Ajker Patrika

বান্ধবীকে বিয়ে করতে লিঙ্গ পরিবর্তন, রাজি না হওয়ায় পুড়িয়ে হত্যা 

বান্ধবীকে বিয়ে করতে লিঙ্গ পরিবর্তন, রাজি না হওয়ায় পুড়িয়ে হত্যা 

জন্মদিনে সহপাঠী ও ভালোবাসার মানুষের হাতেই নৃশংসভাবে খুন হলেন ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের এক তরুণী। শিকলে বেঁধে, ব্লেড দিয়ে জখম করার পর গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে তাকে। 

গত শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দক্ষিণ চেন্নাইয়ের শান্ত শহরতলি কেলাবক্কমের কাছাকাছি থালাম্বুরে ভয়াবহ এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। আজ সোমবার এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, খুন হওয়া তরুণীর নাম আর নন্দিনী (২৪)। যিনি মাদুরাইয়ের বাসিন্দা ছিলেন। তবে পড়ালেখা শেষে চেন্নাইতে চাকরি ও বসবাস শুরু করেন। তার শৈশবের বান্ধবী হলেন, ভেত্রিমরন বা পান্ডি মহেশ্বরী (২৬), যিনিও একজন প্রকৌশলী। 

ছোটবেলা থেকেই তাদের বন্ধুত্ব ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। পরবর্তী সময়ে সেই সম্পর্ক এতটাই গভীর হয়ে পড়ে যে, তারা সমকামী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি, নন্দিনীকে বিয়ে করার জন্য লিঙ্গ পরিবর্তন করিয়েছিলেন ভেত্রিমরন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভেত্রিমরনের প্রস্তাব নাকচ করে দেন নন্দিনী। সেখান থেকেই তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরতে শুরু করে। 

নন্দিনী বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার পর ঘনিষ্ঠতা কমে গেলেও ভেত্রিমরনের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। বিএসসি পাস করার পর নন্দিনী চেন্নাইয়ের একটি আইটি সংস্থায় চাকরি পান ও চাচার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। 

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) নন্দিনীকে ফোন করে একসঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে চান ভেত্রিমরন। দেখা করতে গেলে জন্মদিনের উপহার হিসেবে নন্দিনী কিছু জামাকাপড় কিনে দেন তিনি। পরে ভেত্রিমরন নন্দিনীকে স্থানীয় একটি অনাথ আশ্রমে নিয়ে যান। সেখানে তারা অনুদানও দেন। 

পরে নন্দিনীকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেন ভেত্রিমরন। নন্দিনী তার প্রস্তাব মেনে নেন ও মোটরসাইকেলে উঠে বসেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন জায়গায় বাইক থামিয়ে নন্দিনীর একটি ছবি তুলে দেওয়ার বায়না ধরেন ভেত্রিমরন। 

মোটরসাইকেল থেকে নামার পর নন্দিনীর দুই হাত ও পা চেন দিয়ে বেঁধে ফেলেন ভেত্রিমরন। এমন কেন করছো-নন্দিনী এমন প্রশ্ন করলে, তিনি বলেন, মজা করছেন। এর কিছুক্ষণ পরেই একটি ব্লেড দিয়ে নন্দিনীর গলায় পোচ দেন ভেত্রিমরন। পরে নন্দিনীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন তিনি। একপর্যায়ে নন্দিনীকে ওভাবেই ফেলে রেখে পালিয়ে যান ভেত্রিমরন। 

কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা নন্দিনীকে ওই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। তখনো তরুণীর শরীরে প্রাণ ছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। মৃত্যুর আগে অবশ্য ভেত্রিমরনের মোবাইল নম্বর পুলিশকে জানিয়ে যেতে পেরেছিলেন নন্দিনী। 

পুলিশের ফোন পেয়েই ঘটনাস্থলে চলে আসেন ভেত্রিমরন। নিজেকে নন্দিনীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে পরিচয় দেন। এমনকি, নন্দিনীকে নিয়ে পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে হাসপাতালেও যান তিনি। কিন্তু তারপর থেকেই উধাও হয়ে যান ভেত্রিমরন। এরপরেই পুলিশের সন্দেহ পড়ে তার ওপরে। 

নন্দিনী মারা যাওয়ার পরে ভেত্রিমরনকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, লিঙ্গ বদলের পরেও নন্দিনী তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি। তার ওপরে, কয়েক দিন ধরে এক সহকর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল নন্দিনীর। এসব ঘটনায় জমা ক্ষোভ থেকে নন্দিনীকে খুন করেন ভেত্রিমরন। ধৃতকে আদালতে তুললে তাকে জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক৷ 

স্থানীয় পুলিশ কমিশনার অমলরাজ বলেছেন, ভেত্রিমরনের বিরুদ্ধে এর আগে যৌন নিপীড়নের কোনো তথ্য নেই। তা ছাড়া তিনি এর আগে হিংস্র বা আক্রমণাত্মক আচরণ করেছেন কি না তাও স্পষ্ট নয়। তবে তদন্ত চলছে ও আদালত তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত