Ajker Patrika

এবার বাংলাদেশিদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা ত্রিপুরার হাসপাতালের

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
আইএলএস হাসপাতালের সাহায্য ডেস্ক বন্ধ করা হয়েছে। ছবি: লিংকডইন

গত শুক্রবার বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কলকাতার জে এন রায় হাসপাতাল। এবার ত্রিপুরার আগরতলার আইএলএস হাসপাতালও এ সিদ্ধান্ত নিল। বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার জেএন রায় হাসপাতাল একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা আর কোনো বাংলাদেশি রোগীকে ভর্তি করবে না বা তাঁদের চিকিৎসা করবে না। হাসপাতালের প্রতিনিধি শুভ্রাংশু ভক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের দেশের লাখ লাখ সৈনিক বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত ঝরিয়েছে। তাই যখন তারা আমাদের জাতীয় পতাকাকে অপমান করে, তখন আমরা তাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি না।’

তবে পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেল কাউন্সিল (ডব্লিউবিএমসি) হাসপাতালের অবস্থান সমর্থন করেনি এবং বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলেছে। ডব্লিউবিএমসির সভাপতি ড. সুদীপ্ত রায় বলেছেন, তাঁরা রোগীদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করেন না এবং সবার চিকিৎসা করবেন।

আগরতলার আইএলএস হাসপাতালের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা গৌতম হাজারিকা এ সিদ্ধান্তের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। আখাউড়া চেকপোস্ট এবং আইএলএস হাসপাতালের সহায়তা ডেস্ক বন্ধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নারায়ণা হেলথের এক প্রতিনিধি জানান, ভিসা সমস্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে। ভারতের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা ১৮০–২০০ থেকে ৬০–এ নেমে এসেছে। ভিসা দেওয়া বন্ধ থাকায় আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও কমতে পারে।

এর আগে, বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে বাংলাদেশি রোগী দেখা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল সাহা।

গত বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসক ইন্দ্রনীল সাহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকা অবমাননার একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘বুয়েটের প্রবেশপথে ভারতীয় জাতীয় পতাকা বিছিয়ে রাখা! চেম্বারে বাংলাদেশের রোগী দেখা আপাতত বন্ধ রাখছি। আগে দেশ, পরে রোজগার। আশা রাখব সম্পর্ক স্বাভাবিক না হওয়া অবধি অন্য চিকিৎসকরাও তাই করবেন।’

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রতিবেশীর সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনা ভারতের চিকিৎসা পর্যটনকেও প্রভাবিত করেছে। গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তাঁর ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের জটিলতা বাড়তে থাকে। বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া সাময়িক বন্ধ রাখে ভারত। এরপর থেকে দেশটিতে বাংলাদেশি রোগীদের সংখ্যা কমতে থাকে।

সম্প্রতি বহিষ্কৃত ইসকন সদস্য ও সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার এবং একে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় এক আইনজীবীকে পিটিয়ে হত্যার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত