইউক্রেনের সপ্তম র‍্যাপিড রেসপন্স কর্পস জানিয়েছে, তারা রুশ বাহিনীর ওপর বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঘটাচ্ছে এবং ড্রোন ইউনিটসহ নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করছে। রুশ বাহিনী শহরের রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছে, যাতে অধিকৃত এলাকা বাড়ানো যায়। তবে ইউক্রেন বলছে, তারা এটি ঠেকিয়ে দিচ্ছে।

মানচিত্র বিশ্লেষণকারী গ্রুপ ‘ডিপ স্টেট’ দেখিয়েছে, রুশ সেনারা চলতি মাসেই (নভেম্বর) দুই ধাপে রেললাইন অতিক্রম করেছে। গেরাসিমভ দাবি করেছেন, পোকরোভস্কের আশপাশের একাধিক বসতি তারা দখলে নিয়েছে এবং ইউক্রেনীয় সেনাদের ধ্বংস করছে।

যেহেতু যুদ্ধক্ষেত্রের দাবি, তাই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, আহত ছয় শতাধিক

ভারতের বিপক্ষে চাপের মুহূর্তে মাথা কাজ করছিল না আকবরের

পাকিস্তানের মন্ত্রীকে যারা বড় জেঠা মনে করে, আমি তাদের বিরুদ্ধে: ফজলুর

নাইজেরিয়ায় শত শত স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হয় ‘আত্মমর্যাদা’ হারাব, নয়তো আমেরিকাকে: জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হয় ‘আত্মমর্যাদা’ হারাব, নয়তো আমেরিকাকে: জেলেনস্কি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তাঁর দেশ এখন ইতিহাসের ‘সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোর’ একটির মুখোমুখি। তিনি সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য যে পরিকল্পনা আনা হয়েছে, তা রাশিয়ার অনুকূলে যাবে এবং এর ফলে ইউক্রেনকে হয় দেশের আত্মমর্যাদা হারাতে হবে, নয়তো দীর্ঘদিনের মিত্র (যুক্তরাষ্ট্র) হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২৮ দফা পরিকল্পনায় ইউক্রেনের ওপর চাপ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যেন রাশিয়ার দখলকৃত ভূখণ্ড ছেড়ে দেয়, সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করে এবং যুদ্ধ অবসানের বিনিময়ে ন্যাটোতে যোগ না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এসবই ছিল ক্রেমলিনের দীর্ঘদিনের দাবি।

আজ শুক্রবার জেলেনস্কি একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘ইউক্রেনের ওপর এখন অনেক চাপ। আমরা এখন একটি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন—হয় আমাদের আত্মমর্যাদা হারাতে হবে, নয়তো দীর্ঘদিনের মিত্র (যুক্তরাষ্ট্র) হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে, অথবা কঠিন ২৮টি দফা, নয়তো একটি চরম কঠোর শীত।’

তবে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন শান্তভাবে এবং দ্রুত যুদ্ধ শেষ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি তাঁর দেশের সঙ্গে বেইমানি করবেন না।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে কী আছে, কেন কিয়েভের আপত্তি

ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে এমনভাবে দেখা হচ্ছে, এতে রাশিয়া প্রায় সবটাই পেয়ে যাচ্ছে। প্রস্তাবের বেশির ভাগ অংশই ২০২২ সালে আক্রমণের পর ইস্তাম্বুল আলোচনায় মস্কো যে অবস্থান নিয়েছিল, তার সঙ্গে মিলে যায়।

ট্রাম্পের পরিকল্পনায় রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রিমিয়া, লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ককে ‘কার্যত রাশিয়ার অংশ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পরিকল্পনায় ইউক্রেনীয় বাহিনীকে পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের যে অংশগুলো তারা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করছে, সেখান থেকে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই অঞ্চলকে একটি নিরপেক্ষ বেসামরিক বাফার জোন হিসেবে গণ্য করা হবে, যা আন্তর্জাতিকভাবে রাশিয়ান ফেডারেশনের অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত হবে।

ইউক্রেনকে তার সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করতে হবে এবং ভবিষ্যতে ন্যাটোতে যোগদানের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে হবে।

জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি এই পরিকল্পনার বিষয়ে একটি পথ খুঁজে বের করতে কাজ করছেন। কিন্তু তিনি কখনোই দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না। তিনি বলেন, ‘আমি যুক্তি উপস্থাপন করব, আমি বোঝাব, আমি বিকল্প প্রস্তাব দেব, কিন্তু আমরা শত্রুকে কখনোই এই বলার সুযোগ দেব না যে ইউক্রেন শান্তি চায় না।’

ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিস্তারিত প্রকাশ হওয়ার পর বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা ইউক্রেনের সমর্থনে কথা বলেছেন। তাঁরা কিয়েভের পাশে থাকার এবং ইউক্রেনের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশটির ভাগ্য নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয় বলেও জোর দিয়েছেন।

শুক্রবার দিনের শুরুতে জেলেনস্কির সঙ্গে এক যৌথ ফোনালাপে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎস, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা দীর্ঘ মেয়াদে ইউরোপ ও ইউক্রেনের স্বার্থ রক্ষার পথ অনুসরণ করে যেতে সম্মত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, আহত ছয় শতাধিক

ভারতের বিপক্ষে চাপের মুহূর্তে মাথা কাজ করছিল না আকবরের

পাকিস্তানের মন্ত্রীকে যারা বড় জেঠা মনে করে, আমি তাদের বিরুদ্ধে: ফজলুর

নাইজেরিয়ায় শত শত স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হয় ‘আত্মমর্যাদা’ হারাব, নয়তো আমেরিকাকে: জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সান্তোরিনি দ্বীপে কেন বিরামহীন ভূমিকম্প, জানালেন বিজ্ঞানীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ২৪
সান্তোরিনি দ্বীপের একটি বসতবাড়ি। ছবি: বিবিসি
সান্তোরিনি দ্বীপের একটি বসতবাড়ি। ছবি: বিবিসি

গ্রিসের সান্তোরিনি দ্বীপের আশপাশে এই বছরের শুরুতে ঘটে যাওয়া লক্ষাধিক ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র ভূমিকম্পের রহস্য উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞানীরা। জানুয়ারি থেকে পরবর্তী তিন মাস ধরে চলতে থাকা এই ভূমিকম্প ঝাঁকের কারণ ছিল ভূগর্ভে গলিত শিলা বা ম্যাগমার বিশাল চাপ ও গতিবিধি।

নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, এই ম্যাগমা প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ভূগর্ভস্থ চ্যানেলের মধ্য দিয়ে অনুভূমিকভাবে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে ২৫ হাজারেরও বেশি ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ভূকম্পনের মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানের নীতি মিলিয়ে প্রতিটি ছোট কম্পনকে ভার্চুয়াল সেন্সর হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এই পদ্ধতি তাঁদের ভূগর্ভস্থ চ্যানেল, শিলাস্তর ভাঙন ও চাপের পরিবর্তনের সঠিক মানচিত্র তৈরি করতে সাহায্য করেছে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষক ড. স্টিফেন হিক্স মত দিয়েছেন, এই ধরনের বিশ্লেষণ ভবিষ্যতে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বাভাস দিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

কী ঘটেছিল সান্তোরিনিতে

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সান্তোরিনি, আমোরগোস এবং আনাফি—এই তিন দ্বীপের নিচে হঠাৎ প্রবল ভূমিকম্পীয় নড়াচড়া শুরু হয়। কয়েক সপ্তাহেই কম্পনের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় লাখে। এর মধ্যে অনেক ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫-এর ওপরে, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। পর্যটকেরা দ্বীপ ছাড়তে শুরু করেন এবং আশঙ্কা বাড়তে থাকে যে, সাগরের নিচে থাকা কলম্বো আগ্নেয়গিরি হয়তো অগ্ন্যুৎপাতের দিকে এগোচ্ছে, অথবা ১৯৫৬ সালের ভয়াবহ ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের মতো আরেকটি বিপর্যয় আসন্ন।

গবেষকেরা থ্রি-ডি ভূগর্ভস্থ মানচিত্র তৈরি করে দেখেন, সান্তোরিনি ও কলম্বো আগ্নেয়গিরির নিচ থেকে ম্যাগমা বেরিয়ে ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সমুদ্রতলের ১০ কিলোমিটার নিচে থাকা একটি বিশাল চ্যানেলের মধ্য দিয়ে অনুভূমিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সময় যে পরিমাণ ম্যাগমা সরে গিয়েছে তা দিয়ে প্রায় ২ লাখ অলিম্পিক মানের সুইমিং পুল ভরা সম্ভব। এই ম্যাগমা শিলাস্তর ভেঙে এগোনোর কারণেই হাজারো ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র ভূমিকম্প তৈরি হয়।

গবেষণার প্রধান লেখক অ্যান্থনি লোম্যাক্স বলেছেন, ‘প্রতিটি কম্পন যেন পৃথিবীর গভীর থেকে পাওয়া একটি বার্তা। থ্রি-ডি মডেলে ভূমিকম্পের অবস্থান ঠিক সেটিই দেখায় যা ম্যাগমার অনুভূমিক গতির ক্ষেত্রে আমরা প্রত্যাশা করি।’

এখন কি ঝুঁকি কেটে গেছে

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আপাতত পরিস্থিতি স্থিতিশীল। ম্যাগমা আটকে গিয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার গভীরে ঠান্ডা হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। তাই অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা খুব কম। তবে আগ্নেয়গিরি বছরের পর বছর ধরে অস্থিতিশীল অবস্থায় থাকতে পারে—যেমনটি আইসল্যান্ডে দেখা গেছে।

গবেষকদের মতে, ভূকম্পন ও ম্যাগমার গতিবিধি পর্যবেক্ষণে এআই ব্যবহারের নতুন এই পদ্ধতি ভবিষ্যতে আগ্নেয়গিরির আচরণ পূর্বাভাসে বড় পরিবর্তন আনতে পারে এবং ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ রাখতে সাহায্য করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, আহত ছয় শতাধিক

ভারতের বিপক্ষে চাপের মুহূর্তে মাথা কাজ করছিল না আকবরের

পাকিস্তানের মন্ত্রীকে যারা বড় জেঠা মনে করে, আমি তাদের বিরুদ্ধে: ফজলুর

নাইজেরিয়ায় শত শত স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হয় ‘আত্মমর্যাদা’ হারাব, নয়তো আমেরিকাকে: জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাইজেরিয়ায় শত শত স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০১৪ সালে চিবুক শহরের একটি স্কুল থেকে ২৭৬ স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসে বোকো হারাম। ছবি: এএফপি
২০১৪ সালে চিবুক শহরের একটি স্কুল থেকে ২৭৬ স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসে বোকো হারাম। ছবি: এএফপি

নাইজেরিয়ার সংঘাতকবলিত উত্তরাঞ্চলে চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো গণ-অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দেশটির নাইজার অঙ্গরাজ্যের পাপিরি এলাকার সেন্ট মেরিস ক্যাথলিক স্কুলে হামলার ঘটনা ঘটে। এর কিছুক্ষণ পর অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তবে হামলাকারীরা কারা, কিংবা কতজন শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়—সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্থানীয় টিভি চ্যানেল অ্যারাইস টিভি জানিয়েছে, ৫২ জন স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ বলছে, শিশুদের উদ্ধারে বিশেষ দল মোতায়েন করা হয়েছে।

এই হামলা ও অপহরণের ঘটনাটি ঘটেছে নাইজেরিয়ার কেব্বি অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুল থেকে ২৫ ছাত্রীকে অপহরণের মাত্র চার দিন পর। এরপরই প্রশ্ন উঠেছে, নাইজেরিয়ায় কেন বারবার স্কুলগুলো লক্ষ্যবস্তু হয় এবং স্কুলছাত্রীদের অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়।

আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ নাইজেরিয়ায় স্কুলছাত্রী অপহরণ এখন নিরাপত্তাহীনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের মতে, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কাছে স্কুল হলো কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু—যেখানে হামলা করলে বেশি মনোযোগ পাওয়া যায়।

ইউনিসেফ গত বছর বলেছিল, সংঘাত প্রবণ ১০টি অঙ্গরাজ্যের মাত্র ৩৭ শতাংশ স্কুলে হুমকি শনাক্তের প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা রয়েছে। এদিকে এমন সময়ে এসব অপহরণের ঘটনা ঘটছে, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর গণহত্যা চলছে।

বাস্তবে দেশটিতে হামলার শিকার হন মুসলিম ও খ্রিষ্টান উভয়ই। চলতি সপ্তাহে কেব্বি রাজ্যের যে স্কুলে হামলা হয়েছে, সেটি মুসলিমপ্রধান মাগা শহরে অবস্থিত।

১০ বছর আগে বোকো হারাম নাইজেরিয়ার চিবুক শহরের একটি স্কুল থেকে ২৭৬ ছাত্রীকে অপহরণ করে আন্তর্জাতিক মনোযোগ কাড়ে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তরাঞ্চলে ডজন-ডজন ‘ব্যান্ডিট’ বা ডাকাত গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা সাধারণত নিরাপত্তাহীন, দূরবর্তী গ্রামগুলোতে হামলা চালায়।

চিবুক শহরে বোকো হারামের ওই ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে (বেশির ভাগই ছাত্রী) অপহরণ করা হয়। তাদের অনেককে মুক্তি দেওয়া হয় মুক্তিপণের বিনিময়ে।

বোকো হারাম ও আইএস-সংযুক্ত গোষ্ঠীগুলো

বোকো হারাম বহু বছর ধরে উত্তর নাইজেরিয়ার বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, বিশেষত উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী ক্যামেরুন, নাইজার ও চাদে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। সক্রিয় এই জিহাদি জঙ্গি সংগঠনটির আসল নাম ‘জামায়াতু আহলিস সুন্নাহ লিদ্দাওয়াতি ওয়াল জিহাদ’। এদের মূল লক্ষ্য হলো পশ্চিমা শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিরোধিতা করা এবং নাইজেরিয়ায় শরিয়াহ আইনভিত্তিক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এটি ২০০১ সালে মোহাম্মদ ইউসুফ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০৯ সালে নাইজেরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে।

২০১৪ সালে চিবুক শহরের একটি স্কুল থেকে ২৭৬ স্কুলছাত্রী অপহরণের মাধ্যমে তারা বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসে। এরপর ২০১৮ সালে তারা ইয়োবে অঙ্গরাজ্যের একটি কলেজ থেকে আরও ১১০ ছাত্রীকে অপহরণ করে।

বছরের শুরু থেকে গোষ্ঠীটি নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করেছে। আগে বিভক্ত থাকলেও এখন অনেক যোদ্ধা স্থানীয় আইএস-সংযুক্ত সংগঠনের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছে। উভয় গোষ্ঠীতে কতজন যোদ্ধা আছে জানা যায় না, তবে ধারণা করা হয় সংখ্যা কয়েক হাজার।

এরা তরুণদের জোর করে দলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে—বিশেষত সেসব তরুণকে, যারা সুরক্ষিত এলাকাগুলোতে মানবিক সহায়তা পাচ্ছে না। এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন চলতি বছর বিদেশি সহায়তায় বড় আকারে কাটছাঁট করায় নাইজেরিয়ার পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে।

বোকো হারাম অপহরণ করে মূলত তাদের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য, যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থার বিরোধিতা এবং নাইজেরিয়ায় শরিয়াহভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। অপহৃতদের মধ্যে অনেককেই তারা নিজেদের সংগঠনে যোগ দিতে বাধ্য করে অথবা মুক্তিপণ আদায়ে ব্যবহার করে।

তবে বোকো হারামের প্রধান লক্ষ্য হলো পশ্চিমা ধাঁচের শিক্ষাব্যবস্থার বিরোধিতা করা এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। তারা বিশ্বাস করে যে এই ধরনের শিক্ষা তাদের ‘ইসলামিক’ আদর্শের পরিপন্থী।

তাদের আরেকটি লক্ষ্য হলো নাইজেরিয়ায় ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তারা সহিংসতা ও অপহরণের মতো কর্মকাণ্ডকে ব্যবহার করে।

এর বাইরে অপহৃতদের (মেয়ে) মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে তারা তাদের সামরিক ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহ করে। অনেক ক্ষেত্রে, অপহৃতদের (ছেলে) তাদের নিজেদের দলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়।

উত্তরের অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীও মূলত মুক্তিপণের জন্যই অপহরণ করে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এদের অনেকেই আগে গবাদিপশু পালন বা কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। দীর্ঘদিনের সংঘাতের পর তারা অস্ত্র হাতে নিয়েছে।

তাদের কাছে স্কুল একটি ‘লাভজনক’ লক্ষ্যবস্তু। এগুলোতে হামলা সাধারণত রাতে ঘটে। কখনো হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে আসে, কখনো আবার সামরিক পোশাক পরে। ব্যান্ডিট বা ডাকাতদের এসব কর্মকাণ্ড ক্রমেই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করছে—বিশেষত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে।

মার্কিন-সমর্থিত আফ্রিকা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বলেছে, ব্যান্ডিটরা যদিও অনেক সময় জঙ্গিদের সঙ্গে একাকার হয়ে যায়, তবে তারা উত্তরের অস্থিতিশীলতার স্বতন্ত্র উৎস। তাদের কারণে যতজন মারা যাচ্ছে, তা উত্তর-পূর্বে বোকো হারাম ও আইএস-সংযুক্ত গোষ্ঠীর হাতে নিহত মানুষের সংখ্যার প্রায় সমান।

নাইজেরিয়া বহু বছর ধরে বোকো হারাম ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কখনো ভুলবশত বেসামরিক লোকজন সামরিক হামলার শিকার হয়েছে। সশস্ত্র ব্যান্ডিট বা ডাকাতদের ঘাঁটির ওপরও অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী।

তবুও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জঙ্গিরা বারবার সামরিক চৌকি দখল করেছে, রাস্তায় বোমা পেতেছে, বিভিন্ন গ্রাম আক্রমণ করেছে। তবে সরকার দাবি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদারের প্রচেষ্টা আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

গত মাসে প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু পুরোনো নিরাপত্তা প্রধানদের বদলে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুতে সন্ত্রাস ও অপরাধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে মার্কিন সরকার নাইজেরিয়ার কাছে ৩৪৬ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেয়। তবে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার ও সব ধরনের সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টান নির্যাতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে নাইজেরিয়া এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

বছরভিত্তিক উল্লেখযোগ্য হামলা

২০২০ সালে কাতসিনা অঙ্গরাজ্যের এক মাধ্যমিক স্কুলে মোটরসাইকেলযোগে হামলা চালিয়ে ৩০০-এর বেশি ছাত্রকে অপহরণ করা হয়েছিল। এক সপ্তাহ পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ২০২১ সালে জামফারা অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুল থেকে ৩০০ এর বেশি ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। কিছু সপ্তাহ পরে মুক্তিপণের বিনিময়ে সবাইকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। ২০২৪ সালে কাদুনা অঙ্গরাজ্যের একটি সরকারি স্কুল থেকে ২৮৭ ছাত্রছাত্রী অপহরণ হয়। এদের মধ্যে ছাত্রী ছিল ১৫৭ জন, ছাত্র ১৩০ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, আহত ছয় শতাধিক

ভারতের বিপক্ষে চাপের মুহূর্তে মাথা কাজ করছিল না আকবরের

পাকিস্তানের মন্ত্রীকে যারা বড় জেঠা মনে করে, আমি তাদের বিরুদ্ধে: ফজলুর

নাইজেরিয়ায় শত শত স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়

ট্রাম্পের প্রস্তাবে হয় ‘আত্মমর্যাদা’ হারাব, নয়তো আমেরিকাকে: জেলেনস্কি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত