Ajker Patrika

ভারতে নব্য ধনীদের উত্থান, ব্যক্তিগত বিমানে চীনকেও পেছনে ফেলেছে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, ২০: ৩৮
ব্যক্তিগত বিমানের সামনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভারতে পুষ্পাখ্যাত অভিনেতা আল্লু অর্জুন। ছবি: সংগৃহীত
ব্যক্তিগত বিমানের সামনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভারতে পুষ্পাখ্যাত অভিনেতা আল্লু অর্জুন। ছবি: সংগৃহীত

এশিয়ার ধনকুবেরদের উত্থান-পতনের এক চমকপ্রদ প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠছে প্রাইভেট জেটের বাজারে। একসময় যেখানকার আকাশ দাপিয়ে বেড়াতেন চীনের ধনীরা, এখন সেই স্থান দখল করছেন উদীয়মান ভারতীয়রা। ইকোনমিস্টৈর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চীনে প্রাইভেট জেটের সংখ্যা দ্রুত কমেছে, আর এই বাজারে ভারত চমকপ্রদ গতিতে এগোচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশিয়ায় প্রাইভেট জেটের বাজার ২০৩০ সাল পর্যন্ত বছরে প্রায় ৭ শতাংশ হারে বাড়বে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই হার ৪ শতাংশ আর যুক্তরাষ্ট্রে তা মাত্র ১ শতাংশ।

এতে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি এখন ভারত। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটিতে নিবন্ধিত প্রাইভেট জেটের সংখ্যা এক–চতুর্থাংশ বেড়ে হয়েছে ১৬৮টি। একই সময়ে মাসিক ফ্লাইটের সংখ্যা তিন গুণ বেড়ে ২ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে, যা এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।

চীনে এই চিত্র ঠিক উল্টো। ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটিতে প্রাইভেট জেটের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২৪৯টিতে। চীনে প্রাইভেট জেট কমার কারণ মূলত তিনটি—করোনাকালে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, রিয়েল এস্টেট বাজারে ধস ও ধনীদের বিরুদ্ধে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কঠোর মনোভাব।

অন্যদিকে ভারতে ধনীদের ভোগের ধরন ও জেট ব্যবহারের পেছনের কারণ ভিন্ন। সেখানে বিলাসিতা নয়, বাস্তব প্রয়োজন বড় ভূমিকা রাখছে। ভারতের সড়ক ও রেলপথ এখনো অনেকটাই অপ্রতুল এবং ছোট শহরগুলোতে দ্রুত পৌঁছানোর জন্য প্রাইভেট জেট কার্যকর বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, মুম্বাই-দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু, আহমেদাবাদ ও পুনে এই ধরনের জনপ্রিয় রুটগুলোর মধ্যে প্রাইভেট জেটের ব্যবহার বাড়ছে।

জেট বিক্রয় বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, আকৃতি ও সুযোগ-সুবিধার ওপর ভিত্তি করে প্রাইভেট জেটের দাম ৩০ লাখ ডলার থেকে শুরু করে ১০ কোটি ডলারও হয়ে থাকে। ভারতীয় ক্রেতারা চীনা ধনীদের তুলনায় অনেক বেশি দর-কষাকষি করেন। ১০ কোটি ডলারের জেট কেনার ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে গিয়েও তাঁরা মাত্র ৫ হাজার ডলার কমানোর জন্য দেন-দরবার করেন। জেটগুলোর মালিকানার খরচও কম নয়। ১০ কোটি ডলার মূল্যের একটি জেট রক্ষণাবেক্ষণ করতে বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ ডলার খরচ হতে পারে। এর সঙ্গে আবার জ্বালানি, পার্কিং ও অবতরণ ফি যোগ হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শহরগুলো থেকেও এখন ধনীরা উঠে আসছেন। তাঁরা মূলত গয়না, ওষুধ, শিক্ষা বা নির্মাণ খাত থেকে ধনী হয়ে উঠছেন। তাঁরা তাঁদের বিলাসবহুল গাড়ির পরে এখন আকাশে বিনিয়োগ করছেন। টাইমশেয়ার ও অন-ডিমান্ড চার্টার পরিষেবার মতো পশ্চিমা ব্যবসায়িক মডেল ভারতের প্রাইভেট জেটশিল্পকে আরও প্রসারিত করতে পারে।

এদিকে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই খাত পরিবেশ ও অবকাঠামোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তারপরও সরকারের নীতিগত সহায়তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভারতকে এশিয়ায় প্রাইভেট জেট ব্যবহারের নতুন নেতায় পরিণত করেছে। তবে বিশেষজ্ঞেরা সতর্ক করেছেন, বড় মন্দার মুখে পড়লে সবচেয়ে আগে প্রাইভেট জেটই বন্ধ হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

খিলগাঁওয়ে পুরি-শিঙাড়া বিক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যা

ফ্লাইটে অসুস্থ ব্যক্তিকে সহযাত্রীর চড়, তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ

সাপের বিষে তৈরি যে মদ পাওয়া যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত